সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জনন (Sexual reproduction in flowering plants): দশম শ্রেণীর জীবনবিজ্ঞান অধ্যায় ২.৩ | class 10 chapter 2.3 Life science questions answer| - SM Textbook

Fresh Topics

Friday, November 3, 2023

সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জনন (Sexual reproduction in flowering plants): দশম শ্রেণীর জীবনবিজ্ঞান অধ্যায় ২.৩ | class 10 chapter 2.3 Life science questions answer|

 সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জনন (Sexual reproduction in flowering plants):  দশম শ্রেণীর জীবনবিজ্ঞান অধ্যায় ২.৩ | class 10 chapter 2.3 Life science questions answer|




রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর:

প্রশ্ন 1. আদর্শ ফুল (Typical flower) কাকে বলে ? একটি আদর্শ ফুলের বিভিন্ন অংশ ছকের মাধ্যমে দেখাও। * 

উত্তর: আদর্শ ফুল (Typical flower) : যেসব ফুল সবৃন্তক ও পুষ্পাক্ষ যুক্ত হয় এবং পুষ্পস্তবকগুলি (যেমন — • বৃতি, দলমণ্ডল, পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক) পুষ্পাক্ষের ওপর ক্রমপর্যায়ে সজ্জিত থাকে এবং প্রতিটি স্তবকের অংশগুলির মধ্যে আকৃতিগত সাদৃশ্য বর্তমান, তাদের আদর্শ ফুল বলে। উদাহরণ – জবা ফুল (Hibiscus rosa-sinensis ।

প্রশ্ন 2.একটি আদর্শ ফুলের বিভিন্ন অংশগুলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও এবং প্রত্যেকটি অংশের কাজ লেখো। 

উত্তর:একটি আদর্শ ফুলের বিভিন্ন অংশ ও তাদের কাজ : (1) পুষ্পবৃত্ত (Pedicel) : ক্ষুদ্র বা দীর্ঘ, সরু, নলাকার বা দণ্ডাকার সবুজ বর্ণের যে অংশের শীর্ষে পুষ্পাক্ষ অবস্থান করে, তাকে পুষ্পবৃন্ত বলে। কাজ : ফুলকে কাণ্ডের বা শাখা-প্রশাখার পর্বের সঙ্গে আবদ্ধ রাখে।

 (2) পুষ্পাক্ষ (Thalamus) : ফুলের যে স্ফীত অংশের ওপর পুষ্পস্তবকগুলি সজ্জিত থাকে, তাকে পুষ্পাক্ষ বলে। কাজ : পুষ্পস্তবকগুলি (যেমন - বৃতি, দলমণ্ডল, পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক) ধারণ করে। 

(3) পুষ্পস্তবক : দুই প্রকারের হয়। যথা— @ জননে সাহায্যকারী স্তবক বা আনুষঙ্গিক জনন স্তবক ও মুখ্য জনন স্তবক বা অত্যাবশ্যকীয় • বৃতি বা ক্যালিক্স (Calyx): বৃতি ফুলের প্রথম স্তবক। বৃতির প্রত্যেকটি খণ্ডাংশকে বৃত্যংশ বা সেপাল বলে। অনেকক্ষেত্রে বৃতির নীচের দিকে সবুজ বর্ণের উপবৃত্তি (Epicalyx) থাকে। যেমন— জবা ফুলের ক্ষেত্রে পাঁচটি মুক্ত উপবৃতি লক্ষ করা যায়। 

কাজ :(i) বৃতি সবুজ রঙের হওয়ায় সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরি করে। (ii) বৃতি কুঁড়ি অবস্থায় ফুলকে ঢেকে রেখে কীটপতঙ্গ, 203 স্তবক। @ আনুষঙ্গিক জনল স্তবক : প্রতিকূল পরিবেশ প্রভৃতি থেকে রক্ষা করে।

ও দলমণ্ডল বা করোলা (Corolla) : দলমণ্ডল ফুলের দ্বিতীয় স্তবক। দলমণ্ডলের প্রতিটি খণ্ডাংশকে পাপড়ি বা দলাংশ বা পেটাল বলে। * 

কাজ : (i) রঙিন হওয়ায় দলমণ্ডল কীট পতঙ্গকে আকৃষ্ট করে ফুলের পরাগসংযোগে সাহায্য করে। (ii) প্রতিকূল পরিবেশ থেকে পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবককে রক্ষা করে। 

® মুখ্য জনন স্তবক : 204 © পুংস্তবক (Androecium) : পুংস্তবক ফুলের তৃতীয় স্তবক। এর প্রতিটি অংশকে পুংকেশর বা স্ট্যামেন (Stamen) বলে। প্রতিটি পুংকেশর দুটি অংশ দ্বারা গঠিত। যথা – 

(i) পুংদণ্ড (Filament) এবং (ii) পরাগধানী (Anther)। X কাজ : পরাগধানীতে পরাগরেণু উৎপন্ন হয়, যা পুংজননকোশ গঠনের দ্বারা ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে। 

• স্ত্রীস্তবক (Gynoecium) : স্ত্রীস্তবক ফুলের চতুর্থ স্তবক। এর প্রতিটি অংশকে গর্ভপত্র বা কারপেল (Carpel) বা পিস্টিল (Pistil) বলে। প্রতিটি গর্ভপত্র তিনটি অংশ দ্বারা গঠিত। যথা— (i) গর্ভমুণ্ড (Stigma), (ii) গর্ভদণ্ড (Style) এবং (iii) ডিম্বাশয় বা গর্ভাশয় (Ovary)।  

কাজ : ডিম্বাণু উৎপন্ন করে এবং পরাগসংযোগ ও নিষেকের পর বীজ ও ফল সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন 3. পরাগসংযোগ কাকে বলে? ছকের মাধ্যমে সংযোগের প্রকারভেদগুলি উল্লেখ করো। 

উত্তর : পরাগসংযোগ (Pollination) : যে প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন বাহকের দ্বারা কোনো ফুলের পুংকেশরের পরাগধানী থেকে পরাগরেণু বা পোলেন (Pollen) ওই ফুলের বা একই গাছের অন্য কোনো ফুলের বা একই প্রজাতির অন্য গাছের ফুলের গর্ভপত্রের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হয়, তাকে পরাগসংযোগ বলে। 

পরাগসংযোগের প্রকারভেদ (Types of pollination) : পরাগসংযোগ স্বপরাগযোগ (Self pollination) অটোগ্যামি (Autogamy) (একই ফুলে পরাগসংযোগ) গেইটোনোগ্যামি (Geitonogamy) (একই গাছের দুটি ভিন্ন ফুলে পরাগসংযোগ) ইতর পরাগযোগ (Cross pollination) বা জেনোগ্যামি বা অ্যালোগ্যামি (একই প্রজাতিভুক্ত দুটি ভিন্ন উদ্ভিদের ফুলের মধ্যে পরাগসংযোগ)।

প্রশ্ন 4. স্বপরাগযোগ কাকে বলে ? এর বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। 

উত্তর: স্বপরাগাযাগ (Self pollination) : যে পরাগসংযোগে কোনো ফুলের পরাগরেণু সেই ফুলের গর্ভমুণ্ডে অথবা ওই গাছের অন্য ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হয়, তাকে স্বপরাগযোগ বলে। গেইটোনোগ্যামি অটোগ্যামি 

স্বপরাগযোগ স্বপরাগাযাগের বৈশিষ্ট্য : 1.একই ফুলে বা একই গাছের দুটি ফুলের মধ্যে ঘটে। 2. স্বপরাগযোগ উভলিঙ্গ ফুলে ঘটে। 3. ফুলের পরাগধানী ও গর্ভমুণ্ড একই সময়ে পরিণতি লাভ করে ও কাছাকাছি অবস্থান করে। 4. পরাগরেণুর অপচয় কম হয়। 5.সাধারণত বাহকের প্রয়োজন হয় না। 6• নতুন বৈশিষ্ট্যযুক্ত উদ্ভিদ সৃষ্টি হয় না। 7.ফুল সাধারণত গন্ধবিহীন, মকরন্দবিহীন ও বর্ণহীন হয়। 

Advanced Studies: ল স্বপরাগযোগের জন্য ফুলের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য বা ইনব্রিডিং ডিভাইসগুলি হল- o 

উভলিঙ্গতা বা বাইসেক্সুয়ালিটি : স্বপরাগযোগ প্রধানত উভলিঙ্গ ফুলে ঘটে। 

অনুন্মীলন বা ক্লিসটোগ্যামি : ফুল সম্পূর্ণভাবে না ফোটায় বা বদ্ধ অবস্থায় থাকার ফলে পরাগরেণু ওই ফুলেরই গর্ভপত্রের গর্ভমুণ্ডে এসে পড়ে এবং স্বপরাগযোগ ঘটায়। যেমন— দোপাটি, চিনাবাদাম, কানশিরা প্রভৃতি। 

 সমপরিণত বা হোমোগ্যামি : ফুলের পরাগধানী ও গর্ভমুণ্ড একইসঙ্গে পরিণত হয় এবং কাছাকাছি অবস্থান করে, এবং পরাগসংযোগ ঘটায়। যেমন— সন্ধ্যামালতী, নয়নতারা, শিয়ালকাঁটা, সূর্যমুখী প্রভৃতি। 

• কুঁড়ি পরাগযোগ বা বাড পলিনেশন : ফুলের কুঁড়ি (Bud) অবস্থাতেই পরাগসংযোগ ঘটে। যেমন— মুলো।

প্রশ্ন 5. ইতর পরাগযোগ কাকে বলে? ইতর পরাগযোগের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। ** Baranagar Narendranath Vidyamandir 16 

