দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় সমস্ত প্রশ্ন ও উত্তর |class 10 geography 1st chapter questions answer|| WB board| suggetion geography 2024 | - SM Textbook

Fresh Topics

Thursday, October 5, 2023

দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় সমস্ত প্রশ্ন ও উত্তর |class 10 geography 1st chapter questions answer|| WB board| suggetion geography 2024 |

দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় সমস্ত প্রশ্ন ও উত্তর |class 10 geography 1st chapter questions answer|| WB board| suggetion geography 2024 |





প্রশ্ন ১ নদী (River) কাকে বলে? 

উত্তর : নদী হল এক স্বাভাবিক জলধারা যা উচ্চভূমি থেকে তুষারগলা জল বা বৃষ্টির জলে পুষ্ট হয়ে বা প্রস্রবণ থেকে উৎপন্ন। হয়ে ভূমির ঢাল অনুসারে ভূপৃষ্ঠের নির্দিষ্ট খাত দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সাগর, হ্রদ বা অন্য কোনো জলধারায় এসে মিলিত হয়। যেমন—গঙ্গা, সিন্ধু, ব্রহ্মপুত্র ইত্যাদি। 

2.জলচক্র (Hydrological cycle) কাকে বলে?

 উত্তর : বাষ্পীভবন, ঘনীভবন, অধঃক্ষেপণ, পৃষ্ঠপ্রবাহ প্রভৃতি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বারিমণ্ডল, বায়ুমণ্ডল ও স্থলভাগের মধ্যে। স্বাভাবিকভাবে জলের বিরামহীন চক্রাকার পরিবর্তন হল জলচক্র।

 ৩. জলচক্রের প্রধান প্রক্রিয়াগুলি কী কী? 

উত্তর : জলচক্রের প্রধান প্রক্রিয়াগুলি হল—বাষ্পীভবন (Evaporation) ঘনীভবন (Condensation), অধঃক্ষেপণ (Precipitation), পৃষ্ঠপ্রবাহ ( Surface runoff), অনুস্রাবণ ( Infiltration) ইত্যাদি। 

প্রশ্ন ৪ : নদীর জলের উৎসগুলি কী কী? বা, নদীর জল কোথা থেকে আসে? 

উত্তর : বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির জল, তুষার, বরফ ও হিমবাহ গলা জল, প্রস্রবণ দিয়ে বেরিয়ে আসা ভৌমজল ইত্যাদি হল নদীর জলের উৎস। 

প্রশ্ন ৫ উপনদী ও শাখানদী কাকে বলে?

 উত্তর : * উপনদী (Tributaries) : প্রধান নদীর গতিপথের অনেক স্থানে ছোটো নদী এসে মূলনদীতে মিলিত হয়, এইসব ছোটো ছোটো নদীকে প্রধান নদীর উপনদী বলা হয়। যেমন – যমুনা হল গঙ্গার উপনদী। * শাখানদী (Distributeries) : কোনো বড়ো নদী থেকে অন্য কোনো নদী বেরিয়ে এসে সাগরে বা অন্য কোনো নদীতে বা সেই নদীতেই এসে পড়লে তাকে শাখানদী বলে। যেমন—গঙ্গার প্রধান শাখানদী হল ভাগীরথী-হুগলি। 

প্রশ্ন | ৬ নদী অববাহিকা (River Basin) কাকে বলে?

 উত্তর : যে-সুনির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্য দিয়ে মূলনদী, তার শাখানদী ও উপনদী-সহ প্রবাহিত হয়, তাকে বলা হয় নদী অববাহিকা। 

প্রশ্ন ৭ নদীর ধারণ অববাহিকা (Catchment Basin) বলতে কী বোঝ? [ পর্ষদ নমুনা [১৭] 

উত্তর : নদী অববাহিকার মধ্যে পার্বত্য বা উচ্চভূমি অংশে নদীযতটুকু অঞ্চল অধিকার করে আছে, তাকে বলা হয় অববাহিকা। 

প্রশ্ন ৮ ধারণ অববাহিকা নদীর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কেন? 

উত্তর : নদীর গতিবেগ ও ঢাল, নদীতে উপস্থিত পলির পরিমাণ ও তার গুণাগুণ, জলের পরিমাণ ইত্যাদি অনেকটাই নদীর ধারা অববাহিকার চরিত্রের ওপর নির্ভরশীল। তাই ধারণ অববাহিকা নদীর ক্ষেত্রে ধারণ নদীর ধারণ অববাহিকা

 প্রশ্ন ৯ নদী উপতাকা (River Valley) কাকে বলে?

 উত্তর : উৎস থেকে মোহানা পর্যন্ত নদীর উভয় পাশের উচ্চভূমির মধ্যে সংকীর্ণ ও দীর্ঘ ভূমি হল নদী উপত্যকা। প্রশ্ন 

১০ নদীখাত কী 

উত্তর : নদী উপত্যকার নির্দিষ্ট যে-অংশ দিয়ে জল বাহিত হয়, তা হল নদীখাত। 

প্রশ্ন ১১ নদীখাত ও নদী উপত্যকার মধ্যে তফাত কী?

 উত্তর : নদীর উৎস থেকে মোহনা পর্যন্ত নদীর উভয় পাশের উচ্চভূমির মধ্যে সংকীর্ণ ও দীর্ঘ ভূমি হল নদী উপত্যকা। অপরদিকে নদী উপত্যকার যে-নির্দিষ্ট অংশ দিয়ে জল প্রবাহিত হয়, তা হল নদীখাত। অতএব নদী উপত্যকার মধ্যেই নদীখাত অবস্থান করে। 

প্রশ্ন ১২ নদীবর্তন (River Regime) কী ? 

উত্তর : নদীর জলের পরিমাণ সারাবছর সমান থাকে না। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কখনও কম বা কখনও বেশি হয়। = নদীর জলধারার এই পর্যায়ক্রমিক ও ঋতুভিত্তিক পরিবর্তনকেই ই নদীবর্তন বলে। 

 প্রশ্ন | ১৩ জলবিভাজিকা (Watershed) বলতে কী বোঝ?

 উত্তর : যে-উচ্চভূমি দুই জলবিভাজিকা বা ততোধিক নদীগোষ্ঠী বা নী নদী অববাহিকাকে পৃথক করে, তাকে জলবিভাজিকা বলে। পর্বত, পাহাড়, উচ্চ মালভূমি | * ইত্যাদি ভূমিরূপ জলবিভাজিকা পী হিসেবে অবস্থান করে।

প্রশ্ন ১৪ ভারতের বিখ্যাত দুটি জলবিভাজিকার নাম লেখো।

 উত্তর : ভারতের বিখ্যাত দুটি জলবিভাজিকা হল- হিমালয় পার্বত্যভূমি এবং পশ্চিমঘাট পর্বত। 

প্রশ্ন | ১৫ নদী কী কী কারণে নিত্যবহ হয়?

 উত্তর : নদী অববাহিকায় সারাবছর বৃষ্টি হলে কিংবা নদী বৃষ্টি ও বরফগলা জলে পুষ্ট হলে নিত্যবহ বা চিরপ্রবাহী হয়।

 প্রশ্ন ১৬ দোয়াব (Doab) কাকে বলে? 

উত্তর : দুটি নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলকে দোয়াব বলা হয়।

 প্রশ্ন ১৭ নদীসংগম বলতে কী বোঝ? 

উত্তর : দুটি নদী যেখানে মিলিত হয়, সেই স্থানকে বলা নদীসংগম। যেমন—গঙ্গা ও যমুনার সংগমস্থল হল এলাহাবাদ। 

 প্রশ্ন ১৮ বিনুনি নদী কাকে বলে?

 উত্তর : নদীখাতে অসংখ্য চড়ার সৃষ্টি হলে নদী অসংখ্য খাতে ভাগ হয়ে এঁকেবেঁকে বিনুনির ন্যায় প্রবাহিত হয়। একেই বিনুনি নদী বলে। পর্বতের পাদদেশে, মোহানায় বদ্বীপ থাকলে বিনুনি। নদী দেখা যায়। 

প্রশ্ন ১৯ নদীর কাজ কী কী? 

উত্তর : উৎস থেকে মোহানা পর্যন্ত নদীর কাজ হল ক্ষয়, বহন ও সদয়। এই তিনটি প্রক্রিয়ায় ভূমিরূপের পরিবর্তন হয়।

 প্রশ্ন ২০ নদী কোন্ কোন্ পদ্ধতিতে ক্ষয়কাজ করে।

 উত্তর : নদী প্রধানত চারভাবে ক্ষয়কাজ করে। যেমন- (i) জলপ্রবাহ ক্ষয়, (ii) অবঘর্ষ, (111) ঘর্ষণ ক্ষয় এবং (iv) প্রবণ ক্ষয়। 

প্রশ্ন ২১ নদী কোন্ কোন্ প্রক্রিয়ায় বহন করে?

 উত্তর : নদী প্রধানত চাররকম প্রক্রিয়ায় বহন করে। যেমন- (i) প্রবণ প্রক্রিয়া, (ii) ভাসমান প্রক্রিয়া, (iii) লক্ষ্মদান প্রক্রিয়া, (iv) আকর্ষণ প্রক্রিয়া।

 প্রশ্ন ২২ 'ষষ্ঠ ঘাত'-এর সূত্র (Sixth Power Law) কী ?

 উত্তর : নদীর গতিবেগের সঙ্গে বহন ক্ষমতার সুনির্দিষ্ট সম্পর্ক আছে। দেখা গেছে নদীর গতিবেগ দ্বিগুণ হলে তার বহন ক্ষমতা বাড়ে ৬৪ গুণ বা ২° হারে। এটি হল ষষ্ঠ ঘাতের সূত্র, যার ব্যাখ্যা দেন ১৮৪২ খ্রিস্টাব্দে W Hopkins | 

প্রশ্ন ২৩ কিউসেক ও কিউমেক কী? 

উত্তর : ৬ কিউসেক (Cusec ) কোনো নদীতে একটি নির্দিষ্ট স্থান দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যত ঘনফুট (Cubic feet per second) জল প্রবাহিত হয়, তা হল কিউসেক। * কিউমেক (Cumec) নদীর একটি নির্দিষ্ট স্থান দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে যত ঘনমিটার (Cubic meter per second) জল প্রবাহিত হয়, তাকে বলে কিউমেক। 

প্রশ্ন ২৪ নদীর গতি ক-টি ও কী কী? 

