Class 7th Geography Chapter -4 Questions And Answers || সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল চতুর্থ অধ্যায় "ভূমিরূপ" প্রশ্ন উত্তর || সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল সহায়িকা ||
অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর:প্রতিটা প্রশ্নের মান -1
1. পৃথিবীর ভূমিরূপ কয়প্রকার শক্তি দ্বারা তৈরি হয় ও কী কী ?
উঃ। পৃথিবীর ভূমিরূপ দু-প্রকার শক্তি দ্বারা তৈরি হয়। যথা—অভ্যন্তরীণ শক্তি ও বহির্জাত শক্তি।
2. ভূমিরূপ কাকে বলে ?
উঃ। পৃথিবীপৃষ্ঠের ভূমির বৈচিত্র্যকে ভূমিরূপ বলে।
3. পৃথিবীর সর্বোচ্চ মালভূমি কোনটি?
উঃ। পৃথিবীর সর্বোচ্চ মালভূমি পামির মালভূমি ।
4. ভারতের একটি নবীনতম ভঙ্গিল পর্বতের নাম লেখো।
উঃ। ভারতের নবীনতম ভঙ্গিল পর্বত হল হিমালয়।
5. পর্বতগ্রন্থি কাকে বলে?
উঃ। অনেকগুলো পর্বতশ্রেণি বিভিন্ন দিক থেকে যখন এক জায়গায় মিলিত হয় তখন তাকে পর্বতগ্রন্থি বলে। যেমন— পামীরগ্রন্থি।
6. পর্বত উপত্যকা কাকে বলে?
উঃ। দুটি পর্বতচূড়ার মাঝখানের নীচু খাতের মতো অংশটিকে পর্বত উপত্যকা বলে।
7. পৃথিবীর বৃহত্তম মালভূমিটি কী?
উঃ। তিব্বত মালভূমি পৃথিবীর বৃহত্তম মালভূমি ।
৪. সমভূমি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কতটা উঁচু হয়?
উঃ । সমভূমি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে 300 মিটারের কম উঁচু হয়।
9. পৃথিবীর বেশিরভাগ সমভূমি কীভাবে সৃষ্টি হয়েছে?
উঃ। পৃথিবীর বেশির ভাগ সমভূমি নদীর পলি সঞ্চয়ের ফলে সৃষ্টি হয়েছে।
10. কলকাতার ভূমিরূপ কেমন?
উঃ। কলকাতার ভূমি আদৌ উঁচুনীচু নয় বরং অনেক বেশি সমতল।
11. পশ্চিমবঙ্গের কোন্ কোন্ জেলাগুলি মালভূমি অঞ্চল ?
উঃ। পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া, বীরভূম, পু(লিয়া ও মেদিনীপুরের কিছু অংশ মালভূমি অঞ্চল।
12. পামীর মালভূমি কে পৃথিবীর ছাদ বলা হয় কেন ?
উঃ। পামীর মালভূমি পৃথিবীর সর্বোচ্চ মালভূমি বলে একে পৃথিবীর ছাদ বলা হয়।
13. একটি পলিগঠিত সমভূমির উদাহরণ দাও।
উঃ। ভারতের সিন্ধু-গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের সমভূমি একটি পলিগঠিত সমভূমি।
14. মালভূমির অপর নাম কী ?
উঃ । মালভূমির অপর নাম টেবিলল্যান্ড।
15. পৃথিবীর কোথায় কোথায় মহাদেশীয় মালভূমি দেখা যায় ?
উঃ। দক্ষিণ আফ্রিকা, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া, আন্টার্কটিকা ও গ্রিনল্যান্ডের বিস্তীর্ণ অংশ মহাদেশীয় মালভূমি দেখা যায়
16. পলিগঠিত সমভূমি কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উঃ। নদী, সমুদ্র, হ্রদে দীর্ঘদিন ধরে পলি জমে পলিগঠিত সমভূমির সৃষ্টি হয়।
. অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার কী ?
উঃ। ভূ-পৃষ্ঠের তলদেশে প্রায় 700 কিমি গভীরতা পর্যন্ত একটি সান্দ্র বা থকথকে অর্ধগলিত স্তর রয়েছে তাকে অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার বলে। ভূ-পৃষ্ঠে যে ছোটো বড়ো নানা পাত রয়েছে সেই পাতগুলো এই স্তরেই ভাসমান অবস্থায় রয়েছে।
2. পাত কাকে বলে ?
