সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ইতিহাসের ধারণা প্রথম অধ্যায় বড় প্রশ্ন ও উত্তর| প্রশ্নের মান -২ ও ৫ | Class 7 brought question answer history 1st chapter|
অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :
1. ইতিহাসে সময় মাপতে গেলে কী কী প্রয়োজন হয়?
উত্তর : ইতিহাসে সময় মাপতে গেলে তারিখ, সাল, মাস, শতাব্দী, সহস্রাব্দ এই সকল নানা সময় মাপার জন্য প্রয়োজন।
2. ইতিহাস জানা কাকে বলে ?
উত্তর : বছরের পর বছর ধরে ঘটা নানান ঘটনার এবং অনেক লোকের অনেক কাজ কারার কারণ এবং ফলাফল বোঝার চেষ্টা করাই ইতিহাস।
3. সে সময় বিজ্ঞানের ছোঁয়ায় কী কী বদলে গিয়েছিল?
উত্তর : সেই সময় কুয়ো থেকে জল তোলা , তাঁত বোনা বা যুদ্ধের অস্ত্রসস্ত্র নির্মাণ ইত্যাদি অনেক কিছুই বিজ্ঞানের ছোঁয়ায় বদলে গিয়েছিল।
4. ‘ইন্ডিয়া’ নামটি প্রথম কে ব্যবহার করেন?
উত্তর : খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ-পঞ্চম শতকে গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস ‘ইন্ডিয়া” নামটি প্রথম ব্যবহার করেন।
5. ইতিহাসের সময়কে কীভাবে ভাগ করা হয়েছে?
উত্তর : প্রাচীন, মধ্য ও আধুনিক এই তিন যুগে ইতিহাসের সময়কে বিভাগ করা হয়েছে।
6. কীভাবে এদেশে আলু খাওয়ার চল শুরু হয়?
উত্তর : পোর্তুগিজদের হাত ধরে এদেশে রান্নায় আলু খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়।
7. সে যুগে কোন্টি ধর্মপ্রচারের মাধ্যম হয়ে উঠেছিল ?
উত্তর : সাধারণ লোক মুখের ভাষাই সেই যুগে হয়ে উঠেছিল ধর্ম প্রচারের মাধ্যম।
8. ইতিহাসের উপাদানগুলিকে কী কী ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
উত্তর : ইতিহাসের উপাদানগুলিকে নানা ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন- লেখ, মুদ্রা, স্থাপত্য – ভাস্কর্য ও লিখিত উপাদান।
9. লেখ কাকে বলে ?
উত্তর : পাথর বা ধাতুর পাতে লেখা থেকে পুরানো দিনের অনেক কথা জানা যায়। সেইগুলিকে লেখ বলা হয়।
10. তাম্রলেখ ও শিলালেখ কাকে বলে?
উত্তর : লেখগুলি তামার পাতে লেখা হলে তাকে বলে তাম্রলেখ। আবার লেখগুলি পাথরের উপর লেখা হলে তাকে বলে শিলালেখ।
সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর :
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :
1. ইতিহাসের উপাদান বলতে কী বোঝানো হয় ?
উত্তর : পুরোনো দিনের বহু জিনিস যা আজও রয়ে গেছে সেগুলি আমাদের অতীতের কথা জানতে সাহায্য করে। প্রাচীন ঘর-বাড়ি, মন্দির-মসজিদ, মূর্তি, টাকাপয়সা, ছবি ও বইপত্র থেকে আমরা এক-একটা সময়কালের মানুষের বিষয়ে জানতে পারি। তাই এইগুলিই হল ইতিহাসের উপাদান।
2. ইতিহাস পড়ার দরকার হয় কেন?
উত্তর : এমন অনেক ঘটনা এবং কাজ পূর্বে ঘটেছে কিন্তু তার ছাপ আজও আমাদের চারপাশে রয়ে গেছে, সেই ঘটনা এবং কাজগুলি সম্বন্ধে আমাদের ধারণা থাকা দরকার। সেই ধারণা তৈরির জন্যই ইতিহাস পড়া দরকার।
3. ইতিহাসে কেন সাধারণ মানুষ বা শিল্পীদের নাম কোথাও পাওয়া যায় না ?
উত্তর : সে সময় শিল্প বা সাহিত্য সবেতেই সাধারণ গরিব মানুষের কথা খুব বেশি থাকত না। তাতে বেশিরভাগই ছিল শাসকের গুনগানে ভরা। তাই সাধারণ কারিগর এবং শিল্পী যারা মন্দির বা স্থাপত্য বানিয়েছিলেন তাদের বেশিরভাগই নাম আমরা ইতিহাসে পাই না।
4. ইতিহাস বইতে সামান্য হলেও সাল-তারিখ থাকে কেন?
