নগর, বণিক ও বাণিজ্য: সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ষষ্ঠ অধ্যায় দ্বিতীয় পার্ট| class 7 history question answer part-2 short & brought question answer|
সমাধানসহ পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলি
নীচের নামগুলির মধ্যে কোন্ট বাকিগুলির সঙ্গে মিলছে না তার তলায় দাগ দাও:
1. শাহজাহানাবাদ, তুঘলকাবাদ, কিলা রাই পিথোরো, দৌলতাবাদ।
2. তঙ্কা, মোহর, চুন্ডি, জিতল।
3. নীল, গোলমরিচ, সুতিবস্ত্র, রুপো। 4. করওয়ানি, কসবা, বনজারা, মুলতানি।
5. পান্ডুয়া, বুরহানপুর, চট্টগ্রাম, গৌড়।
উত্তর 1. দৌলতাবাদ 3. রুপো 4. কসবা 5. বুরহানপুর ।
2. হুন্ডি
সংক্ষেপে (৩০-৩৫টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও:
1. কী কী ভাবে মধ্যযুগের ভারতে শহর গড়ে উঠত?
উত্তর: মধ্যযুগের ভারতে নানা শহর বা নগর গড়ে উঠত। শহর গড়ে উঠত রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক কারণে। অনেক সময় ধর্মীয় স্থান, যেমন-মন্দির ও মসজিদকে কেন্দ্র করে শহর গড়ে উঠত। মধ্যযুগের শহরগুলির আকার-আয়তন ও ধরন নানা যুগে বদলেছে।
2. কেন সুলতানদের সময়কার পুরোনো দিল্লির আস্তে আস্তে ক্ষয় হয়েছিল?
উত্তর: চোদ্দো শতকের দ্বিতীয়ার্ধে দিল্লি শহরের চেহারা বদলে যায়। সুলতান ফিরোজ তুঘলক এসময়ে ফিরোজাবাদ - নামে একটি নতুন শহর গড়ে তুলেছিলেন। এটি গড়ে উঠেছিল যমুনা নদীর পাড় বরাবর। এর ফলে শহরে জলের সমস্যা মিটে যায়। নদীপথে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কম খরচে পৌঁছে যায় শহরবাসীর হাতে। ফলে পুরোনো দিল্লির আস্তে আস্তে ক্ষয় হয়েছিল।
3. কেন, কোথায় শাহজাহানাবাদ উঠেছিল? শহরটি গড়ে
উত্তর: মুঘল সম্রাট শাহ জাহানের আমলে যমুনা নদীর পাড় ভেঙে আগ্রা শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। পাশাপাশি আগ্রার প্রাসাদদুর্গ মুঘল বাদশাহের জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের জন্য যথেষ্ট বড়ো ছিল না। তাই যমুনা নদীর তীরে পশ্চিমে একটি উঁচু জায়গায় শাহজাহানাবাদ গড়ে তোলা হয়েছিল। এ ছাড়া আগ্রা শহরে দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধিও ছিল শাহজাহানাবাদ শহর গড়ে তোলার অন্যতম কারণ।
4. ইউরোপীয় কোম্পানির কুঠিগুলি কেমন ছিল?
উত্তর: ইউরোপীয় কোম্পানির কুঠিগুলিতে ইউরোপীয় বণিকরা নিজেদের মতো করে বাড়িঘর তৈরি করত। কুঠিগুলি তারা অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে দুর্গের মতো সুরক্ষিত করে রাখত। সেখানে তাদের বাসগৃহ ও মালের গুদাম থাকত।
5. মুঘল শাসকরা কীভাবে ব্যাবসাবাণিজ্যে উৎসাহ দিতেন?
উত্তর: মুঘল শাসকরা নানাভাবে ব্যাবসাবাণিজ্যে উৎসাহ | দিতেন। তাঁরা মালের ওপর শুল্ক ছাড় দিতেন। কুঠি বানানোর প্রয়োজনীয় অনুমতি দিয়ে বণিকদের নানা সুযোগসুবিধা দিতেন। এ ছাড়া কোনো কোনো মুঘল অভিজাতরাও সরাসরি বাণিজ্যে যোগ দিতেন।
বিশদে (১০০-১২০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও:
1. খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতকে দিল্লি কেন একটি গুরুত্বপূর্ণ গহর হয়ে উঠেছিল?
উত্তর: ত্রয়োদশ-চতুর্দশ শতকে নানা কারণে দিল্লি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। সুলতান কুতুবউদ্দিন আইবকের আমলে রাজপুত শাসকদের শহর কিলা রাই পিথোরাকে কেন্দ্র করে প্রথম দিল্লি বা কুতুব দিল্লি তৈরি করা হয়েছিল। পরে আলাউদ্দিন খলজি মোঙ্গল আক্রমণ থেকে নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য সিরিতে একটি কেল্লা শহর বানিয়েছিলেন। ঐতিহাসিক ইসামির লেখা থেকে জানা যায় যে, আরব, ইরান, চিন ও মধ্য এশিয়া থেকে অভিজাত ব্যক্তি, শিল্পী-কারিগর, চিকিৎসক, রত্ন-ব্যবসায়ী, সাধু-সন্ত সকলেই দিল্লিতে ভিড় জমাতেন। তা ছাড়া এসময় বাগদাদের দুরবস্থার ফলে দিল্লির গুরুত্ব বেড়ে যায়। দিল্লি হয়ে ওঠে বিখ্যাত বাণিজ্যকেন্দ্র। মধ্য ও পশ্চিম এশিয়া থেকে বহু মানুষ দিল্লিতে চলে আসেন ও বাস করতে থাকেন। দিল্লি সুফি সাধকদেরও পীঠস্থানে পরিণত হয়। এজন্যই দিল্লিকে বলা হত 'হজরত-ই দিল্লি'।
2. শাহজাহানাবাদের নাগরিক চরিত্র কেমন ছিল?
উত্তর: শাহজাহানাবাদে মিশ্র প্রকৃতির নাগরিক বসতি গড়ে উঠেছিল। এখানে নানা ধরনের বাড়িতে নানা শ্রেণির মানুষ বসবাস করতেন। সুন্দর বাগানবাড়িতে থাকতেন রাজপুত্র, উচ্চপদস্থ আমিররা। ধনী বণিকরা থাকতেন টালি সাজানো ইট ও পাথরের তৈরি বাড়িতে। সাধারণ ব্যবসায়ীরা থাকত নিজেদের দোকানের ওপরে বা পেছন দিকের ঘরে। এই বাড়িগুলিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়—'হাভেলি' (সবচেয়ে বড়ো ও সুন্দর বাড়ি), 'মকান' ও 'কোঠি' (নীচুস্তরের বাড়ি) এবং সবচেয়ে ছোটো ঘর বা 'কোঠরি'। এ ছাড়া বাংলো ধরনের বাড়িও ছিল। মাটি ও খড় দিয়ে তৈরি কুঁড়েঘরে সৈনিক, দাসদাসী ও কারিগররা বাস করত! তবে বসতি এলাকার কোনো বিভাজন ছিল না। আমির ও গরিব কারিগর একই মহল্লায় পাশাপাশি থাকত। নানা উৎসবে জাতিধর্মনির্বিশেষে মানুষ যোগ দিত।
3. দিল্লির সুলতানদের আমলে ব্যাবসাবাণিজ্যের বিস্তার কেন ঘটেছিল?
