পৃথিবীর পরিক্রমণ সমাধানসহ পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলি সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায়| class 7 geography question answer| - SM Textbook

Fresh Topics

Friday, February 9, 2024

পৃথিবীর পরিক্রমণ সমাধানসহ পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলি সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায়| class 7 geography question answer|

  অধ্যায় 1 

পৃথিবীর পরিক্রমণ সমাধানসহ পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলি সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায়| class 7 geography question answer|

1. একটা বল হাতে নিয়ে ছেড়ে দিলে কী হবে? 

উত্তর: একটা বল হাতে নিয়ে ছেড়ে দিলে বলটি মাটিতে পড়ে যাবে। পৃথিবীর ওপরে থাকা যে-কোনো বস্তুকে পৃথিবী তার মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে নিজের কেন্দ্রের দিকে টানে। এই কারণে পৃথিবীর ওপর থেকে যে-কোনো বস্তুকে ছেড়ে দিলে তা মাটিতেই পড়ে যায়। তাই আমরাও পৃথিবীর ওপরই থাকি, পৃথিবী থেকে ছিটকে যাই না। 

2. পৃথিবীর ওপরে থাকা যে-কোনো বস্তুকে পৃথিবী নিজের কেন্দ্রের দিকে টানে। এই জন্যেই তো আমরাও পৃথিবী থেকে ছিটকে যাই না, পৃথিবীর ওপরই থাকি। পৃথিবীর এই আকর্ষণ বল হল 

উত্তর: মহাকর্ষ / মাধ্যাকর্ষণ ভেবে দেখেছ? 

3. পৃথিবীও তো একটা ভারী গোলক। পৃথিবীও যদি ওই বলটার মতো পড়ে যায়, তাহলে আমাদের কী হবে? পৃথিবী তাহলে কার দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে? 

উত্তর: নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র অনুযায়ী, সব বস্তুই পরস্পরকে আকর্ষণ করে। সৌরজগতের একমাত্র নক্ষত্র হল সূর্য। সূর্যের আকর্ষণে পৃথিবী নির্দিষ্ট পথে সূর্যের চারিদিকে অনবরত ঘুরছে। কিন্তু যদি পৃথিবীর পরিক্রমণ গতি না থাকত, তবে পৃথিবী সূর্যের ওপর আছড়ে পড়ত।

4. ভেবে দ্যাখো, ভারী, হালকা সব জিনিসই 'বীচের দিকে' পড়ে, তাইতো? কিছু ছবিতে' নীচের দিক' কোল্টা।

উত্তর: পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বল ভূপৃষ্ঠের সকল স্থানেই কাজ করে। তাই মাধ্যাকর্ষণ বলের টানে পৃথিবীর ওপর থাকা ভারী, হালকা সব জিনিসই পৃথিবীপৃষ্ঠের দিকে পড়ে।

ছবিতে পৃথিবীপৃষ্ঠে দাঁড়িয়ে থাকা চারজনই বলবে যে, তাদের বলটা নীচের দিকে পড়ছে। এই নীচের দিক হল তাদের ছেড়ে দেওয়া বলের অবস্থান থেকে পৃথিবীপৃষ্ঠের দিকে। এই 'নীচের দিক' নীচ থেকে, পাশ থেকে কিংবা ওপর থেকে সবদিক থেকে হতে পারে। কী কান্ড!! 

5. ওপর থেকে কোনো জিনিস পৃথিবীর আকর্ষণের টানে নীচের দিকে পড়ে। তাহলে মহাশূন্যে কী হয়? মহাকাশেও কী আকর্ষণ কাজ করে? 

উত্তর: পৃথিবীর আকর্ষণের টানে ওপর থেকে ছেড়ে দেওয়া যে-কোনো জিনিস নীচের দিকে পড়ে। মহাশূন্যেও সব বস্তুই পরস্পর পরস্পরকে আকর্ষণ করে বা নিজের দিকে টানে। যে বস্তুর ভর যত বেশি হয় তার আকর্ষণ তত বেশি হয়। যেমন চাঁদের অপেক্ষা পৃথিবীর ভর ও আয়তন বেশি, আবার পৃথিবীর অপেক্ষা সূর্যের ভর ও আয়তন বহুগুণ বেশি। তাই এই সকল জোতিষ্ক নিজেদের মধ্যে আকর্ষণ বজায় রেখে ঘুরে চলেছে। চাঁদ পৃথিবীর চারদিকে এবং পৃথিবী সূর্যের চারদিকে আকর্ষণের টানেই অনবরত প্রদক্ষিণ করে চলে। কেউই কারোর ওপর আছড়ে পড়ে না। 

▶ মহাকাশেও বস্তুকণার আকর্ষণ কাজ করে। এই আকর্ষণের টানেই সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহ এবং তাদের উপগ্রহ নিজেদের মধ্যে দূরত্ব বজায় রেখে ঘুরে চলেছে। তাহলে কী হবে? 

6. পৃথিবী তাহলে কার দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে? তারার দিকে? না সূর্যের দিকে? 

