বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ (Heredity and Common Genetic Diseases): দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান অধ্যায় 3.1 | class 10 Life science chapter 3.1 question answer| - SM Textbook

Fresh Topics

Wednesday, November 8, 2023

বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ (Heredity and Common Genetic Diseases): দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান অধ্যায় 3.1 | class 10 Life science chapter 3.1 question answer|

 বংশগতি এবং কয়েকটি সাধারণ জিনগত রোগ (Heredity and Common Genetic Diseases): দশম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান অধ্যায় ৩.১ | class 10 Life science chapter 3.1 question answer|





রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর:

প্রশ্ন 1. বংশগতি কাকে বলে? [ME '02] উপযুক্ত উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি ব্যাখ্যা করো। মেন্ডেলকে ‘বংশগতিবিদ্যার জনক’ বলা হয় কেন?  

উত্তর: বংশগতি (Heredity) : যে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে জনিতৃ জীবের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বংশপরম্পরায় অপত্য বংশধরদের দেহে সঞ্ঝারিত ও প্রকাশিত হয়, তাকে বংশগতি বা হেরিডিটি বলে। 

একই পরিবারের বিভিন্ন সদস্যদের মধ্যে চেহারায় যেমন— উচ্চতা, চুলের রং, চোখের মণির রং ইত্যাদির অনেক মিল দেখা যায়। কোনো সন্তানের চেহারায় পিতা ও মাতার পরিবারের সদস্যদের বৈশিষ্ট্যের বিশেষ প্রকাশ পরিলক্ষিত হয়। এইভাবে এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে বৈশিষ্ট্যের সঞ্চারণকেই বংশগতি বলে। 

মেন্ডেলাক "বংশগতিবিদ্যার জনক' (Father of Genetics) বলার কারণ হল – 

1. গ্রেগর জোহান মেন্ডেল সংকরায়ণ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রথম বংশগতি সংক্রান্ত একটি প্রাথমিক ধারণা দেন। 

2. জনিতৃ জীবের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অপত্যের দেহে কীভাবে সঞ্ঝারিত ও প্রকাশিত হয় সে সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা প্রকাশ করেন। 

3. তিনিই প্রথম প্রকরণ বা ভেদ সৃষ্টির কারণ ব্যাখ্যা করেন।

4. সর্বোপরি প্রকটতার নীতি, পৃথকীভবন সূত্র, স্বাধীনবিন্যাস সূত্রের মাধ্যমে তিনি প্রথম বংশগতিবিদ্যার ভিত্তি স্থাপন করেন। বংশগতি সংক্রান্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আবিষ্কারের জন্য তিনি আধুনিক সুপ্রজননবিদ (Genetists)-এর কাছে সমাদৃত ও গ্রহণযোগ্য হয়েছেন। | 

জেনে রাখো : বংশগতিবিদ্যা বা জিনতত্ত্ব বা জেনেটিক্স: জীববিজ্ঞানের যে শাখায় জীবের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বংশপরম্পরায় সঞ্চারণ পদ্ধতি ও প্রকরণ বা ভেদ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়, তাকে বংশগতিবিদ্যা বা জিনতত্ত্ব বা জেনেটিক্স (Genetics) বলে। * বিজ্ঞানী বেটসন (Bateson, 1905) সর্বপ্রথম 'Genetics' শব্দটি প্রবর্তন করেন। 

প্রশ্ন 2. মটরগাছের ওপর মেন্ডেলের কার্যপদ্ধতিটি ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর: মটরগাছের ওপর মোন্ডালর কার্যপদ্ধতি : 

1. নির্দিষ্ট কাঙ্ক্ষিত বৈশিষ্ট্য নির্বাচন : মেন্ডেল সংকরায়ণ পরীক্ষার জন্য মটরগাছের সাতজোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য নির্বাচন করেছিলেন। 

2. ইমাসকুলেশন (Emasculation) : স্বপরাগযোগ এড়ানোর জন্য উভলিঙ্গ মটরফুল থেকে তিনি কুঁড়ি অবস্থাতেই কাঁচি দিয়ে পুংস্তবক অপসারণ করেন। একে ইমাসকুলেশন বা পুরুষ বন্ধ্যাত্বকরণ বলা হয়। 

3.ব্যাগিং (Bagging) : পুংস্তবকবিহীন স্ত্রী মটরফুলকে একটি কাগজের থলির মধ্যে আবদ্ধ করেন যাতে অবাঞ্ছিত রেণুর সঙ্গে পরাগসংযোগ না ঘটে।

4. ডাস্টিং (Dusting) : ব্যাগের মধ্যে স্ত্রীফুল পরিণতি লাভের পর তিনি কাঙ্ক্ষিত বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের পুংফুলের পরাগরেণু বিশেষ সূক্ষ্ম তুলির সাহায্যে ওই স্ত্রীফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরণের দ্বারা পরাগযোগ ঘটান এবং পুনরায় স্ত্রীফুলগুলিকে থলিবদ্ধ করেন। 

5. ট্যাগিং (Tagging) : পরাগযোগের পর বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের বিবরণ, পরাগযোগের তারিখ প্রভৃতি উল্লিখিত একটি ট্যাগ উদ্ভিদের ডালে ঝুলিয়ে দেন।

6. বীজ সংগ্রহ ও রোপন (Collection & Sowing of seeds): উক্ত ট্যাগিং করা মটরগাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে মাটিতে রোপণ করেন। বীজগুলি থেকে প্রতি F, জনুর মটর গাছগুলির ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপ লিপিবদ্ধ করেন। 

7. হোমোজাইগাস বা বিশুদ্ধ বৈশিষ্ট্যযুক্ত উদ্ভিদ সৃষ্টি : প্রাপ্ত F, জনুর গাছগুলিকে কয়েকটি বংশ বা জনু ধরে স্বপরাগযোগ ঘটিয়ে মেন্ডেল প্রতিটি বৈশিষ্ট্যের বিশুদ্ধ উদ্ভিদ F2 জনু সৃষ্টি করেছিলেন।

প্রশ্ন 3. সংকরায়ণ পরীক্ষার জন্য মেন্ডেলের মটর গাছ নির্বাচনের কারণগুলি লেখো। ** [ME 14,12,10,08,04] 

উত্তর: মান্ডল কর্তৃক মটর গাছ নির্বাচনের কারণসমূহ :  

1. দ্রুত বংশবিস্তার : মটর গাছ একবর্ষজীবী এবং দ্রুত বংশবিস্তারে সক্ষম। 

2. সহজে চাষযোগ্য : মটর গাছ অল্প জায়গায় সহজে চাষ করা যায়। 

3. বহু প্রকার ভেদযুক্ত : মটর গাছে বহু বিপরীতধর্মী সুস্পষ্ট ও বিশুদ্ধ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়। ফলে, পরীক্ষানিরীক্ষার সুযোগ অনেক বেশি থাকে। 

4. বৃহৎ আকৃতির ফুল : মটর ফুলের বৃহৎ আকৃতির জন্য সহজেই ইতর পরাগযোগ ঘটানো যায়। 

5. উভলিঙ্গ ও স্বপরাগী : মটর ফুল উভলিঙ্গ হওয়ায় স্বপরাগযোগ ঘটানো যায় এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলিকে বিশুদ্ধ অবস্থায় বংশপরম্পরায় পাওয়া যায়। 

6.উচ্চ উৎপাদনশীলতা : মটর গাছ বহুসংখ্যক বীজ গঠন ও অপত্য উদ্ভিদ উৎপাদনে সক্ষম। 

7• সংকর উদ্ভিদ সৃষ্টি : মটর গাছে ইতর পরাগযোগের মাধ্যমে সহজে সংকর অপত্য উদ্ভিদ সৃষ্টি করা যায় এবং সংকর অপত্য উদ্ভিদগুলিও বংশবিস্তারে সক্ষম হয়। | 

জেনে রাখো : মেন্ডেল প্রাথমিকভাবে মটর গাছের 34টি ভ্যারাইটি নির্বাচন করেছিলেন, যাদের মধ্যে স্বনিষেকের মাধ্যমে 7টি বিশুদ্ধ ভ্যারাইটি পেয়েছিলেন।

প্রশ্ন 4. সংকরায়ণ পরীক্ষায় মেন্ডেলের সাফল্যের কারণগুলি লেখো। *** Mahesh Sri Ramakrishna Ashram Vivekananda Vidyalaya '16 

উত্তর: সংকরায়ণ পরীক্ষায় মোন্ডলের সাফল্যের কারণসমূহ : 

1• বৈশিষ্ট্যের বিশুদ্ধতা : মেন্ডেল পরীক্ষার জন্য মটর গাছ (Pisum sativum) নির্বাচন করেছিলেন। গাছগুলি বিশুদ্ধ বৈশিষ্ট্যযুক্ত ও স্বপ্রজননক্ষম হওয়ায় সহজেই তিনি সংকরায়ণ ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। 

2. দ্রুত উৎপাদনশীলতা : মটর গাছ একবর্ষজীবী হওয়ায় মেন্ডেল অল্প সময়ের মধ্যে কয়েক জনু ধরে বংশানুক্রমে পরীক্ষানিরীক্ষা করতে পেরেছিলেন। ও বৈশিষ্ট্যের বৈচিত্র্যতা : মটর গাছে বহু বিশুদ্ধ বৈশিষ্ট্যের সমাবেশ ঘটায় মেন্ডেল একাধিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করার সুযোগ পেয়েছিলেন। 

3. দক্ষতা : মেন্ডেল দক্ষ উদ্ভিদ প্রজননবিদ ছিলেন বলে অতি দক্ষতার সঙ্গে তিনি সংকরায়ণ পরীক্ষাগুলি করতে পেরেছিলেন। 

4. গাণিতিক বিশ্লেষণের নির্ভুলতা : মেন্ডেল একইসঙ্গে গণিতশাস্ত্রে পারদর্শী ছিলেন বলে সংকরায়ণের ফলে সৃষ্ট প্রচুর সংখ্যক অপত্যের তথ্যগুলি নির্ভুলভাবে গণনা করতে পেরেছিলেন। 

5. বহুজিন ও এপিস্ট্যাসিসের অনুপস্থিতি : মেন্ডেল নির্বাচিত বৈশিষ্ট্যগুলি বহুজিন দ্বারা নির্বাচিত ছিল না বা এপিস্ট্যাসিস দ্বারা প্রভাবিত ছিল না। ফলে, মেন্ডেল সব পরীক্ষার ক্ষেত্রেই একইরকম ফলাফল তৈরি হতে দেখেছিলেন। 

প্রশ্ন 5. মেন্ডেল নির্বাচিত মটর গাছের সাতজোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য সারণি আকারে উল্লেখ করো। *** 

উত্তর । 1 চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রকটধর্মী [ME 14,12,02] প্রচ্ছন্নধর্মী বীজের আকার গোলাকার কুঞ্জিত 

চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রকটধর্মী প্রচ্ছন্নধর্মী বীজত্বকের রং হলুদ সবুজ সাদা 23 6 6 বেগুনি ফুলের রং ফলের আকৃতি পরিপুষ্ট খাঁজযুক্ত ফলের রং সবুজ হলুদ ফুলের অবস্থান কাক্ষিক অগ্ৰস্থ কাণ্ডের দৈর্ঘ্য লম্বা খর্ব।

প্রশ্ন 6. প্রকরণ বলতে কী বোঝো [ME 15, 13] এবং কারণ লেখো। প্রকরণের প্রকারভেদগুলি আলোচনা করো।

উত্তর: গ্রকরণ বা ভেদ (Variation) : একই প্রজাতিভুক্ত বিভিন্ন জীবসত্তা বা সদস্যের মধ্যে আকৃতি, গঠন, বর্ণ, স্বভাব প্রভৃতি বৈশিষ্ট্যের কোনো-না-কোনো পার্থক্য দেখা যায়। একে প্রকরণ বা ভেদ (Variation) বলে। উদাহরণ— মানুষের মুক্ত ও যুক্ত কানের লতি, রোলার জিভ ও স্বাভাবিক জিভ, সোজা চুল ও কোঁকড়ানো চুল । 

কারণ : জীবদেহের প্রকরণ বা ভেদের কারণগুলির মধ্যে অন্যতম হল—1. পরিব্যক্তি বা মিউটেশন (mutation), 2. কোশ বিভাজনের সময় ক্রসিংওভারের ফলে ক্রোমোজোমে অবস্থিত জিনের পুনর্বিন্যাস এবং 3. পরিবেশগত প্রভাব। এই সকল কারণে ক্রোমোজোমের গঠন ও সংখ্যার স্থায়ী পরিবর্তন ঘটে এবং তা বংশপরম্পরায় সঞ্ঝারিত হওয়ার মাধ্যমে একই প্রজাতিভুক্ত জীবসত্তা- গুলির মধ্যে পার্থক্য ঘটে, ফলে প্রকরণ বা ভেদ তৈরি হয়। 

