ঔপনিবেশিক ভারতের শাসন (পঞ্চম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন 2023 || HS History Class 12 || - SM Textbook

Fresh Topics

Tuesday, July 25, 2023

ঔপনিবেশিক ভারতের শাসন (পঞ্চম অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন 2023 || HS History Class 12 ||

  

ঔপনিবেশিক ভারতের শাসন (পঞ্চম অধ্যায়)  দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন 2023 || HS History Class 12 ||





১. মর্লে – মিন্টো সংস্কার আইনের প্রধান শর্ত কী ছিল ? 

উত্তরঃ মুসলিম সম্প্রদায়ের পৃথকভাবে সদস্য নির্বাচনের অধিকার দেওয়া । 

২. কে , কোন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নাইট উপাধি ত্যাগ করেন ? 

উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জালিয়ানওয়ালাবাগ – এর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ নাইট উপাধি ত্যাগ করেন । 

৩. মুসলিম লিগ কে প্রতিষ্ঠা করেন ? 

উত্তরঃ ঢাকার নবাব সলিম উল্লাহ মুসলিম লিগের প্রতিষ্ঠা করেন । 

৪. ব্রিটিশ ভারতের কয়েকটি বৃহত্তম দেশীয় রাজ্যের নাম লেখো । 

উত্তরঃ হায়দ্রাবাদ , কাশ্মীর , মহীশূর । 

৫. কেন গান্ধিজি অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করেন ? 

উত্তরঃ ১৯২২ আন্দোলন চলাকালীন উত্তরপ্রদেশের চৌরিচৌরায় কিছু আন্দোলনকারী একদল পুলিশকে পুড়িয়ে মারে । সহিংস আচরণের জেরে ক্ষুব্ধ গান্ধিজি আন্দোলন প্রত্যাহার করেন । 

৬. কবে ‘ চোদ্দো দফা দাবি ’ ঘোষিত হয় ? এর উদ্দেশ্য কী ছিল ? 

উত্তরঃ ১৯২৯ সালে মুসলিম লিগের দিল্লি অধিবেশনে লিগ নেতা মহম্মদ আলি জিন্না তার চোদ্দো দফা দাবি পেশ করেন । উদ্দেশ্য ছিল ভারতে মুসলিমদের স্বার্থরক্ষা । 

৭. ভাইকম সত্যাগ্রহ কবে শুরু হয় ? 

উত্তরঃ কেরালা প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি ১৯৪২ সালের ২ মার্চ ত্রিবাঙ্কুরের ভাইকম মন্দিরে দলিতদের প্রবেশের দাবিতে যে আন্দোলন শুরু করে সেটাই ভাইকম সত্যাগ্রহ । 

৮. ১৯১৬ সালের লখনউ কংগ্রেসের গুরুত্ব উল্লেখ করো । 

উত্তরঃ এই অধিবেশনে চরমপন্থী নেতৃবর্গ পুনরায় দলে ফিরে আসায় নরমপন্থী ও চরমপন্থীদের মধ্যে ঐক্য রচিত হয় । এতে কংগ্রেসের শক্তি বাড়ে । 

৯. মন্টেগু চেমসফোর্ড আইনের একটি শর্ত লেখো । 

উত্তরঃ এই আইনে কেন্দ্র ও প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে ক্ষমতা এবং আয় যথাযথভাবে বণ্টিত হয় । 

১০. গোলটেবিল বৈঠকের পর কী নামে শ্বেতপত্র প্রকাশিত হয় ? 

উত্তরঃ ১৯৩৩ সালে সরকার ভারতের সাংবিধানিক সংস্কারের জন্য প্রস্তাবসমূহ ‘ নামে শ্বেতপত্র প্রকাশ করে । 

১১. মলে – মিন্টো আইনের দু’টি অসংগতি উল্লেখ করো । 

উত্তরঃ প্রথমত , এই আইনে ভারতে কোনো দায়বদ্ধ প্রশাসন গঠনে জোর দেওয়া হয়নি । দ্বিতীয়ত , নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মতামত গুরুত্ব পেত না । 

১২. রাওলাট কমিশন কাকে বলে ? 