উত্তর: মহাকর্ষ সূত্র অনুসারে, সূর্য, তারা প্রত্যেকের দ্বারা পৃথিবী আকর্ষিত হয়। তবে তারা অনেক দূরে থাকায় ■ পৃথিবীর ওপর আকর্ষণ বল নগণ্য। কিন্তু সৌরজগতের বৃহত্তম জোতিক সূর্যের আকর্ষণ বল (পৃথিবী চেয়ে সূর্য 13 লক্ষ গুণ বড়ো) সবচেয়ে বেশি হওয়ায় পৃথিবী সূর্যের দিকে আকর্ষিত হয়। সূর্যের আকর্ষণ বলের টানেই পৃথিবী মহাকাশে ছিটকে না গিয়ে সূর্যের চারদিকে অবিরাম ঘুরে চলে। তবে পৃথিবীর অভিকর্ষজ বল ও সূর্য পরিক্রমণ গতি না থাকলে অর্থাৎ পৃথিবী স্থির থাকলে তারার দিকে না গিয়ে সূর্যের ওপর আছড়ে পড়বে। বুঝেই দ্যাখো ব্যাপারখানা 

7. খুঁটির মাথায় ঘুরন্ত চাকার সঙ্গে বাঁধা দড়ি ধরে খুঁটি থেকে খানিকটা দূরে গিয়ে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে যদি পা দুটো মাটি থেকে তুলে, বুঝুলতে চেষ্টা করো, তাহলে কী হবে? উত্তর: সোজা ছিটকে গিয়ে খুঁটির গায়ে ধাক্কা খাব। ৪ খুঁটির মাথায় ঘুরন্ত চাকার সঙ্গে বাঁধা দড়ি ধরে খুঁটি থেকে খানিকটা দূরে গিয়ে যদি ছুটতে ছুটতে একপাশে সরে গিয়ে তারপর পা দুটো মাটি থেকে তুলে দাও, তাহলে কী হবে? 

উত্তর: খুঁটির চারিদিকে বনবন করে ঘুরতে থাকব।

9. কোনো বস্তুকে ওপরের দিকে কীভাবে ছুঁড়লে তা পৃথিবীতে আর পড়বে না? 

উত্তর: সাধারণত কোনো বস্তুকে ওপরের দিকে ছুঁড়ে দিলে বস্তুটা কিছুটা ওপরে উঠেও পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণের টানে নীচের দিকে পড়ে যায়। তবে পৃথিবী থেকে কোনো বস্তুকে প্রতি সেকেন্ডে 11.2 কিমি গতিবেগে ওপরের দিকে ছুঁড়লে (মুক্তিবেগে) বস্তুটি পৃথিবীতে আর পড়বে না। পৃথিবীর মহাকর্ষীয় আকর্ষণ কাটিয়ে বাইরে চলে যাবে। মহাশূন্যে পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরতে থাকবে। রকেটের মাধ্যমে কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ এই মুক্তিবেগে করা হয়। 

10. পৃথিবীর কক্ষপথের উপবৃত্তটা কীরকম দেখতে? 

উত্তর: পৃথিবী যে নির্দিষ্ট পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে, তাকে পৃথিবীর কক্ষপথ বলে। এই কক্ষপথ মহাশূন্যে একটি কাল্পনিক সমতলে অবস্থান করে। পৃথিবীর কক্ষপথের উপবৃত্তটা অনেকটা গোলাকার। এই উপবৃত্তের সঙ্গে বৃত্তের পার্থক্য এতই সামান্য যে, কক্ষপথটা প্রায় বৃত্তের মতো। সূর্য এই উপবৃত্তের একটা ফোকাসে থাকে। 

11. পৃথিবীর কক্ষপথের 'উপবৃত্ত' কীরকম হয়? বৃত্তের সঙ্গে তার কতখানি পার্থক্য? 

উত্তর: পৃথিবীর কক্ষপথের উপবৃত্তটা অনেকটা গোলাকার। উপবৃত্তাকার কক্ষপথের একটা ফোকাসে সূর্য অবস্থান করে। এই কারণে সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব সবসময় সমান থাকে না। কিন্তু বৃত্তের কেন্দ্র থেকে পরিধি পর্যন্ত দূরত্ব বা ব্যাসার্ধ সবসময় একই থাকে। ▶ তবে উপবৃত্তাকার কক্ষপথের সঙ্গে বৃত্তের পার্থক্য খুব কম থাকায় কক্ষপথটা প্রায় বৃত্তের মতো বলা যায়। জানলে ক্ষতি কী? 

12. বিভিন্ন গ্রহগুলি সূর্যের চারদিকে ঠিক কীভাবে ঘোরে এই সম্পর্কে প্রথম কোন্ বিজ্ঞানী সূত্র প্রণয়ন করেছিলেন? 

উত্তর: বিজ্ঞানী কেপলার প্রথম বিভিন্ন গ্রহগুলি সূর্যের চারদিকে কীভাবে ঘোরে এই সম্পর্কে সূত্র প্রণয়ন করেছিলেন। 

13. কেপলারের প্রথম সূত্রে কী বলা হয়েছে? 

উত্তর: কেপলারের প্রথম সূত্রটি হল-"প্রতিটি গ্রহ উপবৃত্তকার কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে এবং সূর্য ওই উপবৃত্তের একটি ফোকাসে থাকে।"

14. একটা পেনসিল, দুটো পিন, আর সুতোর সাহায্যে উপবৃত্ত অঙ্কন করো। 

উত্তর: উপকরণ: একটা পেনসিল, দুটো পিন, সুতো, একটা কাগজ ও পিচবোর্ড। সুতোর দুটো মুখ গিঁট দিয়ে লুপের মতো করে নিতে হবে। • অঙ্কন পদ্ধতি: প্রথমে পিচবোর্ডের ওপর কাগজ রেখে পিন দুটো এক সরলরেখার পেনসিল ছবির মতো করে আটকানো হল। এবার সুতোর লুপটাকে কাগজের ওপর এমনভাবে রাখা হল, পিন 3 সুতো পিন উপবৃত্ত ঘিরে থাকে। এরপর চিত্র 1.3: পেনসিল, পিন ও সুতোর সাহায্যে উপবৃত্ত অঙ্কন যাতে পিন দুটোকে লুপটার ভিতরের দিকে পেনসিলটা বসিয়ে লুপটাকে টানটান রেখে কাগজের ওপর একপাক ঘুরিয়ে দাগ টানলে দেখা যায়, কেমন যেন একটা লম্বাটে বৃত্ত তৈরি হয়। এটিই উপবৃত্ত। এভাবে দুটো পিনকে কাছাকাছি বা দূরে আটকে একইভাবে লুপের ভিতরে পেনসিল দিয়ে আঁকলে অনেকরকম উপবৃত্ত পাওয়া যায়। যার কোনোটা ডিম্বাকার, চ্যাপটা, বৃত্তাকার বা গোলাকার উপবৃত্ত। 

15. কখন আমরা সূর্যের বেশি কাছে আসি? 