প্রকরণের প্রকারভেদ : প্রকরণ প্রধানত দু-প্রকার। যথা— • দেহজ বা সোমাটিক প্রকরণ (Somatic variation) : পরিবেশগত প্রভাব, অভ্যাস বা সচেতন প্রচেষ্টার দ্বারা সংঘটিত যে প্রকরণ জীবের জীবনকালব্যাপী প্রকাশিত হলেও বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয় না, তাকে দেহজ বা দেহগঠনগত বা সোমাটিক প্রকরণ বলে। যেমন— (i) Hydrangea নামক উদ্ভিদ আম্লিক মাটিতে জন্মালে গাছে নীল ফুল ফোটে, আবার ক্ষারযুক্ত মাটিতে জন্মালে গাছে

গোলাপি রঙের ফুল ফোটে। (ii) দীর্ঘদিন উচ্চ তাপমাত্রাযুক্ত স্থানে থাকলে মানুষের ত্বকের রং কালো হয়ে যায়, আবার নিম্ন তাপমাত্রাযুক্ত স্থানে থাকলে গায়ের রং সাদা বা কম মেলানিন রঞ্জকযুক্ত হয়। 

2. প্রজননগত প্রকরণ (Germinal variation) : জীবের জননকোশে উৎপাদিত যে পরিবর্তন বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয় এবং বংশধরদের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে, তাকে প্রজননগত প্রকরণ বলে। যেমন— ফুলের পাপড়ির সংখ্যার পার্থক্য, হাইড্রার কর্ষিকার সংখ্যার পার্থক্য, মানুষের গায়ের রং, চোখের রং, চুলের রং, দেহের উচ্চতা প্রভৃতি। 

প্রশ্ন 7. একসংকর জনন কাকে বলে? মেন্ডেলের একসংকর জনন পরীক্ষাটি চেকার বোর্ডের সাহায্যে উল্লেখ করো।  

উত্তর: একসংকর জনন (Monohybrid cross) : একজোড়া বিপরীতধর্মী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন দুটি জীবের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটানো হলে, তাকে একসংকর জনন বা মনোহাইব্রিড ক্রস বলে। 

মোন্ডালর একসংকর জনন পরীক্ষা : মেন্ডেল নির্বাচিত মটর গাছের একজোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য : 1. বিশুদ্ধ লম্বা (TT) মটর গাছ ও 2. বিশুদ্ধ খর্ব বা বেঁটে (tt) মটর গাছ।  

পরীক্ষা পদ্ধতি ও পর্যবেক্ষণ : 1. প্রথমে একটি বিশুদ্ধ লম্বা মটর গাছ (দৈর্ঘ্য 183 সেমি) ও একটি বিশুদ্ধ খর্ব মটর গাছ (দৈর্ঘ্য 30 সেমি)-এর মধ্যে ইতর পরাগযোগ ঘটানো হল। এদের ‘জনিতৃ জনু’ বা ‘P জনু' রূপে উল্লেখ করা হয়। 2. নিষেকের ফলে উৎপন্ন বীজ অঙ্কুরিত হয়ে কেবলমাত্র লম্বা মটর গাছ উৎপন্ন হল। সংকরায়ণের মাধ্যমে উৎপন্ন এই গাছকে সংকর (Hybrid) গাছ এবং এই জনুকে ‘প্রথম অপত্য জনু’ বা 'F, জনু' রূপে উল্লেখ করা হয়। 3. মেন্ডেল এরপর F, জনুর গাছগুলির মধ্যে স্বপরাগযোগ ঘটালেন। 4. ‘দ্বিতীয় অপত্য জনু’ বা ‘F2 জনুতে' উৎপন্ন বীজগুলি অঙ্কুরিত হয়ে ও ভাগ লম্বা ও 1 ভাগ খর্ব মটর গাছ সৃষ্টি হল।

সিদ্ধান্ত : OF, জনুতে প্রাপ্ত উদ্ভিদগুলি সবই ছিল সংকর প্রকৃতির (Tt) এবং লম্বা অর্থাৎ, দুটি বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটি প্রকট বৈশিষ্ট্য (লম্বা) এবং অপরটি প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য (খর্ব)। ও F2 জনুতে প্রাপ্ত উদ্ভিদগুলির ও ভাগ লম্বা [1 ভাগ বিশুদ্ধ লম্বা (TT) এবং 2 ভাগ সংকর লম্বা (Tt)] এবং 1 ভাগ বিশুদ্ধ খর্ব (tt)। এক্ষেত্রে দুটি বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য গ্যামেট গঠনকালে পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ও অর্থাৎ, F, জনুতে উৎপন্ন মটর গাছগুলির ফিনোটাইপিক অনুপাত = 3 : 1 (লম্বা : খর্ব) এবং জিনোটাইপিক অনুপাত = 1 : 2 : 1 (বিশুদ্ধ লম্বা : সংকর লম্বা : বিশুদ্ধ খর্ব)। 

চেকার বোর্ডের সাহায্য ফলাফল বিশ্লেষণ : মটর গাছের লম্বা বৈশিষ্ট্য-এর জন্য দায়ী জিন (প্রকট) = T এবং খর্ব বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী জিন (প্রচ্ছন্ন) = t জনিতৃ জনু বা P জনু - বিশুদ্ধ লম্বা বিশুদ্ধ খর্ব tt TT ইতর পরাগযোগ জনিতৃ গ্যামেট → প্রথম অপত্য জনু বা F, জনু → জিনোটাইপ → ফিনোটাইপ → Tt (সংকর) লম্বা মটর গাছ। F, জনুর সংকরায়ণ - স্বপরাগযোগ T t Tt F, জনুর গ্যামেট → চেকার বোর্ড → বিশুদ্ধ লম্বা দ্বিতীয় অপত্য Tt সংকর লম্বা জনু বা F2 জনু সংকর লম্বা tt বিশুদ্ধ খর্ব ফলাফল বিশ্লেষণ : F2 জনুর ফিনোটাইপিক অনুপাত জিনোটাইপিক অনুপাত (লম্বা) 3: 1 (খ) 1 : 2 1 (TT) (Tt) (tt) Tt Tt T TT 

জেনে রাখো : ব্রিটিশ বিজ্ঞানী R. C. Punnett চেকার বোর্ড প্রবর্তন করেন বলে, একে 'পানেট বর্গ' বলা হয়।

প্রশ্ন 8. একটি প্রাণীর (গিনিপিগের) উদাহরণের সাহায্যে বংশগতি সংক্রান্ত মেন্ডেলের একসংকর জনন পরীক্ষা চেকার বোর্ডের সাহায্যে ব্যাখ্যা করো। অথবা, একসংকর জনন পরীক্ষাটি একটি প্রাণীর উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দাও । অথবা, গিনিপিগের একসংকর জনন পরীক্ষাটি বর্ণনা করো। * [ME '14,12] 

উত্তর: নির্বাচিত একজোড়া বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য : বিশুদ্ধ কালো গিনিপিগ (BB) ও বিশুদ্ধ সাদা গিনিপিগ (bb)। 

পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ : 1. একটি বিশুদ্ধ কালো (BB) পুরুষ গিনিপিগের সঙ্গে একটি বিশুদ্ধ সাদা (bb) স্ত্রী গিনিপিগের সংকরায়ণ ঘটানো হল ।

2. প্রথম অপত্য জনুতে (F,জনু) শুধুমাত্র কালো গিনিপিগ (সংকর - Bb) উৎপন্ন হয়। 

3. F, জনুতে সৃষ্ট দুটি গিনিপিগের মধ্যে মিলন ঘটানো হলে দেখা যাবে, F2 জনুতে 3 ভাগ কালো ও 1 ভাগ সাদা গিনিপিগ উৎপন্ন হয়। বিশুদ্ধ কালো গিনিপিগ বিশুদ্ধ সাদা গিনিপিগ BB Bb (b) 2 . Pজনু সংকর কালো গিনিপিগ • F, জনু (Bb) (X Bb B b b • F, জনুর Bb সংকরায়ণ BB বিশুদ্ধ কালো Bb সংকর কালো • F2 জনু b Bb সংকর কালো B bb বিশুদ্ধ সাদা B 

সুতরাং, ফিনোটাইপিক অনুপাত = 3 (কালো 75%) : 1 (সাদা 25%), | জিনোটাইপিক অনুপাত = 1 (BB, 25%) : 2 (Bb, 50% ) : 1 (bb. 25%)।

সিদ্ধান্ত : F2 জনুতে উৎপন্ন গিনিপিগের ফিনোটাইপিক অনুপাত— 3 1 সাদা গিনিপিগ জিনোটাইপিক অনুপাত— 1 কালো গিনিপিগ বিশুদ্ধ কালো সংকর কালো বিশুদ্ধ সাদা গিনিপিগ (BB) 2 গিনিপিগ (Bb) গিনিপিগ (bb) উপরিউক্ত ফিনোটাইপিক ও জিনোটাইপিক অনুপাত মেন্ডেলের একসংকর জনন পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলাফলকে সমর্থন করে। 

প্রশ্ন 9. মেন্ডেলের একসংকর জনন পরীক্ষার সাহায্যে প্রকট ও প্রচ্ছন্ন গুণ এবং ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপ ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর: প্রকট ও প্রচ্ছন্ন গুণ : একজোড়া বিশুদ্ধ বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যযুক্ত একই প্রজাতিভুক্ত দুটি জীবের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটালে প্রথম অপত্য জনুতে (F, জনু) উৎপন্ন হেটারোজাইগাস জীবে যে বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশ পায়, সেটি প্রকট গুণ (Dominant character) ও যে বৈশিষ্ট্যটি সুপ্ত থাকে, প্রকাশিত হয় না, তাকে প্রচ্ছন্ন গুণ (Recessive character) বলে। মেন্ডেল একসংকর জনন পরীক্ষায় বিশুদ্ধ লম্বা (TT) মটর গাছের সঙ্গে বিশুদ্ধ খর্ব (tt) মটর গাছের সংকরায়ণ ঘটান। প্রথম অপত্য জনুতে (F, জনু) উৎপন্ন সকল মটর গাছ লম্বা প্রকৃতির (সংকর, Tt) হয়। এই পর্যবেক্ষণ থেকে বোঝা যায়, সংকর লম্বা (Tt) মটর গাছে লম্বা বৈশিষ্ট্যটি হল প্রকট গুণ এবং খর্ব বৈশিষ্ট্যটি হল প্রচ্ছন্ন গুণ। 

 ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপ : জীবের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বাহ্যিক প্রকাশকে ফিনোটাইপ (Phenotype) এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী জিন সংযুক্তিকে জিনোটাইপ (Genotype) বলে। মেন্ডেলের একসংকর জনন পরীক্ষায় F, জনুতে প্রাপ্ত মটর গাছগুলি লম্বা প্রকৃতির হয় অর্থাৎ, লম্বা বৈশিষ্ট্যটি হল ফিনোটাইপ এবং লম্বা বৈশিষ্ট্যটির জন্য জিন সংযুক্তি অর্থাৎ, Tt হল জিনোটাইপ। বিশুদ্ধ লম্বা (প্রকট গুণ) x বিশুদ্ধ খর্ব (প্রচ্ছন্ন গুণ) | P জনু - মটর গাছ ইতর পরাগযোগ মটর গাছ TT tt গ্যামেট : F, জনু জিনোটাইপ : Tt (হেটারোজাইগাস বা সংকর) ফিনোটাইপ : লম্বা মটর গাছ (সংকর) প্রকট গুণ : লম্বা (T) প্রচ্ছন্ন গুণ : খর্ব (t)। 

প্রশ্ন 10. দ্বিসংকর জনন কাকে বলে? মেন্ডেলের দ্বিসংকর জনন পরীক্ষাটি চেকার বোর্ডের সাহায্যে ব্যাখ্যা করো। * 

উত্তর : দ্বিসংকর জনন (Dihybrid cross) : দুজোড়া বিপরীতধর্মী চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত, একই প্রজাতিভুক্ত দুটি জীবের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটানোকে দ্বিসংকর জনন বা ডাইহাইব্রিড ক্রস বলে। 

মেন্ডেল নির্বাচিত মটর গাছের বৈশিষ্ট্য : 

• প্রকট বৈশিষ্ট্য : হলুদ ও গোলাকার বীজ (YYRR) ও প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য : সবুজ ও কুঞ্চিত বীজ (yyrr) 

পরীক্ষা পদ্ধতি ও পর্যবেক্ষণ : 

1• মেন্ডেল বিশুদ্ধ হলুদ ও গোলাকার বীজযুক্ত মটর গাছের সঙ্গে বিশুদ্ধ সবুজ ও কুঞ্চিত বীজযুক্ত মটর গাছের সংকরায়ণ ঘটান। 

2. প্রথম অপত্য জনুতে (F) উৎপন্ন সমস্ত মটর গাছেই হলুদ ও গোলাকার বীজ (সংকর) সৃষ্টি হয়। বৈশিষ্ট্য প্রকট প্রচ্ছন্ন বীজের আকার 

3. মেন্ডেল দ্বিতীয় পর্যায়ে F, জনুতে উৎপন্ন গাছের মধ্যে স্বপরাগযোগ ঘটান। রং গোলাকার ও হলুদ কুঞ্চিত সবুজ ও 

