প্রাণীদের সাড়াপ্রদানের একটি প্রকার হিসেবে গমন (Locomotion as a type of response in animals): দশম শ্রেণীর জীবনবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় ১.৫ | class 10 lifescience chapter 1St 1.5 question answer||WB suggetion life sciences 2024 |
রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর:
প্রশ্ন 1. গমন ( Locomotion) কাকে বলে? প্রাণীদের গমনের চালিকাশক্তি বা উদ্দেশ্যগুলি লেখো। অথবা, প্রাণীদের গমনের প্রয়োজনীয়তাগুলি লেখো। ** [ME 209,04]
উত্তর: গমন (Locomotion) : যে পদ্ধতিতে বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উদ্দীপকের প্রভাবে বা স্বতঃস্ফূর্তভাবে জীব তাদের অনাপ্রত্যা স্যালনের মাধ্যমে সামগ্রিকভাবে স্থান পরিবর্তন করে, তাকে গমন বা লোকোমোশন বলে। ●
প্রাণীদেহ গমণের চালিকাশক্তি বা উদ্দেশ্য :
1. খাদ্য সংগ্রহ : কিছু নিম্নশ্রেণির প্রাণী (যেমন- স্প) ছাড়া সমস্ত উন্নত শ্রেণির প্রাণীরা খাদ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করে।
2. আত্মরক্ষা : বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশের হাত থেকে বাঁচতে বা খাদক প্রাণীর শিকারে পরিণত হওয়া এড়িয়ে চলার জন্য প্রাণীরা নিরাপদ স্থানে গমন করে।
3 • প্রজনন ও বংশবিস্তার প্রাণীরা প্রজনন ও বংশবিস্তারের জন্য, উপযুক্ত সঙ্গী বা সঙ্গিনী খোঁজার উদ্দেশ্যে, উপযুক্ত নিরাপদ স্থানে অপত্যের জন্মদান ও প্রতিপালনের জন্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন করে।
যেমন— 'স্যামন মাছ' বা 'অলিভ রিডল’ নামে এক কচ্ছপ উপযুক্ত প্রজনন স্থল খোঁজার জন্য সমুদ্রে শত শত কিলোমিটার সাঁতার কেটে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছায়। আবার, ইলিশ মাছও ডিম পাড়তে সমুদ্র থেকে নদীতে আসে।
4. অনুকূল পরিবেশের সন্ধান : সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বাঁচার জন্য প্রাণীদের অনুকূল পরিবেশে গমন ঘটে। যেমন— পরিযায়ী পাখিরা উয়তার খোঁজে দূর দেশে চলে যায়।
5. প্রতিযোগিতা হ্রাস : খাদ্য ও বাসস্থান সীমিত হওয়ার জন্য, বিভিন্ন বাহ্যিক পরিবেশে অভিযোজিত হয়ে প্রাণীরা গমনের মাধ্যমে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। ফলে, প্রতিযোগিতা হ্রাস পায়।
অনুরূপ প্রশ্ন : (1) বিশ্রামরত একটি প্রাণী গমনে উদ্যত হল। এর চারটি সম্ভাব্য কারণ উল্লেখ করো। (2) প্রাণীদের গমনের তাৎপর্য লেখো। [ME 18] |
প্রশ্ন 2 . অ্যামিবার (Amoeba) গমন পদ্ধতি চিত্রসহ বর্ণনা করো। অথবা, ক্ষণপদ (Pseudopodia) গঠনের মাধ্যমে অ্যামিবার গমন পদ্ধতির (Amoeboid movement) বর্ণনা দাও। ★ ★ ★
উত্তর : অ্যামিবার গমন পদ্ধতির নাম: অ্যামিবয়েড গমন পদ্ধতি।
অ্যামিবার গমন অজ্ঞা : ক্ষণপদ বা সিউডোপোডিয়া।
অ্যামিবার গমন পদ্ধতি : অ্যামিবা এককোশী প্রাণী। অ্যামিবা এক বিশেষ উপায়ে গমন সম্পন্ন করে। অ্যামিবার গমনের সময় যে- সকল ঘটনাগুলি ঘটে সেগুলি হল—
1. অ্যামিবার যেদিকে অগ্রসর হওয়ার প্রয়োজন হয় সেইদিকে সাইটোপ্লাজমের এক অস্থায়ী প্রলম্বিত ভোঁতা অংশ তৈরি হয়, একে ক্ষণপদ বা সিউডোপোডিয়া (Pseudopodia) বলে।
2. প্রথমে অনেকগুলি ক্ষুদ্র ক্ষণপদের সৃষ্টি হয়। কিন্তু, এদের মধ্যে একটি বৃদ্ধি পায় এবং অন্যগুলি বিলুপ্ত হয়।
3. ক্ষণপদ গঠনের সময় দেহের অন্যান্য অংশ থেকে প্রোটোপ্লাজমের এক প্রবাহ (flow) তৈরি হয় এবং ক্ষণপদটি সামনের দিকে অগ্রসর হয়ে তলের ওপর আবদ্ধ হয় ও পশ্চাদ্ভাগের দেহাংশ সামনের দিকে এগিয়ে আসে। ফলে, অ্যামিবা ধীরে ধীরে স্থান পরিবর্তন করে।
4 • এই পদ্ধতির পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে অ্যামিবা ক্রমশ সামনের দিকে অগ্রসর হয়। ক্ষণপদ তৈরির মাধ্যমে অ্যামিবার এই জাতীয় গমনকে অ্যামিবয়েড গমন (Amoeboid বলে। movement)বলে।
Advanced Studies :
অ্যামিবার গমনে সল-জেল মতবাদ : ও অ্যামিবার কোশে সাইটোপ্লাজম দুভাবে অবস্থান করে। যথা- (i) কোশের কেন্দ্রে অপেক্ষাকৃত তরল সাইটোপ্লাজম বা এন্ডোপ্লাজম (একে 'সল' অবস্থা বলে) এবং (ii) কোশের পরিধির দিকে অপেক্ষাকৃত বেশি ঘনত্বযুক্ত এক্টোপ্লাজম (একে 'জেল' অবস্থা বলে)। ও ক্ষণপদ গঠনের সময় এন্ডোপ্লাজম (সল: Sol) সামনের দিকে প্রবাহিত হয় এবং কোশের পিছনের দিকের এক্টোপ্লাজম এন্ডোপ্লাজমে পরিণত হয়ে (Gel to Sol) চাপ সৃষ্টি করে। এর ফলে, সামগ্রিকভাবে প্রোটোপ্লাজমটি সামনের দিকে অগ্রসর হয়। © ক্ষণপদের সম্মুখপ্রান্তে এন্ডোপ্লাজম এক্টোপ্লাজমে পরিণত হয়, (Sol to Gel) যা কোশের পিছনে এসে পুনরায় এন্ডোপ্লাজমে, রূপান্তরিত হয়। o এভাবে সল-জেল রূপান্তরের মাধ্যমে অ্যামিবা একপ্রকার হাইড্রোস্ট্যাটিক কঙ্কাল (তরলপূর্ণ কাঠামো) গঠনের মাধ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
প্রশ্ন 3 . সিলিয়ার সাহায্যে প্যারামেসিয়ামের গমন পদ্ধতি চিত্রসহ বর্ণনা করো।
উত্তর: সিলিয়ারি গমন (Ciliary movement)
গমন অঙ্গ : দেহের পরিধি বরাবর বিন্যস্ত অসংখ্য সিলিয়া (Cilia)।
গমন পদ্ধতি : প্যারামেসিয়াম জলে সিলিয়ার সাহায্যে দু প্রকার গমন সম্পন্ন করে। যথা – o কিপিং বা হামাগুড়ি (Creeping) এই সিলিয়া 6 সম্ভৱণ (Swimming)।
(i) প্যারামেসিয়াম ক্রিপিং বা হামাগুডি পদ্ধতিতে দেহের এক দিকের সমস্ত সিলিয়া জলতলের মধ্যে দিয়ে ধীরে ধীরে একস্থান থেকে অন্যস্থানে গমন করে।
(ii) সন্তরণ পদ্ধতিতে সিলিয়ার বরুচলন ধারা।। প্যারামেসিয়াম জলের মধ্যে আঘাত করে। এর সিরিয়ার সাহায্যে প্যারামেসিয়ামের গমন ফলে, দেহের পিছনের দিকে জলের প্রবাহ তৈরি হয় ও প্যারামেসিয়ান সামনের দিকে এগিনো যায়।।
((iií) সন্তরণের সময় সিলিয়াগুলিতে নিয়ন্ত্রিতভাবে মেটাক্রোনাস ছন্দের (Metachronous rhythm) সম্পালন ঘটে।
\((iv) প্যারামেসিয়ামের গমন কোনো কারণে ব্যাহত হলে এটি তৎক্ষণাৎ এর গতিমুখ বিপরীত দিকে করে নিতে পারে।
