বায়ুমণ্ডল, জলবায়ুর শ্রেণীবিভাগ, জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ এবং জলবায়ু পরিবর্তন (তৃতীয় অধ্যায়) দ্বাদশ শ্রেণীর ভূগোল সাজেশন || HS Class 12 Geography ||
১. hing We ঝড়ের চক্ষু কাকে বলে ?
উত্তরঃ ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের বৃত্তাকার কেন্দ্রটিকে ঘূর্ণবাতের চক্ষু বলে । এর ব্যাস প্রায় 30-65 কিলোমিটার হয় ।
২. CFC কী ?
উত্তরঃ এটি একটি গ্রিনহাউস গ্যাস । পুরো নাম ক্লোরোফ্লুরোকার্বন । এই গ্যাস ওজোন স্তরের হ্রাস ঘটায় ।
৩. সুনামি কী ?
উত্তরঃ সমুদ্রের তলদেশে ভূমিকম্পের ফলে যে বিশালাকৃতি বিধ্বংসী সামুদ্রিক ঢেউ উপকূলে আছড়ে পড়ে তাকে জাপানে সুনামি বলে ।
৪. প্রাকৃতিক সৌরপর্দা কাকে বলা হয় ?
উত্তরঃ পৃথিবীর জীবজগৎকে অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ছাতার মতো রক্ষা করে বলে ওজোন স্তরকে পৃথিবীর ‘ প্রাকৃতিক সৌরপর্দা ‘ বলে ।
৫. বায়ু সঞ্চালন সম্পর্কিত ত্রিকোশ তত্ত্বের প্রবক্তা কে ?
উত্তরঃ বিজ্ঞানী পলম্যান বায়ু সঞ্চালন সম্পর্কিত ত্রিকোশ তত্ত্ব উপস্থাপন করেন ।
৬. ‘ ডোলড্রাম ‘ অঞ্চল কাকে বলে ?
উত্তরঃ প্রশাস্ত ও আটলান্টিক মহাসাগরের ITCZ অঞ্চল দিয়ে জাহাজ অতিধীরে অতিক্রম করত বলে নাবিকগণ এর নামকরণ করেন ‘ ডোলড্রাম ‘ ।
৭. ওজোন স্তরে কোন রশ্মি শোষিত হয় ?
উত্তরঃ ওজোন স্তরে সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকারক Ultra Violet Ray বা অতিবেগুনি রশ্মি শোষিত হয় ।
৮. এল নিনোর উৎপত্তি কোথায় ঘটে ?
উত্তরঃ ক্রান্তীয় প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব প্রান্তে পেরু , ইকুয়েডরের পশ্চিম উপকূলে এল নিনোর উৎপত্তি
৯. ‘ হ্যাডলি কোশের ‘ অপর নাম কী ?
উত্তরঃ হ্যাডলি কোশের অপর নাম ‘ প্রত্যক্ষ তাপীয় কোশ ‘ ।
১০. কোন প্রকার ঘূর্ণবাতে আবহাওয়া সর্বদা শাস্ত থাকে ?
উত্তরঃ প্রতীপ ঘূর্ণবাতে আবহাওয়া সর্বদা শান্ত থাকে ।
১১. বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে ওজোন পাওয়া যায় ?
উত্তরঃ বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে ওজোন পাওয়া যায় ।
১২. টর্নেডো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কী নামে পরিচিত ?
উত্তরঃ টর্নেডো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘ টুইস্টার ‘ নামে পরিচিত ।
১৩. মিস্ট্রাল কী ?
উত্তরঃ মিস্টাল হলো শীতল স্থানীয় বায়ু যা ফ্রান্সে রোন নদীর উপত্যকা ধরে ভূমধ্যসাগরীয় নিম্নচাপের দিকে প্রবাহিত হয় ।
১৪. ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা হ্রাস পায় যে প্রক্রিয়ায় তার নাম কী ?
উত্তরঃ অবরোহণ প্রক্রিয়া ।
১৫. যে সীমান্ত বরাবর উঘ্ন বায়ুপুঞ্জ শীতল বায়ুপুত্থকে ঠেলে এগিয়ে চলে তাকে কী বলে ?
উত্তরঃ উষ্ণ সীমান্ত ।
১৬. প্রাকৃতিক সৌরপর্দা কাকে বলে ?