উত্তর : নদীর তিনটি গতি: যথা— উচ্চগতি, মধ্যগতি ও নিম্নগতি। 

প্রশ্ন ২৫ আদর্শ নদী (Ideal river) বলতে কী বোঝ ও উদাহরণ দাও। 

উত্তর : উৎস থেকে মোহানা পর্যন্ত অংশে যে-নদীর তিনটি গতি-প্রবাহই (উচ্চগতি, মধ্যগতি, নিম্নগতি) সুস্পষ্ট থাকে, তাকে বলে আদর্শ নদী। যেমন- গঙ্গা হল একটি আদর্শ নদী।

 প্রশ্ন ২৬ গঙ্গানদীর উচ্চগতি, মধ্যগতি ও নিম্নগতির সীমানা নির্ধারণ করো।

 উত্তর : গঙ্গার উচ্চগতি হল গঙ্গোত্রী হিমবাহের গোমুখ গুহা থেকে হরিদ্বার পর্যন্ত ২৩০ কিমি, মধ্যগতি হল হরিদ্বার থেকে ধুলিয়ান পর্যন্ত এবং ধূলিয়ান থেকে বঙ্গোপসাগরের মোহানা পর্যন্ত হল গঙ্গার বদ্বীপ প্রবাহ।

 প্রশ্ন ২৭ উচ্চগতিতে পার্থক্ষয় অপেক্ষা নিম্নক্ষয় অধিক কেন? 

উত্তর : উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর ঢাল অনেক বেশি থাকে। ফলে নদী প্রবল বেগে প্রবাহিত হয়। এই অংশে অবস্থিত ছোটো-বড়ো প্রস্তরখণ্ড নদীর সঙ্গে বাহিত হওয়ার সময় অবঘর্ষ প্রক্রিয়ায় নীচের দিকে ক্ষয় করে, ফলে উচ্চগতিতে নদীর পার্শ্বক্ষয় অপেক্ষা নিম্নক্ষয় অনেক বেশি হয়। 

প্রশ্ন ২৮ গিরিখাত (Gorge) কাকে বলে? 

উত্তর : বৃষ্টিবহুল অতি উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে নদীর নিম্নক্ষয়ের মাত্রা অত্যন্ত বেশি হওয়ায় নদী উপত্যকা সংকীর্ণ ও অতি গভীর হয়। এই ধরনের অতি গভীর ও সংকীর্ণ নদী উপত্যকাকেই গিরিখাত বলে। গিরিখাত উত্তর : উচ্চপর্বতের খাড়া ঢাল বেয়ে নদী যখন তীব্র গতিতে 

প্রশ্ন । ২৯ গিরিখাত অত্যন্ত সুগভীর হয় কেন? 

উচ্চ পর্বতের খাড়া ভাল বেয়ে নদী যখন তীব্র গতিতে নীচে নেমে আসে তখন তার গতিবেগ অনেক বেশি থাকে। নদীর তীব্র জলস্রোত ও জলস্রোতের সঙ্গে বাহিত প্রস্তরখণ্ডের আঘাতে নদীর নিম্নক্ষয় বেশি হয়। এই কারণে গিরিখাত অত্যন্ত সুগভীর হয়। নবীন ভঙ্গিল পর্বত উচ্চ বলেই এখানে গিরিখাত সৃষ্টি হয়। 

প্রশ্ন ৩০ ক্যানিয়ন (Canyon) কাকে বলে?

 উত্তর : শুষ্ক অঞ্চলে নদী উচ্চগতিতে শুধুমাত্র নিম্নক্ষয়ের মাধ্যমে 'I' আকৃতির গিরিখাত সৃষ্টি করলে, তাকে ক্যানিয়ন বলে। 

প্রশ্ন ৩১ ক্যানিয়ন অত্যন্ত গভীর হয় কেন? 

ক্যানিয়ন প্রধানত উচ্চ শুষ্ক অঞ্চলে দেখা যায় । এখানে প্রবাহিত চিরপ্রবাহী নদী উত্তর : ক্যানিয়ন প্রধানত উচ্চ শুষ্ক অঞ্চলে দেখা যায়। এখানে নিম্নক্ষয়ের মাধ্যমে গভীরতা বাড়ায় কিন্তু বৃষ্টির অভাবে পার্শ্বক্ষয় তেমন হয় না বলে উপত্যকাটি অত্যন্ত গভীর ও সংকীর্ণ হয়।

প্রশ্ন । ৩২ নবীন ভঙ্গিল পর্বতে অসংখ্য গিরিখাত গড়ে ওঠে কেন? 

উত্তর : নবীন ভঙ্গিল পর্বতগুলি সুউচ্চ ও নরম শিলা দ্বারা গঠিত অঞ্চল। ফলে এই অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলির ক্ষয়ের মাত্রা (নিম্নক্ষয়) অত্যন্ত বেশি হয় বলেই উপতাকা হয়েছে অতি গভীর ও সংকীর্ণ।

প্রশ্ন । ৩৩ পৃথিবী বিখ্যাত ক্যানিয়নটির নাম কী? এবং তা কোন্ নদীতে গড়ে উঠেছে?

 উত্তর : পৃথিবীর বিখ্যাত ক্যানিয়নটির নাম হল গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন এবং এটি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো নদীতে অবস্থিত। 

প্রশ্ন। ৩৪ র‍্যাপিডস বা খরস্রোত কী? 

উত্তর : নদীগর্ভে পর্যায়ক্রমে কঠিন ও নরম শিলা অবস্থান করলে, কঠিন শিলা অপেক্ষা নরম শিলা বেশি ক্ষয় হয় এবং বন্ধুরতা বাড়ে। ফলে নদীর জল ধাপে ধাপে নেমে আসে। একে র‍্যাপিডস বা খরস্রোত বলে। হিমালয়ের অলকানন্দা, ভাগীরথী ইত্যাদি নদীতে র‍্যাপিডস দেখা যায়। খরস্রোত

 প্রশ্ন ৩৫ প্রপাতকূপ বা প্লাঞ্জপুল কাকে বলে ?

 উত্তর : জলপ্রপাতের জল প্রবলবেগে যেখানে পড়ে সেখানে বিশালাকার হাঁড়ির মতো গর্তের সৃষ্টি হয়। একে প্লাঞ্জপুল বলে।

প্রশ্ন ৩৬. মন্থকূপ (Pot hole) কী?

উত্তর : নদীর উচ্চগতিতে রুপরোতে বাহিত প্রবণও অব পদ্ধতিতে নদীগর্ভ ক্ষয় করে হাঁড়ির মতো ঝড়ে করে। এই গর্তগুলিকে বা (Pot hole) বলে। মহকুপ সৃষ্টির মাধ্যমে নদীর গভীরতা বাড়তে থাকে।

 প্রশ্ন ৩৭ শৃঙ্খলিত শৈলশিরা (Interlocking spur ) কী?

উত্তর : পার্বত্য অঞ্চলে নদীপথের বাধাস্বরূপ শৈলশিরা বা পাহাড় থাকলে তা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য নদী এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়। তখন শৈলশিরাগুলিকে দূর থেকে দেখে মনে হয় উপত্যকায় শৃঙ্খলিত হয়ে আবদ্ধ আছে। এটি হল আবদ্ধ বা শৃঙ্খলিত শৈলশিরা। 

প্রশ্ন ৩৮ মিয়েন্ডার (Meander) বা নদীবাক কাকে বলে?

 উত্তর : সমভূমি অঞ্চলে নদীর প্রবাহপথে বাধা থাকলে তা এড়ানোর জন্য নদী আঁকাবাঁকা পথে প্রবাহিত হয়। নদীর এই আঁকাবাঁকা প্রবাহকে নিয়েন্ডার বা নদীবাক বলে। 

প্রশ্ন ৩৯ নিয়েন্ডার ভূমিরূপের নামকরণের কারণ কী?

 উত্তর : তুরস্কের মিয়েন্ডারেস' নদীটি অত্যন্ত এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়েছে। এই 'মিয়েন্ডারেস' থেকেই নদীর আঁকাবাঁকা গতিপথের নাম হয়েছে নিয়েন্ডার।

 প্রশ্ন ৪০ নদীর মধ্য ও নিম্নগতিতে মিয়েন্ডার সৃষ্টি হয় কেন?

 উত্তর : মধ্য ও নিম্নগতিতে নদীর বেগ হ্রাস পায়। ফলে নদী কোনো বাধা পেলে তা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য এঁকেবেঁকে বাহিত হয়। তাই মধ্য ও নিম্নগতিতে নদীবাঁক বা মিয়েন্ডারের সৃষ্টি হয়। 

প্রশ্ন ৪১ নদীচর ও নদীদ্বীপ-এর পার্থক্য কী? 

উত্তর : নদীগর্তে পলি সম্বিত হয়ে সৃষ্ট ভূমিরূপ হল নদীচর এবং সেই চর অংশে আরও পলি সঞ্চিত হয়ে তা জলের ওপর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকলে তাকে বলে নদীদ্বীপ।

 প্রশ্ন ৪২ ব-দ্বীপ (Delta) কী 

 উত্তর : প্রবাহের শেষপ্রান্তে মোহানায় নদী যেখানে সাগর বা হ্রদে মেশে সেখানে নদীবাহিত কাদা, পলি, বালি স্তরে স্তরে সজ্জিত হয়ে মাত্রাহীন 'ব' বা গ্রিক অক্ষর ডেলটা (A)-র মতো যে-ভূমিৰূপ সৃষ্টি হয়, তা হল বদ্বীপ।

প্রশ্ন ৪৩ ডেটা (A) নামকরণের কারণ কী? 

উত্তর : গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস নীলনদের মোহানায় তিনকোনাকৃতি নদীর সঞ্চয়জাত ভূমিকে গ্রিক অক্ষর ডেল্টার 'A' সঙ্গে তুলনা করে একে ডেন্টা (A) নাম দেন। বাংলায় একেই বদ্বীপ বলে।

প্রশ্ন ৪৪ গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র নদে অসংখ্য নদীদ্বীপ ও চর সৃষ্টি হয়েছে কেন? 

উত্তর : গঙ্গা ও ব্রক্ষ্মপুত্র নদের মধ্য ও নিম্নগতি সম্পূর্ণই সমভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত। তাই এখানে নদীর মন্থর গতির কারণে নদীর দ্বারা বয়ে আনা পলি বালির বহন করে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা কম থাকা। সেই পলি বালি নদীগর্ভে জমে অসংখ্য নদীদ্বীপ ও নদীচর সৃষ্টি করে। তা ছাড়া উক্ত নদী দুটির উৎসস্থল নরম পাললিক শিলাগঠিত হলে নদীতে পলির পরিমাণও খুব বেশি।। 

প্রশ্ন ৪৫ প্লাবনভূমির মধ্যে কোন্ কোন্ ভূমিরূপ গড়ে ওঠে?

 উত্তর : প্লাবনভূমির মধ্যে স্বাভাবিক বাঁধ (পিভি), ঢালু স্তূপ, অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ, ঝিল, বিল (জলাভূমি) ইত্যাদি গড়ে ওঠে।

 প্রশ্ন ৪৬ স্বাভাবিক বাঁধ বা লিভি কী? 

উত্তর : নদীর দু-কূল ছাপিয়ে প্লাবন হলে সবচেয়ে বেশি পলি নদীর দুই তীরে জমা হয়। ফলে, যে একটু বেশি উঁচু নদীপাড় তৈরি হয়, তাকে স্বাভাবিক বাঁধ বলে।

 প্রশ্ন ৪৭ খাঁড়ি (Estuary) কাকে বলে?

