ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের কয়েকটি ধারা: খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতক সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর| class 7 2nd chapter history question answer| - SM Textbook

Fresh Topics

Thursday, December 7, 2023

ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের কয়েকটি ধারা: খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতক সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর| class 7 2nd chapter history question answer|

 অধ্যায় 2 

ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের কয়েকটি ধারা: খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে দ্বাদশ শতক সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর| class 7 2nd chapter history question answer| 

সংক্ষেপে (৩০-৫০ টি শব্দের মধ্যে) উত্তর লেখো: *

1. এখনকার পশ্চিমবঙ্গের একটি মানচিত্র দ্যাখো। তাতে আদি-মধ্যযুগের বাংলার কোন্ কোন্ নদী দেখতে পাবে? 

উত্তর: আনুমানিক ৬০০-১২০০ খ্রিস্টাব্দের আদি-মধ্যযুগের বাংলার যে মানচিত্র দেওয়া হয়েছে তার অনেকগুলি নদী বর্তমানেও পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। সেগুলি হল- গঙ্গা, ভাগীরথী, ময়ূরাক্ষী, অজয়, দামোদর, রূপনারায়ণ, কাঁসাই, মহানদী, তিস্তা। 

2. শশাঙ্কের আমলে বাংলার আর্থিক অবস্থা কেমন, ছিল তা ভেবে লেখো। 

উত্তর: শশাঙ্কের আমলে (৬০৬-০৭ খ্রি. থেকে ৬৩৭- ৩৮ খ্রি.) বাংলার অর্থনীতি ছিল কৃষিনির্ভর। রাজ্যে নিয়মিত কৃষিকাজের ফলে অঢেল ফুল ও ফল পাওয়া যেত। রাজধানী কর্ণসুবর্ণ একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র ও. প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল। আশপাশের গ্রাম থেকে এই নগরের নাগরিকদের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আসত। জমির চাহিদা বৃদ্ধি হওয়ায় কৃষির গুরুত্ব বেড়ে যায়, ফলে সমাজ ক্রমশ গ্রামকেন্দ্রিক হয়ে পড়েছিল। হিউয়েন সাঙের বিবরণী থেকে জানা যায় যে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে বাংলার বাণিজ্যিক যোগাযোগ ছিল। রাঙামাটি থেকে জনৈক বণিক জাহাজ নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয় অঞ্চলে বাণিজ্য করতে গিয়েছিল। এর থেকে কর্ণসুবর্ণের বাণিজ্যিক সমৃদ্ধির ইঙ্গিত পাওয়া যায়।

3. মাৎস্যন্যায় কী? 

উত্তর: ৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে শশাঙ্কের মৃত্যুর পর বাংলার রাজনীতিতে চরম অরাজকতা, অনৈক্য ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। পুকুরের বড়ো মাছ যেমন ছোটো মাছ খেয়ে ফেলে, তেমনই সেই সময় শক্তিশালী লোক দুর্বল লোকের ওপর অত্যাচার চালায়। বাংলার ইতিহাসে এই বিশৃঙ্খল সময়কে মাৎস্যন্যায় বলা হয় । 

[a] প্রভাব: সপ্তম শতকের মধ্যভাগ থেকে অষ্টম শতকের মধ্যভাগ পর্যন্ত প্রায় একশো বছর বাংলায় 'জোর যার মুলুক তার'-এইরকম একটি পরিস্থিতি চলতে থাকে। এই যুগে প্রত্যেক ক্ষত্রিয়, ব্রাহ্মণ, বণিক ও সম্ভ্রান্ত লোেক ইচ্ছা অনুযায়ী নিজের নিজের এলাকা শাসন করত। ফলে বাংলায় কোনো কেন্দ্রীয় রাজশক্তি বা শাসক ছিল না। 

[b] পরিণতি: বছরের পর বছর এই অবস্থা চলার পর বাংলার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সভা 'প্রকৃতিপুঞ্জ' আনুমানিক ৭৫০ খ্রিস্টাব্দে গোপাল নামে একজনকে রাজা নির্বাচিত করে মাৎস্যন্যায়ের অবসান ঘটায়। গোপালের সিংহাসন লাভের মধ্য দিয়েই বাংলায় পাল বংশের রাজত্বের সূচনা ঘটে। 

4. খ্রিস্টীয় সপ্তম ও অষ্টম শতকের আঞ্চলিক রাজ্যগুলি কেমনভাবে গড়ে উঠেছিল? 

উত্তর: খ্রিস্টীয় সপ্তম ও অষ্টম শতকে বাংলা ও বাংলার বাইরে বিভিন্ন আঞ্চলিক রাজ্যের উৎপত্তি ঘটেছিল। 

[a] পূর্ব ভারত: ৬০৬-৬০৭ খ্রিস্টাব্দে শশাঙ্ক সমগ্র গৌড়, মগধ, বুদ্ধগয়া ও ওড়িশায় নিজ অধিকার স্থাপন করেছিলেন। 

[b] পশ্চিম ভারত: রাজস্থান ও গুজরাটে গুর্জর-প্রতিহার রাজারা শাসন করতেন। এই বংশের রাজা ভোজ (৮৩৬- ৮৫ খ্রি.) কনৌজ দখল করে নিজ অধিকার বৃদ্ধি করেছিলেন। 

[c] উত্তর ভারত: শশাঙ্কের সময়ে থানেসরের পুষ্যভূতি বংশীয় হর্ষবর্ধন উত্তর ভারতে নিজ ক্ষমতা শক্তিশালী করে তোলেন। তাঁর রাজধানী কনৌজ সেই সময় উত্তর ভারতের প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। 

[d] দক্ষিণ ভারত: এই সময়ে দক্ষিণ ভারতে চালুক্য, পল্লব, বংশের রাজারা শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। এ ছাড়া পরবর্তীকালে কাবেরী ও তার শাখানদীগুলির বদ্বীপকে ঘিরে চোল রাজ্য গড়ে উঠেছিল।

5. সেন রাজাদের আদিনিবাস কোথায় ছিল? কীভাবে তাঁরা বাংলায় শাসন কায়েম করেছিলেন? 

উত্তর: সেনদের আদিনিবাস সেন রাজাদের আদিনিবাস ছিল দক্ষিণ ভারতের কর্ণাট অঞ্চলে, অর্থাৎ মহীশূর ও তার আশপাশের এলাকা। 

সেন রাজাদের আধিপত্য কায়েম 

সেন রাজারা বংশগতভাবে ব্রাহ্মণ হলেও পরে ক্ষত্রিয় হয়ে যান। একাদশ শতকের কোনো-এক সময়ে সেনবংশীয় সামন্তসেন কর্ণাট থেকে বাংলার রাঢ় অঞ্চলে চলে আসেন। তিনি এবং তাঁর ছেলে হেমন্তসেনের আমলে বাংলার রাঢ় অঞ্চলে সেনদের আধিপত্য গড়ে উঠেছিল। পরবর্তীকালে হেমন্তসেনের ছেলে বিজয়সেন বাংলার রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলার সুযোগ নিয়ে সেন রাজ্যের পরিধি বাড়িয়ে তোলেন। তিনি একে একে রাঢ়, গৌড়, পূর্ববঙ্গ, মিথিলা, বরেন্দ্রভূমি নিজ অধিকারে নিয়ে আসেন। এইভাবে সমগ্র বাংলায় সেন শাসন কায়েম হয়েছিল। 

6. সুলতান মাহমুদ ভারত থেকে লুঠ করা ধনসম্পদ কীভাবে ব্যবহার করেছিলেন? 

উত্তর: খ্রিস্টীয় একাদশ শতকে গজনির সুলতান মাহমুদ আনুমানিক ১০০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১০২৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রায় সতেরো বার ভারত আক্রমণ করেন। 

মাহমুদের ভারত অভিযানের উদ্দেশ্য: ভারতের মন্দিরগুলি থেকে ধনসম্পদ লুণ্ঠন করে নিজ সাম্রাজ্যের উন্নতিকল্পে ব্যয় করাই ছিল তাঁর প্রধান উদ্দেশ্য।

লুষ্ঠিত ধনসম্পদের ব্যবহার: ভারত থেকে লুষ্ঠিত ধনসম্পদে মাহমুদ [a] তাঁর রাজধানী গজনি এবং অন্যান্য শহরকে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলেছিলেন। [b] গজনিতে প্রাসাদ, মসজিদ, গ্রন্থাগার, বাগিচা, জলাধার, খাল এবং আমু নদীর ওপর বাঁধ নির্মাণ করেছিলেন। [c] গজনিতে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করে সেখানে ছাত্রদের বৃত্তি ও শিক্ষকদের বেতনের ব্যবস্থা করেছিলেন। 

বিশদে (১০০-১২০ টি শব্দের মধ্যে) উত্তর লেখো: 

1 প্রাচীন বাংলার রাঢ়-সুখ এবং গৌড় অঞ্চলের ভৌগোলিক পরিচয় দাও। উত্তর: প্রাচীন বাংলার রাঢ়-সুয় প্রাচীন বাংলার রাঢ় অঞ্চল দুটি ভাগে বিভক্ত ছিল, যথা- উত্তর রাঢ় ও দক্ষিণ রাঢ়। উত্তর ও দক্ষিণ রাঢ়ের মাঝের সীমানা ছিল অজয় নদ। জৈনদের প্রাচীন ঐতিহ্য অনুসারে উত্তর রাঢ়কে বঙ্গভূমি বা বজ্রভূমি এবং দক্ষিণ রাঢ়কে সুব্জভূমি বা সুগ্মভূমি বলা হত। 

[a] উত্তর রাঢ়: বর্তমান মুর্শিদাবাদ জেলার পশ্চিমভাগ, বীরভূম জেলা, সাঁওতাল পরগনার একাংশ এবং বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমার উত্তর ভাগ নিয়ে উত্তর রাঢ় গঠিত ছিল। 

[b] দক্ষিণ রাঢ়: বর্তমান হাওড়া, হুগলি ও বর্ধমান জেলার বাকি অংশ এবং অজয় ও দামোদর নদের মাঝের এলাকা নিয়ে দক্ষিণ রাঢ় গঠিত ছিল। 

[c] মহাভারত ও কালিদাসের বর্ণনায় রাঢ়-সুয়: মহাভারতের গল্পে ও কালিদাসের কাব্যে এই রাঢ়-সুখ সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, এই অঞ্চল ভাগীরথী ও কংসাবতী (কাঁসাই) নদীর মাঝে সমুদ্র পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। 

প্রাচীন বাংলার গৌড় অঞ্চল প্রাচীন ও মধ্যযুগে গৌড় বলতে একটি জনগোষ্ঠীকে বোঝানো হত। বরাহমিহিরের রচনা থেকে জানা যায় যে, আজকের মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও বর্ধমান জেলার পশ্চিমভাগ গৌড়ের অন্তর্গত ছিল। খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে শশাঙ্কের আমলে ভাগীরথীর পশ্চিম পাড়ের আজকের মুর্শিদাবাদ জেলাকে নিয়ে মূল গৌড় গড়ে উঠেছিল, যার রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ। গৌড়ের সীমানা উত্তরে পুণ্ড্রবর্ধন থেকে দক্ষিণে ওড়িশার উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। 

2.শশাঙ্কের সঙ্গে বৌদ্ধদের সম্পর্ক কেমন ছিল, সেবিষয়ে তোমার মতামত দাও। 

উত্তর: শশাঙ্কের সঙ্গে বৌদ্ধদের সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। 

[a] বৌদ্ধবিদ্বেষী শশাঙ্ক: বিখ্যাত চিনা বৌদ্ধ পরিভ্রমণকারী হিউয়েন সাঙের বিবরণী ও বৌদ্ধগ্রন্থ 'আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্প' গ্রন্থে শশাঙ্ককে 'বৌদ্ধবিদ্বেষী' বলা হয়েছে। শশাঙ্কের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয় তা হল, তিনি বৌদ্ধ ভিক্ষুকদের হত্যা করেছিলেন এবং বৌদ্ধদের পবিত্র স্মারক ধ্বংস করেছিলেন। হর্ষবর্ধনের সভাকবি বানভট্ট তাঁর 'হর্ষচরিত' গ্রন্থে শশাঙ্ককে এই একই কারণে নিন্দা করেছেন।