উত্তরঃ ওজোন স্তরকে ।
১. ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় নির্গত গ্যাসটি হলো – (ক) N²O (খ) MIC (গ) H²O (ঘ) CO²
উত্তরঃ (খ) MIC
২. পৃথিবীর সর্বাধিক টর্নেডোর উৎপত্তি ঘটে— (ক) প্রেইরি অঞ্চলে- (খ) চিনে (গ) ভারতে (ঘ) রাশিয়ায়
উত্তরঃ (ক) প্রেইরি অঞ্চলে
৩. ফ্রান্সের রোন উপত্যকায় প্রবাহিত শীতল স্থানীয় বায়ু হলো— (ক) বোরা (খ) মিস্ট্রাল (গ) লেভেচ (ঘ) সান্টা আনা
উত্তরঃ (খ) মিস্ট্রাল
৪. ঘূর্ণবাতের চক্ষু দেখা যায়— (ক) প্রতীপ (খ) নাতিশীতোয় (গ) ক্রান্তীয় (ঘ) উপক্ৰান্তীয় — ঘূর্ণবাতে
উত্তরঃ (গ) ক্রান্তীয়
৫. সেলভা জলবায়ু হলো— (ক) মৌসুমি (খ) নিরক্ষীয় (গ) ভূমধ্যসাগরীয় (ঘ) সাভানা
উত্তরঃ (খ) নিরক্ষীয়
৬. প্রতীপ ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি ঘটে— (ক) নিরক্ষীয় অঞ্চলে (খ) নিম্ন অক্ষাংশে (গ) উচ্চ অক্ষাংশে (ঘ) মধ্য অক্ষাংশে
উত্তরঃ (গ) উচ্চ অক্ষাংশে
৭. বায়ুমণ্ডলীয় বিপর্যয়ের উদাহরণ হলো—(ক) ঘূর্ণবাত (খ) ভূমিকম্প (গ) সুনামি (ঘ) অগ্ন্যুৎপাত
উত্তরঃ (ক) ঘূর্ণবাত
৮. আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর সুরক্ষা দিবস পালিত হয় – (ক) 5 জুন (খ) 16 সেপ্টেম্বর (গ) 5 আগস্ট (ঘ) 15 ডিসেম্বর
উত্তরঃ (খ) 16 সেপ্টেম্বর
৯. উন্ন – আর্দ্র জলবায়ুতে মাটি গঠনের হার হয়— (ক) অতিধীর (খ) ধীর (গ) দ্রুত (ঘ) মাঝারি
উত্তরঃ (গ) দ্রুত
১০. বোলসন দেখতে পাওয়া যায়— (ক) নেপালে (খ) বাংলাদেশে (গ) শ্রীলঙ্কায় (ঘ) আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে
উত্তরঃ (ঘ) আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে
১১. হ্যাডলি কোশের অবস্থান— (ক) 0 ° –30 ° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে (খ) 30 ° –45 ° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে (গ) 45 ° –60 ° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে (ঘ) 80 ° –90 ° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে
উত্তরঃ (ক) 0 ° –30 ° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে
১২. ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের উৎপত্তিস্থল হলো— (ক) উন্ন সমুদ্রপৃষ্ঠ (খ) শীতল সমুদ্রপৃষ্ঠ (গ) উষ্ণ ভূপৃষ্ঠ (ঘ) বরফপৃষ্ঠ
উত্তরঃ (গ) উষ্ণ ভূপৃষ্ঠ
১৩. জেট বায়ু প্রধানত প্রবাহিত হয়— (ক) ঊর্ধ্ব ট্রপোস্ফিয়ারে (খ) নিম্ন ট্রপোস্ফিয়ার (গ) ঊর্ধ্ব স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে (ঘ) মেসোস্ফিয়ারে
উত্তরঃ (গ) ঊর্ধ্ব স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে
১৪. বায়ুমণ্ডলীয় গোলযোগ দেখা যায় যে স্তরে (ক) ট্রপোস্ফিয়ার (খ) ট্রপোপজ (গ) স্ট্র্যাটোপজ (ঘ) স্ট্যাটোস্ফিয়ার
উত্তরঃ (ক) ট্রপোস্ফিয়ার
১৫. মিশরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত উন্ন স্থানীয় বায়ু (ক) লেভেচ – (খ) স্যান্টা আনা (গ) খামসিন(ঘ) বোরা
উত্তরঃ (গ) খামসিন
১৬. গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির মধ্যে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ— (ক) SO (খ) মিথেন (গ) CO₂ (ঘ) O₂
উত্তরঃ (গ) CO₂
১৭. ঘূর্ণবাত একধরনের (ক) নিয়ত (খ) সাময়িক (গ) আকস্মিক (ঘ) স্থানীয় — বায়ু
উত্তরঃ (গ) আকস্মিক
১৮. উপক্ৰান্তীয় উচ্চচাপ ও নিরক্ষীয় নিম্নচাপের মধ্যে যে সঞ্চালন কোশটি আছে তার নাম হলো— (ক) হ্যাডলি কোশ (খ) ফেরেল কোশ (গ) মেরু কোশ (ঘ) কোনোটিই নয় ।
উত্তরঃ (ক) হ্যাডলি কোশ
১৯. ‘ ফেরেল কক্ষ ‘ কোন বায়ুপ্রবাহের অন্তর্গত ? (ক) পশ্চিমা বায়ু (খ) মেরু বায়ু (গ) আয়ন বায়ু (ঘ) মৌসুমি বায়ু
উত্তরঃ (ক) পশ্চিমা বায়ু
১. মধ্য অক্ষাংশীয় ঘূর্ণবাতের উৎপত্তির পর্যায়গুলি বর্ণনা করো । PSC কী ?
