দ্বাদশ শ্রেণির ভাত গল্পের বড়ো প্রশ্ন উত্তর। Class 12 Bengali questions answer। দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সাজেশন 2023। - SM Textbook

Fresh Topics

Tuesday, July 25, 2023

দ্বাদশ শ্রেণির ভাত গল্পের বড়ো প্রশ্ন উত্তর। Class 12 Bengali questions answer। দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সাজেশন 2023।

  দ্বাদশ শ্রেণির ভাত গল্পের বড়ো প্রশ্ন উত্তর। Class 12 Bengali questions answer। দ্বাদশ শ্রেণির বাংলা সাজেশন 2023।



দ্বাদশ শ্রেণীর মহাশ্বেতা দেবীর ভাত গল্পটি একটি গুরুত্বপূর্ণ গল্প, প্রায় প্রতিবছর পরীক্ষাতে ভাত গল্পের বড় প্রশ্ন ও উত্তর লিখতে আসে। কিন্তু যে সকল প্রশ্ন গুলি পরীক্ষাতে বারবার আসে সেই বিষয়গুলো বাদ দিয়ে আমরা অন্য প্রশ্নগুলির পড়ি, এই কারণে আমাদের সমস্যা সৃষ্টি হয়।

ভাত গল্পের প্রেক্ষাপট: 


     মহাশ্বেতা দেবীর ভাত গল্পের প্রেক্ষাপট রচিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ অংশে সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের অন্ত্যজ শ্রেণীর মানুষের জীবনযাত্রা নিয়ে। মানুষের দৈনিক বা দৈনন্দিন জীবন কত কঠিনতম পরিস্থিতিতে পৌঁছালে সুন্দর জীবনকে এক মুহূর্তে বিলীন করতে পারে গল্পটি তার একমাত্র প্রতিচ্ছবি।

    আমরা সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবীর বিভিন্ন গল্পগুলিতে বাংলার অন্ত্যজ শ্রেণীর জীবনযাত্রার বিভিন্ন টানাপোড়েনের কাহিনী জানতে পারি, ঠিক একই রকম ভাবে ভাত গল্পের প্রেক্ষাপট সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের মানুষের যে করুণ পরিণতি আলোচিত হয়েছে।

    একমাত্র প্রাকৃতিক দুর্যোগের রাতে স্বাভাবিক ও সুখী এক পরিবার কিভাবে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ে তা এই গল্পটিতে বর্ণনা করা হয়েছে, শুধু তাই নয় গল্পটিতে দেখানো হয়েছে অন্ধকার ও কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষের সংস্কৃতিকে। ভাত গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর


ভাত গল্পের বিষয়বস্তু :


    মহাশ্বেতা দেবীর ভাত গল্প আমরা সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের চাষী উৎসব নাইয়া এর জীবনযাত্রা সম্পর্কে পরিচয় পাই। স্বাভাবিকভাবে জীবন পাত করা উৎসব নাইয়ার পরিবারে এক ঝড়ের রাতে বিশাল পরিবর্তন ঘটে।

    স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে হারিয়ে উৎসব নাইয়া পাগলের মত হয়ে শহরের এক বড় বাড়িতে কাজের সন্ধান পায়। কিন্তু সেই দুর্বিষহ রাতের পর থেকে সে অভুক্ত তার পেটে একটিও ভাতের দানা পড়ে নি। অথচ অন্যদিকে সেই বড় বাড়িতে বিভিন্ন রকমের চাল ও ভাতের আনাগোনা।

গল্পটির মূল প্রেক্ষাপট বা বিষয় হল এটি, একদিকে খেতে না পাওয়া মানুষের আত্ম যন্ত্রণা অন্যদিকে তার বিপরীতে গড়ে ওঠা এক কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষের মানসিকতা। উৎসব নাইয়া সামান্য এক মুঠো ভাতের জন্য আজ পরের বাড়িতে কাজ করতেও দ্বিধা বোধ করেনি কিন্তু সেখানে ভাতের অনেক ব্যবস্থা থাকলেও তা রীতি ও নিয়ম এর কাছে অচ্ছুত তে পরিণত হয়েছে।