উঃ। ভূ-পৃষ্ঠ অনেকগুলি ছোটো বড়ো খণ্ড নিয়ে গঠিত। এক একটি খণ্ডকে পাত বলা হয়। চায়ের প্লেট ভাঙলে যে রকম টুকরো হয়ে যায় পাতগুলিও সেই রকম টুকরোর সঙ্গে তুলনীয়। পাতগুলি একটি সান্দ্র বা থকথকে অ্যাস্থেনোস্ফিয়ার ত্বকের মধ্যে ভেসে রয়েছে। পাতগুলি চলনশীল, ভাসতে ভাসতে এগুলি কখন পরস্পরের দিকে এগিয়ে এসে ধাক্কা খায় আবার কখনও দূরে সরে যায়।
3. ভূ-অভ্যন্তরীণ বা পৃথিবীর ভিতরকার শক্তি কাকে বলে?
উঃ। ভূ-অভ্যন্তরে সৃষ্টি হওয়া যে শক্তির দ্বারা ভূ-আন্দোলন, অগ্ন্যুৎপাত ইত্যাদির সৃষ্টি হয় এবং যার ফলে পাহাড়, পর্বত, মালভূমি, সমভূমি সবরকম নতুন ভূমিরূপ গঠিত হয় সেই শক্তিকে ভূ-অভ্যন্তরীণ শক্তি বলে। যেমন-ভূ আন্দোলনের শক্তি ।
4. বহির্জাত শক্তি বা পৃথিবীর বাইরের শক্তি কাকে বলে?
উঃ। নদী, সূর্যালোক, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত। হিমবাহ, তুষারপাত প্রভৃতি শক্তিসমূহ হল পৃথিবীর বর্হিজাত বা বাইরের শক্তি। এই প্রাকৃতিক শক্তিগুলি ভূমিরূপের ওপর সবসময় কাজ করে, কখনও ক্ষয়সাধন, কখনও সঞ্চয় দ্বারা গঠন করে ভূমিরূপের বৈচিত্র্য তৈরি করে।
যেমন : নদী, বায়ু, হিমবাহ, সমুদ্র তরঙ্গের শক্তি।
5. উৎপত্তি অনুসারে পর্বত কয়প্রকার ও কী কী? পর্বতশ্রেণি কীভাবে তৈরি হয় ?
উঃ। উৎপত্তি অনুসারে পর্বত তিনপ্রকার। যথা : ভঙ্গিল পর্বত, স্তূপ পর্বত ও আগ্নেয় পর্বত। অনেকগুলি পর্বতশৃঙ্গ আর উপত্যকা বিরাট অঞ্চল জুড়ে অবস্থান করলে পর্বতশ্রেণি তৈরি হয়।
6. পর্বত কাকে বলে? পর্বতশৃঙ্গ কী?
উঃ। সাধারণত 900 মিটারের বেশি উঁচু, অনেকদূর বিস্তৃত, শিলাদ্বারা গঠিত ভূমিরূপকে পর্বত বলে। যেমন— হিমালয় পর্বত। পর্বতের উপরের দিকের সরু, খুঁচালো অংশকে বলে পর্বতশৃঙ্গ বা চূড়া।
যেমন : হিমালয় পর্বতে মাউন্ট এভারেস্ট পর্বতশৃঙ্গ পৃথিবীর সব থেকে উঁচু পর্বতশৃঙ্গ।
. ভঙ্গিল পর্বত কাকে বলে? উদাহরণ সহ লেখো।
উঃ। ভূ-পৃষ্ঠের কোমল পাললিক শিলাস্তর পলির স্তরের পার্শ্ববর্তী চাপে ভাঁজ পড়ে যে পর্বত গঠিত হয় তাকে ভঙ্গিল পর্বত বলে। যেমন : ভারতের হিমালয়, দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ, উত্তর আমেরিকার রকি প্রভৃতি।
৪. স্তুপ পর্বত কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উঃ। ভূ-আলোড়নের ফলে ভূ-পৃষ্ঠে অনেক সময় ফাটল বা চ্যুতির সৃষ্টি হবে। যায়। ভূ-আলোড়নের ফলে সেই ফাটল বরাবর মাঝের ভূখণ্ড উঁচু হয়ে অথবা দুপাশের ভূখণ্ড নীচে বসে গিয়ে মাঝখানের ভূখণ্ড যে পর্বত সৃষ্টি করে তাকে স্তূপ পর্বত বলে। যেমনঃ ভারতের সাতপুরা, জার্মানির ব্ল্যাক ফরেস্ট, ফ্রান্সের ভোজ প্রভৃতি।
9. আগ্নেয় পর্বত কাকে বলে?