উত্তর: উপবৃত্তাকার কক্ষপথের একটা ফোকাসে সূর্য অবস্থান করে। এই কারণে সূর্য পরিক্রমণকালে পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্ব সারাবছর সমান থাকে না। ও জানুয়ারি সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব সবচেয়ে কম হয় প্রায় 14 কোটি 70 লক্ষ কিমি। একে পৃথিবীর অনুসূর অবস্থান বলে। তাই ও জানুয়ারি আমরা সূর্যের সবচেয়ে বেশি কাছে আসি। 

16. ঘড়ি না থাকলে, সময়কে মাপার কোনো উপায় না থাকলে কি ঠিক সময়ে স্কুল পৌঁছোতে পারবে? 

উত্তর: সময় মাপার কোনো উপায় না থাকলে ঠিক সময়ে স্কুলে পৌঁছোতে পারব না। 

17. ক্যালেন্ডারে তারিখ, মাস, বছর সব ঠিক ঠিক কী করে লেখা থাকে ভেবে দেখেছ? 

উত্তর: আমরা যে সময় ধরে চলি, তা পৃথিবীর সূর্য পরিক্রমণের সময়কালকে ধরে গণনা করা হয়। পৃথিবী 24 ঘণ্টায় নিজ অক্ষের চারদিকে একপাক সম্পূর্ণ করে। তাই 24 ঘণ্টায় দিন ও রাত হয়। এই 24 ঘণ্টার দিনকে ঘণ্টা, মিনিট, সেকেন্ডে ভাগ করে সময় গণনা নিখুঁত করা হয়। আবার পৃথিবী সূর্যকে 365 দিনে একবার প্রদক্ষিণ করে। এই সময়টাকে সৌরবছর বলা হয়। এই পরিক্রমণের সময়কালকে ধরে বছর গণনা করা হয়। 12 মাস নিয়ে এক বছর হয়। এইভাবেই সারাবছরের সময়, তারিখ, মাস নিয়ে ক্যালেন্ডার ঠিক করে লেখা হয়। 

18. সূর্যঘড়ি বানিয়ে ফ্যালো। উত্তর: ঘড়িচক্রের ওপর তৈরি সূর্যালোকের ছায়ার ওপর নির্ভর করে যে সময়ের ধারণা পাওয়া যায়, সেই সময়ের সূচককে সূর্যঘড়ি বলে। 

• উপকরণ: সাদা কাগজ, শক্ত বোর্ড, পেন, স্কেল ও আঠা 

• গঠন পদ্ধতি: একটি সাদা কাগজ আঠা দিয়ে শক্ত বোর্ডের ওপর লাগানো হয়। পরে বোর্ডের নীচের দিকে মাঝখানে একটা লম্বা লাঠি বা মোটা কাগজকে রোল করে দণ্ডের আকারে লাগিয়ে ঘড়িচক্র তৈরি করা হয়। 

• পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি: এক রোদের দিনে খোলা আকাশের নীচে ঘড়িচক্র রেখে পরীক্ষাটি করা হয়। প্রথমে সূর্য ওঠার ঠিক পরে লাঠির ছায়াটিকে দেখে পেন দিয়ে সাদা কাগজের ওপর ছায়া বরাবর দাগ টেনে ফেলা হয় এবং ঘড়ি দেখে দাগের পাশে সময়টা (সূর্যোদয় সকাল 6 টা) লিখে রাখা হয়। এভাবে সূর্যাস্ত পর্যন্ত এক ঘণ্টা পরপর ছায়া বরাবর দাগ টেনে ও পাশে সময় উল্লেখ করা হয়। এই সূর্যঘড়ি দেখে দিনের যে-কোনো সময় বলা যেতে পারে। 

• সিদ্ধান্ত: এভাবে তৈরি সূর্যঘড়িকে খোলা স্থানে রেখে দিনের যে-কোনো সময়ে নির্ভুল সময় গণনা করা যায়।

[a] লক্ষ করে দ্যাখো কখন লাঠির ছায়াটা সবথেকে ছোটো হয়? (সকালে/দুপুরে/ বিকেলে)। 

উত্তর: দুপুরে 

[b] কখন সবথেকে লম্বা হয়? (সকালে/দুপুরে/বিকেলে)। 

উত্তর: সকালে ও বিকেলে ।

বলো দেখি? 

19. সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে পৃথিবী কতবার নিজের অক্ষের ওপর আবর্তন করে? 

উত্তর: পৃথিবী 365 বার নিজের অক্ষের ওপর আবর্তন করে। 

20. 1 দিনে বা 24 ঘণ্টায় কতগুলি মিনিট আছে? 

উত্তর: 1 দিনে বা 24 ঘণ্টায় 1440 মিনিট (24×60 মিনিট) আছে। খেয়াল করেছ? ■

21. 29 ফেব্রুয়ারি কারো জন্মদিন হলে কী হবে? ∎ 

উত্তর: সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাসের দিনসংখ্যা 28 হয়। তবে প্রতি চার বছর অন্তর আসা অধিবর্ষে ফেব্রুয়ারি মাসে 29 দিন হয়। তাই কারো জন্মদিন 29 ফেব্রুয়ারি হলে 4 বছর অন্তর তার জন্মদিন পালন করা সম্ভব হবে। 

22. 29 ফেব্রুয়ারি তারিখটা কি প্রতিবছর ক্যালেন্ডারে পাও? কেন এমন হয়? 

