জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি: সুলতানি ও মুঘল যুগ সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস সপ্তম অধ্যায়|class 7 7th chapter history short& brought question answer| - SM Textbook

Fresh Topics

Thursday, February 15, 2024

জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি: সুলতানি ও মুঘল যুগ সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস সপ্তম অধ্যায়|class 7 7th chapter history short& brought question answer|

 অধ্যায় 7 

জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি: সুলতানি ও মুঘল যুগ সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস সপ্তম অধ্যায়|class 7 7th chapter history short& brought question answer|




সমাধানসহ পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলি শূন্যস্থান পূরণ করো: 

1.__ (টালি এবং ইট/সিমেন্ট এবং বালি/ শ্বেতপাথর) ব্যবহার করে বাংলায় সুলতানি ও মুঘল আমলে সাধারণ লোকের বাড়ি বানানো হত।

2. কবীরের দুই পত্তির কবিতাগুলিকে বলা হয় __(ভজন/কথকথা/দোহা)। (পির/মুরিদ/বে- 

3. সুফিরা গুরুকে মনে করত__(পির/মুরিদ/বেশরা)। 

4. __(কলকাতা/নবদ্বীপ/মুর্শিদাবাদ) ছিল চৈতন্য আন্দোলনের প্রধান কেন্দ্র। 

5. __(নানক/কবীর/মীরাবাঈ) ছিলেন শ্রীকৃম্ন বা গিরিধারীর সাধিকা। 

6. দীন-ই ইলাহি-র বৈশিষ্ট্য ছিল মুঘল সম্রাট এবং তাঁর অভিজাতদের মধ্যে__ শ্রমিকের/ রাজা-প্রজার) সম্পর্ক। (গুরু-শিষ্যের/মালিক- 

7. শ্বেতপাথরে রত্ন বসিয়ে কারুকার্য করাকে বলে__ (চাহার বাগ/পিয়েত্রা দুরা/টেরাকোটা)। 

৪. মহাভারতের ফারসি অনুবাদের নাম __(হমজানামা/ তুতিনামা/রজমনামা)। 

9.__ (দসবন্ত/মীর সঈদ আলি/আবদুস সামাদ) পরিচিত ছিলেন 'শিরিনকলম' নামে। 

10. জৌনপুরি রাগ তৈরি করেন__ হোসেন শাহ শরকি/ইব্রাহিম শাহ শরকি)। (বৈজু বাওরা/ 

11. 'শ্রীকৃস্মবিজয়' কাব্যের লেখকের নাম__ (কাশীরাম দাস/কৃত্তিবাস ওঝা/মালাধর বসু)। 

12. 'পারসিক চক্র' কাজে লাগানো হত__ (জল তোলার জন্য/কামানের গোলা ছোড়ার জন্য/বাগান বানানোর জন্য)।

উত্তর:1. টালি এবং ইট 2. দোহা 3. পির 4. নবদ্বীপ 5. মীরাবাঈ 6. রাজা-প্রজার 7. পিয়েত্রা দুরা ৪. রজমনামা 9. আবদুস সামাদ 10. হোসেন শাহ শরকি 11. মালাধর বসু 12. জল তোলার জন্য।

নিম্নলিখিত বিবৃতিগুলির সঙ্গে তার নীচের কোন্ ব্যাখ্যাটি তোমার সবচেয়ে মানানসই বলে মনে হয়? 

1. বিবৃতি: নদীর ধারে শিল্পগুলি তৈরি হত। ব্যাখ্যা-১: নদীর ধারে শিল্প তৈরি করলে কর লাগত না। ব্যাখ্যা-২: সেকালে সব মানুষই নদীর ধারে থাকত। ব্যাখ্যা-৩: কাঁচামাল আমদানি ও তৈরি মাল রপ্তানির সুবিধা হত। 

2. বিবৃতি: চৈতন্য বাংলা ভাষাকেই ভক্তি প্রচারের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। ব্যাখ্যা-১: তিনি শুধু বাংলা ভাষাই জানতেন। ব্যাখ্যা-২: সেকালের বাংলার সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা ছিল বাংলা। ব্যাখ্যা-৩: ভক্তি বিষয়ক সব বই বাংলায় লেখা হয়েছিল। 

3. বিবৃতি: চিশতি সুফিরা রাজনীতিতে যোগ দিতেন না। ব্যাখ্যা-১: তাঁরা বিশ্বাস করতেন যে, রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়লে ঈশ্বর-সাধনা সম্ভব নয়।ব্যাখ্যা-২: তাঁরা রাজনীতি বুঝতেন না। ব্যাখ্যা-৩: তাঁরা মানবদরদী ছিলেন। 

4. বিবৃতি: আকবর দীন-ই ইলাহি প্রবর্তন করেন। ব্যাখ্যা-১: তিনি বৌদ্ধধর্মের অনুরাগী ছিলেন। ব্যাখ্যা-২: তিনি অনুগত গোষ্ঠী গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। 

5. ব্যাখ্যা-৩: তিনি যুদ্ধ করা ছেড়ে দিয়েছিলেন। বিবৃতি; মুঘল সম্রাটরা দুর্গ বানাতে আগ্রহী ছিলেন। ব্যাখ্যা-১: দুর্গ বানানোর খরচ ছিল কম। ব্যাখ্যা-২: দুর্গ বানানো ছিল প্রাসাদ বানানোর চেয়ে সহজ। ব্যাখ্যা-৩: দুর্গ বানানোয় সাম্রাজ্য সুরক্ষিত হত। 

6. বিবৃতি: জাহাঙ্গিরের আমলে ইউরোপীয় ছবির প্রভাব মুঘল চিত্রশিল্পে পড়েছিল। ব্যাখ্যা-১: এই সময়ে ইউরোপীয় ছবি মুঘল দরবারে আসতে শুরু করেছিল। ব্যাখ্যা-২: মুঘল শিল্পীরা সবাই ছিল ইউরোপীয়। ব্যাখ্যা-৩: ভারতীয় শিল্পীরা এই সময়ে ইউরোপ থেকে ছবি আঁকা শিখে এসেছিলেন। 

7. বিবৃতি: মধ্যযুগের মণিপুরি নৃত্যে রাধাকৃয় ছিলেন প্রধান চরিত্র। ব্যাখ্যা-১: ভারতে নৃত্যের দেবদেবী ছিলেন কৃর ও রাধা। ব্যাখ্যা-২: এই সময় বৈয়বধর্ম মণিপুরে বিস্তার লাভ করেছিল। ব্যাখ্যা-৩: চৈতন্যদেব ছিলেন মণিপুরের লোক। 

৪. বিবৃতি: ভারতে প্রাচীনকালে তালপাতার ওপরে লেখা হত। ব্যাখ্যা-১: সে আমলে কাগজের ব্যবহার জানা ছিল ना। ব্যাখ্যা-২: সে আমলে ভারতে কাগজের দাম খুব বেশি ছিল। ব্যাখ্যা-৩: সে আমলে ভারতীয়রা কাগজের ওপরে লেখার কালি আবিষ্কার করতে পারেনি। 

উত্তর :1. ব্যাখ্যা-৩ 3. ব্যাখ্যা-১ 5. ব্যাখ্যা-৩ 7. ব্যাখ্যা-২ 2. ব্যাখ্যা-২ 4. ব্যাখ্যা-২ 6. ব্যাখ্যা-১ ৪. ব্যাখ্যা-৩ 

সংক্ষেপে (৩০-৫০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও: 

1. সুলতানি ও মুঘল যুগে ভারতে কোন্ কোন্ ফল, সবজি ও শস্যের চাষ সবচেয়ে বেশি হত? 

উত্তর: সুলতানি ও মুঘল আমলে বেশিরভাগ মানুষই গ্রামে বাস করতেন। এ সময়ে আম, খেজুর, জাম, কাঁঠাল, নারকেল প্রভৃতি ফলের চাষ হত। শস্যের মধ্যে ধান, গম, যব, মুগ, মুসুর প্রভৃতি ছিল উল্লেখযোগ্য। এ সময় নানা রকম ফুল, চন্দনকাঠ, ঘৃতকুমারী ও নানা ভেষজ উদ্ভিদ এবং লঙ্কা, আদা ও অন্যান্য মশলারও চাষ হত। ছিলেন। 

2. মধ্যযুগের ভারতে ভক্তি সাধক-সাধিকা কারা 

উত্তর: খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ থেকে পঞ্চদশ শতকের মধ্যে নামদেব, জ্ঞানেশ্বর, তুকারাম, রামানন্দ, কবীর, নানক, চৈতন্যদেব, মীরাবাঈ প্রমুখ ভক্তি সাধক-সাধিকাদের কথা জানা যায়। নানক ছিলেন শিখ ধর্মের প্রবর্তক। মহাসাধিকা ছিলেন মীরাবাঈ। তিনি কৃষ্ণ গিরিধারীর ভক্ত ছিলেন। ভক্তিবাদী নব্য বৈম্নবধর্মের প্রবর্তক ছিলেন শ্রীচৈতন্যদেব।

3. সিলসিলা কাকে বলে? চিশতি সুফিদের জীবনযাপন কেমন ছিল? 

উত্তর: সিলসিলা: ভারতে সুফিদের বিভিন্ন গোষ্ঠীকে বলা হয় সিলসিলা। যেমন-শেখ নিজামউদ্দিন আউলিয়া বা বখতিয়ার কাকি ছিলেন চিশতি সিলসিলার অন্যতম সাধক। 

▶ জীবনযাত্রা: চিশতি গোষ্ঠীর সুফিদের জীবনযাপন ছিল খোলামেলা। তাঁরা ধর্ম, অর্থ ও ক্ষমতার ভিত্তিতে মানুষকে বিচার করতেন না। তাঁরা রাজনীতি ও রাজদরবার থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখতেন, ভারতীয় সমাজে তাঁদের বিশেষ অবদান ছিল। 

4. দীন-ই ইলাহির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান কেমন ছিল? 

উত্তর: দীন-ই ইলাহির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে শপথগ্রহণকারী অনুষ্ঠানের শুরুতে তাঁর জীবন (জান), সম্পত্তি (মাল), ধর্ম (দিন) ও সম্মান (নামুস) বিসর্জন বা কুরবান দেওয়ার শপথ নিতেন। এরপর তিনি বাদশাহের পায়ে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করতেন। অনুষ্ঠানের শেষে বাদশাহ তাঁকে একটি নতুন পাগড়ি, সূর্যের একটি পদক ও পাগড়ির সামনে লাগানোর জন্য তাঁর একটি ছবি দিতেন। 

5. স্থাপত্য হিসেবে আলাই দরওয়াজার বৈশিষ্ট্য কী? 

উত্তর: খলজি বংশের সুলতান আলাউদ্দিন খলজির আমলে (১৩১০ খ্রি.) তৈরি হয়েছিল আলাই দরওয়াজা। আলাই দরওয়াজা ছিল কুতুবমিনারে প্রবেশের একটি দ্বার।

এতে ইন্দো-ইসলামীয় শিল্পের অসাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি দেখা যায়। এটি লাল বেলে পাথরের তৈরি। আলাই দরওয়াজা সুলতান আলাউদ্দিন খলজির প্রভাব ও প্রতিপত্তির পরিচায়ক। এই দরওয়াজার গায়ে আল্লাহ্-র পরিবর্তে সুলতানের প্রশংসা খোদাই করা হয়েছিল। সে যুগে এ ধরনের স্থাপত্যশিল্পের নিদর্শন আর পাওয়া যায় না। 

6. ক্যালিগ্রাফি এবং মিনিয়েচার বলতে কী বোঝায়? 

উত্তর: ক্যালিগ্রাফি: সুলতানি ও মুঘল আমলে সুন্দর হাতের লেখার শিল্পকে ইংরেজিতে বলা হয় ক্যালিগ্রাফি (Calligraphy)। হাতে লেখা বইগুলিই ছিল সেকালের ক্যালিগ্রাফির নমুনা। মিনিয়েচার: সুলতানি ও মুঘল আমলে নানা বইয়ের পৃষ্ঠা সাজানো হত সূক্ষ্ম হস্তলিপি ও ছবি দিয়ে। আকার ও আয়তনে ছোটো ছবিগুলিকে বলা হত মিনিয়েচার। বাংলায় এর নাম অণুচিত্র। 

7. শিবায়ন কী? এর থেকে বাংলার কৃষকের জীবনের কী পরিচয় পাওয়া যায়? 