উত্তর : যেসব কাহিনীর কথা ইতিহাস বইতে থাকে, সেগুলো আজ থেকে বহঙ বছর আগে ঘটেছিল এবং সেগুলো একই দিনে বা একই বছরে ঘটেনি। তাই প্রকৃত সময়কালকে জানতে হলে ঠিক মতো করে ঐতিহাসিক ঘটনাগুলিকে সাজিয়ে নিতে হয় এবং এর জন্যে প্রয়োজন ঘটনাগুলোর সময়কাল। তাই সাল তারিখ গুলি যতই কঠিন হোক, পাছে আমরা সময়ের হিসেবে গোলমাল করে ফেলি তাই ওগুলি মনে রাখতে হবে। তাই ইতিহাস বইতে অল্প হলেও সাল তারিখ থাকবেই।
5. ঐতিহাসিক জটিল নামগুলি নিয়ে দুশ্চিন্তা কেন থেকে যায়?
উত্তর : ঐতিহাসিক অনেক নাম বা উপাধি খুবই গোলমেলে, মনে রাখা খুবই কঠিন। যেমন—’গঙ্গাইকোল্ড চোল’ বা ‘সকলোত্তরপথনাথ’। কিন্তু এই উপাধিগুলি অনেককাল আগের মানুষদের। তারাও হয়তো এতো বড়ো নাম-উপাধি নিয়ে গোলমালে পড়তেন। কিন্তু ওই সময় এমনই বড়ো শক্ত উপাধি ও নামের চল ছিল। তাই এগুলো তো আর এখন বদলানোর উপায় নেই বা ছোটো করে নেওয়াও সম্ভব নয়।
6. ইতিহাসের উপাদানগুলি নানা ভাগে বিভক্ত কেন?
উত্তর : ইতিহাসের সমস্ত উপাদান একরকম নয়। একটা পুরানো মূর্তি, পুরানো মুদ্রা বা পুরানো বই কখনো এক জিনিস নয়। তাই ইতিহাসের উপাদানগুলিকেও নানা ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন- লেখ, মুদ্রা, স্থাপত্য-ভাস্কর্য ও লিখিত উপাদান। পাথর বা ধাতুর পাতে লেখা থেকে পুরোনো দিনের অনেক কথা আমরা জানতে পারি, সেগুলোকে বলে লেখ। তামার পাতে লেখাগুলিকে বলা হয় তাম্রলেখ, পাথরের উপর লেখাগুলিকে বলা হয় শিলালেখ এবং কাগজের লেখাগুলিকে বলা হয় লিখিত উপাদান।
7. ইতিহাসে আদি-মধ্যযুগ বলতে কী বোঝায় ?
উত্তর : হঠাৎ করে ইতিহাসের যুগ বদলে যায় না। যেমন দুপুরবেলা বলতে কিন্তু নির্দিষ্ট একটা সময়কে বোঝায় না। কারণ সময়টা কিন্তু না সকাল না বিকেল। তেমনই ভারতের ইতিহাসে একটা বড়ো সময় ছিল, যখন প্রাচীন যুগ ধীরে ধীরে শেষ হয়ে আসছে আর মধ্যযুগও পুরোপুরি শুরু হয়নি, ঐতিহাসিকরা সেই সময়টাকে বলেন আদি মধ্যযুগ।
8. বিদেশি ও দেশ এর বর্তমান অর্থ কী ?
উত্তর : বর্তমানে আমরা বিদেশি বলতে ভিন্ন দেশের বাসিন্দাকে বুঝি। আমাদের দেশ ভারত, তাই ভারত ছাড়া অন্য যে কোনো দেশের ব্যাক্তিকে আমরা বিদেশি বলে মনে করি।
9. ‘ইন্ডিয়া’ নামটি কীভাবে হলো ?
উত্তর : খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ পঞ্চম শতকে গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস ইন্ডিয়া নামটি প্রথম ব্যবহার করেন। তিনি ভারতে কখনো আসেননি, পারসিক লেখাপত্র থেকে ভারত সম্পর্কে জেনেছিলেন। উত্তরপশ্চিম ভারতের সিন্ধু নদীর ব-দ্বীপ এলাকা কিছুদিনের জন্য পারসিক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল তখন এই অঞ্চলের নাম হয় ‘হিদুষ’। ইরানি ভাষায় ‘স’ এর উচ্চারণ না থাকায় তা বদলে গিয়ে হয় ‘ই’ ফলে সিন্ধু নদী বিধৌত অঞ্চলগুলি ‘হিদুষ’ নামে পরিণত হয়, অপরদিকে · গ্রিক ভাষায় ‘হ’ এর উচ্চারণ না থাকায় তার বিকল্প হয় ‘ই’। অতএব সিন্ধু-হিদুষ গ্রিক বিবরণে অনেকটা বদলে গিয়ে ‘ইন্ডিয়া’ হয়ে যায়।
10. ‘হিন্দুস্তান’ নামটি কীভাবে পাওয়া যায় ?