উত্তর: না, 29 ফেব্রুয়ারি তারিখটা প্রতিবছর ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় না। ▶ পৃথিবীর একবার সূর্য পরিক্রমণের সময়কাল 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড। একে সৌরবছর বলে। কিন্তু গণনার সুবিধার জন্য 365 দিনে এক বছর ধরা হয়। ফলে প্রতিবছর এই 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড বা প্রায় 6 ঘণ্টা সময় বাড়তি থাকে। এই বাড়তি সময়ের হিসাব ঠিক রাখার জন্য প্রতি 4 বছর অন্তর (6×4 ঘণ্টা 24 ঘণ্টা বা 1 দিন) 1 দিন বাড়িয়ে বছরটা 366 দিনের হয়। তাই 4 বছর অন্তর ফেব্রুয়ারি মাসের সঙ্গে 1 দিন যোগ করে 29 ফেব্রুয়ারি তারিখটা করা হয়। 

23. কোন্ বছর অধিবর্ষ কী করে বুঝবে? 

উত্তর: পৃথিবীর একবার সূর্য পরিক্রমণের সময় 365 দিন 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড হলেও হিসাবের সুবিধার জন্য 365 দিনে এক বছর ধরা হয়। ফলে প্রতিবছর এই 5 ঘণ্টা 48 মিনিট 46 সেকেন্ড বা প্রায় 6 ঘণ্টা বাড়তি সময়ের হিসাব ঠিক রাখার জন্য চার বছর অন্তর (6 ঘণ্টা × 4 = 24 ঘন্টা বা একদিন) একটা অতিরিক্ত দিন যোগ করে বছরের দিনসংখ্যা 366 করা হয়। এই 366 দিনের বছরকে অধিবর্ষ বলে। তাই যে সমস্ত বছর সংখ্যাকে 4 দিয়ে ভাগ করলে কোনো ভাগশেষ থাকে না, সেই বছরগুলি অধিবর্ষ হয়। যেমন-2012, 2016 সালে। তবে শতক বছরগুলি 400 দ্বারা বিভাজিত হলে, তবেই সেই বছরকে অধিবর্ষ হিসেবে ধরা হয়। যেমন- 2000 সাল অধিবর্ষ কিন্তু 1900 সাল অধিবর্ষ নয়।

24. কাদের মাথায় অধিবর্ষের ব্যাপারটা প্রথম এল? 

উত্তর: মিশরীয়দের মাথায় অধিবর্ষ ব্যাপারটা প্রথম এসেছিল। এ তো খুব সহজ! 

25. ঠিক ঠিক লিখে ফ্যালো- 

সাল 2004 অধিবর্ষ হবে? 2000 পৃথিবীর পরিক্রমণ।

26. সারাবছর ধরে কখনও 'গরম' কখনও 'ঠান্ডা' এরকম হয় কেন? এই প্রশ্নের উত্তরটা খুঁজতে হবে তো! 

উত্তর: পৃথিবীর সকল শক্তির উৎস হল সূর্য। সূর্যের আলোয় পৃথিবী আলোকিত ও উত্তপ্ত হয়। কিন্তু সারাবছর ধরে রোজ একইরকম গরম বা ঠান্ডা পড়ে না কারণ-[a] পৃথিবীর মেরুরেখা তার কক্ষতলের সঙ্গে 66%° কোণে হেলে থাকে। এর ফলে পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ মেরু পর্যায়ক্রমে সূর্যের দিকে ঝুঁকে পড়ে। তাই কখনও উত্তর গোলার্ধে আবার কখনও দক্ষিণ গোলার্ধে সূর্যালোক লম্বভাবে পড়ায় উন্নতার পার্থক্য হয়। [৮] পৃথিবীর গোলীয় আকৃতির জন্য সূর্যরশ্মির পতনকোণের পার্থক্য ঘটে। সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়লে তা কম জায়গা জুড়ে পড়ায় স্থানটি বেশি উত্তপ্ত হয়। আবার সূর্যরশ্মি তির্যকভাবে পড়লে বেশি জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে এবং স্থানটি কম উত্তপ্ত হয়। [c] পৃথিবী বার্ষিকভাবে সূর্যের চারদিকে পরিক্রমণ করে। ফলে সূর্য বছরের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অক্ষরেখায় লম্বভাবে কিরণ দেয়। তাই বছরের বিভিন্ন সময় গরম বা ঠান্ডার পার্থক্য ঘটে। [d] পৃথিবী উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্য পরিক্রমণকালে সূর্য ও পৃথিবীর মধ্যে দূরত্বের পার্থক্য ঘটে। ফলে পৃথিবীপৃষ্টে উন্নতার তারতম্য তৈরি হয়। 

27. গ্রীষ্ম কেন শীতের থেকে গরম? 