জেনে রাখো : আণুবীক্ষণিক প্যারামেসিয়াম জলে প্রায় 180mm / min গতিবেগে গমন করে।
প্রশ্ন 4 . ফ্ল্যাজেলার সাহায্যে ইউগ্লিনার গমন পদ্ধতি চিত্রসহ সংক্ষেপে বর্ণনা করো।
উত্তর: ইউগ্লিনার গমন পদ্ধতির নাম : ফ্ল্যাজেলারি গমন (Flagellary movement)।
গমন অঙ্গ : ফ্ল্যাজেলা (Flagella)।
গমন পদ্ধতি : 1• ইউমিনার দেহের বাইরে প্রসারিত চাবুকের মতো ফ্ল্যাজেলাটি আন্দোলিত হয়ে কোশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।
2 . ফ্ল্যাজেলামটি (বহুবচনে ফ্ল্যাজেলা) নৌকার পাঁড়ের মতো জলের মধ্যে প্রথমে আন্দোলিত হয়ে একপ্রকার গমন বল সৃষ্টি করে। একে ফ্ল্যাজেলার সাহায্যে ইউ পাওয়ার স্ট্রোক (Power stroke) বলে। এরপরে রিকভারি স্ট্রোকের (Recovery stroke) দ্বারা পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে।
3. এর ফলে, গাজোমের মধ্যে একটি তরঙ্গায়িত গতির সৃষ্টি হয়, যেটি ফ্ল্যাজেলামের গোড়া থেকে শীর্ষের দিকে পরিবাহিত হয় এবং ফ্ল্যাজেলাগুলি পার্শ্বীয়ভাবে সঞ্চালিত বা আন্দোলিত হয় (গড়ে প্রায় 12 বার / সেকেন্ড)।
4. ফ্ল্যাজেলার এই সঞ্চালন বা আন্দোলনের ফলে ইউমিনার সম্পূর্ণদেহ স্কুর মতো পেঁচিয়ে আবর্তিত হয় এবং Called ইনোসোমা, মকটিকা, জিনার্ডিয়া প্রভৃতি কোন জেলার গমন দেখা যায়। অগ্রসর হয়।
প্রশ্ন 5. মাছের গমনের সঙ্গে জড়িত অঙ্গের নাম লেখো। গমনে তাদের ভূমিকা ব্যাখ্যা করো। [ME 13.09.07
উত্তর : মাছের গমনাঙ্গ:সাতটি রশ্মিযুক্ত পাখনা ও মায়োটোম পেশি।
মাছের গমনে পাখনার ভূমিকা : মাছের প্রধান গমন অঙ্গ হল রশ্মিযুক্ত পাখনা। মাছের মোট সাতটি পাখনা থাকে। এই পাখনাগুলির নাম হল— O বক্ষ পাখনা (২টি), ০ শ্রোণি পাখনা (2টি), ও পৃষ্ঠ পাখনা (18), ও পায়ু পাখনা (৭টি), পুচ্ছ পাখনা (৭টি)। অর্থাৎ, বক্ষ পাখনা ৩ শ্রোণি পাখনা হল জোড় পাখনা এবং পৃষ্ঠ পাখনা, পায়ু পাখনা ও পুচ্ছ পাখনা হল বিজোড় পাখনা । পাখনার নাম o বক্ষ পার্থনা (মুটি) মনে ভূমিকা মাছকে জলের বাধা কেটে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। মাছকে জলের গভীরে যেতেও ভেসে উঠতে সাহায্য করে এবং জলের মধ্যে মাছকে স্থিরভাবে ভেসে থাকতে সাহায্য করে। বক্ষ পাখনার ন্যায় মাহতে জলের বাধা কেটে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। জলের মধ্যে মাছকে স্থিরভাবে ভেসে ০ শ্রোণি পাখনা (দুটি) থাকতে সাহায্য করে। মাহকে দেহের ভারসাম্য বজায় রেখে অগ্রসর হতে সাহায্য করে। o পৃষ্ঠ পাখনা (একটি) o পায়ু পাখনা (একটি দেহের ভারসাম্য বজায় রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে। ও পুচ্ছ পাখনা (একটি) নৌকার হালের মতো মাছকে দিক পরিবর্তনে সাহায্য করে। জলের উপর পুচ্ছের বা লেজের আঘাতে যে বল তৈরি হয়, তার প্রভাবে মাছের গমন ঘটে।।
মাছের গমণে মায়োটোস পেশির ভূমিকা: ও মেরুদণ্ডের দুপাশে "V' আকৃতির মায়োটোম পেশি বর্তমান। ও দেহের এক দিকে মায়োটোন পেশিগুলি সংকুচিত হলে অপর দিকের পেশিগুলি প্রসারিত হয়। পর্যায়ক্রমিক এই সংকোচন-প্রসারণের ফলে মাছের দেহ ভরলোর আকারে আদোলিত হয় এবং এঁকেবেঁকে সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
প্রশ্ন 6 . সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি বা সচল অস্থিসন্ধি কাকে বলে। মানবদেহে উপস্থিত বিভিন্ন সচল অস্থিসন্ধি, সংশ্লিষ্ট বৈশিষ্ট্য সারণি আকারে লেখো।
উত্তর : সচল জান্যিমণ্ডি বা সান অমি (Synovial Joints) : যে প্রকার অস্থিসন্ধিতে পর্দাবেষ্টিত, পিচ্ছিল তরল পদার্থপূর্ণ গহ্বর থাকে এবং সংলগ্ন অস্থি দুটি পরস্পরের সঙ্গে লিগামেন্ট দ্বারা যুক্ত থাকে, তাকে সচল অস্থিসন্ধি বলে। এই প্রকার অস্থিসন্ধি সর্বদা সচল থাকে।
উদাহরণ- কোমর, কাঁধ, কনুই প্রভৃতি স্থানের অস্থিসন্দি। মাপরাদাহ উপস্থিত সচল অসিি সচল অস্থিসন্ধির নাম কবজা সদি (Hinge joint) বৈশিষ্ট্য (i) একটি অস্থিপ্রান্ত উত্তল ও অপর প্রান্থটি অবতল হয়। কনুই বা গোড়ালিতে দেখা যায়। (ii) সন্ধিসংলগ্ন অস্থিগুলি করার মতো কেবলমাত্র একই দিকে (সামনে বা পিছনে) চালিত হতে পারে।বল ও সকেট সি o Socket Advanced Studies (Ball and joint) গোলাকার মস্তক স্থাপিত থাকে। (ii) এই সন্ধিতে অস্থিয় সবথেকে বেশি সচল থাকে। সংশ্লিষ্ট অঙ্গ (1) কাঁধের সোলডার অস্থি ও হাতের হিউমেরাস অস্থির সন্ধি (কাঁধের সন্ধি)। (ii) পেলভিক মার্ভেলের সন্ধ্যে পায়ের ফিমার অস্থির সন্ধি (নিতম্ব সন্ধি)। নিঃস্ব মলি আমিটালাম সিমার অস্থির মাধ্য বল ও সকেট সবি
মানবদেহে উপস্থিত আরোও বিভিন্ন প্রকার সচল সচল সন্ধির নাম।
বৈশিষ্ট্য সমতল সম্প (i) সংলগ্ন অস্থি দুটির পরিচিত সাধারণত চ্যাপটা (flat) হয়। (Gliding joint) (ii) কেবলমাত্র পাশাপাশি এবং সামনে-পিছনে সঞ্চালন ঘটে। সন্ধি। সংশ্লিষ্ট অন্য করতলের কারপাল ও পদতলের টারসাল অস্থির
● পিট সন্ধি (Pivot joint) এই ধরনের সন্ধিতে একটি অস্থির গোলাকার, পয়েন্টেড বা শঙ্কু আকৃতির অংশের ওপরে অপর একটি অস্থি আবর্তিত হয়। @ স্যাডল সন্দি (i) সন্ধিতে দুটি অস্থির প্রান্তই সমতল এবং পরস্পর সমকোণে (Saddle joint) মেরুদণ্ডের প্রথম কশেরুকা অ্যাটলাস ও দ্বিতীয় কশেরুকা অ্যাক্সিসের সঙ্গি। বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠের কারলাল ও মেটাকারপাল অবস্থান করে। (ii) সংলগ্ন দুটি অস্থিই নড়াচড়া করতে পারে। সংযোগস্থল। রেডিয়াস ট্রাপিজিয়াম বুড়ো আঙুলের মেটাকারপাল অস্থির সংযোগস্থল।
জেনে রাখো। মানুষের কঙ্কালতন্ত্রে প্রায় 70টি সচল সখি বর্তমান।
প্রশ্ন 7. মানুষের গমনে কঙ্কালপেশির ভূমিকা আলোচনা করো।
উত্তর : মানুষের গমনে বিভিন্ন কঙ্কালপেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন _
কঙ্কালপেশির প্রকৃতি কাজ 1• ফ্লেক্সর (Flexor) এই ধরনের পেশি সংশ্লিষ্ট অঙ্গকে দু-ভাঁজ করে হ অর্থাৎ, পেশির একাংশ অপর অংশের ওপর বেঁকে যায়। পেশির এই ক্রিয়াকে ফ্লেক্সন বলে।
