প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও ভৌত সমন্বয় স্নায়ুতন্ত্র ( Response and Physical Co-ordination in Animals- Nervous System): দশম শ্রেণীর জীবনবিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায়| class 10 lifescience - SM Textbook

Fresh Topics

Friday, October 20, 2023

প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও ভৌত সমন্বয় স্নায়ুতন্ত্র ( Response and Physical Co-ordination in Animals- Nervous System): দশম শ্রেণীর জীবনবিজ্ঞান দ্বিতীয় অধ্যায়| class 10 lifescience

 প্রাণীদের সাড়াপ্রদান ও ভৌত সমন্বয় স্নায়ুতন্ত্র ( Response and Physical Co-ordination in Animals- Nervous System): দশম শ্রেণীর জীবনবিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় ১.৪| class 10 lifescience chapter1.4|suggestion life science 2024 ||



রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর:

প্রশ্ন 1. স্নায়ুতন্ত্র কাকে বলে? [ME'03,00] একটি উদাহরণের সাহায্যে ‘স্নায়ুতন্ত্র প্রাণীদেহে ভৌত সমন্বায়করূপে কাজ করে' বুঝিয়ে দাও।

 উত্তর : স্নায়ুতন্ত্র (Nervous system) : স্নায়ুকলা দ্বারা গঠিত যে তন্ত্র প্রাণীদেহে চেতনা জাগায়, পরিবেশ থেকে গৃহীত উদ্দীপনায় সাড়া দিয়ে পরিবেশ ও দেহের মধ্যে সামঞ্জস্য রক্ষা করে এবং দেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের কাজের মধ্যে সমন্বয়সাধন করে, তাকে স্নায়ুতন্ত্র বা নার্ভাস সিস্টেম বলে। মানুষের দেহে একটি নির্দিষ্ট উদ্দীপনার উত্তর প্রদানের জন্য একাধিক অঙ্গ ও তন্ত্রের কাজের মধ্যে সমন্বয় (Coordination) এবং ঐক্যবদ্ধতার (Integration) প্রয়োজন হয়। স্নায়ুতন্ত্র প্রাণীদেহে ভৌত সমন্বায়করূপে কাজ করে, তা একটি উদাহরণের সাহায্যে দেখানো হল— যেমন— দৌড়োনো। *

 সংশ্লিষ্ট অঙ্গ : পা, হূৎপিণ্ড, ফুসফুস, মস্তিষ্ক, মধ্যচ্ছদা, পরাস্থি পেশি। 

* সংশ্লিষ্ট তন্ত্র : পেশিতন্ত্র, শ্বাসতন্ত্র এবং সংবহনতন্ত্র । * 

সমন্বয়সাধন পদ্ধতি : দৌড়োনোর জন্য পায়ের পেশি অতিরিক্ত সক্রিয় হয় এবং সক্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য দেহে অতিরিক্ত গ্লুকোজ ও অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। ও শ্বাসকার্যের হার বৃদ্ধি পায় এবং ফুসফুস বাতাস থেকে বেশি পরিমাণ অক্সিজেন (O2) গ্রহণ করে হৃৎপিণ্ডে পাঠায়। ও মস্তিষ্ক রক্তের O2 ও CO-এর মাত্রা শনাক্তকরণের মাধ্যমে প্রশ্বাস নিশ্বাস প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্নায়ু উদ্দীপনা প্রেরণ করে মধ্যচ্ছদা, পঞ্জরাস্থি পেশি, হৃৎপেশি প্রভৃতিকে চালিত করে। ও হৃৎপেশির সংকোচন ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং সামগ্রিকভাবে হৃৎপিণ্ডের হার্দ উৎপাদ বৃদ্ধি পায় ও বেশি পরিমাণ অক্সিজেন ও গ্লুকোজ পেশিকোশে প্রেরিত হয়। © পেশিকোশে Og-এর সাহায্যে গ্লুকোজের জারণ ঘটে এবং শক্তি নির্গত হয়, যা দৌড়োনোর সময় প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান দেয়।

জেনে রাখো : মানুষের দেহের বিভিন্ন অঙ্গের ও তন্ত্রের কাজের | তন্ত্র' (Neuroendocrine system) বলা হয়। মধ্যে সমন্বয়সাধনের জন্য দুটি তন্ত্র দায়ী থাকে— (1) স্নায়ুতন্ত্র এবং (ii) অন্তঃক্ষরা তন্ত্র। এজন্য এদের একত্রে নিউরোএন্ডোক্রিন এ 

প্রশ্ন 2 .স্নায়ুতন্ত্রের কাজগুলি আলোচনা করো। অথবা, স্নায়ুতন্ত্রের প্রয়োজনীয়তা কী ? ** [ME 14,09,05,02,00) 

উত্তর : স্নায়ুতন্ত্রের কাজ : 

1• উদ্দীপনা গ্রহণ : প্রাণীদেহের অভ্যন্তরে এবং পরিধিতলে উপস্থিত বিভিন্ন গ্রাহক কোশ যথাক্রমে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক উদ্দীপনা গ্রহণ করে। ও

2. উদ্দীপনায় সাড়া দেওয়া : বিভিন্ন প্রকার উদ্দীপনায় সাড়া দিয়ে পরিবেশের বিভিন্ন পরিবর্তনের সঙ্গে দেহকে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে। ও 

3.সমন্বয় ও ঐক্যবদ্ধতা তৈরি : প্রাণীদেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের কাজের মধ্যে সমন্বয় ও ঐক্যবদ্ধতা তৈরি করে।

4.কারকের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ দেহের বিভিন্ন পেশির কার্যকারিতা (সংকোচন) এবং আস্তরযন্ত্রীয় বিভিন্ন গ্রন্থির ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে। ও 

5.মানসিক অবস্থা নিয়ন্ত্রণ ও সুষ্ঠু পরিচালনা : স্নায়ুতন্ত্রের সাহায্যে বিভিন্ন মানসিক অবস্থা, বিচার ক্ষমতা, বুদ্ধি, চিন্তা, সূক্ষ্ম ও স্থূল অনুভূতি প্রভৃতি নিয়ন্ত্রিত হয়। উদ্দীপনা গ্রহণ। স্নায়ুতন্ত্রের মানসিক অবস্থা ও প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ উদ্দীপনায় সাড়া দেওয়া কাজ পেশি ও গ্রন্থির কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের মধ্যে সমন্বয়সাধন

 জেনে রাখো: 1998 সালে আমেরিকান বিজ্ঞানী Dr. Masashi Yanagisawa প্রমাণ করেন, রক্তশর্করার মাত্রা কমে গেলে পার্শ্বীয় হাইপোথ্যালামাসের ক্ষুধা কেন্দ্র (Appetite centre) উদ্দীপিত হয়ে ভরেক্সিন (Orexin) হরমোন ক্ষরণ করে (orexis = appetite) এবং আমাদের খিদের অনুভূতি তৈরি হয়।

প্রশ্ন 3. স্নায়ুতন্ত্রের উপাদানগুলির নাম লেখো। উপাদানগুলির পারস্পরিক কার্যগত সম্পর্ক রেখাচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপন করো। 

উত্তর:  স্নায়ুতন্ত্রের উপাদান গঠনগত উপাদান | কার্যগত উপাদান @ গ্রাহক বা রিসেপটর, ও বাহক বা কন্ডাকটর (স্নায়ু @ স্নায়ুকোশ বা নিউরোন, ও নিউরোগ্লিয়া কোশ, ও স্নায়ুতন্তু, @ স্নায়ু ও স্নায়ুগ্রন্থি, © সাইন্যাপস্, বা নিউরোন), ও কারক বা | ইফেকটর ও স্নায়ুকেন্দ্র বা নার্ভসেন্টার

উপাদানগুলির পারস্পরিক কার্যগত সম্পর্কের রেখাচিত্র : উদ্দীপনা ইন্দ্রিয় গ্রাহক → অন্তর্বাহী স্নায়ু উদ্দীপনা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র | প্রান্তসন্নিকর্ষ বা সাইন্যাপস্ উদ্দীপনার উত্তর | সাইন্যাপস বহির্বাহী স্নায়ু কারক বা ইফেকটর | সাড়াপ্রদান।

 জেনে রাখো : স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হলে খুব সামান্য ক্ষেত্রেই তা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়। কারণ নিউরোন বিভাজনে অক্ষম। 

প্রশ্ন 4. নিউরোন কাকে বলে? নিউরোনের প্রকারভেদগুলির সংক্ষিপ্ত ধারণা দাও। *

 উত্তর:  নিউরোন (Neurone) : নিউরোব্লাস্ট কোশ থেকে উৎপন্ন কোশদেহ ও প্রবর্ধক দ্বারা গঠিত স্নায়ুতন্ত্রের গঠনগত ও কার্যগত একককে নিউরোন বা স্নায়ুকোশ বলে।

নিউরোনের প্রকারভেদ : গঠনের ভিত্তিতে মেরুবিহীন বা অ্যাপোলার একমেরুযুক্ত বা ইউনিপোলার দ্বিমেরুযুক্ত বা বাইপোলার বহুমেরুযুক্ত বা মাল্টিপোলার ছদ্ম-একমেরুযুক্ত বা সিউডোইউনিপোলার না করো। ** ট্য কাজের ভিত্তিতে সংজ্ঞাবহ বা সেনসরি নিউরোন সহযোগী বা অ্যাডজাস্টর নিউরোন আজ্ঞাবহ বা চেষ্টীয় বা মোটর নিউরোন।

প্রশ্ন 5. একটি স্নায়ুকোশ বা নিউরোলের গঠন ও কাজ : 

উত্তর:  সেলবডি (1) গোলাকার, ডিম্বাকার বা তারকাকার আকৃতির হয়। (1) ডেনড্রন থেকে গৃহীত উদ্দীপনাকে বা পেরিক্যারিয়ন বা (2) কোশদেহ পাতলা, সজীব, প্রভেদক ভেদ্য পর্দা নিউরোলেমা অ্যাক্সনে প্রেরণ করে। (2) নিউরোনের দ্বারা আবৃত থাকে। (3) দানাযুক্ত ও তত্ত্বময় সাইটোপ্লাজমকে সমস্ত বিপাকীয় কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। [এটি সোমা (soma) নিউরোপ্লাজম বলে। (4) কোশে সুস্পষ্ট নিউক্লিয়াস, গলগি বস্তু, মাইটোকনড্রিয়া, নিজল দানা (নিউক্লিয় প্রোটিন নির্মিত), নিষ্ক্রিয় সেন্ট্রোজোম প্রভৃতি উপস্থিত। কোশদেহ থেকে সৃষ্ট কোশপর্দা বেষ্টিত নিউরোপ্লাজমসহ আঙুলের মতো বা সুতোর মতো প্রসারিত অংশ। নিউরোনের প্রধান অংশ @ কোশদেহ বা নিউরোসাইটন বা সেনট্রন (centron) নামেও পরিচিত] ® প্রবর্ধক বা প্রলম্বিত অংশ বা নিউরাইটস ডেনড্রন অ্যাক্সন

প্রশ্ন 6. গঠন অনুযায়ী নিউরোনের প্রকারভেদগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। 

 উত্তর:  গঠন অনুযায়ী নিউরোন পাঁচ প্রকার। যথা –

 1. অ্যাপোলার (Apolar) বা মেরুবিহীন : কোনো নিউরোনের কোশদেহে যখন কোনো প্রবর্ধক থাকে না, তাকে মেরুবিহীন বা অ্যাপোলার নিউরোন বলে। উদাহরণ— অপরিণত এন্থ্রায়োনিক নার্ভকোশ বা নিউরোব্লাস্ট।

 2.  ইউনিপোলার (Unipolar) বা একমেরুযুক্ত : কোনো নিউরোনের কোশদেহে যখন একটিমাত্র প্রবর্ধক প্রধানত অ্যাক্সন (কখনো-কখনো কেবলমাত্র ডেনড্রন) থাকে, তখন তাকে এক মেরুযুক্ত বা ইউনিপোলার নিউরোন বলে। উদাহরণ— ভ্রূণের দেহে দেখা যায়।

 3. বাইপোলার (Bipolar) বা দ্বিমেরুযুক্ত : কোনো নিউরোনে যদি দুটি প্রবর্ধক (অ্যাক্সন ও ডেনড্রন) থাকে,তখন তাকে দ্বিমেরুযুক্ত বা বাইপোলার নিউরোন বলে। উদাহরণ- চোখের রেটিনাতে দেখা যায়। 

4. মাল্টিপোলার (Multipolar) বা বহুমেরুযুক্ত : কোনো নিউরোনে যদি তিনটি বা তার বেশি প্রবর্ধক থাকে (একটি অ্যাক্সন এবং একাধিক ডেনড্রন), তখন তাকে বহুমেরুযুক্ত বা মাল্টিপোলার নিউরোন বলে। উদাহরণ— প্রান্তীয় ও কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে দেখা যায়। 

5.  সিউডোইউনিপোলার (Pseudounipolar) বা ছদ্ম- একমেরুযুক্ত : কোনো নিউরোনের কোশদেহ থেকে একটি প্রবর্ধক

নির্গত হয়ে যদি সেটা দ্বিধাবিভক্ত হয়, তবে তাকে ছদ্ম-একমেরুযুক্ত বা সিউডোইউনিপোলার নিউরোন বলে। উদাহরণ – সুষুম্নাকাণ্ডের ডরসাল রুট অংশে দেখা যায়। অ্যাপোলার ইউনিপোলার বাইপোলার মাল্টিপোলার সিউডোইউনিপোলার গঠনের ভিত্তিতে নিউরোনের প্রকারভেদ 

প্রশ্ন 7 .কাজের ভিত্তিতে নিউরোনের প্রকারভেদগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো। 

উত্তর : কাজের ভিত্তিতে নিউরোন তিন প্রকার। যথা—

 1. সংজ্ঞাবহ বা সংবেদী বা সেনসরি নিউরোন (Sensory neurone): যে-সমস্ত নিউরোন গ্রাহক দ্বারা গৃহীত স্নায়ু উদ্দীপনাকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে বহন করে নিয়ে যায়, তাদের সংজ্ঞাবহ বা সংবেদী বা সেনসরি নিউরোন বলে। স্নায়ু উদ্দীপনা গ্রাহক সংজ্ঞাবহ নিউরোন → কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ও 

2. সহযোগী বা অ্যাডজাস্টার নিউরোন (Adjuster neu rone) : কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে অবস্থিত যে-সমস্ত নিউরোন সংজ্ঞাবহ নিউরোন থেকে স্নায়ু উদ্দীপনা গ্রহণ করে এবং উদ্দীপনাকে সাড়াতে পরিবর্তিত করে আজ্ঞাবহ নিউরোনে পৌঁছে দেয় অর্থাৎ সংজ্ঞাবহ ও আজ্ঞাবহ নিউরোনের কাজের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে, তাকে সহযোগী বা অ্যাডজাস্টার নিউরোন বলে।

3. আজ্ঞাবহ বা চেষ্টীয় বা মোটর নিউরোন (Motor (neurone): যে সমস্ত নিউরোন কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে উদ্দীপনা বা সাড়াকে (Response) কারক অঙ্গ বা গ্রন্থিতে পৌঁছে দেয়, তাদের আজ্ঞাবহ বা চেষ্টীয় বা মোটর নিউরোন বলে। সাড়া কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র আজ্ঞাবহ নিউরোন → কারক অঙ্গ/গ্রন্থি জেনে রাখো : মায়েলিনেটেড নিউরোনের ক্ষেত্রে অ্যাক্সনের র‍্যানভিয়ারের পর্ব থেকে যে-সমস্ত সূক্ষ্ম শাখা নির্গত হয়, তাদের কোল্যাটারাল বলে। এদের মাধ্যমেও স্নায়ুস্পন্দন পরিবাহিত হয়। 

প্রশ্ন ৪ . সাইন্যাপস্ কাকে বলে? [ME 16, 15,09,06,01,00 সাইন্যাপসের গঠন চিত্রসহ আলোচনা করো। 

 উত্তর : স্নায়ুসন্নিধি বা প্রান্তসন্নিকর্ষ বা সাইন্যাপস্ (Synapse): দুটি নিউরোনের সংযোগস্থলে অর্থাৎ, একটি নিউরোনের শেষ এবং অপর নিউরোনের শুরুর মধ্যবর্তী প্রোটোপ্লাজমীয় সংযোগবিহীন যে আণুবীক্ষণিক অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে নিউরোট্রান্সমিটারের সাহায্যে উদ্দীপনা সঞ্চালিত হয়, তাকে স্নায়ুসন্নিধি বা প্রান্তসন্নিকর্ষ বা সাইন্যাপস্ বলে। 

সাইন্যাপস্ বা প্রান্তসন্নিকর্ষের আণুবীক্ষণিক গঠন : অ্যাক্সো-ডেনড্রাইটিক সাইন্যাপসের ক্ষেত্রে একটি নিউরোনের অ্যাক্সন প্রান্ত এবং অপর নিউরোনের ডেনড্রন প্রান্তটি সংলগ্ন থাকে। ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দৃশ্যমান এই সাইন্যাপসের গঠনগুলি হল নিম্নরূপ - 

1. নিউরোনের দীর্ঘ প্রবর্ধক অ্যাক্সনের প্রান্তবুরুশের প্রত্যেকটি শাখার অগ্রভাগ স্ফীত বোতামের মতো দেখতে হয়। এই স্ফীত অংশকে প্রি-সাইন্যাপটিক নব্ বলে। 

2. প্রি-সাইন্যাপটিক নব্ যে পর্দা দ্বারা আবৃত, তাকে প্রি-সাইন্যাপটিক মেমব্রেন বলে ।

3.পরবর্তী নিউরোনের যে ডেনড্রাইট প্রান্ত প্রি-সাইন্যাপটিক নবের সঙ্গে সংলগ্ন থাকে, তাকে পোস্ট সাইন্যাপটিক নব্ বলে।

 4. পোস্ট সাইন্যাপটিক নব্ অংশটি পোস্ট সাইন্যাপটিক মেমব্রেন দ্বারা আবৃত থাকে। © প্রি-সাইন্যাপটিক নব্ ও পোস্ট সাইন্যাপটিক প্রসেস-এর মধ্যবর্তী 200-300Å চওড়া ফাঁকা স্থানকে স্যাইন্যাপটিক ক্লেফ্ট বলে।

5. প্রি-সাইন্যাপটিক নবের সাইটোপ্লাজমে অনেকগুলি পর্দাবৃত থলি থাকে, যাদের সাইন্যাপটিক ভেসিকল বলে। এই থলির মধ্যে অ্যাসিটাইল কোলিন, অ্যাড্রিনালিন নামক রাসায়নিক তরল থাকে, যাদের নিউরোহিউমর বা নিউরোট্রান্সমিটার বলে।

7. সাইন্যাপস্ স্নায়ু স্পন্দনকে (Nerve impulse) পূর্ববর্তী নিউরোন থেকে পরবর্তী নিউরোনে প্রবাহিত করে। নিউরোহিউমর বা নিউরোট্রান্সমিটার নিউরোনকে এই কাজে সাহায্য করে। 

জেনে রাখো : Sir Charles Sherrington (1861-1954) প্রথম সাইন্যাপস্ (Synapse) শব্দটি ব্যবহার করেন। 

Advanced Studies দুটি নিউরোনের ফাঁকা সংযোগস্থলে কী ঘটনা ঘটে ? Jodhpur Park Boys' School '16 দুটি নিউরোনের মধ্যবর্তী ফাঁকা সংযোগস্থলকে সাইন্যাপস্ বলে। সাইন্যাপস্-এ নিউরোট্রান্সমিটারের সাহায্যে স্নায়ু উদ্দীপনা একটি নিউরোনের অ্যাক্সন থেকে পরবর্তী নিউরোনের ডেনড্রাইটের দিকে পরিবাহিত হয়। এই উদ্দীপনা প্রবাহ একপ্রকার রাসায়নিক এবং একমুখী প্রক্রিয়া। এই ঘটনাটি নিম্নলিখিত পর্যায়ে সংঘটিত হয়— 

1. স্নায়ু স্পন্দন যখন পূর্ববর্তী নিউরোনে এসে পৌঁছায়, তখন প্রি-সাইন্যাপটিক পর্দার ভেদ্যতা পরিবর্তিত হয় এবং Ca2+ আয়নগুলি দ্রুত সাইন্যাপটিক নবের মধ্যে প্রবেশ করতে থাকে। 

2. Ca2+ এর প্রভাবে সাইন্যাপটিক ভেসিকলগুলি ফেটে যায় এবং এক্সোসাইটোসিস পদ্ধতিতে ভেসিকল মধ্যস্থ নিউরোট্রান্সমিটার (যেমন- অ্যাসিটাইল কোলিন, এপিনেফ্রিন প্রভৃতি)