উত্তর: পৃথিবীর অক্ষ কক্ষতলের সঙ্গে 66%° কোণে হেলে অবস্থান করে। ফলে উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার সময় পৃথিবীর এক একটা গোলার্ধ সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকে। তাই পৃথিবীর উত্তর বা দক্ষিণ গোলার্ধ যখন সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকে, তখন সেই গোলার্ধে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে এবং সেই রশ্মি ভূপৃষ্ঠের কম জায়গায় পড়ায় বেশি উত্তপ্ত করে। এই সময় রাতের তুলনায় দিন বড়ো হয় বলে দিনের বেলায় সংগৃহীত সৌরতাপের কিছুটা স্বল্প দৈর্ঘ্যের রাতে বিকিরিত হয়। ধীরে ধীরে তাপ সঞ্চয়ে ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং উন্ন গ্রীষ্মকালের সূচনা হয়। কিন্তু সূর্যের বিপরীত দিকে ঝুঁকে থাকা গোলার্ধে তখন সূর্যরশ্মি তির্যকভাবে পড়ে এবং বেশি জায়গায় ছড়িয়ে পড়ায় ভূপৃষ্ঠ কম উত্তপ্ত হয়। এই সময় রাতের তুলনায় দিন ছোটো হয় বলে স্বল্প দৈর্ঘ্যের দিনে ভূপৃষ্ঠ যে পরিমাণ সৌরতাপ গ্রহণ করে, দীর্ঘ রাতে তার চেয়ে বেশি তাপ বিকিরিত হওয়ায় ভূষ্ঠ রুমে !! শীতল হতে থাকে ও শীতকালের সূচনা হয়। তাই গ্রীষ্ম শীতের থেকে গরম হয়। 

28. পৃথিবীর অক্ষ কেন হেলানো? 

উত্তর: মহাকাশ বিজ্ঞানীদের ধারণা পৃথিবী সৃষ্টির সময়কালে বিভিন্ন মহাজাগতিক বস্তুর সঙ্গে সংঘর্ষের কারণেই পৃথিবীর অক্ষ তার কক্ষতলের সঙ্গে 66½° কোণে হেলে রয়েছে।

29. দিনের কোন্ সময়টা বেশি গরম লাগে? (সকালে সূর্য ওঠার সময়/দুপুরে সূর্য যখন মাথার ওপর থাকে/সন্ধ্যায় সূর্যাস্তের সময়/রাতে সূর্যাস্তের পর)। 

উত্তর: দুপুরে সূর্য যখন মাথার ওপর থাকে।

30. একটা অন্ধকার ঘরে টেবিলের ওপর বা সমতল মেঝের ওপর টর্চের আলো ফেলে দেখতে হবে। প্রথমে টর্চটা টেবিলের 1-2 ফুট ওপরে লম্বভাবে ধরে লক্ষ করো- [a] টেবিলের ওপর যে আলোর বৃত্তটা তৈরি হয়েছে, সেটা কতটা জায়গা জুড়ে আছে? আর দ্যাখো আলোটা কতটা উজ্জ্বল? এবার টর্চটাকে একই উচ্চতায় রেখে একটু হেলিয়ে - ধরো। [b] দেখোতো এবার আলোকিত জায়গাটা বাড়ল কি না? আর আলোটা আগের থেকে বেশি জোরালো না হালকা হল? 

উত্তর: এই পরীক্ষা থেকে বোঝা যায় যে-[a] লম্বভাবে পতিত রশ্মি কম জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে এবং আলো যথেষ্ট জোরালো হয়। [b] অন্যদিকে তির্যকভাবে পতিত রশ্মি বেশি জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে এবং খুব হালকা হয়।

31. ঋতুগুলি কেন আসে? 

উত্তর: ঋতুপরিবর্তনের কারণগুলি হল-[a] পৃথিবীর মেরুরেখা বা অক্ষের হেলে অবস্থান। [৮] পৃথিবীর আবর্তন ও পরিক্রমণ বাবার্ষিক গতি। [c] উপবৃত্তাকার কক্ষপথ। [d] গোলাকার পৃথিবীতে সূর্যরশ্মির পতনকোণের পার্থক্য। পবৃত্তাকার কক্ষপথে পৃথিবীর অক্ষ কিছুটা হেলানোভাবে অবস্থান করে সূর্যকে পরিক্রমণ করায় উত্তর ও দক্ষিস গোলাধ পর্যায়ক্রমে সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকে। যখন উত্তর গোলার্ধ সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকে, তখন উত্তর গোলার্ধে ক্রমশ দিন বড়ো ও রাত ছোটো হতে থাকে। তাই দিনের আলো অনেকক্ষণ পাওয়া যায়। ফলে সারাদিন ধরে সূর্যতাপে পৃথিবী যে পরিমাণ উত্তপ্ত হয়, স্বল্প দৈর্ঘ্যের রাতে তার কিছুটা বিকিরিত হতে পারে। এইভাবে উত্তর গোলার্ধে দিনের পর দিন গরম বাড়তে থাকে। এই সময়ে উত্তর গোলার্ধে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ায় সূর্যের তাপও প্রবল হয়। এইসময় উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল ও দক্ষিণ গোলার্ধে শীতকাল বিরাজ করে।

আবার যখন দক্ষিণ গোলার্ধ সূর্যের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকে, তখন উত্তর গোলার্ধে ক্রমশ দিন ছোটো আর রাত বড়ো হতে থাকে। ফলে দিনের বেলায় সূর্যতাপে ভূপৃষ্ঠ যে পরিমাণ উত্তপ্ত হয়, দীর্ঘ রাতে তার চেয়ে বেশি পরিমাণ তাপ বিকিরিত হওয়ায় ভূপৃষ্ঠ ক্রমে শীতল হয়ে পড়ে। এইসময় উত্তর গোলার্ধে সূর্যরশ্মি বাঁকাভাবে পড়ায় ভূপৃষ্ঠ কম উত্তপ্ত হয়। তাই উত্তর গোলার্ধে শীতকাল ও দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল হয়। আবার বছরের দুটো দিন পৃথিবীর নিরক্ষরেখার ওপর সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ায় পৃথিবীর সর্বত্র 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত হয়। এই সময় উভয় গোলার্ধে ভূপৃষ্ঠের তাপ গ্রহণ ও বর্জনের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকায় পর্যায়ক্রমে বসন্ত ও শরৎ ঋতুর উদ্ভব হয়।

32. সূর্যের বার্ষিক আপাত গতি কেন হয়? 