[b] বৌদ্ধবিদ্বেষী সম্পর্কে প্রশ্ন: অপরদিকে শশাঙ্কের রাজত্বকালের কয়েক বছর পর হিউয়েন সাঙ তাঁর বিবরণীতে শশাঙ্কের কর্ণসুবর্ণ নগরের উপকণ্ঠে রক্তমৃত্তিকা বৌদ্ধবিহারের সমৃদ্ধির কথা বলেছেন। আবার অপর চিনা পর্যটক ই-ৎসিঙ্ বাংলায় বৌদ্ধধর্মের উন্নতির কথা উল্লেখ করেছেন। প্রশ্ন থেকেই যায় যে, শশাঙ্ক নির্বিচারে বৌদ্ধবিদ্বেষী হলে বাংলায় বৌদ্ধধর্মের উন্নতি ও সমৃদ্ধি ঘটল কীভাবে। সুতরাং বলা যায় যে, শশাঙ্কের প্রতি সব লেখকরা পক্ষপাতদুষ্ট ছিলেন না। 

3 ত্রিশক্তি সংগ্রাম কাদের মধ্যে হয়েছিল? এই সংগ্রামের মূল কারণ কী ছিল? উত্তর: ত্রিশক্তি সংগ্রাম ৬৪৭ খ্রিস্টাব্দে হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর পর উত্তর ভারতে রাজনৈতিক শূন্যতা দেখা দেয়। সে সময় কনৌজ ছিল উত্তর ভারতের প্রাণকেন্দ্র। বলা হত, যে কনৌজ নিয়ন্ত্রণ করবে সেই গাঙ্গেয় উপত্যকা দখলে রাখতে পারবে। এই অবস্থায় অষ্টম শতাব্দী থেকে পাল, গুর্জর-প্রতিহার ও রাষ্ট্রকূট বংশের মধ্যে কনৌজ দখলকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল পারস্পরিক সংগ্রাম। 

ত্রিশক্তি সংগ্রামের কারণ 

ত্রিশক্তি সংগ্রামের মূলে বেশকিছু কারণ ছিল- [a] অবস্থানগত দিক থেকে কনৌজ ছিল উত্তর ভারত বা উত্তরাপথের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। [b] কনৌজকে কেন্দ্র করে যে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে উঠেছিল তা নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিবেশী শক্তিগুলি সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছিল। [c] কনৌজ দখলে থাকলে গাঙ্গেয় উপত্যকার উর্বর ভূমি এবং এখানকার বিশাল খনিজ ভান্ডার সহজে অধিকার করা যেত। [d] এখানকার নদীভিত্তিক বাণিজ্য এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকার সমৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে সমগ্র রাজ্যকে আর্থিকভাবে সম্পদশালী করা যেত। 

4. নীচের ছকটি ভালো করে দ্যাখো। এর থেকে পাল ও সেন শাসনের সংক্ষিপ্ত তুলনা করো।

উত্তর: পাল ও সেন শাসনের সংক্ষিপ্ত তুলনা হল নিম্নরূপ- [a] পাল রাজারা অষ্টম শতকের মধ্যভাগ থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত বাংলায় রাজত্ব করেন, কিন্তু সেন রাজারা একাদশ শতক থেকে ত্রয়োদশ শতকের প্রথম ভাগ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। অর্থাৎ, পালদের পরে সেনরা বাংলার শাসনক্ষমতায় আসীন হন। [b] শক্তিশালী পাল রাজাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন গোপাল, ধর্মপাল ও দেবপাল, কিন্তু সেন রাজাদের মধ্যে বল্লালসেন ও লক্ষ্মণসেন ছিলেন উল্লেখযোগ্য। [c] পাল রাজারা বৌদ্ধধর্মাবলম্বী ছিলেন, কিন্তু সেন রাজারা ছিলেন ব্রাহ্মণধর্মাবলম্বী। [d] পাল রাজাদের সময়ের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল কনৌজ দখলকে কেন্দ্র করে ত্রিশক্তি সংগ্রামে পাল রাজাদের অংশগ্রহণ। অপরদিকে সেন রাজাদের সময়ের সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল সমাজে বর্ণব্যবস্থার কড়াকড়ি। [e] পাল রাজাদের সময়ে বাংলার শিক্ষা-শিল্প-স্থাপত্যের উন্নতিতে বহু বৌদ্ধবিহার, স্তূপ, চৈতা ও মন্দির নির্মিত হলেও সেন রাজাদের সময়ে বাংলার শিক্ষা-শিল্প-স্থাপত্যের ক্ষেত্রে সেরকম উৎকর্ষতা সাধন হয়নি। [f] পাল রাজাদের দুর্বলতার সুযোগে কৈবর্ত বিদ্রোহ ঘটলেও পাল রাজারা এই বিদ্রোহ দমন করে পুনরায় শাসনক্ষমতায় ফিরে আসেন। অপরদিকে সেন রাজাদের দুর্বলতার সুযোগে বাংলায় তুর্কি আক্রমণ হলে সেন রাজত্বের অবসান হয়।

5. দক্ষিণ ভারতে চোল শক্তির উত্থানের পটভূমি বিশ্লেষণ করো। কোন্ কোন্ অঞ্চল চোল রাজ্যের অন্তর্গত ছিল? 

উত্তর: দক্ষিণ ভারতে চোল শক্তির উত্থানের পটভূমি দক্ষিণ ভারতের পল্লব ও পাণ্ড্য রাজ্যের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে কাবেরী ও শাখানদীগুলির বদ্বীপকে ঘিরে চোল রাজ্য গড়ে উঠেছিল। বিজয়ালয় (৮৪৬-৮৭১ খ্রি.) সেখানকার রাজা মুট্টাবাইয়াকে সরিয়ে চোল রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি তাঞ্জোরকে চোল রাজ্যের রাজধানী ঘোষণা করেন। বিজয়ালয়ের ছেলে প্রথম আদিত্য (৮৭১-৯০৭ খ্রি.) পল্লবরাজ অপরাজিত বর্মন এবং পশ্চিম অঞ্চলের গঙ্গ রাজাদের পরাজিত করেন। পরে আদিত্যের ছেলে পরান্তক (৯০৭-৯৫৭ খ্রি.) পাণ্ড্য রাজ্য দখল করে 'মাদুরাইকোণ্ড' উপাধি গ্রহণ করেছিলেন। 

[a] প্রথম রাজরাজ: চোেল রাজ্যের গৌরব বৃদ্ধি করেছিলেন চোল রাজা প্রথম রাজরাজ (৯৮৫-১০১৫ খ্রি.)। তিনি কেরল, তামিলনাড়ু ও কর্ণাটকের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে চোল প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করেন। শক্তিশালী নৌবহরের সাহায্যে তিনি মালদ্বীপ দখল করেন। এমনকি তিনি সিংহল (বর্তমান শ্রীলঙ্কা) আক্রমণ করেন। তিনি তাঁর বিশাল নৌবহরের সাহায্যে চোলদের সামুদ্রিক সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করেন। 

[b] প্রথম রাজেন্দ্র: প্রথম রাজরাজের পুত্র প্রথম রাজেন্দ্র (১০১৬-১০৪৪ খ্রি.) কল্যাণীর চালুক্য শক্তিকে পরাজিত করেন। তাঁর সাম্রাজ্য গঙ্গার তীর থেকে সিংহল দ্বীপে এবং বঙ্গোপসাগর ছাড়িয়ে জাভা, সুমাত্রা ও মালয় দ্বীপে ছড়িয়ে পড়েছিল। বাংলার পাল বংশের বিরুদ্ধে এক অভিযানে গঙ্গা নদীর তীরে পাল রাজা মহীপালকে পরাজিত করে তিনি 'গঙ্গাই কোন্ডচোল' উপাধি নেন। কাবেরী নদীর তীরে গঙ্গাইকোওচোলপুরম নামে নতুন একটি রাজধানী স্থাপন করেন। তাঁর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব ছিল দক্ষিশ-পূর্ব এশিয়ার শৈলেন্দ্র বংশের রাজা বিজয়তুঙ্গের বিরুদ্ধে নৌ-প অভিযান পাঠিয়ে সাফল্য অর্জন। 

চোল শক্তির বিস্তার মূলত 

কাবেরী ও তার শাখানদীগুলির বদ্বীপকে ঘিরে চোল রাজ্য গড়ে উঠেছিল। পরবর্তীকালে দক্ষিণের পাণ্ডা ও উত্তরের পল্লব অঞ্চল, বর্তমান কেরল, তামিলনাড়ু ও কর্ণাটকের বিস্তীর্ণ অঞ্চল, কল্যাণী এবং গঙ্গার তীরবর্তী অঞ্চল চোল রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। 

6. ইসলাম ধর্মের প্রচারের আগে আরব দেশের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। ইসলাম ধর্মের প্রচার আরব দেশে কী বদল এনেছিল? 

উত্তর: আরব দেশের পরিচয় পৃথিবীর বৃহত্তম উপদ্বীপ আরব দেশের পশ্চিমে লোহিত সাগর, পূর্বে পারস্য উপসাগর ও দক্ষিণে আরব সাগর অবস্থিত। আরব উপদ্বীপের অধিকাংশই মরুভূমি বা শুকনো ঘাস-জমি অঞ্চল। আরব দেশের মরু অঞ্চলের অধিবাসীদের বেশিরভাগই ছিল যাযাবর। তারা বেদুইন নামে পরিচিত। খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকের শুরুতে কিছু কিছু আরব উপজাতির প্রধান জীবিকা ছিল ব্যাবসা। মক্কা ও মদিনা ছিল এখানকার দুটি গুরুত্বপূর্ণ শহর। ধীরে ধীরে মক্কা শহর একটি বাণিজ্যকেন্দ্ররূপে গড়ে ওঠে। বাণিজ্য উপলক্ষ্যে আরব বণিকরা বিদেশে যেত। বাণিজ্য করার সৌজন্যে খ্রিস্টধর্মাবলম্বী ও পারস্য দেশের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ গড়ে ওঠে। তাদের পরিচয় ঘটে ইহুদি, খ্রিস্টধর্ম ও পারসিক ধর্মমতের সঙ্গে। সমুদ্রপথে তারা ভারতের পশ্চিম উপকূলের সঙ্গেও ব্যাবসাবাণিজ্য করত।

আবার, মক্কা শহর দুটি বাণিজ্যপথের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এই নগরের দখলদারি নিয়ে আরবের বিভিন্ন উপজাতির মধ্যে সংঘর্ষ লেগেই থাকত। এইরূপ পরিস্থিতিতে আরব দেশে হজরত মহম্মদ প্রবর্তিত ধর্মের আবির্ভাব ঘটে। 

আরব দেশের পরিবর্তন 

ইসলাম ধর্মের প্রচারের ফলে বিভিন্ন আরব উপজাতির মধ্যে ধর্মীয় ঐক্য তৈরি হয়। তবে সেসময়ের মক্কাবাসীদের প্রতিষ্ঠিত ধর্মীয় আচার-আচরণের সঙ্গে মহম্মদের ধর্মীয় মতের পার্থক্য ছিল। তাই হজরত মহম্মদ মক্কা ছেড়ে মদিনায় চলে আসেন, সেইসময় থেকে হিজরি অব্দ নামে ইসলামীয় সাল গণনা শুরু হয়। দশ বছরের মধ্যেই মহম্মদ আরব ভূখন্ডের বিশাল এলাকা দখল করেন। মক্কাতেও তাঁর প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর মৃত্যুর একশো বছরের মধ্যে আরবরা এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপে বিরাট সাম্রাজ্য গঠন করে। 

কল্পনা করে লেখো (১০০-১৫০ টি শব্দের মধ্যে): 

1. মনে করো তুমি রাজা শশাঙ্কের আমলের একজন পর্যটক। তুমি তাম্রলিপ্ত থেকে কর্ণসুবর্ণ যাচ্ছ। পথে তুমি কোন্ কোন্ অঞ্চল ও নদী দেখতে পাবে? কর্ণসুবর্ণ গিয়েই বা তুমি কী দেখবে? 