    অনেকদিন না খেতে পাওয়া উচ্ছব নাইয়া শেষে সহ্য করতে না পেরে বড় বাড়ির ফেলে দেওয়া ভাতের ডেকচি চুরি করতে বাধ্য হয়েছে। আর অনেকদিন পর তার পেটে ভাতের দানা পড়াতে সে সেই ব্যক্তির উপর ঘুমিয়ে পড়েছে, অন্যদিকে পুলিশ তাকে চোর মনে করে গল্পের শেষে জেলে নিয়ে গেছে।

 1. " তুমি কি বুঝবে সতীশবাবু" - সতীশবাবু কি বুঝবে না ? সতীশবাবু উৎসবের সঙ্গে কেমন আচরণ করেছিল ?


      প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী' র ভাত ছোটগল্পে উল্লিখিত বাক্যটিতে ভাত না খেতে পারার জ্বালা কে সতীশবাবু বুঝবে না বলে উৎসব উল্লেখ করেছেন। 

    সুন্দরবনের বাদাবনে সতীশবাবু অবস্থাপন্ন চাষী কিন্তু উৎসব নাইয়া দের মত নদীর ধারে তার বাড়ি নয়। গল্পে আমরা সতীশ বাবুর দালান বাড়ির কথা জানতে পারি, যাকে উৎসব বলেছে তার পাকা বাড়ি ভেঙে পড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। ভাত গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর

    দুর্বিষহ ঝড়ের রাতের পরে যখন উৎসব নাইয়া তার পরিবারকে হারিয়েছিল তখন গ্রামের এই সতীশবাবুর ঘরে রোজ রান্না হতো এমনকি একদিন উৎসব তার কাছে দুমুঠো ভাত চাইলে সে দিতে অস্বীকার পর্যন্ত করেছে। উৎসবকে সতীশবাবু শেষপর্যন্ত এ কথা জানায় যে - তাকে ভগবান মারতে বসেছে অর্থাৎ সতীশবাবু তাকে বাঁচাতে পারবে না।

    স্ত্রী পুত্রদের হারিয়ে উৎসব পাগলের মত হয়ে যায়, কিন্তু অগ্রাসি সমাজ সেই অবস্থাতেও অপঘাতে মৃত্যুর দায়ে তার স্ত্রী ও পুত্রের জন্য শ্রাদ্ধশান্তি করাতে বাধ্য করেছিল। সেই সমাজের এক প্রধান উৎসবকে একমুঠো ভাত পর্যন্ত দিতে অস্বীকার করে। এই আচরণ এর পরিপ্রেক্ষিতে উৎসব সতীশবাবু কে প্রশ্নে উল্লেখিত উক্তিটি করেছিল।

   উৎসবের এরকম আচরণ দেখে সতীশবাবু মন্তব্য করে যে উৎসব পাগল হয়ে গেছে তাই বউ পুত্র মারা গেলে মানুষ যেখানে পাগল হয়ে যায় সেখানে এসে সতীশ বাবুর কাছে ভাত চেয়ে মরে।


 2. ভাত গল্পে যে ঝড় জলে রাতের কথা বলা হয়েছে তা বর্ণনা করো।

    মহাশ্বেতা দেবীর ভাত গল্পে আমরা উৎসব নাইয়া নামে এক সর্বশান্ত কৃষকের কথা জানতে পারি। যে ছিল সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের একজন ভূমিহীন মজুর, তার পিতা হরিচরণ নাইয়া, এবং সে স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে নিয়ে মাতলা নদীর তীরে বসবাস করত। কিন্তু হঠাৎ করে এক ঝড় জলের রাত তার এই ক্ষুদ্র জীবনকে শেষ করে দিয়েছিল।