4. দ্বিতীয় অপত্য জনু (F2 জনু)-তে উৎপন্ন মটর গাছের 9 ভাগ হলুদ ও গোলাকার বীজ; 3 ভাগ হলুদ ও কুঞ্চিত বীজ; 3 ভাগ সবুজ ও গোলাকার বীজ ও 1 ভাগ সবুজ ও কুঞ্চিত বীজ সৃষ্টি হয়।

অনুরূপ প্রশ্ন : (1) YYRR (বিশুদ্ধ প্রকট বৈশিষ্ট্যের গোল ও হলুদ বীজযুক্ত মটর গাছ) ও yyir (বিশুদ্ধ প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যের সবুজ ও কুঞ্চিত বীজযুক্ত) মটর গাছের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটানো হলে প্রথম অপত্য জনুতে প্রাপ্ত উদ্ভিদগুলির জিনোটাইপ কী হবে? দ্বিসংকর জননের F2 জনুতে প্রাপ্ত ফিনোটাইপ অনুপাতটি লেখো। [ME '07] 

(2) মটর গাছের বীজের বর্ণ ও বীজের আকার—এই বৈশিষ্ট্য দুটি নিয়ে মেন্ডেল দ্বিসংকর জননের পরীক্ষা করেছিলেন। এই পরীক্ষার F2 জনুতে যে-কটি হলুদ ও গোলাকার বীজযুক্ত মটর গাছ উৎপন্ন হয়, তাদের জিনোটাইপগুলি লেখো। [ME '18] 

প্রশ্ন 11. উদাহরণসহ একটি প্রাণীর দ্বিসংকর জনন পরীক্ষাটি চেকার বোর্ডের সাহায্যে ব্যাখ্যা করো। * [ME 19,16] 

উত্তর: একটি প্রাণীর (গিনিপিগ) উদাহরণের সাহায্য দ্বিসংকর জনানর পরীক্ষা : গিনিপিগের নির্বাচিত বৈশিষ্ট্য : প্রকট বৈশিষ্ট্য : কালো ও অমসৃণ লোম (BBRR) 

•  প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য : সাদা ও মসৃণ লোম (bbrr) পরীক্ষা 

পদ্ধতি ও পর্যবেক্ষণ : 1. একটি খাঁটি কালো ও অমসৃণ লোমযুক্ত গিনিপিগের সঙ্গে একটি খাঁটি সাদা ও মসৃণ লোমযুক্ত গিনিপিগের সংকরায়ণ ঘটানো হল। 

2.প্রথম অপত্য জনুতে (F, জনু) উৎপন্ন সমস্ত গিনিপিগ কালো ও অমসৃণ লোমযুক্ত হয়। এরা সংকর প্রকৃতির (BbRr)। 

3• এরপর দুটি সংকর কালো ও অমসৃণ লোমযুক্ত গিনিপিগের মিলন ঘটানো হয়। 

4. F2 জনুতে উৎপন্ন গিনিপিগগুলির মধ্যে ও ভাগ কালো ও অমসৃণ লোমযুক্ত, ও ভাগ কালো ও মসৃণ লোমযুক্ত, ও ভাগ সাদা ও অমসৃণ লোমযুক্ত এবং 1 ভাগ সাদা ও মসৃণ লোমযুক্ত হয়।

প্রশ্ন 12. মেন্ডেল একসংকর এবং দ্বিসংকর জনন পরীক্ষা থেকে কোন্ কোন্ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন? সিদ্ধান্তগুলির সংক্ষিপ্ত ধারণা দাও। *** [ME'02] 1 At 

উত্তর: মোন্ডল একসংকর জনন পরীক্ষা থেকে দুটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। যথা— প্রকটতার নীতি ও পৃথকীভবন সূত্র। 

1. প্রকটতার নীতি (Principle of Dominance) : একই প্রজাতিভুক্ত বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যযুক্ত দুটি জীবের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটালে প্রথম অপত্য জনুতে উৎপন্ন সংকর জীবে যে বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়, তাকে প্রকট বৈশিষ্ট্য ও যে বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশিত হয় না, তাকে প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য বলে। একে প্রকটতার নীতি বলে। প্রকট বৈশিষ্ট্য হোমোজাইগাস (TT) বা হেটারোজাইগাস (Tt) উভয় অবস্থাতেই প্রকাশিত হয় ।

2. পৃথকীভবন সূত্র (Law of Segregation) : সংকরায়ণের ফলে জীবের কোনো একটি নির্দিষ্ট চরিত্রের অন্তর্গত বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য বা ফ্যাক্টরগুলি জনিতৃ জনু থেকে অপত্য জনুতে সঞ্চারিত হওয়ার সময় একত্রিত হলেও কখনও মিশ্রিত হয় না। বরং, গ্যামেট গঠনকালে বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য বা ফ্যাক্টরগুলি (প্রতিটি বৈশিষ্ট্য নির্ধারক অ্যালিল) পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে যায়। এটি মেন্ডেলের ‘প্রথম সূত্র’ রূপে পরিচিত। এই সূত্রটি ‘পৃথকীভবনের সূত্র' বা ‘পৃথকীকরণের সূত্র’ নামেও পরিচিত। 

মেন্ডেল দ্বিসংকর জননের বংশগতি সংক্রান্ত সূত্রটি হল : 

স্বাধীনবিন্যাস সূত্র (Law of Independent Assortment): দুই বা ততোধিক বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যযুক্ত একই প্রজাতিভুক্ত দুটি জীবের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটালে উৎপন্ন অপত্য জীবে বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যের ফ্যাক্টরগুলি একত্রিত হলেও গ্যামেট গঠনকালে এরা পরস্পর থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং স্বাধীনভাবে সম্ভাব্য সকল প্রকার সমন্বয়ে গ্যামেটে সঞ্চারিত হয়। এটি মেন্ডেলের দ্বিসংকর জনন পরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত এবং ‘দ্বিতীয় সূত্র’ রূপে পরিচিত। 

অনুরূপ প্রশ্ন : (1) মেডেলের পৃথকীভবন সূত্রটি লেখো। [ME 17,15,02] (2) মেন্ডেলের স্বাধীন সঞ্চারণ সূত্রটি বিবৃত করো। 

প্রশ্ন 13. মেন্ডেলের বংশগতি সংক্রান্ত সূত্রের ব্যতিক্রমটি কী? একটি উদাহরণের সাহায্যে ঘটনাটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তর : মোন্ডলের বংশগতি সূত্রের ব্যতিক্রম : মেন্ডেলের একসংকর জনন পরীক্ষা থেকে পৃথকীভবনের সূত্রানুযায়ী, অপত্য জনুতে বিপরীত বৈশিষ্ট্যগুলি মিশ্রিত হয় না, বরং প্রকট ও প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী জীবের ফিনোটাইপ প্রকাশ পায়। কিন্তু পরীক্ষায় এই সূত্রের ব্যতিক্রম হিসেবে দেখা গেছে যে, উৎপন্ন অপত্য জীবে জনিতৃ জীবের প্রকট ও প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যদ্বয়ের কোনোটিই সম্পূর্ণভাবে প্রকটতা বা প্রচ্ছন্নতা প্রদর্শন করে না। এই ঘটনাকে 'অসম্পূর্ণ প্রকটতা' বলে। 

• অসম্পূর্ণ প্রকটতা (Incomplete dominance) : সংকর জীবে যে ধর্মের প্রভাবে প্রকট জিনটি প্রচ্ছন্ন জিনের সাপেক্ষে সম্পূর্ণরূপে প্রকট না হয়ে প্রকট ও প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যের মধ্যবর্তী একটি মিশ্র ফিনোটাইপের প্রকাশ ঘটায়, তাকে অসম্পূর্ণ প্রকটতা বলে। উদাহরণ— সন্ধ্যামালতী, স্ন্যাপড্রাগন। 

উদাহরণসহ অসম্পূর্ণ প্রকটতার ব্যাখ্যা : 

আবিষ্কারক : বিজ্ঞানী কোরেন্স (Correns) | উদাহরণ : সন্ধ্যামালতী ফুল (Four-O'Clock বা Mirabilis jalapa) ও নির্বাচিত বৈশিষ্ট্য : @ 

প্রকট বৈশিষ্ট্য : লাল ফুল (RR) 

প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য : সাদা ফুল (rr) 

পরীক্ষা পদ্ধতি ও পর্যবেক্ষণ : 1.একটি বিশুদ্ধ লাল ফুল যুক্ত সন্ধ্যমালতী গাছের সঙ্গে একটি বিশুদ্ধ সাদা ফুল যুক্ত সন্ধ্যামালতী গাছের ইতর পরাগযোগ ঘটানো হল । 

2. প্রথম অপত্য জনুতে (F, জনু) উৎপন্ন সমস্ত গাছেই গোলাপি (Rr) রঙের ফুল ফোটে। 

3. এরপর F, জনুর দুটি গাছের মধ্যে স্বপরাগযোগ ঘটানো হয়।

4. F2 জনুতে উৎপন্ন গাছের মধ্যে 1 ভাগ গাছে লাল ফুল, 2 ভাগ গাছে গোলাপি ফুল এবং 1 ভাগ গাছে সাদা ফুল ফুটতে দেখা যায়।

চেকার বোর্ডের সাহায্যে ফলাফল বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা : p জনুঃ ফিনোটাইপ : বিশুদ্ধ লাল ফুল 3 বিশুদ্ধ সাদা ফুল জিনোটাইপ : RR ইতর পরাগযোগ R Rr ফিনোটাইপ F, জনুর স্বপরাগযোগ : IF, জনুর গ্যামেট Rr গোলাপি ফুল Rr R R R চেকার বোর্ড : RR R Rr

চেকার বোর্ড : RR Rr F2 জনু জিনোটাইপ ও ফিনোটাইপ লাল ফুল Rr গোলাপি ফুল গোলাপি ফুল rr সাদা ফুল R 

⁷সিদ্ধান্ত ও মন্তব্য : OF2 জনুতে প্রাপ্ত উদ্ভিদের ফিনোটাইপিক অনুপাত হয় – 1 লাল ফুল 2 1 গোলাপি ফুল সাদা ফুল @ F2 জনুতে প্রাপ্ত উদ্ভিদের জিনোটাইপিক অনুপাত হয়— 1 : 2 : 1 (RR : Rr: rr)। অর্থাৎ, অসম্পূর্ণ প্রকটতার ক্ষেত্রে ফিনোটাইপিক ও জিনোটাইপিক অনুপাত সর্বদা সমান হয়।

3. এই ফলাফল মেন্ডেলের ফলাফল থেকে বিচ্যুত হয়। এজন্য অসম্পূর্ণ প্রকটতাকে মেন্ডেলের সূত্রের বিচ্যুতি রূপে গণ্য করা হয় ৷ 

অনুরূপ প্রশ্ন : অসম্পূর্ণ প্রকটতার ক্ষেত্রে এক সংকরায়ণ পরীক্ষায় F2 জনুতে ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপের অনুপাত কী হবে? [ME'17] 

জেনে রাখো : স্ন্যাপড্রাগন উদ্ভিদ (Antirrhinum majus)-এর অসম্পূর্ণ প্রকটতা এবং মানুষের ABO রক্ত শ্রেণির সহ-প্রকটতাও মেন্ডেল সূত্রের বিচ্যুতি রূপে গণ্য হয়। এছাড়াও অ্যান্ডালুসিয়ান মুরগির ( Andalusian fowl) ক্ষেত্রে অসম্পূর্ণ প্রকটতা দেখা যায়। এদের ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ কালো পালকযুক্ত (BB) মোরগের সঙ্গে বিশুদ্ধ সাদা পালকযুক্ত (bb) মুরগির সংকরায়ণ ঘটালে F, জনুতে নীল পালকযুক্ত (Bb) অপত্য পাওয়া যায়।

প্রশ্ন 14. লিঙ্গ নির্ধারণ কাকে বলে? মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণ পদ্ধতি সংক্ষেপে আলোচনা করো। 

উত্তর: লিঙ্গ নির্ধারণ (Sex Determination) : যে পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে একই প্রজাতির পুরুষ ও স্ত্রী জীবদের পৃথক করা হয়, তাকে লিঙ্গ নির্ধারণ বলে। 

মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণ পদ্ধতি (Sex determination in Human) : 1. মানুষের কোশে উপস্থিত সেক্স-ক্রোমোজোমে অবস্থিত জিন দ্বারা মানুষের লিঙ্গ নিয়ন্ত্রিত ও নির্ধারিত হয়। মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণ পদ্ধতিকে XX-XY পদ্ধতি বলা হয়। 

2. মানুষের দেহকোশে ক্রোমোজোম সংখ্যা 2n = 46টি, যেখানে দেহ ক্রোমোজোম সংখ্যা বা অটোজোম সংখ্যা 22 জোড়া বা 44টি এবং জনন ক্রোমোজোম সংখ্যা বা সেক্স ক্রোমোজোম সংখ্যা 1 জোড়া বা 2টি। 

3. স্ত্রী ও পুরুষ বিশেষে দু-ধরনের সেক্স ক্রোমোজোম দেখা যায়— (a) স্ত্রীদেহে দুটি X-ক্রোমোজোম অর্থাৎ, XX এবং (b) পুরুষদেহে একটি X এবং একটি Y-ক্রোমোজোম অর্থাৎ, XY নিয়ে সেক্স ক্রোমোজোম গঠিত হয়।

4• মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণ পদ্ধতিটি দুটি পর্যায়ে সংঘটিত হয়— • প্রাথমিক লিঙ্গ নির্ধারণ ও গৌণ লিঙ্গ নির্ধারণ। 

• প্রাথমিক লিঙ্গ নির্ধারণ : (a) পুরুষের ক্ষেত্রে শুক্রাণু উৎপাদনের সময় শুক্রাণু মাতৃকোশ থেকে মিয়োসিস প্রক্রিয়ায় দু-প্রকার শুক্রাণু বা পুংগ্যামেট তৈরি হয়, যার একটি X-ক্রোমোজোম সমন্বিত 22A+ X এবং অপরটি Y-ক্রোমোজোম সমন্বিত 22A+Y। এইরকম দুপ্রকার ভিন্ন সেক্স-ক্রোমোজোম সমন্বিত গ্যামেট উৎপাদনের জন্য পুরুষকে হেটারোগ্যামেটিক বলা হয়। 

(b) আবার, মহিলাদের ক্ষেত্রে ডিম্বাণু মাতৃকোশ থেকে মিয়োসিসের মাধ্যমে কেবল এক প্রকারই ডিম্বাণু 22A+X তৈরি হয়। কারণ—মহিলাদের দেহে কেবল এক প্রকার সেক্স-ক্রোমোজোম বা শুধু X-ক্রোমোজোমই থাকে। তাই মহিলাদের হোমোগ্যামেটিক বলা হয়। 

(c) 22A + X সমন্বিত শুক্রাণু, 22A + X সমন্বিত ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করলে উৎপন্ন জাইগোটের ক্রোমোজোম সংখ্যা হয় 44A + XX অর্থাৎ, ভ্রূণটি কন্যাসন্তান হয়। আবার, 22A+Y সমন্বিত শুক্রাণু, 22A+X সমন্বিত ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করলে ভ্রূণদেহটি 44A + XY ক্রোমোজোম সংখ্যা যুক্ত হয় অর্থাৎ, ভ্রূণটি পুত্রসন্তান হয় ৷ 

মন্তব্য : এর থেকে বোঝা যায়, উৎপন্ন অপত্য সন্তান পুত্র না কন্যা হবে তা সম্পূর্ণভাবেই নির্ভর করে বাবার পুংগ্যামেটের ওপর, এক্ষেত্রে মায়ের (স্ত্রীদেহের) কোনো ভূমিকা থাকে না । 

2. গৌণ লিঙ্গ নির্ধারণ : সেক্স ক্রোমোজোম দ্বারা প্রাথমিক লিঙ্গ নির্ধারণ হওয়ার পরে বিভিন্ন যৌন হরমোন যেমন— পুরুষের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন হরমোনের প্রভাবে পুরুষ এবং মহিলাদের গৌণ যৌন লক্ষণগুলি প্রকাশ পায়।

জেনে রাখো : মানুষ ও ইঁদুরের ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় স্ত্রী ও পুরুষ উভয়ের দেহে একই গঠনযুক্ত গোনাড সৃষ্টি হয়। মানুষের ক্ষেত্রে, Y ক্রোমোজোমে উপস্থিত SRY জিনের (Sex Determining Region of Y Chromosome) প্রভাবে প্রাথমিক গোনাড পুরুষদেহে শুক্রাশয়ে রূপান্তরিত হয়। কিন্তু, মহিলাদের ক্ষেত্রে SRY জিনের অনুপস্থিতির জন্য প্রাথমিক গোনাড থেকে ডিম্বাশয় গঠিত হয়। SRY জিনকেই TDF (Testis Determining Factor) বা শুক্রাশয় নির্ধারক বস্তু বলা হয়। 

অনুরূপ প্রশ্ন : (1) অনেক পরিবারে কন্যাসন্তান জন্মের জন্য মাতাকে দায়ী করা হয়। এই ধারণাটি যে যথার্থ নয় তা একটি ক্রসের সাহায্যে দেখাও। [ME'17] (2) পুত্রসন্তান সৃষ্টি হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করো।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর:

প্রশ্ন 1.টেস্ট ক্রস কাকে বলে? এর গুরুত্ব লেখো।  

উত্তর: টেস্ট ক্রস (Test Cross): যে-কোনো জীবের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের জিনোটাইপ নির্ণয়ের জন্য ওই জীবের সঙ্গে সেই বৈশিষ্ট্যর বিশুদ্ধ হোমোজাইগাস প্রচ্ছন্ন জিনোটাইপযুক্ত জীবের সংকরায়ণ ঘটানোর পদ্ধতিকে টেস্ট ক্রস (Test cross) বলে।

টেস্ট ক্লাসর গুরুত্ব : 1.টেস্ট ব্রুসের মাধ্যমে অজানা জিনোটাইপযুক্ত জীবের সঠিক জিনোটাইপ নির্ণয় করা যায়। 2. টেস্ট ক্রসের মাধ্যমে জিনোটাইপ নির্ধারণের দ্বারা অপত্য জীবের চারিত্রিক বিশুদ্ধতা অর্থাৎ জীবটি সংকর না বিশুদ্ধ তা বোঝা যায়। যেমন—

 (a) F, জনুর জীবের সঙ্গে প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জীবের সংকরায়ণ ঘটালে যদি ফিনোটাইপিক অনুপাত 1:1 হয়, তাহলে F,জনুর জীবটির জিনোটাইপ অবশ্যই হেটারোজাইগাস (সংকর) প্রকৃতির। 

(b) যদি টেস্ট ব্রুসের ফলে কেবলমাত্র এক প্রকার ফিনোটাইপ যুক্ত জীব সৃষ্টি হয়, তাহলে F,জনুর অপত্য জীবের জিনোটাইপ হবে হোমোজাইগাস (বিশুদ্ধ) প্রকৃতির। 

অনুরূপ প্রশ্ন : টেস্ট ক্রসের সাহায্যে কীভাবে জিনোটাইপ নির্ণয় করা যায় ?

প্রশ্ন 2. ব্যাক ক্রস কাকে বলে? এর গুরুত্ব লেখো। * Midnapore Collegiate School '16 

উত্তর : ব্যাক ক্রস (Back Cross) : অপত্য জনুর জীবের সঙ্গে তার পূর্ববর্তী জনিতৃ জনুর যে-কোনো জীবের সংকরায়ণ ঘটানোর পদ্ধতিকে ব্যাক ক্রস (Back Cross) বলে। যেমন— Pজনু : লম্বা মটর গাছ খর্ব মটর গাছ TT সংকরায়ণ tt গ্যামেট : F, জনু : Tt সংকর লম্বা মটর গাছ ব্যাক ক্রস : F, জনু X Pজনু (i) Tt × TT এবং (ii) Tt × tt 

ব্যাক ক্রসের গুরুত্ব : 1. জনিতৃ জনুর অন্তর্গত জীবের কাঙ্ক্ষিত কোনো বৈশিষ্ট্যকে অপত্য জনুর সংকর জীবে সঞ্চারণের জন্য ব্যাক ক্রস করা হয়। 

2. ব্যাক ক্রসের মাধ্যমে বিশুদ্ধ জীব সৃষ্টি করা সম্ভব হয় ।

প্রশ্ন 3. TT ও tt মটর গাছের একসংকর জনন পরীক্ষায় F, জনুতে সব মটর গাছ দীর্ঘ হওয়া এবং F2 জনুতে লম্বা ও বেঁটে মটর গাছ 3 : 1 অনুপাতে উৎপন্ন হওয়ার ঘটনাকে মেডেল কীভাবে ব্যাখ্যা করেন তা সংক্ষেপে আলোচনা করো। 

1. মেন্ডেলের একসংকর জননের ব্রুস অনুযায়ী হেটারোজাইগাস (সংকর) জীবে দুটি বিপরীতধর্মী জিন একত্রে অবস্থান করলেও প্রকট জিনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায় এবং অন্য প্রচ্ছন্ন জিনটির বৈশিষ্ট্য সুপ্তাবস্থায় থাকে। হোমোজাইগাস জীবে দুটি এক বৈশিষ্ট্যের জিন থাকায় বিশুদ্ধ বৈশিষ্ট্যর প্রকাশ ঘটে। 

2. এক সংকর জননের F, জনুতে উৎপন্ন সকল মটর গাছই হেটারোজাইগাস (Tt) প্রকৃতির হবে, যেখানে T জিনটি লম্বা প্রকট বৈশিষ্ট্যকে নির্দেশ করে যা প্রচ্ছন্ন । জিনটির বৈশিষ্ট্যকে প্রকাশ পেতে দেয় না। ফলে সমস্ত উদ্ভিদই লম্বা হয়। 

3. আবার, দুটি সংকর লম্বা (Tt) মটর গাছের মধ্যে সংকরায়ণের ফলে F2 জনুতে লম্বা ও বেঁটে মটর গাছ 3:1 অনুপাতে উৎপন্ন হয়, যা ফিনোটাইপিক অনুপাত বোঝায়। এদের জিনোটাইপ হল TT, Tt ও tt। T জিনটি প্রকট বৈশিষ্ট্য ও । জিনটি প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য হওয়ায় Tt, Tt জিনোটাইপযুক্ত মটর গাছদুটি লম্বা এবং tt জিনোটাইপযুক্ত মটর গাছটি বেঁটে বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে।

প্রশ্ন 4. একটি বিশুদ্ধ কালো (প্রকট বৈশিষ্ট্য) গিনিপিগের সঙ্গে একটি বিশুদ্ধ সাদা (প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য) গিনিপিগের জনন ঘটালে অপত্য জনুর (F2) ফল থেকে পৃথকীভবন সূত্রটি বুঝিয়ে দাও। *** [ME '14] 

উত্তর: 1.একটি বিশুদ্ধ কালো (প্রকট বৈশিষ্ট্য) গিনিপিগের সঙ্গে একটি বিশুদ্ধ সাদা (প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য) গিনিপিগের সংকরায়ণ ঘটানো হল। 

2. প্রথম অপত্য জনু (F, জনু)-তে উৎপন্ন সমস্ত গিনিপিগ কালো লোমযুক্ত (সংকর) হয়। 

3. F, জনুতে উৎপন্ন দুটি সংকর কালো গিনিপিগের সংকরায়ণ ঘটানো হল। 

4. দ্বিতীয় অপত্য জনুতে (F2 জনু) উৎপন্ন গিনিপিগের মধ্যে 3 ভাগ হয় কালো লোমযুক্ত এবং 1 ভাগ হয় সাদা লোমযুক্ত।

সিদ্ধান্ত : উপরিউক্ত ফলাফল থেকে বোঝা যায় যে, কালো ও সাদা বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী দুটি বিপরীতধর্মী জিন বা অ্যালিল F জনুতে সংকর কালো (হেটারোজাইগাস) গিনিপিগে একত্রে অবস্থান করলেও গ্যামেট গঠনকালে তারা পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে যায় এবং F2 জনুতে নিজ নিজ বৈশিষ্ট্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। একারণেই Fa জনুতে কালো লোম ও সাদা লোমযুক্ত গিনিপিগ সৃষ্টি হয়। 

মন্তব্য : হেটারোজাইগাস জীবে দুটি বিপরীতধর্মী জিন একত্রে অবস্থান করলেও গ্যামেট গঠনকালে তারা পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে যায় ও পৃথক গ্যামেটে সঞ্চারিত হয়। পৃথকীভবন সূত্রের এই মূল বক্তব্যের যথার্থতা গিনিপিগের সংকরায়ণ দ্বারা সম্পূর্ণরূপে প্রমাণিত হয়। 

প্রশ্ন 5. একটি সংকর কালো লোমবিশিষ্ট গিনিপিগের সঙ্গে সাদা লোমবিশিষ্ট গিনিপিগের সংকরায়ণ ঘটালে প্রথম অপত্য জনুর (F, জনু) গিনিপিগগুলির ফিনোটাইপ কী হবে ও কেন— - যুক্তিসহ বোঝাও। * [ME '17,08] 

উত্তর: সংকর কালো গিনিপিগের জিনোটাইপ হল Bb এবং সাদা লোমবিশিষ্ট গিনিপিগের জিনোটাইপ হল bb। এইরূপ বৈশিষ্ট্যযুক্ত দুটি গিনিপিগের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটালে প্রথম অপত্য জনুতে (F, জনু) 50% গিনিপিগ সংকর কালো (Bb) লোমযুক্ত হবে এবং 50% গিনিপিগ সাদা লোমযুক্ত (bb) হবে। পরীক্ষাটি চেকার বোর্ডের সাহায্যে দেখানো হল –

Pজনু : সংকর কালো গিনিপিগ Bb B b নিষেক বিশুদ্ধ সাদা গিনিপিগ bb P জনুর গ্যামেট : b চেকার বোর্ডের সাহায্যে ফলাফল বিশ্লেষণ : চেকার বোর্ড : B F, জনু : জিনোটাইপ ও ফিনোটাইপ Bb সংকর কালো Bb সংকর কালো 1 bb সাদা bb F, জনুর ফিনোটাইপিক অনুপাত— 1 সাদা b b কালো 50% b সাদা 50%।জিনোটাইপিক অনুপাত – 1 Bb bb (সংকর কালো) (সাদা) 50% 50% 