উত্তর: পৃথিবীর অক্ষ কক্ষতলের সঙ্গে 66½° কোণে হেলে অবস্থান করে। পৃথিবীর এই হেলানো অক্ষের জন্য বছরেরবিভিন্ন সময় পৃথিবীর বিষুবরেখা (0°), কর্কটক্রান্তিরেখা (23%° উত্তর) ও মকর-ক্রান্তিরেখা (23½° দক্ষিণ)-য় সূর্যের লম্বরশ্মি পড়ে। ফলে আপাতভাবে মনে হয় যেন সূর্য পৃথিবীর বিষুবরেখা থেকে উত্তরে কর্কটক্রান্তিরেখা এবং দক্ষিণে মকরক্রান্তিরেখা পর্যন্ত চলাচল করে। একে সূর্যের বার্ষিক আপাত গতি বা রবিমার্গ বলে। 

কীভাবে করবে? 

33. প্রতি মাসের 1 বা 2 তারিখে সকালে দেখবে সূর্যটা কোথায় উঠছে। সেদিক বরাবর একটা লম্বা দাগ দিয়ে রাখবে। নির্দিষ্ট মাস (1) তারিখ) সূর্য কোন্দিক ঘেঁষে ওঠে? মার্চ মে-জুন সেপ্টেম্বর নভেম্বর-ডিসেম্বর 

উত্তর: যেহেতু আমরা উত্তর গোলার্ধে বসবাস করি সেহেতু উত্তর গোলার্ধের আকাশ ভালো করে লক্ষ করলে দেখা যায়প্রতিদিন একই স্থানে সূর্যোদয় হয় না এবং সূর্যাস্তের স্থানও ভিন্ন হয়। প্রতি মাসের 1 বা ২ তারিখে সকালে সূর্যোদয়ের অবস্থান লিপিবদ্ধ করলে, তার তালিকা নিম্নরূপ হবে-নির্দিষ্ট মাস (১ তারিখ) মার্চ সূর্য কোন্দিক ঘেঁষে ওঠে? অনেকটা পূর্বদিক ঘেঁষে মে-জুন উত্তর-পূর্ব ঘেঁষে সেপ্টেম্বর পূর্বদিক ঘেঁষে নভেম্বর-ডিসেম্বর দক্ষিণ-পূর্ব ঘেঁষে।

34. একটা তালিকা বানিয়ে মার্চ, জুন, সেপ্টেম্বর, ডিসেম্বর মাসের প্রত্যেক সপ্তাহের একদিন করে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের সময়টা লিখে ফেলতে হবে। 

উত্তর: আমরা জানি প্রতিদিন 24 ঘণ্টায় দিন ও রাত হয়। কিন্তু সবসময় দিন ও রাত সমান হয় না। অভিজ্ঞতায় দেখা যায় ভারতের মতো দেশে গরমকালে স্কুল থেকে ফিরে অনেকক্ষণ খেলা যায়, মানে অনেকক্ষণ দিন থাকে। আর শীতকালে দ্রুত সন্ধে নেমে আসে। তাই নিজেরাই গরমকালে ও শীতকালে কতক্ষণ সূর্যের আলো থাকে তার তালিকা তৈরি করতে পারি। মার্চ, জুন, সেপ্টেম্বর এবং ডিসেম্বর মাসের প্রত্যেক সপ্তাহে একদিন করে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সারণি লিখে ফেলা হল __

35. সূর্যের বার্ষিক আপাত গতি, দিনরাতের ছোটো বড়ো হওয়া এবং ঋতুপরিবর্তন-কী কারণে হয়? বিকল্পগুলির মধ্যে থেকে ঠিক উত্তরটি বেছে নাও। [a] পৃথিবীর উপবৃত্তাকার কক্ষপথ [b] পৃথিবীর অক্ষ হেলানো [c]আবর্তন ও পরিক্রমণ গতি-([a], [b]/[b], [c]/[a], [c]/[a], [b], [c]) | 

উত্তর: [a], [b], [c] 

বাংলা ক্যালেন্ডার দেখেছ? 

36. আমাদের দেশে ঋতুর সংখ্যা ক-টি ও কী কী? 

উত্তর: বাংলা ক্যালেন্ডার অনুসারে আমাদের দেশে মোট ছয়টি ঋতু দেখা যায়। যথা-গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত।

37. পৃথিবীর প্রধান ঋতুগুলির নাম লেখো। 

উত্তর: পৃথিবীর প্রধান ঋতুগলি হল-গ্রীষ্ম, শরৎ, শীত ও বসন্ত। 

38. পৃথিবীর কোন্ কোন্ অঞ্চলে ঋতুপরিবর্তন দেখা যায় না ও কেন? 

উত্তর: পৃথিবীতে নিরক্ষীয় ও মেরু অঞ্চলে ঋতুপরিবর্তন হয় না। এই দুটি অঞ্চলে ঋতুপরিবর্তন না দেখা যাওয়ার কারণ- পৃথিবীর কেন্দ্র ও ছায়াবৃত্তের কেন্দ্র একই বিন্দুতে থাকায় ছায়াবৃত্ত নিরক্ষরেখাকে প্রতিদিন সমান দুই ভাগে ভাগ করে। ফলে, নিরক্ষরেখায় সারাবছর সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে এবং দিন ও রাত সমান হয় (12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত)। তাই এখানে সারাবছর উন্ন ও আর্দ্র গ্রীষ্মকাল বিরাজ করে। আবার, মেরু অঞ্চলে পৃথিবীর মেরুরেখা হেলে থাকায় পর্যায়ক্রমে 6 মাস দিন ও 6 মাস রাত দেখা যায়। একটানা 6 মাস দিন থাকাকালীন সময়ে মেরু অঞ্চলে সূর্যরশ্মি এতই তির্যকভাবে পড়ে (এই সময় সূর্যকে দিগন্তরেখা বরাবর দেখা যায়) যে উন্নতা হিমাঙ্কের অনেক নীচে নেমে যায়। একই ঘটনা মেরু অঞ্চলে 6 মাস একটানা রাত্রি চলাকালীন সময়েও ঘটে। ফলে মেরু অঞ্চলে কেবলই শীতকাল বিরাজ করে। 

সূর্যঘড়ির ছায়া 

39. 21 মার্চ, 21 জুন আর 22 ডিসেম্বর দুপুর 12 টার সময় ছায়ার দৈর্ঘ্য মেপে দ্যাখো। [a] কোন্ দিন সবথেকে ছোটো ছায়া পড়ল? [b] কোন্ দিন সবথেকে বড়ো ছায়া পড়ল? 