উত্তর : ‘হিন্দুস্তান’ নামটি বিদেশি তথ্যসূত্রে পাওয়া গেছে। আরবি-ফারসি ভাষায় হিন্দুস্তানের কথা বারবার এসেছে। 262 খ্রিস্টাব্দে খোদিত ইরানের সাসানীয় শাসকের একটি শিলালেখতে হিন্দুস্তান শব্দটি পাওয়া যায়। দশম শতকের শেষভাগে অজ্ঞাতনামা লেখক রচিত ‘হুদুদ অল-আলম’ গ্রন্থে ‘হিন্দুস্তান’ শব্দটি দ্বারা সমগ্র ভারতকে বোঝানো হয়েছে।
11. কোন্ সময়টিকে ভারতের ইতিহাসে আদি-মধ্যযুগ বলা হয়?
উত্তর : ভারতের ইতিহাসে একটা বড়ো সময় ছিল যখন প্রাচীন যুগ ধীরে ধীরে শেষ হয়ে আসছে আর মধ্যযুগও পুরোপুরি শুরু হয়নি। সেই সময়টিকেই ঐতিহাসিকরা বলেন আদি-মধ্যযুগ।
রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর :
1. সুলতানি বা মুঘল যুগে ‘বিদেশি’ বলতে সধারণত কী বোঝানো হত?
উত্তর : সাধারণ অর্থে ‘বিদেশি” বলতে আমরা ভারতের বাইরের বা অন্য দেশের লোকেদের বুঝে থাকি। কিন্তু সুলতানি বা মুঘল যুগে ‘বিদেশি’ বলতে গ্রাম বা যে কোন শহরের বাইরে থেকে আসা যে-কোনো লোককেই বোঝাতো। তাই শহর থেকে অচেনা কেউ গ্রামে গেলে তাকেও গ্রামবাসীরা ‘পরদেশি’ বা ‘আজনবি’ ভাবতেন। তাই ইতিহাস পড়ার সময় আমাদের একটা কথা স্মরণ রাখতে হবে যে মুঘল যুগের কোনো লেখায় যদি ‘পরদেশি’ কথাটা ব্যবহৃত হয় তবে সবসময় তা ভারতের বাইরে থেকে আসা কোনো লোককে বোঝাতো না, সে অন্য শহর বা অন্য গ্রামের লোকেদেরও বোঝানো হত। তাই ইতিহাস রচনার সময় ঐতিহাসিকদের মাথায় রাখতে হয় যে সময় আর স্থান আলাদা হয়ে গেলে অনেক ক্ষেত্রে কথার মানে বদলে যায় । ইতিহাস পড়বার সময়েও আমাদের এই কথাটা স্মরণ রাখতে হবে।
2. ‘ইন্ডিয়া’ নামটি কীভাবে এসেছে?
উত্তর : খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ-পঞ্চম শতকে গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস ‘ইন্ডিয়া’ নামটি তাঁর লেখায় প্রথম ব্যবহার করেছিলেন। তিনি পারসিক ভাষায় লিখিত পত্র থেকে ভারত সম্পর্কে জেনেছিলেন। যদিও তিনি ভারতে আসেননি। উত্তর-পশ্চিম ভারতের সিন্ধু নদীর ব-দ্বীপ এলাকা কিছুদিনের জন্যে পারসিক সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। তখন পারসিকরা এই অঞ্চলের নামকরণ করে ‘হিদুষ’। ইরানি ভাষায় ‘স’-এর উচ্চারণ নেই, তাই ‘স’-এর বদলে গিয়ে হয়েছিল ‘হ’। ফলে সিন্ধু বিধৌত অঞ্চলগুলি ‘হিদুষ’ নামে পরিচিত হলো। আবার গ্রিক বর্ণমালায় ‘হ’-এর উচ্চারণ নেই। তার বিকল্প হল “ই”। অতএব আগে যা ছিল সিন্ধু-হিদুষ, তা গ্রিক ঐতিহাসিকের বিবরণে অনেকটাই বদলে গিয়ে ‘ইন্ডিয়া’হলো। তবে মাথায় রাখতে হবে সেইসময় ইন্ডিয়া শব্দটি সিন্ধু ব-দ্বীপ এলাকাকেই সাধারণ অর্থে বোঝানো হতো। পরবর্তীকালে গ্রিক ঐতিহাসিকদের বিবরণী পড়লে বোঝা যায় তখন তারা ইন্ডিয়া বলতে উপমহাদেশকেই বোঝাতো।
No comments:
Post a Comment