উত্তর: ইতর পরাগাযাগ (Cross pollination): যে পরাগসংযোগে কোনো ফুলের পরাগরেণু বিভিন্ন বাহকের মাধ্যমে একই প্রজাতিভুক্ত অন্য কোনো গাছের ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হয়, তাকে ইতর পরাগযোগ বলে। কি 

ইতর পরাগাযাগের বৈশিষ্ট্য : 1.একলিঙ্গ ও উভলিঙ্গ উভয় ফুলেই ইতর পরাগযোগ ঘটে। 2. ভিন্নবাসী উদ্ভিদের দুটি ভিন্ন জিনোটাইপযুক্ত ফুলের প্রয়োজন হয়। 3.ফুলগুলি সুগন্ধি, উজ্জ্বল বর্ণযুক্ত এবং মকরন্দযুক্ত হয়। 4. একলিঙ্গ ফুলে পরাগধানী ও গর্ভমুণ্ড একই সময়ে এবং উভলিঙ্গ ফুলে পরাগধানী ও গর্ভমুণ্ড ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পরিণতি লাভ করে। 5. পরাগরেণুর অপচয় ঘটে। 6.নতুন বৈশিষ্ট্যযুক্ত উদ্ভিদ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 7. বাহকের প্রয়োজন হয়।

Advanced Studies:

 ইতর পরাগযোগের জন্য ফুলের বিভিন্ন অভিযোজন বা আউটব্রিডিং ডিভাইসগুলি হল –

 1. একলিঙ্গতা বা ইউনিসেক্সুয়ালিটি : যে-সকল ফুলে পুং অথবা স্ত্রী স্তবক বর্তমান, তাদের ডাইক্লিনি বলে। একলিঙ্গ ফুলে সবসময়ই ইতর পরাগযোগ ঘটে। যেমন— পেঁপে, তাল, লাউ, কুমড়ো প্রভৃতি ফুল ৷

 2. বিষম পরিণতি বা ডাইকোগ্যামি : উভলিঙ্গ ফুলে পরাগধানী ও গর্ভমুণ্ড ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পরিণত হওয়ায় ইতর পরাগযোগ ঘটে, একে বিষম পরিণতি বলে। এটি দু-ভাবে ঘটে। যথা— (i) প্র-পুংপরিণতি বা প্রোট্যানড্রি : উভলিঙ্গ ফুলে গর্ভমুণ্ডের আগে পরাগধানী পরিণত হয়। যেমন— জবা, সূর্যমুখী, ভুট্টা, তুলসী। প্রভৃতি ফুল। (ii) প্র-স্ত্রীপরিণতি বা প্রোটোগাইনি : উভলিঙ্গ ফুলে পরাগধানীর আগে গর্ভমুণ্ড পরিণতি লাভ করে। যেমন- চাঁপা, বেগুন, দেবদারু, বাজরা প্রভৃতি । 

3. স্ববন্ধ্যাত্ব বা সেলফ স্টেরিলিটি : কিছু কিছু উভলিঙ্গ ফুলের পরাগরেণু ওই ফুলের বা একই গাছের অন্য ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হলেও নিষেক ক্রিয়া ঘটে না, একে স্ববন্ধ্যাত্ব বলে। যেমন- চা, রাস্না, তামাক, আলু প্রভৃতি গাছের ফুল। 

4. পুরুষ বন্ধ্যাত্ব বা মেল স্টেরিলিটি : কিছু কিছু উভলিঙ্গ ফুলের পরাগরেণুগুলি ওই ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হলে বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়। একে পুরুষ বন্ধ্যাত্ব বলে। যেমন— অর্কিড, সূর্যমুখী প্রভৃতি।

5• স্বসংগমবিরোধী বা হার্কোগ্যামি : কিছু কিছু উভলিঙ্গ ফুলে গর্ভমুণ্ড ও পরাগধানী একইসঙ্গে পরিণত হলেও পরাগরেণু গর্ভমুণ্ডে পৌঁছোতে পারে না। কারণ, গর্ভমুণ্ড একটি ঢাকনা দ্বারা আবৃত থাকে। ফলে, স্বপরাগযোগ ব্যাহত হয়। যেমন— আকন্দ, প্যানজি, আইরিস প্রভৃতি ফুল। 

6. অসমরূপতা বা হেটারোমরফিজম : কিছু কিছু উভলিঙ্গ ফুলে গর্ভদণ্ড ও পুংদণ্ডের দৈর্ঘ্যের অনেকটা পার্থক্যের জন্য স্বপরাগযোগ বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে, ইতর পরাগযোগ ঘটে। যেমন— পানমরিচ, আমরুল, প্রাইমুলা প্রভৃতি ফুল। 

জেনে রাখো : পৃথিবীর বৃহত্তম ফুল র‍্যাফ্লেসিয়া প্রস্ফুটিত হলে পচা মাংসের মতো গন্ধ বের হয়, যার দ্বারা ক্যারিয়ন মাছি আকৃষ্ট হয় ও পরাগসংযোগ ঘটায়।

প্রশ্ন 6. বিভিন্ন বাহকের ওপর নির্ভর করে পরাগযোগের প্রকারভেদগুলি উদাহরণসহ সারণি আকারে লেখো। * 

উত্তর: বাহকের নাম ভৌতবাহক— পরাগযোগ পদ্ধতি উদাহরণ [ME'17] (i) বায়ু (ii) জল বায়ুপরাগী জলপরাগী ধান, গম, ভুট্টা প্রভৃতি পাতাঝাঁঝি, পাতাশ্যাওলা প্রভৃতি 2 জৈববাহক বা প্রাণীবাহক— (i) পতঙ্গ পতঙ্গপরাগী আম, আকন্দ, রাস্না, পদ্ম, রজনিগন্ধা, শালুক প্রভৃতি বাহকের নাম পদ্ধতি পক্ষীপরাগী উদাহরণ (ii) পাখি শিমুল, পলাশ, মাদার প্রভৃতি ।

জেনে রাখো : বেল, শিউলি প্রভৃতি সাদা রঙের ফুলে রাত্রিবেলা মথ এবং জবা, গোলাপ প্রভৃতি লাল ফুলে দিনেরবেলা প্রজাপতি, বোলতা প্রভৃতি পরাগসংযোগ ঘটায়। 

প্রশ্ন 7. বায়ুপরাগী ফুল কাকে বলে? উদাহরণ দাও। এই ফুলগুলির বৈশিষ্ট্য লেখো। 

উত্তর: বায়ুপরাগী ফুল (Anemophilous flowers): যে-সকল বর্ণহীন বা অনুজ্জ্বল, গন্ধহীন, মকরন্দবিহীন ফুলের পরাগসংযোগ ঘটাতে বায়ু বাহকরূপে সাহায্য করে, তাদের বায়ুপরাগী ফুল বলে। V উদাহরণ— ধান, ঘাস, গম, বাঁশ, নারকেল প্রভৃতি ফুল। 

বায়ুপরাগী ফুলের বৈশিষ্ট্য :1. ফুলগুলি ছোটো, বর্ণ, গন্ধ ও মকরন্দবিহীন এবং অনুজ্জ্বল প্রকৃতির হয়। 2. মঞ্জুরীদণ্ড লম্বা হয় ও ফুলগুলি গুচ্ছাকারে ঘনভাবে সজ্জিত থাকে। 3. পুংদণ্ড লম্বা ও পরাগধানী সর্বমুখ প্রকৃতির এবং দলমণ্ডলের বাইরে অবস্থান করে। 4. পরাগধানীতে অসংখ্য পরাগরেণু উৎপন্ন হয়। 5. পরাগরেণু সূক্ষ্ম, হালকা, শুষ্ক ও মসৃণ ত্বকযুক্ত এবং কখনো কখনো ডানাযুক্ত হয়। 6.গর্ভদণ্ড লম্বা, গর্ভমুণ্ড শাখান্বিত, রোমশ ও আঠালো প্রকৃতির এবং দলমণ্ডলের বাইরে বেরিয়ে থাকে।

প্রশ্ন 8. জলপরাগী ফুল কাকে বলে? উদাহরণ দাও। এই ফুলগুলির বৈশিষ্ট্য লেখো। 

উত্তর: জলপরাগী ফুল (Hydrophilous flowers) : যে-সকল অনুজ্জ্বল বর্ণের বা বর্ণহীন, গন্ধহীন, মকরন্দবিহীন ফুলের পরাগসংযোগ ঘটাতে জল বাহকরূপে সাহায্য করে, তাদের জলপরাগী ফুল বলে।  

উদাহরণ—পাতাশ্যাওলা (Vallisneria), পাতাঝাঁঝি (Hy- drilla) প্রভৃতি ফুলের পরাগসংযোগ জলের উপরিতলে ঘটে (এপিহাইড্রোফিলি) এবং Najas, Ceratophyllum, Zostera প্রভৃতি ফুলে পরাগসংযোগ জলের তলায় ঘটে (হাইপোহাইড্রোফিলি)। 

জলপরাগী ফুলের বৈশিষ্ট্য : 1.ফুলগুলি ক্ষুদ্র, হালকা, বর্ণহীন, গন্ধহীন, মকরন্দবিহীন ও অনুজ্জ্বল প্রকৃতির হয়। 2. ফুলের স্তবকগুলির ত্বকে মোমের আস্তরণ থাকে। 3. পরাগরেণু ক্ষুদ্র ও মোমের প্রলেপযুক্ত হওয়ায় জলে ভিজে যায় না। 4.যে সকল উদ্ভিদের জলের উপর পরাগযোগ ঘটে তাদের পরাগরেণুগুলি হালকা হয়,যাদের জলের তলায় পরাগযোগ ঘটে তাদের পরাগরেণু ভারী প্রকৃতির হয়। 5. গর্ভমুণ্ড জলের ওপরে থাকে এবং রোমশ ও আঠালো প্রকৃতির হয়। 6. কিছু কিছু জলপরাগী ফুলের পুংকেশর ও গর্ভকেশর দলমণ্ডল দ্বারা আবৃত থাকে না । - পুং পুষ্প স্ত্রী পুষ্প জলপরাগী ফুল (পাতাশ্যাওলা) 