উত্তরঃ ভারতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন ঠেকাতে ১৯১৮ সালে স্যার সিডনি রাওলাট – এর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠিত হয় । এটাই রাওলাট কমিশন । 

১৩. মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত কয়েকজনের নাম লেখো । 

উত্তরঃ মুজাফ্ফর আহমেদ , ধরণী গোস্বামী , পি সি জোশি , অমৃত শ্রীপাদ ডাঙ্গে , গঙ্গাধর অধিকারী প্রমুখ । 

১৪. স্বত্ববিলোপ নীতির দু’টি শর্ত লেখো । 

উত্তরঃ কোনো দেশীয় রাজ্যের রাজা অপুত্রক অবস্থায় মারা গেলে তিনি দত্তক পুত্র গ্রহণ করতে পারবেন না । ফলে সেই রাজ্য কোম্পানির অধীনে চলে যাবে । 

১৫. কোন দেশীয় রাজ্যের রাজা প্রথম স্বত্ববিলোপ নীতি গ্রহণ করেছিলেন ? 

উত্তরঃ সাঁতারা , ঝাসি , নাগপুর প্রভৃতি । 

১৬. ভারতে সর্বপ্রথম কোথায় ‘ বিভাজন ও শাসন ‘ নীতি কার্যকর হয় ? 

উত্তরঃ পাঞ্জাবের সেনাবাহিনীতে জন লরেন্স সর্বপ্রথম এই নীতি প্রয়োগ করেন । 

১৭. ‘ সিমলা দৌত্য ‘ বলতে কী বোঝো ? 

উত্তরঃ আগা খাঁ – র নেতৃত্বে ১৯০৬ খ্রিঃ ১ অক্টোবর ৩৫ জন অভিজাত মুসলিম সিমলায় বড়োলাট লর্ড মিন্টোর সঙ্গে দেখা করেন । মুসলিমদের স্বার্থরক্ষার দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি মিস্টোকে দেওয়া হয় । এটিই সিমলা দৌত্য নামে পরিচিত । 

১৮. রাওলাট আইনের একটি শর্ত লেখো । 

উত্তরঃ এই আইন অনুসারে ইংরেজ বিরোধী যাবতীয় প্রচারকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় । 

১৯. লখনউ চুক্তির ২ টি শর্ত লেখো । 

উত্তরঃ প্রথমত , কংগ্রেস এবং মুসলিম লিগ একত্রে সরকারের কাছে শাসন সংস্কারের দাবি জানাতে একমত হয় । দ্বিতীয়ত , মুসলিম লিগের স্বতন্ত্র নির্বাচনের দাবির সঙ্গে কংগ্রেস একমত হয় । 

১. মন্টেগু চেমসফোর্ড সংস্কার আইন প্রবর্তিত হয়— (ক) ১৯১৯ (খ) ১৯২০ (গ) ১৯২১ (ঘ) ১৯২২ খ্রিঃ ।

উত্তরঃ (ক) ১৯১৯

২. সাইমন কমিশন ভারতে আসে— (ক) ১৯২৫ (খ) ১৯২৬ (গ) ১৯২৭ (ঘ) ১৯২৮ খ্রিঃ । 

উত্তরঃ (ঘ) ১৯২৮ খ্রিঃ ।

৩. রাওলাট আইনকে কে “ উকিল নেহি , দলিল নেহি , আপিল নেহি ” বলে মন্তব্য করেন ? (ক) সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় (খ) মহাত্মা গান্ধি (গ) মহম্মদ আলি জিন্না (ঘ) বিপিনচন্দ্র পাল । 

উত্তরঃ (খ) মহাত্মা গান্ধি

৪. জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে কে ‘ কাইজার – ই – হিন্দ ’ উপাধি ত্যাগ করেন ? (ক) মহাত্মা গান্ধি (খ) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (গ) মহম্মদ আলি জিন্না (ঘ) চিত্তরঞ্জন দাশ । 

উত্তরঃ (ক) মহাত্মা গান্ধি 

৫. প্রথম গোলটেবিল বৈঠকে ভারতের প্রধান কোন দলটি যোগদান করেনি ? (ক) কমিউনিস্ট পার্টি (খ) হিন্দু মহাসভা (গ) মুসলিম লিগ (ঘ) কংগ্রেস । 

উত্তরঃ (ঘ) কংগ্রেস ।

৬. নবান্ন নাটকের রচয়িতা—  (ক) ভবানী ভট্টাচার্য (খ) অমলেন্দু চক্রবর্তী (গ) বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় (ঘ) বিজন ভট্টাচার্য । 

