অধ্যায় 5
মুঘল সাম্রাজ্য সমাধানসহ : সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর| class 7 history 5th chapter questions answer|
পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলি
শূন্যস্থান পূরণ করো:
1. ঘর্ঘরার যুদ্ধে বাবরের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন_ (রানা সঙ্গ/ইব্রাহিম লোদি/নসরৎ খান)।
2. বিলগ্রামের যুদ্ধ হয়েছিল_ ১৫৪১) খ্রিস্টাব্দে। (১৫৩৯/১৫৪০/
3. জাহাঙ্গিরের আমলে শিখ গুরু অর্জুন/হিমু)-কে প্রাণদণ্ড (জয়সিংহ/ দেওয়া হয়।
4. রাজপুত নেতাদের মধ্যে মুঘল সম্রাটদের সঙ্গে জোট বাঁধেননি রানা_ (প্রতাপ সিংহ/মান সিংহ/ যশোবন্ত সিংহ)।
5. আহমেদনগরের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন _(টোডরমল/মালিক অম্বর/বৈরাম খান)।
1. নসরৎ খান 3. অর্জুন
2. ১৫৪০ 4. প্রতাপ সিংহ অম্বর 5. মালিক
নিম্নলিখিত বিবৃতিগুলির সঙ্গে তার নীচের কোন্ ব্যাখ্যাটি তোমার সবচেয়ে মানানসই বলে মনে হয়?
1. বিবৃতি: মুঘলরা তৈমুরের বংশধর হিসেবে গর্ব করত। ব্যাখ্যা-১: তৈমুর ভারতে মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ব্যাখ্যা-২: তৈমুর একসময় উত্তর ভারত আক্রমণ করে দিল্লি দখল করেছিলেন। ব্যাখ্যা-৩:' তৈমুর ছিলেন একজন সফাবি শাসক।
2. বিবৃতি: হুমায়ুনকে একসময় ভারত ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল। ব্যাখ্যা-১: তিনি নিজের ভাইয়ের কাছে যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন। ব্যাখ্যা-২: তিনি শের খানের কাছে যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন। ব্যাখ্যা-৩: তিনি রানা সঙ্গের কাছে যুদ্ধে পরাজিত লৈ হয়েছিলেন।
3. বিবৃতি: মহেশ দাসের নাম হয়েছিল বীরবল। ব্যাখ্যা-১: তাঁর গায়ে খুব জোর ছিল। ব্যাখ্যা-২: তিনি খুব বুদ্ধিমান ছিলেন। ব্যাখ্যা-৩: তিনি মুঘলদের বিরুদ্ধে দেখিয়েছিলেন। বীরত্ব
4. বিবৃতি: ঔরঙ্গজেবের আমলে বাংলায় সামুদ্রিক বাণিজ্যের উন্নতি হয়। ব্যাখ্যা-১: তিনি হারিয়েছিলেন। পোর্তুগিজ ব্যাখ্যা-২: তিনি শিবাজিকে পরাজিত করেছিলেন। ব্যাখ্যা-৩: তিনি বাংলায় বাণিজ্যের ওপর কর ছাড় দিয়েছিলেন। জলদস্যুদের
5. বিবৃতি: আকবরের আমলে জমি জরিপের পদ্ধতিকে বলা হত জাবতি। ব্যাখ্যা-১: জাবত মানে বাজারে শস্যের দাম ঠিক করা। ব্যাখ্যা-২: জাবত মানে একমাত্র বাদশাহ কর আদায় করতে পারেন। ব্যাখ্যা-৩: জাবত মানে জমির রাজস্ব নির্ধারণ করা।
1. ব্যাখ্যা-২ 2. ব্যাখ্যা-২ 3. ব্যাখ্যা-২ 4. ব্যাখ্যা-১ 5. ব্যাখ্যা-৩
সংক্ষেপে (৩০-৫০ টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও:
[1] মুঘলরা কেন নিজেদের বাদশাহ বলত?
উত্তর: বাদশাহ শব্দটি ফারসি, যার অর্থ হল শক্তিশালী শাসক। মুঘলরা বাদশাহ শব্দটি ব্যবহার করত। এই উপাধি ব্যবহার করে তারা বোঝাতে চাইল যে, তাদের শাসন করার ক্ষমতা অন্য কারোর অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল নয়। একটি বিস্তৃত অঞ্চলের ওপর তারা নিজেদের ক্ষমতায় শাসন করে। ১৫০৭ খ্রিস্টাব্দে কাবুলে থাকার সময় বাবর বাদশাহ বা পাদশাহ উপাধি নেন।
2. হুমায়ুন আফগানদের কাছে কেন হেরে গিয়েছিলেন?
উত্তর: বাবরের মৃত্যুর পর হুমায়ুন শাসক মনোনীত হন। তৈমুরীয় নীতি মোতাবেক হুমায়ুন উত্তরসূরিদের মধ্যে অঞ্চল ভাগ করার প্রথা মানেননি। ফলে হুমায়ুনের ভাইরা সরাসরি শাসনের দায়িত্ব না পাওয়ায় সাম্রাজ্য রক্ষার তাগিদ অনুভব করেননি। তাই পরবর্তীকালে একজোট হয়েও আফগানদের বিরুদ্ধে হুমায়ুন জয় পাননি।
3. ঔরঙ্গজেবের রাজত্বে কেন মুঘল অভিজাতদের মধ্যে রেষারেষি বেড়েছিল?
উত্তর: ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে (১৬৫৮-১৭০৭ খ্রি.) দাক্ষিণাত্যের বিজাপুর ও গোলকোন্ডা বহু প্রচেষ্টার পর মুঘলদের দখলে আসে। এর ফলে মারাঠা ও দক্ষিণি মুসলিম অভিজাতরাও মুঘল প্রশাসনে যোগ দেয়। ফলে মনসবদারি ব্যবস্থায় বৈচিত্র্য বেড়েছিল। কিন্তু এই বৈচিত্র্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মনসব পাওয়া নিয়েও অভিজাতদের মধ্যে রেষারেষি তৈরি হয়েছিল। এই রেষারেষি মুঘল সাম্রাজ্যের পক্ষে শুভ হয়নি।
4. সুলহ-ই কুল কী?
উত্তর: মুঘল সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক আদর্শ ছিল বিভিন্ন গোষ্ঠীকে শাসন কাজে যুক্ত করে একটি যথার্থ ভারতীয় সাম্রাজ্য গড়ে তোলা। এই আদর্শে সকলের জন্য চারটি শান্তির পথ থাকবে। সেগুলি হল-[a] বাদশাহ ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী শাসন পরিচালনা করবেন। [b] প্রজাদের প্রতি তাঁর পিতৃসুলভ ভালোবাসা থাকবে। [c] কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতি তাঁর পক্ষপাত থাকবে না। [d] সকলের প্রতি সহনশীলতা থাকবে। এইসব আদর্শের ভিত্তিকে বা পথকে আকবর সুলহ-ই কুল বলে উল্লেখ করেছিলেন।
5. মুঘল শাসনব্যবস্থায় সুবা প্রশাসনের পরিচয় দাও।
উত্তর: মুঘল সম্রাট বাবর তাঁর রাজত্বকালের বেশিরভাগ সময়ই যুদ্ধ করে কাটানোয় প্রশাসনের দিকে তিনি সেভাবে গুরুত্ব দিতে পারেননি। তবে মুঘল শাসনের মাঝে আফগান শাসক শেরশাহের প্রশাসনিক পরিকাঠামো সুপরিকল্পিত ছিল। পরবর্তীকালে আকবর তাঁর প্রশাসনের অনেক অংশে এই পরিকাঠামো অনুসরণ করেছিলেন। তিনি তাঁর সাম্রাজ্যকে শাসনকাজের সুবিধার জন্য ১৫টি প্রদেশ বা সুবায় ভাগ করেছিলেন। সুবাগুলিকে আবার ভাগ করা হত কয়েকটি সরকার এবং সরকারগুলিকে ভাগ করা হত পরগনায়।
বিশদে (১০০-১২০ টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও: সরকার এবং সরকারপু
1. পানিপতের প্রথম যুদ্ধ, খানুয়ার যুদ্ধ ও ঘর্ঘরার যুদ্ধের মধ্যে তুলনা করো। পানিপতের প্রথম যুদ্ধে যদি মুঘলরা জয়ী না হত তাহলে উত্তর ভারতে কারা শাসন করত?
উত্তর:পানিপতের প্রথম যুদ্ধ
[a] পানিপতের প্রথম যুদ্ধ ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল।
[b] এই যুদ্ধে বাবরের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন শেষ লোদি সুলতান ইব্রাহিম।
[c] পানিপতের প্রথম যুদ্ধে বাবর ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন।
খানুয়ার যুদ্ধ
(a) খানুয়ার যুদ্ধ ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল।
(b)এই যুদ্ধে বাবরের প্রতিপক্ষ ছিলেন রাজপুতরা, যাঁদের নেতৃত্ব দেন মেবারের রানা সংগ্রাম সিংহ।
(c) খানুয়ার যুদ্ধ ভারতে মুঘলের ভিত্তিকে সুদৃঢ় করে এবং রাজপুতদের ভারত শাসনের স্বপ্ন বিলীন হয়ে যায়।
ঘঘরার যুদ্ধ :
(a) ঘর্ঘরার যুদ্ধ ১৫২৯ খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল।
(b)এই যুদ্ধে বাবরের প্রতিপক্ষ ছিলেন পূর্ব ভারতের আফগানরা, যাঁদের নেতৃত্ব দেন বাংলার শাসক নসরৎ শাহ।
(c) ঘর্ঘরার যুদ্ধে জয়লাভ বাবরকে মুঘল সাম্রাজ্য বিস্তারে সাহায্য করেছিল।
▶ পানিপতের প্রথম যুদ্ধে যদি মুঘলরা জয়ী না হত তাহলে দিল্লিতে ইব্রাহিম লোদির শাসন অটুট থাকত। এতে উত্তর- পশ্চিম ভারতে মেবারের রানা সংগ্রাম সিংহ যেভাবে রাজপুতদের জোটবদ্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন, তাতে দিল্লি সুলতানির পতন সুনিশ্চিত ছিল। এ ছাড়া পূর্ব ভারতে নসরৎ শাহ, মামুদ শাহ, শের খানের প্রভাব বিস্তার দিল্লি সুলতানিকে ক্ষতিগ্রস্ত করত।
2. শেরশাহের শাসনব্যবস্থায় কী কী মানবিক চিন্তার পরিচয় তুমি পাও তা লেখো।
উত্তর: বাদশাহ হুমায়ুনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন শের খান। হুমায়ুনকে পরপর দুটি যুদ্ধে পরাজিত করে তিনি দিল্লি-আগ্রা দখল করে 'শাহ' উপাধি ধারণ করেন। মাত্র পাঁচ বছরের রাজত্বকালে (১৫৪০- ১৫৪৫ খ্রি.) তিনি শাসক হিসেবে যে উদারতা, নিরপেক্ষতা, বিচক্ষণতা ও প্রজাদরদ দেখিয়েছিলেন তা খুবই বিরল।
জনকল্যাণকামী শাসন: শেরশাহের শাসনব্যবস্থার মূল লক্ষ্য ছিল প্রজাদের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গলসাধন করা। তিনি নিজেকে প্রজাদের রক্ষক ও অভিভাবক বলে মনে করতেন। তিনি যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে সড়কপথের উন্নতি করেন। তিনি বাংলার সোনারগাঁ থেকে পেশোয়ার পর্যন্ত সড়ক-ই-আজম (GT Road), আগ্রা থেকে যোধপুর এবং চিতোর পর্যন্ত রাস্তা তৈরি করেন। পথিক ও বণিকদের সুবিধার জন্য রাস্তার ধারে সরাইখানা নির্মাণ ও বৃক্ষরোপণ করেন। এমনকি তিনি ঘোড়ার মাধ্যমে ডাক-যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করেছিলেন। তিনি কৃষকদের স্বত্ব স্বীকার, করে পাট্টা ও কবুলিয়ত প্রথা চালু করেন।