উদাহরন: হাতের বাইসেপস্ পেশি সংকুচিত হলে ভাঁজ হয় এবং হাঁটুর গ্যাস্ট্রোকনেমিয়াস পেশির সংকোচনের ফলে পা ভাঁজ হয়ে মাটি থেকে উঠে আসে।
2. এক্সটেনশর (Extensor) এই ধরনের পেশি অঙ্গকে প্রসারিত করে বা ছড়িয়ে ট্র দেয়। পেশির এই ক্রিয়াকে এক্সটেনশন বলে।
উদাহরন :ট্রাইসেপস্ পেশি সংকুচিত হয়ে ভাঁজ করা হাত প্রসারিত হয় এবং গ্লুটিয়াস ম্যাক্সিমাস পেশির সংকোচনে পা সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
3. অ্যাবডাকটর (Abductor) এই পেশি দেহঅক্ষ থেকে দেহঅঙ্গগুলিকে হ দূরে সরিয়ে নিয়ে যায়। পেশির এই ক্রিয়াকে স অ্যাবডাকশন বলে। এই পেশি কোনো অঙ্গকে দেহঅক্ষের দিকে টেনে ল আনে। পেশির এই ক্রিয়াকে অ্যাডাকশন বলে।
উদাহরন: হাতের ডেলটয়েড পেশি ও পায়ের অ্যাবডাকটর পেশির সংকোচনে সংশ্লিষ্ট অঙ্গগুলি দেহঅক্ষ থেকে দূরে সরে যায়।
4.• অ্যাডাকটর (Adductor) এই পেশি কোনো অঙ্গকে দেহঅক্ষের দিকে টেনে আনে। পেশির এই ক্রিয়াকে অ্যাডাকশন বলে।
উদাহরন: ল্যাটিসিমাস ডরসি পেশির সংকোচনে প্রসারিত হাত এবং অ্যাডাকটর লংগাস পেশির সংকোচনে পা দেহঅক্ষের কাছে আসে।
5. রোটেটর (Rotator): এই পেশি কোনো অঙ্গকে প্রধান দেহঅক্ষের চারপাশে বা ডান বা বামদিকে বাঁকাতে পারে পেশির এই ক্রিয়াকে রোটেশন বলে।
উদাহরন: কাঁধের সঙ্গে যুক্ত পাইরিফর্মি পেশি হাতের ঘূর্ণনে সাহায্য করে। ফিমার চারিদিকে ঘোরাতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন 8. মানুষের দ্বিপদ গমন (Bipedal locomotion) পদ্ধতি কী ? পদ্ধতিটি বর্ণনা করো। **
উত্তর: মানুষের বিপদ গমন (Bipedal locomotion ) : মানুষের গমন দুটি পা ও হাতের সামঞ্জস্যপূর্ণ সঞ্চালন, মেরুদণ্ডের নমনীয়তা এবং কঙ্কালপেশির সক্রিয়তা দ্বারা সম্পন্ন হয়। দাঁড়ানোর সময় পা দুটি সমগ্র দেহের ভার বহন করে এবং এই দুটি পা মানবদেহের গমনে (হাঁটা বা দৌড়োনোর সময়) মুখ্য ভূমিকা পালন করে বলে, মানুষের গমনকে দ্বিপদ গমন বলে।
মানুষের গমন পদ্ধতি :
1. মাটিতে স্থিরভাবে দাঁড়ানোর সময় দেহের ভারকেন্দ্র (Centre of gravitation) দুটি পায়ের পাতার ওপর ন্যস্ত থাকে।
2. দ্বিপদ গমনের সময় দেহকাণ্ডের অগ্রগতি ঘটে, ফলে দেহের ভারকেন্দ্রের পরিবর্তন ঘটে ও দেহ সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ে।
3• এই সময় বাম পায়ের হাঁটুর নীচে অবস্থিত গ্যাস্ট্রোকনেমিয়াস নামক কাফ পেশির সংকোচনের ফলে গোড়ালির অস্থিতে চাপ পড়ে এবং গোড়ালি মাটি থেকে উঠে আসে।
4• পরক্ষণে এক্সটেনশর ডিজিটোরিয়াম পেশির সংকোচন ঘটে ও বাম পায়ের পদতলের সামনের অংশও মাটি ছেড়ে উত্তোলিত হয়।
5 • এই সময় সমগ্র দেহের ভার ডানপায়ের ওপর ন্যস্ত থাকে।
6• এরপর বাইসেপস্ ফিমোরিস পেশির সংকোচনের ফলে বাম পা ভাঁজ হয়ে ওপরের দিকে উঠে আসে এবং এই পেশির প্রসারণের ফলে পা সামনের দিকে এগিয়ে যায় ও মাটি স্পর্শ করে। এই সময় দেহের ভার ডান পা থেকে বাম পায়ে সরে আসে ও ক্রমিক পর্যায়ে ডান পা সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
7.এইভাবে ডান ও বাম পা পর্যায়ক্রমে এগিয়ে যায় ও গমন ঘটে।
8. গমনের সময় দেহের ভারসাম্য রক্ষার জন্য ডান পা অগ্রসর হলে বাম হাত এগিয়ে যায় এবং বিপরীতভাবে বাম পা এগিয়ে গেলে ডান হাত সামনে এগিয়ে যায়। এ ছাড়া, দ্বিপদ গমনের স্নায়ু উদ্দীপনা মস্তিষ্কে পৌঁছালে লঘুমস্তিষ্ক এবং অন্তঃকর্ণের অর্ধবৃত্তাকার নালি সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং দেহের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রশ্ন 9 .মানুষের গমনে অস্থিসন্ধির গুরুত্ব লেখো। *
উত্তর : মানুষের গমনে সাহায্যকারী অস্থিসন্ধিগুলি হল সচল অস্থিসন্ধি বা সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি, যেখানে অস্থিসন্ধিতে একটি তরলপূর্ণ পর্দাবেষ্টিত গহ্বর বর্তমান এবং পাশাপাশি দুটি অস্থি পরস্পরের সঙ্গে লিগামেন্ট দ্বারা যুক্ত থাকে।
© মানুষের দ্বীপন গমনে সাহায্যকারী স্সি অস্থি সন্ধিন্ধিগুলির অবস্থান ও গুরুত্ব:
অস্থিসন্ধি অবস্থান
1.উরুসন্ধি শ্রোণিচক্র ও ফিমার অস্থির সংযোগস্থল।
দ্বিপদ গ সঞ্চালি (বল ও সকেট সন্ধি) ফিমারের শেষপ্রান্ত এবং টিবিয়া ও ফিবুলার ঊর্ধ্বপ্রান্তের দ্বিপদ হওয়াে তো
2. হাঁটু সন্ধি (কবজা সন্ধি) সংযোগস্থল। ফিমারের শেষপ্রান্ত এবং টিবিয়া ও ফিবুলার ঊর্ধ্বপ্রান্তের সংযোগস্থল।
3. গোড়ালি সন্ধি টিবিয়া ও ফিবুলার নিম্নপ্রাপ্ত ও পদতলের টারসাল অস্থির বিপদ (কবজা সন্ধি) সংযোগস্থল।
4. স্কন্ধসন্ধি কাঁধের উরশ্চরের স্ক্যাপুলা ও হিউমেরাস এবং হিউমেরাস, দ্বিপদ সামনে (বল ও সকেট সন্ধি) রেডিয়াস ও আলনার সংযোগস্থল।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর:
প্রশ্ন 1. মাছের গমনে মায়োটোম পেশির (Myotome muscle) ভূমিকা আলোচনা করো। * [ME '07] মাছের গমনে মায়োটোম পেশির ভূমিকা আলোচনা করো।
উত্তর: মাছের গমনে মায়োটোম (পশির ভূমিকা :
1. মাছের দেহে মেরুদণ্ডের দুপাশে 'V' আকৃতির খণ্ডিত মায়োটোম পেশি সমস্ত দেহকাণ্ড জুড়ে বিস্তৃত থাকে।
2. দেহের একপাশের পেশিগুলির সংকোচন ঘটলে বিপরীত দিকের পেশিগুলি প্রসারিত হয়। ফলে, দেহে একপ্রকার তরঙ্গের আকারে আন্দোলন তৈরি হয়।
3. ক্রমান্বয়িক পেশি সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে মাছের দেহ এঁকেবেঁকে সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
4. মায়োটোম পেশির সংকোচনের ফলে, লেজ ডানদিকে বেঁকে গেলে জলের প্রতিরোধী বলের জন্য দেহ বামদিকে এবং লেজ বামদিকে বেঁকে গেলে মাছের দেহ ডানদিকে এগিয়ে যায়। মেরুদণ্ড মায়োটোম পেশিখণ্ড পেশির সংকোচন পেশির প্রসারণ- পেশির সংকোচন পেশির প্রসারণ মাছের গমনে মায়োটোম পেশির ভূমিকা
প্রশ্ন 2 . মাছের গমনে পটকা বা বায়ুগহ্বরের (Air bladder) উত্তর। ভূমিকা কী ?