3. সাইন্যাপটিক ক্লেফ্ট-এ মুক্ত হয়। ও সাইন্যাপটিক ক্লেফ্ট থেকে নিউরোট্রান্সমিটার পোস্ট সাইন্যাপটিক পর্দার গ্রাহক স্থানের সংস্পর্শে আসে ও যুক্ত হয় ।

4 • ফলস্বরূপ, পোস্ট সাইন্যাপটিক পর্দার ভেদ্যতার পরিবর্তন ঘটে এবং Na+ আয়ন প্রবেশ করে। ফলে পরবর্তী নিউরোনটি উদ্দীপিত হয় । এইভাবেই উদ্দীপনা এক স্নায়ুকোশ থেকে পরবর্তী স্নায়ুকোশে সাইন্যাপসের সাহায্যে পরিবাহিত হয়।

প্রশ্ন 9 . স্নায়ুতন্ত্রের কার্যগত উপাদানগুলি সম্পর্কে আলোচনা করো।

 উত্তর:  স্নায়ুতন্ত্রের কার্যগত উপাদান প্রধানত চার প্রকার। যথা—

 • গ্রাহক : প্রাণীদেহের বিভিন্ন অঙ্গে উপস্থিত যে-সমস্ত বিশেষ সংবেদনশীল উপাদান বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উদ্দীপনা গ্রহণ করতে সক্ষম, তাদের গ্রাহক (Receptor) বলে। যেমন- হকে উপস্থিত মেইজনার কণিকা (স্পর্শগ্রাহক), প্যাসিনিয়ান কণিকা (চাপগ্রাহক), চোখের রেটিনান্তরে উপস্থিত রড ও কোন কোশ, টেনডন, লিগামেন্ট। 

2.বাহক : স্নায়ুকোশ বা নিউরোনের যে-সমস্ত উপাদান গ্রাহক থেকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে এবং কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে কারাকে 1 স্নায়ুস্পন্দন পরিবহণ করে, তাদের বাহক (Conductor) বলে। যেমন— সংজ্ঞাবহ স্নায়ু, আজ্ঞাবহ স্নায়ু প্রভৃতি। 

3. কারক প্রাণীদেহের যে সমস্ত অঙ্গ্য বা গ্রন্থি স্নায়ুস্পন্দন গ্রহণের মাধ্যমে উদ্দীপিত হয়ে কার্যকরী নির্দেশ অনুযায়ী সাড়াপ্রদান করে, তাদের কারক (Effector) বলে। যেমন— পেশি ও গ্রন্থি। 

4.স্নায়ুকেন্দ্র স্নায়ুতন্ত্রের যে অংশে সংজ্ঞাবহ উদ্দীপনা চেষ্টীয় উদ্দীপনায় রূপান্তরিত হয়, তাকে স্নায়ুকেন্দ্র (Nerve Centre) বলে। যেমন— মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড স্নায়ুকেন্দ্ররূপে কাজ করে। 

প্রশ্ন 10 . সাড়া কাকে বলে? প্রাণীদেহে উদ্দীপনার প্রভাবে কীভাবে সাড়াপ্রদান ঘটে তা বর্ণনা করো। 

উত্তর : সাড়া (Response) : অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক উদ্দীপকের প্রভাবে জীবদেহে যে উদ্দীপনা বা প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, তাকে সাড়া বা রেসপন্স বলে। 

প্রাণীদেহের সাড়াপ্রদানের পদ্ধতি: আমাদের বাড়িতে কেউ দরজায় কলিং বেল বাজালে আমরা দরজা খুলে দিই। এক্ষেত্রে কলিং বেল বাজলে যে শব্দ হয় তা উদ্দীপক এবং দরজা খুলে দেওয়া হল উদ্দীপনায় সাড়া দেওয়া। প্রাণীদেহে উদ্দীপনার প্রভাবে যেভাবে সাড়ার সৃষ্টি হয়, তা নীচে আলোচনা করা হল- গ্রাহক - এক্ষেত্রে কানের কটি যন্ত্র শব্দ গ্রাহক হিসেবে কাজ করে, ফলে কলিং বেল এর শব্দ কানের মাধ্যমে গৃহীত হয়।

 ● বাহক - এক্ষেত্রে কলিং বেল-এর শব্দ কটি যন্ত্র থেকে অডিটরি স্নায়ুর মাধ্যমে বাহিত হয়ে মস্তিষ্কের শ্রবণকেন্দ্রে পৌঁছায়।

 • স্নায়ুকেন্দ্র কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড) অডিটরি স্নায়ু থেকে গৃহীত উদ্দীপনার বিশ্লেষণ ঘটিয়ে বাহকের মাধ্যমে সাড়াপ্রদানের নির্দেশ প্রেরণ করে। - কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে উদ্দীপনার বিশ্লেষণের মাধ্যমে যে

 • বাহক- নির্দেশ সৃষ্টি হয় তা প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের দ্বারা হাত ও পায়ের পেশিতে পৌঁছায়।

 • কারক - কলিং বেলের শব্দ শোনার পর হাত ও পায়ের পেশিতে প্রেরিত নির্দেশের মাধ্যমে হেঁটে এসে দরজা খুলে দেওয়া হয়। সুতরাং, এখানে হাত ও পায়ের পেশি হল কারক। এক্ষেত্রে সমগ্র স্নায়বিক পথটি হল- কলিং বেলের শব্দ কটি যন্ত্র। (গ্রাহক) অডিটরি জায় (বাহক) মস্তিষ্কের শ্রবণ কেন্দ্র (স্নায়ুকেন্দ্র) দরজা খুলে দেওয়া (সাড়া) | হাত ও পায়ের পেশি () প্রান্তীয় স্নায়ু (বাহক) | 

অনুরূপ প্রশ্ন : দরজায় ঘণ্টা বাজার শব্দ শুনে তুমি যেভাবে দরজা খুলবে, সেই স্নায়বিক পথটি একটি শব্দছকের সাহায্যে দেখাও। [ME 19]]

প্রশ্ন 11 .স্নায়ু কাকে বলে P(ME 07,06,00] এর অন্তর্গঠন সম্পর্কে আলোচনা করো। * 

উত্তর : স্নায়ু বা নার্ভ (Nerve):  রক্তবাহ, লসিকাবাহ ও ফ্যাট, কোশযুক্ত যোগকলার আবরণবেষ্টিত স্নায়ুতত্ত্ব গুচ্ছ যাদের মধ্যে দিয়ে স্নায়বিক উদ্দীপনা পরিবাহিত হয়, তাকে স্নায়ু বা নার্ভ বলে।

 স্নায়ুর অন্তর্গঠন : অনেকগুলি নিউরোন বান্ডিল আকারে গুচ্ছ আবৃত থাকে। আবরণগুলি হল- 

1. এপিনিউরিয়াম : এই তন্তুকলার আবরণটি নার্ভতন্তুর বন্দিলকে ঘিরে আবদ্ধ করে রাখে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, বড়ো স্বাকারের স্নায়ুগুলি এপিনিউরিয়াম দ্বারা আচ্ছাদিত থাকে। হয়ে স্নায়ু গঠন করে। এই বান্ডিলগুলি কিছু যোগকলার আবরণ দ্বারা ও 

2. এপিনিউরিয়াম: এই তত্ত্বকলার আবরণটি নার্ভতত্ত্বর বান্ডিলকে ও পেরিনিউরিয়াম : এই আবরণটি মসৃণ যোগকলা দ্বারা গঠিত এবং এটি বান্ডিলের তত্ত্বগুলিকে ঘিরে থাকে। 

3 . এন্ডোনিউরিয়াম : এই স্তরটি খুবই নমনীয় ও কোমল, প্রত্যেকটি নার্ভতত্ত্বকে ঘিরে এই স্তরটি দেখা যায় এবং এন্ডোনিউরিয়াম পেরিনিউরিয়ামের সঙ্গে যুক্ত থাকে। নার্ভ এপিনিউরিয়াম রক্তবাহ -পেরিনিউরিয়াম -এন্ডোনিউরিয়াম স্নায়ুর অন্তগঠন -অ্যাক্সন 

প্রশ্ন 12 .স্নায়ুর স্নায়ুকোশ বা নিউরোন, স্নায়ুতন্ত্র ও মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক ব্যাখ্যা করো। 

 উত্তর:  স্নায়ুকোশ, স্নায়ুতন্ত্র এবং স্নায়ুর মাा আন্তঃসম্পর্ক : 

1. যে তন্ত্রের মাধ্যমে উন্নত জটিল প্রাণীদেহে বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের কাজের মধ্যে দ্রুত সমন্বয় ও ঐক্যবদ্ধতা ( Coordination and Integration) তৈরি হয়, তাকে স্নায়ুতন্ত্র বলে। 

2. স্নায়ুতন্ত্রের গঠনগত ও কার্যগত একক হল স্নায়ুকোশ বা নিউরোন। অসংখ্য নিউরোন মিলিতভাবে স্নায়ুতন্ত্র গঠন করে। 

3• যোগকলার আবরণযুক্ত প্রধানত স্নায়ুকোশের অ্যাক্সনগুচ্ছকে স্নায়ু বা নার্স বলে। স্নায়ু উদ্দীপনা পরিবহণে এবং দ্রুত যোগাযোগ স্থাপনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

4 • স্নায়ু হল প্রাণীদেহে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষুদ্রতম সংস্করণ এবং স্নায়ুতন্ত্র হল এই ব্যবস্থার সর্বোচ্চ সংগঠন। © 

5.সুতরাং, একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, প্রাণীদেহে বিশেষত মানুষের দেহে স্নায়ু, স্নায়ুকোশ ব্যতীত স্নায়ুতন্ত্রের কোনো অস্তিত্ব নেই অর্থাৎ, গঠনগত এবং কার্যগতভাবে স্নায়ু, স্নায়ুকোশ এবং স্নায়ুতন্ত্র একে অপরের সঙ্গে জড়িত।

প্রশ্ন 13.স্নায়ুর প্রকারভেদগুলি সম্পর্কে আলোচনা করো।

 উত্তর গঠনের ভিত্তিতে স্নায়ু দুই প্রকার, যথা—

 1 নিউরোলেমার মেডুলেটেড বা মায়েলিনেটেড স্নায়ু (Myelinated nerve) : যে-সমস্ত স্নায়ুর বাইরে অ্যাক্সোলেমা ও মধ্যবর্তী স্থানে মায়েলিন আবরণী থাকে, তাদের মেডুলেটেড বা মায়েলিনেটেড স্নায়ু বলে। যেমন— মানুষের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের শ্বেত বস্তুতে এবং প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের স্নায়ু। 

2.  নন-মেডুলেটেড বা নন-মায়েলিনেটেড স্নায়ু (Non- myelinated nerve) : যে-সমস্ত স্নায়ুর বাইরে অ্যাক্সোলেমা ও নিউরোলেমার মাঝে কোনো মায়েলিন আবরণী থাকে না, তাদের নন-মেডুলেটেড বা নন-মায়েলিনেটেড স্নায়ু বলে। যেমন— মানুষের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের ধূসর বস্তুতে এবং প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রে এই প্রকার স্নায়ু বর্তমান।

 কার্যকারিতার ওপর ভিত্তি করে স্নায়ু তিন প্রকার, যথা—  

1. অন্তর্বাহী স্নায়ু বা অ্যাফারেন্ট নার্ভ বা সংজ্ঞাবহ স্নায়ু বা সেনসরি নার্ভ (Afferent or Sensory nerve) : এই সমস্ত স্নায়ু গ্রাহক অঙ্গ থেকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে উদ্দীপনা পরিবহণ করে। সংজ্ঞাবহ স্নায়ু অন্তর্বাহী নিউরোন দ্বারা গঠিত। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (মস্তিষ্ক, সুষুম্নাকাণ্ড) অন্তর্বাহী স্নায়ু উদ্দীপনা গ্রাহক যেমন—অলফ্যাক্টরি স্নায়ু, অপটিক স্নায়ু এবং অডিটরি স্নায়ু। 

2. বহির্বাহী স্নায়ু বা ইফারেন্ট নার্ভ বা আজ্ঞাবহ স্নায়ু বা মোটর নার্ভ (Efferent or Motor nerve) : এই সমস্ত স্নায়ুর মাধ্যমে। উদ্দীপনার সাড়া বা উত্তর কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে কারক অঙ্গে (পেশি ও গ্রন্থি) পৌঁছায়। আজ্ঞাবহ স্নায়ু বহির্বাহী নিউরোন দ্বারা গঠিত হয়। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র কার্যকরী নির্দেশ বহির্বাহী স্নায়ু → কারক (পেশি ও গ্রন্থি) যেমন—অকিউলোমোটর, ট্রকলিয়ার, অ্যাবডুসেন্স, স্পাইনাল অ্যাকসেসরি এবং হাইপোগ্লাসাল স্নায়ু।

 3. মিশ্র স্নায়ু বা মিক্সড নার্ভ (Mixed nerve) : এই সমস্ত স্নায়ু গ্রাহক অঙ্গ থেকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে উদ্দীপনা পৌঁছে দেয় এবং কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে উদ্দীপনার প্রত্যুত্তর কারক অঙ্গে পৌঁছে দেয়। মিশ্র স্নায়ু অন্তর্বাহী ও বহির্বাহী নিউরোন দ্বারা গঠিত হয়। যেমন— ট্রাইজেমিনাল, ফেসিয়াল, গ্লসোফ্যারিঞ্জিয়াল, ভেগাস স্নায়ু এবং সুষুন্নীয় স্নায়ু মিশ্র প্রকৃতির হয়। 

জেনে রাখো : অন্তর্বাহী স্নায়ু সমবেদী স্নায়ু হিসেবে এবং বহির্বাহী স্নায়ু চেষ্টীয় স্নায়ু হিসেবেও পরিচিত। অ্যাড্রিনার্জিক স্নায়ু (Adrenergic nerve) : স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের অন্তর্গত যে-সমস্ত হরমোন স্নায়ুর প্রান্ত থেকে অ্যাড্রিনালিন বা নর-অ্যাড্রিনালিন ক্ষরিত হয়, তাদের অ্যাড্রিনার্জিক স্নায়ু বলে। কোলিনার্জিক স্নায়ু (Cholinergic nerve) : স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের অন্তর্গত যে-সমস্ত স্নায়ুতন্তুর প্রান্ত থেকে অ্যাসিটাইল কোলিন নির্গত হয়, তাদের কোলিনার্জিক স্নায়ু বলে। যেমন – সমবেদী স্নায়ুতন্ত্রের অন্তর্গত প্রাক্ স্নায়ুগ্রন্থি থেকে উৎপন্ন স্নায়ু এবং পরাসমবেদী স্নায়ুতন্ত্রের অন্তর্গত প্রাক ও পশ্চাৎ উভয় স্নায়ুগ্রন্থি থেকে উৎপন্ন স্নায়ু।

প্রশ্ন 14 .শারীরস্থান শ্রেণিবিভাগ করো। অনুসারে মানবদেহের স্নায়ুতন্ত্রের [ME '17] 

উত্তর : মানুষের স্নায়ুতন্ত্র কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (CNS) | প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র (PNS) স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র (ANS) মস্তিষ্ক (Brain) সুষুম্নাকাণ্ড (Spinal cord) করোটীয় স্নায়ু (12 জোড়া) সুষুন্নীয় স্নায়ু (31 জোড়া) স্বতন্ত্র বা সমবেদী বা সিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র পরাস্বতন্ত্র বা পরাসমবেদী বা প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র ।

প্রশ্ন 15 .কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের সংজ্ঞা দাও। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। 

 উত্তর:  কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (Central Nervous System or CNS) : মানবদেহের অগ্রভাগে করোটি দ্বারা সুরক্ষিত মস্তিষ্ক এবং দেহকাণ্ডের পৃষ্ঠদেশ বরাবর মেরুদণ্ড দ্বারা সুরক্ষিত সুষুম্নাকাণ্ডের সমন্বয়ে গঠিত যে তন্ত্র প্রাণীদেহের সমস্ত অঙ্গের যাবতীয় স্নায়বিক কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র বা CNS বলে। | 

কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র = মস্তিষ্ক + সুষুম্নাকাণ্ড 

কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য : মানবদেহে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র খাদ্যনালির পৃষ্ঠদেশে অবস্থিত এবং ফাঁপা প্রকৃতির হয়। ও কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র দুটি প্রধান অংশ দ্বারা গঠিত। যথা— (i) মস্তিষ্ক বা ব্রেন এবং (ii) সুষুম্নাকাণ্ড বা স্পাইনাল কর্ড। ও মস্তিষ্ক অস্থিনির্মিত করোটি এবং সুষুম্নাকাণ্ড মেরুদণ্ড দ্বারা সুরক্ষিত থাকে। O করোটি ও মেরুদণ্ডের সংযোগস্থলে অবস্থিত ফোরামেন অফ ম্যাগনাম -এর সাহায্যে মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড পরস্পরের সঙ্গেঙ্গ যুক্ত থাকে। ও মানুষের CNS ত্রিস্তরীয় মেনিনজেস পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে। o মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে চারটি ফাঁপা গহ্বর বা নিলয় এবং সুষুম্নাকান্ডের অভ্যন্তরে ফাঁপা কেন্দ্রীয় নালি বর্তমান। ও নিলয়গুলি ও কেন্দ্রীয় নালি মস্তিষ্ক সুধুন্নীয় রস বা সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড (CSF) দ্বারা পূর্ণ থাকে। মস্তিষ্কে মেনিনজেস পর্দার নীচে থাকে ধূসর বস্তু এবং তার নীচে থাকে শেষ বস্তু। কিন্তু সুষুম্নাকাণ্ডে বাইরের দিকে থাকে শ্বেত বস্তু এবং ভিতরের দিকে থাকে ধূসর বস্তু।

প্রশ্ন 16.  মস্তিষ্ক কাকে বলে? মস্তিষ্কের অবস্থান লেখো। ছকের সাহায্যে মস্তিষ্কের অংশগুলি উল্লেখ করো। Got pens Multipurpose School (Boys). Taki Ho 16 

উত্তর : মস্তিষ্ক (Brain) : অস্থিনির্মিত করোটি দ্বারা সুরক্ষিত, মেনিনজেস পর্দা দ্বারা আবৃত, তরলপূর্ণ গহ্বরযুক্ত কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের সর্ববৃহৎ স্ফীত অংশ যা প্রাণীদের বিভিন্ন স্নায়বিক আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে, তাকে মস্তিষ্ক বা ব্রেন বলে। मान স্তর অবস্থান দেহকাণ্ডের অগ্রভাগে করোটি গহ্বরের মধ্যে মস্তিষ্ক উপস্থিত থাকে।

জেনে রাখো : গ্রিক শব্দ 'enkephalon' মানে হল ব্রেন (Brain) বা | মস্তিষ্ক। মস্তিষ্ক প্রায় 1000 বিলিয়ন নিউরোন এবং ততোধিক নিউরোগ্লিয়া কোশ দ্বারা গঠিত।

প্রশ্ন 17. সুষুম্নাকাণ্ড কাকে বলে? এর অবস্থান ও গঠন উল্লেখ করো। 

উত্তর:  সুষুম্নাকাণ্ড (Spinal cord) : কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের যে দীর্ঘ, ফাঁপা নলাকার অংশ গ্রীবাদেশ থেকে প্রথম লাম্বার অঞ্চল পর্যন্ত মেরুদণ্ডের নিউরাল ক্যানালের মধ্যে অবস্থান করে, তাকে সুষুম্নাকাণ্ড বা স্পাইনাল কর্ড বলে। 

অবস্থান : সুষুম্নাকাণ্ড, মস্তিষ্কের মেডালা অবলাংগাটার শেষভাগ থেকে উৎপন্ন হয়ে করোটির ফোরামেন অফ ম্যাগনাম নামক ছিদ্রের মধ্য দিয়ে নির্গত হয়ে মেরুদণ্ডের নিউরাল ক্যানেলের মধ্য দিয়ে প্রথম কটিদেশীয় (লাম্বার) কশেরুকা পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। 

সুষুম্নাকাণ্ডের গঠন : 

1• পুরুষদেহে সুষুম্নাকাণ্ড 45 cm এবং স্ত্রীদেহে 35 cm দীর্ঘ হয়। 

2. সুষুম্নাকাণ্ডের বাইরে ত্রিস্তরীয় মেনিনজেস আবরণ বর্তমান। এর বাইরের দিকে শ্বেত বস্তু এবং ভিতরের দিকে ধূসর বস্তু বর্তমান থাকে। 