উত্তর: সুলতানি ও মুঘল আমলে শিবকে নিয়ে যেসব সাহিত্য রচিত হয়েছিল তা 'শিবায়ন' নামে পরিচিত। 

▶ গরিব শিব-দুর্গা ও তাঁদের জীবনকথা এই সাহিত্যে স্থান লাভ করেছে। এই সাহিত্যে শিব ছিলেন কৃষিজীবী। এই লেখাগুলিতে সমসাময়িক বাংলার গরিব কৃষক পরিবারই যেন শিব-দুর্গার পরিবার হয়ে গেছে। এর থেকেই বাংলার | কৃষক জীবনের স্বরূপটি খুঁজে পাওয়া যায়।

৪. কাগজ কোথায় আবিষ্কার হয়েছিল? মধ্যযুগের ভারতে কাগজের ব্যবহার কেমন ছিল তা লেখো। 

উত্তর: খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে কাগজ প্রথম আবিষ্কার হয় চিনে। 

▶ মধ্য এশিয়ার মোঙ্গলরা ত্রয়োদশ শতাব্দীতে ভারতে প্রথম কাগজ তৈরি করার প্রযুক্তি নিয়ে আসে। এরপর অল্পকালের মধ্যেই ভারতে কাগজের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়ে। ফলে পড়াশোনার কাজ সহজ হয়। 

বিশদে (১০০-১২০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও: 

1. মধ্যযুগের ভারতে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কেমন ছিল তা লেখো। 

উত্তর: মধ্যযুগের বেশিরভাগ সাধারণ মানুষই গ্রামে বাস করতেন। 

[a] বাসস্থান: পাতকুয়া, ডোবা বা পুকুর থাকলেই সাধারণ মানুষ তাদের বসতি তৈরি করে নিত। তারা ঘর বানানোর জন্য গাছের গুঁড়ি, খড় প্রভৃতি ব্যবহার করত। 

[b] জীবিকা: কৃষিকাজ ছিল তাদের প্রধান জীবিকা। সরকারি খাজনা ও অন্যান্য পাওনা মিটিয়ে বাকি ফসলের অংশে তারা জীবনযাপন করত। 

[c] খাদ্য: এদের খাদ্য ছিল খুবই সাধারণ। তারা মাংসের স্বাদ প্রায় জানত না বললেই চলে। খিচুড়ি খেয়েই তারা দিনাতিপাত করত। 

[d] পোশাক: তাদের পরনের পোশাকও যথেষ্ট ছিল না। 

[e] গৃহস্থালি: একজোড়া খাটিয়া ও দু-একখানা রান্নার বাসনই ছিল তাদের গৃহস্থালির জিনিসপত্র। বিছানার চাদর ছিল বড়ো জোর দুটি। 

[f] আনন্দ উৎসব: নানা উৎসবে যোগ দিয়ে তারা কিছুটা আনন্দ উপভোগ করত, যা ছিল ব্যতিক্রম। তারা কুস্তি, তিরধনুক, বর্শা ছোড়া ও সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিত। 

2. কবীরের ভক্তি ভাবনায় কীভাবে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এক হয়ে গিয়েছিল বলে তোমার মনে হয়? 

উত্তর: ভক্তিবাদী সাধক কবীরের ভক্তি ভাবনায় ইসলামের একেশ্বরবাদের সঙ্গে মিশেছিল বৈম্নব, নাথ-যোগী এবং তান্ত্রিক বিশ্বাস। 

[a] কবীরের বিশ্বাস: কবীর বিশ্বাস করতেন যে, মানুষ তাঁর ভক্তি দিয়েই নিজের মনে ঈশ্বর খুঁজে পাবে। তার জন্য মন্দিরে, মসজিদে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তাই মূর্তিপূজো বা গঙ্গা স্নান বা নামাজ পড়া তাঁর কাছে ছিল অর্থহীন। তাঁর কাছে সব ধর্মই ছিল এক, সব ঈশ্বরই সমান। তাই কবীরের মতে, রাম, হরি, গোবিন্দ, আল্লাহ্, সাঁই, সাহিব সবই ছিল এক ঈশ্বরের বিভিন্ন নাম। 

[b] সামাজিক সমন্বয়: মধ্যযুগীয় সামাজিক জীবনে কবীরের ভক্তি-ভাবনার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। হিন্দি ভাষায় লেখা তাঁর দুই পত্তির কবিতা দোহাগুলি ছিল ধর্মের লোক দেখানো আচারের বিরোধিতার প্রতীক। তাই হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যেই কবীরের মতবাদ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তখনকার মানুষের মনে কবীর শান্তি ও সাম্যের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন। 

3. বাংলায় বৈয়ব আন্দোলনের ফলাফল কী হয়েছিল বিশ্লেষণ করো। 

উত্তর: শ্রীচৈতন্য প্রচারিত ও প্রবর্তিত বৈয়বধর্ম ও আন্দোলন জামাজিক ও জাতিগত ভেদাভেদ পুরোপুরি দূর করতে না পারলেও এই আন্দোলনের ফলাফল ছিল অপরিসীম। বাংলার সংস্কৃতিতে এই আন্দোলনের গভীর প্রভাব পড়েছিল। 

[a] ভাষা ও সাহিত্যের প্রসার: বাংলা সাহিত্যে বৈয়ব আন্দোলনের গভীর প্রভাব পড়েছিল। শ্রীচৈতন্য এবং তাঁর বৈয়বভক্তিবাদ নিয়ে অনেক সাহিতা লেখা হয়। শ্রীকৃয়কে কেন্দ্র করে কাব্য এবং রাধাকৃষ্ণকে নিয়ে পদ-কবিতা লেখার নিজস্ব ধারা তৈরি হয়। অনেক বৈল্পব কবি শ্রীচৈতন্যের জীবনী নিয়ে কাব্য লেখেন। এগুলিকে চৈতন্য জীবনীকাব্য বলা হয়। 

[b] বৈল্পব গানের প্রসার: বৈয়বদের রচনায় সাধারণ মানুষের রোজকার জীবনের ছবিই ধরা পড়ে। বহু মুসলমান কবি বৈয়ব গান, কবিতা লেখেন। ঘাঁটু, ঘাঁটু-তেলেনা, পটুয়া, রাসলীলা, পৌষপার্বণ ইত্যাদি গানে আজও বৈশ্বব প্রভাব লক্ষ করা যায়। শ্রীচৈতন্যের কীর্তনগান জনসংযোগের মাধ্যম হিসেবে খুব কার্যকরী। প্রকৃতপক্ষে বৈম্নব আন্দোলনের ফলে বাংলায় এক নতুন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। 

4. বাদশাহ আকবরের দীন-ই ইলাহি সম্বন্ধে একটি টীকা লেখো। 

উত্তর: 'দীন-ই ইলাহি' হল মুঘল বাদশাহ আকবর প্রবর্তিত এক নতুন ধর্ম। নানা ধর্মের গুরুদের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন ধর্ম থেকে পছন্দমতো কিছু কিছু বৈশিষ্ট্যগুলিকে গ্রহণ করে তার ভিত্তিতে আকবর দীন-ই ইলাহি তৈরি করেন। [a] বিশেষত্ব: প্রকৃতপক্ষে দীন-ই ইলাহি ছিল আকবরের প্রতি চূড়ান্ত অনুগত কয়েকজন অভিজাতদের মধ্যে প্রচারিত এক আদর্শ। আকবর নিজে তাঁদের বেছে নিতেন। বেশকিছু অনুষ্ঠান ও রীতিনীতির মধ্যে দিয়ে তারা বাদশাহের প্রতি [b] গুরুত্ব: এইভাবে আকবর দীন-ই ইলাহির মাধ্যমে নিজের চারপাশে গড়ে তুলেছিলেন বিশ্বস্ত অনুগামীদের একটি দল। আকবর নিজে কখনো ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেননি। তেমনই দীন-ই ইলাহির সদস্য অভিজাতরাও ছিল এক-এক ধর্মের। তাঁরা কেউ পারস্য দেশের লোক, কেউ হিন্দু রাজপুত, আবার কেউ বা ভারতীয় মুসলমান। সুতরাং দীন-ই ইলাহি কোনো আলাদা ধর্ম ছিল না। আসলে আকবর বুঝতে পেরেছিলেন যে বহুজাতি, বহু ধর্মের দেশ ভারতবর্ষে মুঘল শাসন সুদৃঢ় করতে সর্বধর্মসমন্বয়কারী মতাদর্শ গড়ে তোলা প্রয়োজন। এই প্রয়োজনের বাস্তব প্রয়োগ হল দীন-ই ইলাহি। 

5. মুঘল সম্রাটদের আমলে বাগান তৈরি এবং দুর্গ নির্মাণ সম্বন্ধে আলোচনা করো। 

উত্তর: মুঘল সম্রাটরা বাগান ও দুর্গ নির্মাণের ক্ষেত্রে বিশেষ আগ্রহী ছিলেন। মুঘল আমলে স্থাপত্যশিল্পের ক্ষেত্রে ব্যাপক পরিবর্তন আসে, যে পরিবর্তন দেখা যায় সে আমলের বাগান ও দুর্গ নির্মাণের ক্ষেত্রে। 

[a] বাগান: মুঘল সম্রাট বাবরের ছিল বাগান করার শখ। মুঘল আমলে বাগান তৈরি করার ক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতির প্রচলন হয়। সে যুগে চারভাগে ভাগ করে একটি বাগান বানানো হত। এই বাগানকে বলা হত 'চাহার বাগ'। বাগান বানানোর এই রীতি পারস্য ও মধ্য এশিয়া থেকে মুঘলরা ভারতে আমদানি করেছিলেন।মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গিরও বাগাণ বানানোর ক্ষেত্রে নানা উদ্যোগ নেন। তিনি আগ্রা ও কাশ্মীরে যে বাগান বানিয়েছিলেন, তার উল্লেখ পাওয়া যায় তাঁর আত্মজীবনী 'তুজুক-ই জাহাঙ্গিরি'- তে। মুঘল সম্রাট শাহ জাহানও বাগান বানানোর ক্ষেত্রে উদ্যোগী ছিলেন। মুঘল আমলে চাহার বাগগুলি নির্মিত হয়েছিল লাহোরের শালিমারবাগ, কাশ্মীরের নিসাতবাগ, হুমায়ুনের সমাধি ও আগ্রার তাজমহলে।

 [b] দুর্গ: মুঘল স্থাপত্যশিল্পের অন্যতম নিদর্শন হল দুর্গ। দুর্গ নির্মাণের ব্যাপারে প্রথম উদ্যোগ নেন সম্রাট আকবর। তাঁর আমলে নির্মিত দুর্গগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আগ্রা দুর্গ। এ ছাড়া এসময় আজমির, লাহোর, কাশ্মীর ও এলাহাবাদে নানা দুর্গ নির্মিত হয়েছিল। 

6. মধ্যযুগের বাংলার স্থাপত্যরীতির পর্যায়গুলির মূল বৈশিষ্ট্য কী ছিল? 

উত্তর: পর্যায়: মধ্যযুগে বাংলার স্থাপত্যরীতির তিনটি পর্যায় দেখা যায়। যথা- [a] প্রথম পর্যায়ের, (১২০১- ১৩৩৯ খ্রি.) স্থাপত্য নিদর্শনগুলি হল বাংলার রাজধানী গৌড়, তিবেশীর জাফর খানের সমাধির ধ্বংসাবশেষ, বসিরহাটের কয়েকটি স্তূপ প্রভৃতি। [b] দ্বিতীয় পর্যায়ের (১৩৩৯-১৪৪২ খ্রি.) স্থাপত্যগুলি হল মালদহের আদিনা মসজিদ, ছোটো পান্ডুয়ার মিনার ও মসজিদ, গৌড়ের শেখ আকি সিরাজের সমাধি প্রভৃতি। [c] তৃতীয় পর্যায়ের (১৪৪২-১৫৩৯ খ্রি.) ইন্দো-ইসলামি স্থাপত্যরীতির নিদর্শনগুলি হল পান্ডুয়ার জালালউদ্দিন মহম্মদ শাহর সমাধি, গৌড়ের দাখিল দরওয়াজা, তাঁতিপাড়া মসজিদ, গুম্মত মসজিদ, লোটান মসজিদ ও গৌড়ের বড়ো সোনা মসজিদ। বৈশিষ্ট্য: খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতক নাগাদ বাংলায় মুসলমান শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই ইসলামি স্থাপত্যরীতির প্রচলন ঘটে। এসময় চাল বা চালাভিত্তিক মন্দির নির্মিত হত। তেমনই ইসলামীয় স্থাপত্যের ধাঁচে চালাগুলির মাথায় মাঝেমধ্যে খিলান ও গম্বুজ বানানো হত। তৃতীয় পর্যায়ে নির্মিত ফিরোজ মিনারে ইট ও টেরাকোটার কাজ যেমন পাওয়া যায়, তেমনই দেখা যায় সাদা ও নীল রঙের চকচকে টালি ব্যবহারের নিদর্শন। এই বৈশিষ্ট্যগুলি এ যুগের স্থাপত্যরীতিকে এক অনন্য চরিত্রে স্থাপন করেছে। 

7. মুঘল চিত্রশিল্পের উন্নতিতে মুঘল বাদশাহদের কী ভূমিকা ছিল? 

উত্তর: মুঘল চিত্রশিল্পের উন্নতিতে মুঘল বাদশাহদের ভূমিকা ছিল নিম্নরূপ- 

[a] বাবর: মুঘল সম্রাট বাবর বইতে ছবি আঁকার বা অলংকরণের প্রথা সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। 

[b] হুমায়ুন: বইতে ছবি আঁকার ক্ষেত্রে হুমায়ুন বিশেষ উৎসাহী ছিলেন। তিনি ইরান ও আফগানিস্তানে থাকার সময় আবদুস সমাদ ও মির সঈদ আলির কাজ দেখে মুগ্ধ হন এবং তাঁদের দিল্লিতে নিয়ে এসে কারখানা খোলেন। সেই কারখানায় বইগুলি সুন্দর হাতের লেখায় লিখে অলংকৃত করা হত। এসময় 'হমজানামা'-র অলংকরণ শুরু হয়। 

[c] আকবর: হুমায়ুনের আমলের 'হমজানামা'-র অলংকরণের কাজ শেষ হয় আকবরের আমলে। এ ছাড়া'রজমনামা', 'নল-দময়ন্তী', 'জাফরনামা' প্রভৃতিও অলংকরণ করা হয়। আকবরের আমলেই 'তুতিনামা', 'রজমনামা' প্রভৃতি বইয়ের প্রতিটি পাতা সাজানো হত সূক্ষ্ম হাতের লেখা ও ছবি (মিনিয়েচার) দিয়ে। আকবরের আমল থেকেই প্রতিকৃতি আঁকার সূচনা হয়। 

[d] জাহাঙ্গির: সম্রাট জাহাঙ্গিরের আমলে প্রতিকৃতি আঁকার ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটে, সেসময় থেকেই মুঘল চিত্রশিল্পের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ছবি আঁকার রীতিনীতির প্রভাব পড়তে থাকে। ছবির বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে প্রকৃতি, উদ্ভিদ ও প্রাণী এবং এসময় থেকেই শিল্পীরা প্রথম ছবিতে সই করতে শুরু করেন। 

