দশম শ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল প্রশ্নের মান 1,2,3 প্রশ্ন ও উত্তর| class 10 bayumondal 2nd chapter | geography suggetion 2024 WB board|| - SM Textbook

Fresh Topics

Thursday, October 5, 2023

দশম শ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল প্রশ্নের মান 1,2,3 প্রশ্ন ও উত্তর| class 10 bayumondal 2nd chapter | geography suggetion 2024 WB board||

 দশম শ্রেণীর ভূগোল বায়ুমণ্ডল প্রশ্নের মান 1,2,3 প্রশ্ন ও উত্তর| class 10 bayumondal 2nd chapter | geography suggetion 2024 WB board||



দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায়  click korun 


. দু-এক কথায় উত্তর দাও 

১.বায়ুমণ্ডলের বিস্তার সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কতদূর? 

উত্তর | সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ঊর্ধ্বে ১০,০০০ কিমি পর্যন্ত।

২. কোন্ গ্যাস সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে নেয় ?

 উত্তর:-  ওজোন গ্যাস (O3)। 

৩.বায়ুমণ্ডলে কোন্ গ্যাসের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি? 

উত্তর:-  নাইট্রোজেন গ্যাস (৭৮.০৮%)। 

৪.বায়ুমণ্ডলের কোন্ উপাদানের উপস্থিতির ফলে আকাশের 8 রং নীল হয়? 

উত্তর :-ধূলিকণা। 

৫.কোন্ জলবায়ু অঞ্চলে জলীয় বাষ্পের সর্বাধিক উপস্থিতি লক্ষ করা যায় ?

 উত্তর: ক্রান্তীয় অঞ্চলে (প্রায় ৪%)।

৬. যে-সমস্ত গ্যাসীয় উপাদান বাতাসে সম অনুপাতে সর্বদা উপস্থিত থাকে, তাকে কী বলে? 

উত্তর :-স্থায়ী গ্যাসীয় উপাদান বলে।

৭.বাতাসের স্থায়ী গ্যাসীয় উপাদান গুলির নাম লেখো।

 উত্তর : নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, মিথেন, জেনন, ক্রিপটন ইত্যাদি।

 ৯.যে-সমস্ত গ্যাসীয় উপাদানের উপস্থিতি সময় ও স্থান বিশেষে পরিবর্তিত হয়, তাকে কী বলে?

 উত্তর:- অস্থায়ী উপাদান বলে।

সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর:

প্রশ্ন ১ | বায়ুমণ্ডল (Atmosphere) কাকে বলে?

 [মা.প. [১৮] 

উত্তর:-  ভূপৃষ্ঠের যে অদৃশ্য গ্যাসীয় আবরণ, অতি সূক্ষ্ম ধূলিকণা ও জলীয় বাষ্প পৃথিবীকে বেষ্টন করে আছে, তাকে বায়ুমণ্ডল বলে। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবেই বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর গায়ে লেগে আছে এবং পৃথিবীর সাথেই আবর্তিত হয়ে চলেছে।

 প্রশ্ন ২ বায়ুমণ্ডলের প্রধান দুটি গ্যাসীয় উপাদানের নাম লেখো। 

উত্তর:-  বায়ুমণ্ডলের প্রধান দুটি গ্যাসীয় উপাদান হল অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন। 

প্রশ্ন। ৩ বায়ুমণ্ডলের নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলি কী কী? ** | 

উত্তর:- বায়ুমণ্ডলের নিষ্ক্রিয় গ্যাসগুলি হল নিয়ন (Ne), হিলিয়াম (He), জেনন (Xe) ও ক্রিপটন (Kr)।

 প্রশ্ন ৪ | বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তনশীল গ্যাসীয় উপাদানগুলি কী কী ?  

উত্তর :-বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তনশীল গ্যাসীয় উপাদানগুলি হল—জলীয়বাষ্প, কার্বন ডাইঅক্সাইড, মিথেন, কার্বন মনোক্সাইড, ওজোন, সালফার ডাইঅক্সাইড এবং নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড। 

প্রশ্ন ৫ অ্যারোসল (Aerosol) কী ? ** 

উত্তর :-বায়ুমণ্ডলে ভাসমান সুক্ষ্ম ধূলিকণাকে অ্যারোসল বলে। অ্যারোসলকে আশ্রয় করেই জলীয় বাষ্প বাতাসে ভেসে বেড়ায়।

 প্রশ্ন ৬ অ্যারোসলের উৎসগুলি কী কী? 