3. সুষুম্নাকাণ্ড সারভাইক্যাল, থোরাসিক, লাম্বার, স্যাক্রাল ও কক্সিজিয়াল খণ্ডকে বিভক্ত থাকে, যা থেকে মোট 31 জোড়া স্নায়ু নির্গত হয়েছে। 

4. লাম্বার অঞ্চলে সুষুম্নাকাণ্ডের শেষপ্রান্ত ক্রমশ সরু হয়ে যে ত্রিকোণাকার গঠন তৈরি করে, তাকে কোনাস মেডুলারিস বলে।

5.• কোনাস মেডুলারিস থেকে উৎপন্ন স্নায়ুকোশবিহীন মতো অংশগুলিকে ফাইলাম টারমিনেল বলে। 

6.কোনাস মেডুলারিসের পশ্চাৎ অংশটি ঘোড়ার লেজের মতো গঠন তৈরি করে, একে কড়া ইকুইনা বলে । 

7. তার কেন্দ্রে অবস্থিত নালিকে কেন্দ্রীয় নালি বা সেন্ট্রাল ক্যানাল বলে। এর মধ্যে CSF থাকে। 

Advanced Studies নেই প্রাণ্ডীয় স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন মানুর প্রকৃতি ও কাজ হুকের সাহায্যে দেখানো হল : স্নায়ুর স্নায়ুর নাম ও সংখ্যা প্রকৃতি কাজ করোটীয় স্নায়ু (i) অলফ্যাক্টরি স্নায়ু সংজ্ঞাবহ ঘ্রাণের অনুভূতি বহন করে। (ii) অপটিক স্নায়ু সংজ্ঞাবহ দর্শনের অনুভূতি বহন করে। (iii) অকিউলোমোটর স্নায়ু চেষ্টীয় অক্ষিপেশির বিচলনে সাহায্য করে। (iv) টুকলিয়ার স্না চেষ্টীয় অক্ষিগোলকের সঞ্চালনে সাহায্য করে। (v) ট্রাইজেমিনাল স্ন মিশ্র মুখমণ্ডল, ত্বক, জিহ্বা প্রভৃতি অন্য থেকে স্পর্শ, তাপ, শৈত্য প্রভৃতি অনুভূতি গুরুমস্তিষ্কে প্রেরণ করে। (vi) অ্যাবডুসেন্স স্নায়ু চেষ্টীয় অক্ষিগোলকের সঞ্চালনে সাহায্য করে। (vii) ফেসিয়াল স্নায়ু মিশ্র স্বাদ কোরক থেকে উদ্দীপনা গুরুমস্তিষ্কে প্রেরণ করে এবং লালাক্ষরণ, অশ্রু নিঃসরণ প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করে। (viii) অডিটরি স্নায়ু সংজ্ঞাবহ দেহের ভারসাম্য রক্ষা ও শ্রবণ অনুভূতি বহন করে। (ix) মসোফ্যারিখিয়াল স্নায়ু মিশ্র স্বাদগ্রহণ, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ। (x) ভেগাস স্নায়ু মিশ্র আন্তরযন্ত্র থেকে উদ্দীপনা পরিবহণ ও হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, পাকস্থলীর ক্রমসংকোচন, প্রস্থিক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করে। (xi) স্পাইনাল অ্যাকসেসরি স্নায়ু চেষ্টীয় গ্রীবা, গলবিল, স্বরযন্ত্রের পেশি সঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ করে। (xii) হাইপোগ্নসা চেষ্টীয় জিহ্বা ও স্বরযন্ত্রের পেশি সঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ করে। (1) দেহের বিভিন্ন গ্রাহক অঙ্গ থেকে উদ্দীপনা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রেরণ করে। (2) বিভিন্ন পেশি ও গ্রন্থির কাজকে নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রশ্ন 19 .প্রকারভেদগুলি উদাহরণসহ ছকের মাধ্যমে আলোচনা করো। ★★ [ME '14,11,10,02] 

উত্তর : প্রতিবর্ত ক্রিয়া (Reflex action) : নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞাবহ উদ্দীপনার প্রভাবে প্রাণীদেহে যে স্বতঃস্ফূর্ত, তাৎক্ষণিক ও অনৈচ্ছিক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় এবং যা সুষুম্নাকাণ্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তাকে প্রতিবর্ত ক্রিয়া বা রিফ্লেক্স অ্যাকশন বলে।

 প্রতিবর্ত ক্রিয়ার প্রকারভেদ : রুশ বিজ্ঞানী প্যাভলভ (Pavlov) প্রতিবর্ত ক্রিয়াকে দুভাগে ভাগ করেছেন— প্রতিবর্ত ক্রিয়া | সহজাত বা জন্মগত বা শর্তনিরপেক্ষ প্রতিবর্ত ক্রিয়া অভ্যাসগত বা অর্জিত বা শর্তসাপেক্ষ প্রতিবর্ত ক্রিয়া উদা:— হাঁটতে, কথা বলতে, গান | গাইতে, সাঁতার কাটতে শেখা । | 

উপরিগত প্রতিবর্ত উদা:- পায়ের পাতায় | আন্তরযন্ত্রীয় প্রতিবর্ত গভীরতম প্রতিবর্ত উদা:- পৌষ্টিকনালির উদা:— হাঁটুর ঝাঁকুনি। সুড়সুড়ি দিলে পায়ের | পাতার সংকোচন। ক্রমসংকোচন বা পেরিস্টলসিস। | 

জেনে রাখো : ‘প্রতিবর্ত' বা 'Reflex' শব্দটি ল্যাটিন শব্দ 'reflexus ' থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে, যার অর্থ 'Reflected or Directed back'.

প্রশ্ন  20. সহজাত বা জন্মগত বা শর্তবিহীন প্রতিবর্ত ক্রিয়ার সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ। ** [ME '15] 

উত্তর : সহজাত বা জন্মগত প্রতিবর্ত ক্রিয়া (Inborn or Uncon- ditional reflex action) : যে সমস্ত প্রতিবর্ত ক্রিয়া স্থায়ী, প্রাণীরা জন্মসূত্রে লাভ করে এবং অভ্যাস বা শর্ত দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না, তাদের সহজাত বা জন্মগত বা শর্তবিহীন প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে। 

বৈশিষ্ট্য : O প্রতিবর্ত ক্রিয়ার স্নায়ুপথ সাধারণত সরল। ও প্রধানত সুষুম্নাকাণ্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ও প্রাণীরা জন্মসূত্রে লাভ করে। ও এই ধরনের প্রতিবর্ত ক্রিয়া চিরস্থায়ী, কখনোই পরিবর্তন বা বিলুপ্ত হয় না । চোখে জোরালো আলো পড়লে চোখ বুজে যায় উদাহরণ © পায়ের পাতায় সুড়সুড়ি দিলে পায়ের পাতার সংকোচন। ও চোখে জোরালো আলো পড়লে চোখ বুজিয়ে নেওয়া। ও খাদ্য গলাধঃকরণ। ও হাঁটুর ঝাঁকুনি। ও শিশুর স্তন্যদুগ্ধ পান করা। © হাঁচি, কাশি প্রভৃতি।

 জেনে রাখো : সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া আবার তিন প্রকারের হয়- ও উপরিগত প্রতিবর্ত ক্রিয়া : এই প্রকার প্রতিবর্ত ক্রিয়ার উদ্দীপনার।

গ্রাহকগুলি দেহের উপরিভাগে বা দেহত্বকে বা মিউকাস ঝিল্লিতে উপস্থিত থাকে। উদাহরণ- হঠাৎ উজ্জ্বল আলো চোখে পড়লে তারারাস্ত্রীয় প্রতিবর্ত ক্রিয়া ঘটে। এর ফলে তারারন্দ্র সংকুচিত হয়। ও

 গভীরতম প্রতিবর্ত ক্রিয়া : এই প্রকার প্রতিবর্ত ক্রিয়ায় গ্রাহক দেহের অভ্যন্তরে থাকে। উদাহরণ ঝুলে থাকা পায়ের হাঁটুতে সামান্য আঘাত করলে পায়ে ঝাকুনি দিয়ে । ও 

আন্তরমন্ত্রীয় প্রতিবর্ত ক্রিয়া : এই প্রকার প্রতিবর্তের গ্রাহকগুলি আন্তরমন্ত্রীয় অঙ্কো উপস্থিত থাকে। উদাহরণ পরিপাক, শ্বসনকার্য সম্বন্ধীয় প্রতিবর্ত।

 প্রশ্ন 21 .অভ্যাসগত বা অর্জিত বা শর্তসাপেক্ষ প্রতিবর্ত ক্রিয়ার সংজ্ঞা, বৈশিষ্ট্য ও উদাহরণ লেখো। * Kamarpukar Ramakrishna Miction MP school '16 

উত্তর: অভ্যাসগত বা শর্তসাপেক্ষ বা অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া (Conditional or Acquired reflex action) : যে সমস্ত প্রতিবর্ত ক্রিয়া জন্মসূত্রে পাওয়া যায় না, অভ্যাস ও প্রশিক্ষণের দ্বারা অর্জন করতে হয়, তাদের অভ্যাসগত বা শর্তসাপেক্ষ বা অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে।

বৈশিষ্ট্য :  প্রতিবর্ত ক্রিয়া জন্মের পর অভ্যাস ও প্রশিক্ষদের দ্বারা অর্জিত হয়। ও প্রতিবর্ত ক্রিয়াপথ জটিল ও অস্থায়ী এবং পরিবর্তনশীল। ও প্রতিবর্ত ক্রিয়া শর্তের ওপর নির্ভর করে। * অনভ্যাসের ফলে প্রতিবর্ত ক্রিয়াপথের বিলোপ ঘটতে পারে। © এই প্রকার প্রতিবর্ত ক্রিয়া সুন্নাতাও ও মস্তিষ্ক উভয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। 

AL- উদাহরণ- শিশুর হাঁটতে শেখা, কথা বলতে শেখা, লেখাপড়া, গান গাওয়া, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো প্রভৃতি।

 প্রশ্ন 22 .প্যাডল প্রতিবর্ত ক্রিয়া কাকে বলে? প্রতিবর্ত ক্লিয়াটির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও। 

উত্তর : প্যাডলড প্রতিবর্ড থ্রিয়া (Pavior's reflex action) বুশ বিজ্ঞানী ইভান প্যাভলভ (Ivan Patrovich Pavlov 1920 ) পোষা কুকুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে অভ্যাসগত প্রতিবর্ত ক্রিয়া ব্যাখ্যা করেছিলেন। একে প্যাভলভ প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে। 

প্যাভলভ প্রতিবর্ত ক্রিয়ার পরীক্ষা : জন্মগত বা শর্তনিরপেক্ষ প্রতিবর্ত ক্রিয়াকে প্যাভলভ এই পরীক্ষা দ্বারা অভ্যাসগত বা শর্তসাপেক্ষ প্রতিবর্ত ক্রিয়ায় পরিণত করেছিলেন। এই পরীক্ষাকে শর্তসাপেক্ষ লালা নিঃসরণ প্রতিবর্ত ক্রিয়ার পরীক্ষা বলা হয়। 

পরীক্ষা পদ্ধতি ও পর্যবেক্ষণ : 

ও প্যাভলভ একটি বিশেষ সময়ে তাঁর পোষা কুকুরটির কাছে ঘণ্টা বাজালেন। কুকুরটির কোনো লালাক্ষরণ হল না । 

ও পরের দিন ওই সময়ে তিনি কুকুরটিকে খাবার দিলেন। খাবার দর্শনে কুকুরটির জিভ থেকে লালাক্ষরণ শুরু হল (এটি কুকুরের সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া)।

 • এরপর প্যাভলভ বেশ কয়েকদিন ধরে নির্দিষ্ট সময়ে ঘণ্টা বাজিয়ে তারপর খাবার দিতে থাকলেন। যথারীতি কুকুরটির লালাক্ষরণ ঘটতে থাকল। 

ও কিছুদিন পর প্যাভলভ নির্দিষ্ট সময়ে ঘণ্টা বাজালেন কিন্তু কোনো খাবার দিলেন না। দেখা গেল, খাবারের দর্শন না ঘটলেও কুকুরের লালাক্ষরণ শুরু হয়েছে। 

ও এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ে ঘণ্টাধ্বনির সঙ্গে সঙ্গে খাবার দেওয়া হত বলে কুকুরের এটি অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল অর্থাৎ, ঘণ্টা বাজলেই খাবার দেওয়া হবে। সুতরাং, শুধুমাত্র ঘণ্টাধ্বনি শুনে খাবার দর্শন না করেই লালাক্ষরণ শুরু হয়ে যায়। 1 1 বেল বাজানো হল খাবার দেওয়া হল। না বেল বাজানো দেওয়া হয়েছে 4 হয়নি খাবার 3 | বেল বাজানো হল এবং খাবার দেওয়া বেল বাজানো হল অথচ খাবার হল দেওয়া হয়নি কিন্তু লালা ক্ষরণ হচ্ছে প্যাভলভের প্রতিবর্ত ক্রিয়ার পরীক্ষা

 সিদ্ধান্ত : এই পরীক্ষা থেকে প্যাভলভ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন যে, সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়াকেও অভ্যাসগত প্রতিবর্ত ক্রিয়ায় পরিণত করা সম্ভব।

জেনে রাখো : সার্কাসে বিভিন্ন ট্রেইনড (trained) জীব-জন্তুর খেল | আসলে অভ্যাসগত প্রতিবর্ত ক্রিয়া ।

প্রশ্ন 23 : আসলে অভ্যাসগত প্ৰাতৰত ক্রিয়া। Burdwan Town school 16 প্রতিবর্ত পথ বা প্রতিবর্ত চাপ কাকে বলে? একটি সরল প্রতিবর্ত চাপের অংশগুলির নাম লেখো। একটি প্রতিবর্ত চাপের সাহায্যে কীভাবে প্রতিবর্ত ক্রিয়া ঘটে তার পর্যায়ক্রমিক ধারণা দাও। 

 উত্তর:  প্রতিবর্ত চাপ (Reflex arc ) : যে স্নায়ুপথে প্রতিবর্ত ক্রিয়ার স্নায়বিক উদ্দীপনা পরিবাহিত হয়, তাকে প্রতিবর্ত পথ বা প্রতিবর্ত চাপ একটি প্রতিবর্ত চাপের অংশগুলি হল- ও গ্রাহক, ও অন্তর্বাহী বা সংজ্ঞাবহ নিউরোন, ও স্নায়ুকেন্দ্র, ও বহির্বাহী বা চেষ্টীয় নিউরোন, বা রিফ্লেক্স আর্ক বলে। 6 কারক।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর: 

প্রশ্ন 1. স্নায়ুতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। Bagbazar Multipurpose girls' High School (Govt Spons) 16 

উত্তর:  স্নায়ুতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য : O স্নায়ুতন্ত্রের গঠনগত ও কার্যগত একক হল স্নায়ুকোশ বা নিউরোন। ও স্নায়ুতন্ত্রে স্নায়ুর মাধ্যমে উদ্দীপনা গ্রাহক থেকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে এবং কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে কারকে পরিবাহিত হয়। ও স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে প্রাণীরা উত্তেজনায় সাড়া দেয়। স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে প্রাণীদেহে বিভিন্ন অঙ্গ এবং তন্ত্রের কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধিত হয় এবং সমন্বয়ের পরে স্নায়ুতন্ত্রের কোনোরূপ গঠনগত ও কার্যগত পরিবর্তন ঘটে না। এই কারণে স্নায়ুতন্ত্রকে ভৌত সমন্বায়ক (Physical Coordinator) বলা হয়।

প্রশ্ন  2 . স্নায়ুর প্রধান তিনটি কাজ লেখো। 

উত্তর:  স্নায়ুর কাজ : বিভিন্ন জ্ঞানেন্দ্রিয় থেকে বিভিন্ন উদ্দীপনা গ্রহণ করে অন্তর্বাহী স্নায়ুর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রেরণ করা। ও বহির্বাহী স্নায়ুর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকরী নির্দেশ কারক অঙ্গে প্রেরণ করা। ও দেহের বিভিন্ন পেশির সংকোচন ও গ্রন্থির ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করা।

প্রশ্ন 3 .নিউরোন ও স্নায়ুর মধ্যে সম্পর্ক কী ? * [ME '05,02] 

উত্তর : 1. স্নায়ুতন্ত্রের গঠনগত ও কার্যগত একক হল নিউরোন। এই নিউরোনের একাধিক অ্যাক্সন মিলিত হয়ে স্নায়ু বা নার্ভ গঠন করে।

 2 .স্নায়ু সেনসরি বা মোটর নিউরোন দ্বারা গঠিত হয়। ও স্নায়ুকলার উদ্দীপনা পরিবহণকারী অংশ হল স্নায়ুকোশ বা নিউরোন, অন্যদিকে নিউরোনের উদ্দীপনা পরিবহণকারী অংশ হল স্নায়ু। 

সুতরাং, গঠন ও কাজের ভিত্তিতে বলা যায়, নিউরোন হল উদ্দীপনা পরিবহণকারী এক প্রকার কোশ এবং স্নায়ু হল ওই কোশের উদ্দীপনা পরিবহণকারী অংশ।

প্রশ্ন  4. নিউরোগ্লিয়া কোশ কাকে বলে? এর কাজগুলি লেখো। Chakdaha Ramlal Academy (HS) '16

 উত্তর:  নিউরোগ্লিয়া কোশ (Neuroglia cell) : স্নায়ুতন্ত্রে যে- সমস্ত প্রবর্ধকযুক্ত, বিভাজন ক্ষমতাসম্পন্ন, উদ্দীপনা পরিবহণে অক্ষম কোশ উপস্থিত থাকে, তাদের নিউরোগ্লিয়া বা গ্লিয়াল কোশ বলে।

 নিউরোগ্লিয়ার কাজ : • স্নায়ুতন্ত্রের 90% অংশ গঠন করে। বিশেষ করে মায়েলিন আবরণী গঠনে সাহায্য করে।ও স্নায়ুতন্ত্রের ধারক কা না র করে। 

• নিউরোনকে পুষ্টিপদার্থ প্রদান করে ও যান্ত্রিক দৃঢ়তা দান করে। o আগ্রাসী কোশ হিসেবে স্নায়ুকে রক্ষা করে। কাজ নিউরোগ্লিয়া 

Advanced Studies : বিভিন্ন প্রকার নিউরোমিরা কোম্পের নাম ও কাজ ছকের মাধ্যমে দেখানো হল ও কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের নিউরোগ্লিয়া কোশ : কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের নিউরোগ্লিয়া কোশ 

(i) ই কাজ রক্তজালক ও মস্তিষ্কের (নিউরোনের) মধ্যে Blood-brain barrier তৈরি করে। এর ফলে রক্ত থেকে নিউরোনে 02. গ্লুকোজ, লিপিডধর্মী পদার্থ প্রবেশ করলেও বিষাক্ত পদার্থ, বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ নিউরোনে পৌঁছাতে পারে না।

 (ii) অলিগোডেনড্রোমিয়া মায়োলিন সিং তৈরি করে কিন্তু উদ্দীপনা পরিবহণ করে না। 

(III) মাইক্রোমিয়া কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রবিষ্ট ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে এবং প্রদাহযুক্ত কলার ক্ষয়পূরণ করে।

 (iv) এপেনডাইমাল কোশ মস্তিষ্কের নিলয় ও সুষুম্নাকাণ্ডের কেন্দ্রীয় নালির আবরণী তৈরি করে। এই কোশগুলি কোরয়েড প্লেক্সাস গঠনের মাধ্যমে সুষুপ্রীয় মেরুরস বা সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড ক্ষরণ করে। ও প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের 

নিউরোগ্লিয়া কোশ : নিউরোগ্লিয়া কোশ

 (1) অ্যাম্ফিসাইট 

(ii) E সোয়ান কোশ কাজ কোশদেহগুলিকে একত্রিত করে রাহুগ্রন্থি গঠন করে। মায়েলিন সিদ্, তৈরি করে। মায়েলিন আবরণযুক্ত নিউরোনে মায়েলিনবিহীন নিউরোনের তুলনায় অনেক দ্রুত (প্রায় 50 গুণ বেশি) উদ্দীপনা পরিবাহিত হয়।

 প্রশ্ন 5 .মায়েলিন সিদ (Myelin Sheath) কাকে বলে? এর কাজ লেখো।

 উত্তর: मায়নিন সিদ্ (Myelin Sheath) : সোয়ান কোশ থেকে ক্ষরিত লিপিড সমৃদ্ধ যে উজ্জ্বল সাদা রঙের বিচ্ছিন্ন আবরণ অ্যাক্সনের চারপাশে স্থানে স্থানে উপস্থিত থাকে, তাকে মায়েলি সিন বা মেডুলারি সিন বলে। 