3. মুঘল শাসকদের রাজপুত নীতিতে কী কী মিল ও অমিল ছিল তা বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: মিল: মুঘল বাদশাহ হুমায়ুন থেকে শুরু করে ঔরঙ্গজেব পর্যন্ত সকলেই বুঝেছিলেন যে, ভারতে ক্ষমতা ধরে রাখতে হলে রাজপুত রাজাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখা দরকার। কারণ এই রাজপুতরাই ছিল উত্তর ভারতের বিশাল অঞ্চলের জমিদার। [a] বাদশাহ আকবর মৈত্রী নীতির মাধ্যমে রাজপুতদের শাসনব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন। [b] এই সময় থেকে মুঘল বাদশাহ ও শাহজাদাদের সঙ্গে রাজপুত পরিবারের মেয়েদের বিয়ে হতে থাকে। [c] মুঘলদের রাজপুত স্ত্রীদের নিজ নিজ ধর্মপালনের অধিকার বজায় রাখা হয়। [d] হিন্দুদের ওপর থেকে তীর্থকর ও জিজিয়া কর তুলে দেওয়া হয়। [e] রাজপুতদের কিংবা হিন্দুদের জোর করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করা হত না। [f] বীর রাজপুতদের উচ্চ মনসব পদে নিয়োগ করা হত।
অমিল: বাদশাহ ঔরঙ্গজেবের সময়ে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় রাজপুতরা মুঘল শাসনব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। তবে এই সময়ে থেকে মুঘলদের রাজপুত নীতিতে কিছু অমিল বা পরিবর্তন দেখা যায়।
আকবরের পরবর্তী সম্রাট জাহাঙ্গির ও শাহ জাহানের আমলেও মুঘল রাজপুত সম্পর্ক ছিল ঘনিষ্ঠ। মুঘল রাষ্ট্রকাঠামো ও রাজপুত নীতিতে এই দুই সম্রাট আকবরের নীতিকেই অনুসরণ করেছিলেন। তবে পরবর্তীকালে ঔরঙ্গজেবের সময়ে পুনরায় মুঘল-রাজপুত সংঘাত শুরু হয়। এ ছাড়া তিনি রাজপুতদের ওপর পুনরায় জিজিয়া কর আরোপ করেন। সুতরাং, বলা যায় মুঘল-রাজপুত সম্পর্ক একইরকম ছিল না।
4. দাক্ষিণাত্য অভিযানের ক্ষত মুঘল শাসনের ওপর কী প্রভাব ফেলেছিল? উত্তর: বাদশাহ ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে মুঘলরা দাক্ষিপাত্যের বিজাপুর ও গোলকোন্ডা দখল করেছিল। ঔরঙ্গজেব ভেবেছিলেন যে দক্ষিণি রাজ্যগুলি মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হলে অনেক বেশি রাজস্ব আদায় করা যাবে। কিন্তু তাঁর দাক্ষিণাত্য নীতির ফল হয়েছিল ভয়ানক, যার প্রভাব পড়েছিল মুঘল শাসনের ওপর। যেমন- [a] বিজাপুর ও গোলকোন্ডা রাজ্য দুটি অধিকার করতে গিয়ে মুঘলরা পরোক্ষভাবে মারাঠা নেতা শিবাজির শক্তি বৃদ্ধি করেছিল। পরে শিবাজিকে স্বাধীন রাজা বলেও মেনে নিতে হয়েছিল। [b] প্রায় ২৫ বছর ধরে যুদ্ধ করে মুঘল সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে পড়েছিল, যার ফল মুঘল সাম্রাজ্যের পক্ষে শুভ হয়নি। [c] দীর্ঘকাল ঔরঙ্গজেব রাজধানীতে না থাকায় মুঘল দরবারে অভিজাতদের মধ্যে রেষারেষি, দলাদলি বৃদ্ধি পেয়েছিল। এমনকি এই সুযোগে জাঠ, বুন্দেল, সৎনামি, শিখ প্রভৃতি জাতি বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল। [d] বহু বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মুঘলদের অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়। এর ফলে রাজকোশ শূন্য হয়ে পড়েছিল। এইসবের জন্য বলা হয় দাক্ষিণাত্য ক্ষত ঔরঙ্গজেবকে ধ্বংস করেছিল এবং মুঘল সাম্রাজ্য ভাঙনের মুখে পড়েছিল।
5. মুঘল সম্রাটদের কি কোনো নির্দিষ্ট উত্তরাধিকার নীতি ছিল? উত্তরাধিকারের বিষয়টি কেমনভাবে তাঁদের শাসনকে প্রভাবিত করেছিল?
উত্তর: মুঘল উত্তরাধিকার নীতি
মুঘল সম্রাটদের কোনো নির্দিষ্ট উত্তরাধিকার নীতি ছিল না। মুঘলরা তৈমুরের বংশধর হিসেবে গর্ববোধ করত। তৈমুরীয় নীতি মোতাবেক উত্তরসূরিদের মধ্যে অঞ্চল ভাগ করার প্রথা ছিল। হুমায়ুন কিন্তু তা মানেননি। বাবর শাসক হিসেবে, হুমায়ূনকে মনোনীত, করেছিলেন। তাই হুমায়ুন সাম্রাজ্যের শাসনভার নিজের হাতেই রেখেছিলেন। পরবর্তীকালে মুঘল বাদশাহের জ্যেষ্ঠপুত্রই বাদশাহ হয়েছিলেন।
মুঘল শাসনের ওপর উত্তরাধিকার বিষয়টির প্রভাব
মুঘল সম্রাটদের কোনো নির্দিষ্ট উত্তরাধিকার নীতি না থাকায় মুঘল সাম্রাজ্যের ঐক্য বারবার বিপন্ন হয়েছিল। [a] হুমায়ুনের শাসনকালে তিনি তাঁর ভাইদের কেবল কিছু অঞ্চলের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সরাসরি শাসনের দায়িত্ব না পাওয়ায় তাঁরাও সাম্রাজ্য রক্ষা করার তাগিদ অনুভব করেননি। তাই আফগান শাসক শের খানের পক্ষে হুমায়ুনকে বিতাড়িত করা সহজ হয়েছিল। [b] শাহ জাহানের জীবনের শেষ দিকে তাঁর ছেলেদের মধ্যে সিংহাসন নিয়ে লড়াই বেঁধে গিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে দারাশিকোহ্ ও অন্য ভাইদের সরিয়ে ঔরঙ্গজেব বাদশাহ হয়েছিলেন। [c] ঔরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর তাঁর উত্তরাধিকারীরা দুর্বল ও অযোগ্য হওয়ায় তাঁদের পক্ষে বিশাল সাম্রাজ্য শাসন করা কোনোমতেই সম্ভব হয়নি।
কল্পনা করে লেখো (১০০-১৫০ টি শব্দের মধ্যে):
1. যদি তুমি বাদশাহ আকবরের মতো বিভিন্ন ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষের দেশে সম্রাট হতে তাহলে তোমার ধর্মনীতি কী হত? উত্তর: যদি আমি বাদশাহ আকবরের মতো বিভিন্ন ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষের দেশে সম্রাট হতাম তাহলে আমার ধর্মনীতি হত নিম্নরূপ
[a] ধর্মনিরপেক্ষ শাসন: সম্রাট হিসেবে প্রজাদের প্রতি আমার পিতৃসুলভ ভালোবাসা থাকবে। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতি আমার পক্ষপাত থাকবে না। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের দেশে একজন শাসক হয়ে ধর্মনিরপেক্ষ শাসননীতি প্রণয়ন করতে হবে, অর্থাৎ এই নীতি কোনো ধর্ম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যাবে না এবং তাদের আঘাত করবে না। আবার কোনো বিশেষ ধর্মসম্প্রদায়ের প্রতি পক্ষপাতও থাকবে না।
[b] নিরপেক্ষ ধর্মনীতি গ্রহণ: বাদশাহ আকবরের মতোই বিভিন্ন ধর্মের সারবস্তু গ্রহণ করে আমি 'এক ঈশ্বর' তত্ত্বের ওপর নতুন করে ধর্মনীতি প্রণয়ন করব। এই নীতি হবে সকলের প্রতি সহনশীলতা, সততা, বিশ্বাস, আনুগত্য, মদ ও জুয়া থেকে বিরত থাকা এবং সমবেতভাবে রাষ্ট্রীয় ধর্মের প্রতি আস্থা রাখার শপথ গ্রহণ করা। ভারতবর্ষকে ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন 'ধর্মের মানুষের দেশে ধর্মীয় উদারতার নীতিও আমাকে গ্রহণ করতে হবে।
2. মনে করো তুমি সম্রাট ঔরঙ্গজেব। তাহলে কেমনভাবে তুমি দাক্ষিণাত্যের সমস্যার মোকাবিলা করতে?
উত্তর: সম্রাট ঔরঙ্গজেবরূপে আমি আমার সাম্রাজ্যের আয়তন বিস্তৃত করতে দাক্ষিণাত্যের রাজ্যগুলি দখলে আগ্রহী হতাম। এর জন্য আমি আমার সেনাবাহিনীকে সংগঠিত ও শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে সেনানায়কদের উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলতাম। কারণ দক্ষিণের রাজ্যগুলি দখল করলে যেমন সাম্রাজ্যের আকার বিশাল হত তেমনই অনেক বেশি রাজস্ব আদায় করা যেত। আমি আমার যুবরাজদের নেতৃত্ব দেওয়ার যথাযথ প্রশিক্ষণ দিতাম এবং প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধের মহড়া দিতে বলতাম। এমনকি যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে কিছুদিন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সৈন্যদের যুদ্ধজয়ের জন্য উৎসাহ দিতাম। তবে কখনোই আমার সাম্রাজ্যের রাজধানী দিল্লিকে অরক্ষিত রাখতাম না কিংবা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সুবাগুলির সৈন্যবাহিনীকে দক্ষিণ ভারতের সমস্যার মোকাবিলার জন্য আনতাম না। এখানে যুদ্ধক্ষেত্রে থাকত দাক্ষিণাত্যের জন্য সংগঠিত সেনাবাহিনী এবং দিল্লি থেকে সরবরাহ করা সৈন্যবাহিনী।
এ ছাড়া দাক্ষিণাত্যের সমস্যার মোকাবিলার জন্য একটি সুচিন্তিত পরিকল্পনা রচনা করতাম। তবে কখনোই দীর্ঘকালব্যাপী যুদ্ধে যেতাম না। কারণ এর জন্য অনেক অর্থ ও লোকবলের প্রয়োজন হয়ে পড়ত। এতে সৈন্যরাও উৎসাহ হারিয়ে ফেলত। তাই 'একের পর এক' নীতি অনুযায়ী চলতাম। যুদ্ধে জয় করা রাজ্যে একজন করে বিশ্বস্ত দক্ষ | প্রাদেশিক শাসনকর্তা ও তাঁর সৈন্যবাহিনী নিয়োগ করতাম।
3. মনে করো তুমি সপ্তদশ শতকের একজন মারাঠা মনসবদার। তোমার জায়গির থেকে আয় কমে গেছে। এই অবস্থায় মুঘল ও মারাঠাদের মধ্যে যুদ্ধ বেঁধে গেছে। তুমি কী করবে? কেন করবে?