উত্তর:- অ্যারোসলের উৎসগুলি হল ধূলিকণা, আগ্নেয়গিরির ছাই ও সমুদ্রের লবণকণা ইত্যাদি।

 প্রশ্ন ৭ | গ্রিনহাউস গ্যাস গুলির নাম লেখো। ★★

 উত্তর:- বায়ুমণ্ডলের গ্রিনহাউস গ্যাস গুলি হল কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2), কার্বন মনোক্সাইড (CO), মিথেন (CH4), নাইট্রাস অক্সাইড (N2O), ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC), জলীয় বাষ্প ইত্যাদি।

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্নোত্তর:

প্রশ্ন ১ বায়ুমণ্ডলের গুরুত্ব কী ? 

উত্তর:- বায়ুমণ্ডলের গুরুত্ব হল : (i) বায়ুমণ্ডলের বায়বীয় উপাদান জীবমণ্ডলকে বাঁচিয়ে রেখেছে। (ii) এই অংশ সৌরশক্তির কুপরিবাহী বলে পৃথিবীর গড় উষ্ণতা ১৫°সে যা জীবকুল গড়ে ওঠার সহায়ক। (iii) সূর্যের ক্ষতিকারক বস্তু এখানেই শোষিত হয়। (iv) আবহাওয়ার ঘটনা প্রক্রিয়া (বায়ুপ্রবাহ, ঘনীভবন, বৃষ্টিপাত ইত্যাদি) বায়ুমণ্ডলেই ঘটে এবং (v) বায়ুর ঘনত্ব বায়ুচাপকে নিয়ন্ত্রণ করে। অতএব বায়ুমণ্ডল না-থাকলে পৃথিবীতে প্রাণের স্পন্দন ঘটত না।

 প্রশ্ন| ২ | বায়ুমণ্ডলের উপাদানগুলি কী কী ? **  

উত্তর:- বায়ুমণ্ডল হল বিভিন্ন গ্যাসের যান্ত্রিক মিশ্রণ। এ ছাড়াও বায়ুমণ্ডলে রয়েছে জলীয় বাষ্প এবং জৈব এবং অজৈব উপাদান। সুতরাং বায়ুমণ্ডল তিনটি উপাদান নিয়ে গঠিত। মধ্যে 

(i) গ্যাসীয় উপাদান : বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন গ্যাসের মধ্যে নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, আর্গন ও কার্বন ডাইঅক্সাইড—এই চারটি গ্যাস ১৯.৯৯% অধিকার করে আছে। এর মধ্যে নাইট্রোজেন ও অক্সিজেনের পরিমাণ যথাক্রমে ৭৮.০৮% এবং 20.90% ।

 (ii) জলীয় বাষ্প : এটি বায়ুমণ্ডলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ভূপৃষ্ঠের জল বাষ্পীভূত হয়ে বায়ুমণ্ডলে অবস্থান করে এবং মোট ■ জলীয় বাষ্পের ৯০% থাকে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬ কিমি-এর মধ্যে। অক্সিজেন

 (iii) জৈব 1 অজৈব উপাদান : বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন জৈব ও অজৈব কণাকে ধূলিকণা বা Aerosol বলে। ধূলিকণাকে আশ্রয় করেই জলীয় বাষ্প বাতাসে ভেসে বেড়ায়।

প্রশ্ন ৩ | বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের গুরুত্ব কী? 

উত্তর :- বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের গুরুত্বগুলি হল- 

(i) মানুষ, জীবজগৎ, উদ্ভিদের প্রশ্বাসকার্যে সাহায্য করে।

 (ii) দহন কার্যে অক্সিজেন ব্যবহৃত হয়।

 (iii) মানুষ, ও অন্যান্য প্রাণীদেহে শক্তি ও উত্তাপ বাড়াতে সাহায্য করে। 

(iv) রাসায়নিক আবহবিকার অক্সিডেশনে সাহায্য করে।

 (v) পর্বত আরোহণের সময় বা বিমানযাত্রায় ; টানেল পথে অক্সিজেন অভাবে শারীরিক অসুস্থতা বৃদ্ধি পায়।