मালিন সিদের কাজ : মায়োলিন সিদ বা মেডুলারি আবরণ স্নায়ুতত্ত্বকে অন্তরিত করে অর্থাৎ ইনসুলেটারের মতো কজ করে। পাশাপাশি স্নায়ুতন্তুতে স্নায়ুপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়তে দেয় না। ও স্নায়ুকোশকে পুষ্টি জোগান দেয়। 

ও অ্যাক্সোপ্লাজমকে রক্ষা করে ও ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ুতন্তুর পুনর্গঠনে সাহায্য করে। ও মায়েলিন সিদ্ তড়িৎ অপরিবাহী হওয়ার জন্য স্নায়ু আবেগের নৃত্যগ পরিবহণ (Saltatory conduction) ঘটে, ফলে স্নায়ু প্রবাহের গতি বৃদ্ধি পায়। 

প্রশ্ন 6 .সাইন্যাপস্ কয় প্রকার ও কী কী ? আলোচনা করো। 

উত্তর :  সাইন্যাপসের প্রকারভেদ প্রধানত চার ধরনের হয়। যথা - : গঠনগতভাবে সাইন্যাপস্ 

1. অ্যাক্সো-ডেনড্রাইটিক সাইন্যাপস্ : একটি নিউরোনের অ্যাক্সন ও অপর নিউরোনের ডেনড্রাইটের সংযোগস্থলে গঠিত সাইন্যাপস্। 

2. অ্যাক্সো-অ্যাক্সোনিক সাইন্যাপস্: একটি নিউরোনের অ্যাক্সন ও পরবর্তী নিউরোনের অ্যাক্সনের সংযোগস্থলে গঠিত সাইন্যাপস্।

 3. অ্যাক্সো-সোমাটিক সাইন্যাপস্ : একটি নিউরোনের অ্যাক্সন এবং অপর নিউরোনের কোশদেহের সংযোগস্থলে গঠিত সাইন্যাপস্। 

4. ডেনড্রো-ডেনড্রাইটিক সাইন্যাপস্ : একটি নিউরোনের ডেনড্রন এবং অপর নিউরোনের ডেনড্রনের সংযোগস্থলে গঠিত সাইন্যাপস্।

প্রশ্ন 7 .নিউরোট্রান্সমিটার বা নিউরোহিউমর কী? এর কাজ লেখো। 

উত্তর:  নিউরোট্রান্সমিটার ( Neurotransmitter) বা নিউরো- হিউমর (Neurohumor) : যে সমস্ত জৈবরাসায়নিক পদার্থ স্নায়ুতন্তুর বা অ্যাক্সনের প্রান্ত থেকে নিঃসৃত হয়ে একটি নিউরোন থেকে পরবর্তী নিউরোনে স্নায়ু উদ্দীপনা পরিবহণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে, তাদের নিউরোট্রান্সমিটার বলে। যেমন— অ্যাসিটাইল কোলিন, অ্যাড্রিনালিন প্রভৃতি।

 নিউরোট্রান্সমিটারের কাজ : স্নায়ুস্পন্দনের উপস্থিতিতে স্নায়ুতন্তুর ঝিল্লির বিভব পরিবর্তিত হয় এবং নিউরোট্রান্সমিটার নির্গত হয় যা একটি নিউরোন থেকে স্নায়ু উদ্দীপনা সাইন্যাপটিক ক্লেফ্‌ট (প্রায় 20 nm চওড়া) পার হয়ে পরবর্তী নিউরোনের ডেনড্রাইটে বা কারক অঙ্গে পৌঁছায়। 

জেনে রাখো : নিউরোট্রান্সমিটারের প্রকারভেদ : কাজের ভিত্তিতে নিউরোট্রান্সমিটার দু-প্রকার। যথা— ও উদ্দীপকধর্মী : স্নায়ু উদ্দীপনা পরিবহণে সাহায্য করে। যেমন— অ্যাসিটাইল কোলিন, অ্যাড্রিনালিন, সেরোটোনিন, ডোপামিন, হিস্টামিন প্রভৃতি। ও প্রতিরোধধর্মী: স্নায়ু উদ্দীপনা পরিবহণে বাধা দেয়। যেমন— গ্লাইসিন, গামা অ্যামাইনো বিউটারিক অ্যাসিড বা GABAT 

প্রশ্ন ৪.  স্নায়ুগ্রন্থি কাকে বলে? [ME 16,10,05,03] কোশদেহ থেকে স্নায়ুগ্রন্থির সৃষ্টি সম্পর্কে ধারণা দাও। ** 

উত্তর : স্নায়ুগ্রন্থি বা লার্ভ গ্যাংলিয়ন (Nerve ganglion) : মেরুদণ্ডী প্রাণীদেহে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের বাইরে বহুসংখ্যক নিউরোনের কোশদেহ মিলিত হয়ে স্নায়ুর আবরণবেষ্টিত যে স্ফীত অংশ গঠন করে, তাকে স্নায়ুগ্রন্থি বা নার্ভ গ্যাংলিয়ন বলে। 

স্নায়ুগ্রন্থির সৃষ্টি : মানুষের সুষুম্নাকাণ্ড থেকে মোট 31 জোড়া স্নায়ু নির্গত হয়। প্রতিটি মিশ্র পৃষ্ঠদেশীয় স্নায়ুমূল 3 অঙ্কদেশীয় স্নায়ুমূলের মিলনে গঠিত হয়। মিলনের আগে পৃষ্ঠদেশীয় স্নায়ুমূলে অসংখ্য নিউরোনের কোশদেহ একত্রিত হয়ে স্ফীত স্নায়ুগ্রন্থি বা নার্ভ গ্যাংলিয়ন তৈরি করে। একে পৃষ্ঠদেশীয় স্নায়ুগ্রন্থি (Dorsal ganglion) বলে। আবার, ডেনড্রন -স্নায়ু আবরণী কোশদেহ গ্যাংলিয়ন -অ্যাক্সন স্নায়ুগ্রন্থি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র ও কারক অঙ্গের মধ্যবর্তী স্থানে অটোনমিক স্নায়ুগ্রন্থি গঠিত হয়। 

প্রশ্ন 9 . স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র কাকে বলে? এর প্রকারভেদগুলি উল্লেখ করো

উত্তর:  স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র (Autonomic Nervous System or ANS) : প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের অন্তর্গত প্রধানত চেষ্টীয় স্নায়ু দ্বারা গঠিত যে স্নায়ুতন্ত্র স্বাধীনভাবে দেহের আন্তরযন্ত্রীয় অঙ্গ, পেশি ও গ্রন্থির কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করে এবং তাদের কার্যের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে, তাকে স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র বলে। যথা— স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের প্রকারভেদ : প্রধানত দু-প্রকার।

 • স্বতন্ত্র বা সমবেদী বা সিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র। ও পরাস্বতন্ত্র বা পরাসমবেদী বা প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র। 

প্রশ্ন 10 .স্বতন্ত্র বা সিমপ্যাথেটিক বা সমবেদী স্নায়ুতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য ও কাজ লেখো। 

উত্তর : স্বতন্ত্র স্নায়ুতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য : 1. নিউরোনের উৎপত্তি : সুষুম্নাকাণ্ডের থোরাসিক এবং লাম্বার অংশ থেকে উৎপত্তি লাভ করে।

2. গ্যাংলিয়ন ও গ্যাংলিয়নিক তন্তু গ্রাহক অঙ্গের কাছে গ্যাংলিয়া অবস্থিত এবং প্রিগ্যাংলিয়নিক তত্ত্ব ছোটো ও পোস্ট গ্যাংলিয়নিক তত্ত্ব বড়ো হয়। 

 3. প্রভাবিত অঞ্চল : সমগ্রদেহে এই স্নায়ুতন্ত্র প্রভাব বিস্তার করে। 

4. নিউরোট্রান্সমিটার : প্রি-গ্যাংলিয়নিক তত্ত্ব থেকে অ্যাসিটাইল কোলিন এবং পোস্ট-গ্যাংলিয়নিক তত্ত্ব থেকে অ্যাড্রিনালিন ক্ষরিত হয়। 

স্বতন্ত্র স্নায়ুতন্ত্রের কাজ : (i) হৃৎস্পন্দনের হার বৃদ্ধি করে এবং রক্তচাপ বাড়ায়। (ii) করোনারি ও পেশির রক্তবাহকে প্রসারিত করে। (iii) তারারন্দ্রের প্রসারণ ঘটায়, ঘর্মক্ষরণ বৃদ্ধি করে। (iv) লালারসের ক্ষরণ কমায়, পাকগ্রন্থি ও অগ্ন্যাশয়ের ক্ষরণও কমায়। (v) মুত্রাশয় প্রসারিত করে। 

প্রশ্ন 11. পরাস্বতন্ত্র বা প্যারাসিমপ্যাথেটিক বা পৰাসমবেদী স্নায়ুতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য ও কাজ লেখো। 

উত্তর : পরাস্বতন্ত্র স্নায়ুতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য :

 1. নিউরোনের উৎপত্তি : কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের করোটিক ও সুষুম্না কাণ্ডের স্যাক্রাল অংশ থেকে উৎপন্ন হয়।

 2. গ্যাংলিয়ন ও গ্যাংলিয়নিক তত্ত্ব কারক অঙ্গের কাছে গ্যাংলিয়া অবস্থিত এবং প্রি-গ্যাংলিয়নিক তত্ত্ব বড়ো ও পোস্ট গ্যাংলিয়নিক তত্ত্ব ছোটো হয়। ও

 3. প্রভাবিত অঞ্চল : এই স্নায়ুতন্ত্রের প্রভাব সীমিত। 

4. নিউরোট্রান্সমিটার প্রি এবং পোস্ট-গ্যাংলিয়নিক তত্ত্ব থেকে H অ্যাসিটাইল কোলিন ক্ষরিত হয়। 

 পরাস্বতন্ত্র স্নায়ুতান্তর কাজ : (i) হৃৎস্পন্দনের হার হ্রাস করে এবং রক্তচাপ কমায়। (ii) করোনারি ও পেশির রক্তবাহ সংকুচিত করে। (iii)তারারন্ত্রের সংকোচন ঘটায়, ঘর্মক্ষরণ হ্রাস করে। (iv) লালারসের ক্ষরণ বাড়ায় এবং পাকগ্রন্থি ও অগ্ন্যাশয়েরও ক্ষরণ বাড়ায়। (v) মুত্রাশয় সংকুচিত করে। 

প্রশ্ন 12 . গুরুমস্তিষ্ক কাকে বলে? এর অবস্থান ও খণ্ডকগুলির নাম লেখো। 

 উত্তর : গুরুমস্তিস্ক (Cerebrum) : মানব অগ্রমস্তিষ্কের সবচেয়ে বড়ো ও গুরুত্বপূর্ণ অংশকে বলা হয় গুরুমস্তিষ্ক বা সেরিব্রাম। 

অবস্থান: গুরুমস্তিষ্ক করোটির নীচে সামনে থেকে পিছনের দিকে বিস্তৃত থাকে। গুরুমস্তিষ্কের বিভিন্ন খন্ডকগুলির নাম হল – ফ্রন্টাল লোব, প্যারাইটাল লোব, টেম্পোরাল লোব, অক্সিপিটাল লোব ও লিম্বিক লোব।

প্রশ্ন  13 . গুরুমস্তিষ্কের কাজ লেখো। * 

উত্তর:  গুরুমস্তিষ্কের বিভিন্ন নোর বা খণ্ডক ও তাদের কাজ : লোবের নাম • ফ্রন্টাল লোব কাজ [ME 15,13,09,07) চেষ্টীয় কেন্দ্ৰযুক্ত হওয়ায় অস্থিপেশির কাজ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ব্যক্তিত্ব, সচেতন চিন্তা, বিচার ক্ষমতা, ক্ষমতা, স্মৃতিশক্তি, মনঃসংযোগ, বাক্‌ক্ষমতা প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করে।

লোবের নাম প্যারাইটাল লোৰ কাজ সংজ্ঞাবহ কেন্দ্রযুক্ত হওয়ায় ত্বক, পেশির সংবেদন, স্পর্শ, যন্ত্রণা, তাপ, শৈত্য প্রভৃতি অনুভূতি বিশ্লেষণ, স্থান সম্পর্কে ধারণা, পরিবেশ থেকে আগত তথ্য বিশ্লেষণ প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করে। • টেম্পোরাল লোব ঘ্রাণ ও শ্রবণ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে। o অক্সিপিটাল লোব। o লিম্বিক লোব দর্শন ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং লক্ষ্যবস্তুর আকার, অবস্থান ও বর্ণ নির্ণয়ে সাহায্য করে। বিভিন্ন মানসিক আবেগ যেমন- খুশি, - কষ্ট, রাগ, ভয়, দুঃখ, যৌন আকাঙ্ক্ষা, স্নেহ প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করে। এইজন্য একে "Emotional Brain' বলা হয়। 

প্রশ্ন 14 .সেরিব্রাল কর্টেক্সের অবস্থান ও কাজ লেখো। 

উত্তর : সিরিয়ান কাটাসের অবস্থান: গুরুমস্তিষ্কের বহির্ভাগ বা পরিধি বরাবর ধূসর ভাঁজযুক্ত স্তর সেরিব্রাল কর্টেক্স উপস্থিত থাকে। সেরিব্রাল কাটানোর কাজ : 

1. সংজ্ঞাবহ কাজ (1) গুরুমস্তিদের সেরিব্রাল কর্টেক্সের কার্যকরী কেন্দ্রগুলি শ্রবণ, দর্শন, স্বাদ, ঘ্রাণ প্রভৃতি অনুভূতির বিশ্লেষণ ও নিয়ন্ত্রকরূপে কাজ করে। (ii) লেখা, কথা বলা প্রভৃতি ঠান্ডা, গরম, স্পর্শ প্রভৃতি অনুভূতি গ্রহণ ও বিশ্লেষণে সাহায্য করে। 

 2. চেষ্টীয় কাজ ঐচ্ছিক পেশির সঞ্চালন, তারারন্দ্রের প্রসারণ, অক্ষিগোলকের সঞ্চালন প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করে। ও 

3. বুদ্ধিমত্তার কাজ গুরুমস্তিষ্কের সেরিব্রাল কর্টেক্স বুদ্ধি, স্মৃতি, বিচার-বিবেচনা, পরিকল্পনা, চিন্তাশীলতা, চেতনা প্রভৃতি উচ্চ মানবিক গুণাবলি নিয়ন্ত্রণ করে। জেনে রাখো সেরিব্রাল কর্টের প্রধানত নিউরোনের কোশদেহ (প্রায় ( 7x10), নিউরোমিয়া কোশ ও নন-মেডলেটেড স্নায়ুতত্ত্ব দ্বারা গঠিত। 

প্রশ্ন 15. প্যালামাসের অবস্থান ও কাজ লেখো। 

 উত্তর:  থ্যালামাসের অবস্থান অগ্রমস্তিষ্কের ডায়েনসেফালন অংশের থ্যালামাস অঞ্চলটি মানব মস্তিষ্কের তৃতীয় প্রকোষ্ঠের উভয় পার্শ্বে অবস্থান করে।

 থ্যালামাসের কাজ :

 1. রিনেস্টেশন হিসেবে সমস্ত দেহ থেকে চাপ, তাপ, স্পর্শ, দর্শন, শ্রবণ, বেদনা প্রভৃতি সংজ্ঞাবহ উদ্দীপনাগুলি প্রথমে থ্যালামাসে আসে এবং সেখান থেকে গুরুমস্তিষ্কে পৌঁছায়। 

2. নিদ্রা ও জাগরণ  নিয়ন্ত্রণ : থ্যালামাস নিদ্রা  জাগরণ , চেতনা প্রভৃতি কাজগুলি নিয়ন্ত্রণ করে। 

3. স্থূল  ইন্দ্রিয় অনুভূতি গ্রহণ  :   রাগ, লজ্জা, অনুরাগ। প্রভৃতি মানসিক আবেগের প্রতিক্রিয়া থ্যালামাসের মাধ্যমে ঘটে। ও ব্যক্তিত্ব নিয়ন্ত্রণ : থ্যালামাস মানুষের ব্যক্তিত্ব ও সামাজিক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে। |

 জেনে রাখো : থ্যালামাসের কার্যকারিতা নষ্ট হলে মানুষের অবচেতন স্তরে বা কোমা (Coma) -তে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

প্রশ্ন 16.  হাইপোথ্যালামাসের অবস্থান ও কাজ লেখো। * Cooch Behar Sadar Govt High School 16 

উত্তর:  হাইপোথ্যালামাসের अवम्शान অগ্রমস্তিষ্কের ডায়েনসেফালন অংশের হাইপোথ্যালামাস অঞ্চল মানব মস্তিষ্কের তৃতীয় প্রকোষ্ঠের অঙ্কদেশে অবস্থান করে।

 হেিপাথ্যালামাসের কাজ :

 1. স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ : হাইপোথ্যালামাস স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের সর্বোচ্চ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। সিমপ্যাথেটিক ও প্যারাসিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্রের নানাপ্রকার কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। 

2. মানসিক আবেগ নিয়ন্ত্রণ : হাইপোথ্যালামাস উত্তেজনা, আবেগ, উদ্‌বেগ, ভয় প্রভৃতি মানসিক আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে। 

3.  দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ : হাইপোথ্যালামাস দেহের তাপ উৎপাদনকারী কেন্দ্র ও তাপক্ষয়কারী কেন্দ্ররূপে দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। 

4 .তৃষ্ণা ও দেহে জলসাম্য নিয়ন্ত্রণ : হাইপোথ্যালামাস তৃয়ার বোধ সৃষ্টিতে ও মূত্র থেকে জলের পুনঃশোষণ ঘটিয়ে দেহে জলসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে ৷ 

5. খিদে নিয়ন্ত্রণ : হাইপোথ্যালামাসের ভক্ষণ কেন্দ্র (Feed- ing centre) ও পরিতৃপ্তি কেন্দ্র (Satiety centre) মানুষের খিদে ও খাদ্যগ্রহণ নিয়ন্ত্রণ করে। 

6. অগ্র পিটুইটারির ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ : হাইপোথ্যালামাসের নিউরোসিক্রেটরি কোশগুলি থেকে হরমোন রিলিজিং ফ্যাক্টর ক্ষরিত হয়ে পিটুইটারি গ্রন্থিকে হরমোন ক্ষরণে উদ্দীপিত করে। 

জেনে রাখো : হাইপোথ্যালামাসের সক্রিয়তার জন্য আমরা দিনের বেলা কাজ করি এবং রাত্রিবেলা ঘুমাই। অর্থাৎ, দৈনন্দিন জীবনের সময়নির্ভর কাজের মধ্যে ছন্দবদ্ধতা (Biological rhythm) তৈরি হয়।

প্রশ্ন 17 . মধ্যমস্তিষ্কের অবস্থান ও কাজ লেখো।

 উত্তর মধ্যমস্তিষ্কের অবস্থান : মানব মস্তিষ্কের ডায়েনসেফালন ও পশ্চাদ্‌মস্তিষ্কের মধ্যবর্তী অঞ্চলে মধ্যমস্তিষ্ক উপস্থিত থাকে।

 মধ্যমস্তিষ্কের কাজ : 

1.  কার্যগত সমন্বয় সৃষ্টি : অগ্র ও পশ্চাদ্‌মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের কাজের মধ্যে সমন্বয় সৃষ্টি করে।

2. পেশিটান নিয়ন্ত্রণ : মধ্যমস্তিষ্কের রেডনিউক্লিয়াস মানবদেহে পেশিটান নিয়ন্ত্রণ করে। ও

3. প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ : মধ্যমস্তিষ্কের টেকটাম অংশ দর্শন এবং শ্রবণসংক্রান্ত প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। 

4. ঐচ্ছিক পেশির কাজে সাহায্য : মধ্যমস্তিষ্ক ঐচ্ছিক পেশির কার্যকারিতা ও দেহভঙ্গি নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রশ্ন 18. পনস্-এর অবস্থান ও কাজ লেখো।

 উত্তর:  পনস্-এর অবস্থান : পশ্চাদমস্তিষ্কের পনস্ অংশ মধ্যমস্তিষ্কের নীচে চতুর্থ মস্তিষ্ক নিলয়ের অঙ্কদেশে এবং সুষুম্নাশীর্ষকের ওপরে অবস্থান করে। 