উত্তরঃ নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাত সৃষ্টির পর্যায় নিম্নলিখিতভাবে ব্যাখ্যা করা যায়—
( 1 ) প্রাথমিক পর্যায় ( সাম্য সীমান্ত গঠন ) : মেরু অঞ্চল থেকে শীতল বায়ুপুর ও ক্রান্তীয় অঞ্চল থেকে আগত উন্ন বায়ুপুঞ্জ পরস্পরের সমান্তরালে বিপরীত দিকে প্রবাহিত হয়ে সাম্য সীমান্ত গঠন করে ।
( 2 ) দ্বিতীয় পর্যায় ( উয় ও শীতল সীমান্তের সৃষ্টি ) : শীতল বায়ুপুঞ্জ উয় বায়ুপুঞ্জের অভিমুখে এবং উয় বায়ুপুঞ্জ শীতল বায়ুপুঞ্জের অভিমুখে এগিয়ে গেলে উয় বায়ুর পেছনের অংশে শীতল সীমান্ত এবং শীতল বায়ুর পেছনের অংশে উয় সীমান্ত গঠিত হয়ে থাকে ।
( 3 ) তৃতীয় পর্যায় ( বাততরঙ্গের বিকাশ ) : সাম্য সীমান্ত বরাবর উয় বায়ুপুঞ্জ ও শীতল বায়ুপুঞ্জের সংঘর্ষের ফলে উহ্ণ বায়ুপুঞ্জ শীতল বায়ুপুঞ্জের মধ্যে ঢুকে পড়ে । এতে বাততরঙ্গের উদ্ভব হয় ।
( 4 ) চতুর্থ পর্যায় ( ঘূর্ণবাতের প্রাবল্য ) : শীতল বায়ুপুঞ্জ উয় বায়ুপুঞ্জের পেছনে ধাক্কা মেরে উয় – আর্দ্র বায়ুকে মেরু অঞ্চল অভিমুখে অভিক্ষিপ্ত হতে বাধ্য করে এবং মেরু অঞ্চল থেকে আগত শীতল ও শুষ্ক বায়ু উয় – আর্দ্র বায়ুটিকে ঘিরে ফেলে ।
( 5 ) পঞ্চম পর্যায় ( অক্লুডেড সীমান্ত ) : শীতল বায়ুসীমান্ত উয় সীমান্তের অভিমুখে দ্রুত বেগে এগিয়ে এলে অনায়াসে একটি বক্রাকার সীমান্ত বরাবর উয় সীমান্তের সংস্পর্শে আসে । এই ধরনের বক্রাকার সীমান্তকে অক্লুডেড সীমান্ত বলে ।
( 6 ) অস্তিম পর্যায় : এই পর্যায়ে অক্লুডেড সীমান্ত বরাবর উষ্ম বায়ুপুঞ্জটি শীতল বায়ুপুঞ্জের দ্বারা পরিবৃত হয় । ফলে মূল বায়ুপুঞ্জ থেকে আলাদা হয়ে যায় । তাপমাত্রা অত্যধিক কমে যাওয়ার ফলে বায়ুমণ্ডলের জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে স্ট্যাটোস্ফিয়ার স্তরে অতিশীতল মেঘের সৃষ্টি হয় , যাকে ‘ পোলার স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারিক ক্লাউড ’ ( PSC ) বা মেরুদেশীয় ‘ শাস্তমণ্ডলীয় মেঘ ‘ বলে ।
২. মৌসুমি বায়ুর উপর এল নিনোর প্রভাব বর্ণনা করো ।
উত্তরঃ মৌসুমি বায়ুর ওপর এল নিনোর প্রভাব : উপমহাদেশে মৌসুমি বায়ুর উৎপত্তি প্রসঙ্গে আধুনিকতম তত্ত্বটি হলো ENSO তত্ত্ব । এতে বলা হয়েছে , উত্তর গোলার্ধে গ্রীষ্মকালে নিরক্ষরেখা সংলগ্ন অঞ্চলে পূর্ব – পশ্চিমে বিস্তৃত কয়েকটি ওয়াকার কক্ষ থাকে । ওয়াকার কক্ষগুলির সঙ্গে এল নিনো , দক্ষিণী দোলন এবং মৌসুমি বায়ুপ্রবাহের সম্পর্ক আছে । এই ওয়াকার কক্ষগুলি যে বছরে স্বাভাবিক পরিচলন ক্রিয়ার মাধ্যমে বায়ুপ্রবাহকে সক্রিয় রাখে , সেই পর্বকে ওয়াকার কক্ষের স্বাভাবিক ও শক্তিশালী অবস্থা বলে । এই পর্যায়ে চারটি বৃহৎ নিম্নচাপ বিশিষ্ট ওয়াকার কক্ষ দেখা যায় । যথা— 1) আমাজন অঞ্চল , 2) মধ্যআফ্রিকা , 3) ভারত এবং 4) ইন্দোনেশিয়া । ফলে এই চারটি অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটে । ভারতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে স্বাভাবিক সময়ে দক্ষিণ – পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমন ঘটে । আবার একই সময়ে চারটি নিম্নচাপ কক্ষের পাশাপাশি তিনটি উচ্চচাপ কক্ষেরও সৃষ্টি হয় । যথা— ( ক ) পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগর , ( খ ) পশ্চিম ভারত মহাসাগর , ( গ ) দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর ।
এর প্রভাবে ভারতীয় উপমহাদেশে নিম্নচাপের পরিবর্তে গ্রীষ্মকালে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয় । এর ফলে ভারতে দক্ষিণ – পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দেরিতে আসে । দক্ষিণ – পশ্চিম মৌসুমি বায়ু থেকে অন্তত 10 শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয় । ফলে খরার সৃষ্টি হয় ।
৩. আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপর জেট বায়ুপ্রবাহের প্রভাব বিশ্লেষণ করো । রসভি তরঙ্গ কাকে বলে ? অনিয়মিত বা আকস্মিক বায়ুপ্রবাহ কখন সৃষ্টি হয় ?