উঃ। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের সময় ছাই, লাভা, ছোটো ছোটো পাথর বাইরে বেরিয়ে এসে আগ্নেয়গিরির চারিদিকে জমা হয়ে তিনকোণা শঙ্কুর মতো যে পর্বত সৃষ্টি করে তাকে আগ্নেয় পর্বত বলে। যেমন : ইতালির ভিসুভিয়াস, এটনা, আফ্রিকার কিলিমাঞ্জারো, জাপানের ফুজিয়ামা, ইন্দোনেশিয়ার ক্রাকাতোয়া প্রভৃতি।
10. মালভূমি কাকে বলে ?
উঃ। আশেপাশের অঞ্চল সাপেক্ষে হঠাৎ উঁচু (300 মিটারের বেশি উঁচু) বিস্তীর্ণ ভূভাগ, চারপাশ খাড়া ঢাল আছে, এরকম ভূমিরূপকে মালভূমি বলে। মালভূমির উপরটা সমতল, ঢেউ খেলানো অথবা উঁচু-নীচু হতে পারে।
11. মালভূমিকে টেবিলল্যান্ড বলা হয় কেন?
উঃ। মালভূমির উপরিভাগ টেবিলের মতো সমতল হয় ও চারপাশটা টেবিলের পায়ার মতো চালু এবং খাড়া থাকে। সেজন্যই মালভূমিকে টেবিলল্যান্ড বলা হয়।
12. লাভা গঠিত মালভূমি কীভাবে সৃষ্টি হয়? উদাহরণসহ লেখো।
উঃ। অগ্ন্যুৎপাতের সময় উত্তপ্ত ও গলিত লাভা ভূ-পৃষ্ঠের ফাটল দিয়ে বেরিয়ে বাইরে ছড়িয়ে পড়ে এবং ধীরে ধীরে শীতল। ও কঠিন হয়ে যে বিরাট মালভূমির সৃষ্টি করে তাকে লাভা গঠিত মালভূমি বলে।
যেমন : ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমি, মালব মালভূমি এরকম লাভা গঠিত মালভূমি ।
13. পর্বতবেষ্টিত মালভূমি কাকে বলে?
উঃ। যখন কোনো মালভূমি একাধিক পর্বত দ্বারা আবদ্ধ থাকে তখন তাকে পর্বতবেষ্টিত মালভূমি বলে। পর্বত সৃষ্টির সময় চারপাশ থেকে প্রবল পার্শ্বচাপের ফলে মধ্যবর্তী স্থান উঁচু হয়ে পর্বতবেষ্টিত মালভূমি সৃষ্টি হয়।
যেমন : হিমালয় ও কুয়েনলুন পর্বতশ্রেণির মধ্যে অবস্থিত তিব্বতের মালভূমি।
14. ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি কাকে বলে?
উঃ। বৃষ্টিপাত, নদী, হিমবাহ, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির প্রভাবে প্রাচীন মালভূমি ও উচ্চভূমির কোমল শিলাস্তর ক্ষয় পায় এবং অপসারিত হয়, ফলে মালভূমির মাঝের কঠিন শিলাস্তর পাহাড় রূপে অবস্থান করে। এই মালভূমির মধ্যে দিয়ে নদী প্রবাহিত হলে পাহাড়গুলি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এইভাবে বিভিন্ন নদী উপত্যকা দ্বারা বিচ্ছিন্ন মালভূমিকে ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি বলে।
যেমন : ভারতের ছোটোনাগপুর মালভূমি ।
15. লোয়েস সমভূমি কীভাবে সৃষ্টি হয়?
উঃ। বায়ুপ্রবাহ দ্বারা মরুভূমির বালি বহুদূরে উড়ে গিয়ে সজ্জিত হয়ে লোয়েস সমভূমির সৃষ্টি হয়।
যেমন: হোয়াংহো নদী উপত্যকায় সৃষ্ট লোয়েস সমভূমি।
16. লাভা সমভূমি কীভাবে তৈরি হয়?
উঃ। অগ্নুৎপাতের ফলে পৃথিবীর অভ্যন্তরের গলিত লাভা ফাটল দিয়ে বেরিয়ে এসে আশেপাশে জমে লাভা সমভূমির সৃষ্টি হয়।
যেমনঃ দাক্ষিণাত্যের উত্তর অংশের সমভূমি লাভা সমভূমি।
শ্নের মান -5
1. ভঙ্গিল পর্বতের উৎপত্তি কীভাবে হয়েছে?