উত্তর: গন্তব্য: তাম্রলিপ্ত থেকে কর্ণসুবর্ণ সময়কাল: সপ্তম শতকের প্রথমভাগ বাওয়ার পথে আমি দেখতে পাব কয়েকটি নদনদী। যেমন, প্রথমেই রূপনারায়ণ নদ পেরিয়ে দামোদর নদের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। পরে দামোদর ও অজয় নদ পেরিয়ে ময়ূরাক্ষী নদীর দিকে এগিয়ে যাব। ময়ূরাক্ষী ও গঙ্গার শাখানদী ভাগীরথীর সংগমস্থলে কর্ণসুবর্ণ অবস্থিত। আমি যে পথে কর্ণসুবর্ণ যাব তা রাঢ় অঞ্চলের অন্তর্গত। এই রাঢ় অঞ্চল দুটি ভাগে বিভক্ত। দক্ষিপ রাঢ়কে সুথভূমি এবং উত্তর রাঢ়কে বজ্রভূমি বলা হয়। এই রাঢ় অঞ্চলের পথ ধরে আমি বাংলার প্রথম স্বাধীন রাজারূপে খ্যাত শশাঙ্কের রাজধানীতে গিয়ে পৌঁছোব। 

কর্ণসুবর্ণে গিয়ে আমি যা দেখব: [a] রক্তমৃত্তিকা বৌদ্ধবিহার, [b] রাজা কর্ণের প্রাসাদ, [c] রাজা শশাঙ্কের প্রাসাদ ও তাঁর দরবার, [d] রাজা শশাঙ্কের দরবারের নানা কাজকর্ম, [e] কর্ণসুবর্ণের বাণিজ্যকেন্দ্র। 

2. মনে করো দেশে মাৎস্যন্যায় চলছে। তুমি ও তোমার শ্রেণির বন্ধুরা দেশের রাজা নির্বাচন করতে চাও। তোমাদের বন্ধুদের মধ্যে একটি কাল্পনিক সংলাপ রচনা করো। 

উত্তর: বছরের পর বছর চলতে থাকা অরাজক অবস্থাকে মাৎস্যন্যায় বলা হয়। পুকুরের বড়ো মাছ যেমন ছোটো মাছকে খেয়ে ফেলে, তেমনই শক্তিশালী লোক দুর্বল লোকের ওপর অত্যাচার চালায়। এই অবস্থা বুঝে নেওয়ার পর তোমার বন্ধুরা দেশের রাজা নির্বাচন করবে। তোমরা হবে সমাজের কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। তোমাদের সভার নাম 'প্রকৃতিপুঞ্জ'। তোমরা নির্বাচন করবে ক্ষমতাশালী এক নির্ভীক, সৎ, পরিশ্রমী, দয়ালু, দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনে আস্থাশীল একজন ব্যক্তিকে। তোমাদের বন্ধুদের কয়েকজনের নাম ঠিক করো এবং তোমাদের মধ্যে একজনের নাম হবে গোপাল। ধরা যাক তোমরা হলে- গোপাল, রাম, মহেশ, গণেশ, রমেশ। সকলে একসঙ্গে বলবে-না, না আর এভাবে চলতে পারে না। কিছু একটা উপায় বের করতে হবে।

রাম: কী উপায় বের করা যায়, যাতে দেশে শান্তি ফিরে আসে? 

মহেশ: চারদিকে শুধু মারামারি, কাটাকাটি, আর সহ্য করা যায় না। 

গণেশ: অনেকদিন ধরেই এই অবস্থা চলছে! কী আর করা 

রমেশ: না না, উপায় একটা আমাদের বের করতে হবে। যাবে! 

রাম: আচ্ছা, আমরা যদি সবাই একসঙ্গে ওই অসৎ লোকদের উচিত শিক্ষা দিতে পারি, তবে ভালো হয়। 

গণেশ: দেশে কোনো আইনকানুন নেই, যে-যার ইচ্ছামতো আছে। কখন যে কী ঘটবে তা বলা যায় না। 

মহেশ: আরে গোপাল তো কিছুই বলছে না। ও কী ভাবছে? . 

রাম: আচ্ছা গোপাল তো আমাদের মধ্যে যেমন শক্তিশালী আবার তেমনই বিচারবোধ ও ভাবনাও ভালো। তাই আমার মনে হয়, ওকে যদি আমাদের রাজা করি তবে অনেক কিছুই ভালো হতে পারে। সকলে একসঙ্গে বলে উঠল-হ্যাঁ হ্যাঁ এটাই হোক। 

রাম: গোপাল তুমি রাজি তো? 

গোপাল: দ্যাখো, তোমরা যা ভালো বোঝো করো। রাম, মহেশ, গণেশ, 

রমেশ: গোপাল আমাদের রাজা। আমরা সকলে তাকে মান্য করব। 

3. মনে করো যে তুমি কৈবর্ত নেতা দিব্য। পাল রাজাদের বিরুদ্ধে তোমার অভিযোগগুলি কী কী থাকবে? কীভাবেই বা তুমি তোমার বিদ্রোহী সৈন্যদল গঠন ও পরিচালনা করবে তা লেখো। 

উত্তর: আমি কৈবর্ত নেতা দিব্য। আমার অভিযোগ: [a] পাল রাজা মহীপাল অত্যাচারী [b] তিনি প্রজাদের কাছ থেকে জোর করে কর আদায় করেছেন, [c] কৈবর্তদের জাতব্যাবসা মাছ ধরার ওপর বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন, [d] তিনি ন্যায় বিচার করেন না; সর্বদা বিলাসব্যসনে মেতে থাকেন। [e] জনগণের কল্যাণে কোনো কাজকর্ম করছেন না। [f] তিনি লঘুপাপে গুরুদণ্ড দেন। 

বিদ্রোহী সৈন্যদল গঠন: রাজার অত্যাচারে অতিষ্ঠ, করভারে জর্জরিত, জীবিকা অর্জনের সুযোগে বঞ্চিত, ন্যায়বিচার পাননি—এমন সব শ্রেণির মানুষজনকে পাশে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রুখে দাঁড়াব অত্যাচারী রাজার বিরুদ্ধে। এই বিদ্রোহী সৈন্যদলে যোগ দেওয়ার জন্য সকলকে আহবান জানাব। 

সৈন্যদল পরিচালনা: রাজার বিরুদ্ধে নিজেদের মুক্তির জন্য অত্যাচারপীড়িত যেসব জনগণ সৈন্যদলে যোগ দিয়েছেন তাঁদের অনুপ্রাণিত করব। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে অত্যাচারী রাজার সৈন্যদলের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ব। 

4. মনে করো তুমি বাংলায় তুর্কি আক্রমণের দিন দুপুরবেলায় নদিয়া শহরের রাজপথ দিয়ে যাচ্ছিলে। সেই সময় কী দেখলে? 

উত্তর: নদিয়া শহরের রাজপথ দিয়ে যখন আমি যাচ্ছিলাম তখন দেখলাম পথে ঘোড়ায় চড়ে অনেক সৈন্য ছোটাছুটি করছে। তাদের হাতে তিরধনুক, বর্শা, ঢাল, তলোয়ার। আমাদের নদিয়ার রাজপথে এই ধরনের সৈন্যদের এর আগে আমি কোনোদিন দেখিনি। এর আগে আমি দেখেছি খাটো ধুতি ও পাঞ্জাবি পরা সৈন্যদের। তাদের ভাষা বাংলা এবং হাতে থাকত শুধুমাত্র বর্ণা। আজ তাদের কাউকে দেখছি না, বদলে অন্য ধরনের পোশাকের সৈন্য। তাদের ভাষা বাংলা নয়। তারা অবাধে এক জায়গা থেকে আর-এক জায়গায় চলে যাচ্ছে, আবার একইরকম দেখতে সৈন্যরা চলে আসছে। পথে শুনতে পেলাম বখতিয়ার খলজির নেতৃত্বে তুর্কিরা বাংলা আক্রমণ করেছে। তারা নদিয়া দখল করে নিয়েছে। 

গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর মান 

1 সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো: 

1. বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের আদি নাম ছিল- (বঙ্গ/বাংলা/ বাংলাদেশ/গৌড়) 

2. বঙ্গ রাজ্যের কথা জানা যায় খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতকের ঐতিহাসিক- (আমির খসরুর লেখা থেকে/ জিয়াউদ্দিন বারনীর লেখা থেকে/মিনহাজ ই-সিরাজের লেখা থেকে/আবুল ফজলের লেখা থেকে)

3. বঙ্গ ও সুক্ষ্ম নাম দুটির উল্লেখ পাওয়া যায় কালিদাসের- (রঘুবংশম কাব্যে/ অভিজ্ঞানশকুন্তলম কাব্যে/মেঘদূতম কাব্যে/ কুমারসম্ভবম কাব্যে) 

4. সুবা বাংলার উল্লেখ রয়েছে আবুল ফজল-এর- (তবকাত-ই নাসিরি গ্রন্থে/আইন-ই আকবরি গ্রন্থে/ শাহনামায়/অল রিহালা গ্রন্থে) 

5. প্রাচীন বাংলার সীমানা মূলত তিনটি নদী দিয়ে ঘেরা ছিল, নদীগুলি হল- (ভাগীরথী, পদ্মা ও মেঘনা/গঙ্গা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র/হুগলি, মহানন্দা ও তিস্তা/মহানন্দা, তিস্তা, তোর্সা) 

6. প্রাচীন বাংলার অঞ্চলগুলির মধ্যে বৃহত্তম ছিল- (গৌড়/পুণ্ড্রবর্ধন/বরেন্দ্রভূমি/কামরূপ) 

7. প্রাচীনকালে বঙ্গ বলতে বোঝাত দুটি বিশাল নদী দ্বারা বেষ্টিত বদ্বীপ এলাকা, নদী দুটি হল- (যমুনা ও মেঘনা/কাঁসাই ও সুবর্ণরেখা/পদ্মা ও ভাগীরথী/অজয় ও দামোদর) 

৪. প্রাচীনকালে উত্তর ও দক্ষিণ রাঢ়ের মাঝের সীমানা ছিল- (অজয় নদ/ব্রহ্মপুত্র নদ/সিন্ধু নদ/গোদাবরী নদী) 

9. খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকের গৌড় সম্পর্কে বিবরণ দিয়েছেন- (আর্যভট্ট/বরাহমিহির/ব্রহ্মগুপ্ত/কালিদাস) 

10. প্রাচীন ইতিহাসে বাংলার সীমান্তবর্তী এলাকা বলে ধরা হত- (হরিকেল অঞ্চলকে/রাঢ়-সুক্ষ্ম অঞ্চলকে/ সমতট অঞ্চলকে/গৌড় অঞ্চলকে) 

11. শশাঙ্ক সিংহাসনে বসেন- (৬০৬-০৭ খ্রিস্টাব্দে। ৬১০-১১ খ্রিস্টাব্দে/৬১৪-১৫ খ্রিস্টাব্দে/৬৩৬-৩৭ খ্রিস্টাব্দে) 

12. শশাঙ্ক ছিলেন- (গৌড়ের শাসনকর্তা/কনৌজের শাসনকর্তা/কামরূপের শাসনকর্তা) শাসনকর্তা/বরেন্দ্রভূমির 

13. শশাঙ্কের রাজধানী ছিল- (থানেসর/লখনউ/ কর্ণসুবর্ণ/পান্ডুয়া) 

14. কর্ণসুবর্ণ বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের যে জেলায় অবস্থিত ছিল সেটি হল- (মেদিনীপুর/মালদহ/মুর্শিদাবাদ/ নদিয়া) 

15. রক্তমৃত্তিকা বৌদ্ধবিহারের উল্লেখ আছে- (হিউয়েন সাঙের বিবরণীতে/ফা-হিয়েনের বিবরণীতে/ইবন বতুতার বিবরণীতে/সু-মা-কিয়েনের বিবরণীতে) 

16. শশাঙ্কের রাজনৈতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স ঘটনা- (পুষ্যভূতিরাজ হর্ষবর্ধনের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব/কামরূপরাজ ভাস্করবর্মার সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব/চোলরাজ রাজেন্দ্র চোলের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব/ 3 কনৌজরাজ গ্রহবর্মনের সঙ্গে মিত্রতা) 

17. সকলোত্তরপথনাথ উপাধি ধারণ করেছিলেন- 3 (আকবর/হর্ষবর্ধন/রাজেন্দ্র চোল/ভাস্করবর্মা) [পানিপারুল মুক্তেশ্বর হাই স্কুল] 

18. হর্ষবর্ধনের সভাকবি ছিলেন- (বানভট্ট/সন্ধ্যাকর ও নন্দী/ বিশাখদত্ত/কলহন) 

19. বানভট্ট রচনা করেন- (রামচরিত মানস/ কুমারপালচরিত/হর্ষচরিত/রামচরিত)