উত্তর: আমি যা করব:
[a] মনসবদারদের কর্তব্য অনুসারে আমি মারাঠা নেতার জন্য সৈন্য প্রস্তুত রাখব। যখনই আমাদের নেতা সৈন্যের জন্য আমাকে বলবেন তখনই একটা সৈন্যবাহিনী নিয়ে তাঁকে সাহায্য করব।
[b] এ ছাড়া যুদ্ধের সময় আমার আর্থিক সামর্থ্যের মধ্যেও যাতে সৈন্যের জোগান দেওয়া যায় সেদিকে নজর দেব।
[c] অন্যান্য মারাঠা মনসবদাররাও যাতে এই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে তার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
কেন করব:
[a] আমার অধীনে যেহেতু কিছু সৈন্য রয়েছে। এবং যুদ্ধের সময় সৈন্য দিয়ে সাহায্য করাই আমার কাজ।
[b] স্বদেশ ও সবজাতিকে রক্ষা করাই প্রকৃত ধর্ম।
[c] আর্থিক দিক দিয়ে দুর্বল হয়েও মারাঠাদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে এই যুদ্ধে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেব।
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর:
অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর মান 1
সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:
1. মুঘলদের ক্ষমতা কমে যেতে শুরু করে- (সপ্তদশ শতক থেকে/ অষ্টাদশ শতক থেকে/ঊনবিংশ শতক থেকে/ পঞ্চদশ শতক থেকে)
2. সফাবিরা ছিল- (ইরানের রাজবংশ/তুর্কিস্তানের রাজবংশ/ আর্মেনিয়ার রাজবংশ/আফগান রাজবংশ)
3. উজবেকরা ছিল- (হিন্দিভাষী/উর্দুভাষী/তুর্কিভাষী/ আরবি ভাষী)
4. চেঙ্গিস খান ছিলেন একজন- (মোঙ্গল নেতা/ আফগান নেতা/তুর্কি নেতা/শক নেতা)
5. মুঘলরা অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন-(চেঙ্গিস খানকে। তৈমুর লঙকে/সফাবি রাজবংশকে/ঔরঙ্গজেবকে)
6. ভারতবর্ষে বাবরের শাসনকাল ছিল- (১৫২৬-৩০ খ্রিস্টাব্দে/১৫৩০-৩৪ খ্রিস্টাব্দে/১৫৩০-৪০ খ্রিস্টাব্দে) খ্রিস্টাব্দে/১৫৩৮-৪২
7. বাবর ফরগনা প্রদেশের শাসক হন- (১৩৯৪ খ্রিস্টাব্দে/ ১৪৯৪ খ্রিস্টাব্দে/১৫৯৪ খ্রিস্টাব্দে/১৩৯৮ খ্রিস্টাব্দে)
৪. ভারতে মুঘল শাসকগণ নিম্নলিখিত উপাধিটি ব্যবহার করতেন- (চক্রবর্তীন/সুলতান/বাদশাহ/সম্রাট)
9. 'শাহ' কথাটির অর্থ হল- (বিদ্যানুরাগী/ ধর্মানুরাগী/ শাসক বা রাজা/উলেমা)
10. খানুয়ার যুদ্ধ সংঘটিত হয়- (১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে/ ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দে/১৫২৮ খ্রিস্টাব্দে/১৫২৫ খ্রিস্টাব্দে)
11. বাবর শাসক হিসেবে মনোনীত করেছিলেন- (হুমায়ুনকে/ কামরানকে/হিন্দালকে/আসকারিকে)
12. উত্তরসূরিদের মধ্যে অঞ্চল ভাগ করার তৈমুরীয় নীতি ভেঙে ছিলেন- (বাবর/হুমায়ুন/শেরশাহ/আকবর) [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
13. হুমায়ুন শের খানের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন পরপর- (২ বার/৩ বার/৪ বার/৫ বার)
14. শেরশাহের শাসনসংস্কারের সঙ্গে দিল্লির যে সুলতানের সংস্কারকার্যের মিল ছিল তিনি হলেন- (ইলতুৎমিশ/ আলাউদ্দিন খলজি/মহম্মদ বিন তুঘলক/বলবন)
15. শেরশাহ যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটিয়েছিলেন সেটি হল- (ডাক ব্যবস্থা/টেলিগ্রাম ব্যবস্থা/রেলওয়ে ব্যবস্থা/তার ব্যবস্থা)
16. দাগ ও হুলিয়া ব্যবস্থা চালু রেখেছিলেন- (বাবর/ শেরশাহ/হিমু/অমর সিংহ) [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন; নসিবপুর হাই স্কুল]
17. আকবর সম্পূর্ণভাবে তাঁর সাম্রাজ্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন- (১২ বছর বয়সে/১৫ বছর বয়সে/১৮ বছর বয়সে/১৬ বছর বয়সে)
18. পানিপতের দ্বিতীয় যুদ্ধ সংঘটিত হয়- (১৫৩৬ খ্রিস্টাব্দে/ ১৫৪৬ খ্রিস্টাব্দে/১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে/১৫৬০ খ্রিস্টাব্দে)
19. আকবরের সঙ্গে সংঘাত বাঁধে মেওয়াড়ের রানা- (সংগ্রাম সিংহের/প্রতাপ সিংহের/অমর সিংহের/ উদয় সিংহের)
20. আকবর চিতোর জয় করেন- (১৫৬৬ খ্রিস্টাব্দে/ ১৫৬৭ খ্রিস্টাব্দে/১৫৬৮ খ্রিস্টাব্দে/১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে)
21. 'আকবরনামা'-এর রচয়িতা ছিলেন—(আবুল ফজল/ আমির খসরু/বদাউনি/ফৈজি)
22. 'বাদশাহনামা' রচনা করেছিলেন- (আবুল ফজল/ বদাউনি/আব্দুল হামিদ লাহোরি/ফৈজি)
23. শাহ জাহানের পর দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করেন- (দারাশিকোহ্/সুজা/ঔরঙ্গজেব/সলিম)
24. রাজস্থানী ভাষায় 'ওয়াড়' শব্দের অর্থ একটি- (বিশেষ অঞ্চল/বন্দর/নদীতীরবর্তী অঞ্চল/ভবন)
25. রাঠোর যুদ্ধ সংঘটিত হয়- (১৬৭৫ খ্রিস্টাব্দে/ ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দে/১৬৮৩ খ্রিস্টাব্দে/১৫৮০ খ্রিস্টাব্দে)
26. কোন্ মুঘল বাদশাহ পুনরায় জিজিয়া কর আরোপ করেছিলেন- (জাহাঙ্গির/ শাহ জাহান/ ঔরঙ্গজেব/সেলিম)
27. খান্দেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুর্গ হল- (চিতোর/ যোধপুর/আসিরগড়/ একডালা)
28. ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে প্রভূত ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছিল- (রাজপুতদের/মারাঠাদের/তামিলদের/ শিখদের)
29. মুঘল সাম্রাজ্যের আয়তন সর্বাপেক্ষা বৃদ্ধি পেয়েছিল- (আকবরের আমলে/জাহাঙ্গিরের আমলে/ ঔরঙ্গজেবের আমলে/শাহ জাহানের আমলে)
30. আকবরের সাম্রাজ্যে প্রদেশকে অভিহিত করা হত- (সুবা নামে/সরকার নামে/পরগনা নামে/চাকলা নামে)
31. মনসব বলতে বোঝানো হয়- (জমিদারি/ওয়াতন/ গাজি/ মুঘল প্রশাসনিক পদ)
32. উচ্চপদস্থ মনসবদারদের বলা হত- (উলেমা/রানা/ আমির/ঠাকুর)
33. মনসবদারদের নিয়োগকর্তা ছিলেন- (উলেমা/ বাদশাহ / প্রধানমন্ত্রী বা ওয়াজির-ই আজম/শদদ-ই-মাস)
34. জাবতি ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন- (বাবর/হুমায়ুন/
35. আকবর দহসালা ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন- (১৫৭০ আকবর/জাহাঙ্গির) খ্রিস্টাব্দে/১৫৮০ খ্রিস্টাব্দে/১৫৯০ খ্রিস্টাব্দে/১৫৯৬ খ্রিস্টাব্দে)
36. টোডরমল ছিলেন আকবরের- (প্রধানমন্ত্রী/ সেনাপতি/ রাজস্বমন্ত্রী/অর্থমন্ত্রী)
37. বারো ভূঁইয়াদের অন্যতম ছিলেন- (মালিক অম্বর/ ইশা খান/তাহমম্প/আদিল শাহ)
উত্তর : 1. অষ্টাদশ শতক থেকে 3. তুর্কিভাষী 2. ইরানের রাজবংশ 4. মোঙ্গল নেতা 5. তৈমুর লঙকে 6. ১৫২৬-৩০ খ্রিস্টাব্দে 7. ১৪৯৪ খ্রিস্টাব্দ ৪. বাদশাহ 9. শাসক বা রাজা 10. ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দে 11. হুমায়ুনকে 12. হুমায়ুন [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] উত্তর 20. ১৫৬৮ খ্রিস্টাব্দে 21. আবুল ফজল 22. আব্দুল হামিদ লাহোরি 23. ঔরঙ্গজেব 24. বিশেষ অঞ্চল 25. ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দে 26. ঔরঙ্গজেব 27. আসিরগড় 28. মারাঠাদের 29. ঔরঙ্গজেবের আমলে 30. সুবা নামে 31. মুঘল প্রশাসনিক পদ 32. আমির 13. ২ বার 15. ডাক ব্যবস্থা 16. শেরশাহ 14. আলাউদ্দিন খলজি 33. বাদশাহ 17. ১৮ বছর বয়সে 18. ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে 37. ইশা খান 34. আকবর 35. ১৫৮০ খ্রিস্টাব্দে 36. রাজস্বমন্ত্রী 19. প্রতাপ সিংহের
শূন্যস্থান পূরণ করো:
1. সফাবিরা খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতক থেকে_শতক পর্যন্ত ইরানে রাজত্ব করত।
2. উজবেকরা বসবাস করত মধ্য_।
3. তৈমুর লঙ ছিলেন একজন_ নেতা।
4. মুঘলরা_ এর বংশধর হিসেবে গর্ববোধ করত।
5. বাবরের পুরো নাম হল_।
6. বাবর মাত্র_শাসক হন। বছর বয়সে ফরগনা প্রদেশের
7. মুঘলরা সুলতান কথাটি_ এর ক্ষেত্রে ব্যবহার করতেন।
৪. বাদশাহ অথবা পাদশাহ শব্দগুলি _।
9. মুঘলদের সমসাময়িক ভারতবর্ষের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক গোষ্ঠী ছিল_।
10. পানিপত ও খানুয়ার যুদ্ধে বাবরের রণকৌশল -এর ওপর নির্ভরশীল ছিল।
11. বাবরের কাছে খানুয়ার যুদ্ধ ছিল_ লড়াই।
12. বাবর --দের বিরুদ্ধে ঘর্ঘরা যুদ্ধ করেছিলেন।
13. শাসকশ্রেণির সঙ্গে সামরিক অভিজাতদের পারিবারিক এবং বংশগত যোগ ছিল দিল্লির__ শাসনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
14.__ পাট্টা ও কবুলিয়ত প্রবর্তন করেন।
15. শেরশাহ নির্মিত সড়ক-ই আজম পরবর্তীকালে নামে__ পরিচিত হয়।
16. শেরশাহ __উন্নতি ঘটিয়েছিলেন। মাধ্যমে ডাক-যোগাযোগ ব্যবস্থার
17. আকবর মহেশ দাসের নামকরণ করেছিলেন_।
18. আকবর বীরবলকে_ উপাধি দিয়েছিলেন।