 উত্তর : নদী মোহানার শেষপ্রান্তে নদী যেখানে সাগর বা হ্রদে মেশে সেখানে ফানেল আকৃতির নদীমোহানাকে খাঁড়ি বলে। টেমস, লা প্লাটা নদীর খাঁড়ি অত্যন্ত চওড়া। 

প্রশ্ন ৪৮ সুন্দরবন অঞ্চলের নদীগুলিতে খাঁড়ি দেখা যায় কেন? 

উত্তর : সুন্দরবন অঞ্চলের নদীগুলিতে প্রতিনিয়ত তীব্র জোয়ারভাটা খেলে। এই অঞ্চলের নদী মোহানার বিপরীত দিক থেকে আসা প্রবল জোয়ারে নরম পলিমাটি গঠিত পাড় ভেঙে গিয়ে ফানেলাকৃতি বিশিষ্ট খাঁড়ির সৃষ্টি করে। তাই সুন্দরবন অঞ্চলের নদীগুলিতে খাঁড়ি দেখা যায়।

 প্রশ্ন ৪৯ ভারতের বৃহত্তম নদীদ্বীপের নাম ও অবস্থান লেখো।

 উত্তর : ভারতের বৃহত্তম নদীদ্বীপের নাম হল মাজুলি এবং এটি অসমে ব্রষ্মপুত্র নদে অবস্থিত। 

প্রশ্ন ৫০ সমপ্রায়ভূমি কী?

 উত্তর : বৃষ্টিবহুল আর্দ্র অঞ্চলে নদীর জলপ্রবাহ, বৃষ্টির জল ও অন্যান্য প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে প্রাচীন মালভূমি এবং উচ্চভূমিদীর্ঘদিন ধরে ক্ষয় পেতে পেতে একসময় উঁচুনীচু ঢেউ খেলানো ভূমি বা প্রায় সমতলভূমিতে পরিণত হলে তাদের সমপ্রায়ভূমি বলা হয়।

 প্রশ্ন ৫১ উদাহরণসহ প্রধান দু-রকম বদ্বীপের নাম লেখো।

 উত্তর : প্রধান দু-ধরনের বদ্বীপ হল—(i) ধনুকাকৃতি বদ্বীপ : উদাহরণ-গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপ ও (ii) পাখির পায়ের মতো বদ্বীপ : উদাহরণ – মিসিসিপি-মিসৌরি বদ্বীপ। 

প্রশ্ন ৫২ সুন্দরবনের দুটি গুরুত্ব লেখো। 

উত্তর : (i) এটি পৃথিবীর অন্যতম বায়োস্ফিয়ার পার্ক, যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছে। (ii) এই বনভূমি সামুদ্রিক ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস আটকায় বলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের কৃষিজমি লবণাক্ততার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে। 

প্রশ্ন ৫৩ সুন্দরবন অঞ্চলের দুটি দ্বীপের নাম লেখো যেগুলি ক্রমশ বিলীন হচ্ছে। 

উত্তর : সুন্দরবন অঞ্চলের লোহাচড়া ও ঘোড়ামারা দ্বীপ ক্রমশ বিলীন হচ্ছে। 

প্রশ্ন ৫৪ আমাজন প্রচুর জল বহন করে কেন? 

উত্তর : আমাজন অববাহিকা সুবিশাল এবং অববাহিকার প্রায় পুরোটাই নিরক্ষীয় জলবায়ুর অন্তর্গত। অববাহিকায় সারাবছর ধরেই প্রবল বৃষ্টি হয় বলেই এই নদ প্রচুর জল বহন করে। 

প্রশ্ন ৫৫ বৃষ্টির জলে পুষ্ট হওয়া সত্ত্বেও কঙ্গো নদী চিরপ্রবাহী কেন ? 

উত্তর : কঙ্গো নদী নিরক্ষীয় অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় অববাহিকা অঞ্চলে প্রায় সারাবছর প্রবল বৃষ্টি হয়। সারাবছর বৃষ্টি হওয়ার কারণেই নদীটি চিরপ্রবাহী হয়েছে।

 প্রশ্ন ৫৬ পাখির পায়ের মতো বদ্বীপ কীভাবে গঠিত হয়?

 [মা.প. '১৭] উত্তর : মূল নদী অসংখ্য শাখা-প্রশাখায় ভাগ হয়ে পাখির পায়ের আঙুলের মতো দীর্ঘ ও সংকীর্ণ হয়ে সমুদ্রের দিকে এগোলে নদী বরাবর সঞ্জয়কার্যে পাখির পায়ের মতো বদ্বীপ সৃষ্টি হয়। যেমন— মিসিসিপি মিসৌরী বদ্বীপ।

A. সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো 

প্রশ্ন ১ জলচক্রের অংশ হিসেবে নদীর ভূমিকা কীরূপ? 

উত্তর : সাগর, মহাসাগর, হ্রদ, অন্যান্য জলাশয় এবং মৃত্তিকার কৈশিক জল বাষ্পীভবন (Evaporation) প্রক্রিয়ায় জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়ে ওপরে ওঠে এবং ঘনীভূত (Condensation) হয়ে সৃষ্টি হয় মেঘ। এই মেঘ আকাশে ভেসে বেড়ায় এবং বায়ু সম্পৃক্ত হলে এই মেঘ থেকেই অধঃক্ষেপণ (Precipitation) ঘটে, (যেমন—বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, তুষারপাত), যা ভূপৃষ্ঠে নেমে আসে।প্রান্তিক মাধ্যমিক ভূগোল ও পরিবেশ এই বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, হিমবাহ ও তুষারগলা জলের কিছুটা অংশ মাটি চুঁইয়ে ভুঅভান্তরে প্রবেশ করে (একে বলে অনুপ্ৰাৰণ বা Infiltration) এবং বাকি অংশ পৃষ্ঠপ্রবাহ (Surface runoff) হিসেবে ভূপৃষ্ঠের ওপর দিয়ে স্থানীয় প্রবাহ রূপে নদীখাত সাগরে গিয়ে মেশে। জলের এই চক্রাকার আবর্তন হল জলচক্র এবং এটি বলাই যায় যে, এই জলচক্রের অংশ হিসেবে নদী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। 

প্রশ্ন। ২ নদীর ক্ষয় প্রক্রিয়া কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। 

উত্তর : নদীর ক্ষয়কাজ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে— (i) নদীর গতিবেগ । নদীর গতিবেগ নির্ভর করে নদীর ডালের ওপর। পার্বত্য অঞ্চলে তাই অধিক ঢালের জন্য গতিবেগ অনেক বেশি হয়। ফলে জলপ্রবাহ দ্বারা ক্ষয়ও বৃদ্ধি পায়। নদীর গতিবেগ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নদীবাহিত পদার্থও গতিবেগ প্রাপ্ত হয়। সেই সকল পদার্থসমূহই তখন অবঘর্ষ ও ঘর্ষণ ক্ষয় প্রক্রিয়ায় ক্ষয় করে। (ii) জলের পরিমাণ : বর্ষাকালে নদীতে জলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। তাই অন্যান্য ঋতু অপেক্ষা এই ঋতুতে নদীর ক্ষয় বেশি হয়। (iii) শিলান্তরের প্রকৃতি নদীর তলদেশে ও পার্শ্বদেশে নরম শিলাস্তর থাকলে, তা কঠিন শিলাস্তর অপেক্ষা দ্রুত ক্ষয় পায়। (iv) প্রবাহিত পদার্থের আয়তন ও পরিমাণ নদীবাহিত পদার্থের আয়তন ও পরিমাণ যত বাড়ে ততই নদীর অবঘর্ষ ও ঘর্ষণ ক্ষয় পদ্ধতিতে ক্ষয় বাড়ে। 

প্রশ্ন ৩ নদীর ক্ষয়কার্যের প্রক্রিয়াগুলি সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর : নদী চারভাবে ক্ষয় করে- (i) জলপ্রবাহ ক্ষ জলস্রোতের প্রবল আঘাতে নদীখাত ও নদীপাড়ের অপেক্ষাকৃত কোমল শিলা খুলে বেরিয়ে আসে। এটি জলপ্রবাহ ক্ষয়। (ii) অবঘর্ষ : নদীবাহিত নুড়ি, বোল্ডার ও অন্যান্য পাথরের খন্ড নদীর গতির সঙ্গে গতিপ্রাপ্ত হয়ে নদীর তলদেশ ও পার্শ্বদেশে আঘাত করে নদীর গভীরতা বাড়ায়। এটি অবঘর্ষ। (iii) ঘর্ষণ ক্ষ न নদীক্ষয়ের বিভিন্ন এরিয়া নদীবাহিত বিভিন্ন আকারের প্রস্তরখণ্ড পরস্পরের সঙ্গে আঘাতে ভেঙে অবশেষে নুড়ি, বালি ও পলিকণায় পরিণত হয়। (iv) প্রবণ ক্ষয় জলের সঙ্গো দ্রবীভূত অম্লের প্রভাবে লবণ ও ক্যালশিয়াম বাইকার্বনেট যুক্ত শিলাস্তর রাসায়নিকভাবে বিয়োজিত হয়। এটি হল দ্রবণ ক্ষয়।

 প্রশ্ন : ৪।নদীর বহন ক্ষমতা কোন্ কোন্ বিষয়ের ওপর নির্ভর করে? উত্তর : নদীর বহন ক্ষমতা নির্ভর করে— (i) নদীর গতিবেগ : নদীর গতিবেগ বাড়লে নদীর বহন ক্ষমতাও বাড়ে। তাই সমভূমি অঞ্চলের তুলনায় পার্বত্য অঞ্চলে নদীর বহন ক্ষমতা বেশি থাকে। কোনো কারণে নদীর গতিবেগ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেলে তার বহন ক্ষমতা ৬৪ গুণ বাড়ে (নদীর ষষ্ঠমাতের সূত্র)।নদীর ঢাল:নদীর চাল বেশি হলে নদীর বহন বাড়ে। তাই বহন ক্ষমতা বেশি। (i) বর্ষাকালে নদীতে জলের পরিমাণ বৃি পায় বলেই নদীর বহন ক্ষমতাও বাড়ে। নদীর বোঝা (iv)র পরিমাণ (Load) যে বস্তু ও ভারী বড়ো হয় নদী তাকে বেশি দূর পর্যন্ত | বহন করতে পারে না। বস্তুর ওজন হালকা, ছোটো ও পরিমাণ কম হলে, নদী তা বহুদূর পর্যন্ত বহন করতে পারে। জেনে রাখ নদীর বোঝা ● নদীর বোঝা (River load) না যে ক্ষমত মুড়ি-বালি হয়ে নদীগর্ত ভরাট করে, তাকে বলে (River load)1

 প্রশ্ন ৫ নদীর বহন প্রক্রিয়াগুলি সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।