 প্রশ্ন । ৪ | বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেনের গুরুত্ব লেখো।

 উত্তর:- বায়ুমণ্ডলে নাইট্রোজেনের পরিমাণ সর্বাধিক হলেও বায়ুমণ্ডলে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় এর কোনো ভূমিকা নেই। মানুষ এবং অধিকাংশ উদ্ভিদ ও প্রাণী গ্যাসীয় অবস্থায় নাইট্রোজেন ব্যবহার করতে পারে না। কিন্তু কিছু ব্যাকটেরিয়া উদ্ভিদ ও সূক্ষ্ম সামুদ্রিক জীব বাতাসের নাইট্রোজেনকে সরাসরি নাইট্রেটে পরিণত করতে পারে। নাইট্রোজেন রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে উদ্ভিদের গ্রহণযোগ্য খাদ্যে পরিণত হয়। মাটির ব্যাকটেরিয়া ও শুঁটি জাতীয় উদ্ভিদ নাইট্রোজেন গ্রহণ করে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। বায়ুর N2 রাসায়নিক সার উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।

 প্রশ্ন | ৫ | বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড এর গুরুত্ব লেখো। 

উত্তর :- বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের গুরুত্ব হল—(I)কার্বন ডাইঅক্সাইড সূর্য ও পৃথিবী থেকে আগত উত্তাপ শোষণ করে।

 (ii) উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষে সাহায্য করে।

 (iii) কার্বন ডাইঅক্সাইড পৃথিবীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

 (iv) রাসায়নিক আবহবিকার কার্বনেশান ঘটাতে সাহায্য করে। 

(v) গ্রিনহাউস এফেক্ট সৃষ্টিতে বর্তমানে কার্বন ডাইঅক্সাইডের ভূমিকা সর্বাধিক বৃদ্ধি পেয়ে পৃথিবীতে বিপর্যয়ের সূচনা ঘটছে।

 প্রশ্ন | ৬ | বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের গুরুত্ব লেখো। 

উত্তর:-  বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের গুরুত্ব হল : (i) সূর্য থেকে আগত ক্ষুদ্রতর তরঙ্গকে জলীয় বাষ্প শোষণ করে এবং দীর্ঘতর বিকিরিত তাপকে বাধা দিয়ে নীচের স্তরকে উত্তপ্ত করে। (ii) ঊর্ধ্বাকাশে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে সৃষ্ট লীনতাপ আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটায়। (iii) জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়েই মেঘ, কুয়াশা, শিশির, তুহিন, বৃষ্টি, তুষার সৃষ্টি হয়। 

প্রশ্ন ৭ অ্যারোসল বা ধূলিকণার উৎসগুলি কী কী? 

উত্তর:- অ্যারোসল বা ধূলিকণার উৎস হল : (i) বিকিরিত তাপশক্তিকে ধূলিকণা শোষণ করে বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে। (ii) জলীয়বাষ্প ধূলিকণাকে আশ্রয় করে ভেসে বেড়ায় বলেই মেঘ, কুয়াশা, বৃষ্টি প্রভৃতি ঘটাতে পরোক্ষভাবে এর গুরুত্ব অপরিসীম। (iii) ধূলিকণায় বিচ্ছুরিত আলোর প্রভাবেই আকাশের রং নীল। { (iv) ঊষা ও গোধূলির সৃষ্টি ধূলিকণার উপস্থিতির কারণেই হয়।

সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর:

প্রশ্ন ১.হোমোস্ফিয়ার (Homosphere) কাকে বলে?

উত্তর :- ভূপৃষ্ঠ থেকে এক্সোস্ফিয়ার ম্যাগনেটোস্ফিয়ার আয়নোস্ফিয়ার ঊর্ধ্বে ৮৮ কিমি পর্যন্ত অংশে বায়ুমণ্ডলের উপাদানগুলির অনুপাত মোটামুটি একইরকম বলে একে হোমোস্ফিয়ার বলা হয়। বিভিন্ন গ্যাস, ধূলিকণা ও জৈব, অজৈব কণা দ্বারা এই স্তর গঠিত। মেসোস্ফিয়ার 04-07 কিমি কিমি 07-AC টুপোপজ স্ট্যাটোস্ফিয়ার কিমি 45-0 হোমোস্ফিয়ার (১-৮৮ কিমি.) হেটেরোস্ফিয়ার (৮৮-১০,০০০ কিমি) ট্রপোস্ফিয়ার ভূপৃষ্ঠ হোমোস্ফিয়ার ও হেটেরোস্ফিয়ার 

প্রশ্ন ২ হেটেরোস্ফিয়ার (Heterosphere) কাকে বলে?