[e] শাহ জাহান: সম্রাট শাহ জাহানও চিত্রশিল্পের একনিষ্ঠ পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। ছবি আঁকার ক্ষেত্রে কাছে ও দূরে বোঝানোর পদ্ধতির ব্যবহার এই সময় শুরু হয়। এসময়ের ছবিগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল 'পাদশাহনামা' গ্রন্থের অলংকরণ। শাহ জাহানের পরবর্তীকালে ছবি আঁকার ক্ষেত্রে শিল্পীদের নানা বাধার সম্মুখীন হতে হয়। সম্রাট ঔরঙ্গজেবের আমলে দরবারি চিত্রশিল্পীরা নানা বাধার সম্মুখীন হন ফলে এসময় থেকেই শিল্পীরা আঞ্চলিক শাসকের দরবারে চলে যেতে থাকেন। 

৪. মধ্যযুগের ভারতে কীভাবে ফারসি ভাষার ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা বেড়েছিল তা বিশ্লেষণ করো। 

উত্তর: মধ্যযুগের ভারতে সুলতানি শাসনের হাত ধরে ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের বিপুল ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়। 

[a] সুলতানি যুগে ফারসি সাহিত্য: কুতুবউদ্দিন আইবক ও ইলতুৎমিশ ফারসি ভাষার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। খলজি সুলতানদের আমলে লাহোর ফারসি ভাষার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। এ যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফারসি সাহিত্যিক আমির খসরু ফারসি সাহিত্যের নতুন রচনাশৈলী 'সবক-ই হিন্দ' আবিষ্কার করেন। ফারসি ভাষায় ইতিহাস রচনায় ঐতিহাসিক মিনহাজ-ই সিরাজ, ইসামি, জিয়াউদ্দিন বারনি নৈপুণ্য দেখিয়েছিলেন। সুলতানি যুগে ফারসি ভাষায় বহু মূল্যবান সংস্কৃত গ্রন্থ অনুবাদ করা হয়েছিল। অন্যদিকে মহম্মদ বিন তুঘলকের দেবগিরিতে রাজধানী স্থানান্তরের ফলে দক্ষিণ ভারতে ফারসি ভাষার ব্যবহার শুরু হয়, যা বাহমনি সুলতানদের আমলে জনপ্রিয় হয়। 

[b] মুঘল আমলে ফারসি ভাষা: মুঘল আমলে ফারসি ভাষার কার্যকারিতা এবং জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পায়। বাবরের কন্যা গুলবদন বেগম ফারসি ভাষায় লেখেন 'হুমায়ুননামা'। ইরান থেকে ভারতে ফেরার সময়ে হুমায়ুনের সঙ্গে বহু কবি সাহিত্যিক দিল্লিতে আসেন। পারস্যের সাম্রাজ্যের পতনের ফলে পারস্য থেকে বহু কবি এবং সাহিত্যিক মুঘল দরবারে ভিড় জমিয়েছিল। 

[i] আকবরের আমল: সম্রাট আকবরের আমলে ফারসি ভাষায় রচিত সাহিত্য ইতিহাস, অনুবাদ ও কবিতা—এই তিনভাগে বিভক্ত ছিল। ইতিহাসমূলক সাহিত্যগুলির মধ্যে আবুল ফজলের 'আকবরনামা' ও 'আইন-ই-আকবরি' বদাউনির মুন্তাখাব-উৎ-তওয়ারিখ' এবং নিজামউদ্দিন আহমেদের 'তবাকাৎ-ই-আকবরি' ছিল উল্লেখযোগ্য। 

[ii] আকবরের পরবর্তীকাল: জাহাঙ্গিরের আমলে ভারতের বিখ্যাত ফারসি কবি ছিলেন আবু তালিব। শাহজাহানের আমলে ফারসি ভাষায় ইতিহাস লেখেন ঐতিহাসিক আবদুল হামিদ লাহোরি। ঔরঙ্গজেবের কন্যা জৈবউননিসা ফারসি ভাষায় কবিতা লিখতেন। সর্বোপরি ফারসি ভাষা শুধু মুসলমান সমাজেই নয়, হিন্দুসমাজেও সমাদৃত হয়েছিল। এইসময় ঈশ্বরদাস নাগর, চন্দ্রভান, ভীমসেনের মতো হিন্দু লেখকরা ফারসি ভাষায় দক্ষতা দেখিয়েছিলেন। 

9. সুলতানি এবং মুঘল আমলে সামরিক এবং কৃষিপ্রযুক্তিতে কী কী পরিবর্তন দেখা দিয়েছিল বলে তোমার মনে হয়? 

উত্তর: সামরিক প্রযুক্তি: সুলতানি এবং মুঘল আমলে সামরিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নানা পরিবর্তন আসে। চোদ্দো খ্রিস্টাব্দের প্রথমার্ধে বারুদ ব্যবহারকারী আগ্নেয়াস্ত্র চিন থেকে মোঙ্গলদের মাধ্যমে উত্তর ভারতে আসে। ফলে ভারতে বারুদচালিত রকেটের ব্যবহার শুরু হয়। পনেরো শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতে বন্দুকের প্রযুক্তি আসে চিন ও মিশর থেকে। ষোলো শতকের গোড়ার দিকে পোর্তুগিজদের মাধ্যমে দক্ষিণ ভারতে এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে, মুঘলদের মাধ্যমে উত্তর ভারতেও ব্যাপক হারে বন্দুক ও কামানের ব্যবহার চালু হয়। তুর্কিদের মাধ্যমে এ দেশে ঘোড়ায় টানা রথে যুদ্ধের সময় দু-পাশে সৈনিকের পা রাখার জন্য পাদানির (রেকাব) ব্যবহার শুরু হয়। 

কৃষি প্রযুক্তি: কৃষিক্ষেত্রে মধ্যযুগে এসেছিল ব্যাপক পরিবর্তন, এসেছিল নতুন প্রযুক্তি। আর তা হল উন্নত সেচ ব্যবস্থা। তেরো শতক নাগাদ পারস্য দেশ থেকে ভারতে বেল্ট ও গিয়ার লাগানো পারসিক চক্রের (Persian wheel) ব্যবহার শুরু হয়। কাঠের তৈরি এই যন্ত্রের মাধ্যমে পশুশক্তির সাহায্যে কুয়ো বা খাল থেকে জল তোলা যেত।

মধ্যযুগে কৃষির উন্নতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল সেচ ব্যবস্থার প্রসার। সেচ ব্যবস্থার উন্নতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বিজয়নগরের শাসকরা, সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলক ও মুঘল সম্রাটরা। এসময় বাগিচা শিল্পের (বাগান তৈরির) বিশেষ উন্নতি ঘটে। কলমপ্রথার ক্ষেত্রে ঘটে প্রভূত উন্নতি। কৃষির ক্ষেত্রে পোর্তুগিজদের মাধ্যমেও ইউরোপীয় প্রযুক্তি ভারতে বিস্তার লাভ করে। 

কল্পনা করে লেখো (১০০-১৫০টি শব্দের মধ্যে): 

1. রাজনীতি, জীবনযাপন এবং ধর্ম নিয়ে একজন সুহরাবর্দি সুফি সাধকের সঙ্গে কবীরের কাল্পনিক সংলাপ লেখো। 

উত্তর: ধরা যাক, একজন সুহরাবর্দি সুফি সাধক হলেন জসীমউদ্দিন আউলিয়া। কবীর ও জসীমউদ্দিনের মধ্যেকার কথোপকথন নীচে তুলে ধরা হল- 

কবীর: আরে বাবা, মানুষ জন্মালে তাকে মরতে হবে, তাহলে কেন খামোখা খাই খাই ভাব। তার থেকে মানুষের জন্যে ভাব। শুধু রাজনীতি করে লাভ কী? কী বলো রহিম ভাই। 

জসীমউদ্দিন: তা আপনি যাই বলেছেন হকের কথা। মানুষ সেবাই আসল। শুধু রাজনীতি মানে ঝগড়াঝাঁটি রাজ্য দখলের লড়াই, মারামারি, হানাহানি আরও কত খারাপ খারাপ ব্যাপার। 

কবীর: আরে বাবা রাম, হরি, গোবিন্দ, আল্লাহ, সাঁই, সাহিব সবাই তো এক। তাহলে কেন ধর্ম ধর্ম করে মারামারি। মানুষের সেবা করাই তো আসল কাজ। 

জসীমউদ্দিন: সেকথা তো আমিও বলি, সাচ্চাধর্ম হল মানুষের ধর্ম। তাহলে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি কেন? আমাদের মুলতানে এ কথা বলে সেদিন কাউকে বোঝাতে পারিনি। তা আমাদের ইসলামেও একই কথা বলেছে। 

কবীর: ঠিক বলেছ ডাই, 'তেরা সাঁই তুঝ যে হ্যায়, তু জাগ সকে তো জাগ.... অর্থাৎ, তোর ভগবান তোর মধ্যেই, যদি ক্ষমতা থাকে তো তাকে জাগা। 

জসীমউদ্দিন: ঠিক কথা, আগে মানুষের সেবা করো, তাহলেই ভগবানের সেবা করা হবে। আর এত আড়ম্বরের দরকার কী? সাদাসিধে জীবন আর শাস্তি এটাই তো আসল কথা। 

কবীর: এ কথা তো আমিও বলি। তাহলে কেন হানাহানি? 

2. মনে করো তুমি চৈতন্যদেবের সময়ে নবদ্বীপের একজন সাধারণ মানুষ। তুমি দেখলে চৈতন্যদেব নগরসংকীর্তনে বেড়িয়েছেন। তুমি কী করবে? 

উত্তর: চৈতন্যের সমকালীন নবদ্বীপের একজন সাধারণ মানুষ আমি। আমি যে পাড়ায় বাস করি সে পাড়ায় শাঁখারি, মালাকার, তাঁতি, গোয়ালা, গন্ধবণিক, তাম্বুলি, বাদাকর, সাপেকাটার চিকিৎসক, বণিক সবাই একসঙ্গে বাস করি। একদিন সকালে আমি দেখলাম যে শ্রীচৈতন্য নগরসংকীর্তনে বেরিয়েছেন। সঙ্গে তাঁর অনুগামী-সহ অসংখ্য মানুষ, আমিও ঢুকে পড়লাম সেই নগরসংকীর্তনের দলে। কেন-না তাঁর দলে তো জাতধর্মের বালাই নেই। আমিও নবদ্বীপ পরিক্রমায় তাঁর সঙ্গী হলাম। সে এক অপূর্ব আনন্দ। 

3. যদি তুমি মুঘল কারখানার একজন চিত্রশিল্পী হতে তাহলে বাদশাহের সুনজরে পড়ার জন্য তুমি কী কী ছবি আঁকতে? 

উত্তর: আমি প্রথমে সুন্দর হাতের লেখায় ও অলংকরণে বাদশাহের আত্মজীবনীর পাতাগুলিকে সাজিয়ে দিতাম, আমি বাদশাহের ছবি আঁকতাম। নানা ধরনের ছবি এঁকে তাতে স্বাক্ষর করে দিতাম। যেসব বই আমি অলংকৃত করতাম সেগুলি হল 'হমজানামা', 'রজমনামা', 'জাফরনামা', 'নল-সময়ন্তী', 'তুতিনামা', 'পাদশাহনামা' প্রভৃতি। আমি নানা প্রতিকৃতি আঁকতাম। এ ছাড়া প্রকৃতি, উদ্ভিদ ও প্রাণী বিষয়ে নানা ছবি এঁকে দরবারে প্রদর্শনীর জন্য পাঠাতাম। এসময় আমি সাধারণ মানুষ ও তাদের জীবনকথা নিয়ে মুঘল দরবারি চিত্রকলার নানা ছবিও আঁকতাম। আর সেগুলিতে পারদর্শিতার মাধ্যমে আমি বাদশাহের সুনজরে আসার চেষ্টা করতাম।

4. ধরো তুমিই আজ তোমার শ্রেণির শিক্ষিকা/শিক্ষক। তুমি বাংলা ভাষায় আরবি এবং ফারসি শব্দের ব্যবহার সম্বন্ধে পড়াচ্ছ। রোজকার বাংলা কথাবার্তায় ব্যবহৃত আরবি-ফারসি শব্দের একটি তালিকা তুমি ছাত্রছাত্রীদের দিতে চাও। এমন একটি তালিকা তুমি তৈরি করো। দরকারে একটি বাংলা অভিধানের সাহায্য নাও। 

উত্তর: প্রিয় ছাত্রছাত্রী আজ আমি তোমাদের বাংলা ভাষায় আরবি ও ফারসি শব্দের ব্যবহার হয় এমন একটি তালিকা প্রদান করব। এই তালিকাটি হল নিম্নরূপ- 

গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর অতিসংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর মান 1 সঠিক উত্তরটি নির্বাচন করো: 

1. জিনিসপত্রের কম দামের নজির লক্ষ করা যায়- (আলাউদ্দিন খলজির সময়ে/মহম্মদ বিন তুঘলকের সময়ে/ইব্রাহিম সময়ে) লোদির রাজত্বকালে/শেরশাহের 

2. মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গিরের আমলে আগত ওলন্দাজ বণিকের বিবরণী অনুযায়ী কৃষকদের রোজকার খাবার ছিল- (বিরিয়ানি/ মাংস/খিচুড়ি/কাবাব) 

3. সুলতানি ও মুঘল যুগের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলা ছিল- (ক্রিকেট/হকি/কুষ্টি/পোলো) 

4. 'প্রহর'-এর ফারসি প্রতিশব্দ হল- (পাস/খাস/ ফাঁস/রাস) 

5. প্রহরের হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে ১ প্রহর হল- (৩) ঘণ্টা/৪ ঘন্টা/৫ ঘন্টা/৭ ঘন্টা) 

6. দিনরাত্রি মিলিয়ে পলের সংখ্যা ছিল- (৩৬০০/ ৩৭০০/৩৮০০/৪০00) 

7. জনগণকে সময় কত তা জানানোর জন্য একটি পৃথক দপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল- (গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের আমলে/মহম্মদ বিন তুঘলকের আমলে/ফিরোজ শাহ তুঘলকের আমলে/ বলবনের আমলে) 