জেনে রাখো : পদ্ম ফুল জলে ফুটলেও পদ্ম ফুলের পরাগসংযোগ ঘটায় বোলতা, মৌমাছি, প্রজাপতি প্রভৃতি পতঙ্গ। 

প্রশ্ন 9. পতঙ্গপরাগী ফুল কাকে বলে? উদাহরণ দাও। পতঙ্গপরাগী ফুলের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। 

উত্তর: পতঙ্গ পরাগী ফুল (Entomophilous flowers) : যে-সমস্ত উজ্জ্বল বর্ণের, গন্ধযুক্ত, মকরন্দযুক্ত ফুলের পরাগসংযোগ কীটপতঙ্গের মাধ্যমে ঘটে, তাদের পতঙ্গপরাগী ফুল বলে।

উদাহরণ— আম, বোগেনভিলিয়া,জুঁই, বেল, মুসেন্ডা, জবা, আমরুল, পদ্ম, শালুক, গোলাপ প্রভৃতি। 

পতঙ্গপরাগী ফুলের বৈশিষ্ট্য : 1. ফুল উজ্জ্বল রঙের, সুমিষ্ট গন্ধযুক্ত এবং মকরন্দযুক্ত হয়। 2.কিছু কিছু ফুলের পরাগরেণু মিষ্ট স্বাদযুক্ত হয়। 3. পরাগরেণুর বহিস্ত্বক অমসৃণ, কাঁটা ও আঠালো পদার্থযুক্ত হয় যাতে সহজে পতঙ্গদের গায়ে আটকে যেতে পারে। 4.গর্ভমুণ্ড প্রসারিত, অমসৃণ 3 আঠালো। 5• অনেক ফুলের পুষ্পপুট (বৃতি ૬ দলমণ্ডলের একত্রিত অবস্থা) আকৃতিতে বড়ো হয় যাতে কীটপতঙ্গ বসতে ও ফুলের ভেতর সহজেই প্রবেশ করতে পারে।

প্রশ্ন 10. পক্ষীপরাগী ফুল কাকে বলে ? উদাহরণ দাও। পক্ষীপরাগী ফুলগুলির বৈশিষ্ট্য লেখো। 

উত্তর: পক্ষীপরাগী ফুল (Ornithophilous flower) : যে সকল উজ্জ্বল বর্ণযুক্ত, গন্ধহীন, মকরন্দযুক্ত ফুলের পরাগযোগ পক্ষী দ্বারা সম্পন্ন হয়, তাদের পক্ষীপরাগী ফুল বলে। ♛ উদাহরণ— বিগোনিয়া, পলাশ, শিমুল, পেয়ারা প্রভৃতি ফুল। 

পক্ষী পরাগী ফুলের বৈশিষ্ট্য : ফুলগুলি বড়ো, উজ্জ্বল বর্ণযুক্ত ও গন্ধবিহীন হয়। ও সাধারণত দলমণ্ডল চোঙের মতো হয়। • ফুলে মকরন্দ থাকে। ও পরাগধানীগুলি পাখিরা খাদ্যরূপে গ্রহণ করে।

Advanced Studies: 

কতকগুলি প্রাণী পরাগী ফুলের নাম, বাহক এবং ফুলের প্রকৃতি প্রাণীপরাগী ফুলের প্রকৃতি • এন্টোমোফিলি বাহক ফুলের নাম বা রং কীটপতঙ্গ জবা, গাঁদা, সূর্যমুখী প্রভৃতি উজ্জ্বল বর্ণ, গন্ধ ও মকরন্দযুক্ত ফুল। 2 সাইকোফিলি প্রজাপতি লাল রঙের ফুল বেশি আকর্ষণ করে। ও হাইমেনোপটেরোফিলি মৌমাছি ও প্রধানত নীলাভ, বেগুনি, বোলতা ও মিরমেকোফিলি পিঁপড়ে পার্পেল, হলুদ রঙের ফুল। ডুমুর, লিচু, আম, বাবলা ও অর্কিড ফুল । ও ফ্যালেনোফিলি মিথ রজনিগন্ধা, জুঁই, বেল প্রভৃতি সাদা রঙের ও হালকা হলুদ রঙের ফুল শিমুল, পলাশ ইত্যাদি। • অরনিথোফিলি পাখি (হামিং বার্ড, ময়না, টিয়া, বুলবুলি প্রভৃতি) • কাইরোপটেরোফিলি বাদুড় বিগোনিয়া, অ্যাগেভ প্রভৃতি গন্ধহীন কিন্তু উজ্জ্বল রঙের বৃহৎ আকৃতির ফুল। কদম, বাউহিনিয়া, কাইজেলিয়া, কলা ফুল, বাওবাব প্রভৃতি ফুল। ও ম্যালাকোফিলি শামুক, স্লাগ কচু, লেমনা, ক্রিসানথেমাম, ইভোলভিউলাস প্রভৃতি ফুল। ও ওফিওফিলি সাপ চন্দন, মাইকেলিয়া প্রভৃতি ফুল ৷ @ অ্যানথ্রোপোফিলি মানুষ যে-কোনো বড়ো, আকর্ষণীয় ফুল। 

জেনে রাখো : হাতি র‍্যাফ্লেসিয়া ফুলের পরাগসংযোগ ঘটায় বলে একে এলিফোফিলি বা হাতিপরাগী ফুল বলে।

প্রশ্ন 11. সপুষ্পক উদ্ভিদের নিষেক (Fertilization) প্রক্রিয়া ও নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা দাও।

উত্তর: উদ্ভিদাদাহ নিষেক (Fertilization) ও নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টি নিম্নলিখিত পর্যায়গুলির মাধ্যমে ঘটে_ 

1. পরাগসংযোগ : পরাগধানী থেকে নির্গত পরাগরেণুর গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরকে পরাগযোগ বলে। 

2. পরাগরেণুর অঙ্কুরোদ্‌গম : গর্ভমুণ্ডীয় রস শোষণ করে পরাগরেণু রসস্ফীত ও অঙ্কুরিত হয়। 

3. পুংজনন নিউক্লিয়াস সৃষ্টি : পরাগরেণুমধ্যস্থ হ্যাপ্লয়েড নিউক্লিয়াস(n) বিভাজিত হয়ে দুটি অসম আকৃতির নিউক্লিয়াস গঠন করে। এদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত বড়ো অঙ্গজ নিউক্লিয়াসটিকে নালিকা নিউক্লিয়াস বা নালিকোশ বলে এবং ছোটো নিউক্লিয়াসটিকে পুংজনন নিউক্লিয়াস বা পুংজননকোশ বলে। 

4. গ্যামেট উৎপাদন : (i) পুং গ্যামেট গঠন : পুংজননকোশ পুনরায় বিভাজিত হয়ে দুটি পুংজননকোশ বা পুংগ্যামেট সৃষ্টি করে। 

(ii) স্ত্রী গ্যামেট ও নির্ণীত নিউক্লিয়াস গঠন : ভ্রূণস্থলীতে ৪টি হ্যাপ্লয়েড নিউক্লিয়াস থাকে। স্ত্রী গ্যামেট বা ডিম্বাণু ভ্রূণস্থলীর মেরুর দিকে অবস্থান করে। ভ্রূণস্থলীর কেন্দ্রের দিকে দুটি হ্যাপ্লয়েড (n) নিউক্লিয়াস যুক্ত হয়ে ডিপ্লয়েড (2n) নির্ণীত নিউক্লিয়াস বা ডেফিনেটিভ নিউক্লিয়াস গঠন করে।

5. পরাগনালিকা সৃষ্টি ও বৃদ্ধি : পরাগরেণুর অন্তস্ত্বক (ইনটাইন) রেণুরন্ধ্র পথে পরাগনালিকারূপে নির্গত হয় এবং গর্ভদণ্ডের মধ্যে দিয়ে ডিম্বাশয়ের দিকে অগ্রসর হয়। © 

6.নিষেক বা ফার্টিলাইজেশন : পরাগনালিকা ডিম্বকরন্ধ্র পথে ভ্রূণস্থলীতে প্রবেশ করার পর, প্রথম পুংগ্যামেট দ্বারা ডিম্বাণু নিষিক্ত হয়ে ডিপ্লয়েড (2n) জাইগোট গঠিত হয়। পুংগ্যামেট (n) + ডিম্বাণু (n) → জাইগোট (2n) দ্বিতীয় পুংগ্যামেট দ্বারা নির্ণীত নিউক্লিয়াস (2n) নিষিক্ত হয় এবং ট্রিপ্লয়েড (3n) সস্য নিউক্লিয়াস গঠিত হয়। পুংগ্যামেট (n) + নির্ণীত নিউক্লিয়াস (2n) – সস্য (3)।

7. ভূণ গঠন এবং বীজ ও ফল সৃষ্টি : নিষেকের ফলে উৎপন্ন জাইগোট পরবর্তী পর্যায়ে বৃদ্ধি ও পরিস্ফুরণের মাধ্যমে ভ্রূণ সৃষ্টি করে। নিষিক্ত ডিম্বক বৃদ্ধি ও পরিস্ফুরণের মাধ্যমে বীজে এবং গর্ভাশয় ফলে পরিণত হয়। 

8.নতুন উদ্ভিদ সৃষ্টি : বীজের মধ্যে ভ্রূণ উপস্থিত থাকে, যা অনুকূল পরিবেশে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ও অঙ্কুরিত হয়ে নতুন চারাগাছ গঠন করে। 