ব্যাখ্যা : 1. উপরিউক্ত সংকরায়ণে প্রকট জিন হল কালো (B) এবং প্রচ্ছন্ন জিন হল সাদা (b)। 2.সংকর কালো লোমযুক্ত গিনিপিগে (Bb) দুটি বিপরীতধর্মী জিন B ও b একত্রে অবস্থান করে এবং প্রকট B জিনের বৈশিষ্ট্য (কালো) প্রকাশ পায়। 3.সংকর কালো ও সাদা (প্রচ্ছন্ন) গিনিপিগের সংকরায়ণে F, জনুতে 50% সংকর কালো লোমযুক্ত গিনিপিগ উৎপন্ন হওয়ার কারণ হল— মেন্ডেলের ‘প্রকটতার নীতি' অনুযায়ী হেটারোজাইগাস বা সংকর অবস্থায় প্রকট বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশিত হয় এবং প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যটি সুপ্ত থাকে। 4.অন্যদিকে, 50% সাদা গিনিপিগ সৃষ্টি হওয়ার কারণ হল—হোমোজাইগাস বা বিশুদ্ধ অবস্থায় প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয়। 

প্রশ্ন 6. Tt ও tt জিনোটাইপযুক্ত মটর গাছের সংকরায়ণ ঘটালে প্রথম অপত্য জনুতে শতকরা কত ভাগ করে বিভিন্ন প্রলক্ষণযুক্ত উদ্ভিদ পাওয়া যাবে তা যুক্তিসহ ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর : Tt জিনোটাইপযুক্ত মটর গাছ হল সংকর লম্বা মটর গাছ এবং খর্ব মটর গাছের জিনোটাইপ হল tt। Tt ও tt জিনোটাইপযুক্ত মটর গাছের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটালে প্রথম অপত্য জনুতে 50% সংকর লম্বা ও 50% খর্ব মটর গাছ উৎপন্ন হবে। পরীক্ষাটি নীচে চেকার বোর্ডের সাহায্যে দেখানো হল-

Pজনু : সংকর লম্বা বিশুদ্ধ খর্ব Tt সংকরায়ণ P জনুর গ্যামেট T F, জনু Tt সংকর লম্বা 50% tt বিশুদ্ধ খর্ব 50% চেকার বোর্ডের সাহায্যে ফলাফল বিশ্লেষণ : চেকার বোর্ড : T Fজনু : Tt সংকর লম্বা tt বিশুদ্ধ খর্ব জিনোটাইপ ও ফিনোটাইপ Tt সংকর লম্বা tt বিশুদ্ধ খর্ব জিনোটাইপিক অনুপাত – 1 Tt (50%) সংকর লম্বা t 1 tt (50%) বিশুদ্ধ খর্ব t t 

ব্যাখ্যা : 1. উপরিউক্ত সংকরায়ণে F, জনুতে উৎপন্ন 50% সংকর লম্বা (Tt) উদ্ভিদে প্রকট লম্বা (T) বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশিত হয়েছে এবং প্রচ্ছন্ন খর্ব (t) বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশিত হয়নি। কারণ— হেটারোজাইগাস অবস্থায় (সংকর) জীবের দেহে কেবলমাত্র প্রকট বৈশিষ্ট্যই প্রকাশিত হয়। প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যটি প্রকট বৈশিষ্ট্যের সাপেক্ষে সুপ্ত বা অপ্রকাশিত থাকে। এটি মেন্ডেলের ‘প্রকটতার নীতি’-এর যথার্থতা প্রমাণ করে।  

2. অন্যদিকে, বিশুদ্ধ খর্ব মটর গাছটিতে প্রচ্ছন্ন জিন হোমোজাইগাস (tt) অবস্থায় আছে। ফলে, প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশিত হয়েছে। 

7 মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণে Y ক্রোমোজোমের ভূমিকা  ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর: মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণে Y - ক্রোমোজোমের ভূমিকা : 

1• স্ত্রীদেহ হোমোগ্যামেটিক হওয়ায় কেবলমাত্র X-ক্রোমোজোম- যুক্ত ডিম্বাণু এবং পুরুষদেহ হেটারোগ্যামেটিক হওয়ায় X ও Y- ক্রোমোজোমযুক্ত দু-ধরনের পুংগ্যামেট উৎপন্ন করে । 

2. ডিম্বাণুর সঙ্গে X-ক্রোমোজোমযুক্ত পুংগ্যামেটের মিলন হলে কন্যাসন্তান সৃষ্টি হয় এবং ডিম্বাণুর সঙ্গে Y-ক্রোমোজোমযুক্ত পুংগ্যামেটের মিলন ঘটলে পুত্রসন্তান সৃষ্টি হয়।

3. বিজ্ঞানী Thompson এবং Thompson (1986) প্রথম প্রমাণ করেন যে, গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের ষষ্ঠ সপ্তাহে উভলিঙ্গ যোগ্যতা সম্পন্ন জননগ্রন্থি গঠিত হয়। ভ্রূণের কোশে Y-ক্রোমোজোম উপস্থিত থাকলে জনন গ্রন্থির মেডালা অংশের কোশ থেকে শুক্রাশয় গঠিত হয় এবং ভ্রূণের দেহে পুত্রসন্তানের লক্ষণ ফুটে ওঠে।

টীকা লেখো:

প্রশ্ন 1.পরিব্যক্তি বা মিউটেশন (Mutation) 

উত্তর: জ্বিনের উপাদানগত বা গঠনগত যে পরিবর্তন বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত হয়, যার ফলে জিনের একটি পরিবর্তিত কাজ সংঘটিত হয় জিনোটাইপ প্রকাশিত হয়, তাকে পরিব্যক্তি বা মিউটেশন বলে। এবং ভিন্ন মিউটেশনের ফলে স্বাভাবিক জিনটি পরিবর্তিত হয়ে 

মিউট্যান্ট জিনে পরিণত হয়। : প্রকৃতিতে স্বাভাবিকভাবে যে মিউটেশন ঘটে, তাকে স্বতঃস্ফূর্ত মিউটেশন (Spontaneous mutation) বলে। ও কৃত্রিমভাবে ভৌত বা রাসায়নিক পদার্থের প্রভাবে যে মিউটেশন ঘটে, তাকে আবিষ্ট মিউটেশন (Induced mutation) বলে। আবিষ্ট মিউটেশন সৃষ্টিকারী পদার্থগুলিকে মিউটাজেন (Mutagen) বলে। যেমন— X-রশ্মি, UV রশ্মি, নাইট্রাস অ্যাসিড ইত্যাদি। 

গুরুত্ব : 1. ভেদ বা প্রকরণ সৃষ্টিতে মিউটেশন অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কারণ—মিউটেশনের ফলে জিনের একাধিক অ্যালিল সৃষ্টি হয় বা বাদ চলে যায়। প্রতিটি অ্যালিল থেকে নির্দিষ্ট ফিনোটাইপের দ্বারা তার বৈশিষ্ট্যের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। 2. মিউটেশন দ্বারা সৃষ্ট প্রকরণ জীবের ক্ষেত্রে অনুকূল হলে, সেই জীবের পরিবর্তিত বৈশিষ্ট্য তাকে পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে অভিযোজিত করতে সাহায্য করে। মিউটেশন দ্বারা সৃষ্ট প্রকরণের মাধ্যমেই জীবের বিবর্তন ঘটে।

জেনে রাখো : ক্রোমোজোমের বহির্গঠনে অথবা অন্তর্গঠনে (জিন স্তরে বা নাইট্রোজেন বেসে) মিউটেশন ঘটতে পারে। এগুলি হল- (i) ক্রোমোজোমাল অ্যাবারেশন (Chromosomal aberration) : ক্রোমোজোমের গঠনে অথবা ক্রোমোজোমের সংখ্যার অস্বাভাবিকতার ফলে এই ধরনের মিউটেশন দেখা যায়। (ii) জিন মিউটেশন (Gene mutation) : এক্ষেত্রে জিনের নাইট্রোজেন ক্ষারগুলির নতুন সজ্জাবিন্যাসের ফলে মিউটেশন ঘটে। (iii) পয়েন্ট মিউটেশন (Point Mutation) : ক্রোমোজোমের কেবলমাত্র একজোড়া নাইট্রোজেন বেস পরিবর্তিত বা প্রতিস্থাপিত হওয়ার জন্য এরূপ মিউটেশন ঘটে।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর:

প্রশ্ন 1. বৈশিষ্ট্য বা প্রলক্ষণ কাকে বলে? 

উত্তর: বৈশিষ্ট্য বা প্রলক্ষণ (Characteristics or Traits) : কোনো জীবের জিনগত সংযুক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নির্ধারণযোগ্য ফিনোটাইপকে বৈশিষ্ট্য বা প্রলক্ষণ বলে। যেমন— মটর গাছের লম্বা ও খর্ব কাণ্ড, হলুদ বীজপত্র, হলুদ ও গোলাকার বীজ প্রভৃতি। একই বৈশিষ্ট্যের একাধিক রূপকে বলা হয় ট্রেট (Trait)। 

প্রশ্ন 2. প্রকট ও প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য বা গুণ বলতে কী বোঝো? * [ME'13, 11] 

উত্তর: দুটি বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যযুক্ত একই প্রজাতিভুক্ত দুটি জীবের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটালে প্রথম অপত্য জনুতে (F, জনু) উৎপন্ন সংকর জীবের দেহে যে বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশিত হয়, তাকে প্রকট বৈশিষ্ট্য এবং যে বৈশিষ্ট্যটি অপ্রকাশিত থাকে, তাকে প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য বলে। যেমন-বিশুদ্ধ লম্বা ও বিশুদ্ধ খর্ব মটর গাছের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটালে প্রথম অপত্য জনুতে উৎপন্ন সমস্ত মটর গাছগুলি লম্বা হয়। অর্থাৎ, লম্বা বৈশিষ্ট্যটি হল প্রকট এবং খর্ব বৈশিষ্ট্যটি হল প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য। 

প্রশ্ন 3. বিশুদ্ধ (Pure) বৈশিষ্ট্য কাকে বলে ? ** [ME 16,13] 

উত্তর: ক্রোমোজোমের নির্দিষ্ট লোকাসে অবস্থিত দুটি সমপ্রকৃতির অ্যালিল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত জীবের বৈশিষ্ট্যকে বিশুদ্ধ বৈশিষ্ট্য বলে। যেমন—মটর গাছের বিশুদ্ধ লম্বা কাণ্ড (TT), বিশুদ্ধ খর্ব কাণ্ড (tt) প্রভৃতি। 

প্রশ্ন 4. সংকর (Hybrid) বৈশিষ্ট্য কাকে বলে ? 

উত্তর: ক্রোমোজোমের নির্দিষ্ট লোকাসে অবস্থিত দুটি বিপরীতধর্মী অ্যালিলের উপস্থিতিতে কোনো জীবে যে বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশিত হয়, তাকে সংকর বৈশিষ্ট্য বলে। যেমন— মটর গাছের সংকর লম্বা কাণ্ড (Tt)। 

প্রশ্ন 5. খাঁটি ও সংকর জীব বলতে কী বোঝো? * [ME 13, 08] 

উত্তর: যখন কোনো জীব বংশপরম্পরায় তার বৈশিষ্ট্যগুলি হুবহু একই রকমভাবে বজায় রাখে, তাকে খাঁটি জীব বলে। যেমন— বিশুদ্ধ লম্বা (TT) মটর গাছ। 

দুটি বিশুদ্ধ বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যযুক্ত জীবের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটালে যে জীব সৃষ্টি হয়, তাকে সংকর জীব বা হাইব্রিড বলে। সংকর জীবে দুটি বিপরীতধর্মী জিনই উপস্থিত থাকে। যেমন— সংকর লম্বা মটর গাছ (Tt)। 

প্রশ্ন 6. লোকাস (Locus) কাকে বলে?  

উত্তর: ক্রোমোজোমের যে নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী নির্দিষ্ট জিন অবস্থান করে, সেই স্থানকে ওই জিনের লোকাস (Locus) বলে। যেমন- জিনা - জিন -লোকাস 

প্রশ্ন 7. সমসংস্থ ক্রোমোজোম অ্যালিল (Allele) কাকে বলে? উদাহরণ দাও। *** Sarisha High School 16, Mahesh Sri Ramakrishna Ashram Vivekananda Vidyalaya '16 

উত্তর: সমসংস্থ ক্রোমোজোমের একটি নির্দিষ্ট লোকাসে অবস্থিত বৈশিষ্ট্য নির্ধারণকারী দুটি সমধর্মী বা বিপরীতধর্মী জিনের প্রত্যেকটিকে অন্যটির অ্যালিল বা অ্যালিলোমর্ফ (Allele or Allelomorph) বলে। যেমন— বিশুদ্ধ লম্বা মটর গাছের জন্য দায়ী TT জিন দুটি এবং সংকর লম্বা মটর গাছের জন্য দায়ী Tt জিন দুটি একে অপরের অ্যালিল বা অ্যালিলোমর্ফ । অ্যালিল বিশুদ্ধ লম্বা মটর গাছ হেটারোজালিন ( সংকর লম্বা মটর গাছ)।

প্রশ্ন 8. হেটারোঅ্যালিল (Heteroallele) কী ? 