উত্তরঃ আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপর জেট বায়ুপ্রবাহের যথেষ্ট প্রভাব লক্ষ করা যায় । যথা—
( 1 ) ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাতের ওপর জেট বায়ুর প্রভাব : জেট বায়ু ও জেট বায়ুকক্ষের অবস্থানের ওপর ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাত অবস্থান করায় জেট বায়ু ঘূর্ণবাত ও প্রতীপ ঘূর্ণবাতের চরিত্র ও বৈশিষ্ট্যকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে ।
( 2 ) মধ্য অক্ষাংশীয় ঘূর্ণবাত : দু’টি বিপরীতধর্মী বায়ুপুঞ্জ মিলিত হয়ে নাতিশীতোয় মণ্ডলীয় ঘূর্ণবাত , বৃষ্টিপাত , তুষারপাত সৃষ্টি হয় ।
( 3 ) নিম্ন অক্ষাংশীয় গোলযোগ : জেট বায়ু জীবনচক্রের অন্তিম পর্যাযে নিম্ন বায়ুস্তরে গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের উৎপত্তি ঘটিয়ে ভয়ংকর ঝড় , বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয় ।
( 4 ) মৌসুমি বায়ুপ্রবাহ : ভারতে দক্ষিণ – পূর্ব মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা অনেকাংশে ক্রান্তীয় পূর্বালি জেটের উপর নির্ভর করে । বর্ষাকালে ভারতের ওপর নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হলে তার তীব্রতা অনেকাংশে নির্ভর করে ক্রান্তীয় পূর্বালি জেটের ওপর ।
উভয় গোলার্ধে পৃথিবীকে বেষ্টন করে পশ্চিম থেকে পূর্বে ঊর্ধ্ব বায়ুমণ্ডলে প্রতিনিয়তই পশ্চিমাবায়ুর প্রবাহ দেখা যায় । এই বায়ুপ্রবাহে যে বৃহদাকৃতি তরঙ্গের সৃষ্টি হয় , তাকে রসভি তরঙ্গ বলে । জেট বায়ু যখন আঁকাবাঁকা পথে প্রবাহিত হয় তখন তা রসবি তরঙ্গ নামে পরিচিত হয় ।
কোনো জায়গায় যদি খুব অল্প সময়ের মধ্যে বা হঠাৎই বায়ুর চাপ অত্যধিক কমে যায় । বা বৃদ্ধি পায় , তাহলে প্রবল বেগে যে বায়ু প্রবাহিত হয় তাকে আকস্মিক বা অনিয়মিত বায়ু বলে ।
১. জলবায়ু পরিবর্তনের কারণগুলি আলোচনা করো ।
উত্তরঃ জলবায়ু পরিবর্তনের নানা কারণ রয়েছে । এর মধ্যে প্রধান হলো মহাদেশীয় সরণ , আগ্নেয়গিরির উদ্গীরণ , সমুদ্রের স্রোতপ্রবাহ এবং পৃথিবীর হেলে থাকা ।
( 1 ) মহাদেশীয় সরণ : পৃথিবীর স্থলভাগ যখন একটু একটু করে সরে যেতে শুরু করল তখনই ধীরে ধীরে সৃষ্টি হলো মহাদেশের । মাটির এই সরে যাওয়ার ফলে পৃথিবীর স্থলভাগের জলাশয়গুলির অবস্থানের পরিবর্তন হয়েছে । এই পরিবর্তনগুলি জলবায়ুর উপর প্রভাব ফেলে ।
( 2 ) আগ্নেয়গিরি : আগ্নেয়গিরির উদ্গীরণের ফলে প্রচুর পরিমাণে সালফার ডাই – অক্সাইড গ্যাস , জলীয় বাষ্প , ধুলো , ছাই নির্গত হয় । ফলে দীর্ঘদিন ধরে প্রকৃতির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটায় ।
( 3 ) পৃথিবীর হেলে থাকা : পৃথিবী তার কক্ষপথের উল্লম্ব তলের সঙ্গে 231 , 2 ° কোণে হেলে রয়েছে । পৃথিবীর হেলে থাকার পরিবর্তন হলে তা জলবায়ুর উপর প্রভাব ফেলে ।
( 4 ) সমুদ্রের স্রোতপ্রবাহ : জলবায়ুর উপর সমুদ্রের একটি বড়ো ভূমিকা রয়েছে । সমুদ্র পৃথিবীর 71 শতাংশ জুড়ে রয়েছে । সমুদ্র বায়ুমণ্ডলের চেয়ে দ্বিগুণ সূর্যের বিকিরণ শোষণ করে ।
২. জলবায়ু পরিবর্তনের মনুষ্যসৃষ্ট তিনটি প্রধান কারণ লেখো । ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে শীতকালে বৃষ্টিপাতের কারণ কী ?