20. প্রাহী কথাটির অর্থ হল- (পুরোহিত/বদিক/ কৃষক) 

21. 'গৌড়বছো বা কাব্যটি রচনা করেন- (বিলহন/ অশ্বঘোষ/বাষ্পতিরাজ/ধোয়ী) 

22. বাকপতিরাজ সভাকবি ছিলেন- (হর্ষবর্ধনের/ শশাঙ্কের/যশোবর্মা বা যশোবর্মন-এর/ধর্মপালের) 

23. পাল বংশ প্রতিষ্ঠিত হয়- (৭৫০ খ্রিস্টাব্দে/৮৫০ খ্রিস্টাব্দে/৯৫০ খ্রিস্টাব্দে/৬৫০ খ্রিস্টাব্দে) 

24. পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা হলেন- (গোপাল/ধর্মপাল/ দেবপাল/ রামপাল) 

25. পাল রাজাদের আদিনিবাস ছিল সম্ভবত-(বরেন্দ্র অঞ্চলে/রাঢ় অঞ্চলে/সমতট অঞ্চলে/পুণ্ড্রবর্ধন অঞ্চলে) 

26. ত্রিশক্তি সংগ্রামে জড়িয়ে পড়েছিল- (পাল, কৈবর্ত, সেন/পাল, গুর্জর-প্রতিহার, রাষ্ট্রকূট/চোল, পাণ্ড্য, পাল/চোল, পাল, রাষ্ট্রকূট) [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] 

27. কনৌজকে কেন্দ্র করে সংঘটিত ত্রিশক্তি সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছিলেন- (ধর্মপাল/দেবপাল/প্রথম মহীপাল/গোপাল) 

28. কৈবর্ত বিদ্রোহের ফলে হৃত বরেন্দ্র অঞ্চল পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন- (প্রথম মহীপাল/ রামপাল/দ্বিতীয় মহীপাল/দেবপাল) 

29. কৈবর্ত বিদ্রোহের নেতা ছিলেন- (দেবপাল/জয়নাগ/ রুদোক/বিজয়ালয়) [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] 

30. পাল যুগের একটি বৌদ্ধবিহার আবিষ্কৃত হয়েছে- (মালদহে/মুর্শিদাবাদে/বীরভূমে/দিনাজপুরে) 

31. বাংলায় কৈবর্ত বিদ্রোহ ঘটেছিল- (একাদশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে/দ্বাদশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে/ত্রয়োদশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে/চতুর্দশ শতকের প্রথম ভাগে)

32. কৈবর্ত বিদ্রোহ দমন করতে গিয়ে নিহত হন পাল রাজা- (প্রথম মহীপাল/রামপাল/দ্বিতীয়, মহীপাল /মদনপাল) 

33. সেন রাজাদের আদি বাসস্থান ছিল দক্ষিণ ভারতের- (তামিলনাড়ু অঞ্চল/কর্ণাট অঞ্চল/ অন্ধ্রপ্রদেশ অঞ্চল/ কেরালা অঞ্চল) 

34. পাল রাজা গোবিন্দপালকে পরাস্ত করেছিলেন- (হেমন্তসেন/বিজয়সেন/বল্লালসেন/লক্ষ্মণসেন) 

35. লক্ষ্মণসেনের রাজধানী ছিল- (বিক্রমপুরে/ রাজশাহীতে/ ফরিদপুরে/গৌড়ে) 

36. বাংলায় সেন শাসনের অবসান ঘটেছিল- (তুর্কি আক্রমণে/হুন আক্রমণে/মোঙ্গল আক্রমণে/শক আক্রমণে) 

37. রাষ্ট্রকূট বংশের প্রতিষ্ঠাতা হলেন- (অমোঘবর্ণ/ দণ্ডিদুর্গ/ তৃতীয় গোবিন্দ/দ্বিতীয় কৃষ্ণ) 

38. গুর্জর-প্রতিহাররা রাজত্ব করতেন (উত্তরপ্রদেশ- মধ্যপ্রদেশ অঞ্চলে/রাজস্থান-গুজরাট অঞ্চলে/ অন্ধ্রপ্রদেশ-কর্ণাটক অঞ্চলে/মহারাষ্ট্র-গুজরাট অঞ্চলে) 

39. ত্রিশক্তি সংগ্রামের মূল লক্ষ্য ছিল- (অযোধ্যা দখল/ গৌড় দখল/কনৌজ দখল/মগধ দখল) 

40. পল্লব, পাণ্ড্য, চোল রাজবংশ গড়ে উঠেছিল- (উত্তর ভারতে/মধ্য ভারতে/দক্ষিণ ভারতে/পশ্চিম ভারতে)

41. চোল রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন- (প্রথম রাজেন্দ্র/ বিজয়ালয়/ রাজেন্দ্র চোল/আদিত্য) [হলদিয়া গভঃ স্পন্সঃ বিবেকানন্দ বিদ্যাভবন] 

42. চোল রাজাদের রাজধানী ছিল- (কাঞ্চিপুরমে/ পাটলিপুত্রে/তাঞ্জোরে/কর্ণসুবর্ণে) [পানিপারুল মুক্তেশ্বর হাই স্কুল] 

43. প্রথম রাজেন্দ্র চোল গঙ্গাইকোন্ডচোল উপাধি ধারণ করেন- (পাল বংশের রাজাকে হারিয়ে/সেন বংশের রাজাকে হারিয়ে/রাষ্ট্রকূট বংশের রাজাকে হারিয়ে/ পল্লব বংশের রাজাকে হারিয়ে) 

44. খলিফা কথাটির অর্থ হল- (প্রতিনিধি বা উত্তরাধিকারী/সম্রাট/ব্যবসায়ী বা বণিক/নায়েব) 

45. দার-উল ইসলাম হল সেই অঞ্চল- (যেখানে ইসলাম ধর্মের ক্ষমতা ছড়িয়ে পড়েছে/যেখানে খ্রিস্টান ধর্মের ক্ষমতা ছড়িয়ে পড়েছে/যেখানে হিন্দুধর্মের ক্ষমতা ছড়িয়ে পড়েছে/বিধর্মীদের দেশ) 

46. ১০০০-১০২৭ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মাহমুদ উত্তর ভারত আক্রমণ করেন- (১২ বার/১৫ বার/১৭ বার/১৪ বার) 

47. মসজিদ-ই হরম নামক মসজিদটি রয়েছে- (মক্কায়/ মদিনায়/লাহোরে/দিল্লিতে) 

48. সুলতান মাহমুদের আমলে একজন উল্লেখযোগ্য পন্ডিত ছিলেন- (অল বিরুনি/আমির খসরু/আবুল ফজল/ বাবর) 

49. অল বিরুনি লিখিত একটি প্রসিদ্ধ গ্রন্থ হল- (কিতাব- উল-রেহালা/কিতাব-অল-হিন্দ/খাজাইন-উল-ফুতুহ/ কিরান-উস-সাদিন) 

50. মহম্মদ ঘুরি রাজপুত রাজা তৃতীয় পৃথ্বীরাজ চৌহানকে পরাজিত করেন- (প্রথম তরাইনের যুদ্ধে/দ্বিতীয় তরাইনের যুদ্ধে/প্রথম পানিপথের যুদ্ধে/তৃতীয় পানিপথের যুদ্ধে) 

51. দ্বিতীয় তরাইনের যুদ্ধ সংঘটিত হয়- (১১৯১ খ্রিস্টাব্দে/১১৯২ খ্রিস্টাব্দে/১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে/১২০৬

52. দিল্লিতে সুলতানি শাসন প্রতিষ্ঠা করেন- (মহম্মদ ঘুরি/ কুতুবউদ্দিন আইবক/ইলতুৎমিস/বলবন) 

53. তুর্কি সেনাপতি ইখতিয়ারউদ্দিন মহম্মদ বখতিয়ার খলজি বাংলার নদিয়া দখল করেন- (১২০৪-১২০৫ খ্রিস্টাব্দে/১২০৭-১২০৮ খ্রিস্টাব্দে/১২০৯-১২১০ খ্রিস্টাব্দে/১২০৬-১২০৭ খ্রিস্টাব্দে) 

54. আববাসিয়া খিলাফৎ-এর রাজধানী ছিল- (বাগদাদ/ দামাস্কাস/মিশর/মদিনা) 

55. বখতিয়ার খলজি মারা যান- (১২০৪ খ্রিস্টাব্দে/ ১২০৫ খ্রিস্টাব্দে/১২০৬ খ্রিস্টাব্দে/১২০১ খ্রিস্টাব্দে)

উত্তর: 1. বঙ্গ 

2. মিনহাজ ই-সিরাজের লেখা থেকে 

3. রঘুবংশম কাব্যে

4. আইন-ই আকবরি গ্রন্থে 

5. ভাগীরথী, পদ্মা ও মেঘনা 

6. পুণ্ড্রবর্ধন

7. পদ্মা ও ভাগীরথী  

৪. অজয় নদ 

9. বরাহমিহির 

10. সমতট অঞ্চলকে 

11. ৬০৬-০৭ খ্রিস্টাব্দে 

12. গৌড়ের শাসনকর্তা 

13. কর্ণসুবর্ণ 

14. মুর্শিদাবাদ 

15. হিউয়েন সাঙের বিবরণীতে 

16. পুষ্যভূতিরাজ হর্ষবর্ধনের সঙ্গে তাঁর দ্বন্দ্ব 

17. হর্ষবর্ধন 

18. বানভট্ট 

19. হর্ষচরিত 

20. বণিক 

21. বাষ্পতিরাজ 

22. যশোবর্মা ও যশোবর্মন- এর 

23. ৭৫০ খ্রিস্টাব্দে 

24. গোপাল 

25. বরেন্দ্র অঞ্চলে

26. পাল, গুর্জর-প্রতিহার, রাষ্ট্রকূট 

27. ধর্মপাল 

28. রামপাল 

29. রুদোক 

30. মালদহে 

31. একাদশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে

32. দ্বিতীয় মহীপাল

33. কর্ণাট অঞ্চল 

34. বল্লালসেন 

35. বিক্রমপুরে 

36. তুর্কি আক্রমণে 

37. দন্তিদুর্গ 

38. রাজস্থান-গুজরাট অঞ্চলে 

39. কনৌজ দখল 

40. দক্ষিণ ভারতে 

41. বিজয়ালয় 

42. তাঞ্জোরে 

43. পাল বংশের রাজাকে হারিয়ে 

44. প্রতিনিধি বা উত্তরাধিকারী 

45. যেখানে ইসলাম ধর্মের ক্ষমতা ছড়িয়ে পড়েছে 

46. ১৭ বার 

47. মক্কায় 

48. অল বিরুনি 

49. কিতাব-অল-হিন্দ 

50. দ্বিতীয় তরাইনের যুদ্ধে 

51. ১১৯২ খ্রিস্টাব্দে 

52. কুতুবউদ্দিন আইবক 

53. ১২০৪-১২০৫ খ্রিস্টাব্দে 

54. বাগদাদ 

55. ১২০৬ খ্রিস্টাব্দে।

শূন্যস্থান পূরণ করো: 

1. বঙ্গ নামটির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ঋগ্বেদের_ [কনটাই মুসলিম গার্লস হাই স্কুল; কাঁথি ক্ষেত্রমোহন বিদ্যাভবন] 

2. মহাভারতে বঙ্গ, পুণ্ড্র, সুষ্ঠু ও তাম্রলিপ্ত ইত্যাদিকে এক- একটি আলাদা বলে_ উল্লেখ করা হয়েছে। 

3. প্রাচীন বাংলা সম্পর্কে তথ্য রয়েছে কৌটিল্যের _।

4. ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে বাংলার পূর্বভাগ নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে _ রূপে পরিচিত হয়।

5. প্রাচীন এবং মধ্যযুগের বাংলার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ছিল_।

6. _নদী সমতটকে প্রাচীন বাংলার বাকি অঞ্চল থেকে পৃথক করে রেখেছিল। 

7. শশাঙ্কের রাজত্ব উত্তর-পশ্চিমে _ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

৪. রক্তমৃত্তিকা বৌদ্ধবিহার বর্তমানে _ নামেও পরিচিত।

9. 'আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্প' হল একটি _গ্রন্থ।

10. রাষ্ট্রকূট শাসকেরা _ ভারতে শাসন করতেন। 

11. পাল আমলের শাসনব্যবস্থায় নেতার_ উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।  