উত্তর: নানা কারণে দিল্লির সুলতানদের আমলে ব্যাবসাবাণিজ্যের বিস্তার ঘটেছিল-
[a] নতুন শহর: সুলতানি আমলে অর্থাৎ ত্রয়োদশ-চতুর্দশ শতকে যেমন নতুন শহর তৈরি হয়, তেমনই পুরোনো শহরগুলিতে তৈরি হয় নতুন ঘরবাড়ি।
[b] শহরে বসবাস: নতুন শহরে সুলতান, অভিজাত, সৈনিক ও সাধারণ মানুষ বসবাস করতে শুরু করেন, ফলে শহরগুলি হয়ে ওঠে জনবহুল। ফলে শহরে কাঁচামাল ও শ্রমিকের বিশেষ প্রয়োজন হয়।
[c] নানা জাত ও ধর্মের মানুষ: শহরে আগত শ্রমিকরা ছিল নানা জাত ও ধর্মের মানুষ। কেউ ভারতীয়, আবার কেউ-বা বহিভারতীয়। যুদ্ধে পরাজিত দাসদেরও শ্রমিকের কাজে বহাল করা হত। শহরে বাড়িঘর তৈরি ও কাঁচামালের জোগান দেওয়ার জন্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য গড়ে উঠেছিল।
[d] সুলতানদের প্রয়োজনে বাণিজ্যিক বিস্তার: সুলতান আলাউদ্দিন খলজির আমল থেকে সৈনাদের ভরণ-পোষণের জন্য রাষ্ট্র কৃষকদের থেকে নগদ টাকায় কর আদায় করত। ওই টাকা জোগাড় করার জন্য কৃষকরা ব্যবসায়ীদের কাছে তাঁদের উৎপন্ন শস্য বিক্রি করে দিতে বাধ্য হত। ফলে শস্য নিয়েও বাণিজ্য সম্ভব হয়েছিল। এ ছাড়া সুলতান ও অভিজাতদের প্রয়োজনে মূল্যবান জিনিসেরও বাণিজ্য চলত।
4. মধ্যযুগে ভারতে দেশের ভেতরে বাণিজ্যের ধরনগুলি কেমন ছিল তা লেখো।
উত্তর: মধ্যযুগে ভারতে দেশের ভেতরে বাণিজ্যের ধরনগুলি ছিল-
[a] বাণিজ্যের দুটি ভাগ: মধ্যযুগে ভারতে দেশের ভেতরে বাণিজ্য ছিল দু-ধরনের। গ্রাম ও শহরের বাণিজ্য এবং দুটি শহরের মধ্যেকার বাণিজ্য। [1] গ্রাম ও শহরের বাণিজ্য: শহরের অধিবাসীদের প্রয়োজন মেটাতে মধ্যযুগে গ্রাম থেকে শহরে নানা কমদামি জিনিস রপ্তানি করা হত। সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল নানা রকমের খাদ্যশস্য, ভোজা তেল, ঘি, আনাজ, তেল, নুন প্রভৃতি। [1] শহর থেকে শহরে বাণিজ্য: এক শহর থেকে আর-এক শহরে রপ্তানি করা হত দামি শৌখিন জিনিসপত্র। সুলতানি যুগের রাজধানীতে আমদানি করা হত মদ, সূক্ষ্ম মসলিন বস্ত্র প্রভৃতি। এ যুগে বাংলা, করমণ্ডল ও গুজরাটের সুতি এবং রেশমের কাপড়ের চাহিদা ছিল সর্বত্র।
[b] হস্তশিল্প বাণিজ্য: এ যুগের হস্তশিল্প বাণিজ্যে চলত চামড়া, কাঠ ও ধাতু দিয়ে তৈরি জিনিস, গালিচা ইত্যাদি। এসময় দিল্লিতে মিঠাইওয়ালারা কাগজের ঠোঙায় করে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে মিষ্টি বিক্রি করত।
[c] বাণিজ্যের মাধ্যম: দিল্লির সুলতানদের প্রচলিত তত্কা (ব্লপোর মুদ্রা), জিতল (তামার মুদ্রা) প্রভৃতি ছিল এ যুগের বাণিজ্যের মাধ্যম।
5. ইউরোপীয় কোম্পানিগুলির আমদানি-রপ্তানির রেখাচিত্র [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ১০৭] দেখে ওই যুগের বৈদেশিক বাণিজ্য সম্বন্ধে তোমার কী ধারণা হয়?
উত্তর: রেখাচিত্র দেখে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলির সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক আদানপ্রদানের একটি সম্পূর্ণ চিত্র পাওয়া যায়।
[a] ভারতে আমদানি করা বাণিজ্যিক পণ্য: ভারতে ইউরোপ থেকে যেসব বাণিজ্যিক পণ্য আমদানি করা হত, সেগুলি হল-ইউরোপ থেকে রুপো, পশম বস্তু, সুগন্ধি দ্রব্য প্রভৃতি। ইউরোপে আবার রুপো আমদানি করা হত আমেরিকা থেকে। এ ছাড়া পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে ভারতে আমদানি করা হত মশলা, টিন ও তামা।
[b] ভারতের রপ্তানি দ্রব্য: ভারত থেকে পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় রপ্তানি করা হত সুতিবস্ত্র ও আফিম। ইউরোপে রপ্তানি করা হত গোলমরিচ, নীল, সোরা, সুতিবায়, কাঁচা রেশম, রেশম বা প্রভৃতি।
কল্পনা করে লেখো (১০০-১৫০টি শব্দের মধ্যে):
1. তুমি যদি সুলতানি আমলে দিল্লির একজন বাসিন্দা ২০ তাহলে কী কী ভাবে তুমি দৈনন্দিন প্রয়োজনে জল পেতে পার।
উত্তর: সুলতানি আমলে দিল্লির একজন বাসিন্দা হিসেবে আমি জল পেতে পারতাম নিম্নলিখিত উপায়ে-(a) গুলতানরা জনসাধারণের জন্য জলাধার বা 'হৌজ' খনন করতেন। সেগুলি থেকে প্রয়োজনীয় জল পাওয়া যেত। (b) সুলতান ইলতুৎমিশ একটি আটকোণা জলাধার খনন করেছিলেন, যা 'তৌজই সুলতানি' নামে পরিচিত। এই জলাধার থেকে জল পাওয়া যেত।
[c] পরবর্তীকালে আলাউদ্দিন খলজি 'হৌজ-ই আলাই' নামে আরও বড়ো চারকোণা জলাধার খনন করেন। এটি ছিল এসময়ের দিল্লিবাসীর জলের অন্যতম প্রধান উৎস। [d] সুলতান গিয়াসউদ্দিন তুঘলক তুঘলকাবাদে যে জলাশয়টি তৈরি করেন সেখান থেকেও প্রয়োজনীয় জল পেতাম। (e) সুলতান ফিরোজ শাহ শহরে জল নিয়ে আসার জন্য খাল কেটেছিলেন। এই খাল থেকেও জল পাওয়া যেত। এ ছাড়া সাধারণ পুকুর তো ছিলই।
2. মনে করো তুমি একটি ইউরোপীয় কোম্পানির ব্যবসায়ী। ব্যাবসার প্রয়োজনে তোমাকে বোম্বাই থেকে সুরটি হয়ে আগ্রার মুঘল দরবারে যেতে হচ্ছে। তুমি কোন্ পথে যেতে পার? এঁকে দেখাও।
উত্তর: আমি ব্যাবসার প্রয়োজনে আগ্রার মুঘল দরবারে আসার জন্য যে পথ নিতাম তা হল-বোম্বাই আহমেদাবাদ আজমের আগ্রা।
3. খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতকের গোড়ায় বঙ্গোপসাগরে ভাগীরথীর মোহানা থেকে তুমি ক্রমাগত উত্তর দিকে যাচ্ছ। পথে তুমি কোথায় কোথায় ইউরোপীয় কুঠি দেখতে পাবে, তা মানচিত্রের সাহায্যে দেখাও।
উত্তর: আমি যেসব ইউরোপীয় কুঠি দেখতে পাব, সেগুলি হল-কলকাতা, শ্রীরামপুর ও চন্দননগর।
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর মান 1 সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো:
1. 'শহর' শব্দটি এসেছে- (ইংরেজি শব্দ থেকে। পোর্তুগিজ শব্দ থেকে/ফরাসি শব্দ থেকে/ফারসি শব্দ থেকে) [শ্রীরামকৃষ্ণ শিক্ষালয়]
2. ভারতীয় সুলতানদের রাজধানী ছিল- (দিল্লি/লখনউ/ আগ্রা/লাহোর)
3. ভৌগোলিকভাবে দিল্লি নিম্নলিখিত পর্বতটির সন্নিকটে অবস্থিত- (হিমালয়/বিন্ধ্য/আরাবল্লি/ আন্দিজ)
4. 'দিল্লি' নামটি প্রথম জানা যায়- (খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে/খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকে/খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতকে/খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতকে)
5. কুতুবউদ্দিন আইবক যাঁর সেনাপতি ছিলেন তিনি হলেন- (চেঙ্গিস খান/তৈমুর, লঙ/মহম্মদ ঘুরি/ বলবন)
6. আজ পর্যন্ত দিল্লিতে যে কয়টি নাগরিক বসতির চিহ্ন পাওয়া গেছে তা হল- (২টি/৫টি/৭টি/৮টি)
7. শাহ জাহান নির্মিত নগরীটি হল- (গাজিয়াবাদ/ ফৈজাবাদ/ শাহজাহানাবাদ/তুঘলকাবাদ)
৪. সিরি ছিল একটি- (কেল্লা শহর/ধর্মীয় স্থান/ বাণিজ্যিক শহর/রাজধানী)