উত্তর: সূর্যঘড়ি নির্দেশক দণ্ডের ছায়ার দৈর্ঘ্য প্রতিদিন দুপুর 12 টায় পরিমাপ করলে দেখা যায়, ছায়ার দৈর্ঘ্য প্রতিদিন সমান থাকে না। বিশেষ করে 21 মার্চ, 21 জুন ও 22 ডিসেম্বর দুপুর 12 টার সময় প্রাপ্ত ছায়ার দৈর্ঘ্যের তুলনামূলক পরিসংখ্যানে দেখা যায়- [a] 21 জুন ছায়ার দৈর্ঘ্য সবথেকে ছোটো হয়। [b] 22 ডিসেম্বর ছায়ার দৈর্ঘ্য সবথেকে বড়ো হয়। 

এর কারণ, সূর্যরশ্মি যখন যে গোলার্ধে লম্বভাবে পড়ে সেই গোলার্ধে তখন দুপুর 12 টায় সূর্যঘড়ির দণ্ডের ছায়ার দৈর্ঘ্য সবচেয়ে ছোটো হয়। কারণ সূর্য দুপুর 12 টায় ঠিক মাথার ওপর সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকে। 21 জুন সূর্যকিরণ উত্তর গোলার্ধে কর্কটক্রান্তিরেখায় লম্বভাবে পড়ায় ছায়ার দৈর্ঘ্য সবচেয়ে ছোটো হয়। 22 ডিসেম্বর দক্ষিণ গোলার্ধে মকরক্রান্তিরেখায় সূর্যকিরণ লম্বভাবে পড়ায় উত্তর গোলার্ধে ছায়ার দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বড়ো হয়।

40. বড়োদিন কি আসলে বড়ো দিন? 

উত্তর: না, বড়োদিন কোনোভাবেই বড়ো দিন নয়। যদিও এই দিনটিতে জিশুখ্রিস্টের জন্মদিন ও এই দিনটি বড়োদিন নামে পরিচিত। কিন্তু এই সময় উত্তর গোলার্ধে সূর্যরশ্মি তির্যকভাবে পড়ে। ফলে এই সময় দিনের দৈর্ঘ্য ছোটো ও রাতের দৈর্ঘ্য বড়ো হয়। 

মগজাস্ত্র 

41. ভেবে দ্যাখো পৃথিবীর অক্ষটা যদি পৃথিবীর কক্ষের ওপর লম্ব হত তাহলে দিন-রাত এবং ঋতুপরিবর্তন কেমন হত? 

উত্তর: বৃহস্পতির অক্ষের মতো পৃথিবীর অক্ষটা পৃথিবীর 'কক্ষপথের ওপর লম্বভাবে অবস্থান করলে, প্রদত্ত ঘটনাগুলি হতে পারত [a] সূর্যকিরণ সারাবছর নিরক্ষরেখায় পুরোপুরি লম্বভাবে পড়ত। [b] দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধি হত না। [c] পৃথিবীর সর্বত্র জায়গায় সারাবছর 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি হত। [d] সূর্যের আপাত বার্ষিক গতি বা রবিমার্গ দেখা যেত না। [e] ঋতুপরিবর্তন হত না এবং মেরু অঞ্চলে পর্যায়ক্রমে একটানা 6 মাস দিন ও 6 মাস রাত্রি হত না।

42. ভেবে দ্যাখো পৃথিবীর অক্ষ যদি কক্ষপথের সমতলে থাকত তাহলে দিন-রাত এবং ঋতুপরিবর্তন কেমন হত? 

উত্তর: ইউরেনাসের অক্ষের মতো পৃথিবীর অক্ষটা যদি কক্ষপথের সমতলে থাকত, তবে প্রদত্ত ঘটনাগুলি হতে পারত-[a] সূর্যকিরণ বছরের বিভিন্ন সময় মেরু থেকে নিরক্ষরেখায় লম্বভাবে পড়বে। [b] মেরু অঞ্চলেও সূর্যের লম্বরশ্মি পড়বে এবং একটানা 6 মাস দিন ও রাত্রি দেখা যাবে। [c] সর্বত্র দিন ও রাত্রির দৈর্ঘ্যের হ্রাসবৃদ্ধি হবে। [d] ঋতুপরিবর্তন ঘটবে। [e] বছরে দু-দিন কেবল সূর্যকিরণ নিরক্ষরেখায় লম্বভাবে পড়বে। [f] উভয় মেরুতে পর্যায়ক্রমে তাপমাত্রার প্রখরতা বা শীতলতা অনুভূত হবে। [g] বছরে কেবল দুটি নির্দিষ্ট দিনে পৃথিবীর সর্বত্র 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি হবে। 

43. পৃথিবীর কোথায় সারাবছরই দিন ও রাত সমান থাকে? 