উত্তরঃ মানুষের নানা অবিবেচনামূলক ক্রিয়াকলাপের ফলে ওজোন স্তর ক্ষয় , গ্রিনহাউস এফেক্ট ও বিশ্ব উয়ায়নের প্রভাবে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটেছে । যথা—
( 1 ) জীবাশ্ম জ্বালানির দহন : সমগ্র বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলির শিল্প – কলকারখানা , যানবাহন , তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন , রান্নার কাজে , খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস যথেচ্ছভাবে ব্যবহারের ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই – অক্সাইড – এর পরিমাণ দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় পরোক্ষ ভাবে জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে ।
( 2 ) অরণ্যচ্ছেদন : বর্তমানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি হওয়ার ফলে ক্রমাগত চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে যথা কৃষি , শিল্প , রাস্তাঘাট , বসতি নির্মাণের জন্য অরণ্যচ্ছেদন চলছে । ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই – অক্সাইডের পরিমাণ খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় জলবায়ুর পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে ।
( 3 ) কৃষিকাজ : মানুষ তার কাঙ্ক্ষিত চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে দ্রুত ও উচ্চ ফলনশীল শস্য চাষে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করছে ফলে NH , CH , N , O গ্যাস বৃদ্ধি পায় ৷ এগুলিও জলবায়ু পরিবর্তনে মূখ্য ভূমিকা পালন করে চলেছে ।
ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুতে অধিকাংশ বৃষ্টিপাত শীতকালে হওয়ার কারণ : ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো উয় ও শুষ্ক গ্রীষ্মকাল ও আর্দ্র শীতকাল । শীতকালে সাধারণত পশ্চিমি বায়ু ও নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতের সম্মিলিত প্রভাবে এখানে বৃষ্টিপাত হয় । সূর্যের দক্ষিণায়নের সময় উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয়টি আস্তে আস্তে দক্ষিণে সরে যায় । ফলে ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলে পশ্চিমি বায়ুর প্রভাব পড়ে । ভূমধ্যসাগর অঞ্চল থেকে আগত পশ্চিমি বায়ু এবং ভূমধ্যসাগরে সৃষ্ট নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতের যৌথ প্রক্রিয়া ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে শীতকালে বৃষ্টিপাত ঘটায় ।
পরিচ্ছেদ ৩ : জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদ
১. উভচর জলজ উদ্ভিদের উদাহরণ হলো – (ক) হাইড্রিলা (খ) মস (গ) পদ্ম (ঘ) ফার্ন
উত্তরঃ (গ) পদ্ম
২. ‘ মেসোথার্মস ’ উদ্ভিদের উদাহরণ হলো— (ক) মস (খ) পাইন (গ) সেগুন (ঘ) আয়রন উদ্ভ
উত্তরঃ (গ) সেগুন
৩. নিউম্যাটাফোর হলো- (ক) স্তম্ভমূল (খ) ঠেসমূল (গ) গুচ্ছমূল (ঘ) শ্বাসমূল
উত্তরঃ (ঘ) শ্বাসমূল
৪. আলোকবিদ্বেষী উদ্ভিদ হলো – (ক) সূর্যমুখী (খ) জবা (গ) গন্ধরাজ (ঘ) পান
উত্তরঃ (ঘ) পান
৫. আলোকপ্রেমী উদ্ভিদ হলো – (ক) পান (খ) মানিপ্ল্যান্ট (গ) ফার্ন (ঘ) সূর্যমুখী
উত্তরঃ (ঘ) সূর্যমুখী
৬. স্বাভাবিক উদ্ভিদ বণ্টনে সর্বাধিক প্রভাব ফেলে— (ক) বৃষ্টিপাত (খ) উয়তা (গ) আর্দ্রতা (ঘ) বায়ুপ্রবাহ