৪. নাথপন্থী ছিল একটি- (ধর্মীয় গোষ্ঠী/অভিজাত সম্প্রদায়/ সামরিক গোষ্ঠী/অভিজাত গোষ্ঠী) 

9. শিখধর্মে পুরুর সংখ্যা ছিল- (৫ জন/৮ জন/১০ জন/

10. গুরুগ্রন্থসাহিব যে লিপিতে লেখা সেটি হল- (গ্ররুয়বি লিপি/উর্দু লিপি/ব্রাহ্মী লিপি/অলচিকি লিপি) 

11. মীরাবাঈ তাঁর সাধিকা জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছিলেন গুজরাটের (পোরবন্দরে/সুরাটে) দ্বারকায়/ মসুলিপটনমে) 

12. মীরাবাঈ সমস্ত জীবন উৎসর্গ করেছিলেন- (শ্রীকৃত্বের প্রতি একনিষ্ঠ ভক্তিতে/ব্রহ্মদেবের প্রতি একনিষ্ঠ ভত্তিতে/মহাদেব শিবের প্রতি একনিষ্ঠ ভত্তিতে/বিন্নুর প্রতি একনিষ্ঠ ভক্তিতে) 

13. কবীর জন্মগ্রহণ করেছিলেন- (১৪৩০ খ্রিস্টাব্দে/ ১৪৪০ খ্রিস্টাব্দে/১৪৫০ খ্রিস্টাব্দে/১৪৬০ খ্রিস্টাব্দে) 

14. 'জোলাহা' শব্দের অর্থ- (নাপিত/কসাই/তাঁতি/ রাজমিস্ত্রী) 

15. শেখ সেলিম চিশতির দরগা অবস্থিত- (বুরহানপুরে/ এলাহাবাদে/ফতেহপুর সিকরিতে/বোম্বাইতে) 

16. বাংলায় ভক্তি আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র ছিল- (নবদ্বীপ/ শ্রীরামপুর/নৈহাটি/শান্তিপুর) 

17. চৈতন্যদেব বাংলাদেশে ভক্তিবাদ প্রচার করতেন- (মৈথিলি ভাষায়/সংস্কৃত ভাষায়/বাংলা ভাষায়/ফারসি ভাষায়) 

18. শ্রীকৃয়বিজয়ের মূল ভিত্তি ছিল- (রামায়ণ/মঙ্গল কাব্য/ভাগবত/শিবায়ন) [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] 

19. শ্রীমন্ত শঙ্করদেব অসমীয়া ভাষায় করেছিলেন- (ভাগবতপুরাণ/মৎস্যপুরাণ/ বায়ুপুরাণ/ বিন্নুপুরাণ) অনুবাদ 

20. মাধবদেব (শ্রীচৈতন্যদেবের শিষ্য/স্বামী নিত্যানন্দের শিষ্য/ এবং দামোদরদেব ছিলেন- শঙ্করদেবের শিষ্য/মহাদেবের শিষ্য) 

21. দীন-ই ইলাহি প্রবর্তন করেন- (আকবর/জাহাঙ্গির/ শাহ জাহান/হুমায়ুন) 

22. 'ঝরোখা' কথার অর্থ হল- (জানালা/দরজা/ মিনার/ছাদ) 

23. কুয়াত-উল ইসলাম মসজিদের নির্মাতা ছিলেন- (কুতুবউদ্দিন খলজি/বাবর) আইবক/ইলতুৎমিশ/জালালউদ্দিন 

24. আলাই দরওয়াজা তৈরি করেন- (আলাউদ্দিন খলজি/মহম্মদ বিন তুঘলক/ফিরোজ শাহ তুঘলকা শাহ জাহান) 

25. লোদি সুলতানদের সমাধিসৌধগুলি ছিল- (চারকোণা/ষড়ভুজাকৃতি/আটকোণা/তিনকোণা) 

26. দীন পনাহ শহরটি নির্মাণ করেছিলেন- (ইব্রাহিম লোদি/ বাবর/হুমায়ুন/শেরশাহ) 

27. সাঁই ছিলেন- (ভক্তিবাদী/নাথপন্থী/ চিশতি সুফিবাদী/ সহজিয়াবাদী) [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] 

28. ঘাঁটু গানে প্রভাব দেখা যায়- (বৈয়ব ভক্তির/মণিপুরি নাচের/শিখধর্মের/দোহার) [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] 

29. মুঘল স্থাপত্যরীতির শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হল- (তাজমহল/ ইতিমাদ-উদ্ দৌলা-র সমাধি/বুলন্দ দরওয়াজা/ পুরোনো কেল্লা)

30. চাহার বাগ-এর প্রসার ঘটেছিল- (সুলতানি আমলে/ কুতুবশাহি আমলে/মুঘল আমলে/তুর্কি আমলে) [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন; নবাব বাহাদুর'স ইন্সটিটিউশন] 

31. ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড়ো গম্বুজ অবস্থিত- (গোলকোন্ডায়/খান্দেশে/বিজাপুরে/দিল্লিতে) 

32. বিঠল মন্দিরের পাথরের রথ অবস্থিত (স্থাস্পিতে/ লখনউতে/নবদ্বীপে/আগ্রাতে) 

33. বড়ো সোনা মসজিদ নির্মিত হয়েছিল- (১৩৩৯ খ্রিস্টাব্দে/১৪৪৮ খ্রিস্টাব্দে/১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে/১৫৩২ খ্রিস্টাব্দে) [লালবাগ এম এম সি গার্লস হাই স্কুল] 

34. 'শাহনামা' হল- (পারসিক মহাকাব্য/আরবীয় মহাকাব্য/ রোমান মহাকাব্য/গ্রিক মহাকাব্য) 

35. 'রজমনামা' হল মহাভারতের- (ফারসি অনুবাদ/উর্দু অনুবাদ/আরবীয় অনুবাদ/তুর্কি অনুবাদ) 

36. মুঘল সম্রাটদের মধ্যে সেরা সংগীতপ্রেমী ছিলেন- (আকবর/জাহাঙ্গির/শাহ জাহান/হুমায়ুন)

37. ভারতবর্ষে ধ্রুপদি নাচ মূলত- (৪ প্রকার/৫ প্রকার/৬ প্রকার/৭ প্রকার) 

38. 'ফতাওয়া-ই আলমগিরি' লেখা হয়েছিল- (আরবি ভাষায়/উর্দু ভাষায়/তুর্কি ভাষায়/সংস্কৃত ভাষায়) 

39. দক্ষিণ ভারতে ফারসি ভাষাচর্চার এক প্রাণকেন্দ্র ছিল- (গুলবর্গা/গোলকোন্ডা/বিজাপুর/দিল্লি) 

40. হাসান নিজামি দিল্লির যে সুলতানের সমকালীন ছিলেন তিনি হলেন- (কুতুবউদ্দিন আইবক/আলাউদ্দিন খলজি/মহম্মদ বিন তুঘলক/বলবন)

উত্তর:1. ইব্রাহিম লোদির রাজত্বকালে 2. খিচুড়ি 3. কুস্তি 4. পাস 5. ৩ ঘণ্টা 6. ৩৬০০ 7. ফিরোজ শাহ তুঘলকের আমলে ৪. ধর্মীয় গোষ্ঠী 9. ১০ জন 10. গুরুমুখি লিপি 11. দ্বারকায় 12. শ্রীকৃশ্নের প্রতি একনিষ্ঠ ভক্তিতে 13. ১৪৪০ খ্রিস্টাব্দে 14. তাঁতি 15. ফতেহপুর সিকরিতে 16. নবদ্বীপ 17. বাংলা ভাষায় 18. ভাগবত 19. ভাগবতপুরাণ 20. শঙ্করদেবের শিষ্য 21. আকবর 22. জানালা 23. কুতুবউদ্দিন আইবক 24. আলাউদ্দিন খলজি 25. আটকোণা 26. হুমায়ুন 27. ভক্তিবাদী 28. বৈয়ব ভক্তির 29. তাজমহল 30. মুঘল আমলে 31. বিজাপুরে 32. হাম্পিতে 33. ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে 34. পারসিক মহাকাব্য 35. ফারসি অনুবাদ 36. আকবর 37. ৬ প্রকার 38. আরবি ভাষায় 39. গুলবর্গা 40. কুতুবউদ্দিন আইবক।

শূন্যস্থান পূরণ করো: 

1. ভারতবর্ষে সুগন্ধি___ তৈরির শিল্প ছিল বিখ্যাত। 

2. সুলতানি ও মুঘল যুগে সমাজ ছিল__পরিবার ভিত্তিক।

3. মুসলিম সমাজে নারীর__ প্রথার প্রচলন ছিল। 

4. বাংলায়__ খেলা অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। 

5. প্রতিটি ঘড়ি আটটি --এ বিভক্ত ছিল। 

6. অলভার এবং নায়নার সাধকেরা __ভাষায় তাঁদের ধর্মমত প্রচার করতেন।  

7.. মধ্যযুগের ভক্তি সাধকদের মধ্যে পুরোভাগে ছিলেন __।

৪. মীরাবাঈ পাঁচ শতাধিক --এর রচয়িতা। 

9. সুফিদের আবির্ভাব ঘটেছিল মধ্য__।

10. 'খানকা' কথাটির অর্থ হল__। 

11. সুফি ধারায় পির ও --এর সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

12. 'বা-শরা' ও 'বেশরা' ছিল __দের প্রধান দুটি __সম্প্রদায়। 

13. __ছিল 'বে-শরা' সুফি সম্প্রদায়। 

14. নবদ্বীপে ব্রাহ্মণ__ বিরোধিতা করত। -রা বৈম্নবদের প্রবল 

15. চৈতন্য বাংলার ঘরে ঘরে__ প্রচারের ব্যবস্থা করেন। 

16. চৈতন্য বৈঙ্গবীয় __অভিনয়ের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। 

17. শঙ্করদেব প্রচারিত ভক্তির মূল কথা ছিল __।

18. __মসজিদ হল হিন্দু-জৈন এবং ইসলামীয় স্থাপত্যরীতির সংমিশ্রণ। 

19. আলাই দরওয়াজা লাল --এ নির্মিত। 

20. শেরশাহের সমাধিসৌধটি বিয়ারেন্ট___ এ অবস্থিত। 

21. 'ফতেহ' কথাটির অর্থ হল__ 

22. শ্বেত পাথরের রত্নখচিত কারুদছিল__। 

23. সম্রাট ঔরঙ্গজেবের ব্যক্তিগত প্রার্থনার জন্য নির্মিত__ হয়েছিল. 

24. বাংলার পোড়ামাটির কাজ__ নামে পরিচিত। 

25. গৌড়ে বরবক শাহ নির্মাণ করেছিলেন__। 

26. সুন্দর হাতের লেখার শিল্প ইংরেজিতে__  নামে পরিচিত।

27. 'মিনিয়েচার' কথাটির বাংলা হল__।

28. মুঘল চিত্রশিল্পের অগ্রগতি রুদ্ধ হয়ে পড়ে __এর আমলে। 

29. 'ফতাওয়া-ই আলমগিরি'__ রাজত্বকালে রচিত হয়েছিল।

30. কুতুবউদ্দিন আইবক ও ইলতুৎমিশ __পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। ভাষার 

31. রাজা টোডরমল ফারসি ভাষায়__ করেছিলেন। অনুবাদ 

32. শাহ জাহানের আমলে একজন প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক হলেন __।

33.__ অনুবাদ করেন কৃত্তিবাস ওঝা। 

34. -এর একটি বিখ্যাত অংশ হল ময়নামতীর কথা ও গোপীচন্দ্রর গান। 

35. কাগজ তৈরি করার প্রযুক্তি চিন থেকে ভারতে এসেছিল --দের হাত ধরে। 

36. __ছিলেন সুহরাবর্দি সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা।

উত্তর:1. আতর 2. যৌথ 3. পর্দা 4. বাঁটুল ছোড়া 5. পল 6. তামিল 7. গুরু নানক ৪. ভক্তিগীতি 9. এশিয়ায় 10. আশ্রম 11. মুরিদ 12. সুফি 13. কালানদার 14. ভট্টাচার্য 15. নামগান 16. নাটক 17. নামধর্ম 18. কুয়াত-উল ইসলাম19. বেলেপাথর 20. সাসারাম 21. জয় 22. পিয়েত্রা দুরা 23. মোতি মসজিদ 24. টেরাকোটা 25. দাখিল দরওয়াজা 26. ক্যালিগ্রাফি 27. অণুচিত্র 28. ঔরঙ্গজেব 29. ঔরঙ্গজেবের 30. ফারসি 31. ভাগবতপুরাণ 32. আবদুল হামিদ লাহোরি 33. রামায়ণ 34. নাথ সাহিত্য 35. মোঙ্গল 36. মইনউদ্দিন চিশতি।

ঠিক/ভুল নির্বাচন করো:

1. গাঙ্গেয় সমভূমিতে উৎপন্ন ফসলের মধ্যে আমের সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছিল। 

2. কৃষিপণ্যকে ভিত্তি করে গ্রামে কারিগরি শিল্প গড়ে উঠেছিল। 

3. সমাজ এবং পরিবারে নারীর স্থান ছিল পুরুষদের ওপরে। 

4. আটটি প্রহর চল্লিশটি ঘটিকায় বিভক্ত ছিল। 

5. দাক্ষিণাত্যের ভক্তিবাদ ব্রাহ্মণ্যধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। 

6. সুফিরা যে হঠযোগ অভ্যাস করত তা তারা জেনেছিল নাথপন্থীদের কাছ থেকে। 

7. সুহরাবর্দি সুফিরা দারিদ্র্যের বদলে ভোগবিলাসের জীবন বেছে নিয়েছিলেন। 

৪. বৈম্নবভক্তির জনপ্রিয়তার মূলে ছিল চৈতন্যদেবের উদার দৃষ্টিভঙ্গি। 

9. চৈতন্যের নেতৃত্বে সংগঠিত নবদ্বীপের বৈম্নবগোষ্ঠীতে জাতপাতের বিচার করা হত। 

10. শঙ্করদেব ভক্তিবাদের প্রচারে কৃয়ের বাল্যলীলাকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। 