 উত্তর : নদী পদার্থকে চারভাবে বহন করে- (i) রণ প্র নদীর জলে দ্রবীভূত প্রভাবে শিলান্তর অম্লের বিয়োজিত ও দ্রবীভূত হয়ে বাহিত হয়। (ii) অপেক্ষাকৃত সুক্ষ্ম, পলি ও বালি নদীর জলে ভেসে ভেসে বাহিত হয়। (ii) অপেক্ষাকৃত বড়ো খণ্ডগুলি নদীর তলায় ধাক্কা খেয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে এগিয়ে নদীর বিভিন্ন বহন প্র চলে। (iv) আকর্ষণ প্রক্রিয়া : নদীর তলদেশ দিয়ে স্রোতের টানে ছোটো ছোটো নুড়ি নীচের দিকে নেমে এলে তা আকর্ষণ প্রক্রিয়া। 

প্রশ্ন ৬ উচ্চগতিতে নদীকার্যের বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী? উত্তর : উচ্চগতিতে নদীকার্যের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল- (i) ভূমির ঢাল বেশি হয় বলে নদীর বেগও খুব বেশি থাকে। (ii) নদীতে বোল্ডার ও নুড়ির পরিমাণ বেশি থাকে বলে অবমর্য পদ্ধতিতে প্রবল নিম্ন হয়। (iii) প্রবল স্রোতে নদী প্রায় সব পদার্থই বহন করে। (iv) সদয় প্রায় হয়ই না। (v) উচ্চগতিতে নদীর গভীরতা বেশি থাকে কিন্তু বিস্তৃতি খুব কম হয়। 

৭।প্রশ্ন উচ্চগতিতে নদীর প্রধান কাজ কী কী ও কেন? 

 উত্তর : উচ্চগতিতে নদীর প্রধান কাজ হল (i) নিঃক্ষয় . . কারণ নদীর ঢাল বেশি হওয়ায় নদীর গতিবেগ বেশি থাকে। ফলে নদীর দ্রুত ও অনেক বেশি নিম্নক্ষয় করে। (i) পার্শ্ব ক্ষয় নদীর প্রবল গতিবেগ ও পার্শ্বদেশে নরম শিলাস্তর। থাকলে নদীর পার্শ্বক্ষয়ও হয়।(ii) বহন নদীতে অনের অধিক পরিমাণ ও নদীর ঢাল বেশি হওয়ায় বহন কাজও বেশি। তবে উচ্চগতিতে সময় একেবারেই হয় না। * 

প্রশ্ন ৮'I'আকৃতির উপত্যকা কীভাবে 'V' আকৃতিতে পরিণত হয়, তা চিত্রসহ ব্যাখ্যা করো।

 উত্তর : উচ্চগতিতে ভূমির উচ্চতা ও ঢাল খুব বেশি হওয়ায় নদী অতি প্রবলবেগে নিম্নক্ষয় করে। ফলে উপত্যকার আকৃতি হয় 'P'-এর মতো। V । আবৃত্তি উপত্যকা এবং থেকে V আকৃতি উপত্যাকার উৎপত্তি (ii) পরবর্তীকালে নদী উপত্যকার পার্শ্বদেশ বৃষ্টির জল, আবহবিকার বা ধসের ফলে ক্ষয় পেতে থাকলে উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলে নদী উপত্যকার আকৃতি সংকীর্ণ 'V'-এর মতো হয়। 

প্রশ্ন ৯। কী কী ভাবে জলপ্রপাত গঠিত হতে পারে। / মাপ ১৪ 

উত্তর : পার্বত্য অংশে উপত্যকার ঢাল অসম হলে নদীর জল উপর থেকে নীচের দিকে প্রবল বেগে পড়ে। এটি হল জলপ্রপাত। জলপ্রপাত বিভিন্নভাবে সৃষ্টি হয়- (i) নদীর গতিপথে কঠিন ও নরম শিলা অনুভূমিক, উল্লম্ব বা তির্যকভাবে অবস্থান করলে কঠিন অপেক্ষা নরম শিলা বেশি ক্ষয় হয়ে জলপ্রপাত গঠিত হয়। অধিকাংশ জলপ্রপাত এভাবেই সৃষ্টি। (ii) নদীর গতিপথে আড়াআড়ি চ্যুতি নদী চুনাপাথর- শেল - বেলেপাথর শেল ক্ষমাপ্রাপ্ত পদার্থসমূহ কাদা পাথর প্রপাত কূপ জলপ্রপাত ও প্রপাত ৰূপ ঘটলে জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়। যেমন- জাম্বেসি নদীর ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত, ভারতের নর্মদা নদীর কপিলধারা জলপ্রপাত। (ii) হিমবাহ সৃষ্ট ঝুলন্ত নিতৃবিন্দুতে উপত্যকায় জলপ্রপাত গঠিত জলপ্রপাত হয়। যেমন- লাডাকের পার্কচাক জলপ্রপাত। (iv) ভূমির পুনর্যৌবন লাভের সৃষ্ট নিকৃবিন্দুতে জলপ্রপাত গঠিত হয়। যেমন—সুবর্ণরেখা নদীর জনা ও দশম জলপ্রপাত। 

প্রশ্ন: ১০ জলপ্রপাত পশ্চাদ অপসারণ করে কেন? বা জলপ্রপাত নদীর উৎসের দিকে সরে যায় কেন ? 

 উত্তর : উচ্চগতিতে নদীর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলা অনুভূমিক ও উল্লম্বভাবে অবস্থান করলে কোমল শিলা বেশি ক্ষয় হয়ে জলপ্রপাত গঠিত হয়। জলপ্রপাতের নীচে গভীর গর্ত (প্লাপুল) গঠিত হয় বলে উপরের কঠিন শিলাস্তরটি ঝুলতে থাকে এবং একসময় ভা ভেঙে পড়ে এবং জলপ্রপাতটি নদীর উৎসের দিকে সরে যায়। একেই জলপ্রপাতের পশ্চাদ অপসারণ বলে। পৃথিবীর বিখ্যাত নায়াগ্রা জলপ্রপাত এইভাবেই একটু একটু করে সরে গেছে। 

 প্রশ্ন ১১ উচ্চগতিতে নদী উপত্যকা 'T' বা 'V' আকৃতির কিন্তু মধ্যগতিতে অগভীর "U" আকৃতির হয় কেন?

 [ উত্তর : উচ্চগতিতে নদীর ঢাল খুব বেশি থাকায় নদী প্রবল বেগে প্রবাহিত হয়। তাই পার্বত্য প্রবাহ বা উচ্চগতিতে নদীর পার্শ্বয় অপেক্ষা নিম্নক্ষয় অধিক হয়। এর ফলস্বরূপ নদী উপত্যকা 'I' ও V" আকৃতির হয়। অপরদিকে পার্বত্য প্রবাহ ছেড়ে নদী যখন সমভূমি বা মধ্যগতিতে প্রবেশ করে, তখন ভূমির ঢাল কমে যায় ও নদীর গতিবেগও কমে যায় ও নদীর সঞ্চয়কাজ বেড়ে যায়। মধ্যগতিতে নদীর জলের পরিমাণ বাড়ে বলে নদীর পার্শ্বক্ষয় ঘটে কিন্তু নিম্নক্ষয় ঘটে না। পার্শ্বক্ষয় বেশি হয় বলে নদী উপত্যকা ক্রমশ চওড়া হতে থাকে। এই কারণে মধ্যগতিতে অগভীর 'U' আকৃতির উপত্যকা দেখা যায়। 

প্রশ্ন ১২ মধ্যগতি ও নিম্ন গতিতে নদী সঞ্চয়কাজ করে কেন?

 উত্তর : নদী তার মধ্য ও নিম্ন গতিতে সঞ্চয়কাজ করে। কারণ (i) মধ্য ও নিম্ন গতিতে জলের গতিবেগ মাঝারি ও খুব কম হয়। (ii) এই দুই গতিতে নদীর ঢাল ক্রমশই কমতে থাকে। (111) এখানে নদীর বহন ক্ষমতাও অনেক বেশি। (iv) এই কারণেই নদী তার বয়ে আনা পলি-বালি আর বইতে না-পেরে এখানেই সঞ্চয় করে।

 প্রশ্ন । ১৩ চিত্রসহ অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদের উৎপত্তি লেখো।

 উত্তর : মধ্যগতি ও নিম্নগতিতে নদীর ঢাল কমে যাওয়ায় নদীর শক্তিও অনেকাংশে হ্রাস পায়। তাই এই পর্যায়ে নদীর সামনে কোনো কঠিন বাধা এসে পৌঁছোলে নদী এই বাধা এড়িয়ে কিছুটা এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়। নদীবাকের অবতল অংশে জলপ্রবাহ ক্ষয় এবং উত্তল অংশে পলিসায়ে নদীবাঁক ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং এক সময় বাকের চলতে থাকে এবং পরিত্যক্ত বিচ্ছিন্ন বাঁকটি হ্রদের আকারে অবস্থান করে। এই হ্রদ দেখতে ঘোড়ার ঘুরের মতো বলেই একে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ বলা হয়। 

প্রশ্ন ১৪ পাল শঙ্কু ও পলল ব্যজনী কীভাবে গড়ে ওঠে?

 উত্তর: • পদ শ পার্বত্য অঞ্চল পেরিয়ে নদী যখন সমভুমিতে নেমে আসে তখন নদী উপত্যকার ঢাল হঠাৎ কমে। যাওয়ায় নদীর বহন ক্ষমতা ও বেগ দুইই হঠাৎ কমে যায়। এই অবস্থায় পর্বতের পাদদেশে পলি, কাঁকর, নুড়ি, বালি প্রভৃতি শত্রুর আকারে সম্ভিত হয়ে যে ভূমিরূপ গঠন করে তাকে পলিশ বা পলল শঙ্কু বলে। পলল ব্যজনী পলল শঙ্কুর ওপর দিয়ে নদী অসংখ্য শাখায় বিনুনীর। আকারে প্রবাহিত হয় বলে সমভূমি পলল শঙ্কু বিস্তৃত হয়ে নীচু হয় ও অর্ধগোলাকার আকৃতি নেয়। এটিই হল পলল ব্যজনী । 

প্রশ্ন: ১৫ প্লাবনভূমির উৎপত্তি কীভাবে ঘটে উদাহরণসহ লেখো।

 উত্তর : মধ্য ও নিম্ন গতিতে নদীগর্ভে পলি ভরাট হয়ে নদীগর্ভ অগভীর হয়। ফলে নদীতে জলের পরিমাণ বাড়লে নদী দু-কূল ছাপিয়ে নদী অববাহিকায় বন্যার সৃষ্টি করে। বন্যার প্রভাবে নদীর দু-পাশে অববাহিকা বরাবর পলি, বালি, নুড়ি সজ্জিত হয়। বারংবার বন্যার প্রভাবে অববাহিকায় পলি, বালি, নুড়ি ক্রমাগত সম্মিত হয়ে তা সমভূমির রূপ নেয়। বন্যার প্রভাবে সৃষ্ট এই সমভূমি প্লাবন সমভূমি নামে পরিচিত। 'স্বাভাবিক বীর- প্লাবনভূমি ও স্বাভাবিক বা (ভি) ভারতে অসমের ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার সমভূমি, মিশরে নীলনদ অববাহিকার সমভূমি প্লাবন সমভূমির উদাহরণ। • উদাহরণ : গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, নীলনদ, সিন্ধুনদের অববাহিকায় দেখা যায়।

 প্রশ্ন ১৬ বদ্বীপ কীভাবে গঠিত হয়? 