অনুরূপ প্রশ্ন : (1) সপুষ্পক উদ্ভিদের জননে ডেফিনেটিভ নিউক্লিয়াস ও সস্য নিউক্লিয়াস কীভাবে গঠিত হয় লেখো। ★★ [ME'02] (2) সপুষ্পক উদ্ভিদের যৌন জননের নিম্নলিখিত তিনটি পর্যায়ের ঘটনাগুলি বিবৃত করো— (a) জনন কোশ বা গ্যামেট উৎপাদন (b) নিষেক (c) ভ্রূণ সৃষ্টি ও নতুন উদ্ভিদ গঠন। * [ME 17] 

প্রশ্ন 12. দ্বিনিষেক কাকে বলে? উদ্ভিদের দ্বিনিষেক পদ্ধতির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

উত্তর: গুপ্তবীজী উদ্ভিদের ডিম্বাশয়ে অবস্থিত ডিম্বক মধ্যস্থ ভ্রূণস্থলীর অভ্যন্তরে একটি পুংগ্যামেট (n) ও ডিম্বাণুর (n) মিলনে জাইগোট (2n) এবং অপর একটি পুংগ্যামেট (n) ও নির্ণীত নিউক্লিয়াসের (2n) মিলনে সস্য নিউক্লিয়াস (3n) উৎপন্ন হয়। এই নিষেক পদ্ধতি দুবার ঘটে বলে, একে দ্বিনিষেক বা Double Fertilization বলে। ৯. উদাহরণ— ধান, ভুট্টা, আম, মটর প্রভৃতি।

উদ্ভিদের দ্বিনিষেক পদ্ধতি : 1.পরাগসংযোগের পর পরাগরেণু থেকে একটি নালি নির্গত হয়ে গর্ভদণ্ডের মধ্যে দিয়ে বর্ধিত হতে থাকে, একে পরাগনালি বলে। 

2. পরাগনালির মধ্যে দুটি পুংজননকোশ বা পুংগ্যামেট তৈরি হয়। 

3. পরাগনালি ডিম্বাশয়ে অবস্থিত ডিম্বকের মধ্যে প্রবেশ করে এবং পুংগ্যামেট দুটিকে ভ্রূণস্থলীতে (Embryo sac) মুক্ত করে। 

4. ফলে, একটি পুংগ্যামেট ভ্রূণস্থলীর মেরুতে অবস্থিত ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে ডিপ্লয়েড জাইগোট (2n) তৈরি করে। অপর পুংগ্যামেটটি ভ্রূণস্থলীর কেন্দ্রে অবস্থিত নির্ণীত নিউক্লিয়াসকে (2n) নিষিক্ত করে ট্রিপ্লয়েড সস্য নিউক্লিয়াস (3n) গঠন করে। এইভাবে সপুষ্পক গুপ্তবীজী উদ্ভিদের দ্বিনিষেক সম্পন্ন হয়। পরাগরেণু অঙ্গজ নিউক্লিয়াস (নষ্ট হয়ে যায়) পুংগ্যামেট (2টি) | পুংগ্যামেট (n) x ডিম্বাণু (n) পুংগ্যামেট (n) x নির্ণীত নিউক্লিয়াস (2n) প্রথম নিষেক দ্বিতীয় নিষেক | ভূণাণু বা জাইগোট (2n) সস্য বা এন্ডোস্পার্ম (31) ।

জেনে রাখো : পুংজনন কোশের ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে জাইগোট গঠন করাকে প্রজননীয় বা জেনারেটিভ নিষেক বলে। অপর পুংজনন কোশ নির্ণীত নিউক্লিয়াসকে নিষিক্ত করে ট্রিপ্লয়েড সস্য গঠন করাকে। অঙ্গজ বা ভেজিটেটিভ নিষেক বলে।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর:

প্রশ্ন 1. ফুলের (Flower) কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লেখো। 

উত্তর: ফুলের বৈশিষ্ট্য : 1.ফুল উদ্ভিদের অস্থায়ী অঙ্গ। 

2. এটি সীমিত বৃদ্ধিসম্পন্ন হয়।

3.উদ্ভিদের বিটপের রূপান্তরিত বা পরিবর্তিত রূপ হল ফুল। 

4. ফুল উদ্ভিদের কাণ্ডের শীর্ষে বা পাতার কক্ষের পুষ্পমুকুল থেকে ফুল উৎপন্ন হয়। 

5. এটি উদ্ভিদের জননাঙ্গ যা উদ্ভিদের বংশবিস্তারে সাহায্য করে। 

প্রশ্ন 2. বৃতি কাকে বলে? বৃতির বৈশিষ্ট্য ও কাজ লেখো। * 

উত্তর: বৃত্তি (Calyx) : ফুলের সবচেয়ে বাইরের সবুজ রঙের সরু পাতার মতো স্তবককে বৃতি (Calyx) বলে। 

বিবৃতির বৈশিষ্ট্য : 1.বৃতি ফুলের প্রথম স্তবক। 2. বৃতির একক অংশকে বৃত্যংশ বা সেপাল বলে। 3.বৃত্যংশগুলি পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাকে, যুক্তবৃত্তি (জবা) এবং বৃত্যংশগুলি পৃথক পৃথকভাবে অবস্থান করলে, তাকে মুক্তবৃত্তি (গোলাপ) বলে। 4. বৃতি সবুজ রঙের এবং বিভিন্ন আকৃতির হয়। যেমন— কাপসদৃশ (তুলো), রোমের মতো (সূর্যমুখী), ঘণ্টাকৃতি (পিটুনিয়া), চোঙাকৃতি (ধুতুরা), ফানেলাকৃতি (অ্যাট্রোপা) প্রভৃতি। 

বৃত্তির কাজ : বৃতি সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরি করে। ও কুঁড়ি অবস্থায় ফুলকে ঢেকে রাখে এবং প্রতিকূলপরিবেশ থেকে রক্ষা করে। ও রঙিন বৃত্তি (মুসেন্ডা, বাগানবিলাস কীটপতঙ্গকে আকৃষ্ট করে পরাগসংযোগে সাহায্য করে। 

জেনে রাখো : মুসেন্ডা ফুলে বৃহত্তম বৃত্যংশ দেখা যায়। 

প্রশ্ন 3.দলমণ্ডল বা করোলা (Corolla) দলমণ্ডলের বৈশিষ্ট্য ও কাজ লেখো। কাকে বলে? 

উত্তর: দলমণ্ডল (Corolla) : বর্ণহীন বা বর্ণযুক্ত, গন্ধহীন বা গন্ধযুক্ত ফুলের প্রসারিত দ্বিতীয় স্তবককে দলমণ্ডল (Corolla) বলে। 

দলমণ্ডলের বৈশিষ্ট্য : 1.ফুলের দ্বিতীয় স্তবক। 2.দলমণ্ডলের একক অংশকে দলাংশ বা পাপড়ি বা পেটাল বলে। 3.দলাংশগুলি পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকলে, তাকে যুক্তদল (ধুতুরা) এবং পৃথক থাকলে, তাকে মুক্তদল (জবা) বলে। 4.দলমণ্ডল বিভিন্ন বর্ণ, গন্ধ ও আকারযুক্ত হয়।

দলমণ্ডালর কাজ : 1. বর্ণ এবং গন্ধযুক্ত হওয়ায় কীটপতঙ্গকে আকৃষ্ট করে এবং পরাগসংযোগে সাহায্য করে। 2. কুড়ি অবস্থায় প্রতিকূল পরিবেশের হাত থেকে পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবককে রক্ষা করে। মুক্ত দলাংশ -যুক্ত দলাংশ করোলা টিউব মুক্তদল দলমণ্ডলের প্রকারভেদ 

প্রশ্ন 4. ফুলের তৃতীয় স্তবকের গঠন ও কাজ লেখো। 

উত্তর: ফুলের তৃতীয় স্তবকটি হল— পুংকেশর চক্র বা পুংস্তবক (Androecium)। পুংকেশর বা স্ট্যামেন বলে। ও প্রতিটি পুংকেশর দুটি অংশ দ্বারা গঠিত। 

পুংস্তবকের গঠন : • পুংস্তবকের যথা— (i) দণ্ডাকার পুংদণ্ড (Filament) এবং (ii) থলির মতো পরাগধানী (Anther)। ও পরাগধানীগুলি প্রধানত চারটি প্রকোষ্ঠযুক্ত হয় যাতে হলুদ বর্ণের অসংখ্য পরাগরেণু থাকে। পুংদণ্ড 

পুংস্তবকের কাজ : পরাগধানীতে পরাগরেণু উৎপন্ন হয়। ও পরাগরেণু পুংকেশর পুংজননকোশ গঠন করে এবং ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে বীজ উৎপাদনে সাহায্য করে।

প্রশ্ন 5. ফুলের চতুর্থ স্তবকের গঠন ও কাজ লেখো। 

উত্তর: ফুলের চতুর্থ স্তবকটি হল—গর্ভকেশর চক্র বা স্ত্রীস্তবক (Gynoecium)। 

স্ত্রীস্তবকের গঠন : 1.স্ত্রীস্তবকের প্রতিটি অংশকে গর্ভপত্র বা Carpel বা Pistil বলে। 2. প্রতিটি গর্ভপত্র তিনটি অংশ দ্বারা গঠিত। যথা—গর্ভমুণ্ড (Stigma), গর্ভদণ্ড (Style) এবং গর্ভাশয় (Ovary)। 3. গর্ভাশয় এক বা একাধিক প্রকোষ্ঠযুক্ত হয় এবং প্রত্যেক প্রকোষ্ঠে এক বা একাধিক ডিম্বক বর্তমান ।

স্ত্রীস্তবকের কাজ : ও গর্ভাশয়ের ডিম্বকে ডিম্বাণু উৎপন্ন হয়। ও গর্ভমুণ্ড পরাগরেণু গ্রহণ করে ও পরাগসংযোগ ঘটায়। ও নিষেকের পর ডিম্বক থেকে বীজ ও গর্ভাশয় থেকে ফল উৎপন্ন হয়। 