উত্তরঃ (ঘ) বিজন ভট্টাচার্য

৬. নবান্ন নাটকের রচয়িতা—  (ক) ভবানী ভট্টাচার্য (খ) অমলেন্দু চক্রবর্তী (গ) বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় (ঘ) বিজন ভট্টাচার্য । 

উত্তরঃ (ঘ) বিজন ভট্টাচার্য

৭. মলে – মিন্টো শাসন সংস্কার আইন পাশ হয়— (ক) ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে (খ) ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে (গ) ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে (ঘ) ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে ।

উত্তরঃ (খ) ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে

৮. ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে কোন তারিখে জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল ? (ক) ১৩ এপ্রিল (খ) ২৩ জানুয়ারি (গ) ১৭ জুলাই (ঘ) ১২ সেপ্টেম্বর ।

উত্তরঃ (ক) ১৩ এপ্রিল

৯. রাওলাট আইন কবে পাশ হয় ? (ক) ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে (খ) ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে (গ) ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে (ঘ) ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে ।

উত্তরঃ (খ) ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে

১০. কোন দেশীয় রাজ্যের রাজা প্রথম অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি গ্রহণ করেন ? (ক) সাঁতারা (খ) নাগপুর (গ) হায়দ্রাবাদের নিজাম (ঘ) মারাঠা নেতা । 

উত্তরঃ (গ) হায়দ্রাবাদের নিজাম

১১. মুসলিম লিগ গঠিত হয়— (ক) ১৯০৬ (খ) ১৯০৭ (গ) ১৯০৮ (ঘ) ১৯০৯ খ্রিঃ ।

উত্তরঃ (ক) ১৯০৬

১২. মুসলিম লিগের প্রথম অধিবেশন বসে— (ক) দিল্লিতে (খ) কলকাতায় (গ) ঢাকায় (ঘ) লাহোরে ।

উত্তরঃ (গ) ঢাকায়

১৩. মুসলিম লিগের প্রথম সভাপতি ছিলেন –  (ক) মহম্মদ আলি জিন্না (খ) সলিম উল্লাহ (গ) আগা খ (ঘ) আবুল কালাম আজাদ । 

উত্তরঃ (খ) সলিম উল্লাহ

১৪. রাওলাট কমিশনের অপর নাম হলো— (ক) সিডিশন কমিশন (খ) সাইমন কমিশন (গ) অ্যাকওয়ার্থ কমিশন (ঘ) শিল্প কমিশন । 

উত্তরঃ (ক) সিডিশন কমিশন

১৫. মুসলিম লিগের কোন অধিবেশনে পাকিস্তান দাবি করা হয় ? (ক) লাহোর (খ) লখনউ (গ) মাদ্রাজ (ঘ) কলকাতা ৷ 

উত্তরঃ (ক) লাহোর 

১৬. “ The Indian Musalman’s’- গ্রন্থটির রচয়িতা কে ছিলেন ? (ক) সৈয়দ আহমেদ হান্টার (খ) রিজলে (গ) উইলিয়াম (ঘ) ডেনিসন রস । 

উত্তরঃ (গ) উইলিয়াম হান্টার

১৭. কংগ্রেসের কোন অধিবেশনে পূর্ণ স্বরাজের দাবি ওঠে ? (ক) দিল্লি (খ) লাহোর (গ) গুজরাট (ঘ) কলকাতা ৷ 

উত্তরঃ (খ) লাহোর

১৮. ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে ভারতের ভাইসরয় ছিলেন— (ক) মন্টেগু(খ) চেমসফোর্ড (গ) লর্ড কার্জন (ঘ) লর্ড মিন্টো৷ 

উত্তরঃ (ঘ) লর্ড মিন্টো

১৯. ভার্নাকুলার প্রেস অ্যাক্ট পাশ হয় কার সময়ে ? (ক) লর্ড লিটন – (খ) লর্ড রিপন (গ) লর্ড নর্থব্রুক (ঘ) লর্ড ময়রার সময়ে । 

উত্তরঃ (ক) লর্ড লিটন

২০. ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘোষণা করেন— (ক) মন্টেগু (খ) ক্লিমেন্ট এটলি (গ) ওয়েলিংটন (ঘ) ম্যাক ডোনাল্ড । 

উত্তরঃ (ঘ) ম্যাক ডোনাল্ড 

২১. কত খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের দ্বারা ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে ? (ক) ১৮৫৮ খ্রি . (খ) ১৮৬১ খ্রি . (গ) ১৮৯২ . (ঘ) ১৯১০ খ্রি . 