9. সুলতান ইলতুৎমিশের আমলে দিল্লি শহর গড়ে ওঠার স্বদর বর্ণনা দিয়েছেন- (ইসামি/ইবন বতুতা/আমির/খসরু/ফৈজী)
10. কিলা রাই পিথোরার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন- (রানা প্রতাপ সিংহ/রানা যশোবন্ত সিংহ/পৃথ্বীরাজ চৌহান/উদয় সিংহ)
11. শাহজাহানাবাদ শহরটি নির্মিত হয়েছিল আনুমানিক (১৬৩৫ খ্রিস্টাব্দে/১৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে/১৬৪২ খ্রিস্টাব্দে/১৬৩০ খ্রিস্টাব্দে)
12. সুলতান গিয়াসউদ্দিন তুঘলক মারা যান- (শামিয়ানাসুদ্ধ একটি মঞ্চ থেকে পড়ে গিয়ে/হজ করতে গিয়ে/যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধ করার সময়ে/ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়ে)
13. 'হৌজ' কথাটির অর্থ হল- (ধর্মীয় আরাধনা/পুকুর/ বসতি/ধাবা)
14. আলাউদ্দিন খলজি খনন করেন- (হৌজ/হৌজ-ই শামসি/ হৌজ-ই আলাই/খাল)
15. হৌজ-ই শামসি খনন করেন- (ইবন বতুতা/ ইলতুৎমিশ/আলাউদ্দিন খলজি/বলবন) [রঘুনাথগঞ্জ গার্লস হাই স্কুল]
16. সুলতানি শাসনকালে সুলতানেরা তাঁদের শাসনকেন্দ্র পরিবর্তন করেছিলেন মোেট- (৭ বার/১১ বার/১৫ বার/১৩ বার)
17. সিকান্দর লোদি আগ্রা শহরটি প্রতিষ্ঠা করেন- (১৫০২ খ্রিস্টাব্দে/১৫০৫ খ্রিস্টাব্দে/১৫০৬ খ্রিস্টাব্দে /১৫০৪ খ্রিস্টাব্দে)
18. কিলা-ই কুহনা-র অপর নাম- (পুরোনো কেল্লা/ লালকেল্লা / সোনার কেল্লা/চারমিনার)
19. আগ্রা ছিল একটি-(বাণিজ্যকেন্দ্র/ধর্মীয় শহর/দুর্গ শহর/রাজধানী)
20. আগ্রা থেকে আকবর মুঘল শাসনকার্য পরিচালনা করতে শুরু করেন- (১৫৯৪ খ্রিস্টাব্দে/১৫৯৫ খ্রিস্টাব্দে/১৫৯৬ খ্রিস্টাব্দে/১৬০০ খ্রিস্টাব্দে)
21. লালকেল্লার আয়তন ছিল আগ্রা দুর্গের আয়তনের- (দ্বিগুণ/তিনগুণ/চতুর্গুণ/পাঁচগুণ)
22. শাহজাহানাবাদের প্রধান রাজপথ ছিল- (দুটি/তিনটি/ পাঁচটি/চারটি)
23. জিতল হল সুলতানি আমলে প্রচলিত- (স্বর্ণমুদ্রা/ রৌপ্যমুদ্রা/তাম্রমুদ্রা/ব্রোঞ্জ মুদ্রা)
24. 'হোন' ছিল বিজয়নগর সাম্রাজ্যে প্রচলিত- (স্বর্ণমুদ্রা/ রৌপ্যমুদ্রা/তাম্রমুদ্রা/সীসার মুদ্রা)
25. মুঘল আমলে ভারতের প্রধান বন্দর ছিল- (ব্রোচ/ক্যাম্বে/ সুরাট/কালিকট)
26. 'করওয়ানি' ছিল একপ্রকারー (সরাফ/দালাল/ বণিক/ব্যাপারী)
27. হুন্ডি চালু করেছিল- (সরাফরা/বণিকরা/দালালরা/ ব্যাপারীরা)
28. ফাদার মনসেরাট ছিলেন একজন- (ইংরেজ/ ওলন্দাজ/পোর্তুগিজ/দিনেমার)
29. ভাস্কো দা গামা কোথাকার নাবিক ছিলেন?- (পোর্তুগাল/স্পেন/ইংল্যান্ড/হল্যান্ড) [মানভূম ভিক্টোরিয়া ইন্সটিটিউশন]
30. ডিউক অফ আলবুকার্ক যে স্থানে পোর্তুগিজ প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সেটি হল- (ব্রোচ/সুরাট/গোয়া/ দমন)
31. ইংরেজ বণিকদের প্রথম বাণিজ্যকুঠি অবস্থিত ছিল- (কলকাতায়/সুরাটে/মসুলিপটনমে/ আগ্রাতে)
32. স্যার টমাস রো এসেছিলেন মুঘল সম্রাট (জাহাঙ্গিরের আমলে/শাহ জাহানের আমলে/ ঔরঙ্গজেবের আমলে/ আকবরের আমলে)
33. দিল্লি শহর গড়ে ওঠার ভিত্তি ছিল- (গঙ্গা নদী/যমুনা নদী/ব্রহ্মপুত্র নদ/সিন্ধু নদ)
উত্তর:1. ফারসি শব্দ থেকে 2. দিল্লি 3. আরাবল্লি 4. খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে 5. মহম্মদ ঘুরি 6. ৭টি 7. শাহজাহানাবাদ ৪. কেল্লা শহর 9. ইসামি 10. পৃথ্বীরাজ চৌহান 11. ১৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে 12. শামিয়ানাসুদ্ধ একটি মঞ্চ থেকে পড়ে গিয়ে 13. পুকুর 14. হৌজ-ই আলাই 15. ইলতুৎমিশ 16. ১১ বার17. ১৫০৫ খ্রিস্টাব্দে 18. পুরোনো কেল্লা 19. দুর্গ শহর 20. ১৫৯৬ খ্রিস্টাব্দে 21. দ্বিগুণ 22. দুটি 23. তাম্রমুদ্রা 24. স্বর্ণমুদ্রা 25. সুরাট 26. বণিক 27. সরাফরা 28. পোর্তুগিজ 29. পোর্তুগাল 30. গোয়া 31. মসুলিপটনমে 32. জাহাঙ্গিরের আমলে 33. যমুনা নদী।
শূন্যস্থান পূরণ করো:
1. 'নগর' শব্দটি __শব্দ থেকে এসেছে।
2. ফতেহপুর সিকরি ছিল আকবরের __।
3. দিল্লি __নদীবিধৌত সমতলে অবস্থিত।
4.__ রাজপুতরা দ্বাদশ শতকে দিল্লি দখল করে নেয়।
5. কিলা রাই পিথোরা__ ছিল শাসকদের শহর।
6. সুলতানি আমলের প্রথম দিল্লিকে আমরা__ নামেও অভিহিত করতে পারি।
7. গিয়াসপুর অবস্থিত ছিল__নদীর পাড়ে।
৪. সুলতান আলাউদ্দিন খলজি__ থেকে রক্ষা পেতে সিরি-তে তুলেছিলেন। আক্রমণের হাত কেল্লা শহর গড়ে
9. ফিরোজাবাদ নির্মাণ করেছিলেন __।
10. শাহজাহানাবাদের নির্মাতা ছিলেন __।
11. দিল্লি হয়ে ওঠে__ সাধকদের অন্যতম পীঠস্থান।
12. 'কোটলা' কথার অর্থ হল __।
13. দিল্লি শহরের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল__ ধরনের বসতি।
14. 'কসবা' কথাটির অর্থ হল__।
15. --এর আমলে দিল্লি ও দৌলতাবাদের মধ্যে সংযোগকারী পথ নির্মিত হয়।
16. গঙ্গা ও যমুনা নদীর সঙ্গমস্থলে নির্মিত হয়েছিল__ দুর্গ।
17. লালকেল্লা নির্মাণ করতে খরচ হয়েছিল__ টাকা। লক্ষ
18.__ খ্রিস্টাব্দে শাহ জাহান আগ্রা থেকে শাহজাহানাবাদে চলে আসেন।
19. কিলা মুবারক লাল রঙের__ পাথরে নির্মিত।
20. __সোনা, রুপো ও তাম্র এই তিন রকমের মুদ্রা চালু করেন।
21. ভাস্কো দা গামা ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতবর্ষের__বন্দরে এসেছিলেন।
২২. ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে লন্ডনে গড়ে উঠেছিল__ কোম্পানি।
23. --এর চেষ্টায় আগ্রা, পাটনা, বুরহানপুরে ইংরেজ বাণিজ্যকুঠি স্থাপিত হয়েছিল।
24. 'দাদন' কথাটির অর্থ হল__।
25. ডাচরা বাংলা ভাষায় নামেও__ পরিচিত।
26. 'ওলন্দাজ' কথাটি এসেছে পোর্তুগিজ শব্দ__থেকে।
উত্তর:1. সংস্কৃত 2. রাজধানী 3. যমুনা 4. চৌহান 5. রাজপুত 6. কুতুব দিল্লি 7. যমুনা ৪. মোঙ্গল 9. ফিরোজ শাহ তুঘলক 10. শাহ জাহান 11. সুফি 12. দুর্গ 13. মিশ্র 14. শহরতলি 15. মহম্মদ বিন তুঘলক 16. এলাহাবাদ 17. ৯১ 18. 1688 19. বেলে • 20. শেরশাহ 21. কালিকট 22. ইস্ট ইন্ডিয়া 23. স্যার টমাস রো 24. অগ্রিম 25. ওলন্দাজ 26. হলান্দেজ।
ঠিক/ভুল নির্বাচন করো:
1. শহর বা নগর হল আর্থিক লেনদেন ও ব্যাবসাবাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র।
2. দিল্লি হিমালয় পর্বতের সন্নিকটে অবস্থিত ছিল।
3. দিল্লিতে খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতকে কুতুবউদ্দিন আইবক সুলতানি শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
4. কুতুবউদ্দিন আইবকের আমলে দিল্লি নির্মিত হয়েছিল তুঘলকাবাদকে কেন্দ্র করে।
5. 'শহর-ই নও' কথার অর্থ হল নতুন শহর।
6. গিয়াসউদ্দিন তুঘলক নির্মিত তুঘলকাবাদ শহরটি ছিল একটি পূর্ণ রাজধানী শহর।
7. দীন পনাহ এবং শেরগাহ হুমায়ুন ও শেরশাহ উভয়ে নির্মাণ করেছিলেন।