19. মুঘল সাম্রাজ্যকে নিরাপদ রাখতে_ সীমান্তবর্তী অঞ্চলে মুঘল প্রভাব তৈরি করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল।
20. -এর আমলে বাংলা প্রকৃতপক্ষে মুঘল সাম্রাজ্যভুক্ত হয়।
21. শাহ জাহানের আমলে দিল্লি_ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। -এর ওপর
22. ঔরঙ্গজেবের আমলে_ পেয়েছিল। প্রথায় বৈচিত্র্য বৃদ্ধি
23. সামুগড়ের যুদ্ধে_ জয়ী হন।
24. মুঘলরা চট্টগ্রাম বন্দর দখল করে বাংলাকে_ জলদস্যুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করেছিল।
25. আকবর রাজপুতদের সঙ্গে সম্পর্ক _স্থাপনে ও যুদ্ধনীতি অবলম্বন করেছিলেন।
26. আকবর যুদ্ধবন্দিদের বলপূর্বক_ ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করা নিষিদ্ধ করেন।
27. জাহাঙ্গির ও শাহ জাহান নীতিকেই অনুসরণ করেছিলেন। --এর রাজপুত
28. মারওয়াড় শব্দটি এসেছে_ থেকে।
29. পোর্তুগিজরা মুঘল যুগে ভারতের_উপকূলে আগমন করেছিল।
30. আকবরের সাম্রাজ্যে সুবাগুলি --এ বিভক্ত ছিল।
31. মনসবদারদের প্রদত্ত রাজস্বের বরাতকে বলা হত _।
32. আকবরকে দহসালা ব্যবস্থা প্রবর্তনে সাহায্য করেছিলেন মন্ত্রী_।
উত্তর:1. অষ্টাদশ 2. এশিয়ায় 3. তুর্কি 4. তৈমুর লঙ 5. জহিরউদ্দিন মহম্মদ বাবর 6. ১২ 7. যুবরাজ ৪. ফারসি 9. রাজপুত গোষ্ঠী 10. কামান 11. ধর্মের 12. আফগান 13. মুঘল 14. শেরশাহ 15. গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক এর রোড 16. ঘোড়ার 17. বীরবল 18. রাজা 19. উত্তর-পশ্চিম 20. জাহাঙ্গির 21. কান্দাহার 22. মনসবদারি 23. ঔরঙ্গজেব 24. পোর্তুগিজ 25. মৈত্রী 26. ইসলাম 27. আকবর 28. মরুওয়াড় 29. পশ্চিম 30. সরকার 31. জায়গির 32. টোডরমল।
ঠিক/ভুল নির্বাচন করো:
1. চেঙ্গিস খানের প্রতি মুঘলদের শ্রদ্ধা কম ছিল।
2. ভারতে আসার আগে মুঘলরা পূর্ব এশিয়ায় শাসন করত।
3. বাবর মাত্র ১২ বছর বয়সে ফরগনা প্রদেশের শাসনভার লাভ করেন।
4. বাবর ভারতবর্ষে থাকাকালীন পাদশাহ উপাধি ধারণ করেন।
5. পানিপতের প্রথম যুদ্ধে বাবর আফগান শক্তিকে পরাজিত করেন।
6. 'গাজি' কথার অর্থ হল ধর্মযোদ্ধা।
7. খানুয়ার যুদ্ধ একটি ধর্মীয় যুদ্ধ ছিল।
৪. ঘর্ঘরার যুদ্ধ ১৫২৯ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হয়েছিল।
9. অনেকক্ষেত্রেই সামরিক অভিজাতদের সঙ্গে রাজপরিবারের যোগাযোগ থাকত।
10. হুমায়ুন তাঁর সাম্রাজ্যের শাসনভার নিজের হাতেই রেখেছিলেন।
11. আকবর মাত্র ১৩ বছর বয়সে দিল্লির ক্ষমতা দখল করেন।
12. মুঘলদের বিরুদ্ধে সকল রাজপুত শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করেছিল।
13. বীরবল আকবরের নবরত্নের এক রত্ন ছিলেন।
14. আবুল ফজল এবং বদাউনি দুজনেই ১৫৭৪ খ্রিস্টাব্দে মুঘল দরবারে আগমন করেছিলেন।
15. শিখদের সঙ্গে মুঘলদের মৈত্রীর সম্পর্ক বজায় ছিল।
16. মুঘল বাদশাহ হুমায়ুন উপলব্ধি করেছিলেন, হিন্দুস্থানের ক্ষমতা দখল করতে হলে রাজপুত রাজাদের সঙ্গে মৈত্রী স্থাপন করা অনিবার্য।
17. আকবর নিজের স্ত্রীদের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার বজায় রাখেন।
18. আকবর হিন্দুদের ওপর তীর্থকর ও জিজিয়া কর আরোপ করেছিলেন।
19. ঔরঙ্গজেবের সময়কালে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক রাজপুত মুঘল মনসবদারি ব্যবস্থার আওতায় এসেছিল।
20. মারওয়াড়ের রাজধানী ছিল মীরপুর।
21. জাহাঙ্গির মারাঠা শক্তির গুরুত্ব উপলব্ধি করতে সমর্থ হয়েছিলেন।
22. মুঘল সৈন্যের গোলকোন্ডা দুর্গ আক্রমণ সম্পর্কে আমরা 'পাদশাহনামা' গ্রন্থ থেকে জানতে পারি।
23. আকবরের সাম্রাজ্যে সরকারগুলি পরগনাতে বিভক্ত ছিল।
24. মনসবদারি ব্যবস্থা স্তরহীন ছিল।
25. মনসবদারদের যুদ্ধের ঘোড়াগুলিকে পর্যবেক্ষণের জন্য মাঝে মাঝে রাজধানীতে হাজির করতে হত।
26. 'জায়গির' কথাটির অর্থ হল জমি।
27. জায়গিরদারদের বদলি করা যেত।
28. মনসবদারি ও জায়গিরদারি ব্যবস্থা বংশানুক্রমিক ছিল।
29. শেরশাহ বিভিন্ন শস্যের মূল্য অনুযায়ী একটি তালিকা তৈরি করিয়েছিলেন।
30. দহসালা ব্যবস্থার অপর এক নাম হল টোডরমলের ব্যবস্থা।
31. মুঘল সাম্রাজ্যের সর্বত্র জাবতি ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল।
32. মুঘলরা চট্টগ্রাম বন্দর দখল করে ফরাসিদের তাড়িয়ে দিয়েছিল।
উত্তর:1. ঠিক ৪. ঠিক 15. ভুল 22. ঠিক 29. ঠিক
2. ভুল 9. ঠিক 16. ঠিক 23. ঠিক 30. ঠিক
3. ঠিক 10. ঠিক 17. ঠিক 24. ভুল 31. ভুল
4. ভুল 11. ঠিক 18. ভুল 25. ঠিক 32. ভুল
5. ঠিক 12. ভুল 19. ঠিক 26. ভুল
6. ঠিক 13. ঠিক 20. ভুল 27. ঠিক
7. ভুল 14. ঠিক 21. ঠিক 28. ভুল।
বেমানান শব্দটি খুঁজে বের করো:
1. চেঙ্গিস খান, তৈমুর লঙ, বাবর, সফাবি।
2. পাদশাহ, বাদশাহ, সুলতান, রাজা।
3. বাবর, ইব্রাহিম লোদি, রানা সংগ্রাম সিংহ, সফাবি শক্তি।
4. পানিপতের প্রথম যুদ্ধ, জামের যুদ্ধ, খানুয়ার যুদ্ধ, ঘর্ঘরার যুদ্ধ।
5. ইব্রাহিম লোদি, হুমায়ুন, শের খান, শাহ তাহমম্প।
6. রানা সংগ্রাম সিংহ, রানা উদয় সিংহ, রানা প্রতাপ সিংহ, আকবর।
7. জাহাঙ্গির, অমর সিংহ, শাহ জাহান, ঔরঙ্গজেব।
৪. দিল্লি, গোলকোন্ডা, আহমেদনগর, বিদর।
9. সুবা, সরকার, আমির, পরগনা।
10. আলাউদ্দিন খলজি, বাবর, আকবর, ঔরঙ্গজেব।
উত্তর:1. সফাবি 2. রাজা 3. সফাবি শক্তি 4. জামের যুদ্ধ5. ইব্রাহিম লোদি 6. আকবর 7. অমর সিংহ ৪. দিল্লি 9. আমির 10. আলাউদ্দিন খলজি।
বিবৃতির সাথে ব্যাখ্যা মেলাও: ব্যাখ্যা-১: কারণ তারা তৈমুর লঙের বংশধর ছিল।
1. বিবৃতি: মুঘলরা নিজেদের তৈমুরীয় বলে ভাবত- ব্যাখ্যা-২: কারণ তারা চেঙ্গিস খানের বংশধর ছিল। ব্যাখ্যা-৩: কারণ তারা তৈমুর লঙকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করত।
2. বিবৃতি: বাবর ভারতবর্ষ আক্রমণে অগ্রসর হয়েছিলেন কারণ- ব্যাখ্যা-১: তিনি মধ্য এশিয়ার রাজনীতিতে প্রভূত সাফল্যলাভে অক্ষম হয়েছিলেন। ব্যাখ্যা-২: ভারতীয় সম্পদের প্রতি তাঁর লোভাতুর দৃষ্টি ছিল। ব্যাখ্যা-৩: তিনি ভারতবর্ষের হিন্দুধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন।
3. বিবৃতি: মুঘলরা বাদশাহ উপাধি ধারণ করেছিলেন কারণ- ব্যাখ্যা-১: তাঁরা বোঝাতে চেয়েছিলেন তাঁদের শাসনক্ষমতা অন্য কোনো ব্যক্তির অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল নয়। ব্যাখ্যা-২: তাঁরা ইসলাম ধর্মের অনুরাগী। ব্যাখ্যা-৩: তাঁরা তৈমুর লঙের বংশধর।
4. বিবৃতি: হুমায়ুন আফগানদের বিরুদ্ধে মুঘল সাম্রাজ্যকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন কারণ- ব্যাখ্যা-১: তিনি সাম্রাজ্যের সকল শাসনভার নিজের হাতেই রেখেছিলেন।ব্যাখ্যা-২: তাঁর ভাইয়েরা সরাসরি শাসনের দায়িত্ব না পাওয়ায় সাম্রাজ্য রক্ষার্থে তাঁরা হুমায়ুনকে কোনো সাহায্য করেননি। ব্যাখ্যা-৩: হুমায়ুন ছিলেন অলস প্রকৃতির শাসক। বিবৃতি: আকবর ভারতবাসীর কাছে শুধু একজন 'আক্রমণকারী' হিসেবে প্রতিপন্ন হতে চাননি-
5. ব্যাখ্যা-১: তিনি অনেক রাজপুত-হিন্দু স্থানীয় শাসকদের মুঘল দরবারে গুরুত্বপূর্ণ পদ দান করেছিলেন। ব্যাখ্যা-২: তিনি শুধু যুদ্ধ জয়ের মাধ্যমেই মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ব্যাখ্যা-৩: তিনি এদের ধনসম্পদ আহরণ করে মধ্য এশিয়ায় সাম্রাজ্য গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন।
6. বিবৃতি: মুঘল বাদশাহরা সকলেই ভারতের উত্তর- পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলকে সুরক্ষিত রাখতে চেয়েছিলেন কারণ- ব্যাখ্যা-১: এই অঞ্চল ছিল কৃষিজ সম্পদে পরিপূর্ণ। ব্যাখ্যা-৩: এই অঞ্চলে সামুদ্রিক বাণিজ্য অত্যন্ত উন্নত ছিল। ব্যাখ্যা-২: এই অঞ্চল দিয়েই ভারতবর্ষে একাধিকবার বহিঃআক্রমণ সংঘটিত হয়েছিল।
উত্তর: 1. ব্যাখ্যা-৩ 3. ব্যাখ্যা-১ 4. ব্যাখ্যা-২ উত্তর 5. ব্যাখ্যা-১ 6. ব্যাখ্যা-২ 2. ব্যাখ্যা-১
একটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. মুঘলরা ভারতবর্ষে কোন্ সময়ে শাসনকার্য পরিচালনা করত?
উত্তর: খ্রিস্টীয় ষোড়শ থেকে উনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে মুঘলরা ভারতবর্ষে শাসনকার্য পরিচালনা করত।
2. 'উজবেক' কাদের বলা হত?
উত্তর: 'উজবেক' হল মধ্য এশিয়ার একটি তুর্কিভাষী জাতি।
3 'মুঘল' নামে কারা পরিচিত? উত্তর: একদিকে মোঙ্গল নেতা চেঙ্গিস খান এবং অন্যদিকে তুর্কি নেতা তৈমুর লঙের বংশধরেরা 'মুঘল' নামে পরিচিত।
4. কারা নিজেদের 'তৈমুরীয়' বলে প্রতিপন্ন করত?