পনস্-এর কাজ : •

 1.শ্বাসকার্য নিয়ন্ত্রণ : পনস্ ভ্যারোলির নিউমোট্যাক্সিক (প্রশ্বাস কেন্দ্র) এবং অ্যাপনিউস্টিক (নিশ্বাস কেন্দ্র) কেন্দ্র শ্বাসকার্য নিয়ন্ত্রণ করে।

 2. মূত্র নির্গমন নিয়ন্ত্রণ : মূত্রছিদ্রের ডেট্রসর পেশির সংকোচনের মাধ্যমে মূত্রথলি থেকে মূত্র নির্গমনে সাহায্য করে। 

3. করোটীয় স্নায়ুর সমন্বয় : পঞ্চম ট্রাইজেমিনাল, ষষ্ঠ অ্যাবডুসেন্স, সপ্তম ফেসিয়াল এবং অষ্টম অডিটরি স্নায়ুর স্নায়ুকেন্দ্রগুলি পনস্ অংশে উপস্থিত থাকে। 

4• মুখের অভিব্যক্তি ও লালাক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ : মুখের অভিব্যক্তি, চোয়ালের বিচলন, লালাক্ষরণ প্রভৃতি পনস্ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। 

প্রশ্ন 19.  লঘুমস্তিষ্ক বা সেরিবেলামের অবস্থান ও কাজ লেখো। ** [ME'15,13,09] 

উত্তর। লঘুমস্তিষ্কের অবস্থান : পনস্ ও সুষুম্নাশীর্ষকের পিছনে গুরুমস্তিষ্কের নীচে পশ্চাদ্‌মস্তিষ্কে অবস্থান করে। 

লঘুমস্তিষ্কের কাজ :

1 • দৈহিক ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ : লঘুমস্তিষ্ক দেহভঙ্গি ও দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে। 

2. চলন ও গমন নিয়ন্ত্রণ : হাত ও পায়ের দূরবর্তী অংশগুলির চলন নিয়ন্ত্রণ করে। 

3. ঐচ্ছিক পেশির কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ : ঐচ্ছিক পেশির কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মানুষের সুষ্ঠু ও সাবলীলভাবে চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করে। 

4.  পেশিটান নিয়ন্ত্রণ : পেশির প্রতিবর্ত টানকে নিয়ন্ত্রণ করে।

প্রশ্ন 20 .সুষুম্নাশীর্ষক-এর অবস্থান ও কাজ লেখো। ** [ME'15,09] 

উত্তর : সুষুল্লাশীর্ষক - এর অবস্থান : পশ্চাদমস্তিষ্কের সুষুম্নাশীর্ষক বা মায়েলেনসেফালন বা মেডালা অবলাংগাটা পনস্-এর নীচে এবং ফোরামেন অফ ম্যাগনামের ওপরে অবস্থান করে। 

সুষুল্লাশীর্ষাকর কাজ : 

1. ও প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ: হাঁচি, কাশি, বমন, লালাক্ষরণ, খাদ্য গলাধঃকরণ (পেরিস্টলসিস) প্রভৃতি আন্তরযন্ত্রীয় প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে।

2. শ্বাসকার্য নিয়ন্ত্রণ : সুষুম্নাশীর্ষকের প্রশ্বাসকেন্দ্র ও নিশ্বাসকেন্দ্র শ্বাসকার্য নিয়ন্ত্রণ করে।

3 • কার্ডিওভাসকুলার তন্ত্রের কাজ নিয়ন্ত্রণ : রক্তবাহের সংকোচন ও প্রসারণ, হৃৎস্পন্দনের হার প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করে। 

4. ও করোটীয় স্নায়ুর উৎপত্তিস্থল : নবম (IX th), দশম (X th), একাদশ (XI th) এবং দ্বাদশ (XII th) করোটীয় স্নায়ু সুষুম্নাশীর্ষক থেকে উৎপত্তি লাভ করে। 

5. স্নায়বিক কার্য নিয়ন্ত্রণ : বিভিন্ন স্নায়ুকেন্দ্রের যোগাযোগ কেন্দ্ররূপে কাজ করে।

 জেনে রাখো:  রাত্রে শোওয়ার আগে দুধ খেলে ঘুম ভালো হয় কারণ দুধে প্রচুর ট্রিপটোফ্যান (অ্যামাইনো অ্যাসিড) থাকে যা সেরোটোনিন | সংশ্লেষে সাহায্য করে। সেরোটোনিন মস্তিষ্কের পনস্ ও সুষুম্নাশীয়কে অবস্থিত ঘুমকেন্দ্রে (Sleep causing centre) উদ্দীপকধর্মী নিউরোট্রান্সমিটার রূপে কাজ করে।

প্রশ্ন  21 . সুযুদ্ধাকাণ্ডের কাজ লেখো। ** IME 16.15.12) 

উত্তর : সুষুম্নাকান্ডের কাজ :

 1.প্রতিবর্ত ক্রিয়ার কেন্দ্র : বিভিন্ন প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। 

2. পেশিটান নিয়ন্ত্রণ: পেশিটান ও রক্তবাহের অভ্যন্তরীণ ব্যাস নিয়ন্ত্রণ করে।

 3. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ : সুষুম্নাকাণ্ড রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। 

4. সংযোগস্থাপন নিয়ন্ত্রণ: সুষুম্নাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে অন্তর্বাহী ও বহির্বাহী স্নায়ুপথ প্রবাহিত হয়, যা প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের সঙ্গে মস্তিষ্কের সংযোগ রক্ষা করে। 

প্রশ্ন 22. মেনিনজেস কাকে বলে। এর স্তরগুলির নাম ও বৈশিষ্ট্য লেখো। 

উত্তর : মেনিনজেস (Meninges) মস্তিষ্ক এবং সুষুম্নাকান্ড ত্রিস্তরযুক্ত যে যোগকলার আবরণ দ্বারা আবৃত থাকে, তাকে মেনিনজেস (একবচনে meninx) বলে। 

মলিনাऊস-এর বিভিন্ন স্তর ও তাদের বৈশিষ্ট্য : মেনিনজেস স্তর বৈশিষ্ট্য পায়া ম্যাটার (Pia mater) ও অ্যারাকনয়েড ম্যাটার (i) মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড সংলগ্ন অন্তান্তর। (ii) এটি অত্যন্ত পাতলা, রক্তজাতক সমৃদ্ধ। এটি পাতলা, ঢেউ খেলানো, (Arachnoid mater) 

• রক্তজালক সৎ মধ্যস্তর। (i) সবথেকে বাইরের স্তর। (n) এটি পুরু, শক্ত, রক্তজালকবিহীন। (ii) এটি কেনিয়াল ক্যাভিটিকে আবৃত করে। ডুরা ম্যাটার (Dura mater) 

প্রশ্ন 23 . শ্বেতবস্তু ও ধূসর বস্তু বলতে কী বোঝো? এদের অবস্থান লেখো। 

উত্তর : স্বতবস্তু (White matter) কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের অংশ যা মারেলিন আবরণযুক্ত বা মেডুলেটেড স্নায়ু দ্বারা গঠিত, তাকে শ্বেতবস্তু বলে। চর্বিজাতীয় মায়েলিন সিদের উপস্থিতির জন্য এর বর্ণ সাদা হয়। 

শ্বেতবস্তুর অবস্থান: মস্তিষ্কের ক্ষেত্রে শ্বেতবস্তু ভিতরের দিকে। থাকে। সুষুম্নাকাণ্ডের ক্ষেত্রে শ্বেতবস্তু বাইরের দিকে অবস্থান করে। 

ধূসর বন্ধু (Grey matter); কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের অংশ যা প্রধানত অসংখ্য নিউরোনের কোশদেহ, নিউরোধিরা এবং সামান্য মায়েলিন আবরণবিহীন বা নন-মেডুলেটেড স্নায়ুতত্ত্ব দ্বারা গঠিত, তাকে ধূসর বস্তু বলে। মায়েলিন সিদের অনুপস্থিতির জন্য এর বর্ণ ধূসর হয়।

 ধূসর বস্তুর অবস্থান : মস্তিষ্কের ক্ষেত্রে ধূসর বস্তু বাইরের দিকে থাকে। সুষুম্নাকান্ডের ক্ষেত্রে ধূসর বস্তু ভিতরের দিকে অবস্থান করে।

প্রশ্ন 24 . CSF কী ? এর কাজ লেখো। Sanskrit Collegiate School 

উত্তর:  CSF বা সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড (Cerebro Spinal Fluid) : CSF হল বর্ণহীন, স্বচ্ছ, ক্ষারীয় পরিবর্তিত কলারস যা মস্তি প্রকোষ্ঠসমূহ, সুষুম্নাকাণ্ডের কেন্দ্রীয় নালি এবং সাব অ্যারাকনয়েড স্থানে অবস্থান করে 

CSF-এর কাজ : 1. গদির মতো কাজ করে, কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে বাহ্যিক আঘাত থেকে রক্ষা করে। 2. স্নায়ুকোশসমূহে পুষ্টিপদার্থ, অক্সিজেন প্রভৃতি সরবরাহ করে। 3.  স্নায়ুকোশ থেকে বিপাকজাত দুষিত পদার্থ অপসারণ করে। 4. মস্তিষ্কে অভ্যন্তরীণ যান্ত্রিক চাপের সমতা বজায় রাখে।

 প্রশ্ন 25 . উৎস অনুসারে প্রতিবর্ত ক্রিয়া কয় প্রকার ও কী কী? আলোচনা করো। 

উত্তর : উৎস অনুযায়ী প্রতিবর্ত ক্রিয়ার দুটি প্রকারভেদ দেখা যায়— 

1. সৰল প্ৰতিবর্ত ক্ৰিয়া ( Simple reflex action) : যে প্রতিবর্ত ক্রিয়া শুধুমাত্র সুষুম্নাকাণ্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় এবং প্রতিবর্ত পথে অল্প সংখ্যক স্নায়ু থাকে, তাকে সরল প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে। যেমন- খুব গরম কোনো জিনিসে হাত লাগলে তৎক্ষণাৎ হাত সরিয়ে নেওয়া হয়।

 2. জটিল প্রতিবর্ত ক্রিয়া (Complex reflex action) : যে প্রতিবর্ত ক্রিয়া সুষুম্নাকাণ্ড ছাড়াও মস্তিষ্কের সাহায্যে নিয়ন্ত্রিত হয়, প্রতিবর্ত পথ বহুসংখ্যক স্নায়ু নিয়ে গঠিত, তাকে জটিল প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে। যেমন— সাইকেল চালানো, হাঁটাচলা, সাঁতার কাটা ইত্যাদি। 

প্রশ্ন 26 .একটি সরল প্রতিবর্ত ক্রিয়ার উদাহরণ দিয়ে ওই প্রতিবর্ত পথের উপাদানগুলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও। Jalpaiguri Zilla School '16

 উত্তর: একটি সরল প্রতিবর্ত ক্রিয়া : গরম বস্তুতে হাত ঠেকে গেলে তৎক্ষণাৎ হাতটি সরে যায়।

 At প্রতিবর্ত ক্রিয়াপথ বা প্রতিবর্ত চাপ : হাতের ত্বকে উপস্থিত তাপ গ্রাহক → অন্তবাহী স্নায়ু ⇒ সহযোগী বা অ্যাডজাস্টর স্নায়ু (কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র) → বহির্বাহী স্নায়ু → হাতের পেশি (কারক)। 

প্রতিবর্ত ক্রিয়ার ব্যাখ্যা : 1.গরম বস্তুর গায়ে হাত লাগলে ত্বকে উপস্থিত তাপ গ্রাহক তাপের উদ্দীপনা গ্রহণ করে। 

 2.এই উদ্দীপনা অন্তর্বাহী বা সংজ্ঞাবহ স্নায়ুর মাধ্যমে সুষুম্নাকাণ্ডে প্রেরিত হয়।  

3.সুষুম্নাকাণ্ডের ধূসর বস্তুতে উপস্থিত সহযোগী নিউরোন এই উদ্দীপনা গ্রহণ করে এবং উদ্দীপনার প্রত্যুত্তর বা কার্যকরী নির্দেশ চেষ্টীয় বা বহিবারী হাতে প্রেরণ করে।

 4.  কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের কেন্দ্রে দুটি সাইন্যাপসের মাধ্যমে এই উদ্দীপনা গ্রহণ ও প্রেরণ কাজ সম্পন্ন হয়। 

5. বহির্বাহী স্নায়ুর মাধ্যমে প্রত্যুত্তর বা সাড়া হাতের পেশি বা কারক অংশে পৌঁছে যায় এবং কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের নির্দেশ অনুযায়ী হাত দ্রুত গরম বস্তুর কাছ গরম কোনো জিনিসে হাত লাগলে তৎক্ষণাৎ হাত সরে যায় থেকে সরে যায় ও প্রতিবর্ত ক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

প্রশ্ন 27 .প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিবর্ত ক্রিয়ার গুরুত্ব লেখো। 

উত্তর : প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিবর্ত ক্রিয়ার গুরুত্ব : O প্রতিবর্ত ক্রিয়া হল যে-কোনো ক্ষতিকারক উদ্দীপনার অত্যন্ত দ্রুত স্বতঃস্ফূর্ত সাড়াপ্রদান। জোরালো আলো বা ধুলোবালির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে চোখকে বাঁচানোর জন্য দ্রুত চোখের পলক পড়ে যায়। এ ছাড়া এর দ্বারা চোখে অশ্রু ছড়িয়ে পড়ে এবং চোখ সহজেই আর্দ্র থাকে। ও স্বাভাবিক/ স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবর্ত ক্রিয়া যেমন— কাশি মস্তিষ্ককে অতিরিক্ত কার্য সম্পাদনের হাত থেকে রেহাই দেয়। ও আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বহু গুরুত্বপূর্ণ ক্রিয়া, যেমন— খাদ্য গলাধঃকরণ, টিফিনের ঘণ্টা শুনে টিফিন বক্স খোলা প্রভৃতি প্রতিবর্ত ক্রিয়ার মাধ্যমেই সম্পন্ন হয়। 

অনুরূপ প্রশ্ন : প্রতিবর্ত ক্রিয়া কীভাবে মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে সাহায্য করে— দুটি উদাহরণের সাহায্যে তা বুঝিয়ে দাও ।

প্রশ্ন  28. মানুষের নাকে কোনোভাবে বালির কণা প্রবেশ করলে কেন হাঁচি হয় তা প্রতিবর্ত পথের চিত্রসহ সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো। Bidhannagar Govt High School '16 

উত্তর : মানুষের নাকে কোনোভাবে বালির কণা প্রবেশ করলে নাসাবিরের মিউকাস স্তরে অস্বস্তিকর বালির কণা হিস্টামিন ক্ষরণের উদ্দীপনা জোগায় যা নাকের স্নায়ুকোশকে উদ্দীপিত করে। সেই উদ্দীপনা ট্রাইজেমিনাল নামক সংজ্ঞাবহ স্নায়ুর মাধ্যমে মস্তিষ্কে (মেডালা অবলংগাটা) পৌঁছায় এবং মস্তিষ্ক থেকে চেষ্টীয় স্নায়ুর মাধ্যমে সাড়া গলবিল ও শ্বাসনালীর পেশিতে পৌঁছালে, তাদের সংকোচন ঘটে ফলে হাঁচি হয় ও নাক থেকে বালির কণা নির্গত হয়ে যায় ফলে দেহ সুরক্ষিত থাকে। সুতরাং, হাঁচি একপ্রকার উপকারী সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া। 

অনুরূপ প্রশ্ন : প্রতিবর্ত ক্রিয়া হিসেবে হাঁচির গুরুত্ব কী?

প্রশ্ন  29.  নিম্নলিখিত ঘটনাগুলি কী ধরনের প্রতিবর্ত ক্রিয়া কারণসহ লেখো— সুস্বাদু খাদ্যের দর্শনে লালারসের ক্ষরণ, শিশুর মাতৃদুগ্ধ পান, বাই-সাইকেল চালানো শেখা। * [ME '13] 

উত্তর: সুস্বাদু খাদ্যের দর্শনে লালাক্ষরণ : এটি একপ্রকার অর্জিত এবং সরল প্রতিবর্ত ক্রিয়া। কারণ, খাদ্যটি সুস্বাদু এই পূর্বজ্ঞান ব্যক্তির ছিল বলেই সুস্বাদু খাদ্য দর্শনে লালাক্ষরণ ঘটে। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে ব্যক্তির লালাক্ষরণ শর্তসাপেক্ষ।

শিশুর মাতৃদুগ্ধ পান : এটি একটি সহজাত বা জন্মগত প্রতিবর্ত ক্রিয়ার উদাহরণ। কারণ, এটি জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই বংশগত সূত্রে পূর্বপুরুষ থেকে প্রাপ্ত হয়। এই প্রকার প্রতিবর্ত ক্রিয়ার জন্য কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয় না। সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়ার প্রভাবে শিশু মাতৃস্তন গ্রন্থি থেকে স্তনদুগ্ধ পান করে। 

বাই-সাইকেল চালানো শেখা : এটি একপ্রকার অভ্যাসগত বা অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়ার উদাহরণ। একে জটিল প্রতিবর্ত ক্রিয়াও বলা হয়। এই প্রকার প্রতিবর্ত ক্রিয়া জন্মগত নয়, অভ্যাসের দ্বারা অর্জন করতে হয় এবং পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়। বাই-সাইকেল চালানোর ঘটনাটিতে মস্তিষ্ক এবং বহুসংখ্যক স্নায়ুকোশ অংশগ্রহণ করে, তাই একে জটিল প্রতিবর্ত ক্রিয়াও বলা হয়। এটি বংশপরম্পরায় সঞ্ঝারিত হয় না।

টীকা লেখো: 

প্রশ্ন 1. মানুষের দ্বিনেত্র দৃষ্টি (Binocular vision of human) 

উত্তর : 1.মানুষের চোখ দুটি ফোটোগ্রাফিক ক্যামেরার মতো কাজ করে। 

2. কোনো বস্তু থেকে আগত আলোক রশ্মিগুচ্ছ কনজাংটিভা, কর্নিয়া, অ্যাকুয়াস হিউমর, তারারন্ধ্রের মধ্যে দিয়ে লেন্সে আপতিত হয়।

 3. লেন্সে আপতিত রশ্মি প্রতিসৃত হয়ে ভিট্রিয়াস হিউমরের মধ্যে দিয়ে রেটিনা স্তরে পৌঁছায়। 

4. দুটি চোখের রেটিনার পীতবিন্দু অংশে লক্ষ্যবস্তুর দুটি পৃথক, উলটো (সদ্) ও ছোটো প্ৰতিবিম্ব গঠিত হয়। 

5. এই প্রতিবিম্ব রড ও কোন কোশকে উদ্দীপিত করে এবং উদ্দীপনা অপটিক স্নায়ুর মাধ্যমে গুরুমস্তিষ্কে পৌঁছায়। 

6 বাম চোখ থেকে আসা উদ্দীপনা ডান সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের দর্শনকেন্দ্রে এবং ডান চোখ থেকে আসা উদ্দীপনা বাম সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের দর্শনকেন্দ্রে পৌঁছায়। 

7. মস্তিষ্কের বিশেষ ক্ষমতার মাধ্যমে দৃষ্টি উলটো বা সদ্ প্রতিবিম্বের একটিমাত্র অসদ বা সোজা প্রতিচ্ছবি তৈরি হয় ও লক্ষ্যবস্তুটিকে দেখা সম্ভব হয় । লক্ষ্যবস্তু দর্শন কেন্দ্ৰ (বস্তুর উলটো ও ছোটো প্রতিবিম্ব গঠিত হয়) অপটিক স্নায়ু মানুষের দ্বিনেত্র দৃষ্টি 

প্রশ্ন 2. মায়োপিয়া (Myopia) ★ Majitpur JM Training School 16 

উত্তর:  চোখের উপযোজন ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার ফলে দূরের বস্তুর দৃষ্টি ব্যাহত হয় এবং চোখের ত্রুটিজনিত দৃষ্টি ঘটে। একে নিকটবদ্ধ দৃষ্টিও বলা হয় ৷ 

রোগের কারণ : ও এক্ষেত্রে অক্ষিগোলকের আকার পরিবর্তিত হয়ে লম্বাটে আকার ধারণ করে। ও লেন্স অত্যন্ত বেশি উত্তল প্রকৃতির হয়। মায়োপিয়া ত্রুটিজনিত দৃষ্টি 

রোগের বৈশিষ্ট্য : মায়োপিয়া রোগের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি কাছের বস্তু স্পষ্ট দেখতে পেলেও,দূরের দৃষ্টি ব্যাহত হয়। এই ত্রুটিতে দূরের বস্তু থেকে আগত রশ্মির প্রতিবিম্ব রেটিনার অনেকসামনে গঠিত হয়, তাই দূরের বস্তু অস্পষ্ট হয়ে যায়। 