উত্তর : নদীর নিম্নগতিতে মোহানায় নদীর গতিবেগ কমে যায় কিন্তু সুক্ষ্ম পলির পরিমাণ খুব বেশি থাকে। ফলে মোহানার সমুদ্রগর্ভ পলিস পায়ের মাধ্যমে ভরাট হয়ে উঁচু হতে থাকে এবং নদী শাখাপ্রশাখায় ভাগ হয়ে প্রবাহিত হয়। দুই শাখার অন্তবর্তী অংশ। মাত্রাহীন 'ব'-এর আকার ধারণ করে। প্রথম অবস্থায় এই অংশ নীচু জলাশয় হিসেবে অবস্থান করে। পরবর্তীকালে নদীর সঙ্গে সমুদ্রতরঙ্গ বাহিত পলিও সজ্জিত হয় এবং নিম্নাংশটি ক্রমশ ভরাট হয়ে বদ্বীপ গঠন করে। এইভাবেই পৃথিবীর প্রায় অধিকাংশ বাড়া বড়ো নদীর মোহানায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয়েছে।

প্রশ্নঃ ১৭ আকৃতি ও উদাহরণসহ বদ্বীপের শ্রেণিবিভাগ করো। 

উত্তর আকৃতি অনুযায়ী দ্বীপ চার ধরনের, যথা- (১) সক দ্বীপ (Arcuate Delta) বর্ষীপের সমুদ্রমুখী বাহরেখা ধে মতো আকৃতিবিশিষ্ট হলে তা ধনুকাকৃতি বদ্বীপ। গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র, পো, হোয়াংহো প্রভৃতি নদীর বর্ষীপ এরূপ। (২) পাখির মিসিসিপি ভাইবার নদীর বর্ষী বিভিন্ন প্রকার বদ্বীপ মতো বদ্বীপ (Bird's foot Delta) মূল নদী বহুশাখায় ভাগ হয়ে পাখির পায়ের আঙ্গুলের মতো দীর্ঘ ও সংকীর্ণ হয়ে সমুদ্র দিকে এগোলে নদী বরাবর সময়কাজে এরূপ বদ্বীপ গঠিত যেমন—মিসিসিপি-মিসৌরী বদ্বীপ। (৩) করাতের দাঁতের মতে বদ্বীপ (Cuspate Delta): মোহানায় সমুদ্রতরঙ্গের আঘাত প্র হলে নদীর পলি দুদিকে ছড়িয়ে পড়লে দ্বীপটি করাতের দাঁতের মতো আকৃতির হয়। যেমন- ইতালির ভাইবার বদ্বীপ। (৪) খাঁচা বদ্বীপ (Estuary Delta) খাঁড়ির মধ্যে বদ্বীপ গঠিত হলে খাঁড়ীয় বদ্বীপ। এই ধরনের বদ্বীপ সংকীর্ণ হয়। যেমন—ফ্রান্সের সীন এবং জার্মানির রাইন নদীর বদ্বীপ।

 প্রশ্ন ১৮ কোন্ কোন্ অনুকূল পরিবেশ থাকলে ব গঠিত হয়। [277. 9. '30) বা, নদীর মোহানায় বদ্বীপ কেন গড়ে ওঠে—ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর : বদ্বীপ গঠনের অনুকূল পরিবেশ : সব নদীর মোহানায় দ্বীপ গঠিত হয় না। বদ্বীপ গঠনের জন্য কতকগুলি অনুকূল পরিবেশের প্রয়োজন হয়— (১) পলির পরিমাণ বৃহৎ নদী অববাহিকা, সুদীর্ঘ নদীর গতিপথ, নদী অববাহিকায় নরম শিলার উপস্থিতি, অসংখ্য উপনদীর অবস্থান ইত্যাদি সুবিধাগুলি | থাকলে নদীতে পলির পরিমাণ বাড়বে। (২) মোহানায় মৃদু চাল : মোহানায় নদী মৃদু ঢালে সমুদ্রের সঙ্গে মিশলে তবেই পলিসয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হবে। (৩) অগভীর সমুদ্র : সমুদ্র অগভীর হলে তাড়াতাড়ি পলি ভরাট হয়ে বদ্বীপ গঠিত হবে। (৪) লবণতা বৃদ্ধি সমুদ্রজলের লবণতা যত বাড়বে ততই নদীজলের পলিরাশি যু অধঃক্ষিপ্ত হবে। (৫) বিপরীতমুখী স্রোত ও বায়ু : নদী মোহানার বিপরীত দিকের মৃদু স্রোত ও বায়ু পলি জমতে সাহায্য করে। (৬) শান্ত সমুদ্র মোহানার মুখে সমুদ্রণোত ও জোয়ারভাটার প্রকোপ যত কম হবে পলিরাশি তত দ্রুত সমুদ্রগর্ভে সঞ্চিত হবে।

প্রশ্ন । ১৯ সমস্ত নদীর মোহানায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয় না কেন?

 উত্তর : সমস্ত নদীর মোহানায় বদ্বীপ সৃষ্টি হয় না, কারণ— (i) যেসব নদীর গতিবেগ অনেক বেশি, সেই সমস্ত নদীর দ্বারা বাহিত পলি, বালি মোহানায় সঞ্চিত না হয়ে অনেক দূরে চলে যায়। (ii) নদী স্বল্প দৈর্ঘ্যের হলে নদীবাহিত পদার্থের পরিমাণ কম হওয়ায় নদীর অবক্ষেপণের পরিমাণও কম হয়। (iii) নদীর মোহানার গভীরতা যদি বেশি হয়, তাহলে অবক্ষেপণ হয় না। (iv) নদীর উপনদীর সংখ্যা যদি কম থাকে তাহলে নদীতে পলির জোগান বেশি থাকে না, ফলে সঞ্চয় বেশি হয় না। (v) মোহানা অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহ বেশি হলে বদ্বীপ গঠনের পরিবেশ গড়ে ওঠে না।

 প্রশ্ন ২০ আমাজন ও কঙ্গো নদীর মোহানায় বদ্বীপ গঠিত হয়নি কেন? 

উত্তর : আমাজন ও কঙ্গো দুটি নদী অববাহিকা নিরক্ষীয় জলবায়ুর অন্তর্গত হওয়ায় প্রচুর জল বহন করলেও মোহানায় বদ্বীপ গড়ে ওঠেনি, কারণ— (i) নদী দুটি প্রচুর জল বহন করে। (ii) দুটি নদীই মোহানার নিকট খাড়া ঢালে সমুদ্রে মিশেছে বলে জল প্রবল বেগে সাগরে পড়ে। (iii) মোহানার নিকট সমুদ্র দিয়ে আড়াআড়ি সমুদ্রস্রোত বয়ে যাওয়ার ফলে পলিসমেত জল উত্তর দিকে বয়ে যায়। উক্ত তিনটি কারণে মোহানায় পলি সঞ্চয় ঘটে না বলে বদ্বীপ গঠিত হয়নি।

 প্রশ্ন | ২১ সুন্দরবন আমাদের কাছে কেন গুরুত্বপূর্ণ?

 উত্তর : ভারত ও বাংলাদেশের সক্রিয় বদ্বীপের অংশ সুন্দরবন পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য।এই সুন্দরবন আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ- (i) বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী নিয়ে গঠিত এই বায়োস্ফিয়ার পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে। (ii) এই বনভূমি প্রবল সামুদ্রিক ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস আটকায়। । মৃত্তিকার ক্ষয় রোধ হয়, বন্যার প্রকোপ কমে এবং জমি ।তার হাত থেকে বাঁচে। তবে বর্তমানে জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত কারণে সুন্দরবন-এর ষ্যৎ সংকটময়। | 

প্রশ্ন।২২  লোহাচড়া, নিউমুর ও ঘোড়ামারা দ্বীপগুলির ওপর বায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব কীভাবে পড়েছে?

উপ্রশ্ন ১ | উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দাও। অথবা, উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর ক্ষয়কার্যে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের ব্যাখ্যা দাও ★★ উত্তর : উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপগুলি হল- (i)। আকৃতির উপত্যকা বা গিরিখাত (Gorge): উচ্চগতিতে ভূমির উচ্চতা ও ঢাল বেশি এবং নদীর মধ্যে পাথর ও বোল্ডারের পরিমাণ খুব বেশি। ফলে নদী প্রবলভাবে অবঘর্ষ পদ্ধতিতে নিম্নক্ষয় করতে থাকে। কিন্তু পার্শ্বক্ষয় কম। প্রবল নিম্নক্ষয়ের কারণেই নদী উপত্যকা সংকীর্ণ ও গভীর '।' আকৃতির বিশিষ্ট হয়। এটিই হল গিরিখাত। গিরিখাত নবীন ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চলেই বেশি দেখা যায়। পেরুর কলকা নদীর এল ক্যানন-দ্যা কলকা হিমালয় পর্বতে অসংখ্য গিরিখাত দেখা যায়। পৃথিবীর গভীরতম গিরিখাত। এল ক্যানন-দ্যা কলকা গিরিখাত (ii) V আকৃতির উপত্যকা ('V' Shaped Valley) : উপত্যকা বিবর্তনের পরবর্তী পর্যায়ে সংকীর্ণ ও গভীর '' আকৃতির উপত্যকার দুই পাশের অংশ আবহবিকার, জলপ্রবাহ ও ধসের কারণে ক্ষয় হয়ে। ক্রমশ 'V' আকৃতি বিশিষ্ট হয়ে পড়ে। গভীর । আকৃতি উপত্যকা আবহবিকার ও পাড়ক্ষয় V আকৃতি উপত্যকা '' আকৃতি উপত্যকা এবং ' থেকে 'V' আকৃতি উপত্যকার উৎপত্তি (iii) ক্যানিয়ন (Canyon) : শুষ্ক অঞ্চলে গঠিত গিরিখাত হল ক্যানিয়ন। উচ্চ শুষ্ক অঞ্চলে প্রবাহিত চিরপ্রবাহী নদী নিম্নক্ষয়ের মাধ্যমে গভীরতা বাড়ায়, কিন্তু বৃষ্টির অভাবে পার্শ্বক্ষয় তেমন হয়। না। ফলে উপত্যকাটি হয় গভীর ও সংকীর্ণ। এই ধরনের গভীর সংকীর্ণ ও শুষ্ক উপত্যকা হল ক্যানিয়ন। ইয়ারলুং সাংপো নদীর সাংপো ক্যানিয়ন, কলোরাডো নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, ব্ল্যাক ক্যানিয়ন পৃথিবী বিখ্যাত ক্যানিয়ন।ত্তর : লোহাচড়া, নিউমুর ও ঘোড়ামারা দ্বীপগুলির ওপর বায়ুর পরিবর্তনের প্রভাবগুলি হল— (ক) লোহাচড়া দ্বীপ : পৃথিবীর প্রথম জনবসতিপূর্ণ দ্বীপ হাচড়া পশ্চিম সুন্দরবনে অবস্থিত ছিল। ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে টি সামুদ্রিক জলতলের উত্থান ও ক্ষয়ের ফলে সমুদ্রগর্ভে শীন হতে শুরু করে। ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে উপগ্রহ চিত্রে দ্বীপটিকে । দেখা যায়নি। তবে বিজ্ঞানীদের অনুসন্ধান অনুসারে ২০০৭ টাব্দে দ্বীপটির কিছু তল আবার দৃশ্যমান হতে শুরু করে। তাঁদের ত জোয়ারের সময় সমুদ্রে নিমজ্জিত থাকলেও ভাটার সময় প্রায় ফুট উচ্চতা পর্যন্ত দৃষ্টিগোচর হয়। (খ) নিউমুর দ্বীপ : বঙ্গোপসাগরের বুকে জনমানবশূন্য নতুন ভূমি হল নিউমুর। বাংলাদেশে এর নাম তালপট্টি। ১৯৭০ ন্টাব্দে ঘূর্ণিঝড়ে দ্বীপটি সমুদ্রে জেগে ওঠে। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে পটি ক্রমশ নিমজ্জিত হয়ে যায়। বর্তমানে কেবল ভাটার সময় পটির অংশ বিশেষ দৃশ্যমান হয়। (গ) ঘোড়ামারা দ্বীপ : হুগলি নদীর মোহানার নিকটবর্তী ক্ষুদ্র প ঘোড়ামারা। ১৯৭৫-এ আয়তন ছিল ৮.৫১ বর্গকিমি; ২০১২ স্টাব্দে সামুদ্রিক ক্ষয়ে আয়তন কমে হয় ৪.৪৩ বর্গকিমি। মুদ্রজল -পৃষ্ঠের উত্থানই এর কারণ বলে বিজ্ঞানীদের অনুমান।

রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তরপ্রশ্ন 

১ | উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দাও। অথবা, উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর ক্ষয়কার্যে গঠিত তিনটি ভূমিরূপের ব্যাখ্যা দাও

 ★★ উত্তর : উচ্চগতি বা পার্বত্য প্রবাহে নদীর ক্ষয়কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপগুলি হল- (i)। আকৃতির উপত্যকা বা গিরিখাত (Gorge): উচ্চগতিতে ভূমির উচ্চতা ও ঢাল বেশি এবং নদীর মধ্যে পাথর ও বোল্ডারের পরিমাণ খুব বেশি। ফলে নদী প্রবলভাবে অবঘর্ষ পদ্ধতিতে নিম্নক্ষয় করতে থাকে। কিন্তু পার্শ্বক্ষয় কম। প্রবল নিম্নক্ষয়ের কারণেই নদী উপত্যকা সংকীর্ণ ও গভীর '।' আকৃতির বিশিষ্ট হয়। এটিই হল গিরিখাত। গিরিখাত নবীন ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চলেই বেশি দেখা যায়। পেরুর কলকা নদীর এল ক্যানন-দ্যা কলকা হিমালয় পর্বতে অসংখ্য গিরিখাত দেখা যায়। পৃথিবীর গভীরতম গিরিখাত। এল ক্যানন-দ্যা কলকা গিরিখাত

 (ii) V আকৃতির উপত্যকা ('V' Shaped Valley) : উপত্যকা বিবর্তনের পরবর্তী পর্যায়ে সংকীর্ণ ও গভীর '' আকৃতির উপত্যকার দুই পাশের অংশ আবহবিকার, জলপ্রবাহ ও ধসের কারণে ক্ষয় হয়ে। ক্রমশ 'V' আকৃতি বিশিষ্ট হয়ে পড়ে। গভীর । আকৃতি উপত্যকা আবহবিকার ও পাড়ক্ষয় V আকৃতি উপত্যকা '' আকৃতি উপত্যকা এবং ' থেকে 'V' আকৃতি উপত্যকার উৎপত্তি 

(iii) ক্যানিয়ন (Canyon) : শুষ্ক অঞ্চলে গঠিত গিরিখাত হল ক্যানিয়ন। উচ্চ শুষ্ক অঞ্চলে প্রবাহিত চিরপ্রবাহী নদী নিম্নক্ষয়ের মাধ্যমে গভীরতা বাড়ায়, কিন্তু বৃষ্টির অভাবে পার্শ্বক্ষয় তেমন হয়। না। ফলে উপত্যকাটি হয় গভীর ও সংকীর্ণ। এই ধরনের গভীর সংকীর্ণ ও শুষ্ক উপত্যকা হল ক্যানিয়ন। ইয়ারলুং সাংপো নদীর সাংপো ক্যানিয়ন, কলোরাডো নদীর গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, ব্ল্যাক ক্যানিয়ন পৃথিবী বিখ্যাত ক্যানিয়ন।

B (iv) (Water falls) পার্বত্য অঞ্চলে নদীর গতিপথে কঠিন ও কোমল শিলাস্তর ওপর-নীচে আড়াআড়িভাবে বা তির্যকভাবে থাকলে কোমল শিল্পান্তর কঠিন শিলাস্তরের তুলনায় দ্রুত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে নীচু হয়ে যায় এবং নদীর প্রবাহপথে ঘাড়া ঢালের সৃষ্টি হয়। এই অবস্থার নদীস্রোত তখন খাড়া ঢাল থেকে প্রবল বেগে নীচে পড়ে। একেই জলপ্রপাত বলে। চুনাপাথর- শেল প্রপাত কৃপ বেলে পাথর ক্ষণপ্রাপ্ত পদার্থসমূহ শেল- কাদাপাথর জলপ্রপাত ও প্রপাত কৃপ 

(v) প্রাকৃ (Plunge pool) জলপ্রপাতের জল প্রবলবেগে যেখানে পড়ে সেখানে বিশালাকার হাঁড়ির মতো গর্তের সৃষ্টি হয়। একে প্রাপ্ত পুল বলে। 

(vi)(Plot hole) : নদীর গতিপথে কোমল শিলা অবস্থান করলে অবঘর্ষ পদ্ধতিতে শিলাখণ্ডের আঘাতে নদীগর্ভে গর্তের সৃষ্টি হয়। পরবর্তী সময়ে ওই গর্তের মধ্যে জলচক্রের আকারে প্রস্তরখণ্ডসহ ঘুরতে ঘুরতে ক্ষয় করে গর্তকে আরও বড়ো ও গভীর করে। একে মন্থকূপ বা পটহোল বলে। কূপের উৎপত্তি 

(vi) শৃঙ্খলিত শৈলশিরা (Interlocking spur): পার্বত্য অংশে ।। নদীপথের বাধাস্বরূপ শৈলশিরা বা পাহাড় থাকলে তা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য নদী এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়। তখন শৈলশিরাগুলিকে দূর থেকে মনে হয় উপত্যকায় আবদ্ধ হয়ে আছে। এটি হল আবদ্ধ বা শৃঙ্খলিত শৈলশিরা।

প্রশ্ন ২. নদীর সন্বয়কার্যে বা নিম্নগতিতে গঠিত ভূমিরূপের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দা অথবা, নদীর সরকার্যে গঠিত যে-কোনো তিনটি ভূমিরূপের 

উত্তর : নদীর সায়কার্যের দ্বারা গঠিত ভূমিরূপসমূহ নিম্নরূপ- (ক) ভূমি (Flood plain) সমভূমিতে অগভীর নদীর গর্ভে বর্ষার অতিরিক্ত জল সংযোজনে দুকূল ছাপিয়ে বন্যা হলে দুপাড়ের নীচু ভূমি নতুন পলির আবরণে ঢাকা পড়ে। এই ভরাট ভূমিকে প্লাবনভূমি বলে। উৎপত্তি কারণ মধ্য ও নিম্ন গতিতে নদীগর্তে পলি ভরাট হয়ে নদীগর্ভ অগভীর হয়। ফলে নদীতে জলের পরিমাণ বাড়লে নদী দু-কূল ছাপিয়ে নদী অববাহিকায় বন্যার সৃষ্টি করে। বন্যার প্রভাবে নদীর দু-পাশে অববাহিকা বরাবর পলি, বালি, নুড়ি সম্মিত হয়। বারংবার বন্যার প্রভাবে অববাহিকায় পলি, বালি, নুড়ি ক্রমাগত সজ্জিত হয়ে তা সমভূমির রূপ নেয়। বন্যার প্রভাবে সৃষ্ট এই সমভূমি প্লাবন সমভূমি নামে পরিচিত। ভারতে অসমের ব্রক্ষ্মপুত্র অববাহিকার সমভূমি, মিশরে নীলনদ অববাহিকার সমভূমি প্লাবন সমভূমির উদাহরণ। • 

উদাহরণ গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, নীলনদ, সিন্ধুনদের অববাহিকায় দেখা যায়। 

(খ) স্বাভাবিক বাঁধ (Natural leeve) : নদীর দুই তীরের পার্শ্ববর্তী সমভূমি অপেক্ষা উঁচু প্রাকৃতিক উপায়ে সৃষ্ট বাঁধকে বলে স্বাভাবিক বাঁধ + উৎপত্তির কারণ প্লাবনের সময় নদীবাহিত পলিরাশি নদী- তীরের দু-পাড়ে নীচু ভূমিতে ছাপিয়ে যায়। পলিরাশি দু-পাড়ে বেশি পরিমাণে জমা হয়। নদীর দুই তীরে পলিসদয় তুমি বাঁধের আকারে অবস্থান করে। একেই প্লাবনভূমি বলে। বৈশিষ্ট্য : (i) এই বাঁধ ২-৩ মিটার উঁচু হয়। (ii) বাঁধ ১%, ২ কিমি চওড়া হয়। (iii) বাঁধের ঢাল প্লাবনভূমির দিকে থাকে। (iv) বাঁধ নদীর গতিপথের সমান্তরালে অবস্থান করে। • উদাহরণ আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে কলোরাডো নদীর উপনদী ক্রিকের ওপর অবস্থিত রেনবো ব্রিজ হল স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিক সেতুর উদাহরণ। (গ) অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রम (Ox bow lake) : নদীর মধ্য ও নিম্ন গতিতে ঘোড়ার খুরের ন্যায় যে পরিত্যক্ত নদীখাত বা হ্রদ দেখা যায়, তাকে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ বলে। 