উত্তর: মুঘলরা নিজেদের 'তৈমুরীয়' বলে প্রতিপন্ন করত।
5. ভারতবর্ষের প্রথম মুঘল বাদশাহের নাম কী? [ইছাপুর নর্থল্যান্ড হাই স্কুল]
উত্তর: ভারতবর্ষের প্রথম মুঘল বাদশাহের নাম হল জহিরউদ্দিন মহম্মদ বাবর।
6. বাদশাহ কথাটি মূলত কী অর্থে ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: খুব শক্তিশালী শাসক বোঝাতে বাদশাহ কথাটি ব্যবহার করা হয়।
7. বাবর কত খ্রিস্টাব্দে বাদশাহ উপাধি ধারণ করেন?
উত্তর: ১৫০৭ খ্রিস্টাব্দে বাবর বাদশাহ উপাধি ধারণ করেন। [ভি কে গার্লস হাই স্কুল]
৪. পানিপতের প্রথম যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত হয়?
উত্তর: ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে পানিপতের প্রথম যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
9. চল্দিরানের যুদ্ধ কাদের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল?
উত্তর: অটোমান তুর্কি ও পারস্যদেশের রাজশক্তি সফাবিদের মধ্যে চদিরানের যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল।
10.কোন যুদ্ধে সফাবিরা উজবেকদের পরাস্ত করেছিল।
উত্তর: জামের যুদ্ধে সফাবিরা উজবেকদের পরাস্ত করেছিল।
11 খানুয়ার যুদ্ধে রাজপুত শক্তিকে কে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন? উত্তর: খানুয়ার যুদ্ধে রাজপুত শক্তিকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মেওয়াড়ের রানা সংগ্রাম সিংহ।
12 ঘর্ঘরার যুদ্ধে বাংলার কোন্ শাসক আফগানদের পক্ষে যোগদান করেন?
উত্তর: ঘর্ঘরার যুদ্ধে বাংলার শাসক নসরৎ শাহ আফগানদের পক্ষে যোগ দিয়েছিলেন।
13 বাবরের পুত্র কে ছিলেন?
উত্তর: বাবরের পুত্র ছিলেন হুমায়ুন।
14 হুমায়ুন কোন্ তৈমুরীয় নীতি লঙ্ঘন করেছিলেন?
উত্তর: হুমায়ুন তৈমুরীয় নীতি অনুযায়ী উত্তরসূরিদের মধ্যে অঞ্চল ভাগ করার প্রথা লঙ্ঘন করেছিলেন।
15. ভারতবর্ষে মুঘলদের দুই প্রধান বিরোধী শক্তির নাম লেখো।
উত্তর: ভারতবর্ষে মুঘলদের দুই প্রধান বিরোধী শক্তি হল রাজপুত ও আফগান শক্তি।
16. বিহারে আফগানদের কে নেতৃত্ব দান করেছিলেন?
উত্তর: বিহারে আফগানদের নেতৃত্ব দান করেছিলেন শের খান।
17. কার কাছে পরাজিত হয়ে হুমায়ুন দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন?
উত্তর: আফগান নেতা শের খানের কাছে পরাজিত হয়ে হুমায়ুন দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন।
18. পারস্যে হুমায়ুন কার কাছে আশ্রয়লাভ করেছিলেন?
উত্তর: পারস্যে হুমায়ুন শাহ তাহমম্পের কাছে আশ্রয়লাভ করেছিলেন।
19. শের খান কোন্ উপাধি ধারণ করেছিলেন?
উত্তর: শের খান শাহ উপাধি ধারণ করেছিলেন।
20. শেরশাহের মৃত্যুর পর কে সিংহাসনে আরোহণ করেন?
উত্তর: শেরশাহের মৃত্যুর পর ইসলাম শাহ সিংহাসনে আরোহণ করেন।
21. শেরশাহের শাসনসংস্কারের সঙ্গে কোন্ মুঘল সম্রাটের জনহিতকর কার্যের সাদৃশ্য পাওয়া যায়?
উত্তর: শেরশাহের শাসনসংস্কারের সঙ্গে মুঘল সম্রাট আকবরের জনহিতকার কার্যের সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
22. পাট্টা প্রথা কে চালু করেছিলেন?
উত্তর: পাট্টা প্রথা চালু করেছিলেন শেরশাহ। কে ছিলেন?
23. শাসনকার্যের প্রথমাবস্থায় আকবরের অভিভাবক কে ছিলেন?
উত্তর: শাসনকার্যের প্রথমাবস্থায় আকবরের অভিভাবক ছিলেন বৈরাম খান।
24. আদিল শাহ কে ছিলেন?
উত্তর: আদিল শাহ ছিলেন আকবরের সমকালীন এক আফগান নেতা।
25. আদিল শাহের প্রধানমন্ত্রীর নাম কী? [রঘুনাথগঞ্জ গার্লস হাই স্কুল]
উত্তর: আদিল শাহের প্রধানমন্ত্রীর নাম হল হিমু।
26. কার সাহায্যে আকবর পানিপতের দ্বিতীয় যুদ্ধে জয়লাভ করেন?
উত্তর: বৈরাম খানের সাহায্যে আকবর পানিপতের দ্বিতীয় যুদ্ধে জয়লাভ করেন।
27. রানা প্রতাপের বিরুদ্ধে আকবর কোন্ রাজপুত নেতাকে যুদ্ধাভিযানে প্রেরণ করেন?
উত্তর: রানা প্রতাপের বিরুদ্ধে আকবর রাজপুত রাজা মান সিংহকে যুদ্ধাভিযানে প্রেরণ করেন।
28. হলদিঘাটের যুদ্ধে আকবর কাকে পরাজিত করেছিলেন?
উত্তর: হলদিঘাটের যুদ্ধে আকবর মেওয়াড়ের রানা প্রতাপ সিংহকে পরাজিত করেছিলেন।
29. আকবরের চিতোর অভিযান সম্পর্কে আমরা কোন্ গ্রন্থ থেকে জানতে পারি?
উত্তর: আকবরের চিতোর অভিযান সম্পর্কে আমরা 'আকবরনামা' গ্রন্থ থেকে জানতে পারি।
30. বীরবলের প্রকৃত নাম কী ছিল?
উত্তর: বীরবলের প্রকৃত নাম ছিল মহেশ দাস।
31. 'ওয়াজির-ই-আজম' কথাটির অর্থ কী?
উত্তর: 'ওয়াজির-ই-আজম' কথাটির অর্থ হল প্রধানমন্ত্রী।
32. আকবরের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
উত্তর: আকবরের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বীরবল।
33. 'মুন্তাখাব-উৎ তওয়ারিখ' কে রচনা করেছিলেন?
উত্তর: 'মুন্তাখাব-উৎ তওয়ারিখ' রচনা করেছিলেন আবদুল - কাদির বদাউনি।
34. কার আমলে মেওয়াড়ের রানাও মুঘলদের আধিপত্য মেনে নেন?
উত্তর: জাহাঙ্গিরের আমলে মেওয়াড়ের রানাও মুঘলদের আধিপত্য মেনে নেন।
35. 'শাহজাদা খুররম পরবর্তীকালে কী নামে পরিচিত হন?
উত্তর: শাহজাদা খুররম পরবর্তীকালে বাদশাহ শাহ জাহান নামে পরিচিত হন।
36. শাহ জাহানের শাসনকালে দাক্ষিণাত্যে কে বিদ্রোহ করেছিলেন?
উত্তর: শাহ জাহানের শাসনকালে করেছিলেন খান জাহান লোদি। দাক্ষিণাত্যে বিদ্রোহ
37. কোন্ মুঘল সম্রাটের আমলে দিল্লি কান্দাহারের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে?
উত্তর: মুঘল সম্রাট শাহ জাহানের আমলে দিল্লি কান্দাহারের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
38.ঔরঙ্গজেব ও দারাশিকোহর মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধের নাম কী?
উত্তর: ঔরঙ্গজেব ও দারাশিকোর মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধের নাম হল সামুগড়ের যুদ্ধ।
39. ওয়াতন কথাটির অর্থ কী?
উত্তর: ওয়াতন কথাটির অর্থ হল স্বদেশ।
40. কোন্ মুঘল সম্রাট জিজিয়া কর তুলে নেন?
উত্তর: মুঘল সম্রাট আকবর জিজিয়া কর তুলে নেন।
41. রানা প্রতাপের ছেলের নাম কী?
উত্তর: রানা প্রতাপের ছেলের নাম রানা অমর সিংহ।
42. ঔরঙ্গজেবের একজন বিশ্বস্ত রাজপুত অভিজাতের নাম লেখো।
উত্তর: ঔরঙ্গজেবের একজন বিশ্বস্ত রাজপুত হলেন অম্বরের মির্জা রাজা জয়সিংহ।
43. ঔরঙ্গজেব জিজিয়া কর করে চালু করেন?
উত্তর: ঔরঙ্গজেব ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দে জিজিয়া কর চালু করেন।
44. কার নেতৃত্বে দাক্ষিণাত্যের রাজ্যগুলি মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি করেছিল?
উত্তর: আহমেদনগরের প্রধানমন্ত্রী মালিক অম্বরের নেতৃত্বে দাক্ষিণাত্যের রাজ্যগুলি মুঘলদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি করেছিল।
45. ঔরঙ্গজেবের আমলে দাক্ষিণাত্যের কোন্ অঞ্চল মুঘল সাম্রাজ্যভুক্ত হয়েছিল?
উত্তর: ঔরঙ্গজেবের আমলে দাক্ষিণাত্যের বিজাপুর ও গোলকোন্ডা মুঘল সাম্রাজ্যভুক্ত হয়েছিল।
46. ঔরঙ্গজেবের মৃত্যু কত খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল?
উত্তর: ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে ঔরঙ্গজেবের মৃত্যু হয়েছিল।
47. সুলহ-ই কুল মতাদর্শের ভিত্তিতে আকবর প্রবর্তিত, মতাদর্শের নাম লেখো।
উত্তর: সুলহ-ই কুল মতাদর্শের ভিত্তিতে আকবর প্রবর্তিত মতাদর্শের নাম হল 'দীন-ই ইলাহি'।
48. আকবরের সামরিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর: আকবরের সামরিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য হল মনসবদারি প্রথার প্রবর্তন।
49 জাবতিকী? [টাকী ভবনাথ উচ্চ বিদ্যালয়]
উত্তর: মুঘল আমলে জমি জরিপের ভিত্তিতে রাজস্ব নির্ধারণ। করার পদ্ধতি হল জাবতি।
50. রাঠোর যুদ্ধ কাদের মধ্যে হয়েছিল? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] উত্তর: মারওয়াড়ের রাঠোর রাজপুতদের সঙ্গে মুঘলদের রাঠোর যুদ্ধ হয়েছিল।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর गान 2 দু/তিনটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. মুঘলরা উত্তর ভারত শাসনে আগ্রহী ছিল কেন?
উত্তর: মুঘলদের পূর্বপুরুষ তৈমুর লঙ ১৩৯৮ খ্রিস্টাব্দে উত্তর ভারত আক্রমণ করেন। সেকারণে মুঘলরা নিজেদের উত্তর ভারতের বৈধ শাসক বলে মনে করত।
2. মধ্য এশিয়ায় তৈমুর লঙ কর্তৃক বিজিত স্থানগুলির নাম লেখো।
উত্তর: চতুর্দশ শতকে মোঙ্গল সাম্রাজ্যের পতনের সুযোগে তৈমুর লঙ মধ্য এশিয়ার বেশ কিছু অঞ্চল জয় করেন। মধ্য এশিয়ায় তৈমুর লঙ কর্তৃক বিজিত অঞ্চলগুলি হল-পূর্ব ইরান বা খোরাসান, ইরান, ইরাক এবং তুরস্কের কিছু অঞ্চল।
3. বাবর কেন ভারতবর্ষ আক্রমণ করতে উদ্যত হন।
উত্তর: ১৪৯৪ খ্রিস্টাব্দে তৈমুরীয় বংশের বাবর মাত্র ১২ বছর বয়সে ফরগনা প্রদেশের শাসনভার পান। কিন্তু মধ্য এশিয়ার রাজনীতিতে উজবেক এবং সফাবিদের মতো সাফল্য না পেয়ে বাবর অবশেষে ভারতবর্ষের দিকে দৃষ্টিনিক্ষেপ করেন।
4. মুঘলরা নিজেদের মুঘল বলে মনে করত না কেন? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন)
উত্তর: মোঙ্গল নেতা চেঙ্গিস খান এবং তুর্কি নেতা তৈমুর লঙের বংশধর মুঘলরা নিজেদের তৈমুরের বংশধর হিসেবে গর্ববোধ করত। বরং চেঙ্গিস খানের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা কম ছিল।
5. মুঘলরা 'বাদশাহ' উপাধি ধারণ করে কী বোঝাতে চাইলেন?