প্রতিকার:  অবতল লেন্সযুক্ত ('-' পাওয়ার) চশমা ব্যবহার করে এই ত্রুটি দূর করা যায়। অবতল লেন্স ব্যবহারে দৃষ্টির সংশোধন

প্রশ্ন  3 . হাইপারোপিয়া বা হাইপারমেট্রোপিয়া (Hyperopia / Hypermetropia) kanda Institution 16 

উত্তর: চোখের উপযোজন ক্ষমতা হ্রাসের ফলে কাছের বস্তুর দৃষ্টি ব্যাহত হলে, তাকে হাইপারোপিয়া বা হাইপারমেট্রোপিয়া বলে। একে দূরবদ্ধ দৃষ্টিও বলে। 

রোগের কারণ : 1. অক্ষিগোলকের আকৃতি চ্যাপটা হয়ে যায়।

 2. লেন্সের আকৃতিরও পরিবর্তন ঘটে, লেন্স অত্যন্ত কম উজ্জ্বল অবস্থায় থাকে। 

রোগের বৈশিষ্ট্য:  এই জুটিতে নিকটবর্তী লক্ষ্যবস্তু থেকে আগত আলোকরশ্মি রেটিনার পিছনে প্রতিবিম্ব গঠন করে। ফলে, ব্যক্তির দূরের বস্তু দেখতে অসুবিধা হয় না, কিন্তু কাছের বস্তু অস্পষ্ট হয়ে যায়। 

  প্রতিকার কৃত্রিম:  উত্তল লেন্স ('+' পাওয়ার) যুক্ত চশমা ব্যবহার করে এই ত্রুটি দূর করা যায়। 

 প্রশ্ন 4 . cerracant (Presbiopia) aria High School 

উত্তর : এটি চোখের একটি উপযোজনঘটিত ত্রুটি, যা সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এই ত্রুটির ফলে ব্যক্তির দূরবদ্ধ দৃষ্টি তৈরি হয়।

 রোগের কারণ : 1. চোখের লেন্সের স্থিতিস্থাপকতা হ্রাস পায়। 2. সিলিয়ারি পেশির কার্যক্ষমতাও কমে যায়। 

রোগের বৈশিষ্ট্য: সাধারণত চল্লিশ বছর বয়সের পর ব্যক্তির। দূরের বা কাছের বস্তুকে পরিষ্কার দেখতে অসুবিধা হয়। চোখের ওপর চাপ পড়ে এবং কম আলোতে ও ছোটো লেখা পড়তে অসুবিধা হয়। প্রেসবায়োপিয়া ত্রুটিজনিত দৃষ্টি © 

প্রতিকার : সাধারণত বাইফোকাল লেন্সযুক্ত চশমা ব্যবহার করে এই প্রকার ত্রুটি দূর করা হয়। 

প্রশ্ন 5. ছানি বা ক্যাটার‍্যাক্ট (Cataract) 

 উত্তর : ছানি (Cataract) বয়স হয়ে গেলে লেন্সের ওপর পাতলা আস্তরণ সৃষ্টি হওয়ার ফলে লেন্স আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ঘোলাটে, অস্বচ্ছ হয়ে যায়। ফলস্বরূপ, আলো প্রবেশ করতে পারে না এবং স্বাভাবিক দৃষ্টি ব্যাহত হয়, তাকে ছানি বা ক্যাটারাক্ট বলে। 

© কারণ : লেন্স প্রোটিন-এর ভেঙে যাওয়ার ফলে চোখের ওপর পর্দা তৈরি হয়।

 © প্রতিকার ও অপারেশন করে পর্দা সরিয়ে দিয়ে এবং বিশেষ লেন্সযুক্ত চশমা ব্যবহারের দ্বারা স্বাভাবিক দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়া সম্ভব, হয়। ও অনেক সময় লেন্স প্রতিস্থাপনের দ্বারাও এই ত্রুটি ঠিক করা হয়।

জেনে রাখো : চক্ষুদান করলে মৃত ব্যক্তির চোখের কর্নিয়া দ্বারা অন্য ব্যক্তির ক্ষতিগ্রস্ত কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয় এবং ব্যক্তির দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়।

প্রশ্ন 6 . চোখের অন্ধকার অভিযোজন (Dark adaptation) ও আলোক অভিযোজন (Light adaptation)। Ramakrishna Mission Vidyabhavan (Midnapore) '16 

উত্তর : মানুষ যখন খুব আলোকিত অবস্থা থেকে কোনো অন্ধকার জায়গায় (যেমন—সিনেমা হল) প্রবেশ করে তখন কিছুক্ষণের জন্য সেই ব্যক্তি স্পষ্ট দেখতে পায় না। এই অবস্থা ধীরে ধীরে দূর হয়ে যায় ও ব্যক্তিটি স্বাভাবিক দর্শনশক্তি লাভ করে। এই ঘটনাকে অন্ধকার অভিযোজন (Dark adaptation) বলে। এই অভিযোজন দুটি কারণে ঘটে— রোডোপসিনের পুনরুৎপাদন (যেটি উজ্জ্বল আলোতে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল)। ও তারারন্ধ্রের ব্যাস বৃদ্ধি পায় ফলে, অতিরিক্ত আলো চোখে প্রবেশ করে। অন্ধকার অভিযোজনের পর কোনো ব্যক্তি যদি উজ্জ্বল। আলোতে আসে তবে কিছুক্ষণের জন্য তার চোখ ঝলসে যাবে। এই অবস্থা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে ও ব্যক্তিটি আবার স্বাভাবিক দর্শনক্ষমতা লাভ করবে। এই ঘটনাকে আলোক অভিযোজন (Light adaptation) বলে। এই অভিযোজন দুটি কারণে ঘটে • রোডোপসিন বিনষ্ট হয়ে যায়। ও তারারন্ধ্রের ব্যাস হ্রাস পায় ফলে, কম আলো চোখে প্রবেশ করে। 

জেনে রাখো : চোখের রড কোশে 'রোডোপসিন' এবং কোন কোশে ‘আয়োডোপসিন' নামক রঞ্জক পদার্থ উপস্থিত থাকে, যা আলোক ও অন্ধকারে দর্শনে সাহায্য করে।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর: 

প্রশ্ন 1 .সমন্বয় বা কো-অর্ডিনেশন বলতে কী বোঝো?

 উত্তর। জীবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও তন্ত্রের বিপাকীয় ও শারীরবৃত্তীয় কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দেহের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ পরিবেশের মধ্যে সমতাবিধান রক্ষা করার প্রক্রিয়াকেই সমন্বয় বা কো-অর্ডিনেশন বলে। প্রাণীদেহের ক্ষেত্রে স্নায়ুতন্ত্র ভৌত সমন্বায়ক হিসেবে এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীদের ক্ষেত্রে হরমোন রাসায়নিক সমন্বায়ক হিসেবে কাজ করে।

প্রশ্ন  2. স্নায়ুতন্ত্রকে ভৌত সমন্বায়ক বলে কেন? * Vidyasagar Vidyapith '16 

উত্তর : স্নায়ুতন্ত্রের অন্তর্গত স্নায়ু দ্বারা প্রাণীদেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের কাজের মধ্যে সমন্বয় ঘটে বলে, স্নায়ুতন্ত্রকে ভৌত সমন্বায়ক বলা হয়। যেমন— দৌড়োনো কাজটির জন্য দেহে বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের কাজের মধ্যে স্নায়বিক নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়ের প্রয়োজন হয়।

প্রশ্ন  3. হরমোন ও স্নায়ুর মধ্যে একটি সাদৃশ্য ও একটি বৈসাদৃশ্য লেখো। *** [ME '06,03,00] 

উত্তর : হামান ও স্নায়ুর মধ্যে একটি সাদৃশ্য হল— উভয়েই সমন্বায়করূপে কাজ করে। 

একটি বৈসাদৃশ্য হল—হরমোন রাসায়নিক সমন্বায়করূপে কাজ করে এবং এর ক্রিয়া মন্থর কিন্তু সুদূরপ্রসারী। অন্যদিকে, স্নায়ু ভৌত সমন্বায়করূপে কাজ করে এবং এর ক্রিয়া দ্রুত ও তাৎক্ষণিক।) 

প্রশ্ন 4 .উত্তেজিতা বা সংবেদনশীলতা কী ? 

উত্তর : বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ পরিবেশের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে উদ্দীপকের প্রভাবে জীবদেহের নির্দিষ্ট অঙ্গ, তন্ত্র বা সমগ্র জীবদেহে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়, তাকে উত্তেজিতা বা সংবেদনশীলতা বলে। যেমন— হাতে গরম স্পর্শ লাগলে হাত সরিয়ে নেওয়া, খিদে পাওয়া, তৃয়াবোধ প্রভৃতি। 

প্রশ্ন 5 .বহুকোশী উন্নত প্রাণীদের স্নায়ুতন্ত্র না থাকলে কী ঘটত? 

উত্তর :  বহুকোশী উন্নত প্রাণীদেহে স্নায়ুতন্ত্র না থাকলে দেহের ছন্দবদ্ধতা নষ্ট হয়ে যাবে। স্নায়ুতন্ত্র প্রাণীদেহে বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রেরকাজের মধ্যে দ্রুত ভৌত সংযোগ স্থাপন করে প্রাণীকে পরিবেশের পরিবর্তনের সাপেক্ষে উত্তর দানে সক্ষম করে তোলে। স্নায়ুতন্ত্র না থাকলে প্রাণীরা দ্রুত সাড়াদানে অক্ষম হয়ে যাবে ও পরিবেশের মধ্যে সমন্বয় সাধনও হবে না। দেহের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কার্য যেমন— বিভিন্ন জটিল অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সঞ্চালন ও বিভিন্ন তন্ত্রের কার্য পরিচালনা, আবেগ, ভয়, উত্তেজনা, অনুভূতি, দর্শন, শ্রবণ, স্বাদ, গন্ধ ইত্যাদি জটিল কার্যগুলিও সম্পাদনা করা যাবে না। 

প্রশ্ন 6. নিউরোনকে স্নায়ুতন্ত্রের গঠনগত ও কার্যগত একক বলা হয় কেন ?

 উত্তর : নিউরোনের অ্যাক্সন গুচ্ছাকারে যোগকলার আবরণে বেষ্টিত হয়ে গঠন করে স্নায়ু। অসংখ্য নিউরোন, নিউরোগ্লিয়া এবং স্নায়ুর সমন্বয়ে গঠিত হয় মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড। মস্তিষ্ক, সুষুম্নাকাণ্ড, স্নায়ুগ্রন্থি (নিউরোনের কোশদেহ আবৃত হয়ে গঠিত) ও বিভিন্ন ধরনের স্নায়ুর (সংজ্ঞাবহ, আজ্ঞাবহ ও মিশ্র) সমন্বয়ে গড়ে ওঠে স্নায়ুতন্ত্র। সুতরাং, স্নায়ুতন্ত্রের সকল উপাদানগুলির গঠনগত সাদৃশ্য হল এরা সকলেই নিউরোন দ্বারা গঠিত। তাই নিউরোন হল স্নায়ুতন্ত্রের গঠনগত একক। 

আবার, স্নায়ুতন্ত্রের মুখ্য কাজগুলি হল উদ্দীপনা গ্রহণ, তার বিশ্লেষণ এবং কারক অঙ্গে উপযুক্ত বার্তা প্রেরণ করে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের সঙ্গে পরিবেশের সমন্বয় বজায় রাখা। এই সকল কাজগুলিই সংঘটিত হয় নিউরোনের মাধ্যমে। তাই নিউরোন হল স্নায়ুতন্ত্রের কার্যগত একক। 

প্রশ্ন 7. নিজল দানা কাকে বলে? এর কাজ কী ? 

 উত্তর : নিউরোনের কোশদেহের নিউরোপ্লাজমে লৌহযুক্ত রাইবোনিউক্লিয় প্রোটিননির্মিত যে-সমস্ত সূক্ষ্ম দানা উপস্থিত থাকে, তাদের নিজল দানা (Nissl's granules) বলে। 

কাজ : কোশদেহে প্রোটিন সংশ্লেষে অংশগ্রহণ করে। 

প্রশ্ন 8. সোয়ান কোশ কাকে বলে? এর কাজ লেখো। 

 উত্তর:  সোয়ান কোশ (Schwann cell) : প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রের কিছু কিছু নিউরোনের অ্যাক্সনকে যে-সমস্ত গ্লিয়াল কোশ এককেন্দ্রিকভাবে জড়িয়ে থাকে, তাদের সোয়ান কোশ বলে। 

সোয়ান কোশের কাজ : মায়েলিন আবরণ তৈরি করে। ও নিউরোনে দ্রুত উদ্দীপনা পরিবহণে সাহায্য করে।

প্রশ্ন 9 .নিউরোফাইব্রিল কাকে বলে? এর কাজ কী? 

উত্তর : নিউরোনের নিউরোপ্লাজমে ও অ্যাক্সোপ্লাজমে অবস্থিত যে-সমস্ত সূক্ষ্ম তন্তুর মতো অংশ ডেনড্রন থেকে অ্যাক্সন পর্যন্ত বিন্যস্ত থাকে, তাদের নিউরোফাইব্রিলস (Neurofibrils) বলে। 

কাজ : স্নায়ু উদ্দীপনা পরিবহণে সাহায্য করে।

প্রশ্ন  10. প্রান্তবুশ (End brush) কাকে বলে? এর কাজ কী ? 

উত্তর : নিউরোনের অ্যাক্সন প্রান্তদেশ সূক্ষ্ম শাখান্বিত হয়ে যে বুরুশের মতো (ব্রাশ) গঠন তৈরি করে, তাকে প্রান্তবুরুশ বা এন্ড ব্রাশ (End brush) বলে। 

কাজ: হায় উদ্দীপনা পরিবহণকারী নিউরোট্রান্সমিটার ক্ষরণ করে।। 

প্রশ্ন 11.  অ্যাক্সন হিলক কাকে বলে? এর বৈশিষ্ট্য কী? 

উত্তর: নিউরোনের কোশদেহের যে অংশ থেকে অ্যাক্সন নির্গত হয়, তাকে অ্যাক্সন হিলক (Axon Hillock) বলে। 

বৈশিষ্ট্য : অ্যাক্সন হিলকে মায়েলিন সিদ্ ও নিউরোলেমা অনুপস্থিত থাকে। 

প্রশ্ন 12 .র্যানভিয়ারের পর্ব কী? ইহার কাজ কী? 

উত্তর:  মেডুলেটেড নিউরোনের অ্যাক্সনে মেডুলারি আবরণ বা মায়েলিন সিদ্ স্থানে স্থানে বিচ্ছিন্ন হয়ে 1 ব্যাসযুক্ত যে খাজের সৃষ্টি করে, তাকে র‍্যানভিয়ারের পর্ব (Node of Ranvier) বলে।

 কাজ : স্নায়ু উদ্দীপনা পরিবহণে সাহায্য করে। র্যানভিয়ারের পর্য 

প্রশ্ন 13 . নিউরাইট্স ও ডেনড্রাইট কাকে বলে? 

উত্তর : নিউরোনের কোশদেহ থেকে নির্গত প্রবর্ধকগুলিকে নিউরাইটস বলে। আবার, নিউরোনের ডেনড্রন অংশের শাখা প্রবর্ধকগুলিকে ডেনড্রাইট বলে। 

প্রশ্ন 14. ডেনড্রন ও অ্যাক্সনের একটি করে কাজ লেখো। * 

উত্তর : ডেনড্রনের কাজ : ডেনড্রন হল নিউরোনের উদ্দীপনা গ্রাহক অংশ, যা গ্রাহক অঙ্গ বা পূর্ববর্তী নিউরোন থেকে উদ্দীপনা গ্রহণ করে নিজ কোশদেহে প্রেরণ করে। IME'16) 

অ্যাক্সনের কাজ : অ্যাক্সন হল নিউরোনের উদ্দীপনা প্রেরক অংশ, যা কোশদেহ থেকে উদ্দীপনা গ্রহণ করে পরবর্তী নিউরোন বা কারক অঙ্গে প্রেরণ করে। 

প্রশ্ন 15. সাইন্যাপসের কাজ লেখো। 

 উত্তর:  সাইন্যাপাসর কাজ : (i) সাইন্যাপসের [ME'15] মধ্যে দিয়ে নিউরোট্রান্সমিটারের সাহায্যে স্নায়বিক উদ্দীপনা এক নিউরোন থেকে পরবর্তী নিউরোনে সঞ্চারিত হয়। (ii) সাইন্যাপস্ এক নিউরোন থেকে অপর নিউরোনে স্নায়ু উদ্দীপনার এই একমুখী পরিবহণকে নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে, স্নায়ু উদ্দীপনা কখনও বিপরীত অভিমুখে ঘটে না। এই জন্য সাইন্যাপকে শারীরবৃত্তীয় ভালব বা একমুখী ভাল্ব (One way valve) বলা হয়। 

প্রশ্ন 16. স্নায়ুস্পন্দন বা নার্ভ ইমপালস্ কী? 

উত্তর:  স্নায়ুস্পন্দন (Nerve impulse) : গ্রাহক দ্বারা গৃহীত উদ্দীপনা (stimulus) থেকে সৃষ্ট যে বিশেষ তরঙ্গ স্নায়ুকোশের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক পরিবেশে আয়ন ঘনত্বের পরিবর্তন ঘটিয়ে এক নিউরোন থেকে পরবর্তী নিউরোনে সঞ্চারিত বা প্রবাহিত হয়, তাকে স্নায়ুস্পন্দন বা নার্ভ ইমপালস্ বলে।

প্রশ্ন  17. স্নায়ুতন্ত্রে সাইন্যাপস্ না থাকলে কী ক্ষতি হবে ? 

উত্তর : স্নায়ুস্পন্দন (Nerve impulse) সাইন্যাপস্-এর মধ্যে দিয়ে নিউরোট্রান্সমিটারের সাহায্যে একটি নিউরোন থেকে অপর নিউরোনে প্রবাহিত হয়। এই প্রবাহ একমুখী হওয়ায় স্নায়ুতন্ত্রের কাজ নির্ভুল হয় এবং দেহের বিভিন্ন অঙ্গে স্নায়ু স্পন্দন সঠিকভাবে প্রেরিত হয়। স্নায়ুতন্ত্রে সাইন্যাপস্ না থাকলে বাহ্যিক পরিবেশ থেকে আগত উদ্দীপনা অ্যাফারেন্ট স্নায়ুর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে পৌঁছাতে পারবে না এবং কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে সাড়া বা নির্দেশ ইফারেন্ট স্নায়ুর মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন কারক অঙ্গে যেতে পারবে না, অর্থাৎ প্রাণীরা উত্তেজনায় সাড়া দিতে পারবে না এবং সামগ্রিকভাবে জীবদেহ স্থবির হয়ে যাবে। 

প্রশ্ন 18.  প্রান্তসন্নিকর্ষ বিলম্ব কাকে বলে ? 

উত্তর:  একটি নিউরোনের অ্যাক্সন প্রান্ত (প্রিসাইন্যাপটিক পর্দা) থেকে স্নায়ুস্পন্দন পরবর্তী নিউরোনের ডেনড্রনে (পোস্ট সাইন্যাপটিক পর্দা) সাইন্যাপসের মাধ্যমে সঞ্চারিত হওয়ার জন্য যে স্বল্প সময়ের প্রয়োজন হয়, তাকে প্রান্তসন্নিকর্ষ বিলম্ব বা সাইন্যাপটিক ডিলে (Synaptic delay) বলে।

প্রশ্ন 19 .অ্যাসিটাইল কোলিনের কাজ লেখো। * Howrah Zilla School '16 

উত্তর : অ্যাসিটাইল কোলিন নিউরোট্রান্সমিটার হিসেবে কাজ করে এবং একটি নিউরোন থেকে অপর নিউরোনে উদ্দীপনা প্রেরণ করে। উদ্দীপনা নিউরোন দ্বারা গৃহীত হলে তা নিউরোনের ডেনড্রন থেকে অ্যাক্সনের দিকে প্রেরিত হয় এবং অ্যাক্সনের সাইন্যাপটিক নর্-এর সাইন্যাপটিক ভেসিকল্ থেকে অ্যাসিটাইল কোলিন এক্সোসাইটোসিস পদ্ধতিতে নির্গত হয়ে সাইন্যাপটিক ক্লেটে প্রিসাইন্যাপটিক পর্দা থেকে স্নায়বিক উদ্দীপনা অ্যাসিটাইল কোলিনের সাহায্যে পোস্ট সাইন্যাপটিক পর্দাতে পরিবাহিত হয়। এইভাবেই অ্যাসিটাইল কোলিন সুষ্ঠুভাবে উদ্দীপনার পরিবহণ ঘটায়।  

প্রশ্ন 20. স্নায়ুতন্তু বলতে কী বোঝো? 