উত্তরঃ (ক) ১৮৫৮ খ্রি .

২২. ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের আইন অনুসারে ‘ ভাইসরয় ’ উপাধি পান- (ক) ব্রিটিশ সম্রাট (খ) ভারত সচিব (গ) গভর্নর (ঘ) গভর্নর জেনারেল । 

উত্তরঃ (ঘ) গভর্নর জেনারেল ।

১. ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের পটভূমি ব্যাখ্যা করো । এই আইনের ত্রুটিগুলি কী ছিল ? 

উত্তরঃ পটভূমি : বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন , জাতীয় কংগ্রেসের নরমপন্থী ও চরমপন্থী গোষ্ঠীর বিরোধ এবং বৈপ্লবিক সন্ত্রাসবাদীদের উত্থানের মতো ঘটনায় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লর্ড বালফোর এক কৌশলী আপস নীতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন । তিনি লর্ড কার্জনের কার্যকলাপে অসন্তুষ্ট হয়ে ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে লর্ড মিন্টোকে ভারতের গভর্নর জেনারেল করে পাঠান । এইসময় ভারত সচিব ছিলেন লর্ড মলে । লর্ড মলে ও লর্ড মিন্টো এক শাসনতান্ত্রিক সংস্কারের দ্বারা কংগ্রেসের নরমপন্থী গোষ্ঠীকে সন্তুষ্ট করতে ও নরমপন্থী – চরমপন্থী বিবাদ দীর্ঘস্থায়ী করতে এবং কংগ্রেস বিরোধী রাজনৈতিক দল মুসলিম লিগের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে সচেষ্ট হন । তাঁদের উদ্যোগে ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের ১ অক্টোবর ভারতের শাসন সংস্কারের জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্টে একটি খসড়া আইন পেশ করা হয় । ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে এই খসড়া আইন আইনের রূপ পায় । এই আইন মর্লে – মিন্টো আইন , ১৯০৯ নামে পরিচিত । 

 আইনের বৈশিষ্ট্য : ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের মর্লে – মিন্টো শাসন সংস্কার আইনের প্রকৃত নাম ছিল ভারত শাসন আইন । এই আইনের দু’টি দিক ছিল । 

( ক ) কার্যনির্বাহী পরিষদ , 

( খ ) আইন পরিষদ । 

( ক ) কার্যনির্বাহী পরিষদ : 

  • 1. গভর্নর জেনারেলের কার্যনির্বাহী পরিষদে একজন করে ভারতীয় প্রতিনিধি দল গঠন করা হয় । কার্যনির্বাহী পরিষদে প্রথম ভারতীয় প্রতিনিধি ছিলেন ব্যারিস্টার লর্ড সত্যেন্দ্রপ্রসন্ন সিংহ । তিনি এই পরিষদে আইন সদস্যরূপে নিযুক্ত হন । 
  • 2. বোম্বাই , মাদ্রাজ ও বাংলার গভর্নরদের কার্যনির্বাহী পরিষদে সদস্যসংখ্যা ২ জন থেকে বাড়িয়ে ৪ জন করা হয় । 


আইন পরিষদ : আইন পরিষদে চার ধরনের নির্বাচকমণ্ডলী রাখার কথা বলা হয় । যথা – 

  • 1. প্রাদেশিক আইন পরিষদে নির্বাচিত প্রতিনিধি দল , 
  • 2. সংখ্যালঘু মুসলিমদের পৃথক নির্বাচনের জন্য নির্বাচক দল , 
  • 3. দেশীয় শাসক ও জমিদারদের জন্য প্রতিনিধি দল এবং 
  • 4. বিশ্ববিদ্যালয় , বণিক সংগঠন প্রভৃতি সংস্থার নির্বাচিত প্রতিনিধি দল । 

মলে – মিন্টো সংস্কার আইনের ত্রুটি : ভারতীয়দের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও শাসনতান্ত্রিক অধিকার দেওয়ার উদ্দেশ্যে মলে – মিন্টো আইন পাশ হলেও এই আইনের বিভিন্ন ত্রুটি ছিল । যেমন – 