উত্তর: মুঘলরা সার্বভৌম শাসকের ক্ষেত্রে বাদশাহ শব্দটি ব্যবহার করতেন। মুঘলরা 'বাদশাহ' উপাধি ধারণ করে প্রতিপন্ন করতে চেয়েছিলেন যে, তাঁদের শাসনক্ষমতা অন্য কোনো ব্যক্তির অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল নয়।
6. সার্বভৌম শাসক বলতে কী বোঝ? [বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস হাই স্কুল)
উত্তর: সার্বভৌম শাসক বলতে বোঝায় সর্বভূমির ওপর যাঁর আধিপত্য। অর্থাৎ একটি বিরাট অঞ্চলে যিনি নিজের ক্ষমতায় শাসন করেন, তিনিই হলেন সেই অঞ্চলের সার্বভৌম শাসক।
7. সামরিক অভিজাত বলতে কী বোঝ?
উত্তর: সামরিক অভিজাত বলতে তাদের বোঝানো হত যাঁরা বংশানুক্রমিকভাবে যুদ্ধ পরিচালনা করতেন। তাঁরা গুরুত্বপূর্ণ পদেরও অধিকারী ছিলেন।
৪. পানিপত ও স্থানুয়ার যুদ্ধে বাবরের সাফল্যলাভের শর্ত কী ছিল?
উত্তর: পানিপত ও খানুয়ার যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল যথাক্রমে ১৫২৬ এবং ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দে। এই দুই যুদ্ধে বাবরের রণকৌশল একদিকে কামান ও বন্দুকধারী সৈন্য এবং অন্যদিকে দ্রুতগামী ঘোড়সওয়ার তিরন্দাজ বাহিনী-এই দুইয়ের যৌথ আক্রমণের ওপর নির্ভরশীল ছিল, যা তার সাফল্যলাভের অন্যতম শর্ত ছিল।
9. হুমায়ুন কোন্ কোন্ যুদ্ধে শের খানের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।
উত্তর: হুমায়ুনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন শের খান। হুমায়ুন ১৫৩৯ খ্রিস্টাব্দে চৌসার যুদ্ধে এবং ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দে বিলগ্রামের যুদ্ধে পরপর দুবার শের খানের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন।
10. শেরশাহ প্রদত্ত পাট্টায় কী লেখা থাকত?
উত্তর: শেরশাহ কৃষককে পাট্টা দিতেন। এই পাট্টায় কৃষকের নাম, জমিতে কৃষকের অধিকার, কত রাজস্ব দিতে হবে ইত্যাদি লেখা থাকত।
11. 'কবুলিয়ত' কী?
উত্তর: শেরশাহ কৃষককে পাট্টা দিতেন। শেরশাহ প্রদত্ত এইপাট্টা গ্রহণের পরিবর্তে কৃষক রাজস্ব প্রদানে স্বীকৃত হয়ে যে দলিল রাষ্ট্রকে প্রদান করত তা কবুলিয়ত নামে পরিচিত ছিল।
12. 'সড়ক-ই আজম' কী?
উত্তর: শেরশাহ কর্তৃক নির্মিত বাংলার সোনারগাঁ থেকে উত্তর-পশ্চিম সীমান্তে পেশোয়ার পর্যন্ত বিস্তৃত সড়কটি 'সড়ক ই আজম' নামে পরিচিত। এই রাস্তাই পরবর্তীকালে গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড নামে খ্যাত হয়।
13. সেনাবাহিনীর ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে শেরশাহ কী চালু করেন?
উত্তর: শেরশাহের শাসনকাল হল ১৫৪০-৪৫ খ্রিস্টাব্দ। সেনাবাহিনীর ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে শেরশাহ দাগ ও চুলিয়া ব্যবস্থা চালু করেছিলেন।
14. আকবর কর্তৃক বিজিত কয়েকটি অঞ্চলের নাম লেখো।
উত্তর: মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের উত্তরাধিকারী ছিলেন আকবর। আকবর কর্তৃক বিজিত কয়েকটি অঞ্চল হল মধ্য ভারত ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত সংলগ্ন কয়েকটি রাজ্য- চিতোর, গুজরাট, বাংলা, ইত্যাদি।
15. দীন-ই-ইলাহি কী? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন; মালতীপুর হাই স্কুল]
উত্তর: মুঘল সম্রাট আকবর প্রবর্তিত এক নতুন ধর্ম হল দীন- ই-ইলাহি। বিভিন্ন ধর্মের গুরুদের ধর্মীয় নানা বিষয়ে আলোচনার ভিত্তিতে আকবর এই ধর্ম প্রচলন করেন। অভিজাতরা বেশকিছু অনুষ্ঠান ও রীতিনীতির মধ্য দিয়ে সম্রাটের প্রতি সম্পূর্ণ অনুগত থাকার শপথ নিত। এই হল দীন- ই-ইলাহি।
16. হলদিঘাটের যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে এবং কাদের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল? [ভি কে গার্লস হাই স্কুল]
উত্তর: হলদিঘাটের যুদ্ধ ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে আকবর এবং মেওয়াড়ের রানা প্রতাপ সিংহের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল।
17. 'নবরত্ন' কাদের বলে? [গুড়দহ ঋষি অরবিন্দ বিদ্যানিকেতনা।
উত্তর: আকবরের রাজসভায় বন্ধু দিবালাকের মানুষিক রি মধ্যে নয়। জুনকে একত্রে বলা হত নবরত্ন। এদের মধ্যে একজন হলেন বীরবল।
18. আকবরের আমলের দুইজন ঐতিহাসিকের নাম লেখো।
উত্তর: আকবরের আমলে দুইজন বিখ্যাত ঐতিহাসিক হলেন আবুল ফজল এবং আবদুল কাদির বদাউনি। এরা দুজনেই ১৫৭৪ খ্রিস্টাব্দে মুঘল দরবারে এসেছিলেন।
19. 'বারো ভূঁইয়া' নামে কারা পরিচিত ছিলেন? [গুড়দহ ঋষি অরবিন্দ বিদ্যানিকেতন]
উত্তর: আকবর ও জাহাঙ্গিরের সময়কালে মুঘল শাসনের প্রতি বাংলার বিদ্রোহী স্থানীয় হিন্দু জমিদার ও আফগানরা একত্রে বারো ভূঁইয়া নামে পরিচিত ছিলেন। এঁদের মধ্যে প্রতাপাদিত্য, চাঁদ রায়, কেদার রায়, ইশা খান প্রমুখ ছিলেন উল্লেখযোগ্য।
20. ঔরঙ্গজেবের আমলে দাক্ষিণাত্যের কোন্ অঞ্চল মুঘল সাম্রাজ্যভুক্ত হয়?
উত্তর: ঔরঙ্গজেবের আমলে দাক্ষিণাত্যের বিজাপুর ও গোলকোন্ডা মুঘল সাম্রাজ্যভুক্ত হয়েছিল। এই দুই রাজ্য দখলের মধ্যে দিয়ে মুঘল সাম্রাজ্যের আয়তন সর্বাধিক বৃদ্ধি পায়।
21. ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে মনসবদারি প্রথায় কী। ব পরিবর্তন এসেছিল?
উত্তর: ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে মনসবদারি ব্যবস্থায় বৈচিত্র্য বৃদ্ধি পেয়েছিল। কারণ ওই সময় দাক্ষিণাত্যের গোলকোন্ডা ও বিজাপুর মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় বহু মারাঠা ও। দক্ষিণী মুসলিম অভিজাত মুঘল শাসনে যোগদান করে মনসবদারি ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন।
22. ঔরঙ্গজেবের শাসনকালে কোথায় কোথায় কৃষকবিদ্রোহ দেখা যায়?
উত্তর: ঔরঙ্গজেবের আমলে কৃষিব্যবস্থায় কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ফলে তাঁর শাসনকালে মথুরায় জাঠ কৃষকরা এবং হরিয়ানায় সৎনামি কৃষকরা বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল।
23. ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীতির মূল উদ্দেশ্য কী ছিল? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
উত্তর: ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীতির মূল উদ্দেশ্য ছিল- দক্ষিণি রাজ্য বিশেষ করে বিজাপুর ও গোলকোন্ডা জয় করে বেশি রাজস্ব সংগ্রহ করা এবং মারাঠাদের দমন করা। তবে মারাঠাদের শক্তি ঔরঙ্গজেবের সময় অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল।
24. মুঘলরা দাক্ষিণাত্যের কোন্ অঞ্চল নিজ সাম্রাজ্যভুক্ত করতে সমর্থ হয়েছিল?
উত্তর: খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতকের দ্বিতীয়ভাগে দাক্ষিণাত্যের রাজ্যগুলি ছিল বিজাপুর, গোলকোন্ডা, আহমেদনগর, বেরার, বিদর ও খান্দেশ। ১৫৯৬ থেকে ১৬০১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মুঘলরা বেরার, আহমেদনগর, খান্দেশ জয় করে নিজ সাম্রাজ্যভুক্ত করেছিল।
25. মুঘল সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক আদর্শ কী ছিল?
উত্তর: মুঘল সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক আদর্শ ছিল মূলত বিভিন্ন গোষ্ঠীকে সাম্রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করে একটি যথার্থ ভারতীয় সাম্রাজ্য গড়ে তোলা।
26. হুমায়ুন কেন আফগানদের বিরুদ্ধে জয় পাননি? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
উত্তর: সমাধানসহ পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলির 'সংক্ষেপে উত্তর দাও' বিভাগের 2 নং প্রশ্নের উত্তরটি দ্যাখো।
27. আকবরের প্রশাসনিক আদর্শ কীরূপ ছিল? [গুড়দহ ঋষি অরবিন্দ বিদ্যানিকেতন; কে জি টি আই]
উত্তর: আকবরের প্রশাসনিক আদর্শকে তৈমুরীয়, পারসিক এবং ভারতীয় রাজতন্ত্রের সংমিশ্রণ রূপে অভিহিত করা যেতে পারে। আবার সম্রাট আকবর ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী শাসন করার প্রশাসনিক আদর্শও গ্রহণ করেছিলেন।
28. 'সুলহ-ই কুল' কী?
উত্তর: আকবর সুলহ-ই কুল নীতি প্রবর্তন করেছিলেন। 'সুলহ-ই কুল' হল সকলের প্রতি সহনশীলতা এবং সকলের জন্য শান্তিমূলক নীতি।
29. মনসবদারদের কী কর্তব্য পালন করতে হত?
উত্তর: আকবরের শাসনব্যবস্থায় প্রশাসনিক পদগুলিকে বলা হত মনসব। আকবর প্রবর্তিত মনসবদারি ব্যবস্থায় মনসবদারদের কর্তব্য ছিল বাদশাহের জন্য সৈন্য প্রস্তুত রাখা, সৈন্যদের দেখাশোনা করা এবং যুদ্ধের সময়ে সৈন্য জোগান দেওয়া।
30. মনসবদারদের কীভাবে বেতন দেওয়া হত?