৪. মধ্য এশিয়ার একটি দুর্ধর্ষ জাতি ছিল মোঙ্গল জাতি।
9. গিয়াসউদ্দিন তুঘলক শেখ নাসিরউদ্দিন চিরাগকে নির্বাসনদণ্ড দিয়েছিলেন।
10. দিল্লি শহরটিতে জাতিগত বা ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে বসতি গড়ে উঠেছিল।
11. শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধি শহরে জলাভাব ও স্থানাভাবের প্রধান কারণ।
12. 'তালাও'-এর অর্থ হল জলাধার।
13. ছৌজ-ই আলাই-এর পরবর্তীকালে নামকরণ হয় হৌজ- ই খাস।
14. আকবর শস্যের অভাবে ফতেহপুর সিকরি ত্যাগ করেন।
15. ইসলামি রীতি অনুযায়ী নেহর-ই বিহিত ছিল সাম্রাজ্যের সমৃদ্ধির প্রতীক।
16. শাহজাহানাবাদ শহর নির্মাণকালে ইসলামি ও হিন্দু উভয় রীতি অনুসৃত হয়েছিল।
17. রাজপথকে বাজার নামেও অভিহিত করা হত।
18. মুঘল আমলে সর্বক্ষণ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা লেগেই থাকত।
19. শাহজাহানাবাদ রাজধানী হিসেবে দীর্ঘস্থায়ী হয়েছিল।
20. দিল্লি সুলতানদের আমলে ব্যাবসাবাণিজ্যের বিস্তার ঘটেনি।
21. দাম ছিল একপ্রকার তাম্র মুদ্রা।
22. সরাফরা আজকের ব্যাংকের মতো টাকা বিনিময়ের কাজ করত।
23. মধ্যযুগের ভারতে যুদ্ধযাত্রাকে কেন্দ্র করেও খাদ্যদ্রব্যের বাণিজ্য চলত।
24. কালিকট বন্দরটি বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত ছিল।
25. শাহ জাহান ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দে পোর্তুগিজদের হুগলি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
উত্তর:1. ঠিক 6. ভুল 11. ঠিক 16. ঠিক 21. ঠিক
2. ভুল 7. ঠিক 12. ঠিক 17. ঠিক 22. ঠিক
3. ঠিক ৪. ঠিক 13. ঠিক 18. ভুল 23. ঠিক
4. ভুল 9. ভুল 14. ভুল 19. ঠিক 24. ভুল
5. ঠিক 10. ভুল 15. ঠিক 20. ভুল 25. ঠিক।
বেমানান শব্দটি খুঁজে বের করো:
1. হৌজ, তালাও, জলাধার, শহর।
2. কিলা রাই পিথোরা, আগ্রা, সিরি, কিলোঘড়ি। [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
3. গিয়াসউদ্দিন তুঘলক, মহম্মদ বিন তুঘলক, হুমায়ুন, নিজামউদ্দিন আউলিয়া।
4. মৌর্য, গুপ্ত, চোল, দিল্লি সুলতানি।
5. কসবা, হাভেলি, মকান, কোঠি।
উত্তর:1. শহর
2. কিলোঘড়ি 3. নিজামউদ্দিন আউলিয়া
4. দিল্লি সুলতানি 5.কসবা ।
বিবৃতির সাথে ব্যাখ্যা মেলাও:
1. বিবৃতি: কুতুবউদ্দিন আইবকের আমলে দিল্লি শহর নির্মিত হয়েছিল- ব্যাখ্যা-১: রাজপুত শাসকদের শহর কিলা রাই পিথোরাকে কেন্দ্র করে। ব্যাখ্যা-২: কিলোঘড়ি প্রাসাদের গুরুত্ব উপলব্ধি করার ফলে। ব্যাখ্যা-৩: দিল্লি সমুদ্রবাণিজ্যে অত্যন্ত সমৃদ্ধ ছিল বলে।
2. বিবৃতি: খ্রিস্টীয় চতুর্দশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে দিল্লি শহর অনেকাংশে তার মর্যাদা হারায় কারণ- ব্যাখ্যা-১: দিল্লি সেই সময় মোঙ্গল আক্রমণে বিপর্যন্ত হয়ে পড়েছিল। ব্যাখ্যা-২: দিল্লি ভয়ংকর প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়েছিল। ব্যাখ্যা-৩: এইসময় ফিরোজ শাহ তুঘলক ফিরোজাবাদ শহর গড়ে তুলেছিলেন।
3. বিবৃতি: বাদশাহ শাহ জাহান শাহজাহানাবাদে তাঁর রাজধানী গড়ে তুলেছিলেন কারণ- ব্যাখ্যা-১: দিল্লিতে সেই সময় মহামারির আবির্ভাব ঘটেছিল। ব্যাখ্যা-২: দিল্লি সেই সময় ধবংসাবশেষে পরিপত হয়েছিল। ব্যাখ্যা-৩: তিনি এক নতুন এলাকায় শহর পত্তন করে সার্বভৌম শাসক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।
4. বিবৃতি: মধ্যযুগের সকল শাসকই ভারতবর্ষে ঘোড়া আমদানিতে উৎসাহ দিতেন কারণ- ব্যাখ্যা-১: ঘোড়া ছিল যুদ্ধক্ষেত্রে সাফল্য লাভের অন্যতম শর্ত। ব্যাখ্যা-২: ভারতবর্ষে ভালো মানের ঘোড়া জন্মাতো না। ব্যাখ্যা-৩: তাঁরা হাতির পরিবর্তে ঘোড়াকে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারে উৎসাহী ছিলেন।
5. বিবৃতি: খ্রিস্টীয় সপ্তদশ শতকে ইউরোপে বাণিজ্যভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে উঠলেও ভারতে তখনও কৃষিই ছিল অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি, কারণ ব্যাখ্যা-১: ভারতবাসী ছিল শিল্পবিমুখ। ব্যাখ্যা-২: মুঘল সম্রাটরা বাণিজ্যে ততটা উৎসাহী ছিলেন না।
ব্যাখ্যা-৩: ভারতবাসী কৃষিকাজকেই সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব দিত।
উত্তর 3. ব্যাখ্যা-৩ 4. ব্যাখ্যা-২ 1. ব্যাখ্যা-১ 2. ব্যাখ্যা-৩ 5. ব্যাখ্যা-২
একটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. মুঘল সম্রাট আকবর কোন্ শহর গড়ে তুলেছিলেন?
উত্তর: মুঘল সম্রাট আকবর ফতেহপুর সিকরি গড়ে তুলেছিলেন।
2. কোন্ নদী দিল্লি নগরীর পূর্বদিকের প্রাকৃতিক সীমানা রূপে চিহ্নিত?
উত্তর: যমুনা নদী দিল্লি নগরীর পূর্বদিকের প্রাকৃতিক সীমানা রূপে চিহ্নিত।
3. মহাভারতের কোন্ শহরের সঙ্গে অনেকে আধুনিক দিল্লির মিল খুঁজে পান?
উত্তর: মহাভারতের ইন্দ্রপ্রস্থ শহরের সঙ্গে অনেকে আধুনিক দিল্লির মিল খুঁজে পান।
4. কোন্ শাসকদের বংশধরের আমলে খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে প্রথম দিল্লির নাম পাওয়া যায়?
উত্তর: মৌর্য শাসকদের বংশধরের আমলে খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে প্রথম দিল্লির নাম পাওয়া যায়।
5. দিল্লিতে সুলতানি শাসনের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন? কিভাজ [সাঁতরাগাছি কেদারনাথ ইন্সটিটিউশন]
উত্তর: দিল্লিতে সুলতানি শাসনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কুতুবউদ্দিন আইবকাশীনা
6. কুতুবউদ্দিন আইবক কোন্ জায়গাকে কেন্দ্র করে দিল্লি নগরী নির্মাণ করেছিলেন?
উত্তর: কুতুবউদ্দিন আইবক কিলা রাই পিথোরাকে কেন্দ্র করে দিল্লি নগরী নির্মাণ করেছিলেন।
7. গিয়াসউদ্দিন বলবন কোন্ শহর নির্মাণ করেছিলেন?
উত্তর: গিয়াসউদ্দিন বলবন গিয়াসপুর শহর নির্মাণ করেছিলেন।
৪. কিলোঘড়ি প্রাসাদ কে তৈরি করেন? [সাঁতরাগাছি কেদারনাথ ইন্সটিটিউশন]
উত্তর: কিলোঘড়ি প্রাসাদ তৈরি করেন বলবনের পৌত্র কায়কোবাদ।
9. জালালউদ্দিন খলজির আমলে কোন্ প্রাসাদকে কেন্দ্র করে শহর-ই নও তৈরি হয়েছিল?
উত্তর: জালালউদ্দিন খলজির আমলে কিলোঘড়ি প্রাসাদকে কেন্দ্র করে শহর-ই নও তৈরি হয়েছিল।
10. জাহানপনাহ শহরটির প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তর: জাহানপনাহ শহরটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন মহম্মদ বিন তুঘলক।
11. ফিরোজ শাহ তুঘলক নির্মিত শহরটির নাম কী?
উত্তর: ফিরোজ শাহ তুঘলক নির্মিত শহরটির নাম হল ফিরোজ শাহ কোটলা।
12. ইরাকের কোন শহরের দুরবস্থার ফলে ভারতের দিল্লির গুরুত্ব অনেকখানি বৃদ্ধি পায়?