উত্তর: মাছের গমান পটকা বা বায়ুগহ্বরের ভূমিকা :
1. রুইমাছের উদরগহ্বরে দুটি প্রকোষ্ঠযুক্ত পটকা থাকে ।
2. অগ্র প্রকোষ্ঠের রেড গ্রন্থি গ্যাস উৎপন্ন করায় পটকা ফুলে যায়। ফলে, মাছের আপেক্ষিক ওজন কমে যায় ও মাছ জলের ওপর ভেসে ওঠে। পশ্চাদ প্রকোষ্ঠ অগ্র প্রকোষ্ঠ
3. অন্যদিকে, পটকার পশ্চাদ্ প্রকোষ্ঠে অবস্থিত রেটিয়া মিরাবিলিয়া নামক রক্তজালক গ্যাস শোষণ করার ফলে পটকা চুপসে যায় ও মাছের আপেক্ষিক গ্যাস শোষণকারী যন্ত্র গ্যাস উৎপন্নকারী যন্ত্র। মাছের পটকা ওজন বৃদ্ধি পায়। এর ফলে মাছ জলের গভীরে চলে যায়।
প্রশ্ন 3. পাখির উড্ডয়নে ডানা ও পালকের ভূমিকা লেখো। *
উত্তর: পাখির উড্ডয়ান ডানার ভূমিকা :
1. ওড়ার জন্য পাখির অগ্রপদদুটি ডানায় রূপান্তরিত হয়েছে। ডানা দুটি সামনের দিকে প্রসারিত এবং পিছনের দিকে সরু হয়।
2. ডানার ঊর্ধ্বতল উত্তল এবং নিম্নতল অবতল হওয়ায় পাখি সহজেই বাতাসে ভেসে থাকে এবং উড়তে পারে।
উড্ডয়ান পালকের ভূমিকা : ডানার পালক রেমিজেস (23টি) পাখিকে উড়তে সাহায্য করে এবং লেজের পালক রেকট্রিসেস (12টি) পাখিকে নিক পরিবর্তনে সাহায্য করে। প্রতিটি পালক বার্ব, বার্বিউল ও হুকযুক্ত হওয়ায় বায়ুর চাপে ছিঁড়ে যায় না।
প্রশ্ন 4. পাখির গমনে উড্ডয়ন পেশির (Flight muscles) ভূমিকা উল্লেখ করো। * Canning David Sacon High School "TE
উত্তর : পাখির সমান উড্ডয়ন পেশির ভূমিকা :
1. পাখির গমনে অর্থাৎ, উড্ডয়নের সঙ্গে তিনপ্রকার পেশি। জড়িত। এগুলি হল— পেক্টোরালিস মেজর (Pectoralis Major), পেক্টোরালিস মাইনর (Pectoralis Minor) ও কোরাকো ব্রাকিয়ালিস (Coraco-Brachialis)। ঊর্ধ্বঘাত সৃষ্টি করে পেক্টোরালিস মাইনর নামক বাতাস বিপরীত দিকে বক্ষপেশির প্রসারণ 1111 ডানার নীচের পেক্টোরালিস মেজর নামক বক্ষপেশির সংকোচন টানের প্রভাবে ডানার নীচের দিকে গমন। দিকে গমন a কোৱাকয়েড "কিল অস্থি ডানার উপরের দিকে গমন পেক্টোরালিস মাইনর নামক বক্ষপেশির সংকোচন টানের জন্য ডানার ঊর্ধ্বমুখে গমন। কোরাকয়েড অস্থি পেক্টোরালিস মেজর নামক বক্ষপেশির প্রসারণ b -কিল অি পাখির গমনে উড্ডয়ন পেশির ভূমিকা। a) পাখির উপরের দিকে ওড়ার সময় [b] পাখির নীচের দিকে নামার সময়
2. পেক্টোরালিস মেজর নামক বক্ষপেশির সংকোচনের ফলে পাখির ডানা নীচের দিকে নামতে থাকে। ফলে, বাতাসে চাপ পড়ে
এবং বাতাস বিপরীত দিকে ঊর্ধ্বঘাত সৃষ্টি করে ও পাখি উপরের দিকে জীবনবিজ্ঞান ও প উড়ে যায়।
3• পেক্টোরালিস মাইনর নামক বক্ষপেশির সংকোচনের ফলে ডানা ওপরের দিকে উঠে যায়। ফলে, পাখি নীচের দিকে নামতে থাকে।
4 • কোরাকো ব্রাকিয়ালিস পেশিও পাখির ডানাকে নীচের দিকে আসতে দেয় ও পাখিকে ঊর্ধ্বমুখে গমনে সাহায্য করে। জেনে রাখো পাখির ওড়ার জন্য ডানার কাজে সাহায্য করে উন্নত রক্তবাহসমৃদ্ধ রক্ষপেশি।
প্রশ্ন 5. পাখির উড্ডয়ন কৌশলটি (Flight mechanism) সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর: খেচর অভিযোজনের জন্য পাখির দেহে বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। যেমন-
1. বাতাসে সক্ষমভাবে ওড়ার জন্য পাখির অগ্রপদদুটি ডানায় রূপান্তরিত হয়েছে। নিজের দেহকে বাতাসে উত্তোলন করার জন্য পাখি ডানার সাহায্যে বাতাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং নিজের দেহকে বাতাসে ভাসিয়ে রাখতে পারে।
2. পাখির লেজে ব্রেকট্রিসেস নামক 12টি বড়ো পুচ্ছ পালক থাকে, যা উড্ডয়নের দিক নির্দেশ করতে ও ওড়ার গতির হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে। ডানার কিনারায় রেমিজেস নামক 23টি বড়ো পালক থাকে যা ডানার তলের বৃদ্ধি ঘটিয়ে বাতাসে ভেসে থাকতে সাহায্য করে।
3. উড্ডয়ন পেশি পেক্টোরালিস মেজর এবং এর সহযোগী পেশিগুলোর সংকোচনের দ্বারা ডানার শক্তিশালী নিম্নাভিমুখী ঝাকুনি পাখির দেহ উত্তোলনের জন্য প্রয়োজনীয় বায়ুস্রোত সৃষ্টি করে, যা অভিকর্ষ বলকে অতিক্রম করে পাখিকে সামনের দিকে এবং উপরে উঠতে সাহায্য করে।
4.অন্যদিকে, পেক্টোরালিস মাইনর সংকুচিত হলে ডানা প্রসারিত হয়।
5.এইভাবে পর্যায়ক্রমে ডানার ঊর্ধ্বাভিমুখী ও নিম্নাভিমুখী ঝাকুনির দ্বারা পাখি বাতাসে উড়তে পারে।
6. ডানার অবতল তলদেশের জন্য এরা বাতাসে নিজেকে ভাসমান রাখতে পারে এবং পর্যায়ক্রমিকভাবে উপরে, সামনে ও নীচে ডানার আন্দোলনের মাধ্যমে বাতাসে গমন করে।
প্রশ্ন 6. মানুষের গমনের সময় দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে লঘুমস্তিষ্ক ও অন্তঃকর্ণের ভূমিকা আলোচনা করো।
উত্তর: দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রাণ লঘুমস্তিষ্কের ভূমিকা : লঘুমস্তিষ্ক দেহের বিভিন্ন পেশির সক্রিয়তা দ্বারা ঐচ্ছিক গমনকে নিয়ন্ত্রণ করে। হাঁটা, দৌড়োনো, সাঁতার কাটা, লাফানো, নাচ প্রভৃতি ক্ষেত্রে লঘুমস্তিষ্ক ঐচ্ছিক পেশির ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের দ্বারা দেহ ভঙ্গিমা ও দেহের ভারসাম্য রক্ষা করে।
© দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে অন্তঃকর্ণের ভূমিকা : 1. অন্তঃকর্ণের অর্ধবৃত্তাকার নালি ও ইউট্রিকিউলাস গমনের সময় দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে।
2. এই সমস্ত স্থান ক্যালকেরিয়াস দানা বা অটোলিথযুক্ত এন্ডোলিম্ফ নামক তরল পদার্থ দ্বারা পূর্ণ থাকে।
3. এই সমস্ত স্থানের অন্তঃআবরণী গাত্রে সেনসরি রোম উপস্থিত থাকে।
4.গমনের সময় যখন মাথা স্বাভাবিক অবস্থান থেকে সরে যায়, অটোলিথ যেদিকে মাথা হেলে যায়, সেইদিকে সরে যায় এবং সেনসরি রোমগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করে। ও অডিটরি নার্ভ এই উদ্দীপনা গ্রহণ করে এবং সোজা পাঠিয়ে দেয় মস্তিষ্কে।
5. মস্তিষ্ক থেকে কার্যকরী নির্দেশ চেষ্টীয় স্নায়ুর মাধ্যমে কারকে পৌঁছায় এবং আমাদের দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রিত হয়।
প্রশ্ন 7 .সচল অস্থিসন্ধি বা সাইনোভিয়াল সন্ধির (Synovial Joint) গঠন চিত্রসহ বর্ণনা করো। ** Krishnagar Collegiate School 16.
উত্তর : সচল অস্থিসন্ধি বা সাইনোভিয়াল সন্ধিতে সংলগ্ন লিগামেন্ট -সাইনোভিয়াল গহ্বর সাইনোভিয়াল পর্দা অস্থিগুলি (দুটি বা তার বেশি) অধিক সঞ্চালনক্ষম বা অধিক বিচলনক্ষম হয়। এই প্রকার অস্থিসন্ধির গঠন নিম্নে বর্ণনা করা হল— সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধির ভিতরের দিকে গ্রন্থিময় আবরণী কলার দ্বারা গঠিত একটি পর্দার আবরণ থাকে। একে সাইনোভিয়াল পর্দা (Synovial membrane) বলে। ও অস্থি- সন্ধিতে পর্দা দ্বারা বেষ্টিত যে গহ্বর সাইনোভিয়াল সন্ধি থাকে,তাকে সাইনোভিয়াল প্রকোষ্ঠ বা সাইনোভিয়াল গহ্বর (Syno- vial Cavity) বলে। ও সাইনোভিয়াল পর্দার গ্রন্থিকোশ থেকে যে পিচ্ছিল পদার্থ ক্ষরিত হয়, তাকে সাইনোভিয়াল তরল (Syno- vial fluid) বলে। এই তরল পদার্থ অস্থিসন্ধিকে সচল রাখে, অস্থিপ্রান্তগুলিকে ঘর্ষণজনিত ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করে ও সংশ্লিষ্ট। কলাকোশে পুষ্টি পদার্থ সরবরাহ করে।
অনুরূপ প্রশ্ন : (1) সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধির বৈশিষ্ট্য লেখো। * (2) একটি আদর্শ সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধির চিহ্নিত চিত্র আঁকো।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর:
প্রশ্ন 1. গমন অঙ্গ (Locomotary organ) কাকে বলে ?
উত্তর: জীবদেহের যে সকল অঙ্গ সঞ্চালনের মাধ্যমে (চলন) সমগ্র জীবদেহটি একস্থান থেকে অন্যস্থানে সামগ্রিক স্থান পরিবর্তন। করে, তাদের গমন অঙ্গ বলে। ১৮ উদাহরণ : অ্যামিবার ক্ষণপদ, প্যারামেসিয়ামের সিলিয়া, মাছের পাখনা, পাখির ডানা ও পা, মানুষের পা।
প্রশ্ন 2. ক্ষণপদ বা সিউডোপোডিয়া কী? এর কাজ লেখো।
উত্তর : অ্যামিবার কোশমধ্যস্থ সাইটোপ্লাজমের ঘনত্বের পরিবর্তন দ্বারা কোশের পরিধির দিকে যে অস্থায়ী প্রবর্ধক সৃষ্টি হয়, তাকে ক্ষণপদ বা সিউডোপোডিয়া (Pseudopodia) বলে।
কাজ : 1. ক্ষণপদ অ্যামিবার গমনে সাহায্য করে। 2. ক্ষণপদের সাহায্যে অ্যামিবা খাদ্যগ্রহণ করে।
জেনে রাখো : লোবোপোডিয়া : অ্যামিবার ক্ষণপদগুলি মোটা, ভোঁতা, আঙুলের মতো হওয়ায় এদের লোবোপোডিয়া (Lobopodia) বলে। এগুলি গমনে এবং খাদ্যসংগ্রহে সাহায্য করে। ফাইলোপোডিয়া : ইউগ্লাইফা নামক আদ্যপ্রাণীর সুতোর মতো ছুঁচোলো ক্ষণপদকে ফাইলোপোডিয়া (Phylopodia) বলে।
প্রশ্ন 3. সিলিয়া (Cilia) কাকে বলে? সিলিয়া কোথায় দেখা যায় ?
উত্তর: সিলিয়া (Cilia) : ইউক্যারিওটিক কোশের বাইরে পর্দাবৃত যে প্রোটোপ্লাজমীয় প্রবর্ধক জীবকে সঞ্চালনে বা গমনে সাহায্য করে, তাকে সিলিয়া বলে।
সিলিয়াল সংখ্যায় অনেক থাকে এবং তুলনামূলকভাবে কম দৈর্ঘ্যযুক্ত হয়। সিলিয়েটা গোষ্ঠীভুক্ত প্রোটোজোয়ান প্রোটিস্টা (যেমন— প্যারামেসিয়াম, ওপালিনা, ভার্টিসেলা প্রভৃতি)-তে কোশের বাইরে সমস্ত পরিধিতল জুড়ে সিলিয়া উপস্থিত থাকে।
প্রশ্ন 4 . সিলিয়ারি গমন (Ciliary Movement) বলতে কী বোঝো?
উত্তর: সিলিয়া নামক সরু চুলের মত সাইটোপ্লাজমীয় প্রবর্ধকের সুশৃঙ্খল সঞ্চালনের মাধ্যমে প্যারামেসিয়াম, ভার্টিসেলা প্রভৃতি প্রাণীদের গমন পদ্ধতিকে সিলিয়ারি গমন বলে। সিলিয়াগুলি প্রাণীদেহের পরিধি বরাবর বেসাল বডি থেকে উৎপন্ন হয়ে সজ্জিত থাকে এবং ছন্দবদ্ধ সঞ্চালনের মাধ্যমে নৌকার দাড়ের মতো জলের বাধা কাটিয়ে প্রাণীকে সামনের দিকে অগ্রসর হতে সহায়তা করে।
প্রশ্ন 5. ফ্ল্যাজেলা (Flagella) কাকে বলে? ফ্ল্যাজেলা কোথায় দেখা যায় ?