11. আকবর ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেছিলেন। 

12. কুয়াত-উল ইসলাম মসজিদ নির্মাণে ২৭টি হিন্দু ও জৈন মন্দিরের ভাঙা অংশ ব্যবহৃত হয়েছিল। 

13. মুঘল সম্রাট আকবরের আমল থেকে মুঘল স্থাপত্যরীতির প্রসার শুরু হয়। 

14. বাংলায় ইন্দো-ইসলামি রীতির শ্রেষ্ঠ স্থাপত্য নিদর্শন হল বড়ো সোনা মসজিদ। 

15. আমির খসরু একজন সংগীতজ্ঞ ছিলেন। 

16. খলজি যুগে লাহোর হয়ে ওঠে ফারসি ভাষাচর্চার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। 

17. রজমনামা রামায়ণের অনুবাদ।

উত্তর:1. ঠিক 4. ভুল 7. ঠিক 10. ঠিক 13. ঠিক 16. ঠিক

  2. ঠিক       5. ভুল ৪. ঠিক 11. ভুল 14. ভুল 17. ভুল 

  3. ভুল         6. ঠিক 9. ভুল 12. ঠিক 15. ঠিক 

বেমানান শব্দটি খুঁজে বের করো: 

1. প্রহর, ঘড়ি, সুলতান, পল। 

2. তির-ধনুক, সং, বর্শা ছোঁড়া, সাঁতার। 

3. গুরু নানক, কবীর, মানসিংহ, মীরাবাঈ। 

4. মইনউদ্দিন চিশতি, আলাউদ্দিন খলজি, কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকি, বদরউদ্দিন জাকারিয়া। 

5. জিতল, জান, মাল, দীন। 

6. লালকেল্লা, কুতুবমিনার, ইলতুৎমিশের সমাধি, আলাই দরওয়াজা। 

7. বিবি-কা মকবরা, মোতি মসজিদ, ফিরোজাবাদ, জামি মসজিদ। 

৪. চারমিনার, আদিনা মসজিদ, একলাখি সমাধি, পঞ্চরত্ন মন্দির। 

9. রজমনামা, নল-দময়ন্তী, জাফরনামা, মনসামঙ্গল। 

10. ভারতনাট্যম, মোহিনীঅট্টম, কত্থক, ওড়িশি।

উত্তর:1. সুলতান 2. সং 3. মানসিংহ 4. আলাউদ্দিন খলজি 5. জিতল 6. লালকেল্লা 7. ফিরোজাবাদ ৪. চারমিনার 9. মনসামঙ্গল 10. মোহিনীঅট্টম।

বিবৃতির সাথে ব্যাখ্যা মেলাও: 

1. বিবৃতি: গুরু নানক লঙ্গরখানা গড়ে তুলেছিলেন- ব্যাখ্যা-১: সামাজিক বৈষম্য দূর করার উদ্দেশ্যে। ব্যাখ্যা-২: সকলকে ভোজন করানোর মাধ্যমে সন্তুষ্ট করতে। ব্যাখ্যা-৩: জনসাধারণের প্রিয়পাত্র হওয়ার উদ্দেশ্যে। 

2. বিবৃতি: কবীর বিশ্বাস করতেন- ব্যাখ্যা-১: ঈশ্বরলাভ করতে হলে ধর্মীয় রীতিনীতি পালনের গুরুত্ব অসীম। ব্যাখ্যা-২: মানুষ তার ভক্তির মাধ্যমেই ঈশ্বরলাভ করতে সক্ষম। ব্যাখ্যা-৩: মূর্তিপুজো বা গঙ্গাস্নান বা নামাজ পড়া ইত্যাদি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

3. বিবৃতি: আকবর প্রবর্তিত দীন-ই ইলাহির ভিত্তি ছিল- ব্যাখ্যা-১: ইসলামীয় রীতিনীতি ও আদর্শ। ব্যাখ্যা-২: হিন্দুধর্মের আদর্শ। ব্যাখ্যা-৩: সকল ধর্মের সমন্বয়বাদী আদর্শ। 

4. বিবৃতি: খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ-ঊনবিংশ শতকে গোটা পৃথিবীতে ইউরোপীয়রা সাম্রাজ্য স্থাপনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। কারণ- ব্যাখ্যা-১: ইউরোপীয়রা খুব দক্ষতার সঙ্গে শাসনকার্য চালাত। ব্যাখ্যা-২: ইউরোপীয়রা ছিল খুব চতুর। ব্যাখ্যা-৩: ভূগোল, ভৌতবিজ্ঞান, জীববিদ্যা এবং সামরিক প্রযুক্তিতে এই সময়ে ইউরোপে অভূতপূর্ব উন্নতি দেখা দিয়েছিল যা তাদের রাজত্ব প্রসারে সহায়ক হয়ে ওঠে।

উত্তর: 1. ব্যাখ্যা-১ 2. ব্যাখ্যা-২ 3. ব্যাখ্যা-৩ 4. ব্যাখ্যা-৩

একটি বাক্যে উত্তর দাও: 

1. সুলতানি ও মুঘল যুগে দেশের শাসকেরা কীসের বিনিময়ে জনসাধারণের শান্তিতে বাস করার ব্যবস্থা গড়ে তুলত? 

উত্তর: সুলতানি ও মুঘল যুগে দেশের শাসকেরা চাষির কাছ থেকে আদায়িকৃত কৃষিপণ্যের বিনিময়ে জনসাধারণের শান্তিতে বাস করার ব্যবস্থা গড়ে তুলত।

2. 'বহুলোলি মুদ্রা' কী।

উত্তর: সুলতান বঙলোল লোদির আমলে প্রচলিত মুদ্রা হল বহুলোলি মুদ্রা। 

3. কোন সুলতানের আমলে বাংলায় জিনিসপত্রের দাম খুর সভা ছিল? 

উত্তর: সুলতান মহম্মদ বিন তুঘলকের আমলে বাংলায় জিনিসপত্রের দাম খুব সম্ভা ছিল। 

4. 'বাটুল ছোড়া' নামক খেলাটি কোন্ অঞ্চলে প্রচলিত ছিল? 

উত্তর: 'বাঁটুল ছোড়া' নামক খেলাটি বাংলায় প্রচলিত ছিল। 

5. সময় মাপার উদ্দেশ্যে সমগ্র দিনরাতকে কীসে ভাগ করা হত! উত্তর: সময় মাপার উদ্দেশ্যে সমগ্র দিনরাতকে আটটি প্রহরে ভাগ করা হত। 

6. সুলতানি যুগে প্রচলিত দুটি ধর্মীয় মতবাদের নাম লেখো। 

উত্তর: সুলতানি যুগে প্রচলিত ত্রুটি ধর্মীয় মতবাদের নাম হল সুফিবাদ ও ভক্তিবাদ। 

7. ভঙ্গিবাদের মূল কথা কী ছিল! [হাওড়া যোগেশ চন্দ্র গার্লস স্কুল) 

উত্তর: ভক্তিবাদের মূল কথা ছিল ভগবানের প্রতি ভত্তের ভালোবাসা বা ভক্তি। 

৪. শিখদের ধর্মগ্রন্থের নাম কী? 

উত্তর: শিখদের ধর্মগ্রন্থের নাম হল পুরুপ্রশ্বসাহিব। 9 জিয়াউদ্দিন বারনি কে ছিলেন? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] উত্তর: মধ্যযুগে ভারতের বিখ্যাত ঐতিহাসিক ছিলেন জিয়াউদ্দিন বারনি। 

10. একজন মহিলা ভক্তিবাদী সাধিকার নাম লেখো। 

উত্তর: একজন মহিলা ভক্তিবাদী সাধিকার নাম হল মীরাবাঈ। 

11. সপ্ত রামানন্দের কয়েকজন শিষ্যের নাম লেখো। 

উত্তর: সত্ত রামানন্দের কয়েকজন শিষ্য ছিলেন রবিদাস, সাঁই, সাধনা প্রমুখ। 

12. কবীর কার শিষ্য ছিলেন? 

উত্তর: কবীর রামানন্দের শিষ্য ছিলেন। 

13. দোহা কী? [আর বি বি হাই স্কুল; চিত্তরঞ্জন গার্লস হাই স্কুল] 

উত্তর: কবীর রচিত হিন্দি ভাষায় দুই পত্তির কবিতা হল দোহা। 

14. 'সুফ' কথার অর্থ কী? 

উত্তর: সুফ কথার অর্থ হল পশমের তৈরি এক টুকরো কাপড়। 

15. ভারতে চিশতি সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা কে? [সাঁতরাগাছি কেদারনাথ ইন্সটিটিউশন] 

উত্তর: ভারতে চিশতি সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা হলেন মইনউদ্দিন চিশতি। 

16. দিল্লিতে কোন সুফি সাধক চিশতি মতবাদকে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। 

উত্তর: সুফি সাধক কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকি দিল্লিতে চিশতি মতবাদকে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। 

17. সুহরাবর্দি সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা কে ছিলেন? (সিমলাপাল এম এম হাই স্কুল) 

উত্তর: সুহরাবদি সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বদরউদ্দিন জাকারিয়া। 

18. ভারতবর্ষের কোন নৃত্যশৈলীতে ভক্তিবাদের প্রভার পড়েছিল? 

উত্তর: ভারতবর্ষের মণিপুরি নৃত্যশৈলীতে ভক্তিবাদের প্রভাব পড়েছিল। 

19. বাংলায় কে ভক্তিবাদের প্রসার ঘটিয়েছিলেন! 

উত্তর: শ্রীচৈতন্য বাংলায় ভক্তিবাদের প্রসার ঘটিয়েছিলেন। 

20. শ্রীচৈতন্যদেব কত খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন? 

উত্তর: শ্রীচৈতন্যদেব ১৪৮৫ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। 

21. 'চৈতন্যচরিতামৃত' গ্রন্থের রচয়িতা কে? 

উত্তর: 'চৈতন্যচরিতামৃত' গ্রন্থের রচয়িতা হলেন কুরদাস কবিরাজ। 

22. কাকে কেন্দ্র করে বাংলা ভাষায় জীবনীসাহিত্য লেখার ধারা বিকশিত হয়েছিল? 

উত্তর: শ্রীচৈতনাদেবকে কেন্দ্র করে বাংলা ভাষায় জীবনীসাহিতা লেখার ধারা বিকশিত হয়েছিল। 

23. উত্তর-পূর্ব ভারতের অসমে ভক্তি আন্দোলনের নেতৃত্বে কে ছিলেন। 

উত্তর: উত্তর-পূর্ব ভারতের অসমে ভত্তি আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন শ্রীমন্ত শঙ্করদেব। 

24. মুঘল রাজসভায় আগত প্রথম ইংরেজ দূত কে ছিলেন? 

উত্তর: মুঘল রাজসভায় আগত প্রথম ইংরেজ দূত ছিলেন টমাস রো। 

25. ইসলামি স্থাপত্যের মূল বৈশিষ্ট্য কী ছিল? 

উত্তর: ইসলামি স্থাপত্যের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল খিলান এবং গম্বুজ। 

26. কোন যুদ্ধজয়ের পরে কুতুবউদ্দিন আইবক কুয়াত- উল ইসলাম মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন? 

উত্তর: তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধজয়ের পরে কুতুবউদ্দিন আইবক কুয়াত-উল ইসলাম মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। 

27. 'বাদগির' কী? 

উত্তর: ফতেহপুর সিকরির পঞ্চমহলকে বলে 'বাদপির'। 

28. পুজরাট জয়ের স্মৃতিতে আকবর কোন্ স্থাপত্য নির্মাণ করেছিলেন? 

উত্তর: গুজরাট জয়ের স্মৃতিতে আকবর বুলন্দ দরওয়াজা নির্মাণ করেছিলেন। 

29. সম্রাট জাহাঙ্গিরের আত্মজীবনীর নাম কী? [আর বি বি হাই স্কুল; চিত্তরঞ্জন গার্লস হাই স্কুল) 

উত্তর: সম্রাট জাহাঙ্গিরের আত্মজীবনীর নাম হল 'তুজুক-ই জাহাঙ্গিরি'। 

30. মুঘল আমলের কোন্ স্থাপত্যে পিয়েত্রা দুরার ব্যবহার দেখা যায়? 

উত্তর: ইতিমাদ-উদ দৌলার সমাধি সৌধে পিয়েতা দুরার ব্যবহার দেখা যায়। 

31. তাজমহলের নির্মাতা কে? 

উত্তর: তাজমহলের নির্মাতা হলেন মুঘল সম্রাট শাহ জাহান। 

32. 'সংগীত শিরোমণি' ও 'মান-কৌতূহল' বই দুটির মিল কোথায়? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] 

উত্তর: 'সংগীত শিরোমণি' ও 'মান-কৌতূহল' দুটি বই সংগীত বিষয়ে লেখা। 

33. ঔরঙ্গজেবের আমলে স্থাপত্যশিল্পের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন কী? 

উত্তর: ঔরঙ্গজেবের বেগমের স্মৃতিতে ঔরঙ্গাবাদে নির্মিত বিবি-কা মকবারা হল ঔরঙ্গজেবের আমলে স্থাপত্যশিল্পের শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। 

34. ভারতবর্ষের সর্ববৃহৎ গম্বুজটির প্রতিষ্ঠাতা কে? 

উত্তর: ভারতবর্ষের সর্ববৃহৎ গম্বুজটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন মহম্মদ আদিল শাহ। 

35. বাংলায় স্থাপত্যরীতির মূল বৈশিষ্ট্য কী ছিল? 