জেনে রাখো : জবা ফুলের ডিম্বাশয়ে পাঁচটি প্রকোষ্ঠ বর্তমান। প্রতিটি | প্রকোষ্ঠে ডিম্বক থাকে ও প্রত্যেক ডিম্বকের মধ্যে ডিম্বাণু থাকে।

 প্রশ্ন 6. ফুলকে পরিবর্তিত বিটপ বলার কারণগুলি লেখো। 

উত্তর: ফুলকে পরিবর্তিত বিটপ বলার কারণগুলি হল— 

1. কাণ্ডের মতো পুষ্পাক্ষও পর্ব, পর্বমধ্য যুক্ত হয় এবং পর্ব থেকে পুষ্পস্তবক উৎপন্ন হয় ও পত্রবিন্যাসের মতোই সজ্জিত থাকে। এজন্য পুষ্পাক্ষকে পরিবর্তিত কাণ্ড বলা হয়। যেমন— শ্বেত হুড়হুড়ে ফুলে বৃতি ও দলমণ্ডলের মধ্যবর্তী দীর্ঘ পর্বমধ্য (অ্যানথোফোর বা দলধর) বর্তমান। 

2. বৃত্যংশ, দলাংশ প্রভৃতি ফুলের স্তবকগুলি পাতার মতোই প্রসারিত ও শিরাবিন্যাসযুক্ত হয়। 

3. বৃতি পাতার মতো ক্লোরোফিল, পত্ররন্দ্রযুক্ত ও খাদ্য উৎপাদনে সক্ষম হয়।

 4.পত্রমুকুলের মতো পুষ্পমুকুলও পাতার কক্ষ ও কাণ্ডের শীর্ষে উৎপন্ন হয়। 

প্রশ্ন 7. পরাগযোগের গুরুত্ব বা তাৎপর্যগুলি লেখো।

উত্তর: পরাগাযাগের গুরুত্ব বা তাৎপর্য : 1• সপুষ্পক উদ্ভিদের নিষেকের আগে পরাগসংযোগ একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ঘটনা। ফলে পরাগরেণু থেকে পুংজননকোশ গঠিত হয়, যা ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে। 2. পরাগসংযোগের ফলেই উদ্ভিদে বীজ সৃষ্টি হয়, যা উদ্ভিদের বংশবিস্তারে সাহায্য করে। 3.পরাগসংযোগ ডিম্বাশয়ের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করে। ও পরাগসংযোগের 

অনুরূপ প্রশ্ন : পরাগযোগের সুবিধাগুলি উল্লেখ করো।

প্রশ্ন 8. স্বপরাগযোগের (Self pollination) প্রকারভেদগুলি উদাহরণসহ আলোচনা করো। 

উত্তর: স্বপরাগযোগ (Self pollination) দু-প্রকার। যথা— 1• আটাগ্যামি (Autogamy) : কোনো উভলিঙ্গ ফুলের পরাগধানীতে উৎপন্ন পরাগরেণু ওই ফুলেরই গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হলে, তাকে অটোগ্যামি বলে। উদাহরণ — জবা, করবী, অপরাজিতা, ধুতুরা প্রভৃতি যে-কোনো উভলিঙ্গ ফুল। 

2. গেইটোলোগ্যামি (Geitonogamy) : যে প্রকার স্বপরাগযোগে কোনো ফুলের পরাগধানীতে উৎপন্ন পরাগরেণু ওই গাছেরই অন্য ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হয়, তাকে গেইটোনোগ্যামি বলে। উদাহরণ— লাউ, কুমড়ো প্রভৃতি একলিঙ্গ ফুলের মধ্যে বা উভলিঙ্গ ফুলের মধ্যে ঘটে। 

প্রশ্ন 9. স্বপরাগযোগের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি লেখো। 

উত্তর: স্বপরাগাযাগের সুবিধা : 1. স্বপরাগযোগ সহজ ও নিশ্চিত প্রক্রিয়া। এ কারণে এর সফলতার হার বেশি হয়। 2. স্বপরাগযোগে 

অধিক সংখ্যায় পরাগরেণু প্রয়োজন হয় না ফলে পরাগরেণুর অপচয় কম হয়। 3. নতুন অপত্যে পুনরায় একই বৈশিষ্ট্যের আবির্ভাব ঘটে। ফলে, উৎপন্ন উদ্ভিদে প্রজাতির বিশুদ্ধতা বজায় থাকে। এই প্রক্রিয়া বাহকের ওপর নির্ভরশীল নয়। 

স্বপরাগাযাগের অসুবিধা :1. নতুন বৈশিষ্ট্যযুক্ত অপত্য উদ্ভিদ সৃষ্টি হয় না। ফলে, উন্নততর প্রজাতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। 2. স্বপরাগযোগের মাধ্যমে উৎপন্ন বীজগুলি নিম্নমানের ও দুর্বল প্রকৃতির হয় এবং নতুন পরিবেশে অভিযোজিত হতে পারে না। 3. অপত্য উদ্ভিদগুলি দুর্বল হওয়ায় এদের অনাক্রম্যতা ও অঙ্কুরোদ্‌গম ক্ষমতা হ্রাস পায় । 

প্রশ্ন 10. ইতর পরাগযোগকে অ্যালোগ্যামি (Allogamy) বলা হয় কেন? ইতর পরাগযোগের প্রকারভেদগুলি লেখো। 

উত্তর: ইতর পরাগযোগে একটি গাছের ফুলের পরাগরেণু একই প্রজাতিভুক্ত অন্য গাছের ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হয় বলে, একে অ্যালোগ্যামি (Allogamy অর্থাৎ, Allo = other বা অন্য, gamous = marriage বা মিলন) বলা হয়। 

ইতর পরাগাযাগের প্রকারভেদ : বাহকের ওপর নির্ভর করে ইতর পরাগযোগ দুই প্রকার। যথা— @ অ্যাবায়োটিক – বায়ুপরাগী, জলপরাগী ও বায়োটিক পতঙ্গপরাগী, পক্ষীপরাগী । 

প্রশ্ন 11. ইতর পরাগযোগের সুবিধা ও অসুবিধাগুলি লেখো।

উত্তর: ইতর পরাগযোগের সুবিধা : 1. উৎপন্ন উদ্ভিদে নতুন বৈশিষ্ট্য তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 2. উৎপন্ন উদ্ভিদ সবল ও অধিক জীবনীশক্তি যুক্ত হয়। 3. উৎপন্ন উদ্ভিদ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাযুক্ত ও বেশি অভিযোজন ক্ষমতাযুক্ত হয়। 4. নতুন প্রজাতির উদ্ভব ঘটে। 5. অপত্য উদ্ভিদগুলির অঙ্কুরোদ্‌গমের হার বেশি হয় এবং উন্নতমানের ফল ও বীজ উৎপন্ন হয়।

ইতর পরাগাযাগের অসুবিধা :1. বাহকের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় সাফল্যের হার তুলনামূলকভাবে কম থাকে। 2. পরাগরেণুর বেশি অপচয় ঘটে। 3. নতুন বৈশিষ্ট্যের সমাবেশ ঘটায় প্রজাতির বিশুদ্ধতা নষ্ট হয়। 4.বাহককে আকর্ষণের জন্য উদ্ভিদকে বিভিন্ন প্রকার কৌশল অবলম্বন করতে হয় (যেমন— উজ্জ্বল বর্ণ ও গন্ধযুক্ত ফুল সৃষ্টি, মকরন্দ উৎপাদন প্রভৃতি) তাই উদ্ভিদের পুষ্টি উপাদানের চাহিদা বেশি থাকে ও উদ্ভিদের শক্তিক্ষয় হয়। 

প্রশ্ন 12. বায়ুপরাগী ফুলের তিনটি অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য লেখো। 

উত্তর: বায়ুপরাগী ফুলের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য : 1

• ক্ষুদ্র গঠন : ফুলগুলি ছোটো, বর্ণ ও গন্ধহীন এবং মকরন্দবিহীন হয়। 

2. শুষ্ক, হালকা পরাগরেণু : পরাগরেণুগুলি শুষ্ক, হালকা ও মসৃণ। এগুলি সহজে বাতাসে ভাসতে পারে। অনেক বেশি পরাগরেণু উৎপন্ন করে। 

3• পালকের মতো গর্ভমুণ্ড : গর্ভমুণ্ড প্রসারিত, দীর্ঘ ও পালকের মতো গঠনযুক্ত হয়। দলমণ্ডলের বাইরে গর্ভমুণ্ড অবস্থান করায় সহজেই ভাসমান পরাগরেণুর সংস্পর্শে আসতে পারে।

প্রশ্ন 13. প্রাণীপরাগী ফুলের (Zoophilous flower) তিনটি অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য লেখো। 

উত্তর: প্রাণী পরাগী ফুলের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য : 

1• বর্ণ ও গন্ধ সৃষ্টি : প্রধানত ফুলের পাপড়িগুলি (কিছু কিছু = { উদ্ভিদের বৃত্যংশ) উজ্জ্বল বর্ণযুক্ত এবং গন্ধযুক্ত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফুলের আকার বড়ো হয়। 

2. মকরন্দ উৎপাদন : ফুলে মকরন্দ গ্রন্থি থেকে মিষ্ট শর্করা মিশ্রিত রস বা মকরন্দ নিঃসৃত হয়। 

3. আঠালো বা কণ্টকযুক্ত পরাগরেণু : পরাগরেণু আঠালো প্রকৃতির বা কণ্টকযুক্ত হওয়ায় সহজেই বাহকের গায়ে আটকে যায় ও অন্য ফুলে স্থানান্তরিত হয়।