উত্তরঃ (ক) বৃষ্টিপাত
৭. একটি নিমজ্জিত জলজ উদ্ভিদ হলো— (ক) হাইড্রিলা (খ) কচুরিপানা (গ) শালুক (ঘ) পদ্ম
উত্তরঃ (ক) হাইড্রিলা
৮. উচ্চ তাপমাত্রায় যেসব উদ্ভিদ জন্মায় তাদের বলে – (ক) মেগাথার্ম (খ) মেসোধার্ম (গ) মাইক্রোথার্ম (ঘ) হেকিস্টোথার্ম
উত্তরঃ (ক) মেগাথার্ম
৯. অঙ্গজ জননের মাধ্যমে বংশবিস্তার ঘটে— (ক) জলজ উদ্ভিদের (খ) জাঙ্গল উদ্ভিদের (গ) লবণাম্বু উদ্ভিদের (ঘ) কোনোটিই নয়
উত্তরঃ (ক) জলজ উদ্ভিদের
১০. আমাজন অববাহিকার গভীর অরণ্যকে বলে— (ক) প্রেইরি (খ) পম্পাস (গ) ভেন্ড (ঘ) সেলভা
উত্তরঃ (ঘ) সেলভা
১১. লজ্জাবতী লতা হলো – (ক) অক্সিলোফাইট (খ) লিথোফাইট (গ) স্যামোফাইট (ঘ) চ্যাসমোফাইট — জাতীয় উদ্ভিদ
উত্তরঃ (গ) স্যামোফাইট
১. বিভিন্ন প্রকার মরু উদ্ভিদের বিবরণ দাও । হাইড্রোফাইটের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য লেখো ।
উত্তরঃ মরু উদ্ভিদের শ্রেণিবিভাগ : জাঙ্গল বা মরু উদ্ভিদ বা Xerophytes উদ্ভিদকে মূলত চার ভাগে ভাগ করা যায় । যথা –
( 1 ) খরা সহিহ্ উদ্ভিদ : যে – সমস্ত উদ্ভিদ মরু অঞ্চলে দীর্ঘ খরা সহ্য করে বেঁচে থাকে , তাদের খরা সহিয়ু উদ্ভিদ বলে । যেমন — বাবলা , আকন্দ ইত্যাদি ।
( 2 ) খরা প্রতিরোধী উদ্ভিদ : যে সমস্ত উদ্ভিদ দীর্ঘসময় ধরে খরাকে প্রতিরোধ করে স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকে , তাদের খরা প্রতিরোধী উদ্ভিদ বলে । যেমন — ফণীমনসা , ক্যাকটাস ইত্যাদি ।
( 3 ) খরা এড়ানো উদ্ভিদ : যে – সমস্ত উদ্ভিদ জলের অভাবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে জীবনচক্র সম্পন্ন করে , তাদের খরা এড়ানো উদ্ভিদ বলে । •
( 4 ) খরা পলায়নি উদ্ভিদ : যে সমস্ত উদ্ভিদ মাটির নীচের মূল অংশ থেকে জন্মায় তাদের খরা পলায়নি উদ্ভিদ বলে । আর্দ্র – ক্রান্তীয় ও জলজ
হাইড্রোফাইট উদ্ভিদের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য : 1) নাতিশীতোহ্ণ জলবায়ুতে জন্মায় । 2) জলজ উদ্ভিদের মূলগুলি সুগঠিত হয় না । উদ্ভিদের কাণ্ড নরম ও দুর্বল প্রকৃতির । 3) জলজ উদ্ভিদের পাতাগুলির আকার বড়ো । 4) জলজ উদ্ভিদের প্রস্বেদন প্রক্রিয়া বেশি ।
২. ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে গ্রীষ্মকাল শুষ্ক ও শীতকাল আর্দ্র হওয়ার কারণ কী ? জলজ উদ্ভিদ কত প্রকার ও কী কী ?
উত্তরঃ ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর অন্তর্গত দেশগুলিতে বার্ষিক মোট বৃষ্টিপাতের প্রায় 75 % শীতকালে হয়ে থাকে । এর কারণগুলি হলো—
( 1 ) গ্রীষ্মকালে : উত্তর – পূর্ব আয়ন বায়ু মহাদেশের পূর্বাংশে বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে পশ্চিম প্রাস্তে এলে জলীয় বাষ্প না থাকায় বৃষ্টিপাত গ্রীষ্মকালে হয় না । আবার নিরক্ষীয় নিম্নচাপ ও মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় উচ্চচাপের শীতল ও শুষ্ক বায়ুর আগমন হওয়ায় বায়ু সংকুচিত হয় এবং তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পায় । ফলে গ্রীষ্ম উয় ও শুষ্ক হয় ।
( 2 ) শীতকালে : দক্ষিণ – পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু ভূমধ্যসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগর থেকে জলীয় বাষ্প সংগ্রহ করে পার্বত্য অঞ্চলে শৈলোৎক্ষেপ বৃষ্টিপাত ঘটায় । ফলে শীতকাল আর্দ্র ও শীতল হয় ।