উত্তর: বাংলায় স্থাপত্যরীতির মূল বৈশিষ্ট্য ছিল ইমারতে ইটের ব্যবহার। 

36. একরত্ন মন্দির কী? 

উত্তর: সাধারণ আয়তক্ষেত্রাকার কাঠামোর ওপর একটি চূড়া দিয়ে নির্মিত মন্দির হল একচূড়া মন্দির বা একরত্ন মন্দির। 

37. আদিনা মসজিদ কে নির্মাণ করেন? [নসিবপুর হাই স্কুল] 

উত্তর: আদিনা মসজিদ নির্মাণ করেন সিকান্দর শাহ। 

38. একলাখি সমাধি কোন্ সুলতানের সমাধি সৌধ? 

উত্তর: একলাখি সমাধি হল সুলতান জালালউদ্দিনের সমাধি সৌধ। 

39. গৌড়ের সবচেয়ে বড়ো মসজিদ কোন্টি? 

উত্তর: গৌড়ের সবচেয়ে বড়ো মসজিদ হল বড়ো সোনা মসজিদ।

40. কোন্ মুঘল সম্রাটের আমল থেকে ছবিতে শিল্পীর স্বাক্ষর করার প্রথার সূচনা ঘটে? 

উত্তর: মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গিরের আমল থেকে ছবিতে শিল্পীর স্বাক্ষর করার প্রথার সূচনা ঘটে। 

41. শাহ জাহানের আমলে কোন্ বিখ্যাত গ্রন্থ অলংকৃত হয়েছিল? 

উত্তর: শাহ জাহানের আমলে বিখ্যাত গ্রন্থ 'পাদশাহনামা' অলংকৃত হয়েছিল। 

42. বিজাপুরের সুলতান দ্বিতীয় ইব্রাহিম আদিল শাহের আমলের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী কে ছিলেন? 

উত্তর: বিজাপুরের সুলতান দ্বিতীয় ইব্রাহিম আদিল শাহের আমলের শ্রেষ্ঠ চিত্রশিল্পী ছিলেন ফারুক হোসেন। 

43. জাহাঙ্গির কাকে 'নাদির অল-অস্ত্র' উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন? 

উত্তর: জাহাঙ্গির চিত্রশিল্পী ফারুক হোসেনকে 'নাদির অল- অস্ত্র' উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। 

44. মুঘল যুগে আঞ্চলিক চিত্রকলার মূল বিষয় কী ছিল? 

উত্তর: মুঘল যুগে আঞ্চলিক চিত্রকলার মূল বিষয় ছিল পৌরাণিক নানা দৃশ্য ও বিষয়।

45. দিল্লির কোন্ সুলতানের আমলে শাস্ত্রীয় সংগীতের চর্চা করা হত? 

উত্তর: দিল্লির সুলতান ফিরোজ শাহ তুঘলকের আমলে শাস্ত্রীয় সংগীতের চর্চা করা হত। 

46. হোসেন শাহ শরকি সৃষ্ট সংগীত রাগ কী নামে পরিচিত? 

উত্তর: হোসেন শাহ শরকি সৃষ্ট সংগীত রাগ হোসেনি বা জৌনপুরি রাগ নামে পরিচিত। 

47. কোন্ শাসকের আমলে শাস্ত্রীয় ধ্রুপদ সংগীত সংস্কৃত থেকে হিন্দিতে অনূদিত হয়েছিল? 

উত্তর: গোয়ালিয়রের রাজা মান সিং তোমরের আমলে শাস্ত্রীয় ধ্রুপদ সংগীত সংস্কৃত থেকে হিন্দিতে অনূদিত হয়েছিল। 

48. খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ-ষোড়শ শতকের একটি সংগীত গবেষণা গ্রন্থের নাম লেখো। 

উত্তর: খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ-ষোড়শ শতকের একটি সংগীত গবেষণা গ্রন্থের নাম হল 'মান-কৌতূহল'। 

49. আকবরের সভায় শ্রেষ্ঠ সংগীতশিল্পী কে ছিলেন? 

উত্তর: আকবরের সভায় শ্রেষ্ঠ সংগীতশিল্পী ছিলেন তানসেন। 

50. তানসেন কোন্ কোন্ রাগ সৃষ্টি করেছিলেন? 

উত্তর: তানসেন দীপক, মেঘমল্লার প্রভৃতি রাগ সৃষ্টি করেছিলেন। 

51. আমির খসরু সৃষ্ট সংগীত রীতিগুলি কী কী? 

উত্তর: আমির খসরু সৃষ্ট সংগীত রীতিগুলি হল খেয়াল, তরানা, কওয়ালি প্রভৃতি। 

52. ভারতীয় ধ্রুপদি নৃত্যশৈলীর মধ্যে নবীনতম নৃত্যশৈলী কোন্টি? 

উত্তর: ভারতীয় ধ্রুপদি নৃত্যশৈলীর মধ্যে নবীনতম নৃত্যশৈলী হল মণিপুরি নৃত্যশৈলী।

53. মণিপুরি রাসলীলার ধারাকে বিকশিত করতে মণিপুরের কোন্ রাজার অবদান অপরিসীম? 

উত্তর: মণিপুরি রাসলীলার ধারাকে বিকশিত করতে মণিপুরের মহারাজা ভাগ্যচন্দ্রের অবদান অপরিসীম। 

54. 'ফতাওয়া-ই আলমগিরি' বইটি কোন্ বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে লেখা? 

উত্তর: 'ফতাওয়া-ই আলমগিরি' বইটি আইনব্যবস্থার ওপর ভিত্তি করে লেখা। 

55. আমির খসরু ফারসি সাহিত্যের কোন্ নতুন রচনাশৈলীর স্রষ্টা ছিলেন? 

উত্তর: আমির খসরু ফারসি সাহিত্যের নতুন রচনাশৈলী 'সবক-ই হিন্দ' এর স্রষ্টা ছিলেন। 

56. কাশ্মীরের কোন্ সুলতানের পৃষ্ঠপোষকতায় 'রাজতরঙ্গিনী' এবং 'মহাভারত' ফারসিতে অনূদিত হয়েছিল? 

উত্তর: কাশ্মীরের সুলতান জৈন-উল আবেদিনের পৃষ্ঠপোষকতায় 'রাজতরঙ্গিনী' ও 'মহাভারত' ফারসিতে অনূদিত হয়েছিল। 

57. হাসান নিজামি রচিত একটি বইয়ের নাম লেখো। 

উত্তর: হাসান নিজামি রচিত একটি বইয়ের নাম 'তাজ-উল মাসির'।

58. বাবরের আত্মজীবনীর নাম কী? [সাঁতরাগাছি কেদারনাথ ইন্সটিটিউশন ফর গার্লস] 

উত্তর: বাবরের আত্মজীবনীর নাম হল 'তুজুকই বাবরি' বা 'বাবরনামা'। 

59. 'বাবরনামা' কোন ভাষায় লিখিত? 

উত্তর: 'বাবরনামা' তুর্কি ভাষায় লিখিত। 

60. 'হুমায়ুননামা' কে লেখেন? (আমতলা অন্নদামণি বালিকা বিদ্যালয়) 

উত্তর: 'হুমায়ুননামা' লেখেন গুলবদন বেগম। 61 হুমায়ুনের সভাকবি কে ছিলেন? উত্তর: চুমায়ুনের সভাকবি ছিলেন কাসিম খান মৌজি। 

62. বদাউনি কোন্ বিখ্যাত মহাকাব্যের অনুবাদ করেছিলেন! 

উত্তর: বদাউনি বিখ্যাত মহাকাব্য রামায়ণের অনুবাদ করেছিলেন। 

63. ফারসি ভাষায় কে বেদ অনুবাদ করেছিলেন? 

উত্তর: ফারসি ভাষায় হাজি ইব্রাহিম সিদ্ধি বেদ অনুবাদ করেছিলেন। 

64. 'তবকাত-ই আকবরি' গ্রন্থের লেখক কে? 

উত্তর: 'তবকাতই আকবরি' গ্রন্থের লেখক হলেন নিজামউদ্দিন আহমেদ। 

65. সম্রাট জাহাঙ্গিরের আমলের একজন প্রসিদ্ধ কবির নাম লেখো। 

উত্তর: সম্রাট জাহাঙ্গিরের আমলের একজন প্রসিদ্ধ কবির নাম হল তালিব আমুলি। 

66. 'শ্রীকৃয়কীর্তন' কার লেখা? 

উত্তর: 'শ্রীকৃয়কীর্তন' বড়ু চণ্ডীদাসের লেখা। 

67. কাশীরাম দাস কোন্ মহাকাব্যের অনুবাদক ছিলেন? 

উত্তর: কাশীরাম দাস মহাভারত মহাকাব্যের অনুবাদক ছিলেন। 

68. সৈয়দ আলাওলের 'পদ্মাবতী' কাব্যে কোন্ রাজ্য অভিযানের কথা বর্ণিত হয়েছে? 

উত্তর: সৈয়দ আলাওলের 'পদ্মাবতী' কাব্যে সুলতান আলাউদ্দিন খলজির চিতোর রাজ্য অভিযানের কথা বর্ণিত আছে। 

69. একাদশ শতকের কোন্ বই থেকে আমরা বিজ্ঞান সম্পর্কিত তথ্য পেয়ে থাকি? 

উত্তর: একাদশ শতকের 'কিতাব-অল হিন্দ' বই থেকে আমরা বিজ্ঞান সম্পর্কিত তথ্য পেয়ে থাকি। 

70. 'কিতাব-অল হিন্দ'-এর রচয়িতা কে? 

উত্তর: 'কিতাব-অল হিন্দ'-এর রচয়িতা হলেন অল বিরুনি। 

71. কোন দেশে প্রথম কাগজ আবিষ্কৃত হয়? [আর বি বি হাই স্কুল] 

উত্তর: বিশ্বে প্রথম কাগজ আবিষ্কৃত হয়েছিল চিন দেশে। 

72. ভারতে চরকা যন্ত্রের প্রথম উল্লেখ আমরা কোন্ বইতে পেয়ে থাকি? 

উত্তর: ভারতে চরকা যন্ত্রের প্রথম উল্লেখ আমরা ইসামির ফুতুহ-উস সালাতিন বইতে পেয়ে থাকি। 

73. পারসিক চক্রের অপর নাম কী? 

উত্তর: পারসিক চক্রের অপর নাম হল সাকিয়া।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর মান 2 দু/তিনাট বাক্যে উত্তর দাও: 

1. সুলতানি ও মুঘল যুগে নদীর ধারে কেন শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠতে দেখা যেত? 

উত্তর: কাঁচামাল আমদানি ও উৎপন্ন পণ্য রপ্তানির সুবিধার জন্য সুলতানি ও মুঘল যুগে নদীর ধারেই অধিকাংশ শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠত। যেমন-বাংলা ও গুজরাটে এই সুবিধা থাকায় সেখানে শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠেছিল। 

2. মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে অব্রাত্মণদের ধর্মীয় ক্ষেত্রে কী বাধানিষেধ ছিল? 

উত্তর: মধ্যযুগীয় ভারতবর্ষে অব্রাহ্মণরা পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠ কিংবা সমানভাবে মন্দিরে যাওয়ার অধিকার থেকে বস্থিত ছিল। এ ছাড়া অন্য জাতি বা বর্ণের মধ্যে একসঙ্গে খাওয়া বা বিয়ে করাও নিষিদ্ধ ছিল। 

3. ভক্তিবাদের দুটি বৈশিষ্ট্য কী ছিল? [নসিবপুর হাই স্কুল; সারগাছি রামকৃয় মিশন হাই স্কুল] 

উত্তর: ভত্তিবাদের প্রথম বৈশিষ্ট্য হল ভগবানের কাছে পুরোপুরি আত্মসমর্পণ। এর দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য হল ঈশ্বরলাভের জন্য জ্ঞান বা যোগ ছেড়ে ভক্তের ভক্তিকেই প্রাধান্য দেওয়া। 

4. দক্ষিণ ভারতের দুটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর নাম লেখো। 

উত্তর: মধ্যযুগের ভারতে জীবনযাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ছিল ধর্ম। দক্ষিশ ভারতের দুটি জনপ্রিয় ধর্মীয় গোষ্ঠী হল অলভার এবং নায়নার সাধকগণ। 

5. 'জোড়-বাংলা' কী? [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন; চিত্তরঞ্জন গার্লস হাই স্কুল] 

উত্তর: বাংলার স্থাপত্যরীতির একটি বৈশিষ্ট্য হল ইমারতে ইটের ব্যবহার। বেশি বৃষ্টিতে যাতে জল দাঁড়াতে না পারে, তার জন্য বাড়ি এবং বেশিরভাগ মন্দির চালু ধাঁচের তৈরি করা হত। বাংলার স্থাপত্যে এমনই দুটি কাঠামো পাশাপাশি জুড়ে দিলে যে কাঠামো তৈরি হয়, তাকে বলে 'জোড়- বাংলা'। 

6. খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ-পঞ্চদশ শতকের কয়েকজন ভক্তিবাদী সাধকের নাম লেখো। 

উত্তর: খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ-পঞ্চদশ শতকে ভারতবর্ষের কয়েকজন অতীব জনপ্রিয় ভক্তিবাদী সাধক হলেন- নামদেব, জ্ঞানেশ্বর, তুকারাম, রামানন্দ, কবীর, নানক, শঙ্করদেব, চৈতন্যদেব, মীরাবাঈ প্রমুখ। 

7. কীসের ভিত্তিতে শিখধর্ম গড়ে উঠেছিল? 

উত্তর: নানক নিজে কোনো ধর্ম প্রতিষ্ঠা করে যাননি। গুরু নানকের দর্শন এবং বাণীর ওপর ভিত্তি করে তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর অনুরাগীরা শিখধর্ম গড়ে তোলে। 

৪. চিশতি সম্প্রদায়ের দুইজন সাধকের নাম লেখো। 

উত্তর: ভারতে চিশতি সম্প্রদায়ের দুইজন সাধক হলেন- শেখ নিজামউদ্দিন আউলিয়া ও বখতিয়ার কাকি। 

9. বা-শরা কাদের বলা হত? 