উত্তর: নিরক্ষরেখায় সারাবছরই দিন ও রাত সমান থাকে। এর কারণ, নিরক্ষরেখায় সূর্যরশ্মি সারাবছর লম্বভাবে পড়ায় ছায়াবৃত্ত নিরক্ষরেখাকে সমান দুটি ভাগে ভাগ করে। তাই নিরক্ষরেখায় সারাবছর 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি হয়। 

44. 21 মার্চ তারিখে স্থানীয় সময় অনুযায়ী কটার সময় টোকিয়ো, কলকাতা, সিডনিতে সূর্য উঠবে? 

উত্তর: 21 মার্চ সূর্যকিরণ নিরক্ষরেখায় লম্বভাবে পড়ে। এই দিন মহাবিষুব হওয়ায় পৃথিবীর সর্বত্র 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি হয়। তাই 21 মার্চ তারিখে স্থানীয় সময় অনুযায়ী, সকাল | 6 টার সময় টোকিয়ো, কলকাতা ও সিডনিতে সূর্য উঠবে। 

45. 4 জুলাই, 25 জানুয়ারি, 20 সেপ্টেম্বর বিষুবরেখার যে-কোনো জায়গায় কখন সূর্য উঠবে? 

উত্তর: বিষুবরেখা বা নিরক্ষরেখায় সারাবছর দিন ও রাত সমান হওয়ায় প্রতিদিনই স্থানীয় সময় সকাল 6 টায় বিষুবরেখায় অবস্থিত যে-কোনো জায়গায় সূর্য উঠবে। তাই 4 জুলাই, 25 জানুয়ারি, 20 সেপ্টেম্বর বিষুবরেখার যে-কোনো. জায়গায় স্থানীয় সময় সকাল টোয় সূর্য উঠবে।

46. 23 সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় কটায় নিউ ইয়র্ক, দিল্লি, কায়রোতে সূর্য ডুববে? 

উত্তর: 23 সেপ্টেম্বর সূর্যকিরণ নিরক্ষরেখায় লম্বভাবে পড়ে। এই দিন জলবিষুব হওয়ায় পৃথিবীর সর্বত্র 12 ঘণ্টা দিন ও 12 ঘণ্টা রাত্রি হয়। তাই 23 সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় সন্ধে | 6 টায় নিউ ইয়র্ক, দিল্লি, কায়রোতে সূর্য ডুববে।

হাতে কলমে 

49. কোন্ কোন্ ঋতুতে বেশিরভাগ দিন নীল আকাশ দেখা যায়? 

উত্তর: শরৎ ও বসন্ত ঋতুতে। 

50. কোন্ ঋতুতে মাঠের মাটি ফেটে যায়? 

উত্তর: গ্রীষ্ম ঋতুতে। 

51. কোন্ কোন্ ঋতুতে পুকুরগুলি জলে ভরতি থাকে? 

উত্তর: বর্ষা ঋতুতে। 

52. কোন্ কোন্ ঋতুতে বন্যার সম্ভাবনা থাকে? 

উত্তর: বর্ষা ও শরৎ ঋতুতে। 

53. কোন্ কোন্ ঋতুতে ডোবা, খাল, বিল ছেঁচে মাছ ধরা হয়? 

উত্তর: বসন্ত ও গ্রীষ্ম ঋতুতে।

54. কোন্ ঋতুতে সূর্য পূর্ব আকাশের সবথেকে দক্ষিণ ঘেঁষে ওঠে? 

উত্তর: শীত ঋতুতে। 

55. কোন্ ঋতুতে দুপুর 12 টায় ছায়ার দৈর্ঘ্য সবচেয়ে বেশি হয়? 

উত্তর: শীত ঋতুতে। 

56. কোন্ ঋতুতে খুব কোকিল ডাকে? 

উত্তর: বসন্ত ঋতুতে। 

57. উত্তর গোলার্ধে কোন্ ঋতুতে সবথেকে বড়ো দিন হয়? 

উত্তর: গ্রীষ্ম ঋতুতে। 

58. 25 ডিসেম্বর বড়োদিন-এ দক্ষিণ গোলার্ধে গরম না ঠান্ডা? 

উত্তর: গরম।

59. বিজ্ঞানীরা অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ অভিযানে ডিসেম্বর মাসে কেন যান? 

উত্তর: দক্ষিশ গোলার্ধে কুমেরুবৃত্তের নিকটবর্তী দক্ষিশমেরু 1 বিন্দুকে ঘিরে পৃথিবীর শীতলতম মহাদেশ অ্যান্টার্কটিকা অবস্থিত। এই মহাদেশের সমস্ত অঞ্চল সারাবছর তুষারে ঢাকা থাকে। তবে 22 ডিসেম্বর দক্ষিণ গোলার্ধে মকরক্রান্তিরেখার (23½° দ:) ওপর সূর্যকিরণ লম্বভাবে পড়ায় দক্ষিণ গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড়ো এবং রাত সবচেয়ে ছোটো হয়। এই সময় রাতের চেয়ে দিন বড়ো হওয়ায় দিনে সঞ্চিত তাপের অল্প অংশই স্বল্প রাতে বিকিরিত হতে পারে। ফলে গরমের প্রখরতা অনুভূত হয়। 22 ডিসেম্বরের 1½ মাস আগে থেকে 1½ মাস পরে পর্যন্ত এই তিন মাস (নভেম্বর থেকে জানুয়ারি) দক্ষিণ গোলার্ধে গ্রীষ্মকাল বিরাজ করে। তাই ডিসেম্বর মাসে অ্যান্টার্কটিকায় শীতের প্রকোপ কিছুটা কমে এবং একটানা দিন থাকায় বিজ্ঞানীরা ডিসেম্বর মাসে অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ অভিযানে যান।  

60. জুলাই না জানুয়ারি কোন্ মাসে আমরা সূর্যের বেশি কাছে আসি? 

উত্তর: জানুয়ারি মাসে।



No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();