উত্তর: ইরাকের বাগদাদ শহরের দুরবস্থার ফলে ভারতের দিল্লির গুরুত্ব অনেকখানি বৃদ্ধি পায়।
13. একজন বিখ্যাত সুফি সাধকের নাম লেখো।
উত্তর: একজন বিখ্যাত সুফি সাধকের নাম হল শেখ নিজামউদ্দিন আউলিয়া।
14. সুলতান গিয়াসউদ্দিন তুঘলক কোন্ বিখ্যাত সুফি সাধককে নির্বাসিত করেছিলেন?
উত্তর: সুলতান গিয়াসউদ্দিন তুঘলক বিখ্যাত সুফি সাধক শেখ নিজামউদ্দিন আউলিয়াকে নির্বাসিত করেছিলেন।
15. কোন্ সুলতান দিল্লিতে শহর পত্তনের ধাঁচটি বদলে দিয়েছিলেন?
উত্তর: সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক দিল্লিতে শহর পত্তনের ধাঁচটি বদলে দিয়েছিলেন।
16. দিল্লি শহরের প্রধান সমস্যা কী ছিল?
উত্তর: দিল্লি শহরের প্রধান সমস্যা ছিল জলের অভাব।
17. কোন্ সুলতান সেচ ব্যবস্থার পত্তন করেছিলেন?
উত্তর: সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক সেচ ব্যবস্থার পত্তন করেছিলেন।
18. হৌজ-ই শামসির বিবরণ কোন্ পর্যটক দিয়েছেন?
উত্তর: পর্যটক ইবন বতুতা হৌজ-ই শামসির বিবরণ দিয়েছেন।
19. আগ্রা শহরটি কে তৈরি করেন? [হরেকনগর এ এম ইন্সটিটিউশন]
উত্তর: আগ্রা শহরটি তৈরি করেন সিকান্দর লোদি।
20. শেরশাহের রাজধানীর নাম কী ছিল?
উত্তর: শেরশাহের রাজধানীর নাম ছিল কিলা-ই কুহনা বা পুরোনো কেল্লা।
21. সিকরি গ্রাম কোন্ প্রসিদ্ধ সুফি সাধকের জন্য চিশতির বিখ্যাত?
উত্তর: সিকরি গ্রাম প্রসিদ্ধ সুফি সাধক শেখ সেলিম জন্য বিখ্যাত।
22. শাহ জাহানের কন্যার নাম কী?
উত্তর: শাহ জাহানের কন্যার নাম হল জাহান আরা বেগম।
23. ফতেহপুর সিকরির পরিবর্তে আকবর ১৫৮৫ খ্রিস্টাব্দে কোথায় তাঁর নতুন রাজধানী নির্মাণ করেন?
উত্তর: ফতেহপুর সিকরির পরিবর্তে আকবর খ্রিস্টাব্দে লাহোরে তাঁর নতুন রাজধানী নির্মাণ করেন। ১৫৮৫
24. 'নেহর-ই বিহিত' কথাটির আক্ষরিক অর্থ কী?
উত্তর: 'নেহর-ই বিহিন্ত' কথাটির আক্ষরিক অর্থ হল স্বর্গের খাল।
25. লালকেল্লার অপর নাম কী?
উত্তর: লালকেল্লার অপর নাম হল কিলা মুবারক।
26. জামা মসজিদের পুরো নাম কী?
উত্তর: জামা মসজিদের পুরো নাম হল মসজিদ-ই জাহান-নুমা।
27. কাকে চিরাগ-ই দিল্লি বলা হয়? [মহিষটিকারী বি এস এম হাই স্কুল]
উত্তর: শেখ নাসিরউদ্দিন চিরাগকে চিরাগ-ই দিল্লি বলা হয়।
28. কোন্ যুগে ভারতবর্ষে প্রথম চরকায় সুতো কেটে কাপড় বোনা শুরু হয়েছিল?
উত্তর: সুলতানি যুগে ভারতবর্ষে প্রথম চরকায় সুতো কেটে কাপড় বোনা শুরু হয়েছিল।
29. কবে ভারতে প্রথম কাগজ তৈরি করা শুরু হয়?
উত্তর: সুলতানি যুগে ভারতে প্রথম কাগজ তৈরি করা শুরু হয়।
30. 'তঙ্কা' কী?
উত্তর: 'তঙ্কা' হল সুলতানি আমলে প্রচলিত রুপার মুদ্রা।
31. 'আশরফি' কী?
উত্তর: মুঘল আমলে প্রচলিত স্বর্ণমুদ্রা হল 'আশরফি'।
32. মুঘল যুগের প্রধান মুদ্রা কী?
উত্তর: মুঘল যুগের প্রধান মুদ্রা হল রুপা দিয়ে তৈরি মুদ্রা রুপায়া।
33. বিজয়নগরের প্রধান মুদ্রা কী ছিল?
উত্তর: বিজয়নগরের প্রধান মুদ্রা ছিল 'হোন'।
34. মুঘল সম্রাট আকবরের আমলের একজন পোের্তুগিজ যাজকের নাম লেখো।
উত্তর: মুঘল সম্রাট আকবরের আমলের একজন পোর্তুগিজ যাজক হলেন ফাদার আন্তেনিও মনসেরাট।
35. মহম্মদ বিন তুঘলকের আমলে একজন বিতর্কিত সাধকের নাম লেখো।
উত্তর: মহম্মদ বিন তুঘলকের আমলে একজন বিতর্কিত সাধক হলেন চিশতি সুফি সাধক গেসু দরাজ।
36. কত খ্রিস্টাব্দে ভাস্কো দা গামা ভারতে আসেন?
উত্তর: ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে ভাস্কো দা গামা ভারতে আসেন।
37. ভাস্কো দা গামার পরে ভারতবর্ষে কোন্ পোের্তুগিজ নৌ- সেনাপতি পদার্পণ করেছিলেন?
উত্তর: ভাস্কো দা গামার পরে পোর্তুগিজ নৌ-সেনাপতি ডিউক অফ আলবুকার্ক ভারতবর্ষে পদার্পণ করেছিলেন।
38. কত খ্রিস্টাব্দে ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি স্থাপিত হয়েছিল?
উত্তর: ১৬৬৪ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি স্থাপিত হয়েছিল।
39. স্যার টমাস রো কার দূত ছিলেন?
উত্তর: ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম জেমসের দূত ছিলেন স্যার টমাস রো।
40. শাহ জাহান কেন পোর্তুগিজদের হুগলি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন? [ইছাপুর গার্লস হাই স্কুল]
উত্তর: দাস ব্যাবসা করার অপরাধে শাহ জাহান পোর্তুগিজদের হুগলি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
41. ডাচ কাদের বলা হয়?
উত্তর: নেদারল্যান্ডস দেশের অধিবাসীদের ডাচ বলা হয়।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর দু/তিনটি বাক্যে উত্তর দাও:
[1] দিল্লি আরাবল্লি পর্বতের সন্নিকটে অবস্থিত হওয়া কী সুবিধা হয়েছিল।
উত্তর: ডৌগোলিকভাবে আরাবল্লি শৈলশিরার একটি প্রান্তে দিল্লির অবস্থান। দিল্লি আরাবল্লি পর্বতের সন্নিকটে অবস্থিত মাল 2 হওয়ায় দিল্লির শাসকদের পক্ষে জমির চাল অনুযায়ী এই পর্বতের পাথর দিয়ে সুরক্ষিত দুর্গ নির্মাণ করা সহজ হয়েছিল।
[2] মধ্যযুগে দিল্লির বিকাশের পর্যায় উল্লেখ করো।
উত্তর: মধ্যযুগে দিল্লি শহরের উৎপত্তি ও বিকাশের দুটি পর্যায় ছিল। একটি হল খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ-চতুর্দশ শতকের দিল্লি, অপরটি হল সপ্তদশ শতকে মুঘল সম্রাট শাহ জাহানের তৈরি শাহজাহানাবাদ।
[3] কে, কেন সিরি নামক কেল্লা শহর গড়ে তুলেছিলেন?
উত্তর: সুলতান আলাউদ্দিন খলজি সিরি নামক একটি কেল্লা শহর গড়ে তুলেছিলেন। মোঙ্গল আক্রমণের হাত থকে নাগরিকদের সুরক্ষার্থে তিনি সিরিতে এই কেল্লা শহর গড়ে তুলেছিলেন।
[4] আজ পর্যন্ত আবিষ্কৃত মধ্যযুগের দিল্লির সাতটি নাগরিক বসতির নাম উল্লেখ করো।
উত্তর: আজ পর্যন্ত মধ্যযুগের দিল্লির সাতটি নাগরিক বসতির চিহ্ন পাওয়া গেছে। এই নাগরিক বসতিগুলির নাম হল যথাক্রমে-কিলা রাই পিঘোরা, সিরি, তুঘলকাবাদ, জাহানপনাহ, ফিরোজ শাহ কোটলা, পুরানো কেল্লা এবং শাহজাহানাবাদ।
[5] দিল্লি কেন 'হজরত-ই দিল্লি' নামেও পরিচিত হয়ে ওঠে?