12. কৈবর্ত বিদ্রোহের_ জন প্রধান নেতা ছিলেন। 

13. কৈবর্ত বিদ্রোহের নেতা দিব্য বাংলার_ অঞ্চলে নিজ শাসন গড়ে তোলেন। 

14. বাংলায় সেন রাজাদের শাসন শুরু হয় খ্রিস্টীয়_ শতকে। 

15. প্রথম রাজরাজ এবং _দক্ষ নৌবাহিনী গড়ে তুলেছিলেন।

16. ৬২২ খ্রিস্টাব্দে শহরে চলে আসেন। ও তাঁর অনুগামীরা মদিনা 

17. হজরত মহম্মদ পরলোক গমন করেন_ খ্রিস্টাব্দে। 

18. বাগদাদের --দের উদ্যোগে ভারতীয় জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসাশাস্ত্র, সাহিত্য ইত্যাদি আরবি ভাষায় অনূদিত হয়েছিল। 

19. মহম্মদ ঘুরি পশ্চিম এশিয়ার _  অঞ্চলের শাসনকর্তা ছিলেন।

20. ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ হল_। 

21. মুসলমানদের বিশ্বাস অনুযায়ী কোরান হল_।

22. মহম্মদ ঘুরি মারা যান_ খ্রিস্টাব্দে। 

23. উন্মাইয়া খিলাফৎ গড়ে উঠেছিল সিরিয়ার_ কে কেন্দ্র করে। 

24. বাংলায় তুর্কি শাসনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন _।

25. বখতিয়ার খলজি বাংলায় _তার রাজধানী স্থাপন করেন।

উত্তর:

1. ঐতরেয় আরণ্যক 

2. রাজ্য 

3. অর্থশাস্ত্রে 

4. পূর্ব পাকিস্তান 

5. গৌড়  

6. মেঘনা 

7. বারাণসী 

৪. রাঙামাটি বৌদ্ধবিহার 

9. বৌদ্ধ  

10. দক্ষিণ 

11. সামন্ত 

12. তিন 

13. বরেন্দ্র

14. একাদশ  

15. রাজেন্দ্র চোল 

16. হজরত মহম্মদ 

17. ৬৩২ 

18. খলিফা

19. ঘুর 

20. কোরান 

21. আল্লাহ্র বাণী 

22. ১২০৬ খ্রিস্টাব্দে

23. দমাস্কাস 

24. ইখতিয়ারউদ্দিন

25. লক্ষ্মণাবতীতে 

ঠিক/ভুল নির্বাচন করো: 

1. প্রাচীন বাংলার জনপদগুলির মধ্যে বঙ্গ ছিল একটি বিভাগ মাত্র। 

2. সুবা কথাটির প্রকৃত অর্থ হল রাষ্ট্র। 

3. বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠিত হয় ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে।

4. বঙ্গ, গৌড়, পুণ্ড্র ইত্যাদি নামগুলি প্রকৃতপক্ষে এক- একটি জনগোষ্ঠীর নাম। 

5. গুপ্ত যুগে পুণ্ড্রবর্ধন ছিল একটি ভুক্তি বা শাসন এলাকা। 

6. বঙ্গাল অঞ্চল বলতে আরব সাগরের উপকূলবর্তী এলাকাকে বোঝানো হত। 

7. বর্তমান মালদহ জেলাই ছিল তৎকালীন বাংলার গৌড়ের প্রধান এলাকা। 

৪. খ্রিস্টীয় অষ্টম-নবম শতকে গৌড় বলতে সমগ্র পাল সাম্রাজ্যকেও বোঝানো হত। 

9. শশাঙ্ক ছিলেন মৌর্য সম্রাটের মহাসামন্ত। 

10. প্রাচীনকালের তাম্রলিপ্ত হল বর্তমান হলদিয়া বন্দর। 

11. পাল ও সেন যুগের ইতিহাসের উপাদানগুলিতে কর্ণসুবর্ণের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি। 

12. রাজা হর্ষবর্ধন শশাঙ্ককে যুদ্ধে হারাতে সক্ষম হয়েছিলেন। 

13. শশাঙ্ক স্থায়ী রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিলেন। 

14. প্রতিহার রাজা দক্ষিণ ভারতে শাসন করতেন। 

15. মক্কা শহর দুটি বাণিজ্যপথের সংযোগস্থলে অবস্থিত। 

16. হিজরি সাল গণনা শুরু হয় ৬২২ খ্রিস্টাব্দ থেকে। 

17. খলিফা একটি সংস্কৃত শব্দ। 

18. ফিরদৌসি ছিলেন একজন সংগীতজ্ঞ। 

19. বখতিয়ার খলজি এবং তাঁর তুর্কি বাহিনী ঘোড়া ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে নদিয়ায় ঢুকেছিলেন। 

20. তুর্কিরা বিনাযুদ্ধে নদিয়া জয় করে।

উত্তর:

1. ঠিক 5. ঠিক 9. ভুল 13. ভুল 17. ভুল 

2. ভুল 6. ভুল 10. ভুল 14. ভুল 18. ভুল 

3. ভুল 7. ভুল 11. ঠিক 15. ঠিক 19. ঠিক 

4. ঠিক ৪. ঠিক 12. ভুল 16. ঠিক 20. ঠিক।

বেমানান শব্দটি খুঁজে বের করো: 

1. বাংলাদেশ, ভারতবর্ষ, পশ্চিমবঙ্গ, নেপাল। 

2. ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ, ঐতরেয় আরণ্যক, সামবেদ। 

3. বেদ, রামায়ণ, মহাভারত, ঋগ্বেদ। 

4. রঘুবংশম, মেঘদূতম, অর্থশাস্ত্র, ঋতুসংহার। 

5. জলঢাকা, পদ্মা, তিস্তা, ভাগীরথী। 

6. পুণ্ড্রবর্ধন, বরেন্দ্র, হরিকেল, পাকিস্তান। [পিছাবনি বাণী নিকেতন হাই স্কুল] 

7. বরেন্দ্র, কামরূপ, সমতট, হরিকেল। 

৪. হর্ষচরিত, ই-ৎসিঙ্, আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্প, গৌড়বহো। 

9. হর্ষবর্ধন, শশাঙ্ক, বাবর, ভাস্করবর্মা। 

10. গোপাল, কৈবর্ত বিদ্রোহ, ধর্মপাল, দেবপাল। 

11. দিব্য, বাষ্পতিরাজ, রুদোক, ভীম। 

12. বিজয়সেন, প্রথম মহীপাল, বল্লালসেন, লক্ষ্মণসেন। 

13. বিজয়ালয়, রাজা ভোজ, প্রথম রাজরাজ, রাজেন্দ্র চোল। 

14. হজরত মহম্মদ, মহম্মদ বিন কাশেম, মহম্মদ ঘুরি, সুলতান মাহমুদ। 

15. ইখতিয়ারউদ্দিন মহম্মদ বখতিয়ার খলজি, লক্ষ্মণসেন, কুতুবউদ্দিন আইবক, ইলতুৎমিস।

উত্তর:1. পশ্চিমবঙ্গ 6. পাকিস্তান 7. কামরূপ 

2. ঐতরেয় আরণ্যক ৪. ই-সিঙ্

 3. ঋগ্বেদ  9. বাবর 

4. অর্থশাস্ত্র 

5. পদ্মা 10. কৈবর্ত বিদ্রোহ 12. প্রথম মহীপাল 13. রাজা ভোজ 14. হজরত মহম্মদ 15. লক্ষ্মণসেন।

একটি বাক্যে উত্তর দাও: 

1. কোটিল্য রচিত গ্রন্থের নাম লেখো। 

উত্তর: কোটিল্য রচিত গ্রন্থের নাম হল 'অর্থশাস্ত্র'। 

2. কালিদাস রচিত একটি কাব্যের নাম লেখো। 

উত্তর: কালিদাস রচিত একটি কাব্যের নাম হল 'রঘুবংশম'। 

3. দিল্লির সুলতানি যুগের একজন ঐতিহাসিকের নাম লেখো। 

উত্তর: দিল্লির সুলতানি যুগের একজন ঐতিহাসিকের নাম হল ঐতিহাসিক মিনহাজ ই-সিরাজ। 

4. ভারতবর্ষে মুঘল যুগের একজন ঐতিহাসিকের নাম লেখো। 

উত্তর: ভারতবর্ষে মুঘল যুগের একজন ঐতিহাসিকের নাম হল ঐতিহাসিক আবুল ফজল। 

5. আবুল ফজলের লেখা গ্রন্থটির নাম কী? [পাঁশকুড়া গার্লস হাই স্কুল] 

উত্তর: আবুল ফজলের লেখা গ্রন্থটির নাম হল 'আইন-ই- আকবরি'। 

6. প্রদেশ বা রাজ্য মুঘল যুগে কী নামে পরিচিত ছিল? 

উত্তর: প্রদেশ বা রাজ্য মুঘল যুগে সুবা নামে পরিচিত ছিল।

7. প্রাচীন বাংলার 'বেঙ্গালা' নামকরণ কারা করেছিলেন? 

উত্তর: ষোড়শ-অষ্টাদশ শতকে তৎকালীন বাংলায় আগত ইউরোপীয় পর্যটক ও বণিকেরা প্রাচীন বাংলার নামকরণ করেছিলেন 'বেঙ্গালা'। 

৪. চিনা ভাষায় কোন্ বৌদ্ধবিহার লো-টো-মো-চিহ্ন নামে পরিচিত? 

উত্তর: চিনা ভাষায় রক্তমৃত্তিকা বৌদ্ধবিহার অথবা রাঙামাটি বৌদ্ধবিহার লো-টো-মো-চিহ্ নামে পরিচিত। 

9. কোন্ পর্যটক তাম্রলিপ্ত থেকে রক্তমৃত্তিকা বৌদ্ধবিহারে এসেছিলেন? 

উত্তর: চৈনিক পর্যটক সুয়ান জাং তাম্রলিপ্ত থেকে রক্তমৃত্তিকা বৌদ্ধবিহারে এসেছিলেন। 

10. কর্ণসুবর্ণ স্থানীয়ভাবে কার প্রাসাদ নামে পরিচিত? [শেরপুর রামচন্দ্রপুর হাই স্কুল] 

উত্তর: কর্ণসুবর্ণ স্থানীয়ভাবে রাজা কর্ণের প্রাসাদ নামে পরিচিত। 

11. কর্ণসুবর্ণের সঙ্গে ভারতের বাইরের কোন্ অঞ্চলের বাণিজ্যিক যোগাযোগ ছিল? 

উত্তর: কর্ণসুবর্ণের সঙ্গে ভারতের বাইরের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাণিজ্যিক যোগাযোগ ছিল। 

12. শশাঙ্কের মৃত্যুর পর কর্ণসুবর্ণ কিছু সময়ের জন্য পূর্ব ভারতের কোন্ রাজার কর্তৃত্বাধীন হয়ে পড়ে? 

উত্তর: শশাঙ্কের মৃত্যুর পর কর্ণসুবর্ণ কিছু সময়ের জন্য পূর্ব ভারতের কামরূপের রাজা ভাস্করবর্মার কর্তৃত্বাধীন হয়ে পড়ে।। 

13. কোন্ পর্যটকের 'বৌদ্ধবিদ্বেষী' বলা হয়েছে? ভ্রমণবৃত্তান্তে 

উত্তর: সুয়ান জাঙের ভ্রমণবৃত্তান্তে শশাঙ্ককে 'বৌদ্ধবিদ্বেষী' বলা হয়েছে।

14. বানভট্টের 'হর্ষচরিত'-এ কোন্ শাসক বৌদ্ধবিদ্বেষী হিসেবে নিন্দিত হয়েছেন? 

উত্তর: বানভট্টের 'হর্ষচরিত'-এ গৌড়রাজ শশাঙ্ক বৌদ্ধবিদ্বেষী হিসেবে নিন্দিত হয়েছেন। 

15. ই-ৎসিঙ্ কোন্ দেশের পর্যটক ছিলেন? 

উত্তর: ই-ৎসিঙ্ চিন দেশের পর্যটক ছিলেন। [

16. শশাঙ্কের আমলে কোন্ মুদ্রা প্রচলিত ছিল? 

উত্তর: শশাঙ্কের আমলে স্বর্ণমুদ্রা প্রচলিত ছিল। 

17. 'গৌড়বহো' কাব্যটি কোন্ ঘটনাকে সূচিত করে? 

