ইতিহাসের ধারণা অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর |ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর|প্রশ্নের মান-৫ | class 8 history 1St chapter brought history question answer | - SM Textbook

Fresh Topics

Thursday, July 27, 2023

ইতিহাসের ধারণা অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর |ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর|প্রশ্নের মান-৫ | class 8 history 1St chapter brought history question answer |

  ইতিহাসের ধারণা অষ্টম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায় বড় প্রশ্ন উত্তর |ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর|প্রশ্নের মান-৫ | class 8 history 1St chapter brought history question answer |





ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নোত্তর

প্রশ্নের মান-5

1. ভারতবর্ষের ইতিহাস রচনা প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতের তুলনা- মূলক বিশ্লেষণ করো। এ সম্পর্কে তোমার মত কী? 

উত্তর:-  ভারতবর্ষের ইতিহাস রচনা প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের তুলনামূলক বিশ্লেষণ:

 ভারতবর্ষের ইতিহাস প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ইতিহাস পড়া ও মুখস্থ করা ভারতবর্ষের নিশীথকালের একটা দুঃস্বপ্নকাহিনিমাত্র'। আমাদের দেশে কত বিদেশি এসেছে, সিংহাসন নিয়ে লড়াই হয়েছে। একদল চলে যাওয়ার পর আরও একদল এসেছে। এদের ইতিহাস আমরা জানতে   পারি বিদেশি ইতিহাসবিদদের রচনা থেকে। তাই তাঁর সেই ইতিহাস পছন্দ নয়, যে ইতিহাসে বিদেশিরা এসে শুধু মারামারি, কাটাকাটি করে এবং বাবা-ছেলে, ভাই-চাই সিংহাসন নিয়ে টানাটানি করে। তিনি মনে করেন তাঁরাই ভাগ্যবান যারা স্বদেশকে ইতিহাসের মধ্যে খুঁজে পায়। ইতিহাস নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোনো সমস্যা নেই, তিনি প্রশ্ন তুলেছেন ইতিহাসের বিষয়বস্তু নিয়ে। তাঁর মতে, ভারতের ইতিহাস ভারতীয়দের লিখতে হবে। তবেই সেটা হবে প্রকৃত ইতিহাস। অন্যদিকে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ঠিক একই মত পোষণ করেছেন। তাঁর মতে, 'বাঙালির ইতিহাস চাই'বাঙালি জাতির অতীতের কথা বাঙালিকেই জানতে হবে। না জানলে আর রক্ষা নেই। তাই এই ইতিহাস বাঙালিরাই রচনা করবে। বিদেশিদের লেখা বাঙালির ইতিহাস ভুলে ভরা। তিনি আরও বলেছেন আমি, তুমি, যে পারবে সবাই এই ইতিহাসলিখতে পারে। উভয়ের বক্তব্যের মধ্যে একটা ইতিবাচক মিল রয়েছে। প্রত্যেক দেশের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য আছে। সুতরাং, ইংল্যান্ডের ঐতিহাসিকরা যদি ভারতবর্ষের ইতিহাস লিখতে যান তা কখনোই সঠিক ইতিহাস হবে না। তাই ইতিহাস নিয়ে তর্কবিতর্ক হয় বেশি। এই বিতর্কের মধ্য থেকেই আসল ইতিহাস বেরিয়ে আসে। সুতরাং এক্ষেত্রেও উভয় পণ্ডিতের মিল লক্ষ করা যায়।


আমার মতে, আমরা সবাই ইতিহাস লিখব এই কথাটা সর্বক্ষেত্রে প্রযুক্ত হবে না। যিনি বা যাঁরা ইতিহাস লিখছেন তিনি যেভাবে ঘটনাকে দেখেছেন সেভাবেই লিখবেন। ওই একই ঘটনার বর্ণনা অন্য কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে এক হবে না। সুতরাং একই ঘটনা এবং তার ফলাফল নিয়ে বিতর্ক থাকবেই। তবে এটা ঠিক ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে। আমার বিচার অনুযায়ী ইতিহাস হবে "আমাদের ইতিহাস।


 2. ভারতের আধুনিককালের ইতিহাসের উপাদান সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করো।।

উত্তর:-  ভারতের আধুনিককালের ইতিহাসের উপাদান:

 যে সমস্ত তথ্য ও সূত্রকে অবলম্বন করে ভারতের আধুনিককালের ইতিহাস রচনা করা হয় তা আধুনিককালের ইতিহাসের উপাদান নামে অভিহিত। সারা বিশ্বজুড়ে আধুনিক সময়ের ইতিহাস লেখার উপাদানের বৈচিত্র্য অনেক বেশি। ভারতের ইতিহাসও তার ব্যতিক্রম নয়।


 ইতিহাসের উপাদান:-  আধুনিক ভারতের ইতিহাসের উপাদানের মধ্যে প্রশাসনিক কাগজপত্র, বই, ডায়ারি, চিঠি, জমি বিক্রির দলিল, রোজকার বাজারের ধর্ম, ফোটোগ্রাফ বা ছবি, পোস্টার, সংবাদ, বিজ্ঞাপন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। তবে এই সব উপাদান অতি সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে।



আত্মজীবনী: ইতিহাসের উপাদানরূপে আত্মজীবনী একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। যিনি আত্মজীবনী লিখেছেন, তিনি তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি  ও বিচারধারা অনুযায়ী ঘটনার ব্যাখ্যা করেছেন। ঐতিহাসিকগণ রচয়িতার ব্যাখ্যা বিচার করে তবেই তা ইতিহাসে লিপিবদ্ধ করেন।