   অনেকদিন পর সে পেট ভরে দুমুঠো ভাত খেয়ে ছিল কিন্তু তার স্ত্রী দেবতার গতিক ভালো নয় তা বুঝতে পারে। হঠাৎ করেই শুরু হয় প্রবল ঝড় বৃষ্টি, উৎসবের ঘরের মাঝখানের খুঁটিটি ধনুষ্টংকারের রোগীর মতো কাঁপতে থাকে। এরকম অবস্থায় উৎসব খুঁটিকে প্রাণপণে মাটির সঙ্গে চেপে রেখেছিল। কিন্তু মুহূর্তে উৎসবের বুঝতে সমস্যা হয়নি যে বসুন্ধরা সেই খুঁটিটি আর রাখতে চাইছে না।

    প্রকৃতির ভাব বেগতিক দেখে সে ঠাণ্ডায় ছেলে মেয়েকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁপতে থাকে। এমন সময় সে দেখতে পাই মাফলার সাদা জলের ঢেউ বাতাসের গতিতে ছুটে আসছে, মুহুর্তের মধ্যে উৎসবের জীবনের সবকিছু শেষ হয়ে যায়, শেষমেষ উৎসব গাছ আঁকড়ে ধরে নিজের জীবনটাকে বাঁচিয়ে ছিল।

এরপর উৎসব তার স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে পাগলের মত খুঁজতে থাকে সে এত ব্যাকুল হয়ে পড়ে যে ত্রাণের দেওয়া খিচুড়ি পর্যন্ত সে গ্রহণ করেনি। ভাত গল্পের মূল চরিত্র উৎসব নাই আর যে পরিবর্তন আমরা দেখি অর্থাৎ সাধারণ চাষী থেকে পরের বাড়ির চাকর এর কাজ করা, এ সকল কিছুর পিছনে একমাত্র কারণ তার জীবনে সেই ঝড় জলের রাত।

3. " দাঁতগুলো বের করে সে কামটের মত হিংস্র ভঙ্গি করে"  - কে কার প্রতি এরূপ আচরণ করেছিল ? তার এরূপ আচরণের কারণ বিশ্লেষণ করো ।


    মহাশ্বেতা দেবীর ভাত ছোট গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র উৎসব নাইয়া তার গ্রাম সম্পর্কিত বোন বাসিনীর প্রতি এরূপ আচরণ করেছিল। 

    জীবনের দুর্বিষহ পরিবর্তনের পর উৎসব শহরের বড় বাড়িতে চাকর এর কাজ নেই। বড় বাড়ির বুড়ো কর্তার মৃত্যুর পর তার মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়ার জন্য বড় পিসিমা নির্দেশ দেয় যেন রান্না করা সমস্ত খাবার ফেলে দেয়া হয়। একথা শুনে মুহূর্তের মধ্যে অভুক্ত উৎসব ঠিক করে নাই সে কি করবে। 

কারণ একমাত্র খাবারের উদ্দেশ্যে সে গ্রামের বাড়ি ছেড়ে শহরের বড় বাড়িতে বা শনির কাছে আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু কঠোর সমাজ নিয়মের কাছে তার অভুক্ত পেট আত্ম ক্রন্দন কোন টি মূল্য পাইনি। সে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করে কিন্তু এক মুঠো ভাত এখনো পর্যন্ত সে পায়নি এই কারণে যখন সমস্ত রান্না করা খাবার ফেলে দিতে হবে শুনে তখনই সে হাড়ি ভর্তি ভাত নিয়ে পালাতে চেষ্টা করে।