উত্তর : সমসংস্থ ক্রোমোজোমের একই লোকাসে উপস্থিত বিপরীতধর্মী দুটি জিনকে পরস্পরের হেটারোঅ্যালিল (Heteroallele) বলে। যেমন— T• • t এখানে T ও t হল হেটারোঅ্যালিল। 

প্রশ্ন 9. জিন (Gene) কাকে বলে ? [ME '13] 

উত্তর: নিউক্লিওটাইড দ্বারা গঠিত, ক্রোমোজোমের নির্দিষ্ট লোকাসে অবস্থিত পলিপেপটাইড বা RNA উৎপাদনের মাধ্যমে জীবের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নির্ধারণকারী বংশগতির একককে জিন (Gene) বলে। আধুনিক ধারণা অনুযায়ী, একটি জিন একটি পলিপেপটাইডের সংকেত বহন করে, যা নির্দিষ্ট জৈবিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে নির্দিষ্ট বৈশিষ্টের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়।

প্রশ্ন 10. জিন ও অ্যালিলের সম্পর্ক কী ?

উত্তর । জীবের যে-কোনো চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের নিয়ন্ত্রক হল জিন। কিন্তু, জিন একক অবস্থায় কোনো বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটাতে পারে না। সমসংস্থ ক্রোমোজোমের একই লোকাসে উপস্থিত দুটি সমধর্মী বা বিপরীতধর্মী জিন বৈশিষ্ট্যের বহিঃপ্রকাশকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং এদের একে অপরের অ্যালিল বা অ্যালিলোমর্ফ বলে। সুতরাং, জিনের রূপভেদ হল অ্যালিল। উদাহরণ— লম্বা মটর গাছের 'Tt' জিন নির্ধারিত হয় এবং 'T' ও 't' অ্যালিলরূপে একই লোকাসে অবস্থান করে। 

প্রশ্ন 11. প্রকট জিন (Dominant gene) কাকে বলে? উদাহরণ দাও। 

উত্তর: কোনো নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য প্রকাশের জন্য প্রয়োজনীয় যুগ্ম জিনের মধ্যে যে জিনটি হোমোজাইগাস বা হেটারোজাইগাস উভয় অবস্থাতেই বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটায়, তাকে প্রকট জিন (Dominant gene) বলে। 

উদাহরণ : মটর গাছের লম্বা বৈশিষ্ট্যটির জন্য দায়ী। জিনটি হোমোজাইগাস বা TT এবং হেটারোজাইগাস বা Tt উভয় অবস্থাতেই ‘লম্বা’ বৈশিষ্ট্যটির প্রকাশ ঘটায়। 

প্রশ্ন 12. প্রচ্ছন্ন জিন (Recessive gene) কাকে বলে? উদাহরণ দাও। 

উত্তর: কোনো সংকর জীবে যে জিন প্রকট জিনের উপস্থিতিতে প্রকাশিত হতে পারে না। কেবলমাত্র হোমোজাইগাস অবস্থাতেই নিজ বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটায়, তাকে প্রচ্ছন্ন জিন (Recessive gene) বলে। উদাহরণ : মটর গাছের খর্ব বৈশিষ্ট্যটির জন্য দায়ী জিন। কেবলমাত্র হোমোজাইগাস বা tt অবস্থাতেই খর্ব বৈশিষ্ট্যটির প্রকাশ। ঘটায়। 

প্রশ্ন 13.  জিনোম (Genome) কী ?

উত্তর: কোনো জীবের হ্যাপ্লয়েড (n) ক্রোমোজোম সেটে উপস্থিত সমস্ত জিনকে একত্রে জিনোম (Genome) বলে। অর্থাৎ,গ্যামেটে অবস্থিত সমস্ত জিনকে একত্রে জিনোম বলে। যেমন— মানুষের জিনোম হল 23টি ক্রোমোজোমে অবস্থিত সমস্ত জিন। 

প্রশ্ন 14. ফিনোটাইপ কাকে বলে ? উদাহরণ দাও। 

উত্তর: কোনো জীবের পরিবেশের প্রভাব ও জিনগত সংযুক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত সমস্ত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বাহ্যিক প্রকাশকে ফিনোটাইপ (Phenotype) বলে। অর্থাৎ, পরিবেশের প্রভাব + জিনগত সংযুক্তি = বৈশিষ্ট্যের ফিনোটাইপ = বাহ্যিক প্রকাশ । ২. উদাহরণ : মটর গাছের লম্বা ও খর্ব কাণ্ড। 

প্রশ্ন 15. জিনোটাইপ কাকে বলে? উদাহরণ দাও। ** [ME '10,07] 

উত্তর: জীবের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য প্রকাশের জন্য প্রয়োজনীয় জিন সংযুক্তিকে জিনোটাইপ (Genotype) বলে। * উদাহরণ : লম্বা মটর গাছের জিনোটাইপ হল : TT ও Tt ।

প্রশ্ন 16. ফিনোটাইপ জিনোটাইপের ওপর নির্ভর করে কিন্তু জিনোটাইপ ফিনোটাইপের ওপর নির্ভর করে না— ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর: কোনো জীবের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের বহিঃপ্রকাশকে ফিনোটাইপ বলে। এই ফিনোটাইপ নিয়ন্ত্রিত হয় নির্দিষ্ট ওই বৈশিষ্ট্যের জিনগত সংকেত অর্থাৎ জিনোটাইপ দ্বারা। কিন্তু বৈশিষ্ট্যের বাহ্যিক প্রকাশ অর্থাৎ ফিনোটাইপ কোনোভাবেই তার জিনগত সংকেত বা জিনোটাইপকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। যেমন— বৈশিষ্ট্যের জিনগত সংযুক্তিতে একটি বা দুটি প্রকট জিন উপস্থিত থাকলে প্রকট ফিনোটাইপ এবং দুটি প্রচ্ছন্ন জিন উপস্থিত থাকলে প্রচ্ছন্ন ফিনোটাইপ সৃষ্টি হয় কিন্তু, প্রকট ফিনোটাইপ দেখে জিনগত সংযুক্তি নির্ণয় করা যায় না। সুতরাং, ফিনোটাইপ জিনোটাইপের ওপর নির্ভর করে কিন্তু জিনোটাইপ ফিনোটাইপের ওপর নির্ভর করে না। অনুরূপ প্রশ্ন : ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপের মধ্যে সম্পর্ক লেখো। 

প্রশ্ন 17. হোমোজাইগাস জীব কাকে বলে ?

উত্তর: ডিপ্লয়েড জীবের উভয় সমসংস্থ ক্রোমোজোমের নির্দিষ্ট লোকাসে অবস্থিত দুটি জিন বা অ্যালিলই সমধর্মী অথবা, হোমোজাইগাস প্রকৃতির হলে, তাকে হোমোজাইগাস জীব (Ho- mozygous organism) বলে। যেমন- - বিশুদ্ধ লম্বা মটর গাছ হল হোমোজাইগাস অর্থাৎ, লম্বা বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশের জন্য দুটি T একই লোকাসে উপস্থিত থাকে (TOT)। 

প্রশ্ন 18. হেটারোজাইগাস জীব কাকে বলে ?

উত্তর: ডিপ্লয়েড জীবের উভয় সমসংস্থ ক্রোমোজোমে নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য প্রকাশের জন্য দুটি ভিন্নধর্মী বা হেটারোজাইগাস প্রকৃতির অ্যালিল একই লোকাসে উপস্থিত থাকলে, তাকে হেটারোজাইগাস জীব (Heterozygous organism) বলে। যেমন— সংকর লম্বা মটর গাছে লম্বা বৈশিষ্ট্যটির জিনগত সংযুক্তি হল Tt অর্থাৎ, T (হেটারোজাইগাস)।

প্রশ্ন 19. হেমিজাইগাস জীব কাকে বলে ?

উত্তর: ডিপ্লয়েড জীবে কোনো বৈশিষ্ট্য নির্ধারণের জন্য একটিমাত্র জিন উপস্থিত থাকলে, তাকে হেমিজাইগাস জীব (Hemizygous organism) বলে। যেমন— পুরুষদেহে বর্ণান্ধতার জিনগত সংযুক্তি হল- C X (হেমিজাইগাস)। 

প্রশ্ন 20. সংকরায়ণ (Hybridisation) কাকে বলে ? 

উত্তর: একই প্রজাতিভুক্ত বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন দুটি জীবের মিলন ঘটানোকে সংকরায়ণ বা Hybridisation বলে। 

প্রশ্ন 21. জনিতৃ জনু (Parental generation) কাকে বলে ? 

উত্তর: বংশগতিতে সমধর্মী বা বিপরীতধর্মী যে দুটি জীবের মিলন ঘটিয়ে অপত্য জীব সৃষ্টি করা হয়, তাদের জনিতৃ জনু বা 'P' জনু (Parental generation) বলে। যেমন— সংকর লম্বা মটর গাছের জনিত জনু হল বিশুদ্ধ লম্বা মটর গাছ ও বিশুদ্ধ পূর্ব মটর গাছ। অর্থাৎ, প্রথম অপতা বা 

প্রশ্ন 22.  অপত্য জনু (Fillal generation) বলতে কী বোঝো?  

উত্তর: বংশগতিতে একই বা আলাদা জিন সংযুক্তি সম্পন্ন দুটি জীবের মধ্যে মিলন ঘটিয়ে যে বংশধর সৃষ্টি করা হয়, তাদের অপত্য বা F. (Filial generation) বলে। F জনু পর্যায়ক্রমে F, জনু, F2 জনু রূপে পরিচিত হয়। 

প্রশ্ন 23. বংশগতিতে F, কথার অর্থ কী ? 

উত্তর বংশগতিতে F, কথার অর্থ হল প্রথম অপত্য জনু বা First Filial Generation। দুটি জনিতৃ জীবের (P জনু) মিলনে প্রথম অপত্য জনু বা F, জনু সৃষ্টি হয়। 

প্রশ্ন 24. সংকর জীব সর্বদা হেটারোজাইগাস অবস্থায় থাকে কেন? 

উত্তর: সংকর জীবে সবসময়ই এক বা একাধিক বিপরীতধর্মী বৈশিষ্ট্য অবস্থান করে। এদের মধ্যে প্রকট বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশিত হয়। এবং প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যটি সুপ্ত থাকে। অর্থাৎ, সংকর জীব (যেমন- সংকর লম্বা মটর গাছ: Tt) এক বা একাধিক বিপরীতধর্মী জিনযুক্ত হয়। এবং গ্যামেট উৎপাদনকালে দুটি জিন বা ফ্যাক্টর পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে যায়। 

প্রশ্ন 25. সমস্ত টেস্ট ক্রস ব্যাক ব্রুস কিন্তু সমস্ত ব্যাক ক্রস টেস্ট ব্রুস নয়। কেন? 

উত্তর: অপত্য জনুর জীবের সঙ্গে জনিতৃ জনুর যে-কোনো জীবের (প্রকট বৈশিষ্ট্যযুক্ত জনিত্ব বা প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্টযুক্ত জনিতৃ) সংকরায়ণকে ব্যাক ক্রস বলে। যেমন - F, জনুতে উৎপন্ন সংকর লম্বা মটর গাছের (T1) সঙ্গে জনিতৃ জনুর TT বা 11-র সংকরায়ণকে ব্যাক ক্রস বলে। 

কিন্তু, টেস্ট ক্রস হল শুধুমাত্র অপত্য জনুর সঙ্গে প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যযুক্ত জনিতৃ জীবের সংকরায়ণ অর্থাৎ কেবলমাত্র T1 x it, যা একপ্রকার ব্যাক ক্রস। সুতরাং, সমস্ত টেস্ট ব্রুস ব্যাক ব্রুস হলেও সমস্ত ব্যাক ব্রুস টেস্ট ক্রস নয়। 

প্রশ্ন 26. চেকার বোর্ড (Checker Board) কী? 

উত্তর: বংশগতিবিদ্যায় প্রচলিত ও সুবিধাজনক যে বর্গাকার ছকের মাধ্যমে সংকরায়ণ পরীক্ষার সমস্ত ফলাফল লেখা হয় ও বিশ্লেষণ করা হয়, তাকে চেকার বোর্ড ( Checker Board) বলে। ব্রিটিশ বিজ্ঞানী আর. সি. পানেট সর্বপ্রথম এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করেন বলে একে 'পানেট চেকার বোর্ড' বা 'পানেট বোর্ড' (Punnett Board) বলা হয়। 

প্রশ্ন 27. মেন্ডেলবাদ (Mendelism) বলতে কী বোঝো? 