উত্তর  : স্নায়ুতন্তু (Nerve fibre) : নিউরোনের কোশদেহ থেকে উৎপন্ন যে দীর্ঘ প্রবর্ধক মায়েলিন সিদযুক্ত বা বিহীন হয় ও স্নায়ুস্পন্দন পরিবহণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে, তাকে স্নায়ুতন্তু বা নার্ভ ফাইবার বলে।

প্রশ্ন 21 .স্নায়ুগ্রন্থির কাজ লেখো। 

উত্তর:  স্নায়ুগ্রন্থির কাজ : @ স্নায়ুগ্রন্থি থেকে স্নায়ু সৃষ্টি হয়। ও স্নায়ুগ্রন্থি থেকে নিউরোসিক্লেশন নামক রস ক্ষরিত হয় যা স্নায়ুতন্ত্রকে সিক্ত রাখে। 

প্রশ্ন 22 . ছকের সাহায্যে স্নায়ুর প্রকারভেদগুলি লেখো। * 

উত্তর : স্নায়ুর প্রকারভেদ Jalpaiguri Zilla School '16 গঠনের ভিত্তিতে কাজের ভিত্তিতে মেডুলেটেড বা মায়েলিনেটেড স্নায়ু অন্তর্বাহী বা অ্যাফারেন্ট বা সংজ্ঞাবহ বা সেনসরি স্নায়ু নন-মেডুলেটেড বা নন-মায়েলিনেটেড স্নায়ু বহির্বাহী বা ইফারেন্ট বা আজ্ঞাবহ বা মোটর স্নায়ু মিশ্র বা মিক্সড স্নায়ু

 প্রশ্ন 23. অন্তর্বাহী স্নায়ু ও বহির্বাহী স্নায়ুর বৈশিষ্ট্য লেখো। ** [ME'07,04]

 উত্তর:  অন্তর্বাহী স্নায়ুর বৈশিষ্ট্য : সংজ্ঞাবহ বা অন্তর্বাহী নিউরোন দ্বারা গঠিত হয়। ও গ্রাহক অঙ্গ থেকে উদ্দীপনা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রেরণ করে। 

বহির্বাহী স্নায়ুর বৈশিষ্ট্য : আজ্ঞাবহ বা বহির্বাহী নিউরোন দ্বারা গঠিত হয়। ও কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে সাড়া কারক অঙ্গে প্রেরণ করে। 

প্রশ্ন 24 . গ্রাহকের বিভিন্ন প্রকারভেদগুলি লেখো।

 উত্তর :  গ্রাহক গ্রাহকের শ্রেণিবিভাগ : - উয়তাগ্রাহক – রুফিনির প্রান্তীয় অঙ্গ শৈত্যগ্রাহক ক্রাউজের প্রান্তস্ফীতি বেদনাগ্রাহক নগ্ন স্নায়ুপ্রান্ত ত্বকে উপস্থিত গ্রাহক চাপগ্রাহক প্যাসিনিয়ান কণিকা স্পর্শগ্রাহক মেইজনার-এর কণিকা স্বাদগ্রাহক স্বাদকোরক → জিহ্বাতে উপস্থিত গ্রাহক দূরগ্রাহক (i) রড ও কোন কোশ (চোখের রেটিনা স্তর) (ii) অরগ্যান অব কটি → চোখে উপস্থিত গ্রাহক অন্তঃকর্ণে উপস্থিত গ্রাহক (অন্তঃকর্ণ) 

জেনে রাখো : গ্রাহককে বায়োলজিক্যাল ট্রান্সডিউসার (Biological) transducer) বলে। কারণ, গ্রাহক দ্বারা গৃহীত উদ্দীপনা (stimulus) | স্নায়ুস্পন্দন (impulse)-এ পরিণত হয়।

প্রশ্ন 25.  মানবদেহে বিভিন্ন  প্রকার স্নায়ুতন্ত্রের আন্তঃসম্পর্ক সম্বন্ধে ধারণা দাও ।

 উত্তর : গ্রাহক সংজ্ঞাবহ স্নায়ু (জ্ঞানেন্দ্রিয়) প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র (ঐচ্ছিক) কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড) কারক (অস্থি বা কঙ্কাল পেশি) -চেষ্টীয় স্নায়ু অভ্যন্তরীণ অঙ্গসমূহ (যকৃৎ, বৃদ্ধ) চেষ্টীয় স্নায়ু। স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র (অনৈচ্ছিক ) মানবদেহে বিভিন্ন প্রকার স্নায়ুতন্ত্রের আন্তঃসম্পর্ক 

প্রশ্ন 26 .মস্তিষ্ক প্রকোষ্ঠ কাকে বলে?

 উত্তর : মস্তিষ্কের তরলপূর্ণ গহ্বরকে মস্তিষ্ক প্রকোষ্ঠ বা নিলয় বা ভেন্ট্রিকল (Ventricle) বলে। মানুষের মস্তিষ্কে চারটি প্রকোষ্ঠ বর্তমান। যথা- প্রথম ও দ্বিতীয় প্রকোষ্ঠ (পার্শ্ব প্রকোষ্ঠ গুরুমস্তিষ্কের প্রতি গোলার্ধে একটি করে। ৩ তৃতীয় প্রকোষ্ঠ - অগ্রমস্তিষ্কের নিম্নাংশে ও চতুর্থ প্রকোষ্ঠ → সুষুম্নাশীর্ষকের ওপরে। 

প্রশ্ন 27. সেরিব্রাল কর্টেক্স কাকে বলে?

 উত্তর:  অগ্রমস্তিষ্কে সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের বাইরের দিকে 2 - 4 mm পুরু অত্যন্ত ভাঁজযুক্ত ধূসর বস্তুর স্তরকে সেরিব্রাল কর্টেক্স বা নিওপ্যালিয়াম (Cerebral cortex or Neopalium) বলে।

 জেনে রাখো : বিভিন্ন প্রাণীদের বুদ্ধি সরাসরি সেরিব্রাল কর্টেক্সের পুরুত্ব দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। 

প্রশ্ন 28 .জাইরাস ও সালকাস কী ? *

 উত্তর:  গুরুমস্তিষ্কের প্রতিটি হেমিস্ফিয়ারে পরিধি বরাবর ছোটো বড়ো অসংখ্য যে-সমস্ত ভাঁজ দেখা যায়, তাদের জাইরি, একবচনে জাইরাস (Gyrus) বলে। দুটি ভাঁজের মাঝখানে অবস্থিত খাঁজকে বলে সালকাস (Sulcus) এবং বহুবচনে সালসি। জাইরাস ও সালকাস সেরিব্রাল কর্টেক্সের ধূসর পদার্থের পরিধিতলের ক্ষেত্রফল বৃদ্ধি করে। জেনে রাখো সেরিব্রাল কর্টেক্সের ভাজগুলির পরিমাণ মানুষের বুদ্ধিমত্তা ( Intelligence) নির্ণয় করে। 

প্রশ্ন 29 .করপাস ক্যালোসাম কী ? এর কাজ লেখো। 

উত্তর:  অগ্রমস্তিষ্কে অবস্থিত গুরুমস্তিষ্কের বা সেরিব্রামের দুটি গোলার্ধ বা হেমিস্ফিয়ার যে স্নায়ুযোজক দ্বারা যুক্ত থাকে, তাকে করা। করপাস ক্যালোসাম (Corpus Callosum) বলে। 

কাজ : দুটি সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করা ।

প্রশ্ন 30. ভারমিস (Vermis) কী? এর কাজ লেখো। 

উত্তর: লঘুমস্তিষ্কের দুটি গোলার্ধ বা হেমিস্ফিয়ার যে স্নায়ু যোজক দ্বারা যুক্ত থাকে, তাকে ভারমিস বলে। কাজ দুটি সেরিবেলার হেমিস্ফিয়ারের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করা। 

জেনে রাখো: লঘু মস্তিষ্ক বা সেরিবেলামে ফ্রান্সের মতো গঠনযুক্ত পারকিনটি কোশ উপস্থিত থাকে। এটি সবচেয়ে জটিল নিউরোন। 

প্রশ্ন 31 . আমাদের মস্তিষ্ক কীভাবে সুরক্ষিত থাকে?

 উত্তর : আমাদের দেহে মস্তিষ্কের সুরক্ষা: মস্তিষ্ক অস্থিনির্মিত ক্রেনিয়াম করোটি দ্বারা সুরক্ষিত থাকে। ও ত্রিস্তরীয় মেনিনজেস পর্দা মস্তিষ্ককে বাহ্যিক আঘাত থেকে রক্ষা করে। ও সাব অ্যারাকনয়েড ও মস্তিষ্ক প্রকোষ্ঠে সজ্জিত CSF (সেরিব্রো স্পাইনাল তরল) মস্তিষ্ককে বাহ্যিক আঘাতের হাত থেকে রক্ষা করে।

 প্রশ্ন 32. মেনিনজেস এর কাজ লেখো। Habra High School '16

 উত্তর : মেনিনজেস-এর কাজ : মেনিনজেস মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ডকে বাহ্যিক আঘাত ও জীবাণু সংক্রমণের থেকে রক্ষা করে। ও মেনিনজেস এর পায়া ম্যাটার স্তরটি মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ করে।

 প্রশ্ন 33. ফোরামেন অফ ম্যাগনাম-এর অবস্থান ও কাজ লেখো।

 উত্তর:  করোটি ও মেরুদণ্ডের সংযোগরক্ষাকারী ছিদ্রপথকে ফোরামেন অফ ম্যাগনাম (Foramen of magnum) বলে।

 কাজ : ফোরামেন অফ ম্যাগনামের মাধ্যমে মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকে। 

প্রশ্ন 34 . করোডীয় আয়ু কাকে বলে? এর সংখ্যা ও প্রকৃতি উল্লেখ করো।

 উত্তর : করোটীয় স্নায়ু বা কেনিয়ান না করোটীয় ছিদ্রের (Cranial Foramina) মধ্যে দিয়ে সম্প্রসারিত যে-সমস্ত স্নায়ু মস্তিষ্কে উৎপন্ন বা মস্তিষ্কে মিলিত হয়ে দেহপ্রান্ত ও আন্তরযন্ত্রের সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগাযোগ স্থাপন করে, তাদের করোটীয় স্নায়ু বলে। করোটীয় স্নায়ুর সংখ্যা 12 জোড়া (I থেকে XII) । 

করোটীয় স্নায়ুর প্রকৃতি : তিন প্রকার হয়, যথা- সংজ্ঞাবহ বা সংবেদী স্নায়ু ও আজ্ঞাবহ বা মোটর বা চেন্দ্রীয় স্নায়ু ও মিশ্র স্নায়ু। 

প্রশ্ন 35 .সুষুন্নীয় স্নায়ুর কাজগুলি লেখো। 

উত্তর : সুমুন্নীয় স্নায়ুর কাজ : সুষুণ্ণীয় স্নায়ু মিশ্র প্রকৃতির। এর সংজ্ঞাবহ স্নায়ুগুলি দেহের বিভিন্ন গ্রাহক অঙ্গ থেকে উদ্দীপনা গ্রহণ করে সুষুম্নাকাণ্ডের ধূসর বস্তুতে পৌঁছে দেয়। ও চেষ্টীয় স্নায়ুগুলি কার্যকরী নির্দেশ সুষুম্নাকাণ্ড থেকে কারক অঙ্গে (পেশি ও গ্রন্থি) পৌঁছে দেয় এবং অঙ্গাগুলির কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে। 

• স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের কয়েকটি কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। 

প্রশ্ন  36 . যদি সেরিবেলাম অংশ যথাযথ কাজ না করে তাহলে আমাদের কোন্ কোন্ কাজগুলি ব্যাহত হবে?

 উত্তর : সেরিবেলাম যথাযথ কাজ না করলে আমাদের যে-সমস্ত কাজগুলি ব্যাহত হবে সেগুলি হল- সোজাভাবে হেঁটে চলা। ও সাইকেল চালানো। ও দেহের ভারসাম্য রক্ষা করা।

প্রশ্ন 37 . নবীনের অ্যাক্সিডেন্টের পর থেকে সে (i) সোজা লাইনে হাঁটতে পারে না, (ii) কোনো কিছুর গন্ধ পায় না, (iii) খাদ্যগ্রহণে পরিতৃপ্তি অনুভব করতে পারে না - প্রতিটি ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের কোন্ অংশ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে বলে তোমার মনে হয় ?

 উত্তর : (i) লঘুমস্তিষ্ক বা সেরিবেলাম আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। (ii) অগ্রমস্তিষ্ক বা সেরিব্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। (iii) অগ্রমস্তিষ্কের ক্ষুধাকেন্দ্র আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। 

প্রশ্ন 38 .সমবেদী ও পরাসমবেদী স্নায়ুতন্ত্র কাকে বলে ? 

উত্তর :  সমানদী বা স্বতন্ত্র বা সিমপ্যাথেটিক স্নায়ুতন্ত্র : স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের অন্তর্গত যে সমস্ত স্নায়ুগুলি সুষুম্নাকাণ্ডের থোরাসিক (T,T12) ও লাম্বার (L4-L5) খণ্ড থেকে উৎপত্তি লাভ করে দেহের বিস্তৃত অঞ্চলের আন্তরযন্ত্রের কাজকে নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের একত্রে সমবেদী বা স্বতন্ত্র স্নায়ুতন্ত্র বলে।

 পরাসमातृদी वा পরাস্বতন্ত্র ता স্নায়ুতন্ত্র : স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রের অন্তর্গত যে-সমস্ত স্নায়ু মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকণ্ডের (S –Sa) খণ্ডক থেকে দেহের সীমিত অঞ্চলের আন্তরযন্ত্র সমূহের কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করে, তাদের পরাসমবেদী বা পরাস্বতন্ত্র স্নায়ুতন্ত্র বলে। প্যারাসিমপ্যাথেটিক ব ব্রি பி র ে G | 

জেনে রাখো : রাগ, ভয়, উদ্‌বেগ প্রভৃতি মানসিক উত্তেজনার সময় সমবেদী স্নায়ুতন্ত্রের ক্রিয়া বৃদ্ধি পায়, যা দেহে আক্রমণ বা পলায়ন (Fight | or flight) প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। বিশ্রামরত ও শান্ত অবস্থায় দেহে পরাসমবেদী স্নায়ুতন্ত্রের সক্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে, দেহে বিশ্রাম ও পরিপাক প্রতিক্রিয়া (Rest and digest reflex) দেখা যায়। 

প্রশ্ন 39 . নিউরোসিল কী ? এর কাজ লেখো। 

উত্তর : মস্তিস্কের প্রকোষ্ঠ বা নিলয় এবং সুষুম্নাকাণ্ডের কেন্দ্রীয় নালিকে একত্রে বলা হয় নিউরোসিল (Neurocoel)। নিউরোসিল CSF দ্বারা পূর্ণ থাকে।

 কাজ : নিউরোসিলে CSF থাকার জন্য মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ডের স্নায়ুকোশগুলিতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পদার্থ সরবরাহ হয় এবং এই সকল কোশ থেকে রেচন পদার্থ অপসারিত হয়।

প্রশ্ন 40.  থ্যালামাসকে গুরুমস্তিষ্কের প্রবেশদ্বার বলে কেন ? 

উত্তর : ঘ্রাণসংক্রান্ত স্নায়ুস্পন্দন ছাড়া অন্যান্য সমস্ত সংজ্ঞাবহ বা সেনসরি স্নায়ুস্পন্দন প্রথমে থ্যালামাসে প্রেরিত হয়। পরে থ্যালামাস এই সমস্ত স্নায়ুস্পন্দনকে গুরুমস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশে রিলে করে দেয়। সংজ্ঞাবহ স্নায়ুস্পন্দন থ্যালামাসের মধ্যে দিয়ে গুরুমস্তিষ্কে প্রবেশ করে বলে, থ্যালামাসকে গুরুমস্তিষ্কের প্রবেশদ্বার বলা হয়।

প্রশ্ন  41.  কোনাস মেডুলারিস ও ফাইলাম টারমিনেল কী ? 

উত্তর : সুষুম্নাকাণ্ডের শেষে শাঙ্কবাকৃতির অংশটিকে কোনাস মেডুলারিস বলে। সুষুম্নাকাণ্ডের শেষপ্রান্তে সুতোর মতো অবস্থিত ঝুলন্ত অংশকে ফাইলাম টারমিনেল বলে।

প্রশ্ন 42.  1 নীচের কোনগুলি সরল প্রতিবর্ত ক্রিয়া এবং কোনগুলি অভ্যাসগত প্রতিবর্ত ক্রিয়া লেখো। (a) হাঁটু ঝাঁকুনি, (b) কথা বলতে বলতে না দেখে জুতোর ফিতে আটকানো, (c) মুখগহ্বরে খাবার প্রবেশ করলে লালা ক্ষরণ, (d) উজ্জ্বল আলোতে চোখ বন্ধ হয়ে যাওয়া, (e) সাঁতার কাটা। 

উত্তর : (a) হাঁটু ঝাঁকুনি → সরল প্রতিবর্ত ক্রিয়া, (b) কথা বলতে বলতে না দেখে জুতোর ফিতে বাঁধা → অভ্যাসগত প্রতিবর্ত ক্রিয়া, (c) মুখগহ্বরে খাবার প্রবেশ করলে লালাক্ষরণ → সরল প্রতিবর্ত ক্রিয়া, (d)উজ্জ্বল আলোতে চোখ বন্ধ হয়ে যাওয়া→ সরল প্রতিবর্ত ক্রিয়া, (e) সাঁতার কাটা → অভ্যাসগত প্রতিবর্ত ক্রিয়া ।

প্রশ্ন  43 .চোখের পলক পড়া কী ধরনের প্রতিক্রিয়া? এটা কেন হয় ?  

উত্তর:  চোখের পলক পড়া সহজাত উপরিগত প্রতিবর্ত ক্রিয়া। এটি প্রধানত চোখকে ধুলোবালি, জীবাণু ও তীব্র আলোর হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ঘটে। চোখে হঠাৎ তীব্র আলো পড়লে বা বহিরাগত কোনো বস্তু (ধুলোবালি, জীবাণু) চোখের সংস্পর্শে আসলে তৎক্ষণাৎ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয় এবং সাড়া বা রেসপন্স হিসেবে চোখের পাতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ফলস্বরূপ, চোখ দুটি রক্ষা পায়। 

প্রশ্ন 44 . নিম্নলিখিত ক্রিয়াগুলির মধ্যে কোনগুলি সহজাত বা কোন্‌গুলি অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়া তা তালিকাভুক্ত করো— (a) সদ্যজাতের স্তন্যপানের ইচ্ছা, (b) সাইকেল চালানো, (c) হাঁচি, (d) ক্ষিপ্রতার সঙ্গে উইকেট কিপারের বল ধরা। [ME'17]

 উত্তর : সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়াগুলি হল— (i) সদ্যজাতের স্তন্যপানের ইচ্ছা, (ii) হাঁচি। অর্জিত প্রতিবর্ত ক্রিয়াগুলি হল – (i) সাইকেল চালানো, (ii) ক্ষিপ্রতার সঙ্গে উইকেট কিপারের বল ধরা।

প্রশ্ন 45 .প্রতিবর্ত ক্রিয়াকালে মস্তিষ্কের ভূমিকা লেখো। Jodhpur Park Boys' School '16 

উত্তর:  প্রতিবর্ত ক্রিয়া হল একপ্রকার আকস্মিক প্রতিক্রিয়া যেখানে কোনো উদ্দীপনার প্রভাবে তাৎক্ষনিকভাবে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। সরল প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে মস্তিষ্কের কোনো ভূমিকা নেই, তবে জটিল প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে মস্তিষ্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেমন— সাইকেল চালানো, শিশুদের হাঁটা শেখা, সার্কাসে খেলা দেখানো ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে প্রতিবর্ত ক্রিয়া বারবার অনুশীলনের মাধ্যমে অর্জিত হলেও বিশেষ মুহূর্তে মস্তিষ্কের প্রয়োজন হয়। যেমন— সাইকেলের গতি নিয়ন্ত্রণ। সুতরাং, স্মৃতি ও দক্ষতা নির্ভর প্রতিবর্ত ক্রিয়াকালে মস্তিষ্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

মস্তিষ্কের মেডালা অবলংগাটা বিভিন্ন আন্তরযন্ত্রীয় প্রতিবর্ত (visceral reflex) ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। যেমন— হাঁচি, কাশি, লালাক্ষরণ, গলাধঃকরণ, বমন ইত্যাদি। 

প্রশ্ন 46 .জ্ঞানেন্দ্রিয় (Sense organ) কাকে বলে ? 