 ফোটোগ্রাফ: ইতিহাসের আধুনিক যুগের কোনো বিষয় জানার অন্যতম প্রধান উপাদান ফোটোগ্রাফ বা ক্যামেরায় তোলা ছবি । এইরকম ছবির সংগ্রহ থেকে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনতিক ইতিহাসের নানা তথ্য জানা যায়।


 প্রশাসনিক কাগজপত্র:-  আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনা অনার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল প্রশাসনিক কাগজপত্র। প্রশাসনিক দলিল-দস্তাবেজ থেকে প্রশাসনের আইনকানুন, দৈনন্দিন কাজকর্ম কর্মসূচি তথা সরকারের ভূমিকা সম্পর্কে নানা কথা জানা যায়।

সংবাদপত্র :- ইতিহাস রচনার আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো সংবাদপত্র বিভিন্ন সংবাদপত্রে পরিবেশিত দৈনন্দিন সংবাদ ইতিহাস রচনায় সাহায্য করে তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে ইতিহাসের বিভিন্ন প্রধান ব্যবহার করার আগে তার সত্যতা যাচাই করে নেয়া উচিত।

মন্তব্য:-  আধুনিক ভারতের সমাজ রাজনীতি সংস্কৃতি মানুষের জীবনযাত্রা কিরূপ ছিল তা ভবিষ্যৎ কে দিশা দিবে আধুনিক যুগের নানা উপাদান ইতিহাস এইসব উপাদানের উপর নির্ভর করে আপন গতিতে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবে।

3. সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে উপনিবেশবাদের সম্পর্ক কি ভারতের ইতিহাসে এর কি প্রভাব পড়েছিল? 

উত্তর:- সাম্রাজ্যবাদ লাতিন ইম্পরিয়াম শব্দটি থেকে ইম্পেরিয়ালিজম বা সাম্রাজ্যবাদ শব্দটির সৃষ্টি। পরবর্তীকালে এর ব্যাখ্যা করা হয় এভাবে বড় রাষ্ট্রের দ্বারা অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র বা দুর্বল গাছের উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা। ব্রিটিশ ঐতিহাসিকরা সাম্রাজ্যবাদ শব্দটিকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। বিশ্বের প্রথম ব্রিটিশরাযই অন্য দেশের উপর তাদের ক্ষমতা বিস্তারের নীতি গ্রহণ করে এর থেকেই জন্ম হয় উপনিবেশবাদের ।

উপনিবেশবাদ উপনিবেশবাদ শব্দটি এসেছে ইংরেজি কলোনি শব্দ থেকে। যখন কোন ক্ষুদ্র বা দুর্বল রাষ্ট্র বৃহৎ রাষ্ট্র দ্বারা অধীনস্থ হয় তখন সেই অধীনস্থ রাষ্ট্রকে বৃহৎ রাষ্ট্রের উপনিবেশ বলে। লাতিন কলমিয়া শব্দটি থেকে উপনিবেশবাদ বা 'কলোনিয়ালিসম' শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। উপনিবেশবাদ বলতে বোঝায়, কোনো ভৌগোলিক এলাকার ওপর শাসন প্রতিষ্ঠা করে সেখানকার রাজনীতি, অর্থনীতি, সভ্যতা ও সংস্কৃতির ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা ৷


উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক: প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে যখন কোনো রাষ্ট্র শক্তিশালী হয়ে ওঠে ঠিক তখনই সেই রাষ্ট্র অপেক্ষাকৃত দুর্বল রাষ্ট্রের ওপর তাদের শাসন প্রতিষ্ঠা করে। এই সময় থেকে ‘সাম্রাজ্যবাদ’ এবং ‘উপনিবেশবাদ' শব্দ দুটি যুক্ত হয়েই ‘ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদ' ধারণার উৎপত্তি হয়। সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রটি তাদের নীতি, আদর্শ, পুঁজি, ধর্মীয় ধারণা এবং উৎপাদিত দ্রব্য ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রের ওপর চাপিয়ে দেয়।


 ভারতের ওপর এর প্রভাব: ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে ভাস্কো-দা-গামা কালিকট বন্দরে অবতরণের পর থেকে ইউরোপীয় বণিকরা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ভারতে আসতে শুরু করে। পোর্তুগিজ, ওলন্দাজ, ইংরেজ, ফরাসি প্রভৃতি বণিক জাতি ভারতে বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে উপনিবেশ স্থাপন করে। ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশির যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজ-উদদৌলা, এবং ১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দে বাংলার নবাব মিরকাশিম, অযোধ্যার নবাব সুজা উদদৌলা ও মোগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমকে পরাজিত করে ইংরেজরা বাংলা, অযোধ্যা, দিল্লিতে আধিপত্য বিস্তারে অগ্রসর হয়। দাক্ষিণাত্যে ফরাসি, ওলন্দাজদের পরাজিত করে ইংরেজরা প্রায় একচ্ছত্র ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হয়। এর পরে একে একে হায়দার আলি, টিপু সুলতান, মারাঠা ও শিখদের পরাজিত করে ব্রিটিশরা। এইভাবে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে প্রায় সমগ্র ভারতে ব্রিটিশ উপনিবেশ স্থাপিত হয়।


No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();