ভারতে ব্রিটিশ শক্তির প্রতিষ্ঠা ও সাম্রাজ্য বিস্তার :১৭৫৭-১৮৫৭(The Establishment of British power in India:1757-1857) - SM Textbook

Fresh Topics

Friday, July 28, 2023

ভারতে ব্রিটিশ শক্তির প্রতিষ্ঠা ও সাম্রাজ্য বিস্তার :১৭৫৭-১৮৫৭(The Establishment of British power in India:1757-1857)

  ভারতে ব্রিটিশ শক্তির প্রতিষ্ঠা ও সাম্রাজ্য বিস্তার :১৭৫৭-১৮৫৭(The Establishment of British power in India:1757-1857)



বাণিজ্যিক সমৃদ্ধিও ভারতের প্রচুর ঐশ্বর্য্যের আকর্ষণের খ্রিস্টীয় ষোড়শ ও সপ্তদশ শতকে ইউরোপীয় বণিকরা ভারতে আসতে থাকে। ভারতে নানা স্থানে তাদের বাণিজ্য কুঠি নির্মাণ করেন ,এমনকি অনেকে দুর্গ নির্মাণ করেন নিজেরা  আধিপত্য বিস্তারে উদ্যোগী হন এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল পর্তুগিজ ,ওলন্দাজ ,ইংরেজ, ফরাসি প্রভৃতি। 1760 খ্রিস্টাব্দে ঔরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর রাজতন্ত্র এর দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তারা ভারতীয় রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে শুরু করেন এবং কালক্রমে ভারতে ইংরেজ বণিকদের রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।


পলাশীর যুদ্ধ: বাংলাদেশে প্রথম ইংরেজ বণিকদের রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলার নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ 1717 _27 খ্রিস্টাব্দে সুজাউদ্দিন খান 1727 -39 খ্রিস্টাব্দ আলীবর্দী খাঁ 1747 - 56 খ্রিস্টাব্দ ইংরেজ বণিকদের শক্তি সম্পর্কে সজাগ ছিলেন এবং তাদের সঙ্গে বিরোধ এড়িয়ে চলতেন। সিরাজউদ্দৌলা 1756 -57 খ্রিস্টাব্দে বাংলার সিংহাসনে বসলে তার সঙ্গে ইংরেজদের বিরুদ্ধে শুরু হয়। ইংরেজ বণিকরা বাংলায় বিনাশুল্কে বাণিজ্য করতে চাইত ,নবাবের নিষেধ সত্ত্বেও তারা বাংলায় দুর্গ নির্মাণ করত ,এগুলি নবাবের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না । নবাবের আত্মীয়রাও তার বিরোধিতা করেছিল, এছাড়া তরুণ নবাব সিরাজের আচার-আচরণে মুর্শিদাবাদের রাজকর্মচারী সম্প্রদায় প্রবল ক্ষুব্ধ ছিলেন তারা নবাব কে সরিয়ে তার সেনাপতি মীর জাফর কে সিংহাসনে বসবার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। তাদের আহবানে ইংরেজ বণিকদের গভর্নর লর্ড ক্লাইভ এই ষড়যন্ত্রে যোগদান স্থির হয় যে মির্জাপুর সিংহাসনে বসলে তিনি ইংরেজ কোম্পানিকে প্রচুর অর্থ ও বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধা দেবেন 1757 খ্রিস্টাব্দে 23  জুন পলাশী প্রান্তরে সিরাজের সঙ্গে ইংরেজদের যুদ্ধ হয়, এই যুদ্ধে পলাশীর যুদ্ধ নামে খ্যাত ।এই যুদ্ধে জয়লাভের ফলে বাংলা রাজনীতিতে ইংরেজ কোম্পানির কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠিত হয় ।নতুন নবাব মীর জাফর সম্পন্ন  কোম্পানির হাতের পুতুলে পরিণত হন, এবং বাংলা কে কেন্দ্র করে সমগ্র ভারতে ইংরেজ সাম্রাজ্য বিস্তারে পথ উন্মুক্ত হয়।

মীরজাফর: কোম্পানি ও তার কর্মচারীদের বিপুল পরিমাণ অর্থ উপঢৌকন দিয়ে মির্জাপুর 1757 -60 খ্রিস্টাব্দে বাংলার মসনদে বসেন তিনি ছিলেন কোম্পানির হাতের পুতুল এসময় রাজ্যের সকল ক্ষমতা কোম্পানির হাতে চলে যায়। ইংরেজদের চাহিদামত ক্রমাগত বিপুল পরিমাণ অর্থ জোগাড় করার শক্তি না থাকায় কোম্পানি তাকে সরিয়ে তার জামাতা মীর কাশিম বাংলার নবাব বলে ঘোষণা করে।