উত্তর: ভারতের সুফি সম্প্রদায়ের একটি প্রধান বিভাগ ছিল বাশরা। বা-শরা সুফি সম্প্রদায় বলতে বোঝাত যারা ইসলামীয় আইন বা শরা মেনে চলতেন।

10. চিশতি সুফিরা রাজনীতি থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন কেন? 

উত্তর: চিশতি সুফিরা রাজনীতি থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখতেন। এর কারণ তাঁদের বিশ্বাস ছিল যে রাজ্য পরিচালনার কাজে জড়িয়ে পড়লে কোনোভাবেই ঈশ্বরসাধনা সম্ভব নয়। 

11. চৈতন্যপ্রবর্তিত কীর্তনের বিশেষত্ব কী? 

উত্তর: শ্রীচৈতন্যদেব বাংলায় কীর্তন গানকে জনসংযোগের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেন। তিনি নামকীর্তন ও নগরকীর্তন নামক দু-রকমের কীর্তন সংগঠিত করেন। 

12. নগরকীর্তন কী? 

উত্তর: নেচে নেচে দু-হাত তুলে গান গেয়ে চলাই কীর্তনের বৈশিষ্ট্য ছিল। শ্রীচৈতন্যদেব প্রবর্তিত এক ধরনের কীর্তন হল নগরকীর্তন, যা নগরে শোভাযাত্রা করে ঘুরে ঘুরে গাওয়া হত। 

13. কোন্ ধরনের গানে আজও বৈয়ব প্রভাব লক্ষ করা যায়? 

উত্তর: বৈম্নবগান ও কবিতায় সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের ছবিই ধরা পড়ে। ঘাঁটু, ঘাঁটু-তেলেনা, পটুয়া, রাসলীলা, পৌষ-পার্বণ ইত্যাদি গানে আজও বৈম্নব প্রভাব লক্ষ করা যায়। 

14. গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের সমাধির বৈশিষ্ট্য কী ছিল? উত্তর: দিল্লির তুঘলকাবাদে গিয়াসউদ্দিন তুঘলকের সমাধি অবস্থিত। এই সমাধির বৈশিষ্ট্য ছিল খাড়া দেয়ালের পরিবর্তে গম্বুজ বসানো ঢালু দেয়ালের উপস্থিতি। 

15. 'চাহার বাগ' কাকে বলে? [নসিবপুর হাই স্কুল] 

উত্তর: মুঘল সম্রাট বাবরের সময়কাল থেকে চার ভাগে ভাগ করা একরকম সাজানো বাগান মুঘল আমলে বানানো হত। একে বলা হত চাহার বাগ। 

16. গৌড়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য নিদর্শনগুলি কী কী? 

উত্তর: গৌড়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য নিদর্শনগুলি হল-শেখ আকি সিরাজের সমাধি, দাখিল দরওয়াজা, তাঁতিপাড়া মসজিদ, গুম্মত মসজিদ, ফিরোজ মিনার, লোটান মসজিদ এবং বড়ো সোনা মসজিদ ইত্যাদি। 

17. তসভির কাকে বলে? 

উত্তর: কোনো কিছুর সঙ্গে সাদৃশ্য মিলিয়ে ছবি আঁকাকে বলে তসভির। সম্রাট আকবর এই ধরনের ছবি আঁকার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। 

18. আকবরের আমলের উল্লেখযোগ্য চিত্রশিল্পীদের নাম লেখো। 

উত্তর: আকবরের আমলে বহু চিত্রশিল্পী পরিচিতি পায়। তাঁর আমলের উল্লেখযোগ্য চিত্রশিল্পীরা হলেন মির সঈদ আলি, খোয়াজা আবদুস সামাদ, দসবন্ত, বসওয়ান প্রমুখ। 

19. সংগীতজ্ঞ হিসেবে আমির খসরুর অবদান কী? 

উত্তর: সুলতানি আমলে আমির খসরু হিন্দুস্তানি এবং ইরানি সংগীতের মিলন ঘটিয়েছিলেন। খেয়াল, তরানা, কওয়ালি প্রভৃতি সংগীতরীতিগুলি তাঁরই সৃষ্টি। এ ছাড়া সেতার, তবলা, পাখোয়াজ প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্রগুলিও তাঁর সৃষ্ট বলে মনে করা হয়।

20. ভারতবর্ষের ধ্রুপদি নাচগুলি কী কী? 

উত্তর: ভারতবর্ষের ধ্রুপদি নাচ মূলত ছয় প্রকার। সেগুলি হল-ভারতনাট্যম, কথাকলি, ওড়িশি, কুচিপুড়ি, কথক এবং মণিপুরি। 

21. সুলতানি যুগে ফারসি ভাষার কয়েকজন বিখ্যাত ঐতিহাসিকের নাম লেখো। 

উত্তর: ভারতে ফারসি সাহিত্যের শুরু সুলতানি শাসনের হাত ধরে। সুলতানি যুগে ফারসি ভাষার পৃষ্ঠপোষক কয়েকজন বিখ্যাত ঐতিহাসিক হলেন মিনহাজ-ই সিরাজ, ইসামি এবং জিয়াউদ্দিন বারনি। 

22. 'তুতিনামা' কী? 

উত্তর: জিয়া নকশাবি সংস্কৃত ভাষায় লেখা গল্পমালা ফারসিতে অনুবাদ করেন। তিনি এর নাম দেন 'তুতিনামা"। 

23. মুঘল আমলের কয়েকজন কবির নাম লেখো। 

উত্তর: মুঘল সম্রাটরা ছিলেন সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক। মুঘল আমলের কয়েকজন কবি হলেন ফৈজি, উরফি, নাজিরি, বেদিল প্রমুখ। 

24. মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে লিখিত ইতিহাস গ্রন্থগুলোর নাম লেখো। উত্তর: মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে লিখিত উল্লেখযোগ্য ইতিহাস গ্রন্থগুলি হল 'আকবরনামা' ও 'আইন-ই আকবরি', 'মুন্তাখাব-উৎ তওয়ারিখ' এবং 'তবকাত-ই আকবরি' ইত্যাদি। 

25. পদাবলি সাহিত্য কী? 

উত্তর: মধ্যযুগে শ্রীকৃম্নকে কেন্দ্র করে কাব্য লেখার চল ছিল। রাধাকৃম্নকে নিয়ে বাংলা ভাষায় পদ-কবিতা লেখার ধারাকেই বলা হয় পদাবলি সাহিত্য।

26. নাথ সাহিত্য কাকে বলে? 

উত্তর: নাথযোগী নামক ধর্মসম্প্রদায়ের যোগীদের ধর্মকর্ম, আচার-আচরণ নিয়ে যে সাহিত্য রচিত হত তা নাথ সাহিত্য নামে পরিচিত। এই লেখাগুলিতে সন্ন্যাস জীবনযাপনের ওপর জোর দেওয়া হত। 

27. ভারতে কোন্ কোন্ অঞ্চলে চাহার বাগ দেখা যায়? 

উত্তর: খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতকে মুঘলরা ভারতে নিয়ে আসে এক নতুন বাগান বানানোর কৌশল, যা চাহার বাগ নামে পরিচিত। কাশ্মীরের নিসাতবাগ, দিল্লিতে হুমায়ুনের সমাধি ও আগ্রাতে তাজমহলে চাহার বাগের নিদর্শন পাওয়া যায়। 

28. পারসিক চক্র বলতে কী বোঝ? [কে জি টি আই] 

উত্তর: খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতক নাগাদ পারস্য দেশ থেকে পারসিক চক্রের কৌশল ভারতে আসে। ছোটো নাগরদোলার মতো দেখতে কাঠের তৈরি যে যন্ত্রের মাধ্যমে পশুশক্তির সাহায্যে কুয়ো বা খাল থেকে জল তোলা যেত সেই যন্ত্র পারসিক চক্র নামে পরিচিত ছিল।  

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর চার/পাঁচটি বাক্যে উত্তর দাও: মান 3 

1. মধ্যযুগে ভক্তিবাদের উত্থানের কারণগুলি কী ছিল? 

উত্তর: অষ্টম শতক নাগাদ পুষ্যভূতি বংশের রাজা হর্ষবর্ধনের পতনের পর সেখানকার কয়েকজন রাজা বিশেষ ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেন। এই রাজাদের সমর্থন করতেন ব্রাহ্মণ পুরোহিতরা। সেসময় থেকেই রাজপুত এবং ব্রাহ্মণদের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি হয়। ফলে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের বাইরে নতুন কোনো ধর্মভাবনা উত্তর ভারতে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তবে সেসময়েও ভক্তিবাদের নানা বৈশিষ্ট্য নিয়ে চর্চা চলেছিল। নাথপর্শী, যোগী ইত্যাদি ধর্মীয় গোষ্ঠী এর প্রমাণ। খ্রিস্টীয় সপ্তম শতকের গোড়ায় দক্ষিণ ভারতে এই সমস্ত সাধকদের মাধ্যমেই ডক্তিবাদ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। 

2. মধ্যযুগে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা কেমন ছিল? [পর্যদ নমুনা প্রশ্ন: হরেকনগর এ এম ইন্সটিটিউশন) 

উত্তর: সমাধানসহ পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলির 'বিশদে উত্তর দাও' বিভাগের 1 নং প্রশ্নের উত্তরটি দ্যাখো। 

3. কবীরের দর্শন সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো। 

উত্তর: খ্রিস্টীয় পনেরো-ষোলো শতকের ভক্তিবাদী সাধকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন কবীর। তিনি ছিলেন রামানন্দের শিষা। তাঁর চিন্তাভাবনায় ইসলামের একেশ্বরবাদের সঙ্গে বৈয়ব, নামযোগী এবং তান্ত্রিক বিশ্বাসের মিলন ঘটেছিল। তিনি মনে করতেন সব ধর্মই এক, সব ঈশ্বরই সমান। রাম, রহিম, গোবিন্দ, আল্লাহ্, সাঁই, সাহিব একই ঈশ্বরের ডিন্ন নাম। কবীর ধর্মের কারণে মন্দির-মসজিদ যাওয়া, মূর্তিপুজো, গঙ্গাস্নান, নামাজ পড়া ইত্যাদির কোনো প্রয়োজন নেই বলে মনে করতেন। তাঁর মতে ভক্তিভরে ডাকলেই ঈশ্বরকে পাওয়া যায়। কবীরের এই জীবনদর্শন সমাজে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ ও বিরোধ মেটানোর ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক হয়ে উঠেছিল। তাঁর এই দর্শনকে তিনি সহজ-সরল ভাষায় রচিত দোহার মাধ্যমে সমাজের সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। 

4. সুলতানি ও মুঘল যুগে সামরিক প্রযুক্তির ক্ষেত্রে কী কী পরিবর্তন ঘটেছিল তা বিশ্লেষণ করো। [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন] 

উত্তর: সমাধানসহ পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলির 'বিশদে উত্তর দাও' বিভাগের ৭ নং প্রশ্নের উত্তরের 'সামরিক প্রযুক্তি' শীর্ষক অংশটি দ্যাখো। 

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর আট/দশটি বাক্যে উত্তর দাও: মান 5 

1. মধ্যযুগের ভারতে সুফি সাধকদের অবদান সংক্ষেপে লেখো। 

উত্তর: মধ্যযুগের ভারতে চিশতি ও সুহরাবর্দি সুফিদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল। নিজেদের খোলামেলা জীবন এবং শান্তির বাণীর মধ্যে দিয়ে তাঁরা সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। সুলতানি যুগে অ- মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ সুফি সাধকদের মানবতাবাদী, মানবদরদী কথায় অনেকটাই আস্থা রেখেছিলেন। সুফিধর্ম মানুষের কাছে সহজ-সরল কথাগুলি পৌঁছোতে পেরেছিল। তেমনই তাদের বোঝাতে পেরেছিল যে, ঈশ্বরলাভের একমান্ড উপায় হল মনের ভক্তি দিয়ে আরাধনা করা। 

সেকালের সংস্কৃতির ওপরও সুফি প্রভাব পড়েছিল, যার প্রমাণ পাওয়া যায় ভারতের নানা স্থান থেকে। আসলে খ্রিস্টীয় দশম-একাদশ শতক থেকে নানা ধর্মীয় আইনকানুনের বাইরে বহু মুসলমান ঈশ্বরকে নিজের মতো করে আরাধনার পথ খুঁজেছিলেন। সুফিসন্তরা মানুষকে এই পথে পরিচালিত করেছিলেন। তা ছাড়া সুফিবাদ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও আড়ম্বরের ঘোর বিরোধী হওয়ায়, সাধারণ মানুষ একে সহজেই গ্রহণ করেছিল। 

2. চৈতন্যের ভক্তি আন্দোলন প্রচারের মূল কাঠামোটি ব্যাখ্যা করো। [পর্ষদ নমুনা প্রশ্ন) 

উত্তর: শ্রীচৈতন্যদেব বৈয়বভক্তি প্রচার এবং প্রসারের জন্য একটি পরিকল্পিত কাঠামো তৈরি করেছিলেন। [১] জাতবিচার না করা: শ্রীচৈতন্যের নেতৃত্বে নবদ্বীপে যে বৈয়ব গোষ্ঠী সংগঠিত হয়, তাতে জাতবিচার ছিল না। [b] নামগান: চৈতন্য ঘরে ঘরে নামগান প্রচারের ব্যবস্থা করেন। তার সঙ্গে বিশাল শোভাযাত্রা করে নগরকীর্তনের ব্যবস্থা করেন। [c] উচ্চ-নীচ ভেদ না করা: চৈতন্য নিজে উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণ হলেও, বিভিন্ন পেশার মানুষ এবং তথাকথিত নীচু জাতির মানুষদের সঙ্গে ব্যক্তিগত যোগাযোগ তৈরি করেছিলেন। [d] লোকধর্মের বিরোধিতা না করা: কোনো প্রচলিত লোকধর্মের বিরোধিতা চৈতন্যদেব করেননি। ভক্তি প্রচারকেই একমাত্র ধর্ম হিসেবে তুলে ধরেননি। [e] ধর্মীয় অত্যাচারের প্রতিবাদ করা: হিন্দু-মুসলমান শাসকদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সংঘটিত করেন চৈতন্য এবং তাঁর অনুগামীরা। জগাই-মাধাইয়ের অত্যাচারের বিরোধিতা, গোঁড়া ব্রাহ্মণদের প্রতিবাদ, কীর্তন-বিরোধী নবদ্বীপের কাজিকে তর্কযুদ্ধে পরাজিত করা ইত্যাদির মাধ্যমে চৈতন্য বৈয়ব আন্দোলনকে শক্তিশালী করে তোলেন। [f] নাটক অভিনয়: চৈতন্য বৈয়বীয় নাটকের অভিনয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। জনগণের মুখের ভাষা বাংলায় ভক্তি প্রচার করার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। 

3. সুলতানি আমলের স্থাপত্যশিল্পের ক্ষেত্রে কী ধরনের পরিবর্তন আসে? 