    কিন্তু বাসিনি তার ইচ্ছা বুঝতে পারে ও তাঁকে অনুরোধ জানাই - যে এই ভাত এখন অসৌচ তাই তা খেতে হবে না, বাসিনীর এই কথা শুনে উৎসব কামড়ের মতো হিংস্র ভঙ্গিতে তার দিকে ঘুরে দাঁড়ায়। আসলে খিদেটা একান্ত ব্যক্তিগত তা মানুষকে কখনো বোঝানো সম্ভব নয়।
এই কারণে নিজের খিদে নিবারণ করার জন্য উৎসব এই পথ বাঁচতে বাধ্য হয় কিন্তু যখন বাসিনি সমাজ সংস্কারের মত তাকে অশৌচ ভাত খেতে নিষেধ করেছে তখন সে আদিম প্রবৃত্তি জাতীয় পশুর মত হিংস্র হয়ে উঠেছে। তাই উপবাসী উৎসব এর কাছে এই ভাত তার একান্ত ক্ষুধা নিবারণের খাদ্যবস্তু, আর তাঁকে খাবার জন্য সেই হিংস্র হয়ে উঠেছিল।

4. " বাদার ভাত খেলে তবে সে তো আসল বাঁধাটা খোঁজ পেয়ে যাবে একদিন" - বাদা কাকে বলে ? বক্তার কেন এরকম মনে হয়েছে তা আলোচনা করো ?


     মহাশ্বেতা দেবীর ভাত ছোটগল্পে আমরা বাদা শব্দটি পাই, বাধা শব্দের অর্থ হলো জল ও জংগলের পরিপূর্ণ নিচু জমি। সাধারনত সুন্দরবনের আশেপাশের নিচু জঙ্গলপূর্ণ জমি গুলোকে আমরা বাদা বলি। 

    মতলার প্রাকৃতিক তাণ্ডবের পর উৎসব তার স্ত্রী-পুত্র-কন্যাকে হারিয়ে কয়েকদিন পাগলের মত সর্বস্বান্ত হয়ে গ্রামের ভিটে তে ঘুরে বেরিয়ে ছিল। স্ত্রী পুত্রদের হারিয়ে এতটা বিভোর হয়ে পড়েছিল যে লঙ্গরখানার রান্না করা খিচুড়ি পর্যন্ত সে গ্রহণ করেনি, কিন্তু যখন তার জ্ঞান ফেরে তখন লঙ্গরখানার খাবার দেওয়া বন্ধ তাই বাধ্য হয়ে তাকে অভুক্ত থাকতে হয়েছে।

    দীর্ঘদিন না খেতে পাওয়া এই উৎসব যেন অশরীরী তে পরিণত হয়েছে, তাই সে মনে করেছে যদি সে ভাত খেতে পারে তবে হয়তো সে আবার মানুষ হবে। তাই ভাত খাওয়ার নেশায় গ্রাম ছেড়ে শহরে বাসিনীর সঙ্গে চাকরের কাছে যোগ দিয়েছে। ভাত গল্পের বড় প্রশ্ন উত্তর

    কিন্তু শহরে পৌঁছে তাকে অন্ধকার কুসংস্কারে অবতীর্ণ হয়ে অভুক্ত থাকতে বাধ্য হতে হয়েছে। কিন্তু এভাবে সে পরের বাড়ি চাকরের মতো কাজ করতে চায়না সে চাই ঠিক অন্য একটি বাদার খোঁজ করতে যেখানে সে নতুন করে জীবিকা শুরু করতে পারে। কিন্তু বড় বাড়ির সমস্ত রান্না ভাত যখন ফেলে দেওয়ার কথা হয় তখন সে এক হাড়ি ভাত নিয়ে দৌড়ে ছুটে পালায় আর পাগলের মত তা খেতেথাকে।

 সে গোগ্রাসে সেই ভাত খেতে খেতে পাগলের মত হয়ে বলে তার স্ত্রী ও পুত্র যেন তার মধ্যে বসে এই ভাত খেতে পারে, আর সে নিজেও মনে করে এই ভাত খেলে সে গায়ের শক্তি জুগিয়ে অন্য নতুন বাদার খোঁজ করতে পারবে। ভাত গল্পের







No comments:

Post a Comment