জলজ উদ্ভিদ : জলজ উদ্ভিদকে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় । যথা—
( 1 ) ভাসমান জলজ উদ্ভিদ : যেসব উদ্ভিদের পাতা জলের ওপরে ভেসে থাকে তাদের ভাসমান জলজ উদ্ভিদ বলে ।
( 2 ) নিমজ্জিত জলজ উদ্ভিদ : যেসব উদ্ভিদের সমগ্র অংশটাই জলে ডুবে থাকে , তাদের নিমজ্জিত জলজ উদ্ভিদ বলে ।
( 3 ) উভচর জলজ উদ্ভিদ : যেসব উদ্ভিদের মূল জলের নীচের মাটিতে থাকে এবং কাণ্ড জলের ওপরে থাকে , তাদের উভচর জলজ উদ্ভিদ বলে ।
৩. স্বাভাবিক উদ্ভিদের উপর সূর্যালোকের প্রভাব লেখো । জলজ উদ্ভিদের কাণ্ডের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য লেখো ।
উত্তরঃ ( 1 ) স্বাভাবিক উদ্ভিদের উপর সূর্যালোকের প্রভাব : পৃথিবীর সকল শক্তির উৎস হলো সূর্যালোক । এই সূর্যালোকের উপর উদ্ভিদের জন্ম – বৃদ্ধি – অস্তিত্ব প্রভৃতি নির্ভর করে ।
যথা — 1) সূর্যালোকের সাহায্যে উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় জল ও কার্বন ডাই – অক্সাইড থেকে তাদের খাদ্য তৈরি করে । 2) বীজের অঙ্কুরোদ্গম থেকে শুরু করে উদ্ভিদের ফুল , ফল ও পাতা প্রভৃতি বিকাশের ক্ষেত্রে সূর্যালোক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । 3) সূর্যালোকের মাধ্যমে উদ্ভিদের শ্বসনের হ্রাস – বৃদ্ধি ঘটে । 4) দিনের বেলায় সূর্যালোকের প্রভাবে উদ্ভিদের পত্ররন্ধ্র উন্মুক্ত থাকে বলে বাষ্পমোচনের হার বেশি হয় । 5) সূর্যালোকের প্রকৃতি অর্থাৎ লাল , নীল , অতিবেগুনি রশ্মির দ্বারা উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও বিকাশলাভ হয় ।
জলজ উদ্ভিদের কাণ্ডের অভিযোজনগত বৈশিষ্ট্য হলো—
(1) কাণ্ডে কিউটিকল থাকে না ।
(2) কাণ্ডের ত্বক একস্তরীয় যা প্যারেনকাইমা বা কোলেনকাইমা দিয়ে গঠিত ।
(3) কাণ্ডের কর্টেক্স প্যারেনকাইমা দিয়ে গঠিত এবং তাতে বায়ুগহ্বর থাকে ।
পরিচ্ছেদ ৪ : জলবায়ু পরিবর্তন
১. DART- এর পুরো কথাটি কী ?
উত্তরঃ DART -এর পুরো কথাটি হলো- Deep Ocean Assessment and Reporting of Tsunami .
২. কোপেনের জলবায়ু শ্রেণি বিভাগে BS জলবায়ু বলতে কী বোঝো ?
উত্তরঃ কোপেনের জলবায়ু শ্রেণিবিভাগে BS জলবায়ু বলতে মরুপ্রায় বা স্তেপ জলবায়ুকে বোঝানো হয় ৷
৩. সুনামি কী ?
উত্তরঃ বিশালাকার সামুদ্রিক ঢেউকে জাপানি ভাষায় সুনামি বলে । সমুদ্রগর্ভে ভূমিকম্পের মাত্রা ৪ অতিক্রম করলে সুনামির সৃষ্টি হয় ।
৪. ভাস্কুলার কলা কাকে বলে ?
উত্তরঃ জাইলেম ও ফ্লোয়েম কলা দিয়ে গঠিত বিশেষ ধরনের উদ্ভিদকলা যা উদ্ভিদদেহে জল ও খাদ্যের পরিবহণ করে , তাকে ভাস্কুলার কলা বলে ।
৫. অধমূল কী ?
উত্তরঃ অনেক সময় লবণাম্বু উদ্ভিদের কাণ্ডের নীচের দিকে চারদিক থেকে তক্তার মতো চ্যাপটা অংশ বের হয় এবং মাটিতে ঢুকে যায় , একে বলা হয় অধিমূল ৷
৬. এল নিনোর প্রভাবে কোথায় বেশি বৃষ্টিপাত হয় ?
উত্তরঃ এল নিনোর প্রভাবে দক্ষিণ আমেরিকার পেরু উপকূলে ও আটকামা মরুভূমিতে বৃষ্টিপাত হয় ।
৭. ভারতের একটি ধসপ্রবণ রাজ্যের নাম লেখো ।
উত্তরঃ ভারতের সর্বাধিক ধসপ্রবণ রাজ্য – হিমাচল প্রদেশ , উত্তরাখণ্ড । অধিক ধসপ্রবণ রাজ্য — অরুণাচল প্রদেশ , মিজোরাম ।
৮. মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চলে বছরে বায়ুপ্রবাহের পরিবর্তন কেমন হয় ?