( ক ) অধিকারহীনতা : এই আইনের মাধ্যমে দেশীয় রাজ্য , সামরিক বিভাগ , বিদেশনীতি প্রভৃতি বিষয়ে কোনো প্রস্তাব আনার অধিকার আইনসভার হাতে ছিল না । 

( খ ) দায়িত্বশীলতার অভাব : মলে – মিন্টো আইনের দ্বারা কেন্দ্রে এবং প্রদেশে নির্বাচিত ভারতীয় জনপ্রতিনিধিদের বিশেষ কোনো গুরুত্ব স্বীকৃত হয়নি । ফলে এই আইন ভারতে কোনো দায়িত্বশীল শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয় । 

২. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বাংলায় দুর্ভিক্ষের কারণগুলি কী ছিল ? বাংলায় পঞ্চাশের মন্বস্তরের ফলাফল লেখো । 

 অথবা , ১৯৪৩ সালে বাংলায় মন্বন্তর – এর কারণ কী ছিল ? 

উত্তরঃ খাদ্য উৎপাদন কমে যাওয়া ১৯৪০-৪১ সালে বাংলায় সীমিত আকারে খাদ্য সংকটে গরিবের সঞ্চয় ফুরিয়ে যায় । ১৯৪২ – এর অক্টোবরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে ধানের ফলন কমে যায় । মারা যায় প্রায় দু’লক্ষ গবাদি পশু । মানুষের সঞ্চিত খাদ্য শেষ হয়ে যাওয়ায় ১৯৪৩ সালে দেখা দেয় মন্বন্তর । 

বাংলায় পঞ্চাশের মন্বস্তরের কারণ : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইংরেজ সরকারের তীব্র অর্থনৈতিক শোষণে অবিভক্ত বাংলায় ১৯৪৩ সালে ( ১৩৫০ বঙ্গাব্দ ) এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ শুরু হয় । এই মন্বন্তর বাংলাকে শ্মশানে পরিণত করে । এর বিভিন্ন কারণ ছিল—

খাদ্য সরবরাহ ব্যাহত : ১৯৪২ – এর বন্যায় গ্রামীণ রাস্তাগুলি ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয় । ফলে দূর দুরান্তে খাদ্যশস্য পাঠানোয় অসুবিধা দেখা দেয় । 

বার্মা থেকে চাল আমদানি ব্যাহত : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে বার্মা থেকে কলকাতা তথা বাংলায় চাল আসত । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান বার্মা দখল করে নেওয়ায় চাল আমদানি বন্ধ হয়ে যায় । 

জাপানি আক্রমণের আশঙ্কা : জাপান যেকোনো সময় বাংলা হয়ে ব্রিটিশ ভারতে আক্রমণ করতে পারে , এই আশঙ্কা করেছিল ব্রিটিশ সরকার । এজন্য পোড়ামাটির নীতি অনুসারে বার্মার নিকটস্থ চট্টগ্রাম ছেড়ে আসার সময় সেখানকার নৌকা , মোটর যান , গোরুর গাড়ি প্রভৃতি ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দেয় । ফলে বাংলার সীমান্তে খাদ্য সরবরাহ অসম্ভব হয়ে পড়ে । 

চার্চিলের ভূমিকা : বাংলায় খাদ্যাভাবের সময় অস্ট্রেলিয়া , কানাডা , আমেরিকা জাহাজে করে বাংলায় খাদ্যশস্য পাঠাতে চেয়েছিল । কিন্তু যুদ্ধের জন্য জাহাজ লাগবে এই যুক্তিতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল কোনো জাহাজ দিতে রাজি হননি । 

সেনার জন্য খাদ্য রপ্তানি : বাংলায় খাদ্যভাবের মধ্যেই ব্রিটিশ সরকার যুদ্ধের সময় সেনাদের চাহিদা মেটাতে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্যশস্য বাইরে পাঠায় । এতে বহু খাদ্য অপচয় হয় । বেড়ে যায় খাদ্যসংকট । 

বাণিজ্য গণ্ডি : ১৯৪২ সালে ব্রিটিশ সরকার ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে বাণিজ্য গণ্ডি চালু করে । ফলে ব্যবসায়ীরা অন্য প্রদেশ থেকে খাদ্যশস্য আমদানি করতে পারেনি ।  