উত্তর: মধ্যযুগে দিল্লিই হয়ে উঠেছিল সুফি সাধকদের অন্যতম পীঠস্থান। তাই দিল্লি 'হজরত-ই দিল্লি' নামেও পরিচিত হতে শুরু করে।
[6] রাজধানীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা কয়েকটি সাম্রাজ্যের নাম লেখো।
উত্তর: বিশ্বের বড়ো বড়ো সাম্রাজ্যগুলি সাধারণত কোনো একটি রাজবংশের দ্বারা পরিচিত হলেও ব্যতিক্রম হিসেবে রাজধানীকে কেন্দ্র করেও সাম্রাজ্য গড়ে উঠেছিল। রাজধানীকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এমন কয়েকটি সাম্রাজ্য হল ভারতের দিল্লি সুলতানি সাম্রাজ্য, বিজয়নগর সাম্রাজ্য এবং ইউরোপের রোম সাম্রাজ্য ইত্যাদি।
[7] মুঘল সাম্রাজ্যের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তিকেন্দ্রের নাম লেখো।
উত্তর: ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে পানিপতের প্রথম যুদ্ধে বাবর ইব্রাহিম লোদিকে হারিয়ে ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। মুঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ভারতবর্ষের কয়েকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শক্তিকেন্দ্রের নাম হল-আগ্রা, ফতেহপুর সিকরি, লাহোর, এলাহাবাদ ইত্যাদি।
[৪] মুঘল সাম্রাজ্যের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দুর্গের নাম লেখো।
উত্তর: শাসনকার্যের সুবিধার জন্য মুঘল সম্রাটরা বহু দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। মুঘল সাম্রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দুর্গগুলি হল-আগ্রা দুর্গ, এলাহাবাদ দুর্গ, আজমের দুর্গ, আটক দুর্গ, রোটাস দুর্গ ইত্যাদি। নগর, বণিক ও
[9] আকবরের আমলে কোন্ কোন্ দুর্গনগরী মুঘল সাম্রাজ্যভুক্ত হয়েছিল? উত্তর: আকবর তাঁর রাজত্বকালে বস্তু দুর্গনগরী মুঘল সাম্রাজ্যভুক্ত করে তাঁর শক্তি বৃদ্ধি করেছিলেন। এগুলি হল বুন্দেলখণ্ডের প্রধান দুর্গনগরী গোয়ালিয়র, রাজপুতানার চিতোর ও রণথম্ভোর এবং দাক্ষিপাতোর আসিরগড় দুর্গ প্রভৃতি।
[10] নেহর-ই বিহিত কী? উত্তর: দিল্লির লালকেল্লা এবং শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া জলবাহী নালাগুলো নেহর-ই বিহিপ্ত নামে পরিচিত ছিল। ইসলামি রীতি অনুযায়ী এগুলিকে সাম্রাজ্যের প্রতীক ভাবা হত।
[11] শাহজাহানাবাদের মুখ্য স্থাপত্যগুলোর নাম লেখো। উত্তর: মুঘল সম্রাট শাহ জাহান তাঁর তৈরি শাহজাহানাবাদ নগরে বেশ কিছু স্থাপত্য নির্মাণ করেন। শাহজাহানাবাদের মুখ্য স্থাপত্যগুলো হল লাল রঙের বেলে পাথরে তৈরি কিলা মুবারক (লালকেল্লা) ও জামা মসজিদ।
[12] বাদশাহ শাহ জাহান কেন দিল্লির শহরের ধ্বংসাবশেষে নিজের রাজধানী গড়ে তোলেননি? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] উত্তর: বাদশাহ শাহ জাহান সুলতানদের আমলের দিল্লি শহরের ধ্বংসাবশেষকে রাজধানী হিসেবে বেছে নেননি। তিনি একটি নতুন এলাকায় শহর পত্তন করে সার্বভৌম শাসক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন।
[13] দিল্লির সুলতানি বাণিজ্যের একটি বৈশিষ্ট্য লেখো। উত্তর: দিল্লির সুলতানদের আমলে ব্যাবসাবাণিজ্যের বিস্তার ঘটেছিল। সুলতানি আমলের বাণিজ্যের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল সুলতান ও অভিজাতদের বিলাস-ব্যসনের জন্য প্রয়োজনীয় মূল্যবান জিনিসের ব্যাবসা।
[14] সুলতানি আমলে দেশের অভ্যন্তরে কী ধরনের বাণিজ্য প্রচলিত ছিল? উত্তর: সুলতানি আমলে দেশের অভ্যন্তরে মূলত দুই ধরনের বাণিজ্য প্রচলিত ছিল। প্রথমত, গ্রাম ও শহরের বাণিজ্য এবং দ্বিতীয়ত, দুটি শহরের মধ্যেকার বাণিজ্য।
[15] ব্যাবসাবাণিজ্যের সুবিধার জন্য দিল্লির সুলতানরা কয়রকম মুদ্রা চালু করেন ও কী কী? [লালগোলা এস এম গার্লস হাই স্কুল]
উত্তর: সুলতানি আমলে সুলতানরা কর আদায় এবং ব্যাবসা- বাণিজ্যের সুবিধার জন্য তঙ্কা ও জিতল নামে দু-ধরনের মুদ্রা চালু করেছিলেন। এগুলির মান ছিল যথেষ্ট ভালো।
[16] ভারত থেকে বাইরের কোন্ কোন্ দেশে কী কী পণ্য রপ্তানি হত?
উত্তর: ভারতের বাইরের নানা দেশে ভারতে তৈরি জিনিসের চাহিদা ছিল। ভারত থেকে আরব সাগর, পারস্য উপসাগর, লোহিত সাগরের তীরবর্তী দেশগুলিতে প্রধানত বস্ত্র, মশলা, নীল, খাদ্যশস্য ও দাস রপ্তানি করা হত।
[17] চুক্তি কী? সাঁতরাগাছি কেদারনাথ ইন্সটিটিউশন ফর গার্লস, নসিবপুর হাই স্কুল]
উত্তর: সরাফরা চুক্তি নামে এক ধরনের কাগজ চালু করেছিল, যার মাধ্যমে বণিকেরা সরাফকে টাকা জমা দিয়ে সেই কাগজ কিনে অন্য জায়গায় প্রয়োজনমতো ভাঙিয়ে নিত। এতে বণিকদের খুব সুবিধা হয়েছিল।
[18] মধ্যযুগের বাণিজ্যে কোন্ ভারতীয় বণিকরা সুনাম অর্জন করেছিল?
উত্তর: মধ্যযুগের ভারতবর্ষে গুজরাটি, মালাবারি, তামিল, ওড়িয়া, তেলুগু ও বাঙালি বণিকেরা সুনাম অর্জন করেছিল। এই বণিকরা ধর্মে ছিল হিন্দু, মুসলমান ও জৈন।
[19] ইউরোপীয়দের সামুদ্রিক অভিযানের উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর: খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ-ষোড়শ শতকে ইউরোপীয়রা সামুদ্রিক অভিযানে বেরিয়ে পড়েছিল। ইউরোপের বাইরের মহাদেশগুলিতে গিয়ে ব্যাবসাবাণিজ্য করে ধনসম্পদ আয় ছিল তাদের উদ্দেশ্য।
[20] সামুদ্রিক অভিযানে কোন্ ইউরোপীয় বণিকেরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল?
উত্তর: সামুদ্রিক অভিযানের প্রথম দিকে স্পেন এবং পোর্তুগাল দেশের অধিবাসীরা খুবই সক্রিয় ছিল। পরবর্তী সময়ে ইংল্যান্ড, হল্যান্ড, ফ্রান্স ইত্যাদি দেশের বণিক ও শাসকরা এই ব্যাপারে উৎসাহী হয়ে উঠেছিল।
[21] পোর্তুগিজ বণিকরা ভারতে আসার ব্যাপারে আগ্রহী ছিল কেন?
উত্তর: ইউরোপ থেকে জলপথে ভারতে আসার জন্য পোর্তুগিজরা প্রথম থেকেই উৎসাহিত ছিল। তাদের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ভারত ও দক্ষিশ-পূর্ব এশিয়ার বাণিজ্যে অংশগ্রহণ করে ভারতের মশলা বিশেষত গোলমরিচ পোর্তুগালে আমদানি করা।
[22] ভারত থেকে ইউরোপে রপ্তানিকৃত পণ্যগুলির নাম লেখো।
উত্তর: ভারত থেকে খ্রিস্টীয় ষোড়শ-সপ্তদশ শতকে বহু পণ্য ইউরোপে রপ্তানি হত। সেগুলি হল-গোলমরিচ, নীল, সোরা, সুতিবস্ত্র, কাঁচা রেশম, রেশমবস্ত্র ইত্যাদি।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর মান 3 চার/পাঁচটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. সুলতানি আমলে শহরের জনবসতি কেমন ছিল?
উত্তর: সুলতানি আমলে দিল্লি শহরের জনবসতি ছিল মিশ্র প্রকৃতির। এখানে কোনো ধর্ম বা জাতপাতের ভিত্তিতে এই বসতি গড়ে ওঠেনি। সাধারণত একই পেশার কারিগররা জাতিধর্মবর্ণনির্বিশেষে এক মহল্লায় থাকতেন। শহরের আশেপাশে গড়ে উঠেছিল ছোটো শহরের ন্যায় জনবসতি। এগুলিকে বলা হত 'কসবা' বা শহরতলি। অনেকে এগুলিকে ছোটো শহরও বলতেন। শহরগুলি পাঁচিল দিয়ে সুরক্ষিত থাকলেও বাসাগুলি তেমন ছিল না। গ্রাম ও শহরতলির মধ্যে কোনো নির্দিষ্ট সীমানা ছিল না। দিল্লি শহরের প্রধান সমস্যা ছিল জলের অভাব। তাই নানাভাবে সুলতানরা শহরে জলের ব্যবস্থা করতেন। তবে ক্রমাগত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে শহরগুলিতে জলাভাব প্রকট হয়।
2. সুলতানি ও মুঘল আমলের মুদ্রা ব্যবস্থা কেমন ছিল?