উত্তরঃ গ্রীষ্মকালে দক্ষিণ – পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ও শীতকালে উত্তর – পূর্ব মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হয় ।
১. গ্রিনহাউসের প্রভাব বর্ণনা করো ।
উত্তরঃ গ্রিনহাউস প্রভাব :
(1) বায়ুমণ্ডলের গড় উয়তা বৃদ্ধি : কলকারখানা , যানবাহন প্রভৃতি থেকে নির্গত ধোঁয়া থেকে কার্বন ডাই – অক্সাইড – এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে । •
(2) জলবায়ু পরিবর্তন : ক্রমাগত উন্নতা বৃদ্ধির ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যাবে এবং খরার প্রকোপ বেড়ে যাবে । কোথাও অতিবৃষ্টি আবার কোথাও অনাবৃষ্টি দেখা দেবে ।
(3) সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা বৃদ্ধি : তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত কারণে জমাটবাঁধা বরফের বিশাল শিলাস্তূপ গলে গিয়ে সামুদ্রিক জলের প্রসার ঘটবে । ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাবে ।
(4) কৃষি উৎপাদন ও পানীয় জলের হ্রাস : উয়তা বৃদ্ধির ফলে জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটবে । তার ফলে কৃষিজমির সংকোচন ঘটবে , ফসলের উৎপাদন হ্রাস পাবে । খাল , বিল , পুকুর , নদী প্রভৃতি শুকিয়ে যাবে উষ্মতা বৃদ্ধির ফলে । ফলস্বরূপ প্রাণীকুল গভীর জলসংকটে পড়বে ।
(5) অরণ্যের ধ্বংস ও জীববৈচিত্র্যের সংকট : উন্নতা বৃদ্ধির ফলে দাবানলের সৃষ্টি , মরুভূমির সম্প্রসারণ প্রভৃতি কারণে অরণ্য ধ্বংস হবে এবং জীববৈচিত্র্যের ধ্বংস লক্ষ করা যাবে ।
২. গ্রিনহাউস এফেক্ট ও গ্লোবাল ওয়ার্মিং কী ? এর কারণ ও প্রভাব সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
উত্তরঃ গ্রিনহাউস এফেক্ট : শীতপ্রধান দেশে অত্যধিক ঠান্ডার হাত থেকে উদ্ভিদকে বাঁচাতে কাচের ঘর তৈরি করা হয় । এতে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয় কিন্তু বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন গ্যাসীয় উপাদান যথা — কার্বন ডাই – অক্সাইড , মিথেন , ক্লোরোফ্লুরোকার্বন , নাইট্রাস অক্সাইড , ওজোন , জলীয় বাষ্প প্রভৃতি যুক্ত হয়ে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে , একেই গ্রিনহাউস এফেক্ট বা প্রভাব বলে ।
গ্লোবাল ওয়ার্মিং : সাধারণত বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই – অক্সাইড ( CO ) , মিথেন ( CH , ) , নাইট্রাস অক্সাইড ( NO ) , ক্লোরোফ্লুরোকার্বন ( CFC ) প্রভৃতি গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবে পৃথিবীর গড় উয়তা বৃদ্ধি বা উয়তার ক্রমবর্ধমান অবস্থাকে সাধারণত Global Warming বা বিশ্ব উয়ায়ন বলে ।
বিশ্ব উন্নায়নের কারণ :
(1) জীবাশ্ম জ্বালানি দহনের ফলে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই – অক্সাইডের ( CO ) পরিমাণ বৃদ্ধি । 2) কারখানা ও যানবাহন থেকে নির্গত ধোঁয়া থেকে বায়ুমণ্ডলে CO , এর পরিমাণ বৃদ্ধি ।
(3) জ্বালানি কাঠ দহনের ফলে বায়ুমণ্ডলে CO- এর পরিমাণ বৃদ্ধি ।
(4) পচনশীল আবর্জনা , গবাদি পশুর গোবর , জলাভূমি , ধানখেত ইত্যাদি থেকে নির্গত গ্যাস থেকে মিথেনের ( CH ) পরিমাণ বৃদ্ধি ।
(5) রেফ্রিজারেশন , হিমঘর , রং শিল্প , ইলেকট্রনিক শিল্প প্রভৃতি থেকে বায়ুমণ্ডলে ক্লোরোফ্লুরোকার্বনের ( CFC ) পরিমাণ বৃদ্ধি ।
(6) পৃথিবীর জনসংখ্যার ব্যাপক বৃদ্ধির ফলে শ্বাসপ্রশ্বাস ও বর্জ্য বৃদ্ধিতে বায়ুমণ্ডলে CO- এর পরিমাণ বৃদ্ধি ।
বিশ্ব উন্নায়নের ফলাফল :
(1) জলবায়ুর পরিবর্তন : পৃথিবীর উন্নতা বৃদ্ধির ফলে আবহাওয়া ও জলবায়ুর নানা রকমের পরিবর্তন ঘটবে । যেমন — বন্যা , খরা , দীর্ঘায়িত গ্রীষ্মকাল , বজ্রপাত , বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড় – বৃষ্টি , সাইক্লোন , টর্নেডো প্রভৃতির ক্রিয়া বৃদ্ধি পাবে ।
(2) বরফ গলন : পৃথিবীর উন্নতা বৃদ্ধির ফলে কুমেরু অঞ্চলের গভীর পুরু বরফের স্তর এবং অন্যান্য মহাদেশীয় ও পার্বত্য হিমবাহ গলতে থাকবে এবং সমুদ্রজলপৃষ্ঠের উচ্চতার বৃদ্ধি ঘটবে ।
(3) সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি : বিশ্ব উয়ায়নে মেরুদেশীয় বরফ গলনের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে গেলে ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটবে , কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হবে , সামুদ্রিক পরিবেশের পরিবর্তন ঘটবে ।
(4) দাবানলের সৃষ্টি : পৃথিবীর উন্নতা বৃদ্ধি পেলে গাছে গাছে ঘষা লেগে বারে বারে দাবানল সৃষ্টির মাধ্যমে বনভূমি নষ্ট হবে ।
(5) জৈববৈচিত্র্য হ্রাস : পৃথিবীর গড় উয়তা বৃদ্ধির কারণে অসংখ্য প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবনহানি ঘটবে এবং জৈববৈচিত্র্য বিপন্ন হবে ।
No comments:
Post a Comment