উত্তর: কোশের বাইরে 10-180 m দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট, পর্দাবৃত, দীর্ঘ, মোটা চাবুকের ন্যায় যে সঞ্চালনক্ষম প্রবর্ধক দেখা যায়, তাকে ফ্ল্যাজেলা বলে।
* ফ্ল্যাজেলা গোষ্ঠীভুক্ত জীব, যেমন—ইউগ্লিনা (ইউক্যারিওট), ট্রাইপ্যানোসোমা (প্যারাসাইটক প্রোটোজোয়া), পেরানিমা, বোড়ো (প্রোটিস্টা) প্রভৃতির কোশের কোনো একটি নির্দিষ্ট প্রান্তে অবস্থান করে।
প্রশ্ন 6. ফ্ল্যাজেলারি গমন (Flagellary Movement) বলতে কী বোঝো?
উত্তর: স্ফীত, দীর্ঘ, পর্দাবৃত, চাবুকের ন্যায় ফ্ল্যাজেলার ছন্দবদ্ধভাবে আন্দোলনের দ্বারা যে প্রকার গমন ঘটে, তাকে ফ্ল্যাজেলারি গমন বলে। ইউমিনা, ক্ল্যামাইডোমোনাস প্রভৃতি জীবে এবং শুক্রাণু কোশে ফ্ল্যাজেলারি গমন দেখা যায়। এক বা একাধিক ফ্ল্যাজেলা গমনতলে আঘাত করে এবং দেহ সম্মুখ দিকে এগিয়ে যায়।
প্রশ্ন 7. মাছের গমন পদ্ধতি ও গমন অঙ্গের নাম লেখো।
উত্তর: গমন পদ্ধতি : সাঁতার বা সুইমিং। মাছের প্রধান সমল অা রশ্মিযুক্ত পাখনা এবং সহায়ক গমন অঙ্গ: মায়োটোম পেশি ও পটকা।
প্রশ্ন 8 .সম্ভরণ বা সুইমিং পদ্ধতি কাকে বলে?
উত্তর : দেহে উপস্থিত সাতটি পাখনা ও মেরুদণ্ডের উভয় পার্শ্বে অবস্থিত 'V' আকৃতির মায়োটোম পেশির সংকোচন-প্রসারণের মাধ্যমে জলের মধ্যে স্থান পরিবর্তন করার এই গমন পদ্ধতিকে সম্ভরণ বা সুইমিং (Swimming) বলে। জলের গভীরতা, সান্দ্রতা, চাপ ইত্যাদি প্রভাবকের উপর সম্ভরণ নির্ভর করে।
প্রশ্ন 9. মাছের পাখনাগুলির কার্যকারিতা কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে?
উত্তর: মাছের পাখালাগুলির কার্যকারিতা নিম্নলিখিত বিষয়গুলির ওপর নির্ভরশীন ও পাখনাগুলির আকার ও আকৃতি। ও দ্রুত নড়াচড়ার ক্ষমতা এবং গমনের অভিমুখের সঙ্গে পাখনার কৌণিক দূরত্ব।
প্রশ্ন 10. অস্থিযুক্ত মাছের জোড় পাখনা ও লেজ কেটে দিলে মাছের কোন কাজগুলি ব্যাহত হবে?
উত্তর : জোড় পাখনার (বক্ষ ও শ্রোণীপাখনা) অভাবে মাছ এক জায়গায় স্থির হয়ে ভেসে থাকতে ও জলের গভীরে যেতে পারবে না এবং লেজের অভাবে মাছ দিক পরিবর্তন করতে পারবে না।
প্রশ্ন 11 . মাছের দেহাকৃতি মাছের গমনে কী ভূমিকা পালন করে।
উত্তর : মাছের গান দেহাকৃতির ভূমিকা মাছের দেহ মাকু আকৃতির এবং দুপাশ থেকে চ্যাপটা। এই প্রকার দেহাকৃতি মাছকে সামনের দিকে জলের বাধা কেটে এগিয়ে যেতে সাহায্য করে এবং জলের গভীরে চাপের হাত থেকে রক্ষা করে।
প্রশ্ন 12. পাখির গমন অঙ্গ ও গমন পদ্ধতির নাম লেখো। *
উত্তর : গমন অঙ্গ : একজোড়া ডানা (ওড়ার জন্য) এবং একজোড়া পা (হাঁটার জন্য)।
গমন পদ্ধতি : উড্ডয়ন এবং হাঁটা।
প্রশ্ন 13. রেমিজেস (Remiges) পালকের অবস্থান ও কাজ লেখো ।
উত্তর : অবস্থান: পাখির ডানায় উপস্থিত থাকে।
কাজ : পাখির ডানার কিনারায় উপস্থিত 23টি রেমিজেস পালক ডানার তলের বৃদ্ধি ঘটিয়ে বায়ুর ওপর চাপ প্রয়োগে সহায়তা করে, ফলে পাখি বাতাসে ভাসে। এবং উড়তে পারে।
প্রশ্ন 14. রেকট্রিসেস (Rectrises) পালকের অবস্থান ও কাজ লেখো।
উত্তর : অবস্থান : পাখির লেজে উপস্থিত থাকে।
কাজ: লেজে উপস্থিত 12টি বড়ো পালক পাখিকে ওড়ার সময় দিক পরিবর্তন করতে ও উড্ডয়ন গতির হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন 15. পায়রার পালকের কাজগুলি লেখো।
উত্তর: পায়রার দেহে পালক যে সকল গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি করে হল - 1. তাপরোধক হিসেবে কাজ করে দেহতাপ নিয়ন্ত্রণ করে। 2. উড্ডয়নে সাহায্যকারী একটি প্রধান অংশ। 3. স্পর্শেন্দ্রিয়রূপে কাজ করে। দেহের ভিতরের অংশকে রক্ষা করে।
প্রশ্ন 16 .পাখির পালক বাতাসের চাপে ছিঁড়ে যায় না কেন?