উত্তর: গ্রেগর জোহান মেন্ডেল মটর গাছের কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে জীবের বংশগতি সম্পর্কিত যে-সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব আবিষ্কার করেন সেগুলিকে সামগ্রিকভাবে মেন্ডেলবাদ বা মেন্ডেলিজম বলে। 

প্রশ্ন 28. মেন্ডেল সূত্রের ব্যবহারিক প্রয়োগ উল্লেখ করো। 

উত্তর: মেন্ডেল সূত্রের ব্যবহারিক প্রয়োগ : সংকর জীবের নতুন বৈশিষ্ট্য সংযোজন সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেয়। ও উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রজনন বিদ্যায় সংকর জীব উৎপাদনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ও নতুন মিশ্র বৈশিষ্ট্যযুদ্ধ (Hybrid) উদ্ভিদ সৃষ্টিতে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করে। 

প্রশ্ন 29. পৃথকীভবন সূত্রের সীমাবদ্ধতাগুলি উল্লেখ করো। * 

উত্তর: পৃথকীভবন সূত্রের সীমানা : একাধিক জিন নিয়ন্ত্রিত বৈশিষ্ট্যের ক্ষেত্রে এই সূত্র সম্পূর্ণরূপে প্রযোজ্য নয়। ও মিওট্রপিক জিন, এপিস্ট্যাটিক জিন ও কমপ্লিমেন্টারি জিনের ক্ষেত্রে এই সূত্র সর্বাত্মকরূপে প্রযোজ্য নয়। 

প্রশ্ন 30. স্বাধীনবিন্যাস সূত্রের সীমাবদ্ধতা উল্লেখ করো। 

উত্তর: স্বাধীনবিন্যাস সূতের সমান তা o লিংকেজের ঘটনায় লিংকড জিনগুলির ( Linked gene) ক্ষেত্রে স্বাধীনবিন্যাস সূত্রটি প্রযোজ্য হয় না। ও স্বাধীনবিন্যাস সূত্রটি কেবলমাত্র তখনই প্রযোজ্য হবে যখন ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের অ্যালিলগুলি পৃথক পৃথক সমসংস্থ ক্রোমোজোমে উপস্থিত থাকে। 

প্রশ্ন 31. সহপ্রকটতা (Co-dominance) বলতে কী বোঝো? 

উত্তর: সংকর বা হেটারোজাইগাস জীবে দুটি প্রকট জিনের পারস্পরিক ক্রিয়ার ফলে উভয় জিনের বৈশিষ্ট্যই একসঙ্গে প্রকাশ পাওয়ার ঘটনাকে সহপ্রকটতা বলে। যেমন- মানুষের MN ও AB রক্ত শ্রেণি। 

প্রশ্ন 32. অসম্পূর্ণ প্রকটতার গুরুত্ব কী? 

উত্তর: অসম্পূর্ণ প্রকটতার গুরুত্ব ও বংশগতিতে অসম্পূর্ণ প্রকটতার ঘটনা মেন্ডেলবাদের ভ্রম বা বিচ্যুতিরূপে গণ্য হয়। @ বংশপরম্পরায় জীবের বৈশিষ্ট্য সঞ্চারণের ক্ষেত্রে মেন্ডেল যে প্রকটতার নীতি প্রয়োগ করেন অসম্পূর্ণ প্রকটতার ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হয় না। অসম্পূর্ণ প্রকটতা প্রমাণ করে যে শুধুমাত্র প্রকৃত মেন্ডেলবাদের ভিত্তিতে সর্বপ্রকারের বংশগতি ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত ঘটনা ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। 

প্রশ্ন 33. মানুষের কয়েকটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের সাপেক্ষে প্রকট ও প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য সারণি আকারে লেখো। 

উত্তর: বৈশিষ্ট্য প্রকটধর্মী প্রচ্ছন্নধর্মী চুলের রং 2 চুলের প্রকৃতি সোজা (Straight) হালকা মেটে রং (Blonde ) কালো (Black) মুক্ত (Free) কোকড়ানো (Curly) কানের লতি (Attached)34 Raiganj Girls' High 

প্রশ্ন 34.“বেঁটে মটর গাছগুলি সবসময়ই খাঁটি” তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর: মটর গাছের বেঁটে বৈশিষ্ট্যটি হল প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য। এটি সবসময়ই হোমোজাইগাস অবস্থায় (tt) প্রকাশিত হয়। অর্থাৎ, কেবলমাত্র বিশুদ্ধ (tt) অবস্থাতেই বেঁটে মটর গাছ সৃষ্টি হয়। সুতরাং, বেঁটে মটর গাছগুলি সবসময়ই খাঁটি হয়। 

প্রশ্ন 35. মেন্ডেলের একসংকর জননে  3:1 অনুপাত বলতে কী বোঝো ?

উত্তর: মেন্ডেলের একসংকর জনন পরীক্ষাটিতে একটি বিশুদ্ধ লম্বা মটর গাছের সঙ্গে একটি বিশুদ্ধ খর্ব মটর গাছের সংকরায়ণ ঘটানো হয়। এই পরীক্ষার F2 জনু বা দ্বিতীয় অপত্য জনুতে ও ভাগ লম্বা মটর গাছ ও 1 ভাগ খর্ব মটর গাছ উৎপন্ন হয়। অর্থাৎ, 3:1 অনুপাতটি দ্বারা জীবের ফিনোটাইপিক অনুপাতকে বোঝানো হয়। 

প্রশ্ন 36. বংশগতিতে 1: 2 : 1 এবং 9 : 3 : 3 : 1 অনুপাত দুটির অর্থ কী ? 

উত্তর: বংশগতিতে একসংকর জনন পরীক্ষায় F2 জনুতে উৎপন্ন জীবের জিনোটাইপিক অনুপাত হল 1:2:1। অর্থাৎ, 1 ভাগ হোমোজাইগাস প্রকট, 2 ভাগ হেটারোজাইগাস এবং 1 ভাগ হোমোজাইগাস প্রচ্ছন্ন জীব সৃষ্টি হয়। 

বংশগতিতে 9:3:3:1 অনুপাতটি ফিনোটাইপিক অনুপাতকে বোঝায়। এটি দ্বিসংকর জনন পরীক্ষায় F2 জনুতে উৎপন্ন জীবের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য বা ফিনোটাইপগত অনুপাত।

প্রশ্ন 37. সংকরায়ণের পরীক্ষায় কীভাবে প্রকট ও প্রচ্ছন্ন গুণ প্রকাশিত হয় তা উদাহরণের সাহায্যে লেখো। [ME '17| 

উত্তর: সংকরায়ণের পরীক্ষায় প্রকট গুণ হোমোজাইগাস এবং হেটারোজাইগাস উভয় অবস্থাতেই প্রকাশিত হয় কিন্তু, প্রচ্ছন্ন গুণ কেবলমাত্র হোমোজাইগাস অবস্থায় প্রকাশিত হয়। যেমন— বিশুদ্ধ লম্বা মটরগাছের সঙ্গে বিশুদ্ধ বেঁটে মটরগাছের সংকরায়ণে সবসময়ই লম্বা (সংকর) মটরগাছ সৃষ্টি হয়। কারণ, লম্বা বৈশিষ্ট্যটি প্রকট ও বেঁটে বৈশিষ্ট্যটি প্রচ্ছন্ন প্রকৃতির হয়। আবার দুটি সংকর লম্বা মটর গাছের সংকরায়ণের ফলে একটি বিশুদ্ধ লম্বা, দুটি সংকর লম্বা এবং একটি বিশুদ্ধ বেঁটে মটর গাছ সৃষ্টি হয়। 

ফলাফল বিশ্লেষণ: Tt-এর ক্ষেত্রে T প্রকট গুণ হওয়ায় লম্বা বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশ পাবে। মটরগাছটি লম্বা হবে। প্রচ্ছন্ন গুণ হওয়ায় it-এর ক্ষেত্রে বেঁটে বৈশিষ্ট্যটি প্রকাশ পাবে। সংকর বা হেটারোজাইগাস লম্বা Tt Tt. X সংকর বা হেটারোজাইগাস লম্বা Tt গ্যামেট : -T,t | TT = বিশুদ্ধ লম্বা (হোমোজাইগাস) TT, Tt, Tt, it | Tt = সংকর লম্বা (হেটারোজাইগাস) | tt = বিশুদ্ধ বেঁটে (হোমোজাইগাস)।

প্রশ্ন 38. গোল বীজযুক্ত এবং কুঞ্চিত বীজযুক্ত দুটি মটরগাছের মধ্যে মেন্ডেলের একসংকর জনন পরীক্ষায় F2 জনুতে কী কী ফিনোটাইপসম্পন্ন অপত্য উদ্ভিদ উৎপন্ন হবে এবং তাদের অনুপাত কত হবে?

উত্তর P : গোল বীজ কুঞ্চিত বীজ RR ইতরপরাগযোগ rr গ্যামেট : R- F, জনু : Rr গোল বীজ Rr Rr স্বপরাগযোগ গ্যামেট : R r R চেকার বোর্ড : 오 R r rr RR Rr F2 জনু : R গোল বীজ গোল বীজ জিনোটাইপ ও ফিনোটাইপ Rr গোল বীজ কুঞ্চিত বীজ NF2 জনুর ফলাফল : ফিনোটাইপ অনুপাত – 3 1 গোল বীজ কুঞ্চিত বীজ জিনোটাইপ অনুপাত – -1 2 1 RR Rr বিশুদ্ধ গোলবীজ সংকর গোলবীজ বিশুদ্ধ কুঞিত বীজ ।

প্রশ্ন 39. গিনিপিগের দুটি বৈশিষ্ট্যের প্রকট ও প্রচ্ছন্নধর্মী বৈশিষ্ট্যের নাম লেখো। 

উত্তর: 2 গিনিপিগের বৈশিষ্ট্য প্রকট প্রচ্ছন্ন গায়ের লোমের রং কালো সাদা লোমের প্রকৃতি অমসৃণ মসৃণ 

প্রশ্ন 40. মটরগাছের ওপর কাণ্ডের দৈর্ঘ্য ও বীজের আকার-এই বৈশিষ্ট্য নিয়ে সম্পাদিত দ্বিসংকর জননের পরীক্ষায় F2 জনুতে নয়টি দীর্ঘ ও গোলাকার বীজযুক্ত মটরগাছ উৎপন্ন হয়। এদের কী কী জিনোটাইপ থাকতে পারে? 

উত্তর: মটরগাছের কাণ্ডের দৈর্ঘ্যের ক্ষেত্রে 'T' গ্যামেটটি লম্বা ও প্রকট বৈশিষ্ট্য এবং 't' গ্যামেটটি বেঁটে ও প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য সূচিত করে, আবার, বীজের ক্ষেত্রে বীজের গোল আকৃতি ও প্রকট বৈশিষ্ট্য এবং কুঞ্চিত আকার ও প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে যথাক্রমে 'R' ও * গ্যামেট দুটি। তাই F, জনুতে উৎপন্ন নয়টি দীর্ঘ ও গোলাকার বীজযুক্ত মটরগাছের জিনোটাইপ হতে পারে— TTRR, TTRr, TRr, TtRRI।

প্রশ্ন 41. T সংকেত দ্বারা মটর গাছের কোন বৈশিষ্ট্যকে বোঝানো হয়? 

উত্তর: Tt সংকেত দ্বারা সংকর বা হেটারোজাইগাস মটর গাছকে বোঝানো হয়। দুটি বিপরীতধর্মী জিনের মধ্যে প্রকট লম্বা বৈশিষ্ট্যটি 'T' সংকর মটর গাছে প্রকাশ পায় অর্থাৎ, এটি প্রকট জিন। অন্যদিকে, it সংকেত দ্বারা মটর গাছের খর্ব বৈশিষ্ট্যকে নির্দেশ করা হয় অর্থাৎ, এটি প্রচ্ছন্ন জিন। এটি প্রকট জিনের (T) উপস্থিতিতে সুপ্ত থাকে। 

প্রশ্ন 42. মানুষের লিঙ্গ নির্ধারক ক্রোমোজোম কোনগুলি?  

উত্তর: মানুষের লিঙ্গ নির্ধারক ক্রোমোজোমগুলি হল o পুংদেহের ক্ষেত্রে X ও Y ক্রোমোজোম বা XY @ স্ত্রীদেহের ক্ষেত্রে দুটি X ক্রোমোজোম বা XX । 

প্রশ্ন 43. অ্যান্ড্রোস্পার্ম ও গাইনোস্পার্ম কাকে বলে? 