বক্সারের যুদ্ধ: মীর কাসিম 1760 থেকে 63 খ্রিস্টাব্দে ছিলেন  বাংলার স্বাধীনচেতা নবাব ।ইংরেজদের হাতের পুতুল ছিলেননা সিংহাসনে বসে কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি মত সব প্রাপ্য মিটিয়ে দিয়ে তিনি রাজ্যের পূনর্গঠনের মনোনিবেশ করেন। এসময় কোম্পানির কর্মচারীরা দস্তকের অপব্যবহার করে বাংলায় বিনাশুল্কে বাণিজ্য করত এতে নবাব ও দেশীয় বণিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হত। নবাব এ ব্যাপারে বারংবার প্রতিবাদ জানান ,কিন্তু তাতে কোনো সুফল হয়নি এই কারণে নবাব দেশীয় বণিকদের উপর থেকে বাণিজ্য শুল্ক তুলে দেন ।এটা ইংরেজদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না ।এর ফলে দু'পক্ষের যুদ্ধ শুরু হয় কাটোয়া, গীরিয়া ও উদয়নালার  পরপর তিনটি যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মীরকাশিম অযোধ্যার পলায়ন করেন ।তারপর অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলা ও দিল্লির বাদশাহ দ্বিতীয় শাহ আলমের সঙ্গে মিলিত হয়ে তিনি ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করেন।1764 খ্রিস্টাব্দে বক্সারের যুদ্ধে এই সম্মিলিত বাহিনী পরাজিত হয় ।ভারতে ইংরেজ সাম্রাজ্য বিস্তারে ইতিহাসে পলাশীর যুদ্ধ অপেক্ষা বক্সারের যুদ্ধের গুরুত্ব অনেক বেশি। পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের যে প্রভুত্ব লাভ হয় বক্সারের যুদ্ধে তা সুপ্রতিষ্ঠিত। হয় বক্সারের যুদ্ধের ফলে বাংলায় ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হয় ।নবাব কোম্পানির হাতের পুতুলে পরিণত হন ।বাংলার বুকে কোম্পানির লুণ্ঠন শুরু হয় ,এবং অযোধ্যার নবাব কোম্পানির অনুগত ও মোগল সম্রাট কোম্পানির বৃত্তিভোগী তে পরিণত হন। 


দেওয়ানি লাভ:  মীরকাশিম এর সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে 1763 খ্রিস্টাব্দে কোম্পানি তাকে পদচ্যুত করে মীরজাফরকে (1763 _65) খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে বসায়। 1765 খ্রিস্টাব্দে তার মৃত্যু হলে তার নাবালক পত্র নজম- উদ্দৌলা সিংহাসনে বসেন ।কোম্পানির সঙ্গে এক চুক্তির মাধ্যমে তিনি কোম্পানির বৃত্তিভোগী পুতুলে পরিণত হন, এবং তার সকল সামরিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা হস্তান্তরে কোম্পানি বাংলার প্রকৃত শাসক এ পরিণত হয় ।1765 খ্রিস্টাব্দে কোম্পানির নামে মাত্র বাদশাহ দ্বিতীয় শাহ আলম এর কাছ থেকে বাংলা বিহার উড়িষ্যার দেওয়ানী অধিকার লাভ করে স্থির হয় যে, এর বিনিময় কোম্পানি শাহ আলম কে কারা ও এলাহাবাদ প্রদেশ এবং বার্ষিক 26 লক্ষ টাকা দেবে দেওয়ানি লাভের ফলে বাংলায় বাহুবলে দ্বারা অর্জিত কোম্পানির অধিকার স্বীকৃত হয় এবং কোম্পানি বাংলায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে।


প্রথম ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ: 1767 খ্রিস্টাব্দে ভেরেলেস্ট বাংলার গভর্নর হয়ে আসেন ।এসময় ভারতে মারাঠা মহীশূর রাজ্য ছিল ইংরেজদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এবং ভারতে ইংরেজ শক্তির সম্প্রসারনের পথে প্রধান অন্তরায়। এসময় মহীশূরের হায়দার আলীর উত্থান ঘটে দাক্ষিণাত্যের অপর তিন শক্তি ইংরেজ মারাঠা ও হায়দ্রাবাদের নিজাম আতঙ্কিত হয়ে ওঠে এবং হায়দারের বিরুদ্ধে তারা একটি শক্তি জোট গঠন করে। 1764 খ্রিস্টাব্দে প্রথম ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত 1769 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজরা হায়দার আলীর সঙ্গে সন্ধি স্বাক্ষরে বাধ্য হয় ।এই সন্ধি মাদ্রাজের সন্ধি (1769)নামে পরিচিত এই সন্ধি দ্বারা দু'পক্ষের মধ্যে সমস্যার কোন স্থায়ী সমাধান হয়নি।