উত্তর: সুলতানি ও মুঘল আমলের মুদ্রা ব্যবস্থা-
[a] সুলতানি আমলের মুদ্রা: সুলতানি আমলে সোনা, রুপো ও তামার মুদ্রার প্রচলন ছিল। সোনার মুদ্রা 'মোহর', রুপার মুদ্রা 'তঙ্কা' ও তামার মুদ্রাকে বলা হত 'জিতল'। সুলতানি আমলের শেষদিকে উত্তর ভারতে এক ধরনের তামা ও রুপো মেশানো মুদ্রার প্রচলন ছিল। এই ধরনের মুদ্রা ব্যবস্থা পরবর্তীকালে মুঘলরাও অনুকরণ করেছিল।
[b] মুঘল আমলের মুদ্রা: মুঘল আমলে সোনার মুদ্রাকে বলা হত 'মোহর' বা 'আশরফি'। তবে এ যুগে বহুল প্রচলিত মুদ্রা হল রুপোর মুদ্রা, যাকে বলা হত 'রূপায়া'। এই মুদ্রা একদিকে বাণিজ্যিক বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে ও অন্যদিকে কর প্রদানে ব্যবহৃত হত। এ ছাড়া 'দাম' নামে পরিচিত তামার মুদ্রারও প্রচলন ছিল।
3. শাহজাহানাবাদের নাগরিক বসতির প্রকৃতি বিশ্লেষণ করো। [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন]
উত্তর: শাহজাহানাবাদের নাগরিক বসতি ছিল মিশ্র প্রকৃতির। রাজপুত্র ও উচ্চপদস্থ আমিররা সুন্দর বাগানবাড়িতে থাকত। ধনী বনিকরা টালি দিয়ে সাজানো ইট ও পাথরের বাড়িতে থাকত। সাধারণ ব্যবসায়ীরা থাকত নিজের দোকানের ওপরে বা পিছনের দিকের ঘরে। বড়ো বড়ো বাড়ির আশপাশে মাটি ও খড় দিয়ে তৈরি ছোটো ছোটো কুঁড়ে ঘরগুলিতে থাকত সাধারণ সৈনিক, দাসদাসী, কারিগর প্রমুখ মানুষজন। সবচেয়ে বড়ো ও সুন্দর বাড়িগুলিকে বলা হত হাভেলি। এর চেয়ে নীচু স্তরের বাড়িকে মকান বা কোঠি এবং সবচেয়ে ছোটো ঘরকে বলা হত কোঠরি।
দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর মান 5
আট/দশটি বাক্যে উত্তর দাও:
1. সুলতানি আমলে দিল্লির গুরুত্ব কতখানি ছিল?
উত্তর: কুতুবউদ্দিন আইবকের আমলে দিল্লি শহরটি তৈরি হয়েছিল কিলা রাই পিথোরাকে কেন্দ্র করে। এই শহরটিকে বলা হত কুতুব দিল্লি। গিয়াসউদ্দিন বলবন গিয়াসপুরে একটি নতুন শহর তৈরি করেন। কায়কোবাদ যমুনার তীরে কিলোঘড়ি প্রাসাদ তৈরি করেন। জালালউদ্দিন খলজির আমলে একে ঘিরেই নতুন শহর 'শহর-ই নও' তৈরি হয়েছিল। এই শহরকে কেন্দ্র করে উচ্চশ্রেণির লোকেদের কর্মকাণ্ড চলতে থাকে। সুলতান আলাউদ্দিন খলজি সিরিতে এক কেল্লা শহর বানান। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল মোঙ্গল আক্রমণের হাত থেকে নগরকে রক্ষা করা। গিয়াসউদ্দিন তুঘলক পুরোনো শহর থেকে দূরে 'তুঘলকাবাদ' নামে একটি শহর তৈরি করেন। মহম্মদ বিন তুঘলক পুরোনো দিল্লি, সিরি এবং তাঁর নিজের তৈরি জাহানপনাহকে প্রাচীর দিয়ে ঘেরার চেষ্টা করেন। কিছু তা সমাপ্ত হয়নি। এত শহর গড়ে উঠলেও দিল্লি তার পুরোনো অবস্থানেই ছিল। দিল্লির গুরুত্ব কখনও কমেনি।
2. মধ্যযুগে জল সংরক্ষণ ও জল সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পর্কে লেখো।
উত্তর: জলাধার নির্মাণ এবং খাল খননের মাধ্যমে দিল্লির সুলতানেরা দিল্লি শহরে দৈনন্দিন জল সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাবার চেষ্টা করেন। সুশাসনের প্রতীক হিসেবেও জনসাধারণের জন্য সুলতানরা জলাধার খনন ও সংষ্কার করতেন। এই জলাধারকে বলা হত 'হৌজ' বা 'তালাও'। সুলতান ইলতুৎমিশ খনন করেছিলেন 'হৌজ-ই শামসি'। আলাউদ্দিন খলজি নির্মিত চারকোণা জলাধারকে বলা হত হৌজই আলাই'। এই জলাধারগুলি শুধুমাত্র মানুষের দৈনন্দিন জলের চাহিদাই মেটাত না, পাশাপাশি কৃষিকাজের জন্য জমিতে জল সরবরাহ করত। সুলতানের বিরোধীরা শহরের অধিবাসীদের বিপদে ফেলার জন্য খালগুলির ওপর বাঁধ দিয়ে জল আটকে দিত। গিয়াসউদ্দিন বলবনের আমলেও দস্যুদের ভয়ে জনসাধারণ জল আনতে তালাও পর্যন্ত যেতে পারত না। পরবর্তীকালে ফিরোজ তুঘলক বিরোধী শক্তির দেওয়া বাঁধগুলি ভেঙে দিয়ে জল সরবরাহ স্বাভাবিক করেছিলেন।
3. নগরের মুঘল সম্রাট শাহ জাহানের তৈরি শাহজাহানাবাদ বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
উত্তর: শাহজাহানাবাদ শহরের স্থাপত্যরীতিতে পারসিক ছাপ লক্ষ করা যায়। [a] শহরের চারপাশ প্রাচীর দিয়ে ঘেরা ছিল এবং প্রাচীরের গায়ে ছোটো-বড়ো দরজা ছিল। [b] বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের জন্য নানা ধরনের বাড়ি ছিল। [c] বাড়িগুলিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হতㅡ[1] বাগান বাড়ি, [ii] ইটের অথবা পাথরের বাড়ি, [m] হাভেলি, [iv] মকান ও কোঠি, [v] কোঠরি, [vi] বাংলো বাড়ি ও [vii] কুঁড়েঘর। কুঁড়েঘরগুলিতে সাধারণ সৈনিক, দাসদাসী, কারিগর প্রমুখ মানুষজন থাকত। [d] শাহজাহানাবাদ শহরের প্রধান রাজপথ ছিল দুটি। রাজপথকে বাজার বলা হত। বাজারের দুপাশে ছিল সারিবদ্ধ দোকান। [e] শাহ জাহানের তৈরি এই শাহজাহানাবাদ শহরটিকে বলা হয় রাজধানী শহর।
4. ভারত এবং ইউরোপের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে পোর্তুগিজদের অবদান সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর: খ্রিস্টীয় পঞ্চাশ-ষোড়শ শতকে ইউরোপীয়রা সামুদ্রিক অভিযানে বেরিয়ে পড়েছিল। ইউরোপ থেকে ভারতে আসার জলপথ প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন পোর্তুগিজরা। ১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দে পোর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো দা গামা ভারতে আসার জলপথ আবিষ্কার করেছিলেন। পোর্তুগালের রাজা এবং পোর্তুগিজরা ভেবেছিলেন যে, ভারত থেকে মশলা এবং অন্যান্য জিনিস কিনে ইউরোপের বাজারে বিক্রি করে প্রচুর লাড করা যাবে। ভারতের কালিকট বন্দর ছিল ইউরোপের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগের প্রধান কেন্দ্র। ভাস্কো দা গামার পর ভারতে আসেন আলবুকার্ক। পোর্তুগিজরা নিজেদের প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার জন্য অন্যান্য ইউরোপীয় শক্তিগুলিকে হঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। পোর্তুগিজদের পথ ধরেই অন্যান্য শক্তি ভারতে তাদের বাণিজ্যিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিল।
পড়ার মাঝে মজার কাজ
1. ব্যাবসাবাণিজ্যকে ঘিরে তৈরি হওয়া আর কোনো শহরের কথা তোমরা জান। দরকারে বাড়ির বড়োদের বা শিক্ষক/শিক্ষিকার সাহায্য নাও।
উত্তর: অষ্টাদশ শতকে ব্যাবসাবাণিজ্যকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল আজকের কলকাতা শহর। ১৬৯০ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বণিক জব চার্নক কলকাতা, সুতানুটি ও গোবিন্দপুর-এই তিনটি গ্রামকে নিয়ে কলকাতা শহরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন-যা ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাণিজ্যকেন্দ্র রূপে সমৃদ্ধি লাভ করেছিল।
2. ভেবে দ্যাখোতো দিল্লি শহরটি এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল কেন?