উত্তর: মুঘল আমলে সামরিক ব্যবস্থায় এক গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হল মনসবদারি ব্যবস্থা। মনসবদারদের দুভাবে বেতন দেওয়া হত নগদে অথবা রাজস্ব বরাত দিয়ে।
31. কানুনগোদের দায়িত্ব কী ছিল।
উত্তর: আকবরের প্রশাসনিক ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ ছিল কানুনগো। কানুনগোদের দায়িত্ব ছিল সাম্রাজ্যের প্রত্যেক এলাকার শস্য উৎপাদন, বাজারে শস্যের মূল্য ইত্যাদি সম্পর্কে নানারকম তথ্য সরকারকে সরবরাহ করা।
32. করোরী কাদের বলা হত।
উত্তর: আকবরের সাম্রাজ্যে যেসকল রাজকর্মচারী রাজস্ব আদায় করত এবং কানুনগোদের তথ্য মিলিয়ে দিত তাদের বলা হত করোরী। আকবরের শাসনব্যবস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদ ছিল করোরী।
33. দহসালা ব্যবস্থা কী? সারগাছি রামকৃয় মিশন হাই স্কুল)
উত্তর: 'দহ' মানে দশ। আকবরের সাম্রাজ্যে প্রচলিত পূর্বের দশ বছরের তথ্যের ভিত্তিতে শস্যের মূল্য নির্ধারণ ও রাজস্ব আদায় ব্যবস্থাকে বলা হয় দহসালা ব্যবস্থা।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর মান 3 চার/পাঁচটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. বাবরের রণকৌশল সম্পর্কে কী জানা যায়?
উত্তর: মুঘল বাদশাহ বাবরের সৈন্যবাহিনী দুইভাগে বিভক্ত ছিল, যথা- [a] কামান ও বন্দুকধারী সৈন্য এবং [b] দ্রুতগামী ঘোড়সওয়ার তিরন্দাজ বাহিনী। এই দুই বাহিনী, শত্রুপক্ষকে যৌথভাবে আক্রমণ করত। ঘোড়সওয়ার বাহিনীর একটি অংশ শত্রুপক্ষকে দুপাশ আর পেছন দিক দিয়ে আক্রমণ করত, অন্যদিকে কামান ও বন্দুকধারী সৈন্যরা সামনে থেকে শত্রুপক্ষের ওপর গুলিবর্ষণ করত। একসঙ্গে দুই বাহিনীর আক্রমণে শত্রুপক্ষ দিশেহারা হয়ে পড়ত, তখন বাকি ঘোড়সওয়ার বাহিনীর সৈন্যরা সামনে থেকে শত্রুপক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দিত। এই রণকৌশল ব্যবহার করে বাবর পানিপতের প্রথম যুদ্ধ ও খানুয়ার যুদ্ধে জয়ী হন।
2. শেরশাহের ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।
উত্তর: শেরশাহ তাঁর পাঁচ বছর রাজত্বকালে (১৫৪০-৪৫ খ্রি.) বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করেছিলেন, যার মধ্যে ভূমিরাজস্ব ব্যবস্থা ছিল উল্লেখযোগ্য। [a] শেরশাহ তাঁর সাম্রাজ্যে জমি জরিপের ব্যবস্থা করেন। [b] তিনি জমিতে উৎপন্ন ফসলের অথবা অংশ রাজস্ব আদায়ের ব্যবস্থা নেন। তবে এক্ষেত্রে জমির উর্বরতার ওপর তিনি নজর দিতেন। [c] তিনি জমির ওপর কৃষকের স্বত্ব মেনে নিয়ে কৃষকের নাম, কত রাজস্ব দিতে হবে, তার অধিকার ইত্যাদি লেখা পাট্টা নামক দলিল কৃষককে দিতেন এবং এর বদলে কৃষকেরা রাজস্ব দেওয়ার কথা কবুল করে কবুলিয়ত নামে একটি দলিল রাষ্ট্রকে দিত। [d] অতিবৃষ্টি অথবা অনাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হলে ভূমিরাজস্ব মকুবের ব্যবস্থাও তিনি নেন।
3. সুলহ-ই কুল কীভাবে মুঘল প্রশাসনকে শক্তিশালী করে তুলেছিল। (পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন)
উত্তর: মুঘল সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক আদর্শ ছিল মূলত বিভিন্ন গোষ্ঠীকে সাম্রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করে একটি যথার্থই ভারতীয় সাম্রাজ্য গড়ে তোলা। আকবরের প্রশাসনিক আদর্শ তৈমুরীয়, পারসিক এবং ভারতীয় রাজতন্ত্রের সংমিশ্রণ বলা চলে। এই আদর্শে বাদশাহ ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী শাসন করবেন। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতি তাঁর পক্ষপাত থাকবে না। সকলের প্রতি সহনশীলতা এবং সকলের জন্য শান্তির এই পথকেই বলা হয় সুলহ-ই কুল। এই মতাদর্শই মুঘল প্রশাসনকে শক্তিশালী করে তুলেছিল।
4. টীকা লেখো: ঔরঙ্গজেবের দাক্ষিণাত্য নীতি। উত্তর: খ্রিস্টীয় সপ্তদশ শতকে ঔরঙ্গজেবের রাজত্বকালে মারাঠাদের শক্তি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছিল। ঔরঙ্গজেব আশা করেছিলেন দক্ষিশী রাজাগুলি দখল করতে পারলে রাজস্ব আদায় বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে ও মারাঠাদের দমন করাও সহজ হবে। তাঁর আমলে বিজাপুর ও গোলকোন্ডা দখলের ফলে মুঘল সাম্রাজ্য সর্ববৃহৎ হলেও সম্রাটের আশানুরূপ ফল হয়নি। একদিকে বহু বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে মুঘল সাম্রাজ্যের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয়, অন্যদিকে মারাঠা নেতা শিবাজিকে তিনি যুদ্ধে পর্যুদস্ত করতে ব্যর্থ হন ও তাঁকে স্বাধীন রাজা বলে মেনে নেন।
5. খ্রিস্টীয় সপ্তদশ শতকের প্রথম ভাগ ও অষ্টাদশ শতকের প্রথম ভাগে মুঘল সাম্রাজ্যের বিস্তারের মানচিত্র (তোমাদের পাঠ্যবইয়ের ৭৭ এবং ৮৪ পৃষ্ঠার মানচিত্র) তুলনা করে কী কী মিল-অমিল দেখা যায়? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] উত্তর: মিল: সপ্তদশ শতকের প্রথম ভাগে ও অষ্টাদশ শতকে মুঘল সাম্রাজ্যের রাজাসীমা উত্তরে কাশ্মীর, পশ্চিমে কাবুল ও কান্দাহার, পূর্বে ব্রহ্মপুত্র পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। অমিল: অষ্টাদশ শতকের গোড়ায় মুঘল সাম্রাজ্যের সীমা কাবেরী নদী পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। কিন্তু সপ্তদশ শতকের গোড়ায় মুঘল সাম্রাজ্য দক্ষিণে তুজাভদ্রা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
6. টীকা লেখো: জাবতি ব্যবস্থা। [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন: হালিশহর মল্লিকবাগ হাই স্কুল] উত্তর: মুঘল সম্রাট আকবর ১৫৮০ খ্রিস্টাব্দে জমি জরিপের ভিত্তিতে রাজস্ব নির্ধারণের যে পদ্ধতি চালু করেন, তা জাবতি ব্যবস্থা নামে পরিচিত। 'জাবত' কথার অর্থ হল নির্ধারণ। আকবরকে এই ব্যবস্থা চালু করতে সাহায্য করেছিলেন তাঁর রাজস্বমন্ত্রী রাজা টোডরমল। তাই জাবতি ব্যবস্থার নাম হয় টোডরমলের ব্যবস্থা।
7. বারো ভূঁইয়াদের সম্পর্কে কী জানা যায়? উত্তর: জাহাঙ্গিরের রাজত্বকালে বাংলায় কিছু স্থানীয় জমিদার স্বাধীনভাবে রাজত্ব শুরু করেন। এঁদের মধ্যে হিন্দু ও মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের জমিদার ছিলেন। এঁরা বারো ভুঁইয়া নামে পরিচিত ছিলেন। এই বারো ভূঁইয়ারা মুঘলদের বিরুদ্ধে বারবার বিদ্রোহ করেছেন। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন প্রতাপাদিত্য, চাঁদ রায়, কেদার রায়, ইশা খান প্রমুখ। জাহাঙ্গির বাংলার এই জমিদারদের নিজের দলে টানার চেষ্টা করেন। পরে তিনি তাঁর সেনাপতি ইসলাম খানকে তাঁদের দমন করার দায়িত্ব দেন।
দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর মান 5 আট/দশটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. মুঘল শাসনের সঙ্গে রাজপুতদের যোগাযোগের চরিত্র কী ক্রমে বদলে গিয়েছিল বলে তোমার মনে হয়? যুক্তি-সহ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: মুঘলদের সঙ্গে রাজপুতদের যোগাযোগ ছিল ক্রমপরিবর্তনশীল। মুঘল বাদশাহ হুমায়ুন বুঝেছিলেন হিন্দুস্থানের ক্ষমতা দখল করতে গেলে রাজপুত রাজাদের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখা দরকার। [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
[a] আকবর-রাজপুত সম্পর্ক: সম্রাট আকবর পিতা হুমায়ুনের পথ অনুসরণ করে মৈত্রী ও যুদ্ধনীতির সাহায্যে রাজপুতদের মনসবদারি ব্যবস্থার মধ্যে নিয়ে আসেন। তিনি নিজে এবং রাজকুমারদের সাথে রাজপুত পরিবারের মেয়েদের বৈবাহিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। আকবর রাজপুত স্ত্রীদের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার বজায় রাখেন। তিনি রাজপুতদের ওপর থেকে তীর্থকর ও জিজিয়া কর তুলে নেন। এই উদারনীতির ফলে মুঘলরা বীর রাজপুতদের পাশে পেয়েছিল। যদিও মেওয়ারের রানা প্রতাপ সিংহ আকবরের অধীনতা স্বীকার করেননি।
[b] জাহাঙ্গির ও শাহ জাহানের সঙ্গে রাজপুত সম্পর্ক: পরবর্তী সম্রাট জাহাঙ্গির ও শাহ জাহানের আমলে মুঘল-রাজপুত সম্পর্ক ছিল ঘনিষ্ঠ। জাহাঙ্গিরের আমলে মেওয়াড়ে মুঘল কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। রানা প্রতাপের ছেলে অমর সিংহ উচ্চ মনসব লাভ করেন। শাহ জাহানের আমলেও রাজপুতরা উচ্চ রাজপদ পেত।
[c] ঔরঙ্গজেব-রাজপুত সম্পর্ক: ঔরঙ্গজেবের আমলে সবচেয়ে বেশি রাজপুত মনসব পেয়েছিল। অম্বরের রাজা জয় সিংহ ছিলেন ঔরঙ্গজেবের বিশ্বস্ত সভাসদ, কিন্তু মারওয়াড়ের রাজপুত রানা যশোবন্ত সিংহের মৃত্যুর পর সেখানকার উত্তরাধিকার নিয়ে গণ্ডগোল শুর হলে ঔরঙ্গজেব ওই রাজ্যটি নিজ অধীনে নিয়ে আসেন। ফলে মুঘল-রাজপুত সংঘাত শুরু হয়। এ ছাড়া তিনি রাজপুতদের ওপর জিজিয়া কর পুনরায় চাপিয়ে দেন। সুতরাং বলা যায়, মুঘলদের সঙ্গে রাজপুতদের সম্পর্ক একইরকম ছিল না।
2. আকবর কীভাবে মুঘল সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটান?