* উৎপত্তির কারণ : মধ্যগতি ও নিম্নগতিতে নদীর ঢাল কমে যাওয়ায় নদীর শক্তিও অনেকাংশে হ্রাস পায়। তাই এই পর্যায়ে নদীর সামনে কোনো কঠিন বাধা এসে পৌঁছোলে নদী এই বাধা এড়িয়ে কিছুটা এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়। নদীবাঁকের অবতল অংশে জলপ্রবাহ ক্ষয় এবং উত্তল অংশে পলিসওয়ে নদীবাঁক ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং একসময় বাঁকের মধ্যবর্তী স্থান সংকীর্ণ হয়ে যুক্ত হয়। এই অবস্থায় নদীটি সোজা হয়ে চলতে থাকে এবং পরিতার বিচ্ছিন্ন বাঁকটি বুকের আকারে অবস্থান করে। এই হ্রদ দেখতে। ঘুরের মতো বলেই একে অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ বলা হয়।

 (ঘ) বদ্বীপ (Delta): নিম্নপ্রবাহে নদীমোহনায় অধীর | । সমুদ্রে নদীবাহিত ও উপকূলের পলি জমা হয়ে যে ত্রিকোণাকার। ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়, তাকে বলে বদ্বীপ। সমু পরিণত ৰবীণ (১-৭) বীপ সৃষ্টির বিভিন্ন পর্যায় * উৎপত্তির কারণ নদীর প্রবাহপথের শেষে সমুদ্রের কাছাকাছি স্থানে ভূমির উচ্চতা কমে যাওয়ায় [-৫ মিটার) নদী সঞ্চয়কার্য করে, তখন নদীর বক্তৃতার সমুদ্রের নোনা জলের স্পর্শে জমাট বাঁধে। ফলে নদী তার বোঝা অবক্ষেপিত করে নতুন পলল ভূমি গড়ে তোলা। নদী নানা শাখায় বিভক্ত হয়ে ওই নতুন ভূমির পাশ দিয়ে বইতে থাকে। এইভাবে দীপ সৃষ্টি হয়। • ব্রহ্মপুত্র সুন্দরবন অঞ্চলে প্রায় ৭৫০০০ বর্গকিমি জুড়ে পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ গড়ে তুলেছে। (ঙ) খা৺ড়ি(Estuary) : শেষান্তে মোহানায় নদী যেখানে সাগারে মেশে সেখানে ফানেল আকৃতির নদীমোহানাকে খাঁড়ি বলে। বিপরীত দিক থেকে আসা প্রবল জোয়ারে নরম পলিমাটি গঠিত পাড় ভেঙে দিয়ে খাঁড়ি সৃষ্টি হয়। সুন্দরবনের বাড়িগুলি মৎস্যজীবীদের কাছে সম্পন্ন। টেমস, লা প্লাটা নদীর খাড়ি অত্যান্ত চওড়া।

৩ প্রশ্ন: মধ্যগতিতে ও নিম্নগতিতে নদীকার্যের ফলে ভূমিরূপ ব্যাখ্যা করো। 

(i) পলল শঙ্কু ও পলল ব্যজনী : চ্ছন্ন পর্বতের পাদদেশে ভূমির ঢাল হঠাৎ কমে বলে নদীবাহিত মুভি, পাথর, কাঁকর, বালি, পলি সব শকুর আকারে সঞ্চিত হয়। এটি হল পলল শকু। পরবর্তী সময়ে পলল শত্রুর ওপর দিয়ে নদী বিভিন্ন খাতে প্রবাহিত হলে (বিনুনী নদী) তা অর্ধগোলাকার আকৃতিতে ভাগ হয়ে পড়ে। হাত পাখার মতো দেখতে প্রায় গোলাকার এই ভূমি হল পলল ব্যজনী বা পলল পাখা।

 (ii) নদীবাঁক ও মিয়োন্ডার : এটি ক্ষয় ও সময় কার্ডের মিলিত ভূমিরূপ ।। নদী প্রবাহপথে বাধা পেলে তা এড়িয়ে যাওয়ার জন্য এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয়। বাঁকের অবতল অংশে ঘূর্ণি জলস্রোতের আঘাতে নিয়োন্ডার এবং খাড়া পাড় ও ঢালু পাড় ক্ষয় হয়ে নদীপাড় হয় খাড়া (River Cliff) এবং বিপরীত উত্তল অংশে পলি সঞ্চিত হয়ে পাড় হয় মৃদুভালু (Slip of Slope )। নদী পাড়ের এই সময়কে বিন্দুবার বলে। এইভাবে পার্শ্বক্ষয় ও সহায়ের মাধ্যমে নদীতে যে বাকের সৃষ্টি হয় তা হল মিয়েন্ডার। তুরস্কের 'নিয়েন্ডারেস' নদীর নামানুসারে এই ভূমির নামকরণ হয় মিয়েন্ডার।

 (ii) অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ : এটিও ক্ষয় ও সময় কার্যের মিলিত ভূমিরূপ । নদী যদি খুব এঁকেবেঁকে প্রবাহিত হয় এবং খাড়াপাড় (Clips) অংশে পার্শ্বক্ষয় এবং মৃদুচালু (slip of slope) অংশে সঞ্চয় চলতে থাকে তাহলে একসময় বাঁকের মধ্যবর্তী স্থান সংকীর্ণ হয়ে যুক্ত হয় এবং নদী সোজাপথে চলতে থাকে। এই অবস্থায় ওই পরিত্যক্ত বা বিচ্ছিন্ন অবশিষ্ট বাঁকটি তখন হ্রদের আকারে অবস্থান করে। এই ধরনের হ্রদ দেখতে ঘোড়ার খুরের মতো বলেই এটি হল অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রন। নদীর দিক অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদের উৎপত্তি

 (iv) নদীচর ও নদীদ্বীপ : নদীগর্ভে পলি সঞ্চিত হয়ে সৃষ্ট ভূমিরূপ হল চর। চর অংশে আরও পলি সঞ্চিত হয়ে তা জলের ওপর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকলে তা নদীদ্বীপ। অসমে ব্রহ্মপুত্র নদীর উপর মাজুলি' (ক্ষেত্রফল একসময় ছিল ১২৫০ বর্গকিমি। ক্ষয়ের কারণে এখন মাত্র ৪২২ বর্গকিমি) ভারতের বৃহত্তম নদীদ্বীপ এবং আমাজনের মোহানায় 'ইলহাম' (ক্ষেত্রফল ৪০,১০০ বর্গকিমি) পৃথিবীর বৃহত্তম নদীদ্বীপ। (v) প্লাবনভূমি : মধ্য ও নিম্ন প্রবাহে ঢাল কমে বলে নদীগর্ভ পলি ভরাট হয়ে অগভীর হয়ে পড়ে। দীর্ঘকাল পলিসঞ্চয়ের কারণে নদীগর্ভ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের তুলনায় কিছুটা উঁচু হয়। নদীতে জল বাড়লে নদী দু-কূল ছাপিয়ে বন্যার সৃষ্টি করে। বারংবার বন্যার প্রকোপে উপত্যকার বিস্তীর্ণ অংশে পলি থিতিয়ে এবং প্রলেপ পড়ে যে ভূমিরূপ সৃষ্টি হয় তা হল প্লাবনভূমি। প্লাবনভূমির মধ্যে স্বাভাবিক বাঁধ (লিভি), ঢালু স্তূপ, অশ্বক্ষুরাকৃতি হ্রদ, ঝিল, বিল (জলাভূমি) ইত্যাদি গড়ে ওঠে। প্লাবন 

vi) ान লি িনদীর কিনারে তটরেখার সমান্তরালে বালি ও পলি গঠিত বাঁধ হল স্বাভাবিক বাঁধ বা গিডি। বন্যায় নদীখাতের জল যখন প্লাবনভূমিতে প্রবেশ করে তখন নদীবাহিত পলিরাশি কিনারা বরাবর সজ্জিত হয়ে পিভি বা স্বাভাবিক বাঁধ গঠিত হয়। লিভির ঢাল কিনারা থেকে বিপরীতমুখী হয়।

 ((vii) খাঁড়ি শেষপ্রান্তে মোহানায় নদী যেখানে সাগরে মেশে সেখানে ফানেল আকৃতির নদীমোহানাকে খাঁড়ি বলে। বিপরীত দিক থেকে আসা প্রবল জোয়ারে নরম পলিমাটি গঠিত পাড় ভেঙে গিয়ে খাঁড়ি সৃষ্টি হয়। সুন্দরবনের খাঁড়িগুলি মৎস্যজীবীদের কাছে সম্পদ। টেনস, লা প্লাটা নদীর খাঁড়ি অত্যন্ত চওড়া। 

(viii) বদ্বীপ প্রবাহের শেষপ্রান্তে মোহানায় নদী যেখানে সাগর বা হ্রদে মেশে সেখানে নদীবাহিত কাদা, পলি, বালি স্তরে স্তরে সজ্জিত হয়ে মাত্রাহীন 'ব' বা গ্রিক অক্ষর ডেল্টার (A) মতো যে ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়, তা হল বদ্বীপ। পৃথিবীর অধিকাংশ বড়ো বড়ো নদীর মোহানায় বদ্বীপ গঠিত হয়েছে। গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র নদীপ পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ। 

প্রশ্ন ৪ | সুন্দরবনের উপর পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর : বিশ্ব উন্নায়নের প্রভাবে সুন্দরবন অঞ্চলের উন্নতা প্রতি দশকে গড়ে ৫° সে করে বাড়ছে এবং এর প্রভাব পড়ছে সুন্দরবন অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র ও জনজীবনের উপর।

 (i) জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি : World Bank-এর রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্ব উন্নায়নের প্রভাব সুন্দরবন অঞ্চলের সমুদ্রজলতল প্রতিবছর ৩-৪ মিলিমিটার বাড়ছে। এর প্রভাবে লোহাচড়া, নিউমুর, বেডফোর্ড প্রভৃতি দ্বীপ ধীরে ধীরে জলের তলায় তলিয়ে যাচ্ছে এবং অবলুপ্ত হচ্ছে। 

(ii) বনভূমি ধ্বংস : যদি ভবিষ্যতে সমুদ্রজলতল ১ মিটার বাড়ে তাহলে সুন্দরবনের ৭৫ ভাগ অংশটি প্লাবিত হবে এবং ধ্বংস হওয়ার দিকে এগোবে। এতে ওই অঞ্চলের বাস্তুতন্ত্র বিনষ্ট হবে। 

E. দু- এককথায় উত্তর দাও

১ . পৃথিবীর বৃহত্তম মহাদেশীয় হিমবাহ কোনটি? 

উত্তর- অ্যান্টার্কটিকার ল্যাম্বার্ট।  

২. পর্বতগাত্র ও হিমবাহের মধ্যে যে সংকীর্ণ ফাকের সৃষ্টি তাকে কী বলে ?

উত্তর  বার্গযুক্ত। 

৩ পৃথিবীর দীর্ঘতম উপত্যকা হিমবাহ কোনটি?