 4. আঠালো গর্ভমুণ্ড : গর্ভমুণ্ড আঠালো হওয়ায় পরাগরেণুগুলি সহজে এতে আটকে যায়।

প্রশ্ন 14. চিত্রসহ ভ্রূণস্থলীর গঠন সংক্ষেপে বর্ণনা করো। 

উত্তর: ভূণালীর গঠন সংক্ষেপে বর্ণনা করো : 

1• ভ্রূণস্থলী বা এমব্রায়ো স্যাক ডিম্বাশয়ের ডিম্বকের মধ্যে অবস্থিত এবং একটি পাতলা পর্দা দ্বারা আবৃত থাকে।

2. এর মধ্যে ৪টি হ্যাপ্লয়েড (n) নিউক্লিয়াস থাকে। 

3. ডিম্বকরঞ্জের দিকে -সহকারী কোশ (দুটি) তিনটি নিউক্লিয়াসকে একত্রে গর্ভযন্ত্র বলে। তাতে একটি বড়ো ডিম্বাণু (n) থাকে। 

4• ডিম্বকমূলের দিকে অবস্থিত তিনটি নিউক্লিয়াসকে প্রতিপাদ কোশসমষ্টি (n) বলা হয়। 

5. ভূণস্থলীর কেন্দ্রীয় অঞ্চলে দুটি হ্যাপ্লয়েড নিউক্লিয়াসকে পোলার নিউক্লিয়াস বলে। যা পরবর্তীকালে পরস্পরের · ডিম্বাণু (n) নির্ণীত নিউক্লিয়াস (2n) O প্রতিপাদ কোশ (তিনটি) ভ্রূণস্থলীর গঠন সঙ্গে যুক্ত হয়ে নির্ণীত নিউক্লিয়াস (2n) গঠন করে।

প্রশ্ন 15. নিষেকের প্রকারভেদগুলি লেখো। 

উত্তর: নিষেক পদ্ধতিতে পরাগরেণু পরাগনালিতে প্রবেশের পর বিভাজন ও পরিস্ফুরণের মাধ্যমে দুটি হ্যাপ্লয়েড (n) পুংগ্যামেট উৎপন্ন হয়। পুংগ্যামেট দুটি পরাগনালির অগ্রভাগে অবস্থান করে। পরাগনালি ক্রমশ দীর্ঘ হয়ে ডিম্বকরন্ধ্র বা ডিম্বকত্বক বা ডিম্বকমূলের মধ্য দিয়ে ডিম্বকে প্রবেশ করে। পরাগনালির ডিম্বকের মধ্যে প্রবেশের উপর ভিত্তি করে তিনপ্রকার নিষেক ঘটে— 

1. পোরোগ্যামি (Porogamy) : পরাগনালি যখন ডিম্বকরন্দ্র ভেদ করে ডিম্বকে প্রবেশ করে, তখন তাকে পোরোগ্যামি বলে। সাধারণত সব গুপ্তবীজী উদ্ভিদেই এই ধরনের নিষেক ঘটে। 

2.চ্যালাজোগ্যামি (Chalazogamy) ভেদ করে ডিম্বকে প্রবেশ করলে, তাকে চ্যালাজোগ্যামি বলে। ক্যাসুয়ারিনা জাতীয় উদ্ভিদে এই নিষেক দেখা যায় ।

3. মেসোগ্যামি (Mesogamy) : পরাগনালি ডিম্বকত্বক ভেদ করে ডিম্বকে প্রবেশ করলে, তাকে মেসোগ্যামি বলে। কিউকারবিটা (Cucurbita) জাতীয় উদ্ভিদে এইপ্রকার নিষেক ঘটে।

প্রশ্ন 16. নিষেকের গুরুত্ব আলোচনা করো। 

উত্তর: নিষেকের গুরুত্ব : 1. পুংগ্যামেট (n) ও ডিম্বাণুর (n) মিলনে যে জাইগোট (2n) গঠিত হয় তা বারংবার বিভাজনের মাধ্যমে ভ্রূণ গঠন করে। 2. পুংগ্যামেট (n) ও নির্ণীত নিউক্লিয়াসের (2n) মিলনে যে সস্য নিউক্লিয়াস (3n) উৎপন্ন হয়, তা ভ্রূণের ভবিষ্যৎ খাদ্যরূপে ব্যবহৃত হয়। 3. নিষেকের পর ডিম্বক বীজে ও গর্ভাশয় ফলে পরিণত হয়। 4. বীজ থেকে নতুন চারাগাছ সৃষ্টি হয় এবং উদ্ভিদের বংশবিস্তার ঘটে। 

জেনে রাখো : সপুষ্পক উদ্ভিদে নিষেক পদ্ধতি প্রথম পর্যবেক্ষণ করেন বিজ্ঞানী স্ট্রাসবার্জার (Strasburger, 1884)।

প্রশ্ন 17.কখন ও কীভাবে পরাগনালি তৈরি হয় ?

উত্তর: 1.পরাগরেণু গর্ভমুণ্ডে আপতিত হওয়ার পর অর্থাৎ পরাগসংযোগের পর পরাগরেণু থেকে পরাগনালির সৃষ্টি হয়। 

2.পরাগসংযোগের পর গর্ভমুণ্ডীয় তরল (Stigmatic fluid) শোষণ করে পরাগরেণুগুলির অঙ্কুরোদ্‌গম ঘটে। 

3• এরপর পরাগরেণুর অন্তস্ত্বক বা ইনটাইন রেণুরন্ধ্রের মধ্য দিয়ে দুটি পুংগ্যামেট ও একটি নালিকা নিউক্লিয়াসসহ নলের মতো বর্ধিত হয়, একে পরাগনালি (Pollen tube) বলে। 

4. পরাগনালি গর্ভমুক্ত ভেদ করে গর্ভদণ্ডের ভিতর দিয়ে ভ্রূণস্থলীর দিকে অগ্রসর হয় এবং শেষে দুটি পুংগ্যামেটকে ভ্রূণস্থলীতে মুক্ত করে।

জেনে রাখো : বিজ্ঞানী অ্যামিসি (Amici, 1824) পটুলাকা ফুলের পরাগনালিকা আবিষ্কার করেন।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর:

প্রশ্ন 1. ফুল (Flower) কাকে বলে ? 

উত্তর: ফুল (Flower) : উদ্ভিদের যৌন জননে অংশগ্রহণকারী, সীমিত বৃদ্ধিসম্পন্ন যে রূপান্তরিত বিটপ অংশ পরাগসংযোগ ও নিষেকের মাধ্যমে ফল ও বীজ গঠন করে, তাকে ফুল বলে। 

জেনে রাখো : সপুষ্পক উদ্ভিদ আছে। সমগ্র পৃথিবীর মধ্যে মোট 2,50,000 প্রজাতির সপুষ্পক উদ্ভিদ আছে।

প্রশ্ন 2. একটি আদর্শ ফুলের কয়টি স্তবক ও কী কী ? * 

উত্তর: একটি আদর্শ ফুলের চারটি স্তবক। পুংস্তবক যথা— বৃতি (Calyx) ও দলমণ্ডল (Corolla) ও এবং ও স্ত্রীস্তবক (Gynoecium)। (Androecium) 

প্রশ্ন 3.পুষ্পাক্ষ (Thalamus) কাকে বলে? এর কাজ কী ? 

উত্তর: পুষ্পাক্ষ : ফুলের যে সংকুচিত ও সুসংহত অংশের ওপর সমস্ত পুষ্পস্তবকগুলি নির্দিষ্ট রীতিতে সজ্জিত থাকে, তাকে পুষ্পাক্ষ বা থ্যালামাস বলে। " পুষ্পাক্ষর গর্ভকেশরকে ধারণ করে। কাজ : বৃতি, দলমণ্ডল, পুংকেশর এবং 

প্রশ্ন 4. একলিঙ্গ ফুল (Unisexual flower) কাকে বলে? উদাহরণ দাও । 

উত্তর: যে ফুলে পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবকের মধ্যে যে-কোনো একটি উপস্থিত থাকে, তাকে একলিঙ্গ ফুল বলে। একলিঙ্গ ফুল কেবলমাত্র পুংস্তবক যুক্ত হলে, তাকে পুরুষ ফুল ও স্ত্রীস্তবক যুক্ত হলে, তাকে স্ত্রী ফুল বলে।

উদাহরণ— লাউ, কুমড়ো, পেঁপে প্রভৃতি ফুল।

প্রশ্ন 5. উভলিঙ্গ ফুল (Bisexual flower) কাকে উদাহরণ দাও। বলে? 

উত্তর: যে ফুলে পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক উভয়েই উপস্থিত থাকে, তাকে উভলিঙ্গ ফুল বলে। এ উদাহরণ প্রভৃতি ফুল । জবা, ধুতুরা 

প্রশ্ন 6. বন্ধ্যা ফুল (Neuter flower) কাকে বলে ?