উত্তর : জ্ঞানেন্দ্রিয় (Sense organ) : প্রাণীদেহে অবস্থিত যে-সমস্ত গ্রাহক অঙ্গ পরিবেশ থেকে বিভিন্ন উদ্দীপনা গ্রহণ করে 

নির্দিষ্ট স্নায়ুর মাধ্যমে স্নায়ুকেন্দ্রে প্রেরণ করে, তাদের নেঞ্জিয় বা সেন্স অরগ্যান বলে। 

জেনে রাখো: মানবদেহের বিভিন্ন ভানেজিগ ও তাদের কাজ চোখ (Eye) স্থান, আকার, আয়তন, বর্ণ প্রভৃতি পর্যবেক্ষণে সাহায্য করে। কান (Ear) are (Nose) শ্রবণ ও দেহের ভারসাম্য নি ঘ্রাণ গ্রহণ ও শ্বাসকার্য । জিহ্বা বলা প্রভৃতি। স্থান গ্রহণ, খাদ্য চর্বণ, গলাধকরণ, ক স্পর্শের অনুভূতি গ্রহণ, তা নিয়ন্ত্রণ ও দেহের আবরণ তৈরি। (Tongue) ত্বক (Skin) 

প্রশ্ন 47. অক্ষিগোলকের বিভিন্ন আবরক অংশগুলি ছকের সাহায্যে দেখাও। 

উত্তর: অক্ষিগোলকের আবরক :

 বহিঃ আবরক মধ্য আবরক (রন্থক স্তর) অন্তঃআবরক (স্নায়বিক স্তর) বেটিনা বা অক্ষিপট (তন্তুময় স্তর) কেরা বা শ্বেতমণ্ডল। কর্নিয়া বা অচ্ছোদপটল কোরয়েড বা কৃষ্ণমণ্ডল কণীনিকা বা আইরিস ।

জেনে রাখো: আইরিস বা কনীনিকার রঘুকের ওপর মানুষের চোখের লেপের রং নির্ভর করে। আইরিসের জন্যই মানুষের চোখের লেন্স কালো, বাদামি বা নীলাভ হয়। 

প্রশ্ন 48 . অক্ষিগোলকের নিউরোন সমৃদ্ধ স্তরটির নাম কী? এই স্তরের কাজ লেখো।

 উত্তর : অক্ষিগোলকের নিউরোন সমৃদ্ধ স্তরটি হল রেটিনা। রেটিনাতে দু-ধরনের আলোক সুবেদী কোশ থাকে। নগা (1) রড কোশ ও (ii) কোন কোশ। 

 রড কোশের কাজ : অল্প আলোর অনুভূতি গ্রহণে সক্ষম। রড কোশ রাতের বেলা অল্প আলোতে দেখতে সাহায্য করে। 

© কোন কোশের কাজ : উজ্জ্বল আলো ও বর্ণের অনুভূতি গ্রহণে সক্ষম। কোন কোশ দিনের উজ্জ্বল আলোতে দেখতে সাহায্য করে ও বিভিন্ন রং-এর অনুভূতি গ্রহণে সাহায্য করে। 

প্রশ্ন 49. অক্ষিগোলকের মধ্যবর্তী স্তরকে কোরয়েড বা কৃষ্ণমণ্ডল বলে কেন ? 

উত্তর:  অক্ষিগোলকের মধ্যে কোরয়েড স্তরটি স্কেরা ও রেটিনার মাঝে অবস্থিত। কোরয়েড স্তরের কোশে টাইরোসিন নামক অ্যামাইনো অ্যাসিড থেকে প্রচুর মেলানিন নামক কালো বর্ণের রাক সংশ্লেষিত হয়। তাছাড়া, এই স্তরে অনেক রক্তবাহের উপস্থিতি দেখা যায়, ফলে এই স্তরের বর্ণ কালো হয়। তাই, অক্ষিগোলকের মধ্যবর্তী এই স্তরকে কৃমণ্ডল বা কোরয়েড বলা হয়।।

প্রশ্ন 50. অভিগোলকের প্রতিসারক মাধ্যমগুলির নাম ক্রমানুসারে লেখো।** (ME  

উত্তর: মানবচক্ষুর আলোক প্রতিসারক মাধ্যমগুলি হল- o কর্নিয়া – স্বচ্ছ, সাদা ও তত্ত্বময় ও অ্যাকুয়াস হিউমর – কর্নিয়া ও লেন্সের মধ্যের জলীয় তরল ও লেন্স - স্থিতিস্থাপক ও দ্বি-উত্তল, 

 ভিট্রিয়াস হিউমর লেন্স ও রেটিনার মধ্যের স্বচ্ছ সান্দ্র তরল। 

জেনে রাখো চোখের কর্নিয়া স্তর ব্যাপনের মাধ্যমে অক্সিজেন গ্রহণ করে। কনট্যাক্ট লেন্সের বেশি এবং দীর্ঘসময় ব্যবহারে কর্নিয়ার অক্সিজেন গ্রহণ ব্যাহত হতে পারে ও কর্নিয়া শুকিয়ে যেতে পারে। - 

প্রশ্ন 51 . লেন্স কী? এর কাজ লেখো। ** [ME '18]

 উত্তর : স্বচ্ছ, দ্বিউগুল, স্থিতিস্থাপক, এপিথেলিয়াল কোশ দ্বারা গঠিত চাকতির মতো যে অংশটি চোখের সিলিয়ারি বড়ির সঙ্গে যুক্ত থাকে, তাকে লেন্স (Lens) বলে। কাজ : ও প্রতিসারক মাধ্যমরূপে কাজ করে। ও অ্যাকুয়াস হিউমর ও ভিট্রিয়াস হিউমরকে পৃথক রাখে।

 জেনে রাখো: লেন্স, প্রতিস্থাপনযোগ্য। রক্তজালকবিহীন হওয়ায় ।

প্রশ্ন 52.  মানব অক্ষিগোলকের মধ্যস্থ প্রধান প্রকোষ্ঠ দুটির অবস্থান ও একটি কাজ লেখো। Rahara Ramakrishna Miction Boys Home High School 16

 উত্তর:  মানব অক্ষিগোলকের মধ্যস্থ প্রধান দুটি প্রকোষ্ঠের নাম, সফলভাবে অবস্থান ও কাজ হল- অ্যাকুয়াস প্রাকার্ড : (i) অবস্থান কর্নিয়া ও লেন্সের মাঝে বর্তমান। (ii) কাজ এই প্রকোষ্ঠে উপস্থিত অ্যাকুয়াস হিউমার নামক স্বচ্ছ জলীয় তরল চোখের আলোক প্রতিসারক মাধ্যম রূপে কাজ করে। এ ছাড়া, কর্নিয়া ও লেন্সকে পুষ্টি প্রদান করে।

 (i) অবস্থান: লেন্স ও রেটিনার মাঝে বর্তমান। (i) কাজ এই প্রকোষ্ঠে ভিট্রিয়াস হিউমর নামক সান্দ্র তরল বর্তমান থাকে, যা চোখের আলোক প্রতিসারক মাধ্যম হিসেবে কাজ করে এবং চোখের অভ্যন্তরে চাপের সাম্যাবস্থা বজায় রাখে। 

প্রশ্ন 53.  পীতবিন্দু বা Yellow Spot কাকে বলে? এর কাজ কী ? ** [ME'12]

 উত্তর : গীতবিন্দু (Yellow spot) : অক্ষিগোলকের অভ্যন্তরে রেটিনার উপর লেন্সের এক সরলরেখায় যে বিন্দুতে কোন কোশের আধিক্যের জন্য উন্নত প্রতিবিম্ব গঠিত হয়, তাকেই পীতবিন্দু বা Yellow Spot বলে।

 কাজ : এই অংশে দৃশ্যমান বস্তুর সুস্পষ্ট, ছোটো ও উলটো প্রতিবিম্ব গঠিত হয়।

 প্রশ্ন 54.  অন্ধবিন্দু বা Blind Spot কাকে বলে?

 উত্তর : অন্ধবিন্দু (Blind spot) : অক্ষিগোলকের যে বিন্দুতে রেটিনা ও অপটিক স্নায়ু মিলিত হয়েছে এবং যেখানে আলোক সুবেদী কোশ না থাকায় বস্তুর কোনো প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না, তাকেই অন্ধবিন্দু বা Blind Spot বলে।

প্রশ্ন 55 .ফোভিয়া সেন্ট্রালিস কী ? এর কাজ লেখো।

উত্তর : মানবচক্ষুর তারারন্ধ্রের ঠিক বিপরীত দিকে রেটিনা নামক স্তরে যে ছোটো অবতল খাঁজ উপস্থিত থাকে, তাকে ফোভিয়া সেন্ট্রালিস বলে। 

কাজ : এই স্থানে লক্ষ্যবস্তুর সবচেয়ে উজ্জ্বল ও স্পষ্ট প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। জেনে রাখো: ফোভিয়া সেন্ট্রালিসে রক্তজালক ও স্নায়ুতন্তু থাকে না। কেবলমাত্র কোন কোশ বর্তমান থাকে। 

প্রশ্ন 56. রেখাচিত্রের সাহায্যে মানুষের দর্শন পদ্ধতি বুঝিয়ে দাও। রেখাচিত্র :

 উত্তর:  মানুষের দর্শন পদ্ধতির কোনো বস্তু থেকে আগত আলোকরশ্মি কনজাংটিভা কর্নিয়া আলোক অ্যাকুয়াস হিউমর প্রতিসারক মাধ্যম লেন্স ভিট্রিয়াস হিউমর রেটিনা (বস্তুর উলটো ও ছোটো প্রতিবিম্ব গঠন) অপটিক স্নায়ু (এর দ্বারা দর্শন অনুভূতি মস্তিষ্কে প্রেরণ) গুরুমস্তিষ্কের দর্শন কেন্দ্র (লক্ষ্যবস্তুর সোজা এবং সঠিক প্রতিবিম্ব গঠন)।

জেনে রাখো : বেশিরভাগ পাখিদের চোখে পেকটিন (Pecten) উপস্থিত থাকে যা পাখিদের উপযোজনে সাহায্যে করে এবং দূরের বস্তুকে স্পষ্টভাবে দেখতে সাহায্য করে। - 

প্রশ্ন 57. দর্শনে আইরিশের গুরুত্ব লেখো। 

উত্তর : 1.  তারারন্ধ্রকে ছোটো-বড়ো করে অক্ষিগোলকের মধ্যে আলোর প্রবেশকে ও আলোকরশ্মির পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণ করে।

 2. অক্ষিগোলকের পরিধিস্থ আলোকরশ্মির পরিমাণ হ্রাস করে হয়।

3 .আলোকের ফোকাসের গভীরতা নিয়ন্ত্রণ করে। প্রতিসরণগত ত্রুটিকে হ্রাস করে। এর ফলে সুস্পষ্ট প্রতিবিম্ব গঠিত

প্রশ্ন  58. চোখের রক্ষনাত্মক অংশগুলি কী কী তা লেখো। 

উত্তর : চোখের রক্ষণাত্মক অংশগুলি হল— 

1.অস্থিনির্মিত অক্ষিকোটর। 2. অক্ষিপক্ষসহ ঊর্ধ্ব ও নিম্ন নেত্রপল্লব। 3. স্বচ্ছ ওপাতলা কনজাংটিভা বা নেত্রবত্মকলা। অক্ষিপেশি (4টি রেকটাস পেশি, 2টি অবলিক পেশি, 1টি লিভেটর পেশি)। ও বাদামী বর্ণের ক্ষুদ্র অশ্রুগ্রন্থি। 

প্রশ্ন 59 . অশ্রুগ্রন্থির কাজ লেখো। * [ME'12] 

উত্তর: 1. অশ্রুক্ষরণ করে চোখকে ধুলোবালি ও বহির্জাত সকল পদার্থ থেকে রক্ষা করে।

 2. চোখকে আর্দ্র রাখে। ও অশ্রুতে লাইসোজাইম নামক উৎসেচক উপস্থিত থাকে যা চোখকে জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।

 প্রশ্ন 60.  অক্ষিপেশি কী ? অক্ষিপেশিগুলির নাম লেখো। 

উত্তর : অক্ষিগোলককে অক্ষিকোটরের সঙ্গে সংযুক্ত রাখতে সাহায্যকারী পেশি হল অক্ষিপেশি। অক্ষিপেশির সংকোচনের ফলে অক্ষিগোলকের সঞ্চালন ঘটে। ( অক্ষিগোলককে যে পেশিগুলি অক্ষিকোটরের সঙ্গে যুক্ত রাখে তা হল— @ রেকটাস পেশি (4টি), ও অবলিক পেশি (2টি), ও লিভেটর পেশি (1টি)। 

প্রশ্ন 61. দূরবিন্দু ও নিকট বিন্দু কী ? 

উত্তর:  দূরবিন্দু : একজন সুস্থ ব্যক্তি চোখের উপযোজন না ঘটিয়ে সর্বাধিক যে দূরত্বের বস্তুকে স্পষ্টভাবে দেখতে পায়, তাকে দূরবিন্দু বলে। মানুষের ক্ষেত্রে দূরবিন্দু 6 মিটারের বেশি। নিকট বিন্দু : একজন সুস্থ ব্যক্তি চোখের উপযোজন না ঘটিয়ে সর্বনিম্ন যে দূরত্বের বস্তুকে স্পষ্টভাবে দেখতে পায়, তাকে নিকট বিন্দু বলে। মানুষের ক্ষেত্রে নিকট বিন্দু হল 25 সেন্টিমিটার।

প্রশ্ন  62.  দূরের ও কাছের বস্তু দেখার ক্ষেত্রে সিলিয়ারি পেশির ভূমিকা লেখো। Ramakrishna Mission Vidyalaya, Narendrapur '16 

উত্তর : দূরের বস্তু দেখার জন্য সিলিয়ারি পেশির ভূমিকা : সিলিয়ারি পেশির শৈথিল্য → লেন্সের বক্রতা হ্রাস → লেন্স সরু হয়ে যায় → লেন্সের ফোকাস দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি → দূরের বস্তু দৃশ্যমান । কাছের বস্তু দেখার জন্য সিলিয়ারি পেশির ভূমিকা : সিলিয়ারি পেশির সংকোচন → লেন্সের বক্রতা বৃদ্ধি → লেন্স বেশি উত্তল ও মোটা হয় → লেন্সের ফোকাস দৈর্ঘ্য হ্রাস → কাছের বস্তু দৃশ্যমান। 

প্রশ্ন 63.  প্রাত্যহিক জীবনে উপযোজনের গুরুত্ব কী ?

 উত্তর:  প্রাত্যহিক জীবনে কাছের ও দূরের বস্তুর সঠিক অবস্থান নির্ণয়ে উপযোজন সাহায্য করে। যেমন- • গাড়ি চালানোর সময় পথচারী ও অন্যান্য গাড়ির অবস্থান নির্ণয় দ্বারা দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয় ৷ ও রাস্তায় চলার সময় ট্রাফিক সিগন্যাল, পথনির্দেশ প্রভৃতি বুঝতে উপযোজন সাহায্য করে। ও বিভিন্ন খেলার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের (যেমন— ক্রিকেট খেলা, শুটিং, তির ছোড়া প্রভৃতি) দক্ষতা অর্জনে উপযোজন সাহায্য করে। 

প্রশ্ন 64.  গাড়ির চালকদের ক্ষেত্রে উপযোজনের ভূমিকা লেখো। 

উত্তর : 1. গাড়ির চালকরা চোখের উপযোজনের সাহায্যে গাড়ির সামনের ও দূরের রাস্তা স্পষ্টভাবে দেখতে পায় । 

ও দূর থেকে ট্রাফিক সিগন্যাল দেখে দুর্ঘটনা এড়াতে চোখের লেন্স বিভিন্নভাবে উপযোজিত হয়। • চলন্ত অবস্থায় লুকিং গ্লাসের সাহায্যে দুই পাশের দৃশ্যও দেখতে সাহায্য করে। 

প্রশ্ন 65.  একনেত্র ও দ্বিনেত্র দৃষ্টি কাকে বলে? উদাহরণ দাও। 

উত্তর : একানত দৃষ্টি (Monocular vision) : যে দৃষ্টি বা দর্শনে দুটি ভিন্ন চোখের সাহায্যে একইসঙ্গে দুটি ভিন্ন বস্তুকে পৃথকভাবে দেখা যায়, তাকে একনেত্র দৃষ্টি (Monocular vision) বলে। 

উদাহরণ— ব্যাং, গোরু, ঘোড়া প্রভৃতি প্রাণীর দৃষ্টি। 

 দ্বিনেত্র  দৃষ্টি (Binocular vision) : যে দৃষ্টি বা দর্শনের মাধ্যমে একইসঙ্গে দুটি চোখ দিয়ে একটি নির্দিষ্ট বস্তুকে পর্যবেক্ষণ করা হয়, তাকে দ্বিনেত্র দৃষ্টি বলে। . উদাহরণ – মানুষ, পেঁচা, বাজপাখির দৃষ্টি। 

প্রশ্ন 66 . বিনেত্র দৃষ্টির গুরুত্ব লেখো। 

উত্তর:  দ্বিনেত দৃষ্টির গুরুত্ব : (i) দ্বিনেত্র দৃষ্টির সাহায্যে বস্তুর আকার, অবস্থান এবং দূরত্ব নির্ণয় করা যায়। (ii) বস্তুর সুস্পষ্ট প্রতিবিম্ব। দেখতে ও গভীরতা নির্ণয় করতে সাহায্য করে। (iii) বস্তুর ত্রিমাত্রিক গঠন বুঝতে সাহায্য করে। 

প্রশ্ন 67. কনজাংটিভাইটিস (Conjunctivitis) রোগটি কী? Bagbazar Multipurpose Girls school (Govt Spens) "16 

উত্তর:  কনজাংটিভাইটিস (Conjunctivitis) ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে অথবা বিভিন্ন অ্যালার্জিক পদার্থের প্রভাবে চোখের বাইরের দিকে কনজাংটিভার যে প্রদাহজনিত অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাকে কনজাংটিভাইটিস বলে। এই রোগে পাতলা, স্বচ্ছ কনজাংটিভা স্তরটি ফুলে যায়, চোখ লাল বা গোলাপি বর্ণ ধারণ করে, ব্যাথা ও অস্বস্থির সৃষ্টি হয় এবং অনবরত অশ্রু নির্গত হতে থাকে। এটি খুব ছোঁয়াচে রোগ।  

প্রশ্ন 68. গ্লুকোমা (Glaucoma) কী ? 

উত্তর : গ্লুকোমা (Glaucoma) : অ্যাকুয়াস হিউমরের ক্ষরণ বেড়ে গেলে অক্ষিগোলকেচাপ বেড়ে যায়, যার ফলে ব্যক্তির দেখতে অসুবিধা। হয় এবং ধীরে ধীরে অন্ধত্ব তৈরি হতে পারে। এই অবস্থাকে গ্লুকোমা (Glaucoma) বলে। সঠিক ভায়াগনোসিস করে এই রোগ সারানো যেতে পারে। 

প্রশ্ন 69. নিশাচর প্রাণীর চোখে রাত্রিবেলা আলো ফেললে চোখ দুটি জ্বলজ্বল করে কেন ?

 উত্তর : কিছু নিশাচর প্রাণীর রেটিনার পিছনে ট্যাপেটাম লুসিডাম (Tapetum lucidum) নামক এক প্রকার প্রতিফলক স্তর থাকে যা রেটিনার মধ্য দিয়ে অতিক্রান্ত আলোকরশ্মিকে প্রতিফলিত করে রেটিনায় পুনরায় পাঠিয়ে দেয়। এর ফলে রেটিনার কোশগুলি ওই প্রতিফলিত আলোতে দ্বিতীয়বার উদ্দীপিত হয়, যা তাদের রাত্রে দেখতে সাহায্য করে। ট্যাপেটান দ্বারা আলোকরশ্মির ওই ধরনের প্রতিফলন হয় বলে নিশাচর প্রাণীর চোখে রাত্রিবেলা আলো ফেললে চোখ দুটি জ্বলজ্বল করে। যেমন- বিড়াল, বাঘ, হায়না, শেয়াল, সিংহ ইত্যাদি নিশাচর প্রাণীদের ক্ষেত্রে এরকম ঘটে।

No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();