উত্তর: 'গৌড়বহো' কাব্যটি কনৌজের শাসক যশোবর্মার হাতে মগধের রাজার পরাজয়কে সূচিত করে। 

18. কোন্ রাজাদের আমলে বাংলায় বৌদ্ধধর্ম রাজার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেছিল? 

উত্তর: খ্রিস্টীয় অষ্টম-নবম শতকে পাল রাজাদের আমলে বাংলায় বৌদ্ধধর্ম রাজার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেছিল। 

19. অষ্টম শতকে কোন্ অঞ্চলের শাসকরা বাংলা আক্রমণ করেছিলেন? 

উত্তর: অষ্টম শতকে কনৌজ এবং কাশ্মীরের শাসকরা বাংলা আক্রমণ করেছিলেন।

20. পাল বংশের কোন রাজা জনসমর্থনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছিল? 

উত্তর: পাল বংশের রাজা গোপাল জনসমর্থনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছিল। 

21. ধর্মপালের পরবর্তী সময়ে কে বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন? 

উত্তর: ধর্মপালের পরবর্তী সময়ে দেবপাল বাংলার সিংহাসনে আরোহণ করেন। 

22 বাংলার কোন্ অংশে কৈবর্তদের যথেষ্ট প্রভাব লক্ষ করা যায়? 

উত্তর: বাংলার উত্তর অংশে কৈবর্তদের যথেষ্ট প্রভাব লক্ষ করা যায়। 

23 'রামচরিত'-এর রচয়িতা কে? [নবাসন তুষ্টুচরণ হাই স্কুল] 

উত্তর: 'রামচরিত'-এর রচয়িতা হলেন সন্ধ্যাকর নন্দী। 

24 কৈবর্ত বিদ্রোহের নেতা দিব্য কোন্ পাল শাসকের অধীনে কর্মরত ছিলেন? 

উত্তর: কৈবর্ত বিদ্রোহের নেতা দিব্য পাল রাজা দ্বিতীয় মহীপালের অধীনে কর্মরত ছিলেন। 

25 পাল বংশের কোন্ রাজা কৈবর্ত বিদ্রোহের নেতা ভীমকে হত্যা করেন? 

উত্তর: পাল বংশের রাজা রামপাল কৈবর্ত বিদ্রোহের নেতা ভীমকে হত্যা করেন। 

26 বল্লালসেন কোন্ ধর্মমতে বিশ্বাসী ছিলেন? 

উত্তর: বল্লালসেন ব্রাহ্মণ্য হিন্দুধর্মমতে বিশ্বাসী ছিলেন। 

27 ১২০৪/৫ খ্রিস্টাব্দে তুর্কি আক্রমণে বাংলায় কোন্ রাজবংশের শাসনের অবসান ঘটে? 

উত্তর: ১২০৪/৫ খ্রিস্টাব্দে তুর্কি আক্রমণে বাংলায় সেন রাজবংশের শাসনের অবসান ঘটে।

28. পাল শাসনের শেষ দিকে কোন্ ঘটনা সেনদের রাজ্যস্থাপনে সাহায্য করেছিল? 

উত্তর: পাল শাসনের শেষ দিকে ঘটা কৈবর্ত বিদ্রোহ সেনদের রাজ্যস্থাপনে সাহায্য করেছিল। 

29. দাক্ষিণাত্যে রাষ্ট্রকূটরা প্রথমে কোন্ রাজাদের অধীনস্থ ছিল? 

উত্তর: দাক্ষিপাত্যে রাষ্ট্রকূটরা প্রথমে চালুক্য রাজাদের অধীনস্থ ছিল। 

30. গুর্জর-প্রতিহার বংশের একজন প্রসিদ্ধ রাজার নাম লেখো। 

উত্তর: গুর্জর-প্রতিহার বংশের একজন প্রসিদ্ধ রাজার নাম হল রাজা ভোজ। 

31. গুর্জর-প্রতিহার রাজা ভোেজ কোন্ অঞ্চলে তাঁর রাজধানী স্থাপন করেন? 

উত্তর: গুর্জর-প্রতিহার রাজা ভোজ কনৌজে তাঁর রাজধানী স্থাপন করেন। 

32. চোল বংশের কোন রাজা কল্যাণীর চালুক্য শক্তিকে পরাজিত করেছিলেন? 

উত্তর: চোল বংশের রাজা প্রথম রাজেন্দ্র কল্যাণীর চালুক্য শক্তিকে পরাজিত করেছিলেন।

33 'বেদুইন' কাদের বলা হত? 

উত্তর: আরব উপদ্বীপের যাযাবর মানুষদের 'বেদুইন' বলা হত। 

34. খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে আরব উপদ্বীপে উদ্ভুত ধর্মের নাম লেখো। 

উত্তর: খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে আরব উপদ্বীপে উদ্ভুত ধর্মের নাম হল ইসলাম ধর্ম। 

35. ইসলাম ধর্মের উদ্‌দ্গাতা কে? 

উত্তর: ইসলাম ধর্মের উদ্‌দ্গাতা হলেন হজরত মহম্মদ। 

36. হজরত মহম্মদ প্রথম কোন্ শহরকে কেন্দ্র করে ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে শুরু করেন? 

উত্তর: হজরত মহম্মদ প্রথম মক্কা শহরকে কেন্দ্র করে ইসলাম ধর্ম প্রচার করতে শুরু করেন। 

37. কত খ্রিস্টাব্দে হজরত মহম্মদ ঘোষণা করেন যে তিনি 'আল্লাহ্র দূত'? 

উত্তর: ৬১০ খ্রিস্টাব্দে হজরত মহম্মদ ঘোষণা করেন যে তিনি 'আল্লাহ্র দূত'। 

38. আরবি মুসলমানরা কার নেতৃত্বে সিন্ধুপ্রদেশ অভিযান করেন? 

উত্তর: আরবে মুসলমানরা মহম্মদ বিন কাশেমের নেতৃত্বে সিন্ধুপ্রদেশ অভিযান করেন। 

39. সুলতান মাহমুদের রাজধানীর নাম কী? 

উত্তর: সুলতান মাহমুদের রাজধানীর নাম হল গজনি। 

40. অল বিরুনি কোন্ বিষয়ে পণ্ডিত ছিলেন? 

উত্তর: অল বিরুনি দর্শন এবং গণিত বিষয়ে পণ্ডিত ছিলেন। 

41. সুলতান মাহমুদের সঙ্গে আগত এক পর্যটকের নাম লেখো। 

উত্তর: সুলতান মাহমুদের সঙ্গে আগত এক পর্যটকের নাম হল দার্শনিক ও গণিতজ্ঞ অল বিরুনি। 

42. কবি ফিরদৌসির লেখা কাব্যের নাম লেখো। 

উত্তর: কবি ফিরদৌসির লেখা কাব্যের নাম হল 'শাহনামা'। বীর তৃতীয় 

43. দ্বিতীয় তরাইনের যুদ্ধে কে রাজপূত পৃথ্বীরাজ চৌহানকে পরাজিত করেছিলেন?

উত্তর: কবি ফিরদৌসির লেখা কাব্যের নাম হল 'শাহনামা'। [43] দ্বিতীয় তরাইনের যুদ্ধে কে রাজপূত বীর তৃতীয় পৃথ্বীরাজ চৌহানকে পরাজিত করেছিলেন? 

উত্তর: দ্বিতীয় তরাইনের যুদ্ধে মহম্মদ ঘুরি রাজপূত বীর তৃতীয় পৃথ্বীরাজ চৌহানকে পরাজিত করেছিলেন। 

44. তুর্কি সেনাপতি বখতিয়ার খলজি বাংলার কোন্ অঞ্চল দখল করেছিলেন? 

উত্তর: তুর্কি সেনাপতি বখতিয়ার খলজি বাংলার নদিয়া দখল করেছিলেন। 

45. 'তবকাত-ই নাসিরি' গ্রন্থের লেখক কে? 

উত্তর: 'তবকাত-ই নাসিরি' গ্রন্থের লেখক হলেন ঐতিহাসিক মিনহাজই-সিরাজ। 

46 মহাভারতে বর্ণিত প্রাচীন বাংলার রাজ্যগুলির নাম উল্লেখ করো। 

উত্তর: মহাভারতে বর্ণিত প্রাচীন বাংলার বিভিন্ন রাজ্যগুলি হল-বঙ্গ, পুণ্ড্র, সুক্ষ্ম ও তাম্রলিপ্ত ইত্যাদি।

দু/তিনটি বাক্যে উত্তর দাও: 

1. কোন্ কোন্ রচনা থেকে আমরা প্রাচীন বাংলা সম্পর্কে জানতে পারি? 

উত্তর: প্রাচীন বাংলা সম্পর্কে আমরা তথ্য পেতে পারি এমন বিভিন্ন যুগের গ্রন্থ হল 'মহাভারত', কৌটিল্যের 'অর্থশাস্ত্র' কালিদাসের 'রঘুবংশম' কাব্য, আবুল ফজলের 'আইন-ই আকবরি' গ্রন্থ ইত্যাদি। 

2. প্রাচীন বাংলার প্রধান অঞ্চলগুলির নাম লেখো। 

উত্তর: প্রাচীন বাংলার সীমানা প্রধানত তিনটি নদী দিয়ে তৈরি হয়েছিল। প্রাচীন বাংলার প্রধান অঞ্চলগুলি ছিল পুণ্ড্রবর্ধন, বরেন্দ্র, বঙ্গ, বঙ্গাল, রাঢ়, সুখ, গৌড়, সমতট ও হরিকেল। 

3 শশাঙ্কের আমলে গৌড়ের বিস্তৃতি কতখানি ছিল? 

উত্তর: খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকে রাজা শশাঙ্কের আমলে গৌড়ের সীমানা বৃদ্ধি পেয়েছিল। শশাঙ্কের আমলে পুণ্ড্রবর্ধন (উত্তরবঙ্গ) থেকে ওড়িশার উপকূল পর্যন্ত এলাকা গৌড়ের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। 

4. কোন্ অঞ্চল প্রাচীন যুগে 'হরিকেল' হিসেবে পরিচিত ছিল? 

উত্তর: প্রাচীন বাংলার প্রধান অঞ্চলগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল হরিকেল। সমতটের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে বর্তমান বাংলাদেশের চট্টগ্রামের উপকূল অঞ্চল প্রাচীন যুগে 'হরিকেল' নামে পরিচিত ছিল। 

5. শশাঙ্ক কোন্ কোন্ অঞ্চলকে নিজ সাম্রাজ্যভুক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলেন? 

উত্তর: শশাঙ্ক তাঁর রাজনৈতিক স্বার্থে উত্তর ভারতের বিভিন্ন আঞ্চলিক শক্তির সঙ্গে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব বা মৈত্রীর সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। এই দ্বন্দ্বে অংশ নিয়ে শশাঙ্ক সমগ্র গৌড় অঞ্চল, মগধ বুদ্ধগয়া এবং ওড়িশার একাংশ নিজের অধিকারভুক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলেন।

6. কোন্ ঘটনা শশাঙ্কের বিশেষ কৃতিত্বের পরিচায়ক? 

উত্তর: শশাঙ্ক তৎকালীন উত্তর ভারতের বিভিন্ন ক্ষমতাধর রাজ্য যেমন-মালব, কনৌজ, থানেসর, কামরূপ ইত্যাদির সঙ্গে লড়াই করে গৌড়ের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এই ঘটনা তাঁর বিশেষ কৃতিত্বের পরিচায়ক। 

7. কোন্ ঘটনা থেকে কর্ণসুবর্ণের বাণিজ্যিক সমৃদ্ধির ইঙ্গিত পাওয়া যায়? 

উত্তর: কর্ণসুবর্ণের রক্তমৃত্তিকা বৌদ্ধবিহার থেকে প্রাপ্ত এক নিদর্শনে ওই অঞ্চলের এক বণিকের জাহাজ নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয় অঞ্চলে বাণিজ্য করতে যাওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। এই ঘটনা কর্ণসুবর্ণের বাণিজ্যিক সমৃদ্ধির ইঙ্গিতবাহী। 

৪. শশাঙ্ককে কেন 'বৌদ্ধধর্মবিদ্বেষী' বলা হয়? [কনটাই হাই স্কুল] 

উত্তর: শশাঙ্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় যে তিনি বৌদ্ধ ভিক্ষুকদের হত্যা করেছিলেন এবং বৌদ্ধদের পবিত্র ধর্মীয় স্মারক ধ্বংস করেছিলেন। একারণেই 'আর্যমঞ্জুশ্রীমূলকল্প','হর্ষচরিত' ইত্যাদি গ্রন্থে তাঁকে 'বৌদ্ধধর্মবিদ্বেষী' হিসেবে সমালোচনা করা হয়েছে। 

9. 'গৌড়তন্ত্র' বলতে কী বোঝ? 