উত্তর: যে ফুলে দুটি মুখ্য জনন স্তবক পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক কোনোটিই থাকে না বা থাকলেও নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে, তাকে ক্লীব বা বন্ধ্যা ফুল (Neuter flower ) বলে। একটি ক্লীবফুল (সূর্যমুখী) 

উদাহরণ— সূর্যমুখীর কিরণপুষ্পিকা (Ray florets)।

প্রশ্ন 17. সম্পূর্ণ ফুল (Complete flower) কাকে বলে ? উদাহরণ দাও। 

উত্তর: যে ফুলে চারটি স্তবক অর্থাৎ বৃতি, দলমণ্ডল, পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবক বর্তমান, তাকে সম্পূর্ণ ফুল বলে। AL 

উদাহরণ- জবা, ধুতুরা, অপরাজিতা প্রভৃতি। সম্পূর্ণ ফুল (জবা) 

প্রশ্ন 8. অসম্পূর্ণ ফুল (Incomplete flower) কাকে বলে? উদাহরণ দাও। 

উত্তর: যে ফুলে এক বা একাধিক স্তবক অনুপস্থিত থাকে, তাকে অসম্পূর্ণ ফুল বলে। 

উদাহরণ- কুমড়ো ফুল (স্ত্রী ফুলে পুংস্তবক এবং পুরুষ ফুলের স্ত্রীস্তবক অনুপস্থিত থাকে), রজনিগন্ধা (বৃত্তি এবং দলমণ্ডল যুক্ত হয়ে একটি স্তবক গঠন করে) প্রভৃতি। অসম্পূর্ণ ফুল (রজনিগন্ধা) 

জেনে রাখো : সহবাসী উদ্ভিদ : যে-সমস্ত উদ্ভিদে পুং ফুল ও স্ত্রী ফুল | একইসঙ্গে জন্মায়, তাদের সহবাসী উদ্ভিদ বলে। যেমন— লাউ, কুমড়ো প্রভৃতি।

 ভিন্নবাসী উদ্ভিদ : যে-সমস্ত উদ্ভিদে কেবলমাত্র পুং ফুল বা স্ত্রী ফুল জন্মায়, তাকে ভিন্নবাসী উদ্ভিদ বলে। যেমন— পেঁপে, তাল প্রভৃতি। 

মিশ্রবাসী উদ্ভিদ : যে-সমস্ত উদ্ভিদে পুং ফুল, স্ত্রী ফুল ও উভলিঙ্গ ফুল সৃষ্টি হয়, তাকে মিশ্রবাসী উদ্ভিদ বলে। যেমন- আম। 

প্রশ্ন 9. সমাঙ্গ ফুল (Regular flower) কী ? উদাহরণ দাও। 

উত্তর: যে ফুলের প্রতিটি স্তবকের অংশগুলি অর্থাৎ বৃত্যংশ, দলাংশ, পুংকেশর ও গর্ভকেশরগুলি আকৃতিগতভাবে পরস্পর সমান হয় এবং সমান দূরত্বে অবস্থান করে, তাকে সমাঙ্গ বা সুষম ফুল বলে। 

উদাহরণ— জবা, ধুতুরা প্রভৃতি।

প্রশ্ন 10. অসমাঙ্গ ফুল (Irregular flower) কাকে বলে? উদাহরণ দাও। 

উত্তর: যে ফুলে প্রতিটি স্তবকের অংশগুলি আকৃতিগতভাবে অসমান ও অসম দূরত্বে অবস্থান করে, তাকে অসমাঙ্গ বা বিষম।

উদাহরণ— ফুল বলে। অপরাজিতা, মটর ফুল প্রভৃতি।

প্রশ্ন 11. একপ্রতিসম ফুল (Zygomorphic বলে? উদাহরণ দাও । 

উত্তর: যে-সমস্ত ফুলকে একটিমাত্র উল্লম্বতলে ছেদ করলে দুটি পরস্পর সমান অংশ পাওয়া যায়, তাদের একপ্রতিসম ফুল বলে। 

উদাহরণ—বক ফুল, মটর ফুল, অপরাজিতা প্রভৃতি। একপ্রতিসম ফুল (অপরাজিতা) 

প্রশ্ন 12. বহুপ্রতিসম ফুল (Actinomorphic flower) কাকে বলে? উদাহরণ দাও । 

উত্তর : যে-সমস্ত যে-কোনো উল্লম্বতলে ছেদ করলে দুটি পরস্পর সমান অংশ পাওয়া যায়, তাকে বহুপ্রতিসম (Actino - morphic) ফুল বলে। 

উদাহরণ জবা, ধুতুরা, নয়নতারা, করবী প্রভৃতি। - বহুপ্রতিসম ফুল (নয়নতারা) 

প্রশ্ন 13. অপ্রতিসম ফুল (Asymmetrical flower) কাকে বলে? উদাহরণ দাও।

উত্তর: যে-সমস্ত ফুলকে যে-কোনো উল্লম্বতলে ভাগ করলেও দুটি পরস্পর সমান অংশ পাওয়া যায় না, তাকে অপ্রতিসম (Asymmetrical) ফুল বলে। 

উদাহরণ – সর্বজয়া, অর্কিড প্রভৃতি ।

প্রশ্ন 14. পুষ্পপুট বা পেরিয়াথ (Perianth) কাকে বলে ? 

উত্তর: কোনো কোনো ফুলের বৃতি ও দলমণ্ডল যে বিশেষ স্তবক গঠন করে, তাকে পুষ্পপুট বা পেরিয়াথ বলে। পুষ্পপুটের প্রতিটি একক অংশকে টেপাল বলে। এটি দু-প্রকার। যথা— 

1. বৃতিসদৃশ পুষ্পপুট সুপারি, নারকেল এবং একটি পুষ্পপুটের উদাহরণ (লিলিফুল 2. দলসদৃশ পুষ্পপুট : কলাবতী, লিলি, রজনিগন্ধা প্রভৃতি ।

প্রশ্ন 15. পরাগধানী (Anther) কাকে বলে ? এর কাজ কী ?

উত্তর: পুংকেশরের পুংদণ্ডের ওপরে প্রধানত চারটি প্রকোষ্ঠযুক্ত যে থলির মতো গঠন উপস্থিত থাকে, তাকে পরাগধানী বলে । 

" পরাগধানীর কাজ : পরাগধানী থেকে হ্যাপ্লয়েড (n) পরাগরেণু উৎপন্ন হয়। কোনো কোনো ফুলে পুংকেশর নিষ্ক্রিয় 

জেনে রাখো : কোনো কোনো ফুলে পুংকেশর নিষ্ক্রিয় পরাগধানীবিহীন হয়, এদের স্ট্যামিনোড (Staminode) বলে। এবং 

প্রশ্ন 16. পরাগযোগের বাহক বলতে কী বোঝো?

উত্তর : যে-সমস্ত মাধ্যমের দ্বারা কোনো ফুলের পরাগরেণু অন্য ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হয়, তাদের পরাগযোগের বাহক বলা হয়। পরাগযোগের বাহক দু-প্রকার। যথা _ 1.অজীব বাহক: (যেমন— জল ও বায়ু) এবং 2. সজীব বাহক : (যেমন— মথ, মৌমাছি, প্রজাপতি, পাখি, শামুক প্রভৃতি প্রাণী)। 

প্রশ্ন 17. বায়ুপরাগী ফুলের পুংকেশর ও গর্ভপত্রের একটি করে বৈশিষ্ট্য লেখো। 

উত্তর: পুংকেশরের বৈশিষ্ট্য : পুংদণ্ড লম্বা ও পরাগধানী সর্বমুখ প্রকৃতির হয় । 

গর্ভপত্রের বৈশিষ্ট্য : গর্ভদণ্ড লম্বা এবং গর্ভমুণ্ড শাখান্বিত ও রোমশ হয়। পাতাশ্যাওলা ফুলে পরাগযোগ কীভাবে ঘটে?

প্রশ্ন 18. পাতাশ্যাওলা ফুলে পরাগযোগ কীভাবে ঘটে?

উত্তর : পাতাশ্যাওলা ফুলে পরাগযোগ পদ্ধতি : 1. পাতাশ্যাওলা জলে সম্পূর্ণ নিমজ্জিত একলিঙ্গ উদ্ভিদ। 2. পুং উদ্ভিদের জলের নীচে থাকা পুং ফুল পরিণত হলে বৃত্ত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জলের ওপরে ভাসতে থাকে। 3. স্ত্রী উদ্ভিদে উৎপন্ন স্ত্রী ফুল পরিণত হলে কুণ্ডলিত বৃত্ত প্রসারিত হয় ও স্ত্রী ফুল জলের ওপরে ভেসে ওঠে। 4.এইসময় ভাসমান পুং ফুলের পরাগধানী বিদীর্ণ হলে পরাগরেণু নির্গত হয় ও স্ত্রী ফুলের গর্ভপত্রের আঠালো গর্ভমুণ্ডে আবদ্ধ হয় এবং পরাগসংযোগ ঘটে। 5. পরাগযোগের পর স্ত্রী ফুলের বৃত্তটি পুনরায় কুণ্ডলিত হলে নিষিক্ত স্ত্রী ফুল জলের নীচে চলে যায়।

প্রশ্ন 19. কামিনী ও জবা ফুল পরাগযোগের জন্য কোন্ কৌশল গ্রহণ করে ? 

উত্তর: 1.কামিনী ফুল রাত্রিবেলা ফোটে। একারণে কীটপতঙ্গ, মথ প্রভৃতি বাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য তীব্র গন্ধযুক্ত হয়। 2.জবা ফুল দিনেরবেলা ফোটে। একারণে প্রজাপতি, বোলতা প্রভৃতি কীটপতঙ্গদের আকৃষ্ট করার জন্য উজ্জ্বল লাল রঙের হয়।

প্রশ্ন 20. মৌমাছি, বোলতা, প্রজাপতি প্রভৃতি প্রাণীরা কীভাবে পরাগযোগে সাহায্য করে? 

উত্তর: মৌমাছি, বোলতা, প্রজাপতি প্রভৃতি কীটপতঙ্গ মকরন্দ ও পরাগরেণু খাওয়ার জন্য ফুলের ওপর বসে। এইসময় এদের রোমশ পা, শুঙ্গ ও ডানাতে পরাগরেণু লেগে যায়। এরপর পতঙ্গটি অন্য ফুলে মকরন্দ খাওয়ার জন্য বসলে পরাগরেণু ওই ফুলের গর্ভমুণ্ডে আবদ্ধ হয়, ফলে পরাগসংযোগ ঘটে।

প্রশ্ন 21. পাখির দ্বারা পরাগসংযোগের জন্য ফুলের দুটি কৌশল উল্লেখ করো। 

উত্তর: অরনিথোফিলি বা পাখির দ্বারা পরাগসংযোগের জন্য ফুলের দুটি কৌশল : ফুলগুলি বৃহৎ আকৃতির, উজ্জ্বল বর্ণযুক্ত ও মকরন্দযুক্ত হয়। ও ফুল গন্ধহীন হয়, দলমণ্ডল সাধারণত নলাকৃতি গঠন ধারণ করে এবং পুষ্পস্তবকগুলি শক্ত চামড়ার মতো (leathery) হয়। | জেনে রাখো : পাখিপরাগী ফুলে গন্ধ থাকে না। কারণ—পাখিরা | গন্ধের অনুভূতি গ্রহণে অক্ষম হয়। 

প্রশ্ন 22. গর্ভযন্ত্র (Egg apparatus) কী ? 