উত্তর: সুলতানি ও মুঘল আমলে দিল্লি ছিল ভারতের রাজধানী। দিল্লি ছিল একাধারে সমৃদ্ধ বাণিজ্যকেন্দ্র, সুফি সাধকদের পীঠস্থান এবং ভারতে ইসলামিক সংস্কৃতির প্রধান কেন্দ্র। দেশের রাজধানী হওয়ায় দেশ-বিদেশে দিল্লির খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল।
3. যে এলাকায় তুমি থাক সেখানকার বাজারহাট কেমন? তার সঙ্গে সুলতানি ও মুঘল আমলের দিল্লির বাজারের কী কী মিল-অমিল দেখতে পাওয়া যাবে?
উত্তর: আমি দমদম এলাকায় থাকি। এখানে সমৃদ্ধ বাজার আছে। প্রায় সব দোকানপাট স্থায়ী। খাদ্যশস্যের বাজার, বস্ত্রের বাজার, শৌখিন দ্রব্যের বাজার-সবই আছে পাশাপাশি। এখন আর অস্থায়ী হাট বসে না। ইদানীং অত্যাধুনিক শপিং মলে একই বাজার কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় পণ্য পাওয়া যায়। তবে আমাদের এলাকায় কোনো গবাদিপশুর হাট বা বাজার বসে না। কিন্তু মাংসের দোকানে মাংস সুলভে পাওয়া যায়। সুলতানি ও মুঘল আমলে সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট স্থানে হাট বসত। বাজারগুলি এখনকার মতো এত সমৃদ্ধ ছিল না। তখন শপিং মলও ছিল না।
4. ভেবে দ্যাখোতো মধ্যযুগের শহরে মাটির ওপরের জলাধারগুলি এত গুরুত্বপূর্ণ ছিল কেন? তোমার স্থানীয় অঞ্চলে পানীয় জল কীভাবে পাওয়া যায়?
উত্তর: মধ্যযুগের শহরে মাটির ওপরে জলাধারগুলি তৈরি হত। সুলতানি রাষ্ট্রের বিরোধী স্থানীয় শক্তি যাতে শহরের অধিবাসীদের বিপাকে ফেলতে না পারে তার জন্য ওপরের জলাধারগুলি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ▶ আমরা আমাদের স্থানীয় দমদম পৌরসভার অধীনে জলাধার থেকে পাইপের মাধ্যমে সরবরাহ করা জল পেয়ে থাকি।
5. পাঠ্যবইয়ের 'দেশের ভেতরের বাণিজ্য' (পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ১০১] শীর্ষক অংশে যেসব জিনিসের কথা এখানে বলা হল তার মধ্যে কোন্ কোন্ জিনিস এখনও কেনাবেচা হয়?
উত্তর: এখানে যেসব জিনিসের কথা বলা হয়েছে তার প্রায় সব অর্থাৎ খাদ্যশস্য, খাবার তেল, ঘি, আনাজ, ফল, লবণ ইত্যাদি এখনও কেনাবেচা হয়।
6. ভেবে দ্যাখোতো যে, ভারতীয় বাণিজ্যের বিরাট ও বিচিত্র জগতের মানুষজন কারা ছিল? শ্রেণিকক্ষে চারজনের দল করো। এবারে ধরো তোমাদের একজন বণিক, একজন সরাফ, একজন দালাল ও একজন ক্রেতা। জিনিস কেনাবেচা নিয়ে তোমাদের চারজনের মধ্যে কেমন কথাবার্তা হবে তা লিখে দেখাও।
উত্তর: বিরাট ও বিচিত্র জগতের মানুষজন ছিলেন—বণিক, সরাফ, দালাল ও বিমা কর্মচারীরা।
▶ জিনিস কেনাবেচা নিয়ে কথোপকথন: ধরলাম চারজন চরিত্র হল- [a] ক্রেতা-সুখরাম [b] দালাল-ভুবন [c] সরাফ-মথুরাদাস [d] বণিক-আলি
সুখরাম: এই যে ভুবন, কেমন আছো?
ভুবন: আরে সুখরামজি যে, অনেকদিন পর এলেন।
সুখরাম:তোমার কাছে একটা কাজে এসেছি। জানোই তো এই মরশুমে বেশ ভালো ধান হয়েছে। তাই ভেবেছি আলাদা কোনো ব্যবসায়ীকে আনাজ না দিয়ে আমি নিজেই বাজারে বেচব। দিল্লির বাইরেও অনেক সুযোগ আছে শুনেছি।
ভুবন: বাহ্, এ তো বেশ ভালো কথা। তা আমি কী করতে পারি বলুন?
সুখরাম: বুঝতেই পারছ এসব করতে একটু তো খরচ পড়বে। তা তোমার তো চেনাজানা আছে অনেকের সাথে। কোনো বণিককে দিয়ে যদি অল্প সুদে টাকা পাইয়ে দাও?
ভুবন: অবশ্যই! এটাই তো আমার কাজ। তা ছাড়া আপনি আমার অনেকদিনের চেনা। আমারই পরিচিত একজন বণিক আছেন, নাম আলি। তিনি আপনাকে সাহায্য করতে পারেন। চলুন তাঁর কাছে।
আলি: ভুবন যে, কেমন আছো?
ভুবন: আপনাদের দয়ায় ভালোই আছি। ইনি হচ্ছেন আমার এক পুরোনো বন্ধু সুখরাম। ব্যাবসার খাতিরে ওঁর একটু টাকা লাগবে। তা এখানে আপনার চেয়ে কম সুদে আর কে টাকা দিতে পারে বলুন। তাই আপনার কাছে নিয়ে এলুম। আলি: বাহ্ বেশ! তা মশাই কত রুপায়া লাগবে?
সুখরাম: দেখুন, প্রথমবার ব্যাবসা করছি, বুঝতে তো পারছি না, তবে হাজার পঁচিশ হলে হয়ে যাবে মনে হয়।
আলি: হাজার পঁচিশ! কী ব্যাবসা করবেন মশাই?
সুখরাম: দিল্লির বাইরের বাজারগুলোতে আমার আনাজ (চাল) বেচব।
আলি: হুম্ম্। তা দেখুন আপনি ভুবনের বন্ধু। তাই আপনাকে একশোতে দুই রুপায়া সুদে আমি টাকা ধার দিতে পারি। এর চেয়ে কমে আপনি এই বাজারে আর কোথাও পাবেন না।
ভুবন: তা তো একদম ঠিক। কী বলেন সুখরামজি?
আলি: কিন্তু টাকা পেলেই তো হবে না। আপনি যেহেতু দিল্লির বাইরে ব্যাবসা করতে যাচ্ছেন, চুন্ডি ছাড়া তো চলবে না। এই তো মথুরাদাসজি বসে আছেন (পাশে-বসা মথুরাদাসের দিকে আঙুল দেখিয়ে), ইনি একজন সরাফ। চাইলে এঁর কাছ থেকে চুন্ডি নিতে পারেন।
ভুবন: বাহ্, এ তো এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো অবস্থা। সুখরামজি আপনাকে বেশি খাটতেও হল না। সরাফও পেয়ে গেলেন একই জায়গায়।
মথুরাদাস: (সুখরামকে নমস্কার করে) নমস্কার। আপনার সব কথাই শুনেছি। আলি ভাই একদম ঠিক বলেছেন। চুন্ডি নিয়ে নিন। না হলে অনেক অসুবিধা হবে। চার সুখরাম: ঠিক আছে, তাই হবে।
ভুবন: বাহ্, বেশ ভালো। আপনাদের কাজ তো হয়ে গেল। তাহলে এবার আমার দিকটা দেখুন (আলি ও সুখরামের দিকে তাকিয়ে)?
সুখরাম:তুমি না থাকলে তো এটা হতই না ভুবন। এই নাও পাঁচ রুপায়া।
আলি: এই নাও আমার তরফ থেকেও পাঁচ রুপায়া।
ভুবন: (দুজনের কাছে থেকেই মুদ্রা নিয়ে) বাহ্ বেশ বেশ। ভগবান আপনাদের মঙ্গল করুন।
7. ৬.৩ মানচিত্রটি [পাঠ্যবই পৃষ্ঠা ১০৯] ভালো করে দ্যাখো। কোন্ কোন্ বিদেশি বণিক কোম্পানি কোথায় কোথায় ঘাঁটি তৈরি করেছিল, তার একটি তালিকা তৈরি করো।
উত্তর: তালিকাটি হল নিম্নরূপ-
বিদেশি কোম্পানি [a] পোর্তুগিজ [b] ওলন্দাজ [c] ব্রিটিশ [d] ফরাসি [e] দিনেমার
ঘাঁটি: কালিকট, গোয়া, দমন, দিউ, বেসিন, চৌল কোচিন, পুলিকট, নেগাপটনম কলকাতা, বোম্বাই, মাদ্রাজ, সুরাট, মসুলিপটনম, বিশাখাপটনম, পিপলি পন্ডিচেরি, মাহে, চন্দননগর শ্রীরামপুর।
No comments:
Post a Comment