উত্তর: সুলতানি শাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই ভারতীয় ও ইসলামি শিল্পের মিশ্রণ ঘটে। এরই ফলস্বরূপ তৈরি হয় ইন্দো- ইসলামীয় শিল্পরীতি। স্থাপত্যশিল্প নির্মাণ ছিল সুলতানদের আভিজাত্যের পরিচায়ক। তাই তাঁরা বড়ো বড়ো স্থাপত্য নির্মাণ করেন। সুলতানরা স্বয়ং এই বিষয়ে বিশেষ উদ্যোগী হয়েছিলেন। ফলে সুলতানি আমলে ধর্মচর্চার জন্য এবং অন্যান্য কারণে নানা স্থাপত্য নির্মাণ করা হয়। যেমন ধর্মচর্চার জন্য তৈরি করা হয় মসজিদ, মিনার এবং পড়াশোনার জন্য মাদ্রাসা, থাকার জন্য প্রাসাদ এবং সুরক্ষিত করার জন্য দুর্গ প্রভৃতি। সুলতান বা তাঁদের আত্মীয় মারা গেলে তাঁদের স্মৃতিরক্ষার্থে তৈরি করা হয় সৌধ, মিনার প্রভৃতি। সুলতানরা তাঁদের জীবদ্দশাতেই জাঁকজমকপূর্ণ সমাধি সৌধ নির্মাণ করতেন। এইসব স্থাপত্যগুলি নানা ভাবে কারুকার্যমণ্ডিত করা হত। 

4. মুঘল স্থাপত্যশিল্প সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো। 

উত্তর: মুঘল আমলে স্থাপত্যশিল্পে ব্যাপক পরিবর্তন আসে। মুঘল সম্রাটরা স্বয়ং ছিলেন স্থাপত্যশিল্পের সমঝদার। মুঘল সম্রাট বাবর সাজানো বাগান বা 'চাহার বাগা নির্মাণ করেছিলেন। 

হুমায়ুন দীন পনাহ নামক শহরটি নির্মাণ করেন। তবে মুঘল স্থাপত্যশিল্পের ব্যাপক প্রসার ঘটে সম্রাট আকবরের আমলে। তিনি দুর্গ-শহর এবং প্রাসাদ বানানোয় বিশেষ আগ্রহী ছিলেন। তাঁর আমলের স্থাপত্যশিল্পের মধ্যে আগ্রা দুর্গ, আজমির, লাহোর, কাশ্মীর, এলাহাবাদ প্রভৃতি দুর্গ উল্লেখযোগ্য। আকবর গুজরাট জয়ের স্মৃতিতে বানিয়েছিলেন বুলন্দ দরওয়াজা। তিনি ফতেহপুর সিকরি ও প্রাসাদ, মসজিদ, মহল, দরবার প্রভৃতি নির্মাণ করেছিলেন। মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গিরও চাহার বাগ নির্মাণ করেছিলেন। তাঁর আমলে কাশ্মীর ও আগ্রায় বাগান বানানো হয় এবং ইতিমাদ- উদ্ দৌলার সমাধি সৌধে পিয়েত্রা দুরার কারুকার্য দেখা যায়। মুঘল সম্রাট শাহ জাহান তৈরি করেছিলেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ স্থাপত্যনিদর্শন তাজমহল। এ ছাড়া তিনি লালকেল্লা, জামি মসজিদ, মোতি মসজিদ প্রভৃতিও নির্মাণ করেন। 

সম্রাট ঔরঙ্গজেবের আমলেও লালকেল্লার মধ্যে মসজিদ বানানো হয়। তিনি ঔরঙ্গাবাদে বিবি-কা মকবারা নামে বিখ্যাত স্থাপত্যশিল্পও নির্মাণ করেন। 

5. একটি করে স্থাপত্যের উদাহরণ-সহ সুলতানি ও মুঘল স্থাপত্যের মূল বৈশিষ্ট্যের তুলনামূলক আলোচনা করো।

উত্তর: সুলতানি স্থাপত্য [a] সুলতানি স্থাপত্যের একটি উদাহরণ হল—আলাউদ্দিন খলজির আমলে তৈরি আলাই দরওয়াজা। দিল্লির কুতুবমিনারের পাশে এটি অবস্থিত।

[b] সুলতানি স্থাপত্যে খাড়া দেয়ালের বদলে গম্বুজ বসানো ঢালু দেয়াল ছিল এর বৈশিষ্ট্য। আটকোনা সমাধিসৌধ নির্মাণ, মিনার নির্মাণে লাল বেলেপাথরের ব্যবহার সুলতানি যুগে প্রাধান্য পেয়েছিল।

মুঘল স্থাপত্য [a] মুঘল স্থাপত্যের সর্বশ্রেষ্ঠ নিদর্শন শাহ জাহানের আমলে আগ্রায় অবস্থিত তাজমহল। পত্নী স্মৃতিসৌধরূপে শাহ জাহান এটি তৈরি মমতাজ-এর করেন।

[b] মুঘল স্থাপত্যে দুর্গ নির্মাণ, সাদা মারবেল পাথরের ব্যবহার, বাগান তৈরি, দেয়ালে রং করা, পাথরে কারুকার্য, রাজপ্রাসাদ, দরবার প্রভৃতি নির্মাণ প্রাধান্য পেয়েছিল।

✔ পড়ার মাঝে মজার কাজ. 

1. পাঠ্যবইয়ের ১১২ নং পৃষ্ঠার ছবিগুলি ভালো করে দ্যাখো। ছবিগুলিতে কারা কী কী কাজ করছে? 

উত্তর: প্রশ্নে উল্লিখিত ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে, ধুনরিরা তুলো ধুনছে, রংকারীরা সুতো রং করছে, তাঁতিরা কাপড় বুনছে, জেলেরা মাছ ধরছে, শিকারিরা পাখি ধরছে এবং রাজমিস্ত্রিরা দুর্গ নির্মাণ করছে।

2. আলাউদ্দিন খলজি এবং মহম্মদ বিন তুঘলকের সময়ে পণ্যদ্রব্যের দামের তুলনা করলে কি কোনো তফাত দেখা যাবে? 

উত্তর: আলাউদ্দিন খলজির সময় অপেক্ষা মহম্মদ বিন তুঘলকের আমলে একমাত্র চিনি ছাড়া প্রায় সব খাদ্যশস্যের দাম বেশি ছিল। যব ও ধানের দাম বিন তুঘলকের আমলে দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। এ ছাড়া ভেড়ার মাংসের দাম প্রায় ৬ গুণ বেড়ে গিয়েছিল। 

3. গুরু নানক ও কবীরের কথা সাধারণ মানুষ সহজে বুঝতে পারতেন। এর পিছনে কী কী কারণ ছিল বলে তোমার মনে হয়? 

উত্তর: কবীর ও গুরু নানক দুজনেই জাতিভেদ মানতেন না। ধর্মীয় আচারের বিরোধী ছিলেন। তাঁরা দুজনেই সাধারণ মানুষের সহজ-সরল ভাষায় ধর্মবাণী প্রচার করতেন। গুরু নানক গুরুমুখী ভাষা এবং কবীর হিন্দি ভাষায় ভক্তিবাদ প্রচার করতেন। ফলে মানুষ সহজেই তা বুঝতে পারে। 

4. তোমাদের অঞ্চলে কোনো পুরোনো স্থাপত্য আছে? থাকলে বন্ধুরা মিলে সেখানে যাও। সেটা কবে তৈরি সেসব বিষয়ে ভালো করে জানো। সেসব খাতায় লিখে রাখো ও স্থাপত্যটির একটি ছবি আঁকো। 

উত্তর: আমাদের অঞ্চলের একটি পুরোনো স্থাপত্য হল ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল। এটি ১৯০৬-২১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে নির্মিত হয়। বড়োেলাট লর্ড কার্জন মহারানি ভিক্টোরিয়ার (১৮১৯-১৯০১ খ্রি.) স্মৃতিরক্ষার্থে এই স্থাপত্যটি নির্মাণ করেন। এর প্রধান স্থপতি ছিলেন উইলিয়ম ইমারসান।

5. ভেবে বলো তো, কেন শ্রীচৈতন্যকে দিয়েই বাংলায় জীবনীসাহিত্যের ধারা বিকশিত হয়েছিল? 

উত্তর: শ্রীচৈতন্যের জীবনীগুলি থেকে একদিকে সমকালীন সমাজ এবং অন্যদিকে ব্যক্তি চৈতন্যের বিষয়ে নানা কথা জানার ফলে বাংলায় জীবনী সাহিত্যের ধারা বিকশিত হয়েছিল। 

6. টমাস রো-এর বিবরণ পড়ে বাদশাহ জাহাঙ্গিরের সম্পর্কে তোমার কী ধারণা হয়? 

উত্তর: টমাস রো-এর বিবরণ পড়ে বোঝা যায় যে, জাহাঙ্গির ছিলেন একজন উদার ও অতিথিপরায়ণ শাসক। তিনি ছবি ভালোবাসতেন। ছবি আঁকার প্রতি তার অনুরাগ ছিল। অন্য দেশের প্রথা ও আদবকায়দাকে তিনি সম্মান জানাতেন। 

7. নাথ সাহিত্যের একটি বিখ্যাত অংশ হল ময়নামতীর কথা ও গোপীচন্দ্রের গান। ভেবে বলোতো, কীভাবে সেই যুগে এই গল্প দুটি বাংলা থেকে অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে থাকতে পারে? 

উত্তর: নাথ সাহিত্যের ময়নামতীর গান ও গোপীচন্দ্রের গান বা গল্পগুলি বাংলা থেকে অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল। নাথযোগীরা ছিলেন সন্ন্যাসী জীবনযাপনে বিশ্বাসী। তাঁরা বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে বেড়াতেন। তাঁদের মাধ্যমে এই গল্পগুলি ছড়িয়ে পড়েছিল বলে মনে হয়। 

৪. দিল্লির সুলতান ও মুঘল বাদশাহদের সময়ে তৈরি স্থাপত্যগুলির একটি তালিকা তৈরি করো। 

উত্তর: স্থাপত্য তালিকা ..

ভেবে বলো 

1. চৈতন্যচরিতামৃত গ্রন্থে কৃষ্ণদাস কবিরাজ লিখেছেন- "নীচ জাতি হৈলে নহে ভজনে অযোগ্য। যেই ভজে সেই বড়ো অভক্তহীন ছাড়। কৃয়জনে নাহি জাতকুলাদি বিচার।।” এর থেকে জাতপাতের প্রতি বৈষবভক্তি আন্দোলনের কীরকম দৃষ্টিভঙ্গির ছাপ পাওয়া যায়? 

উত্তর: প্রশ্নে উল্লিখিত 'চৈতন্যচরিতামৃত' থেকে উদ্ধৃত পত্তিগুলো প্রমাণ করে যে, সমকালের সমাজে জাতিভেদ প্রথা পুরোমাত্রায় বজায় ছিল। সামাজিক স্তরের এই বিভাজনে বৈম্নবভক্তি আন্দোলন সরাসরি কোনো আঘাত করতে চায়নি। কিন্তু, নিজস্ব ভক্তমণ্ডলীতে যাতে জাতপাতের ছায়া না পড়ে সেদিকে বৈম্নবদের সতর্ক দৃষ্টি ছিল। জাতপাত নির্বিশেষে সবারই যে ঈশ্বর উপাসনার অধিকার আছে, এ বিষয়ে কোনো দ্বিধা তাঁদের ছিল না।

 2. শ্রীচৈতন্যের সমসাময়িক নবদ্বীপের সামাজিক অবস্থা আর শ্রীচৈতন্যের ভেদাভেদহীন ভক্তিপ্রচার -এই দুয়ের মধ্যে কি কোনো যোগাযোগ খুঁজে পাওয়া যায়? 

উত্তর: খ্রিস্টীয় ষোড়শ শতকের বাংলায় জাতিধর্মবর্ণের ভেদাভেদ ছিল। এইসময় শ্রীচৈতন্য ও তাঁর সঙ্গীদের প্রচেষ্টায় বাংলায় ভক্তি আন্দোলনের প্রচার ও প্রসার জোরদার হয়। শ্রীচৈতন্য চেয়েছিলেন সমাজের সমস্ত ভেদাভেদের অবসান ঘটুক। তিনি বাংলায় বৈম্নবীয় ঐতিহ্য ও ভক্তিবাদের ভাবনাকে একাকার করে দেন। সেদিক থেকে বলতে গেলে শ্রীচৈতন্যের সামাজিক অবস্থা আর তাঁর ভেদাভেদহীন ভত্তিপ্রচার-এই দুয়ের মধ্যে গভীর যোগাযোগ খুঁজে পাওয়া যায়।



No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();