উঃ । বর্তমানে যেখানে হিমালয় পর্বত অবস্থান করছে, সেখানে প্রায় 10 কোটি বছর আগে টেথিস নামে একটি মহীখাত (Geosyncline) ছিল। এই টেথিস সাগরের উত্তরে ছিল 'আশারাল্যান্ড' ও দক্ষিণের ভূখণ্ডের নাম ছিল 'গন্ডোয়ানাল্যান্ড'। বহু বছর ধরে এই ভূখণ্ড থেকে নদীবাহিত ক্ষয়প্রাপ্ত পলি এই মহীখাতটিকে ভরটি করতে থাকে। ক্রমশ পলিস্তারের নিম্নমুখী চাপে খাতের তলদেশ বসতে থাকে এবং দু-পাশের ভূখণ্ডগুলি পরস্পরের দিকে সরে আসতে থাকে। এর ফলে মহীখাতে সঙ্কিত পলিতে ভাঁজ পড়ে ক্রমশ ভঙ্গিল পর্বতের উৎপত্তি হয়। মহীখাত থেকে ভি পর্বতের উৎপত্তি হয় বলে ভঙ্গিল পর্বতের প্রশ্ন অপেক্ষা দৈর্ঘ্য অনেক বেশি হয়।
2. উৎপত্তি অনুসারে সমভূমি কত রকমের হয়ে থাকে?
উঃ। উৎপত্তি ও ভূমিরূপের বিভিন্নতা অনুসারে সমভূমির শ্রেণিবিভাগ : উৎপত্তি অনুসারে সমভূমিকে তিনভাগে ভাগ করা যায়।
যথা : (i) সম্বয়জাত সমভূমি, (ii) ক্ষয়জাত সমভূমি এবং (iii) ভূ-আন্দোলনের ফলে গঠিত সমভূমি।
➣ সঞ্চয়জাত সমভূমির শ্রেণিবিভাগ : সঞ্চয়জাত সমভূমিকে প্রধানত ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা : (i) পলিগঠিত সমভূমি, (ii) প্লাবন ভূমি বা বন্যাগঠিত সমভূমি, (iii) ব-দ্বীপ সমভূমি, (iv) উপকূল সমভূমি, (v) হ্রদ সমভূমি, (vi) লাভা সমভূমি, (vii) হিমবাহ সমভূমি এবং (viii) লোয়েস সমভূমি।
➣ ক্ষয়জাত সমভূমির শ্রেণিবিভাগ : ক্ষয়জাত সমভূমিকে প্রধানত দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা : (i) সমপ্ৰায় ভূমি এবং (ii) পাদদেশীয় সমভূমি বা পেডিমেন্ট।
➣ ভূ-আন্দোলনের ফলে গঠিত সমভূমির শ্রেণিবিভাগ : ভূ-আন্দোলনের ফলে সাধারণত দু-রকমের সমভূমির সৃষ্টি হয়। যথা : (i) উন্নত সমভূমি এবং (ii) অবনত সমভূমি।
3. সমভূমি কীভাবে সৃষ্টি হয়েছে? সমভূমি সম্বন্ধে যা জানো লেখো। পৃথিবীর কয়েকটি বিখ্যাত সমভূমি অঞ্চলের নাম লেখো।
উঃ। কোনো নীচু, সমতল ও বিস্তীর্ণ ভূমিরূপকে সমভূমি বলা হয় । পৃথিবীর অন্তর্জাত ও বর্হিজাত প্রক্রিয়ার প্রভাবেই নানা ধরনের সমভূমির সৃষ্টি হয়েছে। সমভূমি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে খুব বেশি উঁচু হয় না, সাধারণত 300 মিটারের কম হয়। সমভূমির উপরিভাগ সমতল বা সামান্য ঢেউ খেলানো হয়।
পৃথিবীর বেশির ভাগ সমভূমিই নদীর পলি সঞ্চয়ের ফলে সৃষ্টি হয়েছে। এশিয়ার গাঙ্গেয় সমভূমি, আফ্রিকার নীলনদের সমভূমি, উত্তর আমেরিকার প্রেইরি, দক্ষিণ আমেরিকার পম্পাস পৃথিবীর বিখ্যাত সমভূমি অঞ্চল।
4. জনজীবনে মালভূমি ও সমভূমির প্রভাব আলোচনা করো।
উঃ। জনজীবনে মালভূমির নানা রকম প্রভাব রয়েছে।
এগুলি হল (i) বেশির ভাগ বড়ো বড়ো মালভূমিগুলি সবই প্রায় শুষ্ক অঞ্চলে অবস্থিত। বৃষ্টিপাত কম হওয়ার জন্য এখানকার বিস্তীর্ণ তৃণভূমিতে পশুচারণ করার অনুকূল পরিবেশ পাওয়া যায়।
(ii) বেশিরভাগ মালভূমি অঞ্চলগুলি প্রচুর পরিমাণে খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ। তাই মালভূমিকে খনিজ সম্পদের ভাণ্ডার হিসেবে ধরা হয়।