উত্তর: বাদশাহ আকবর ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে যখন শাসনভার পান তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র তেরো বছর। আঠেরো বছর বয়সে তিনি সম্পূর্ণভাবে সাম্রাজ্যের দায়িত্ব নেন। এরপর একে একে তিনি আজমীর, গোয়ালিয়র, জৌনপুর, মালব প্রভৃতি রাজ্য মুঘল সাম্রাজ্যের অধীনে নিয়ে আসেন।
[a] গন্ডোয়ানা জয়: ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দে আকবর গন্ডোয়ানা রাজ্য আক্রমণ করেন। এখানের নাবালক রাজার অভিভাবকরূপে রানি মাতা দুর্গাবতী যথাসাধ্য চেষ্টা করেও পরাজিত হন। গন্ডোয়ানা মুঘল সাম্রাজ্যের অধীনে চলে আসে।
(b) রাজপুত রাজ্য: আকবর রাজপুতদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না বারে মৈত্রী সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। এর ফলে মুঘলরা বীর রাজপুত যোদ্ধাদের পাশে পেয়েছিল। অম্বরের রাজা বিহারিমলের কন্যাকে তিনি বিবাহ করেন। বিহারিমলের পুত্র ভগবান দাস ও পৌত্র মান সিংহকে উচ্চ মনসবদার হিসেবে নিযুক্ত করেন। একইভাবে তিনি মারোয়াড়, বিকানির, জয়সলমির, কালিঞ্জর প্রভৃতি রাজপুত রাজাকে মৈত্রীর কন্ধনে আবদ্ধ করেন।
[c] মেওয়াড় জয়: প্রায় সব রাজপুত রাজ্য আকবরের অধীনতা মেনে নিলেও মেওয়াড় রাজ্য অধীনতা মানতে রাজি ছিল না। ফলে মেওয়াড়ের রানা প্রতাপ সিংহের বিরুদ্ধে ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে আকবর মান সিংহকে পাঠান। হলদিঘাটের যুদ্ধে আকবর রানাকে পরাজিত করেছিলেন।
[d] উত্তর ও মধ্য ভারত জয়: এরপর আকবর গুজরাট ও বাংলা জয় করেন। পরে তিনি কাবুল, কান্দাহার কাশ্মীর, সিন্ধু, বেলুচিস্তান প্রভৃতি রাজ্য জয় করে উত্তর ও মধ্য ভারতকে মুঘলদের অধিকারে নিয়ে আসেন।
[e] দক্ষিণ ভারতে সাম্রাজ্য বিস্তার: ১৫৯৬-১৬০১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে আকবর দক্ষিণ ভারতের বেরার, আহমেদনগর ও খান্দেশ, এমনকি অসিরগড়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ দুর্গ মুঘলদের দখলে আনেন। এইভাবে ১৫৫৬-১৬০৫ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে আকবর ভারতে এক বিশাল মুঘল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন।
3. জাহাঙ্গির ও শাহ জাহান কীভাবে মুঘল রাষ্ট্র কাঠামোকে টিকিয়ে রেখেছিলেন? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
উত্তর: জাহাঙ্গিরের অবদান: খ্রিস্টীয় সপ্তদশ শতকের গোড়ার দিকে মুঘল রাষ্ট্র কাঠামোয় সম্রাট জাহাঙ্গির মোটামুটিভাবে পিতা আকবরের নীতিকেই অনুসরণ করেছিলেন। যথা-[a] জাহাঙ্গির বাংলার বিদ্রোহী 'বারো ভুঁইয়া' জমিদারদের নিজের দলে টানতে সক্ষম হন। [b] তাঁর আমলে মেওয়াড়ের রানা অমর সিংহ মুঘলদের আধিপত্য মেনে নিয়েছিলেন। [c] দাক্ষিপাত্যে তিনি মুঘল সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটান এবং সাম্রাজ্যের স্থিতাবস্থা বজায় রাখেন। [d] রাজপুত-সহ নতুন নতুন মনসবদাররা মুঘল শাসনব্যবস্থায় শামিল হতে থাকে। [e] জাহাঙ্গির মারাঠা শক্তির গুরুত্ব বুঝতে পেরে তাদের দলে টানতে সচেষ্ট হন। শাহ জাহানের অবদান: শাহ জাহান মুঘল রাষ্ট্র কাঠামো টিকিয়ে রাখতে-[a] দাক্ষিণাত্যে বিদ্রোহী জাহান লোদিকে পরাজিত করেন ও বুন্দেলখণ্ডের বিদ্রোহ দমন করেন। [b] ১৬৩৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি দাক্ষিণাত্যের আহমেদনগর রাজ্যটিকে মুঘল সাম্রাজ্যভুক্ত করেছিলেন। [c] বিজাপুর ও গোলকোন্ডার সঙ্গে চুক্তি করে শাহ জাহান দাক্ষিণাত্যে নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করেন। [d] রাজপুতদের উচ্চ মনসব প্রদান করে মুঘল-রাজপুত সুসম্পর্ক অটুট রাখেন। এইভাবে সম্রাট জাহাঙ্গির ও শাহ জাহান মুঘল রাষ্ট্র কাঠামো টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।
4. মুঘল শাসনকে দৃঢ় করার জন্য আকবরের সামরিক সংস্কার কতদূর সফল হয়েছিল তা ব্যাখ্যা করো। [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
উত্তর: মুঘল শাসনকে দৃঢ় করার জন্য সম্রাট আকবর সামরিক ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন করেন। সেটি ছিল তাঁর মনসবদারি ব্যবস্থা।
[a] মনসব: আকবরের শাসনব্যবস্থায় প্রশাসনিক পদগুলিকে বলা হত মনসব, আর পদাধিকারীদের বলা হত মনসবদার।
[b] সামরিক দায়িত্ব: মনসবদারদের কর্তব্য ছিল বাদশাহের জন্য সৈন্য প্রস্তুত রাখা সৈন্যদের দেখাশোনা করা এবং যুদ্ধের সময় সৈন্য জোগান দেওয়া। মনসবদারদের যুদ্ধের ঘোড়াগুলিকে পর্যবেক্ষণের জন্য মাঝে মাঝে রাজধানীতে হাজির করতে হত।
[c] নিয়োগ: আকবরের প্রশাসনিক আদর্শ তৈমুরীয়, পারসিক এবং ভারতীয় রাজতন্ত্রের সংমিশ্রণ ছিল। বিভিন্ন গোষ্ঠী থেকে আকবর মনসবদার পদে নিয়োগ করতেন। এই নিয়োগ বংশানুক্রমিক ছিল না। মনসবদারদের নগদ বেতন এবং নগদের পরিবর্তে জমি জায়গির দেওয়া হত। আকবর সামরিক ব্যবস্থায় কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতি তাঁর পক্ষপাত না করার ফলে মুঘল প্রশাসনে সংহতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
পড়ার মাঝে মজার কাজ
1. ৫.১ [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ৭০] ছবিতে যে এগারো জনের ছবি রয়েছে, তাঁরা একসঙ্গে একই সময়ে জীবিত ছিলেন না। তাহলে এমন ছবি আঁকার কারণ কী হতে পারে?
উত্তর: প্রশ্নে উল্লিখিত ছবিতে যে এগারো জনের ছবি রয়েছে তার মধ্যমণি তৈমুর লঙ। ছবিতে আছে বাবর, হুমায়ুন, আকবর, জাহাঙ্গির, শাহ জাহান ও ঔরঙ্গজেব-ভারতের প্রথম ছয়জন মুঘল সম্রাট। এই মুঘল সম্রাটরা ছিলেন তৈমুর লঙের বংশধর। বাকিরাও ছিলেন এই বংশের তৈমুরের পরবর্তী এবং বাবরের পূর্ববর্তী প্রতিনিধি। তৈমুরীয় বংশের ধারাবাহিকতা বোঝানোর জন্য এই ছবিটি আঁকা হয়েছে।
2. তোমরা আর কোথাও রাজা বীরবলের গল্প পড়েছ? পড়ে থাকলে সেই গল্পটা নিজের ভাষায় লেখো।
উত্তর: একদিন সম্রাট আকবর দরবারে সমবেত সকলকে নিয়ে খোশ-আলাপ করছিলেন। হঠাৎ সবাইকে অবাক করে তিনি জিজ্ঞেস করলেন "সেই ব্যক্তিকে কী সাজা দেওয়া হবে যে আমার গোঁফ টানবে?" কেউ বলল বেচাঘাত, কেউ বলল ব্যাটাকে শূলে চড়ান, কেউ বলল শিরোচ্ছেদ। বীরবল চুপচাপ ছিল। সম্রাট জিজ্ঞেস করলেন কী বীরবল, তুমি কী বল? বীরবল বলল "জাহাপনা তাকে মিষ্টি খেতে দিন।" সম্রাট রেগে উঠলেন। "তোমার মাথা খারাপ হয়েছে? ব্যাটা আমার গোঁফ টানবে, তাকে মিষ্টি খেতে দেব?" বীরবল ধীরে-সুস্থে বলল "হুজুর, আমার মাথা ঠিকই আছে। এই পৃথিবীতে আপনার পৌত্র ছাড়া আর-কোনো ব্যক্তির সাহস হবে আপনার গোঁফে টান দিতে? জাঁহাপনা আপনিই বলুন, আপনার গোঁফ টানার জন্য নাতিকে মৃত্যুদন্ড দেবেন নাকি মিষ্টি দেবেন?" বীরবলের সূক্ষ্ম চিন্তায় সম্রাট আকবর খুশি হলেন ও তাঁকে পুরস্কৃত করলেন।
3. বাবর থেকে ঔরঙ্গজেব পর্যন্ত মুঘল সম্রাটদের নাম ও শাসনকালের একটি তালিকা তৈরি করো।
উত্তর: মুঘল সম্রাটের নাম [a] জহিরুদ্দিন মহম্মদ বাবর সময়কাল ১৫২৬-১৫৩০ খ্রি. [b] নাসিরুদ্দিন মহম্মদ হুমায়ুন ১৫৩০-১৫৪০ খ্রি. এবং ১৫৫৫-১৫৫৬ খ্রি.মুঘল সম্রাটের নাম সময়কাল [c] জালালউদ্দিন মহম্মদ আকবর ১৫৫৬-১৬০৫ খ্রি. [d] নুরউদ্দিন মহম্মদ জাহাঙ্গির ১৬০৫-১৬২৭ খ্রি. [e] শাহ জাহান ১৬২৭-১৬৫৮ খ্রি. [f] ঔরঙ্গজেব ১৬৫৮-১৭০৭ খ্রি.
4. ৫.৪ [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ৭৫], ৫.৭ [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ৭৮], ৫.৮ [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ৭৯] ও ৫.১০ [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ৮৩]-এই চারটি ছবিতে কোন্ কোন্ অস্ত্র ও পশুকে যুদ্ধে ব্যবহার করতে দেখতে পাচ্ছ? এই ছবিগুলি থেকে মুঘলদের যুদ্ধ করার বিষয়ে কী কী জানা যাচ্ছে?
উত্তর: প্রশ্নে উল্লিখিত ৫.৪, ৫.৭, ৫.৮ ও ৫.১০-এই চারটি ছবিতে তরবারি, ঢাল, বন্দুক, কামান প্রভৃতি অস্ত্র এবং ঘোড়া ও হাতির ব্যবহারের কথা জানা যাচ্ছে। এই ছবিগুলি থেকে মুঘলদের যুদ্ধ কৌশলে কামানের ব্যবহার এবং অশ্বারোহী সেনার গুরুত্বের কথা প্রমাণিত হয়। এ ছাড়া বোঝা যায় যুদ্ধে পদাতিক বাহিনীর ব্যবহারও কার্যকরী ছিল।
5. ৫.১ [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ৭৭] ও ৫.২ [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ৮৪] মানচিত্র দুটির তুলনা করে বলো অষ্টাদশ শতকের গোড়ায় কোন্ কোন্ অঞ্চল মুঘল শাসনের আওতায় এসেছিল?
উত্তর: প্রশ্নে উল্লিখিত ৫.১ ও ৫.২ মানচিত্র দুটির তুলনা করে বোঝা যাচ্ছে যে, অষ্টাদশ শতকের গোড়ায় দক্ষিণ ভারতের বিশেষত গোদাবরীর দক্ষিণ ভূভাগের মধ্যে বিজাপুর, গোলকোন্ডা-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। এ ছাড়া পূর্ব ভারতের ব্রহ্মপুত্র পর্যন্ত মুঘল রাজ্যসীমা বিস্তার লাভ করেছিল।
পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা বোর্ড (WBBSE)-এর সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে এখানে যান 👉 গ্যাসীয় পদার্থ
ReplyDelete