দ্বিতীয় ইঙ্গ- মহীশূর যুদ্ধ: 1772 খ্রিস্টাব্দে ওয়ারেন হেস্টিংস গভর্নর হয়ে ভারতে আসেন । 1784 খ্রিস্টাব্দে ইংরেজরা মহীশুরের অন্তর্গত ফরাসি বাণিজ্য কেন্দ্র দখল করলে হায়দার আলী ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ যাত্রা করেন ,এবং দ্বিতীয় ইঙ্গ মহীশূর যুদ্ধ শুরু হয় ।যুদ্ধ চলাকালে হায়দার আলীর মৃত্যু ঘটে তার পুত্র টিপু সুলতান যুদ্ধ চালিয়ে যায় 1784 খ্রিস্টাব্দে ম্যাঙ্গালোরের সন্ধি দ্বারা দ্বিতীয় ইঙ্গ মহীশূর যুদ্ধের অবসান ঘটে এবং একে অন্যের অধিকৃত স্থান গুলি পরস্পরকে ফেরত দেন ওয়ারেন হেস্টিংস এই সন্ধিকে অপমানজনক শান্তি বলে অভিহিত করেন।

তৃতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ: লর্ড কর্নওয়ালিসের আমলে ইঙ্গ-মহীশূর সম্পর্ক আবার তিক্ত হয়ে ওঠে। ইংরেজ ও মহীশূর দু'পক্ষে জানত যে ম্যাঙ্গালোরের সন্ধি একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতি মাত্র এজন্য দুপক্ষই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল। 1790 খ্রিস্টাব্দে টিপু ইংরেজদের মিত্র রাজ্য ত্রিবাঙ্কুর আক্রমণ করলে তৃতীয় ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ শুরু হয়। নিজাম ও মারাঠা ইংরেজদের পক্ষে যোগদান করেন ।দু'বছর ধরে বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের পর ত্রি- শক্তি জোটের কাছে পরাজিত হন ।তার রাজধানী শ্রীরঙ্গপত্তম অধিকৃত হয় এবং তিনি শ্রীরঙ্গপত্তমের সন্ধি 1792 খ্রিস্টাব্দে  স্বাক্ষরে বাধ্য হন । এই সন্ধি দ্বারা১) টিপু তার রাজ্যের অর্ধাংশ ইংরেজদের ছেড়ে দেন। ইংরেজরা এই অংশটি নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন। ইংরেজদের তিন কোটি 30 লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে সম্মত হন। এই সন্ধির দ্বারা দাক্ষিণাত্যে ইংরেজ শক্তি যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।


চতুর্থ ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ: লর্ড ওয়েলেসলি ঘোরতর সাম্রাজ্যবাদী শাসক ছিলেন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্য বিস্তারের উদ্দেশ্যে তিনি অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি নামে এক সাম্রাজ্যবাদী নীতি প্রবর্তন করেন ।এতে বলা হয় যে সমস্ত দেশীয় রাজা এই নীতি মেনে নেবেন ।কোম্পানি তাদের অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ ও বৈদেশিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করবে। কিন্তু কোম্পানির বিনা অনুমতিতে কোন যুদ্ধ ঘোষণা বা শান্তি স্থাপন করা যাবে না। এইসব রাজ্যে ইংরেজরা থাকবে এবং তাদের ব্যয় নির্বাহের জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যের কিছু অংশ ইংরেজদের ছেড়ে দিতে হবে। এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করা ছিল পরাধীনতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করা। দেশীয় রাজ্যের মধ্যে সর্বাপেক্ষা দুর্বলচিত্ত নীতিহীন ও হায়দ্রাবাদের নিজাম সর্বপ্রথম এই দাসত্বের চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন তারপর একে একে তাঞ্জোর ,ভোপাল, উদয়পুর, মালব, বুন্দেলখন্ড, কর্ণাটক,  সুরাট এবং পেশোয়া এই নীতি মেনে নেয় ।টিপু সুলতান এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে চতুর্থ ইঙ্গ-মহীশূর যুদ্ধ শুরু হয় ।টিপু সুলতান পরপর দুটি যুদ্ধে পরাজিত হয় এবং রাজধানী শ্রীরঙ্গপত্তমের আশ্রয় নেয় ।শত্রুপক্ষ রাজধানী অপরাধ করে এবং টিপু সুলতান যুদ্ধে পরাজিত হন এবং নিহত হন ।তার মৃত্যুতে স্বাধীন মহীশূর রাজ্যের পতন ঘটে এবং মহীশুরের একাংশে ইংরেজ আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। এইভাবে ইংরেজরা ভারতে তাদের এক শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীর হাত থেকে রক্ষা পায়।