(iii) মালভূমি অঞ্চলের রুক্ষ মাটি এবং প্রতিকূল জলবায়ু স্বল্প বৃষ্টিপাতের কারণে এখানে খুব কম পরিমাণ চাষবাস করা যায়।
(iv) মালভূমি অঞ্চলের নদীগুলি সাধারণত খরস্রোতা হওয়ায় সহজেই জলবিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হয়।
➣জনজীবনে সমভূমির প্রভাবগুলি হল : (i) পৃথিবীর বেশিরভাগ সমভূমি নদ-নদীর পলি সঞ্চয়ের ফলে সৃষ্টি হওয়ায় এই অঞ্চলগুলি পৃথিবীর সবথেকে উর্বর অঞ্চল এবং এখানেই পৃথিবীর অধিকাংশ কৃষিকাজ হয়ে থাকে।
(ii) সমভূমি অঞ্চলগুলিতেই একাধিক নদীকেন্দ্রিক সভ্যতা গড়ে উঠেছিল।
(iii) সমভূমি অঞ্চলগুলি পৃথিবীর অন্যতম জনবহুল অঞ্চল। বেশিরভাগ শহর, নগর ও জনপদগুলি সবই সমভূমি অঞ্চলে অবস্থিত। উর্বর সমভূমির জন্য কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং উন্নতমানের পরিবহণ সবকিছুর সুবিধা পাওয়া যায়।
5. আমাদের জীবনে পর্বতের প্রভাব কতখানি আলোচনা করো।
উঃ। ভূমিরূপের সঙ্গে মানুষের জীবনের সম্পর্ক অত্যন্ত নিবিড়। যেখানে ভূমির প্রকৃতি যেমন মানুষ সেখানে সেভাবেই মানানসই জীবনযাত্রা গড়ে তোলে। ভূমি মানুষের জীবন, জীবিকা, অর্থনৈতিক কাজকর্ম, মাঙ্গলিক ও সাংস্কৃতিক বিকাশের ধারক ও নিয়ন্ত্রক। মানবজীবনে পর্বতের নানারকম প্রভাব রয়েছে ,
এগুলি হল : ➣(i) উঁচু পর্বতের বরফগলা জল থেকে সৃষ্টি হয়েছে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র, সিন্ধু প্রভৃতি বহু নদী। এই নদীগুলি থেকে সারা বছর জল পাওয়া যায়।
(ii) জলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস হিমালয় পর্বতে ধাক্কা খেয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুরূপে ভারতে বৃষ্টিপাত ঘটায়।
(iii) পর্বত বিরাট প্রাচীরের মতো উয় ও শীতল বায়ুপ্রবাহকে আটকায়। শীতকালে সাইবেরিয়া থেকে আসা তীব্র শীতল বাতাসকে বাধা দিয়ে হিমালয় পর্বত ভারতে শীতের তীব্রতা কমিয়ে দেয়।
(iv) পার্বত্য অঞ্চলে গড়ে ওঠে নরম কাঠের মূল্যবান বনভূমি, পর্বতের ঢালে গড়ে ওঠা তৃণভূমিতে ভালো পশুচারণ ক্ষেত্র তৈরি হয়। বহু মানুষ এর থেকে জীবিকা অর্জন করেন এবং পর্বতের ঢালে ধাপ কেটে চাষবাসও করেন।
(v) পার্বত্য অঞ্চলের নদীগুলি খরস্রোত হওয়ায় জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সহায়ক হয়। কিছু কিছু পার্বত্য অঞ্চলে প্রচুর খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়।
(vi) পর্বতের শিলা, বোল্ডার এসবই ঘরবাড়ি তৈরির উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
(vii) পার্বত্য অঞ্চলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঠান্ডা ও আরামদায়ক আবহাওয়ার জন্য ভালো পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠে। যেমন দার্জিলিং, সিমলা, কাশ্মীর, উটি প্রভৃতি অঞ্চল।
No comments:
Post a Comment