উত্তর: পুরুষের (22A+Y) ক্রোমোজোমযুক্ত শুক্রাণুকে অ্যান্ড্রোস্পার্ম এবং (22A+X) ক্রোমোজোমযুক্ত শুক্রাণুকে গাইনোস্পার্ম বলে। 

প্রশ্ন 44. মানুষের লিখা নির্ধারণের ক্ষেত্রে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মধ্যে কোনটি নির্ধারক হিসেবে কাজ করে, তা কারণ সহযোগে ব্যাখ্যা করো। * [ME'10] 

উত্তর: মানুষের লিঙ্গ নির্ধারণের ক্ষেত্রে শুক্রাণু নির্ধারক হিসেবে কাজ করে। কারণ— শুক্রাণুতে উপস্থিত Y ক্রোমোজোম লি নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। সন্তান কন্যা না পুত্র হবে তা সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করে Y ক্রোমোজোমের উপস্থিতির ওপর। Y-ক্রোমোজোমযুক্ত শুক্রাণু দ্বারা ডিম্বাণু নিষিক্ত হলে পুত্রসন্তান এবং Y ক্রোমোজোমবিহীন (X-ক্রোমোজোমযুক্ত) শুক্রাণু দ্বারা ডিম্বাণু নিষিক্ত হলে কন্যাসন্তান সৃষ্টি হয়। 944A + XX 44A + XYO গ্যামেট 22A + X 22A +X 22A +Y F, জনুঃ 44A + XX ও কন্যাসন্তান 44A + XY পুত্রসন্তান অনুপ প্রশ্ন: মানুষের ক্ষেত্রে সন্তানের লিঙ্গ কীভাবে নির্ধারিত হয় তা একটি ক্রসের সাহায্যে দেখাও। [ME '18] 1

প্রশ্ন 45. স্ত্রীদেহকে হোমোগ্যামেটিক লিঙ্গ বলা হয় কেন ? 

উত্তর: মহিলাদের দেহাকাশ ও জনন মাতৃকোশে ক্রোমোজোম সংখ্যা হল 23 জোড়া বা 46টি। এদের মধ্যে 22 জোড়া বা 44টি অটোজোম ও 1 জোড়া বা দুটি সেক্স ক্রোমোজোম (XX)। পরিণত অবস্থায় জনন মাতৃকোশ থেকে কেবলমাত্র এক প্রকারেরই ডিম্বাণু বা গ্যামেট উৎপন্ন হয়, যার মধ্যে 22টি অটোজোম ও 1টি সেক্স ক্রোমোজোম থাকে, অর্থাৎ স্ত্রীদেহে উৎপন্ন সমস্ত ডিম্বাণুই এক প্রকার ক্রোমোজোম বিন্যাসযুক্ত; 22A+X। এজন্য স্ত্রীদেহকে হোমোগ্যামেটিক লিঙ্গ বলা হয়। 

প্রশ্ন 46. পুরুষদের হেটারোগ্যামেটিক মেল বলা হয় কেন ? 

উত্তর: পুরুষদের দেহকোশ ও জনন মাতৃকোশের ক্রোমোজোম সংখ্যা 23 জোড়া বা 46টি। এদের মধ্যে দুটি সেক্স ক্রোমোজোম হল X ও Y। পুরুষদেহে জনন মাতৃকোশ থেকে জেনেটিকালি আলাদা দু-প্রকার গ্যামেট সৃষ্টি হয়। যথা- O X ক্রোমোজোমযুক্ত গ্যামেট (22A+X) এবং ও 'Y' ক্রোমোজোমযুক্ত গ্যামেট (22A + Y)। এই কারণে পুরুষদের হেটারোগ্যামেটিক মেল বলে। 2

প্রশ্ন 47. মানুষের ক্ষেত্রে কন্যাসন্তান সৃষ্টিতে কী প্রকার জননকোশের মিলন ঘটে? * [ME '12] 

উত্তর: মানুষের ক্ষেত্রে কন্যাসন্তান সৃষ্টিতে দু-প্রকার জননকোশের (X-ক্রোমোজোমযুক্ত শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলন ঘটে। যথা— X ক্রোমোজোমযুক্ত শুক্রাণু ও ডিম্বাণু গ্যামেট : 22A + X × 22A + X Q F, জানু 44A + XX কন্যাসন্তান ? 1

প্রশ্ন 48. TDF কাকে বলে ? 

উত্তর: পুরুষদেহে 'Y' ক্রোমোজোমের ছোটো বাহুতে উপস্থিত SRY (Sex Determining Region of Y) জিন যে প্রোটিন সংশ্লেষের মাধ্যমে শুক্রাশয়ের গঠন নির্ধারণ করে, তাকে TDF বা Testis Determining Factor বলে। ভ্রূণের 6-8 সপ্তাহের শেষে TDF প্রোটিন তৈরি হয়ে যায় যা শুক্রাশয় গঠনের সূত্রপাত ঘটায়।  

প্রশ্ন 49. হোল্যানড্রিক জিন কাকে বলে ? একটি উদাহরণ দাও। 

উত্তর: যে-সমস্ত জিন Y ক্রোমোজোমে উপস্থিত থাকে এবং কেবলমাত্র পুরুষ জনিতৃদেহ থেকে পুরুষ অপত্যের দেহে সঞ্চারিত হয়, তাদের হোল্যানড্রিক জিন (Holandric gene) বলে। ১ উদাহরণ— পুরুষের কানের লতিতে বর্তমান চুল। 

প্রশ্ন 50. মানবদেহে বংশানুক্রমিকভাবে সঞ্চারিত প্রকরণ দুটি উদাহরণ দ্বারা ব্যাখ্যা করো।  

উত্তর: মানবদেহে বংশানুক্রমিকভাবে সঞ্চারিত দুটি প্রকরণ হল- 1. রোলার ও স্বাভাবিক জিভ : জিভ রোল করার ক্ষমতাটি হল প্রকট বৈশিষ্ট্য। এটি অটোজোমাল জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় যা হোমোজাইগাস ও হেটারোজাইগাস উভয় অবস্থাতেই প্রকাশ পায়। তাই বিশুদ্ধ প্রকট জিনোটাইপযুক্ত ও সংকর জিনোটাইপযুক্ত ব্যক্তিরা জিভ রোল করতে পারে। কিন্তু বিশুদ্ধ প্রচ্ছন্ন জিনোটাইপযুক্ত ব্যক্তিদের জিভ স্বাভাবিক হয়। স্বাভাবিক ও রোলার জিভ 

2.মুক্ত ও যুক্ত কানের লতি : মুক্ত কানের লতি হল অটোজোমাল প্রকট বৈশিষ্ট্য এবং সংযুক্ত কানের লতি অটোজোমাল প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য। তাই বিশুদ্ধ প্রকট বৈশিষ্ট্যযুক্ত ও সংকর জিনোটাইপযুক্ত ব্যক্তিদের মুক্ত কানের লতি এবং প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্যযুক্ত ব্যক্তিদের যুক্ত কানের লতি দেখা যায়। 

For High-Flyers:

প্রশ্ন 1.মাল্টিপল অ্যালিল (Multiple Allele) কাকে বলে? উদাহরণ দাও। 

উত্তর: কোনো জীবের একটি নির্দিষ্ট চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের প্রকাশের জন্য কোনো ক্রোমোজোমের কোনো বিশেষ লোকাসে যদি কখনও দুই বা দুইয়ের অধিক অ্যালিল উপস্থিত থাকে, তাকে মাল্টিপল অ্যালিল বলে। যেমন— মানুষের রক্তের 'ABO' শ্রেণিবিভাগের অন্তর্গত A, B, AB এবং O বিভাগের রক্তে মোট তিন প্রকার অ্যালিল থাকে- 14, 18 @101 

প্রশ্ন 2. লিংকেজ (Linkage) কী ? 

উত্তর: একটি ক্রোমোজোমে উপস্থিত জিনগুলির এক সঙ্গে সঞ্চারিত হওয়ার প্রবণতাকে লিংকেজ বলে। 

প্রশ্ন 3. রেসিপ্রোকাল ক্রস (Reciprocal cross) কাকে বলে? 

উত্তর: যে সংকরায়ণে দুটি জনিতৃ দেহের প্রত্যেকটিকে একবার পুরুষ এবং একবার স্ত্রী জনিত্বরূপে ব্যবহার করা হয়, তাকে রেসিপ্রোকাল ক্রস বলে। 

প্রশ্ন 4. অ্যাটাভিজম (Atavism) কী ? 

উত্তর : বংশগতিতে পূর্বপুরুষে ছিল এমন কোনো বৈশিষ্ট্য মাতৃদেহে বা জনিতৃ দেহে না থেকেও যদি অপত্যে প্রকাশিত হয়, তাকে অ্যাটাভিজম বলে। 

প্রশ্ন 5.মানুষের মধ্যে বিভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আছে। সুতরাং সংকরায়ণ পরীক্ষার জন্য মেন্ডেল মটর গাছের পরিবর্তে মানুষকে নির্বাচন করলে কী সুবিধা বা অসুবিধা হত বলে তোমার মনে হয় ? 

উত্তর : মানুষের মধ্যে বিভিন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য থাকলেও মানুষকে সংকরায়ণ পরীক্ষার জন্য নির্বাচন করা সম্ভব নয়। কারণ— 

1.মানুষের যৌন পরিণতি লাভ ও বংশধর সৃষ্টি করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। কয়েকটি বংশ ধরে পরীক্ষানিরীক্ষা চালানোর পক্ষে যা বেশ অসুবিধাজনক এবং সমস্যাবহুল। 

2. মানুষের বেশিরভাগ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যই একাধিক অ্যালিল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং যেগুলি বহুপ্রকার প্রকরণ সৃষ্টি করে ফলে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ অবস্থায় বৈশিষ্ট্যগুলি পাওয়া সম্ভব হয় না।

 3. মানুষের ক্ষেত্রে বংশানুক্রমে নির্দিষ্ট বিশুদ্ধ চরিত্রের বংশধর উৎপাদন প্রায় অসম্ভব। 

4. মানুষের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের অসম্পূর্ণ প্রকটতা, সহপ্রকটতা, প্লওট্রপি, বহুজিন উত্তরাধিকার, লিংকেজ প্রভৃতি মেন্ডেলের বংশপরম্পরায় পরীক্ষা ও পরীক্ষালব্ধ ফলাফলের গাণিতিক বিশ্লেষণে। বাধা সৃষ্টি করত, ফলে কখনোই মেন্ডেলবাদ তৈরি হত না। 

প্রশ্ন 6. মিউল্যাটো (Mulatto) কী ? 

উত্তর: শ্বেতকায় ও কৃষ্ণকায় স্ত্রী পুরুষের মিলনে উৎপন্ন মাঝারি রঙের ত্বকযুক্ত সন্তানদের মিউল্যাটো বলে। 

প্রশ্ন 7. জার্মপ্লাজম (Germplasm) কাকে বলে ? 

উত্তর: বিজ্ঞানী ওয়াইসম্যানের মতে, বংশগতির বৈশিষ্ট্যাবলি জার্মপ্লাজমে আবদ্ধ থেকে এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে সঞ্চারিত হয় এবং সোমাটোপ্লাজমে রূপান্তরিত হয়ে অপত্য দেহ গঠন করে। একেই জার্মপ্লাজম বলে। 

প্রশ্ন 8. ইউজেনিক্স (Eugenics) কী ? 

উত্তর: জেনেটিক্সে যে শাখায় মানবজাতির কল্যাণ ও উন্নতির জন্য জেনেটিক্সের বিভিন্ন তথ্যকে প্রয়োগ করা হয়, তাকে ইউজেনিক্স বলে। 1883 সালে ফ্রান্সিস গ্যালটন সর্বপ্রথম ইউজেনিক্স' শব্দটির প্রবর্তন করেন। 

প্রশ্ন 9.পৃথিবীতে মহিলা ও পুরুষের স্বাভাবিক অনুপাত কত হওয়া উচিত, তা ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর: পৃথিবীতে মহিলা ও পুরুষের স্বাভাবিক অনুপাত হওয়া উচিত 1 : 1। কারণ, পুরুষদেহে উৎপাদিত শুক্রাণু ও স্ত্রীদেহে উৎপাদিত ডিম্বাণু উভয়ে মিলিতভাবে বংশধর / নবজাতক সৃষ্টি করে। সুতরাং, পৃথিবীতে মানব গোষ্ঠীর বৃদ্ধি স্থিতিশীল করার জন্য মহিলা ও পুরুষের স্বাভাবিক অনুপাত 1 : 1 হওয়াই বাঞ্ছনীয়।

প্রশ্ন 10. মেন্ডেলবাদ সর্বজনীন কি না ব্যাখ্যা করো।

উত্তর: বংশগতি সংক্রান্ত মেন্ডেল আবিষ্কৃত গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বগুলিকে (যেমন—প্রকটতার সূত্র, পৃথকীভবনের সূত্র, স্বাধীনবিন্যাস সূত্র) সামগ্রিকভাবে মেন্ডেলবাদ বলে। কিন্তু মেন্ডেল পরবর্তী জীববিজ্ঞানীরা বংশগতির বিভিন্ন ঘটনা অধ্যয়ন ও গবেষণা দ্বারা জানতে পারেন। যে, শুধুমাত্র প্রকৃত মেন্ডেলবাদের ভিত্তিতে সর্বপ্রকারের বংশগতি ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত জটিলতা ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। যেমন—অসম্পূর্ণ প্রকটতা, সহপ্রকটতা, লিংকেজ প্রভৃতি বংশগতির গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ব্যাখ্যা মেন্ডেলবাদ দিতে পারে না। মেন্ডেলের স্বাধীনবিন্যাস সূত্র তখনই প্রযোজ্য হয় যখন ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের অ্যালিলগুলি ভিন্ন ভিন্ন সমসংস্থ ক্রোমোজোমে অবস্থান করে। সুতরাং, মেন্ডেলবাদকে সর্বজনীন বলা যায় না।








No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();