উত্তর : পাখির পালকগুলিতে বার্ব, বার্বিউল ও হুক থাকে। এগুলি একে অপরের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে আটকে থাকায় পালকগুলি একত্রে একটি পালকের তল সৃষ্টি করে, ফলে বাতাসের চাপে ডানা বা লেজের পালক ছিঁড়ে যায় না।
প্রশ্ন 17. পানি পেশিগুলির (Flight muscles) নাম লেখো। Maharani Indiraden Girls High School 16 Birthun Zilla Scheel 16
উত্তর: উড্ডয়ন পেশি পেক্টোরালিস মেজর, পেক্টোরালিস মাইনর এবং কোরাকো ব্রাকিয়ালিস। জেনে রাখো: কীল অস্থি : পাখিদের শরীরের বক্ষ অঞ্চলে অবস্থিত স্টারনাম নামক অস্থিটি দেখতে অনেকটা নৌকার তলদেশের মতো | চ্যাপটা। তাই এই অস্থিকে কীল অস্থি বলে। কীল অস্থির কাজ কীল অস্থি বক্ষপেশিকে সঠিকভাবে আবদ্ধ রাখে এবং দেহের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন 18. মানুষের গমনে প্রয়োজনীয় অন্যগুলির নাম লেখো।
উত্তর : সমান প্রয়োজনীয় অঙ্গ : একজোড়া পা, একজোড়া হাত, অন্তঃকঙ্কাল, কঙ্কাল পেশি এবং অস্থিসন্ধি।
প্রশ্ন 19. মানুষের গমনকালে ভারসাম্য রক্ষা করে কোন্ কোন্ অঙ্গ ? ।
উত্তর : মানুষের গমনকালে দেহের ভারসাম্য রক্ষাকারী অন্যগুলি হল – 1. লঘুমস্তিষ্ক বা সেরিবেলাম (Cerebelum) 2. অন্তঃকর্ণে অবস্থিত অর্ধচন্দ্রাকার নালি ও অটোলিখ যন্ত্র।
প্রশ্ন 20. মানুষের গমনে সাহায্যকারী তিনপ্রকার প্রাণীকলার নাম লেখো।
উত্তর : মানুষের গমনে সাহায্যকারী তিনপ্রকার কলা হল- o পেশিকলা— ঐচ্ছিক পেশি, ও যোগকলা— অস্থি, তরুণাস্থি এবং রক্ত, টেন্ডন, লিগামেন্ট ও স্নায়ুকলা – নার্ভ, নিউরোন।
প্রশ্ন 21. মানুষের গমনে সহায়ক চারটি অস্থির নাম লেখো।
উত্তর : গমান সহায়ক অথি: ফিমার, টিবিয়া-ফিবিউলা, টারসাল, মেটাটারসাল, ফ্যালেনজেস, ভার্টিব্রাল কলাম এবং পেলভিক গার্ডেল।
প্রশ্ন 22. সাইনোভিয়াল সন্ধির সচল থাকার দুটি শর্তের উল্লেখ করো।
উত্তর: সাইনোভিয়াল সন্ধির সচলতার শর্ত : 1. সাইনোভিয়াল তরল অস্থিসন্ধিকে পিচ্ছিল করে এবং জীবিত কোশগুলিকে সজীব রাখতে সাহায্য করে। 2. সন্ধিস্থলে অস্থির মস্তকে হায়ালিন তরুণাস্থির আবরণ থাকায় অস্থিগুলির ঘর্ষণ কম হয়।
জেনে রাখো : এই প্রকার সন্ধিকে ডায়ার্থোসিস বলে।
প্রশ্ন 23 .কবজা বা কপাট সন্ধি (Hinge joint) কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: কবজা বা কপাট সন্ধি (Hinge joints) : যে অস্থিসন্ধিতে একটি অস্থির গোলপ্রান্ত অপর অস্থির অর্ধগোলক অবতল অংশের সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং সংলগ্ন অস্থিগুলি কেবলমাত্র একটি অক্ষ বরাবর সঞ্চালিত হয়, তাকে কবজা বা কপাট সন্ধি বা হিঞ্জ জয়েন্ট বলে। ২১ উদাহরণ— কনুই সন্ধি, হাঁটু সন্ধি।
প্রশ্ন 24. বল ও সকেট সন্ধি কাকে বলে? উদাহরণ দাও। *
উত্তর: বল ও সাকট সন্ধি (Ball and Socket joints) : যে প্রকার অস্থিসন্ধিতে একটি অস্থির বলের মতো গোলাকৃতি মস্তক অংশ অপর একটি অস্থির কোটরে বা সকেটে এমনভাবে যুক্ত থাকে, যাতে অস্থিসন্ধির বিচলন সবদিকে ঘটে, তাকে বল ও সকেট সন্ধি বলে।
উদাহরণ – হিউমেরাস ও স্ক্যাপুলা অস্থির সন্ধি, ফিমার ও হিপ অস্থির সন্ধি।
প্রশ্ন 25. ফ্লেক্সন (Flexion) ধরনের অস্থিসন্ধি বিচলন কাকে বলে? উদাহরণ দাও।* Shibpur Bhabani Balika Vidyalaya 16
উত্তর : ফ্লেক্সন (Flexion) : যে প্রকার অস্থিসন্ধি বিচলনে ফ্লেক্সর পেশির সংকোচনের ফলে সংশ্লিষ্ট দুটি অস্থির মধ্যে কৌণিক দূরত্ব কমে যায় অর্থাৎ, অঙ্গের মধ্যে ভাঁজ তৈরি হয়, তাকে ফ্লেক্সন বলে।
উদাহরণ— বাইসেপস্ ব্রাকি পেশির সংকোচনের ফলে হাতের কনুই ভাঁজ হয় ৷
প্রশ্ন 26. এক্সটেনশন (Extension) ধরনের অস্থিসন্ধি বিচলন বলতে কী বোঝো? উদাহরণ দাও।
উত্তর : যে প্রকার অস্থিসন্ধি বিচলনে এক্সটেনসর পেশি (ট্রাইসেপস্
ব্রাকি) ক্রিয়াশীলতার জন্য ভাঁজ হওয়া অবস্থা থেকে সংশ্লিষ্ট অস্থিগুলি পরস্পর দূরে সরে যায় অর্থাৎ, অস্থি দুটির মধ্যে কৌণিক দূরত্ব বৃদ্ধি পায়, তাকে এক্সটেনশন (Extension) বলে।
উদাহরণ— হাতের কনুই-এর ভাঁজ খুলে হাত এবং পায়ের হাঁটুর ভাঁজ খুলে পা প্রসারিত হওয়া। -ট্রাইসেপস্ ব্রাকি পেশি (এক্সটেনসর)
প্রশ্ন 27. অ্যাবডাকশন (Abduction) কাকে বলে? উদাহরণ দাও। * Govt Spons Multipurpose School (Boys), Taki House 16
উত্তর: যে প্রকার অস্থিসন্ধির বিচলনে অ্যাবডাকটর পেশির (যেমন— গ্লুটিয়াস ম্যাক্সিমাস বা ডেলটয়েড) ক্রিয়াশীলতার ফলে দেহের মধ্যরেখা থেকে কোনো অঙ্গ বা দেহাংশ দূরে সরে যায়, তাকে অ্যাবডাকশন (Abduction) বলে।
উদাহরণ— দ্বিপদ গমনের সময় পায়ের নিম্নাংশ বা কাঁধে উপস্থিত ডেলটয়েড পেশির ক্রিয়ায় হাত দেহ থেকে দূরে সরে যায়।
প্রশ্ন 28. অ্যাডাকশন (Adduction) ধরনের অস্থিসন্ধি বিচলন বলতে কী বোঝো? উদাহরণ দাও।
উত্তর : যে প্রকার অস্থিসন্ধি বিচলনে (যেমন— অ্যাডাকটর লংগাস) অ্যাডাকটর পেশির ক্রিয়াশীলতার জন্য দেহের মধ্যরেখার দিকে কোনো অঙ্গ বা দেহাংশের সঞ্চালিত হওয়ার ঘটনাকে অ্যাডাকশন (Adduction) বলে ।
উদাহরণ— দ্বিপদ গমনের সময় সামনে এগিয়ে যাওয়া পা-এর পুনরায় দেহের মধ্যরেখার দিকে সরে আসার ঘটনা।
প্রশ্ন 29. রোটেশন (Rotation) কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: যে প্রকার অস্থিসন্ধি বিচলনে, পেশির ক্রিয়াশীলতার জন্যে একটি অস্থি দেহের কোনো অনুদৈর্ঘ্য অক্ষকে কেন্দ্র করে ঘুরতে পারে, তাকে রোটেশন (Rotation) বলে।
উদাহরণ— পায়ের পাইরিফর্মি পেশির ক্রিয়ায় ফিমার চারদিকে ঘুরতে পারে।
প্রশ্ন 30. সারকামডাকশন (Circumduction) বলতে কী বোঝো?
উত্তর: যে প্রকার অস্থিসন্ধি বিচলনে পেশির ক্রিয়াশীলতায় দেহের কোনো অঙ্গের বৃত্তাকার সঞ্চালন ঘটে, তাকে সারকামডাকশন (Circumduction) বলে। যেমন— মানুষের কাঁধের সন্ধি।
প্রশ্ন 31. ঈষৎ সচল সন্ধি কোথায় দেখা যায়? এর কাজ কী?
উত্তর : মানুষের দেহে মেরুদণ্ড বা শিরদাঁড়ার কশেরুকাগুলির অন্তবর্তী স্থানে ঈষৎ সচল সন্ধি দেখা যায়। কাজ : অস্থিসন্ধি সংলগ্ন অস্থিগুলি সামান্য নাড়াচড়া করতে পারে।
প্রশ্ন 32. মানুষের গমনে কঙ্কালতন্ত্রের ভূমিকা কী ?
উত্তর: মানুষের দেহে অস্থি ও তরুণাস্থি নির্মিত কঙ্কালতন্ত্র দেহের ভার বহন করে ও গমনের সময় দেহকে সামনের দিকে অগ্রসর হতে সাহায্য করে। অর্থাৎ, কঙ্কালতন্ত্রের অন্তর্গত পায়ের অস্থিগুলির বিচলনের ফলেই গমন সম্পন্ন হয়।
প্রশ্ন 33. মানুষের গমনে সাহায্যকারী চারটি পেশির নাম লেখো ?
উত্তর : সমান সাহায্যকারী পেশি বাইসেপস্ ফিমোরিস, ট্রাইসেপস্ ব্রাকি, অ্যাডাকটর লংগাস এবং মুটিয়াস-ম্যাক্সিমাস পেশি।
প্রশ্ন 34. মানুষের গমনে ঐচ্ছিক পেশির ভূমিকা কী ?