উত্তর: শশাঙ্কের শাসনকালে গৌড়ে যে ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল তাকে বলা হয় 'গৌড়তন্ত্র'। এই ব্যবস্থায় রাজ্যের কর্মচারী বা আমলারা একটি নির্দিষ্ট শাসনপ্রণালী গড়ে তুলেছিল। 

10. 'মাৎস্যন্যায়' কী? [জ্ঞানদীপ হাই স্কুল; শেরপুর রামচন্দ্রপুর হাই স্কুল] 

উত্তর: 'মাৎস্যন্যায়' বলতে দেশে অরাজকতা বা স্থায়ী রাজার অভাবকে বোঝানো হয়। পুকুরের বড়ো মাছ যেমন ছোটো মাছকে খেয়ে ফেলে, তেমনই অরাজকতার সময়ে শক্তিশালী ব্যক্তি দুর্বল ব্যক্তির ওপর অত্যাচার করে। 

11. দেবপালের আমলে পাল সাম্রাজ্যের বিস্তৃতি উল্লেখ করো। 

উত্তর: ধর্মপালের উত্তরাধিকারী দেবপাল পাল সাম্রাজ্যের বিস্তারে উদ্যোগী হয়েছিলেন। দেবপালের সময়ে পাল সাম্রাজ্য উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে দক্ষিণে বিন্ধ্যপর্বত এবং উত্তর-পশ্চিমে কম্বোজ থেকে পূর্বে প্রাগজ্যোতিষপুর পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। 

12. কৈবর্ত বিদ্রোহের তিনজন নেতার নাম উল্লেখ করো। [কাশীনগর হাই স্কুল] 

উত্তর: একাদশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে পাল রাজাদের শাসনকালে বাংলায় কৈবর্ত বিদ্রোহ ঘটেছিল। এই কৈবর্ত বিদ্রোহের তিনজন নেতা ছিলেন দিব্য (দিবেবাক), রুদোক এবং ভীম।

13. সেনবংশীয় রাজা লক্ষ্মণসেন কোন্ অঞ্চলে তাঁর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন? 

উত্তর: বল্লালসেনের পুত্র লক্ষ্মণসেন আনুমানিক ১৯৭৯- ১২০৪/৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বাংলায় তাঁর শাসন বজায় রেখেছিলেন। তাঁর রাজত্বকালে সেন রাজা লক্ষ্মণসেন প্রয়াগ, বারাণসী এবং পুরীতে তাঁর ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। 

14. ত্রিশক্তি সংগ্রাম কী? [জ্ঞানদীপ হাই স্কুল; শেরপুর রামচন্দ্রপুর হাই স্কুল] 

উত্তর: উত্তর ভারতের কনৌজ দখলকে কেন্দ্র করে অষ্টম- নবম শতকে পাল, গুর্জর-প্রতিহার এবং রাষ্ট্রকূট বংশের মধ্যে এক দীর্ঘ লড়াই সংঘটিত হয়। এই লড়াই ত্রিশক্তি সংগ্রাম নামে খ্যাত। 

15. ত্রিশক্তি সংগ্রাম নামটি কি তুমি যথার্থ বলে মনে কর? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] 

উত্তর: কনৌজ দখলকে কেন্দ্র করে বাংলার পাল, পশ্চিম ভারতের গুর্জর-প্রতিহার এবং দাক্ষিণাত্যের রাষ্ট্রকূট-এই তিনটি রাজশক্তি দীর্ঘকাল পারস্পরিক সংঘাতে লিপ্ত হয়েছিল। তাই ত্রিশক্তি সংগ্রাম নামটি যথার্থ বলে বিবেচিত হতে পারে।  

16. দক্ষিণ ভারতের কয়েকটি রাজশক্তির নাম লেখো।  

উত্তর: খ্রিস্টীয় সপ্তম-অষ্টম শতকে দক্ষিণ ভারতে বেশকিছু। • নতুন রাজবংশের উত্থান হয়েছিল। দক্ষিণ ভারতের এই •। উল্লেখযোগ্য রাজশক্তিগুলি হল গল্পব, পাত্য এবং চোল শক্তি।

17. চোল আমলে কোন কোন রাজা দক্ষ নৌবাহিনী গড়ে তুলেছিলেন এবং তার ফল কী হয়েছিল? 

উত্তর: চোল আমলে প্রথম রাজরাজ এবং রাজেন্দ্র চোল রাজয়েই এক দক্ষ নৌবাহিনী গড়ে তুলেছিলেন। এর ফলে প্রোলশক্তির পক্ষে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে ভারতীয় বাণিজ্যকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছিল। 

18. হজরত মহম্মদকে ঈশ্বর বা আল্লাহর বার্তাবাহক বলা হয় কেন? 

উত্তর: ৬১০ খ্রিস্টাব্দে হজরত মহম্মদ ঘোষণা করেন যে আল্লাহ্ তাঁকে ঈশ্বরের দূত মনোনীত করেছেন। সে কারণে তিনি জনমানসে ঈশ্বর বা আল্লাহ্র বার্তাবাহকরূপে পরিচিত। 

19. 'হিজরত' কী? 

উত্তর: ৬২২ খ্রিস্টাব্দে হজরত মহম্মদ ও তাঁর অনুগামীরা মক্কা থেকে মদিনায় চলে আসেন। হজরত মহম্মদ ও তাঁর অনুগামীদের এই মক্কা থেকে মদিনা গমনই আরবি ভাষায় হিজরত নামে পরিচিত। 

20. ভারতের কোন্ অংশে আরবি মুসলিম বণিকদের বসতি গড়ে উঠেছিল? 

উত্তর: খ্রিস্টীয় অষ্টম-নবম শতকে আরব বণিকরা ব্যাবসার কাজে ভারতের পশ্চিম উপকূলে আসতেন। পরবর্তীকালে ভারতের সিন্ধু মোহানায়, মালাবারে আরবি মুসলিম বণিকদের বসতি গড়ে উঠেছিল। 

21. খলিফাতন্ত্রের উৎপত্তি কীভাবে হয়েছিল? 

উত্তর: ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে হজরত মহম্মদের মৃত্যুর পর ইসলাম জগতকে নেতৃত্বদানের উদ্দেশ্যে মহম্মদের প্রধান চার সঙ্গী একে একে মুসলিমদের নেতা নির্বাচিত হন। এঁদের বলা হয় খলিফা এবং এর থেকেই উৎপত্তি হয় খলিফাতন্ত্রের। 

22. 'খিলাফৎ' কাকে বলে? 

উত্তর: খলিফা হলেন ইসলামীয় জগতের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতা। খলিফার অধিকৃত অঞ্চল 'খিলাফৎ' নামে পরিচিত।

23. গজনির সুলতান মাহমুদের ভারত আক্রমণের উদ্দেশ্য কী ছিল? 

উত্তর: গজনির সুলতান মাহমুদের ভারত আক্রমণের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতের মন্দিরগুলি থেকে ধনসম্পদ লুণ্ঠন করা। এই ধনসম্পদ লুণ্ঠন করে তিনি তা খোরাসান এবং মধ্য এশিয়ার সাম্রাজ্যের উন্নতিতে ব্যয় করেছিলেন। 

24. 'হাজার উল আসওয়াদ' কী? 

উত্তর: মক্কায় অবস্থিত মসজিদ-ই হরম নামক মসজিদে কাবা ঘরের এক কোণে কালো রঙের এক পাথর রয়েছে। এই পাথর 'হাজার উল আসওয়াদ' নামে পরিচিত।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর 

চার/পাঁচটি বাক্যে উত্তর দাও: 

1. প্রাচীন বাংলার পুণ্ড্রবর্ধন অঞ্চলটির ভৌগোলিক অবস্থান উল্লেখ করো। 

উত্তর: প্রাচীন বাংলার প্রধান অঞ্চলগুলির মধ্যে বৃহত্তম ছিল পুণ্ড্রবর্ধন। এই অঞ্চলের অন্তর্গত ছিল পশ্চিমবঙ্গ ও 

বাংলাদেশের দিনাজপুর, বগুড়া, রাজশাহী ও পাবনা। কিছু সময়ের জন্য শ্রীহট্টও পুণ্ড্রবর্ধনের অধীন ছিল। গুপ্ত যুগে পুণ্ড্রবর্ধন বা উত্তরবঙ্গ ছিল একটি ভুক্তি বা শাসন অঞ্চল। 

2. প্রাচীন বাংলার সমতট অঞ্চলটির ভৌগোলিক অবস্থান উল্লেখ করো। 

উত্তর: প্রাচীন বাংলার সমতট ছিল বাংলার সীমান্তবর্তী অঞ্চল। এর মূল এলাকা ছিল মেঘনা নদীর পূর্বদিকে। বর্তমানে বাংলাদেশের কুমিল্লা, নোয়াখালি অঞ্চলের সমভূমিকে কেন্দ্র করে সমতট অঞ্চল বিস্তৃত ছিল। মেঘনা নদী সমতটকে বাংলার বাকি অঞ্চলের থেকে আলাদা করে রেখেছিল। 

3. বাংলার স্বাধীন রাজা শশাঙ্ক সম্পর্কে আলোচনা করো। [শেরপুর রামচন্দ্রপুর হাই স্কুল] 

উত্তর: শশাঙ্ক গুপ্তসম্রাট মহাসেনগুপ্তের অধীনে একজন সামন্ত ছিলেন। পরবর্তীকালে ৬০৬ খ্রিস্টাব্দে শশাঙ্ক স্বাধীন গৌড়ের শাসক হন। [a] রাজ্যবিস্তার: শশাঙ্কের আমলে গৌড়ের ক্ষমতা আরও বেড়েছিল। তাঁর রাজত্ব উত্তর-পশ্চিম বারাণসী পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। সমগ্র গৌড়, মগধ, বুদ্ধগয়া, কঙ্গোদ, ওড়িশাকে তিনি নিজ অধিকারে আনতে পেরেছিলেন। তাঁর রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ। [b] কৃতিত্ব: শশাঙ্কের হাতে মৌখরি রাজা গ্রহবর্মা এবং পুষ্যভূতি রাজা রাজ্যবর্ধন পরাজিত ও নিহত হয়েছিলেন। পরবর্তী থানেসরের শাসক হর্ষবর্ধন শশাঙ্ককে উচিত শিক্ষা দিতে কামরূপের রাজা ভাস্করবর্মার সঙ্গে মিত্রতাস্থাপন করলেও শশাঙ্ককে পর্যুদস্ত করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। অবশেষে ৬৩৭ খ্রিস্টাব্দে শশাঙ্ক মারা যান। 

4. হিউয়েন সাঙের বিবরণী থেকে শশাঙ্কের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ সম্পর্কে কী জানা যায়? 