উত্তর: গর্ভপত্রের ভ্রূণস্থলী মধ্যস্থ ডিম্বকের অভ্যন্তরে ডিম্বক রন্ধ্রের দিকে উপস্থিত দুটি সহকারী কোশ বা সাইনারজিস (n) ও একটি ডিম্বাণু (n)-কে মিলিতভাবে গর্ভযন্ত্র (Egg apparatus) বলে। গর্ভযন্ত্র = সহকারী কোশ (2টি) + ডিম্বাণু (1টি) 

প্রশ্ন 23. ডিম্বক (Ovule) কাকে বলে? 

উত্তর: গর্ভপত্রের গর্ভাশয়ে ভ্রূণপোষক কলা দ্বারা আবৃত একটি ডিম্বকরন্দ্রযুক্ত, তিনটি প্রতিপাদ কোশ (n), একটি নির্ণীত নিউক্লিয়াস (2n), দুটি সহকারী কোশ (n) এবং একটি ডিম্বাণু (n) সমন্বিত থলির মতো গঠনকে ডিম্বক (Ovule) বলে।

প্রশ্ন 24. নিষেক কাকে বলে? [ME '01] গুপ্তবীজী উদ্ভিদে নিষেক কোথায় ঘটে? 

উত্তর:  শারীরবৃত্তীয় ও অঙ্গসংস্থানিকভাবে পৃথক পুংজননকোশ (পরাগরেণু থেকে উৎপন্ন) বা পুংগ্যামেট ও ডিম্বকে উৎপন্ন স্ত্রীজননকোশ বা ডিম্বাণুর মিলনকে নিষেক বলে। 

গুপ্তবীজী উদ্ভিদের গর্ভাশয়স্থিত ভ্রূণস্থলীর ডিম্বকের অভ্যন্তরে নিষেক ঘটে। 

প্রশ্ন 25. ফুলের গর্ভমুণ্ড কেটে দিলে কী হবে? 

উত্তর: ফুলের গর্ভমুণ্ড কেটে দিলে পরাগমিলনের জন্য রেণুগুলি স্থাপিত হতে না পারায় নিষেক হবে না, ফলে বীজ উৎপন্ন হবে না এবং উদ্ভিদের বংশবিস্তার ব্যাহত হবে। 

জেনে রাখো : নিষেক : পুংজননকোশ এবং স্ত্রীজননকোশের মিলন পদ্ধতি।

দ্বিনিষেক : একই সঙ্গে দুবার পুংজনন কোশ এবং স্ত্রীজনন কোশের মিলন | পদ্ধতি। 

স্বনিষেক : একই জীবদেহে উৎপন্ন পুংজনন কোশ ও স্ত্রীজনন কোশের মিলন পদ্ধতি। 

পরনিষেক : দুটি ভিন্ন জীবদেহে উৎপন্ন পুংজনন কোশ ও স্ত্রীজনন কোশের মিলন পদ্ধতি।

প্রশ্ন 26. নিষেকের পর গর্ভাশয়, ডিম্বক, গর্ভাশয় ত্বক, ডিম্বাণু, নির্ণীত নিউক্লিয়াস, সহকারী কোশ-এর কীরূপ রূপান্তর ঘটে? 

উত্তর: নিষেকের আগে নিষেকের পর 1 গর্ভাশয় 2 ডিম্বক ফল বীজ 3 গর্ভাশয় ত্বক ফলত্বক সস্য ডিম্বাণু 6 নির্ণীত নিউক্লিয়াস © সহকারী কোশ বিনষ্ট হয়ে যায়। 

প্রশ্ন 27. পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবককে অত্যাবশ্যকীয় জনন স্তবক বলে কেন ? 

উত্তর: পুংস্তবক হল সপুষ্পক উদ্ভিদের পুংগ্যামেট উৎপাদনকারী স্তবক এবং স্ত্রীস্তবক হল স্ত্রী গ্যামেট বা ডিম্বাণু উৎপাদনকারী স্তবক। এই পুংগ্যামেট ও স্ত্রীগ্যামেটের নিষেক ঘটার ফলে ভ্রূণ সৃষ্টি হয়। উদ্ভিদের যৌন জননের জন্য প্রয়োজনীয় পুংগ্যামেট ও স্ত্রীগ্যামেট উৎপাদন করে বলে পুংস্তবক ও স্ত্রীস্তবককে অত্যাবশ্যকীয় জনন স্তবক বলা হয়। 

প্রশ্ন 28. নালিকা নিউক্লিয়াস ও জনন নিউক্লিয়াস কী ? 

উত্তর: পরাগধানীতে পরাগরেণুর নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজম বিভাজিত হয়ে দুটি অসমান আয়তনযুক্ত কোশ সৃষ্টি করে। বড়ো কোশটি হল অঙ্গজ বা নালিকা কোশ আর নিউক্লিয়াসকে বলে নালিকা নিউক্লিয়াস। ছোটো মাকু আকৃতির কোশটি হল জনন কোশ এবং কোশস্থিত নিউক্লিয়াসকে জনন নিউক্লিয়াস বলে। 

পরিণতি : পরাগযোগের পর পরাগনালিকার অগ্রভাগে থাকা নালিকা নিউক্লিয়াস বিনষ্ট হয়ে যায় এবং জনন নিউক্লিয়াস বিভাজিত হয়ে দুটি পুংজননকোশ বা পুংগ্যামেট সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন 29. নির্ণীত নিউক্লিয়াস (Definitive nucleus) কী ? 

উত্তর: স্ত্রীলিঙ্গধর উদ্ভিদ বা ভ্রূণস্থলীর অভ্যন্তরে দুটি হ্যাপ্লয়েড মেরু নিউক্লিয়াস (n) পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়ে যে ডিপ্লয়েড নিউক্লিয়াস (2n) গঠন করে, তাকে নির্ণীত নিউক্লিয়াস বা ডেফিনেটিভ নিউক্লিয়াস বলে। 

প্রশ্ন 30. ইতর পরাগযোগ স্বপরাগযোগ অপেক্ষা উন্নত কেন?

উত্তর: 1. ইতর পরাগযোগের মাধ্যমে ভিন্নধর্মী বৈশিষ্ট্যের মিলন ঘটে, ফলে নতুন বৈশিষ্ট্যযুক্ত অপত্য উদ্ভিদ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে উদ্ভিদটি উন্নত বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ও উচ্চফলনসম্পন্ন হয়। ও ইতর পরাগযোগের মাধ্যমে উৎপন্ন উদ্ভিদগুলি অনেক বেশি প্রতিরোধ ক্ষমতাযুক্ত হয় ও অভিযোজনে সক্ষম হয় ফলে তাদের অভিব্যক্তির পথ সুগম হয়। 

প্রশ্ন 31. দ্বিনিষেকের দুটি তাৎপর্য লেখো। 

উত্তর: দ্বিনিষেকের তাৎপর্য :1. দ্বিনিষেকের ফলে ডিম্বক পরিবর্তিত ও পরিস্ফুটিত হয়ে বীজ গঠন করে। বীজ উদ্ভিদের বংশবিস্তারে সাহায্য করে। 2.নিষেকের মাধ্যমে নতুন বৈশিষ্ট্যযুক্ত প্রজাতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং গর্ভাশয় থেকে ফল গঠিত হয়। 3. দ্বিনিষেকের ফলে বীজে সস্য গঠিত হয় যা ভ্রূণের অঙ্কুরোদ্‌গমে ও শিশু উদ্ভিদ সৃষ্টির সময় প্রয়োজনীয় শক্তির উৎসরূপে কাজ করে। 

প্রশ্ন 32. ইতর পরাগযোগের সময় স্বপরাগযোগ রোধ করতে তুমি কী ব্যবস্থা নেবে ? 

উত্তর: ইতর পরাগযোগের সময় স্বপরাগযোগ রোধ করতে উভলিঙ্গ ফুল থেকে পুংকেশর অপসারণ করা আবশ্যক। একে পুরুষত্বহীনকরণ বা ইমাসকুলেশন বলে। এই পদ্ধতিতে ফুলের পরিণতি লাভের আগেই উভলিঙ্গ ফুল থেকে পুংকেশর বা পরাগধানী অপসারণ করা হয়। এর ফলে পরাগরেণুর ওই ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থানান্তরিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এ ছাড়া স্বপরাগযোগ রোধ করার জন্য স্ত্রীফুলকে ইতর পরাগযোগের সময় পর্যন্ত কাগজ বা কাপড় বা পলিথিন ব্যাগ দ্বারা ঢেকে রাখা হয় ও সুরক্ষিত করা হয়। 

প্রশ্ন 33. পুরুষত্বহীনকরণ বা ইমাসকুলেশন (Emasculation) কাকে বলে ? 

উত্তর: যে পদ্ধতিতে স্বপরাগযোগ বন্ধ করার জন্য এবং উভলিঙ্গ। ফুলকে স্ত্রী ফুলে পরিণত করতে তার পুংস্তবককে অপসারণ করা হয় বা পরাগরেণুকে নিষ্ক্রিয় করা হয়, তাকে ইমাসকুলেশন বলে।






No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();