উত্তর : মানুষের দেহে হাত, পা প্রভৃতি স্থানের কঙ্কালের সঙ্গে যুক্ত পেশিকে ঐচ্ছিক পেশি বলে। ঐচ্ছিক পেশির ক্রিয়াশীলতার ফলে সংশ্লিষ্ট অস্থিগুলির বিচলন ঘটে এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালনের মাধ্যমে মানুষের গমন ঘটে।
প্রশ্ন 35. কওৱা বা টেনডন (Tendon) কী ?
উত্তর: কোলাজেন তত্ত্ব নির্মিত শ্বেত বর্ণের যে অস্থিতিস্থাপক কঠিন যোগকলা দ্বারা অস্থির সঙ্গে ঐচ্ছিক বা কঙ্কাল পেশি যুক্ত থাকে, তাকে কণ্ডরা বা টেনডন বলে। টেনডনের একটি প্রান্ত অস্থির বহিঃ আবরণ পেরিঅস্টিয়ামের সঙ্গে ও অন্য প্রান্ত পেশিতত্ত্বর সারকোলেমার সঙ্গে যুক্ত থাকে। যখন কোনো পেশি সংকুচিত হয় তখন টেন্ডন অস্থিকে টেনে রাখে।
প্রশ্ন 36. অস্থি বন্ধনী বা লিগামেন্ট (Ligament) কাকে বলে?
উত্তর: কোলাজেন ও ইলাস্টিন তত্ত্বনির্মিত যে স্থিতিস্থাপক দৃঢ় যোগকলা দ্বারা অস্থিসন্ধিতে সংলগ্ন দুই বা ততোধিক অস্থি পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাকে অস্থিবন্ধনী বা লিগামেন্ট বলে।
প্রশ্ন 37. অস্থির সঙ্গে যুক্ত পেশির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর : অ।ি পেশি বা কঙ্কাল পেশির বৈশিষ্ট্য : ও পেশিতত্ত্ব সরেখ অর্থাৎ, অণুবীক্ষণ যন্ত্রে পর্যবেক্ষণ করলে পেশিতত্ত্বকে অনুপ্রস্থ রেখাযুক্ত দেখা যায়। ও নিজেদের ইচ্ছামতো পেশি সঞ্চালন করানো যায়।
প্রশ্ন 38. পেশিনির্ভর গমন বলতে কী বোঝো?
উত্তর: মানুষসহ উন্নত প্রাণীদের গমনের সময় কঙ্কাল পেশির সংকোচন-প্রসারণের উপর নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট হাত ও পায়ের কঙ্কালের বিচলন ঘটে। এর ফলে প্রাণীর দেহ স্থানান্তরিত হয় অর্থাৎ গমন ঘটে। পেশির ক্রিয়াশীলতা অর্থাৎ সংকোচন ও প্রসারণে গমনে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে বলে, একে পেশি নির্ভর গমন বলে।
উদাহরণ— মানুষের দ্বিপদ গমন হল একটি পেশিনির্ভর গমনের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।
প্রশ্ন 39. মানুষের গমনকে দ্বিপদ গমন বলা হয় কেন?
উত্তর: মানুষের গমন অঙ্গ হল দুটি পা বা পদ (Foot), মানুষের গমন বা সামগ্রিক দেহের স্থানান্তর যেহেতু দুটি পায়ের পর্যায়ক্রমিক সঞ্চালনের মাধ্যমে ঘটে সেইজন্য মানুষের গমনকে ‘দ্বিপদ গমন' বলে।
প্রশ্ন 40. পেশি ক্লান্তি (Fatigue) বলতে কী বোঝো?
উত্তর: বেশি পরিশ্রমকালে অস্থিপেশিতে শক্তির অতিরিক্ত চাহিদা পূরণের জন্য গ্লুকোজের অবাত জারণ ঘটে। ফলে, ল্যাকটিক অ্যাসিডউৎপন্ন হয় এবং এর প্রভাবে পেশিকোশের সংকোচন ক্ষমতা হ্রাস পায় ও পেশি অবসাদগ্রস্ত হয়। একে পেশি ক্লান্তি (Fatigue) বলে।
জেনে রাখো : পতঙ্গের দেহে ফ্লেক্সর পেশির সংকোচনের ফলে সন্ধিল পদ বেঁকে যায় এবং এক্সটেনশর পেশি তাদের সোজা করে। মাটির | ওপর হাঁটার সময় এই ধরনের পেশির পর্যায়ক্রমিক সংকোচন-প্রসারণের | ফলেই মাছি, মশা, প্রজাপতি, উইপোকা হেঁটে বেড়াতে পারে।
প্রশ্ন 41. চলন ছাড়া গমন সম্ভব নয়'- ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: জীবের একস্থানে আবদ্ধ থেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বা উদ্দীপকের প্রভাবে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালনকে চলন বলে এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালনের মাধ্যমে জীবদেহের সামগ্রিকভাবে স্থানান্তরকে গমন বলে। সুতরাং, গমনকালে জীবের (প্রধানত প্রাণীদের দেহের) অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালিত হয় অর্থাৎ চলনের সাহায্যে গমন সম্পন্ন হয়। এজন্য বলা হয় 'চলন ছাড়া গমন সম্ভব নয়'।
For High-Flyers:
প্রশ্ন 1:হাইড্রার গমন পদ্ধতিকে কী বলে?
উত্তর: সামারসল্টিং বা ডিগবাজি খেয়ে গমন এবং লুপিং গমন পদ্ধতি।
প্রশ্ন 2. মসৃণতলে কেঁচোর গমনে অসুবিধা হয় না কেন?
উত্তর: কেঁচোর গমনকে ক্রিপিং বলে। অনুদৈর্ঘ্য পেশির সংকোচনের ফলে কেঁচোর দেহ কুঁচকে সংকুচিত হয় ও সিটাগুলি দেহের বাইরে এসে ভূমি স্পর্শ করে। অপরপক্ষে, চক্রাকার পেশির সংকোচনে কেঁচোর দেহ প্রসারিত হয় ও সিটাগুলি ভূমি ছেড়ে দেহের মধ্যে ঢুকে পড়ে। কেঁচোর সিটা মসৃণতলে আবদ্ধ হতে পারে না বলে মসৃণ তলে কেঁচোর গমনে অসুবিধা হয়।
প্রশ্ন 3. জেট গতি (Jet propulsion) কাকে বলে?
উত্তর: অক্টোপাস, ললিগো, সেপিয়া প্রভৃতি সামুদ্রিক কম্বোজ শ্রেণির প্রাণী তাদের দেহের অভ্যন্তরে অনুপ্রবিষ্ট জলকে চাপ দিয়েপশ্চাদ্ভাগের একটি ক্ষুদ্র ছিদ্র দিয়ে সজোরে দেহের বাইরে বের করে দেয়। এর ফলে প্রাণীরা সম্মুখ দিকে দ্রুতগতি লাভ করে। এই সকল প্রাণীর এইভাবে গতিলাভ করার পদ্ধতি জেট প্লেনের নীতি অনুসরণ করে বলে, এই জাতীয় গমনকে জেট গতি বলে।
প্রশ্ন 4. প্রকৃত উড্ডয়ন (Active flight) কাকে বলে? কোন্ প্রাণীতে দেখা যায়?
উত্তর : পালক ও বক্ষপেশির সহায়তায় ডানা সঞ্চালনের মাধ্যমে অভিকর্ষের বিরুদ্ধে দীর্ঘসময় বাতাসে ভেসে বেড়ানোকে প্রকৃত উড্ডয়ন বলে। পাখি, বাদুড় প্রভৃতি প্রাণীতে প্রকৃত উড্ডয়ন দেখা যায়।
প্রশ্ন 5. নিষ্ক্রিয় উড্ডয়ন (Passive flight) বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর: কিছু কিছু প্রাণীর ওড়ার জন্য ডানা থাকে না। এই সমস্ত প্রাণীরা লাফিয়ে পড়ার সময় বা সাময়িকভাবে বাতাসে ভেসে থাকার জন্য দেহের কোনো প্রসারিত অঙ্গের সাহায্যে অভিকর্ষের খানিকটা বিপরীতে উড়ে বেড়ায়। একে নিষ্ক্রিয় উড্ডয়ন বলে।
উদাহরণ— উড়ুক্কু মাছ, ড্রাকো নামক সরীসৃপে দেখা যায়।
No comments:
Post a Comment