উত্তর: চিনা পর্যটক হিউয়েন সাঙ কর্ণসুবর্ণ সম্পর্কে তাঁর বিবরণীতে নানা কথা তুলে ধরেছিলেন। তিনি লিখেছেন যে, গৌড়ের রাজধানী কর্ণসুবর্ণ একটি জনবহুল দেশ এবং এখানকার মানুষজনের চরিত্র ভালো ও তাঁরা শিক্ষাদীক্ষার পৃষ্ঠপোষক। এখানকার জমি নীচু ও আর্দ্র এবং নিয়মিত কৃষিকাজ হওয়ায় এখানে অঢেল ফুল-ফল পাওয়া যায়। এই অঞ্চলের জলবায়ু নাতিশীতোয়। কর্ণসুবর্ণে বৌদ্ধ ও শৈব উভয় ধর্মের মানুষই বসবাস করেন। কর্ণসুবর্ণের অপর নাম ছিল রাঙামাটি বা কালাসোনা।

5 টীকা লেখো: গোপাল। 

উত্তর: শশাঙ্কের মৃত্যুর পর বছরের পর বছর চলতে থাকা অরাজক অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে বাংলার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সভা 'প্রকৃতিপুঞ্জ' গোপাল নামে একজনকে রাজা নির্বাচিত করে। গোপাল বাংলায় পাল বংশের প্রতিষ্ঠা করেন। 

[a] পরিচয়: পালরাজাদের আদিনিবাস ছিল সম্ভবত বরেন্দ্র অঞ্চলে। গোপাল জাতিতে ক্ষত্রিয় হলেও কোনো রাজবংশের সন্তান ছিলেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। 

[b] কৃতিত্ব: নির্বাচিত রাজা গোপাল মাৎস্যন্যায়ের যুগের অবসান ঘটিয়ে বাংলার ঐক্য ও সংহতি বজায় রাখেন। বাংলার অধিকাংশ এলাকাকে তিনি নিজের শাসনের আওতায় এনেছিলেন।

6. তুমি কি মনে করো যে ত্রিশক্তি সংগ্রাম শুধু রাজনৈতিক কারণে হয়েছিল? তোমার বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দাও। [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] 

উত্তর: হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর পর উত্তর ভারতের রাজনৈতিক ক্ষমতার ভরকেন্দ্র ছিল কনৌজ। এই কনৌজ দখলকে কেন্দ্র করে নিজেদের রাজনৈতিক আধিপত্য লাভ ছিল ত্রিশক্তি সংগ্রামের অন্যতম কারণ। কনৌজ ছিল অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ এবং গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র। সুতরাং কনৌজের বিপুল আর্থিক সম্পদ হস্তগত করার লক্ষ্যে বাংলার পাল, পশ্চিম ভারতের গুর্জর-প্রতিহার এবং দক্ষিণ ভারতের রাষ্ট্রকূট শক্তি ত্রিশক্তি সংগ্রামে জড়িয়ে পড়ে। অর্থাৎ এই সংগ্রামের অন্যতম কারণ ছিল অর্থনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি। 

7. আরবের অধিবাসীদের অর্থনৈতিক জীবন কেমন ছিল? 

উত্তর: ভারতের পশ্চিমে আরব সাগর পেরিয়ে এশিয়া মহাদেশের পশ্চিম ভাগে অবস্থিত আরব উপদ্বীপ। এই উপদ্বীপের অধিকাংশই মরুভূমি বা শুকনো ঘাসজমি অঞ্চল। সুতরাং এখানে কৃষিকাজ তেমন হত না বললেই চলে। তাদের প্রধান কৃষিজ ফসল ছিল খেজুর। খাদ্যসংস্থান ও জীবিকা নির্বাহের জন্য তারা কখনো কখনো উটপালনও করত। তবে কিছু কিছু আরব উপজাতি ব্যাবসাকেই তাদের প্রধান জীবিকা হিসেবে গ্রহণ করেছিল। তবে স্থায়ী কোনো জীবিকা না থাকায় এই মরু অঞ্চলের অধিকাংশ অধিবাসীই ছিল যাযাবর। স্থায়ী জীবিকা না থাকার ফলে তাদের একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাতায়াত করতে হত। 

৪. আরব সভ্যতার সঙ্গে ভারতীয়দের যোগাযোগ কেমন ছিল? 

উত্তর: তুর্কিরা এদেশে আসার অনেক আগে থেকেই ভারতের সঙ্গে ইসলামের যোগাযোগ ছিল। অষ্টম-নবম শতকে আরব বণিকরা ভারতের সিন্ধু মোহানা ও মালাবারে বাণিজ্যিক কার্যকলাপ শুরু করেছিলেন। তাঁরা এই অঞ্চলগুলিতে বসতি গড়ে তোলায় হিন্দু, জৈন ও মুসলিমদের মধ্যে ধর্মীয় সহিমুতার পরিবেশ তৈরি হয়। এই যুগে বাগদাদের খলিফাদের উদ্যোগে সংস্কৃতে রচিত জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসা ও সাহিত্যগ্রন্থগুলি আরবিতে অনূদিত হয়।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর 

আট/দশটি বাক্যে উত্তর দাও: 

1. কৈবর্ত বিদ্রোহ সম্বন্ধে কী জান? [রামনগর বালিকা বিদ্যালয়] 

উত্তর: বাংলায় পাল শাসনের একাদশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে কৈবর্ত বিদ্রোহ ঘটেছিল। কৈবর্তরা ছিল সম্ভবত নৌকার মাঝি বা জেলে। সন্ধ্যাকর নন্দীর 'রামচরিত' কাব্যে এই বিদ্রোহের বিবরণ রয়েছে। 

[a] বিদ্রোহী এবং বিদ্রোহ: এই বিদ্রোহের তিনজন নেতা ছিলেন দিব্য (দিব্বোক), রুদোক ও ভীম। পাল রাজা দ্বিতীয় মহীপালের শাসনকালে দিব্য ছিলেন পাল রাষ্ট্রের কর্মচারী। পালদের দুর্বলতার সুযোগে তিনি বিদ্রোহ করেন। তবে এই বিদ্রোহ কত বড়ো আকার ধারণ করেছিল অথবা কতজন সামন্ত এই বিদ্রোহে যোগ দিয়েছিলেন তার বিশদ বর্ণনা পাওয়া যায় না। 

[b] বিদ্রোহের বিস্তার: দ্বিতীয় মহীপাল বিদ্রোহ দমন করতে গিয়ে নিহত হয়েছিলেন। দিব্য বরেন্দ্র দখল করে সেখানকার রাজা হয়ে বসেন। 

[c] বিদ্রোহ দমন: কৈবর্ত নেতা দিব্য, রুদোক ও ভীমের শাসনের ফলে পাল রাজাদের শাসন উত্তর বিহার ও উত্তর- পশ্চিম বাংলায় সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছিল। রামপাল বাংলা ও বিহারের সামন্ত নায়কের সাহায্যে ভীমকে পরাজিত ও নিহত করে বরেন্দ্র অঞ্চল উদ্ধার করেন। তবে এই বিদ্রোহ পাল শাসনের শেষ দিকে কেন্দ্রীয় শক্তির দুর্বলতা স্পষ্ট করে দেয়। 

2. বাংলায় সেন বংশের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও। 

উত্তর: সেন রাজাদের আদি বাসস্থান ছিল দক্ষিণ ভারতের কর্ণাট অঞ্চল। বাংলার সেন রাজারা খ্রিস্টীয় একাদশ শতকে বাংলায় শাসন শুরু করেছিলেন। 

[a] সামন্তসেন: সামন্তসেন এবং তাঁর ছেলে হেমন্তসেনের আমলে রাঢ় অঞ্চলে সেনদের আধিপত্য তৈরি হয়েছিল। 

[b] বিজয়সেন: হেমন্তসেনের ছেলে বিজয়সেন (১০৯৬- ১১৫৯ খ্রি.) পাল রাজা মদনপালকে পরাজিত করেন এবং তাঁর কাছ থেকে উত্তরবঙ্গের কিছু অঞ্চল দখল করে নেন। তিনিই ছিলেন সেন রাজ্যের প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা। তিনি একে একে কামরূপ, মিথিলা, গৌড়, পূর্ববঙ্গ, রাঢ় জয় করে সেন রাজ্যের পরিধি বাড়িয়েছিলেন। 

[c] বল্লালসেন: বিজয়সেনের ছেলে বল্লালসেন (১১৫৯ ১১৭৯ খ্রি.) সিংহাসনে বসার পর পাল রাজা গোবিন্দপালকে পরাস্ত করেছিলেন। তিনি উত্তরবঙ্গ জয় সম্পূর্ণ করে পূর্বে ও পশ্চিমবঙ্গের সমগ্র অঞ্চল দখল করেন। বল্লালসেন সমাজ সংস্কার করে রক্ষণশীল ও গোঁড়া ব্রাহ্মণ্য আচার-আচরণকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

[d] লক্ষ্মণসেন: বল্লালসেনের ছেলে লক্ষ্মণসেন (১১৭৯- ১২০৬ খ্রি.) প্রয়াগ, বারাণসী ও পুরীতে তাঁর ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তাঁর রাজধানী ছিল পূর্ববঙ্গের বিক্রমপুর। তাঁর 'সামরিক দুর্বলতার সুযোগ. ১২০৪-০৫ খ্রিস্টাব্দে ইখতিয়ারউদ্দিন বখতিয়ার খলজি বাংলায় আক্রমণ করলে সেন শাসনের অবসান ঘটে। 

3. প্রাচীন বাংলার রাজনীতি ও অর্থনীতির নিরিখে গৌড়ের ও কনৌজের তুলনামূলক গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো। [পর্যদ নমুনা প্রশ্ন] 

উত্তর: গৌড়: প্রাচীন বাংলার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল ছিল গৌড়। এই গৌড়কে কেন্দ্র করে শশাঙ্ক স্বাধীন রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন। গৌড়ের রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ। গৌড় রাজ্যটি ছিল জনবহুল ও অত্যন্ত সমৃদ্ধ। রাজধানী কর্ণসুবর্ণ ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র ও প্রশাসনিক কেন্দ্র। শশাঙ্কের আমলের অনেক আগে থেকেই গৌড়ের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাণিজ্যিক যোগাযোেগ গড়ে উঠেছিল। রক্তমৃত্তিকা থেকে গৌড়ের জনৈক বণিক জাহাজ নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মালয় অঞ্চলে বাণিজ্য করতে গিয়েছিল এমন নিদর্শনও পাওয়া যায়।

কেবল বাণিজ্যই নয়, এই সময় উত্তর ভারতের ক্ষমতাধর রাজ্যগুলির সঙ্গে লড়াই করে শশাঙ্ক গৌড়ের রাজনৈতিক মর্যাদা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হন। শশাঙ্ক এই সময় কনৌজরাজ হর্ষবর্ধনের সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত ছিলেন। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত শশাঙ্ক গৌড়ের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে সক্ষম হন। 

কনৌজ: গৌড়ের মতো কনৌজ ছিল ভারতের একটি সম্পদশালী রাজ্য। প্রাচীন ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাণিজ্য কেন্দ্র ছিল কনৌজ। পৃষ্যভূতি রাজা হর্ষবর্ধনের আমলে রাজধানী কনৌজ উত্তর ভারতের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক শক্তির ভরকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। তাই হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর পর বাংলার পাল, পশ্চিম ভারতের রাষ্ট্রকূটরা কনৌজ দখল করে নিজেদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে চেয়েছিল।

পড়ার মাঝে মজার কাজ 

1. রাঢ় অঞ্চল বলতে এখনকার পশ্চিমবঙ্গের কোন্ অঞ্চলকে বোঝায়? সেই অঞ্চলে কী কী নদী আজও আছে? 

উত্তর: রাঢ় অঞ্চল দুটি ভাগে বিভক্ত। উত্তর রাঢ় এবং দক্ষিণ রাঢ়। আজকের মুর্শিদাবাদ জেলার পশ্চিম ভাগ, বীরভূম জেলা, সাঁওতাল পরগনার একাংশ এবং বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমার উত্তর ভাগ ছিল উত্তর রাঢ় অঞ্চল। অন্যদিকে, আজকের হাওড়া, হুগলি এবং বর্ধমান জেলার বাকি অংশ এবং অজয় ও দামোদর নদের মধ্যবর্তী অঞ্চল ছিল দক্ষিণ রাঢ়। এই অঞ্চলের যে নদীগুলি আজও আছে সেগুলি হল দামোদর, ভাগীরথী ও কাঁসাই। 

2. তোমার চেনা কোনো পশুর ছবি কি নীচের মুদ্রায় দেখতে পাচ্ছ? কেন ওই পশুর ছবি এই মুদ্রায় আছে বলে তোমার মনে হয়?

উত্তর: মুদ্রায় পশুটির নাম ষাঁড়। ▶ ধনীয় দৃষ্টিকোণ থেকে ষাঁড় খুব পবিত্র ছিল। ষাঁড় হল দেববাহন। 

3. এখনকার পশ্চিমবঙ্গের একটি মানচিত্র নাও। এখন পশ্চিমবঙ্গে ক-টি জেলা? কোন্ জেলায় তোমার বাড়ি? সেই জেলাটি মানচিত্রের কোথায় হতে পারে বলে তোমার মনে হয়? 

উত্তর: বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে জেলা সংখ্যা ২৩টি। ▶ আমার বাড়ি দার্জিলিং জেলায়। মানচিত্রের সবচেয়ে ওপরে আমার জেলা।


No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();