 উত্তর, আলাস্কার হুবার্ড। 

8 পার্বত্য হিমবাহ ক্ষয়ের ফলে একটিমাত্র শিলাখণ্ডের ওপর গঠিত ঢিবির মতো আকৃতিবিশিষ্ট ভূমিরূপকে কী বলে? 

উত্তর রসে মতানে। 

৫ হিমসিঁড়ির বেসিনের মতো অংশে সৃষ্ট হ্রদকে কী বলে?

 উত্তর। প্যাটার্নওস্টার হ্রদ। 

৬. কোন্ দেশকে বলা হয় 'the land of fjords' ? 

উত্তর ।নরওয়েকে। 

৭.বহিঃবিধৌত সমভূমি নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন হলে তাকে কী  বলে ?

উত্তর! ভ্যালি ট্রেন। 

৮.কেটল হ্রদের তলদেশে স্তরে স্তরে সঞ্চিত পলিকে কী বলে?

 উত্তর ভারব

৯। উচ্চ অক্ষাংশের উপকূলে উচ্চ অক্ষাংশের উপকূলে হিমবাহের ক্ষয়কার্যের ফলে সৃষ্টি হওয়া আংশিক জলমগ্ন উপত্যকাকে কী বলে?

 উত্তর ফিয়র্ড।

১০ । উচ্চ অক্ষয়াংশের উপকূল হিমবাহের সঙ্গে প্রবাহিত পাথরখন্ড ও বালিসহ মিশ্র উপাদানকে একসঙ্গে কী বলে?

 উত্তর | বোল্ডার ক্লে বা টিল।

 ১১ হিমবাহ যেখানে এসে শেষ হয় অর্থাৎ গলে যায়, সেই অংশের গ্রাবরেখাকে কী বলে?

 উত্তর | প্রান্ত গ্রাবরেখা।  

১২ করি ভূমিরূপকে ফ্রান্সে কী বলে? 

উত্তর সার্ক। 

১৩ হিমবাহের সঞ্চয়কার্যের ফলে পর্বতের পাদদেশে বড়ো বড়ো প্রস্তরখণ্ড সজ্জিত হয়ে যে ভূমিরূপ গঠিত হয়, তাকে কী বলে? 

উত্তর] আগামুক।

 ১৪ উচ্চ অক্ষাংশে অবস্থিত বরফমুক্ত পর্বতের শিখরদেশগুলিকে কী বলে? 

উত্তর | নুনাটক্স। 

১৫ পৃথিবীর বৃহত্তম ফিয়র্ডের নাম কী? 

উত্তর স্কোরবি সাউন্ড ফিয়র্ড। 

১৬ পাদদেশীয় হিমবাহের অগ্রভাগকে কী বলে?

 উত্তর | লোব।

 ১৭ যে কাল্পনিক সীমারেখার ওপর সারাবছর বরফ জমে থাকে, তাকে কী বলে?

 উত্তর | হিমরেখা।  

১৮ ভারতের কোথায় ‘রসে মতানে' ভূমিরূপ দেখা যায়?

 উত্তর  কাশ্মীরের লিডার নদীর উপত্যকায়।

 ১৯. জমাটবদ্ধ তুষার কণাকে কী বলে? 

উত্তর | ফার্ন। 

২০ হিমবাহ জিবের মতো এগিয়ে গেলে তাকে কী বলে?

 উত্তর! রো আউট। 

২১ দুটি হিমযুগের মধ্যবর্তী সময়কালকে কী বলে? উত্তর] অন্তর্বর্তী হিমযুগ। সবচেয়ে বেশি হিমবাহ কোন্ মহাদেশে দেখা যায়? 

উত্তর, দক্ষিণ গোলার্ধের অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশে।

 ২২  সবচেয়ে বেশি হিমবাহ কোন মহাদেশ দেখা যায়?

উত্তর দক্ষিণ গোলার্ধের অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশ।

২৩ ক্ল্যাগ এর পশ্চাতের ভূমিরূপটির নাম কী?

 উত্তর! ২৪. টেল। বহিঃবিধৌত সমভূমি নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন হলে তাকে কী বলে?

 উত্তর] ভ্যালি ট্রেন।

২৫  অসংখ্য ড্রামলিন একসঙ্গে অবস্থান করলে তাকে কী বলে? 

 উত্তর | Busket of egg topography.

প্রশ্ন ১ হিমবাহ (Glacier) কী ? 

উত্তর : চিরতুষারাবৃত অঞ্চলে ক্রমাগত হারে সঞ্জিত তুষার প্রবল চাপে সুবিশাল কঠিন বরফস্তূপে পরিণত হয়। এই বরফস্তূপ অভিকর্ষের টানে ঢাল বরাবর নেমে আসে। একেই বলে হিমবাহ। 

প্রশ্ন ২ নেভে ও ফার্ন বলতে কী বোঝ?

 উত্তর : হিমরেখার ঊর্ধ্বে প্রচণ্ড শৈত্যের কারণে তুষারপাত ঘটে। সদ্য পতিত তুষার হালকা পেঁজা তুলোর মতো হয়। একে নেভে বলে। নেভের ওপর পুনরায় তুষারপাতে নীচের তুষারের দৃঢ়তা ও ঘনত্ব বাড়ে। এটি হল ফার্ন। 

প্রশ্ন । ৩ রেগেলেশন বা পুনর্জমাটন কাকে বলে?

 উত্তর : প্রবল চাপে নীচে হিমবাহ ও ভূমির সীমানা বরাবর গলনাঙ্ক নেমে গিয়ে বরফ জলে পরিণত হয়। পরে চাপ হ্রাস পেলে ওই জল আবার বরফে পরিণত হয়। এই পদ্ধতি হল রেগেলেশন (Regelation) বা পুনর্জমাটন। 

প্রশ্ন। ৪ | হিমযুগ (Ice Age) কাকে বলে? |

 উত্তর : প্রাচীনকালের কিছু কিছু সময় ভূপৃষ্ঠের বিস্তীর্ণ অংশ পুরু বরফে ঢাকা ছিল। এই যুগকে বলে হিমযুগ। আজ থেকে প্রায়৩০ লক্ষ বছর আগে প্লাইস্টোসিন যুগে পৃথিবীর ১/৩ ভাগ অংশ হিমবাহ দ্বারা ঢাকা ছিল। 

প্রশ্ন | ৫ | অন্তর্বর্তী হিমযুগ বলতে কী বোঝ ? 

উত্তর : হিমযুগ-এর সময়কাল একটানা ছিল না, মাঝে মাঝে উষ্ণতা বেড়ে হিমবাহ ঢাকা অঞ্চল সংকুচিত হয়েছিল। এই সময়টিকে বলা হয় অন্তর্বর্তী হিমযুগ। হিমবাহের গুরুত্ব লেখো। 

প্রশ্ন ৬ উত্তর : হিমবাহের গুরুত্ব— (i) এটি মিষ্টি জলের আধার, (ii) বিভিন্ন নদীর উৎসস্থল, এবং (iii) এটি দৃষ্টিনন্দন উপত্যকা যা পর্যটকদের আকর্ষণ করে। 

প্রশ্ন | ৭ | নুনাটক্‌স কী?

 উত্তর : উচ্চ অক্ষাংশের মহাদেশীয় হিমবাহ অধ্যুষিত অঞ্চলে বরফমুক্ত পর্বতের শিখরদেশগুলিকে নুনাটক্‌স বলে।

 প্রশ্ন ৮ পাদদেশীয় হিমবাহ কাকে বলে ও উদাহরণ দাও।

 উত্তর : হিমবাহ যখন উঁচু পার্বত্য অঞ্চল ছেড়ে উপত্যকায় পাদদেশে মেশে তাকে পাদদেশীয় হিমবাহ বলে।

উদাহরণ : কুমেরু মহাদেশ, যুক্তরাষ্ট্রে আলাস্কা প্রদেশে, গ্রিনল্যান্ডে এই জাতীয় পাদদেশীয় হিমবাহ দেখা যায়। 

প্রশ্ন । ৯ মহাদেশীয় হিমবাহ (Continental Glacier)

উত্তর : মহাদেশের বিস্তীর্ণ অস্থান করা সুবিশাল বরফের আচ্ছাদনকে বলে মহাদেশীয় হিমবাহ। যেমন-অ্যান্টার্কটিকা, গ্রিনল্যান্ড ও আইসল্যান্ডে এই মহাদেশীয় হিমবাহ দেখা যায়। 

প্রশ্ন ১০ পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহ (Valley Glacier) কী ?

 উত্তর যে হিমবাহ পার্বত্য উপতাকার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়, তাকে বলে পার্বত্য বা উপত্যকা হিমবাহ। যেমন- হিমালয়, রকি, আন্দিজ, আল্পস প্রভৃতি সুউচ্চ নবীন ডলি পার্বত্য অঞ্চলে পার্বত্য হিমবাহ দেখা যায়। 

প্রশ্ন ১১) হিমরেখা (Snowline) কী? (277. 94. '56-] 

উত্তর : মেরুপ্রদেশ ও উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলের তীব্র শৈত্যে, যে সীমারেখার ওপরে অত্যধিক শীতলতার জন্য সারাবছরই জল জমে বরফে পরিণত হয়ে থাকে এবং যে সীমারেখার নীচে উত্তাপে তুষার গলে যায়, সেই সীমারেখাকে হিমরেখা বলে। হিমরেখা

প্রশ্ন ১২ হিমরেখার সাথে নদীর সম্পর্ক কী?

 উত্তর : হিমরেখার নীচে উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে হিমবাহ গলতে শুরু করে। তাই এটা বলা যায় যে, হিমরেখা প্রধানত হিমবাহ গলে নদী সৃষ্টির পর্যায়কে সূচিত করে। 

প্রশ্ন ১৩ | হিমশৈল (Ice berg) কাকে বলে? (মা. প. '১৮) 

 উত্তর : সমুদ্র বা হ্রদে ভাসমান বরফের স্তূপকে বলে হিমশৈল। সমুদ্রের ধারে এসে পড়লে সমুদ্রের তরঙ্গের আঘাতে ভেঙে গিয়ে বা মহাদেশীয় হিমবাহের অংশ সমুদ্রে সমুদ্র ভাসতে থাকলে হিমবাহের কিছু অংশ ভেঙে গিয়ে ক্রমশ ভেসে দূরে সরে যায় এবং হিমশৈলের উৎপত্তি ঘটে। 

প্রশ্ন ১৪ | বার্গমুন্ড (Bergshrund) কাকে বলে? [মা.প. '১৭] উত্তর : উঁচু পর্বত থেকে উপত্যকার (সার্ক বা করি) মধ্যে নিয়ে হিমবাহ নামার সময় আগের থেকে জমে থাকা বরফস্তূপ এবং নামতে থাকা হিমবাহের মধ্যে যে ফাঁক বা গ্যাপের সৃষ্টি হয়, তাকে বলে বার্গযুক্ত। এই ফাঁক হিমবাহের পৃষ্ঠদেশ থেকে তলদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে।




 





No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();