মজুতদারি : জাপানের আক্রমণের আশঙ্কায় ইংরেজ সরকার বাংলা থেকে প্রচুর পরিমাণ চাল মজুত করে । দুর্ভিক্ষের পরে ৯০ হাজার টন চাল নষ্ট হয়েছিল । খাদ্য সংকটের আশঙ্কায় অনেক ব্যবসায়ী চাল কিনে গুদামে মজুত করে এবং দুর্ভিক্ষের সময় চড়া দামে বিক্রি করে। 

সংকটকে উপেক্ষা : বাংলায় খাদ্য সংকট শুরু হলে তা মোকাবিলায় তৎপর হয়নি ব্রিটিশ সরকার । মৃত্যু – মিছিল শুরু হলেও ত্রাণকার্য হয়েছে ধীর গতিতে । 

পঞ্চাশের মন্বস্তরের ফলাফল : মন্বন্তরের বিভিন্ন ফলাফল দেখা যায়— 

ব্যাপক প্রাণহানি : মন্বন্তরে মৃতের সংখ্যা ব্রিটিশ সরকার ইচ্ছা করেই প্রকাশ করেনি । দুর্ভিক্ষে অন্তত ৪০-৭০ লক্ষ মানুষ মারা গিয়েছিল বলে অনুমান । মৃতদেহ সৎকারের লোক ছিল না । মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মৃত মানুষের মাংসে শকুন , শিয়াল কুকুরেরও অরুচি ধরে । 

অর্থনৈতিক বিপর্যয় : মন্বন্তরে বাংলায় ঘটে যায় চূড়ান্ত অর্থনৈতিক বিপর্যয় । সর্বস্বান্ত মানুষকে দুর্ভিক্ষের সময় থালা – বাটি হাতে রাস্তায় ভিক্ষা করতে দেখা যায় । শেষপর্যন্ত অনাহারে রাস্তার ধারে পড়ে থাকত এদের মৃতদেহ । 

মানবিক বিপর্যয় : মন্বন্তরে চূড়ান্ত মানবিক বিপর্যয় দেখা যায় । কুকুরের সঙ্গে লড়াই করে ডাস্টবিন থেকে মানুষ খাদ্য খেতে শুরু করেছিল । মানুষ তার প্রিয়জনকে মৃত্যুদশায় ফেলে রেখে বাঁচার তাগিদে বাড়ি ছাড়ে । অভাবের জ্বালায় অনেকে স্ত্রী – সন্তানকে বিক্রি করে ।

কমিশন গঠন : দুর্ভিক্ষের কারণ খুঁজতে সরকার ‘ দুর্ভিক্ষ অনুসন্ধান কমিশন ‘ গঠন করে । ১৯৪৫ সালে কমিশন রিপোর্ট জমা দেয় । রিপোর্টে সরকারের সার্বিক ব্যর্থতার সমালোচনা করা হয় । 

সাহিত্য সৃষ্টি : মন্বন্তরের পটভূমিকায় বিজন ভট্টাচার্য লেখেন ‘ নবান্ন ‘ নাটক । বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘ অশনি সংকেত ‘ উপন্যাসে , চিত্তপ্রসাদ তার ‘ ক্ষুধার্ত বাংলা : ১৯৪৩ – এর নভেম্বরে মেদিনীপুর জেলায় ভ্রমণ – ফুটিয়ে তোলেন দুর্ভিক্ষের মর্মস্পর্শী বিবরণ । 

গ্রন্থ নিষিদ্ধকরণ : চিত্তপ্রসাদের ‘ ক্ষুধার্ত বাংলা : ১৯৪৩ – এর নভেম্বরে মেদিনীপুর জেলায় ভ্রমণ ’ গ্রন্থটি নিষিদ্ধ হয় । ৫০০০ কপি বাজেয়াপ্ত করে সরকার । 

মূল্যায়ন : পঞ্চাশের মন্বন্তর নিয়ে গবেষণা আজও চলছে । এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন , এই সময়ের ঘটনা ও তথ্য অনুসরণে পরবর্তীকালে দেশে কোনো বঙ্কিমচন্দ্র জন্মগ্রহণ করলে হয়তো আর একটি ‘ আনন্দমঠ ‘ সৃষ্টি হবে । 

৩. ভারতীয় অর্থনীতিতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কী প্রভাব পড়েছিল ? 