প্রথম ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধ: পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের শোচনীয় পরাজয়ের পর মারাঠা শক্তির সাময়িক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। পেশোয়া মাধব রাও এর আমলে মারাঠারা ধীরে ধীরে শক্তিশালী হয়ে ওঠে ।তাঁর মৃত্যুর পর তার তার ভ্রাতা নারায়ণ রাও সিংহাসনে বসলে  পিতৃব্য রগুনাথ রাও নারায়ণ রাও কে হত্যা করে সিংহাসনে বসেন ।ক্ষুব্ধ মারাঠা নেতৃবৃন্দ রঘুনাথরাও কে সিংহাসন থেকে বিতাড়িত করেন এবং মৃত নারায়ন রাও এর শিশুপুত্র মাধবরাও নারায়ন কে সিংহাসনে বসান। রঘুনাথ রাও তখন বোম্বাইয়ের ইংরেজ কর্তৃপক্ষের শরণাপন্ন হন এবং বিপক্ষে সুরাটের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। রঘুনাথের পক্ষ নিয়ে ইংরেজ সেনাদল ঢুকে পড়ে এর ফলে প্রথম ইঙ্গ মারাঠা যুদ্ধের সূচনা হয়। কয়েক বছর যুদ্ধ চলার পর 1782 খ্রিস্টাব্দে সলবাইয়ের সন্ধি দ্বারা এই যুদ্ধ বন্ধ হয় সন্ধির শর্তানুসারে ইংরেজরা মাধবরাও নারায়ণকে পেশোয়া বলে স্বীকার করে ও রঘুনাথপুর এর পক্ষ ত্যাগ করে ।

দ্বিতীয় ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধ: অষ্টাদশ শতকের শেষ দিকে মারাঠা রাজ্যের নানা ধরনের অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখা দেয় এ সময় ভোঁসলে হলদিয়া প্রমুখ সামন্ত প্রভু কার্যত স্বাধীন হয়ে ওঠেন ।তাদের মধ্যে সর্বদাই অন্তর্দ্বন্দ্ব লেগেই থাকত। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দে বিশিষ্ট কূটনীতিক নানা ফড়নবিশ এর মৃত্যুর পর এই অন্তর্দ্বন্দ্ব আরো জটিল আকার ধারণ করে ।দুর্বলচিত্ত পেশোয়া দ্বিতীয় বাজিরাও এর পক্ষে এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল না ।তিনি এই অন্তরে নানা সময় নানা পক্ষকে ইন্ধন দিতেন। এতে ক্ষুব্ধ হোলকার তার রাজধানী পুনা আক্রমণ করে তাকে সেখান থেকে বিতাড়িত করেন ।তখন ইংরেজদের শরণাপন্ন হন এবং রাজ্য পুনরুদ্ধারের আশায় ১৮০২ খ্রিস্টাব্দে বেসিনের সন্ধি দ্বারা অধীনতামূলক মিত্রতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বেসিনের সন্ধি মারাঠা জাতির ধুলায় লুণ্ঠিত করে। সিন্ধিয়া ও ভোঁসলে সন্ধি মানতে রাজি ছিলেন না।  তিনি সিন্ধিয়া ও ভোঁসলে কে গোপনে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে উৎসাহিত করতে থাকেন ও ভোঁসলে কোম্পানির মিত্র নিজামের রাজ্য আক্রমণ করলে দ্বিতীয় ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধ শুরু হয় ।পরপর কয়েকটি যুদ্ধে পরাজিত হয়ে তারা ইংরেজদের অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এর ফলে উড়িষ্যা ,মধ্যপ্রদেশ উপত্যাকা ইংরেজদের অধিকারে আসে। বেসিনের সন্ধি ও দ্বিতীয় ইঙ্গ মারাঠা যুদ্ধের পর ইংরেজরা ভারতে সর্বেসর্বা হয়ে ওঠে।

১৮১৮থেকে ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সমগ্র ভারতে ব্রিটিশ শক্তি বিস্তৃত হয়। সিন্ধু পাঞ্জাব অযোধ্যা সমগ্র ভারত ও প্রচুর ক্ষুদ্র রাজ্য এ সময় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত হয়।




No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();