অথবা , ভারতের উপর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের অর্থনৈতিক প্রতিক্রিয়া কী ছিল ? 

অথবা , যুদ্ধ – পরবর্তী অর্থনৈতিক সংকট ভারতের কৃষকদের উপর কী প্রভাব ফেলে ? 

উত্তরঃ ভারতীয় অর্থনীতিতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব : ১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ইংল্যান্ড যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে । যুদ্ধে ভারতের অর্থসম্পদ ও সেনাকে ব্যাপকভাবে কাজে লাগায় ব্রিটিশ সরকার । এর ফলে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ভারতীয় অর্থনীতিতে যুদ্ধের প্রত্যক্ষ প্রভাব চোখে পড়ে । এ বিষয়ে নীচে বলা হলো— 

আর্থিক সংকট : প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ভারতের প্রচুর পরিমাণ অর্থ – সম্পদ ব্যয় করা । হয় । যুদ্ধের সময় দেশের কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদন কমে যায় । ফলে রপ্তানি হ্রাস পায় , এতে ভারতে দারিদ্র্য বাড়ে । 

ঋণ সংগ্রহ : প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী আর্থিক দুর্দশা কাটাতে ব্রিটিশ সরকার বিপুল পরিমাণ ঋণ সংগ্রহ করে । এতে জাতীয় ঋণের পরিমাণ ৩০ শতাংশ বেড়ে যায় । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে এই ঋণ ছিল ২৭৪ মিলিয়ন পাউন্ড , দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে এটা ৮৮৪.২ মিলিয়ন পাউন্ডে পৌঁছয় ।

মূল্যবৃদ্ধি : যুদ্ধের প্রভাবে কৃষি ও শিল্পপণ্যের উৎপাদন কমলেও পণ্যের চাহিদা কমেনি । ফলে এসময় দ্রব্যমূল্য বেড়ে যায় । ১৯১৪-১৯২০ – এর মধ্যে বস্ত্র , চিনি , লবণ কেরোসিন ইত্যাদির দাম একলাফে দ্বিগুণ হয়ে যায় । 

দরিদ্রদের দুর্দশা : কৃষি উৎপাদন হ্রাস , দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ইত্যাদি কারণে দেশের দরিদ্র মানুষদের অবস্থা সঙ্গীন হয় । কারণ জিনিসের দাম বাড়লেও তাদের মজুরি বাড়ানো হয়নি । ফলে শ্রমিকরা তাদের উপার্জন দিয়ে এবং কৃষকরা কৃষিপণ্য বিক্রি করে জীবন কাটাতে ব্যর্থ হয় । 

কর বৃদ্ধি : কৃষক ও শ্রমিকদের কথা চিন্তা না করে ব্রিটিশ সরকার আর্থিক ভার লাঘব করতে কৃষকদের উপর করের বোঝা চাপায় এবং তা জোর করে আদায়ও শুরু হয় । 

কৃষকদের উপর অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাব : কৃষকদের উপর প্রভাব ছিল এইরূপ— 

খাদ্য উৎপাদন হ্রাস : আর্থিক সংকট কাটাতে সরকার খাদ্যশস্যের বদলে কৃষককে রপ্তানিযোগ্য ও অর্থকরী ফসল উৎপাদনে বাধ্য করে । ফলে খাদ্যশস্যের উৎপাদন কমে যায় । 

খাদ্যসংকট : কৃষি জমিতে খাদ্যশস্যের পরিবর্তে অর্থকরী ফসল চাষের ফলে কৃষক পরিবারে দেখা দেয় খাদ্যসংকট । দেশের বহু স্থানে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় । 

কর বৃদ্ধি : দেশে খাদ্যসংকট ও দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতির মধ্যেও সরকার কৃষকের করের বোঝা বাড়িয়ে দেয় । বাড়তি কর আদায় করতে কৃষকদের উপর অত্যাচার বেড়ে যায় ।

মূল্যায়ন : প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর দেশজুড়ে অর্থনেতিক সংকটের প্রভাব অনুভূত হয় । সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা হয় গুজরাট সহ পশ্চিম ভারতে । এর প্রতিবাদে গুজরাটে ১১১৮ ও ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে । 


No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();