 উত্তর:- হোমোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে ৮৮ কিমি থেকে ১০,০০০ কিমি পর্যন্ত অংশে বায়ুমণ্ডলের উপাদানগুলির অনুপাত একইরকম থাকে না। এক-একটি অঞ্চলে এক-একটি গ্যাসের প্রাধান্য থাকে বলে এই স্তরটিকে হেটোরোস্ফিয়ার বলে। 

প্রশ্ন। ৩ হেটোরোস্ফিয়ারের উপস্তরগুলির নাম লেখো।

 উত্তর:- হেটেরোস্ফিয়ারের মোট চারটি উপস্তর রয়েছে। কথা_

 (i) আণবিক নাইট্রোজেন স্তর (৮৮–২০০ কিমি) 

(ii) পারমাণবিক অক্সিজেন স্তর (২০০ – ১১২০ কিমি) 

(iii) হিলিয়াম স্তর (১১২০–৩৫৪০ কিমি)

 (iv) হাইড্রোজেন স্তর (৩৫৪০-১০০০০ কিমি)

 প্রশ্ন । ৪ | উয়তার তারতম্যের ওপর ভিত্তি করে বায়ুমণ্ডলের স্তরগুলির নাম লেখো।

 উত্তর:-  উষ্ণতার তারতম্যের ওপর ভিত্তি করে বায়ুমণ্ডলের স্তরগুলিকে ৬টি ভাগে ভাগ করা যায়। 

যথা- (i) ট্রপোস্ফিয়ার, (ii) স্ট্যাটোস্ফিয়ার, (iii) মেসোস্ফিয়ার, (iv) থার্মোস্ফিয়ার ও আয়নোস্ফিয়ার, (v) এক্সোস্ফিয়ার ও (vi) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার।

 প্রশ্ন ৫ স্বাভাবিক উন্নতা হ্রাসের বিধি বা ল্যাপস রেট কাকে বলে ? ★★

 | উত্তর :-ট্রাপোস্ফিয়ারে উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে উন্নতা ৬.৪° সেলসিয়াস /কিমি হারে হ্রাস পায়। একেই বলে Normal Lapse Rate 1 

প্রশ্ন ৬ | ট্রাপোস্ফিয়ারের নামকরণের কারণ কী ? ★★ [

 উত্তর:- গ্রিক শব্দ 'Tropos’-এর অর্থ ‘অশান্ত’ এবং ‘Sphere’- এর অর্থ অঞ্চল। বায়ুমণ্ডলের এই স্তর বায়ুমণ্ডল গঠনকারী উপাদানগুলির প্রভাবে সর্বদা অশান্ত থাকে বলে একে Troposphere নামকরণ করা হয়েছে। 

প্রশ্ন ৭ ট্রাপোপজ (Tropopause) কী ? ★ | 

উত্তর :-ট্রাপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে ৩ কিমি পর্যন্ত অংশে উষুতা একই থাকে হ্রাস বা বৃদ্ধি কিছুই ঘটে না। একে ট্রাপোপজ (‘Pause’ অর্থ ‘থামা’) বলে। ট্রাপোপজ হল ট্রোপোস্ফিয়ার ও স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের সীমারেখা। 

প্রশ্ন | ৮ | স্ট্যাটোস্ফিয়ার (Stratosphere) কাকে বলে? 

উত্তর:- ট্রাপোস্ফিয়ার-এর ওপরের ১৮-৫০ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুস্তরকে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্ত মণ্ডল বলে। 

প্রশ্ন। ৯ | স্ট্রাটোপোজ(Stratopause) কী? |

 উত্তর:- ঊর্ধ্বে ৫০-৫৫ কিমি অংশে স্ট্যাটোস্ফিয়ার মেসোস্ফিয়ারের সীমারেখা হল স্ট্র্যাটোপোজ।

প্রশ্ন | ১০ | মেসোস্ফিয়ার (Mesosphere) কাকে বলে? 

উত্তর :-স্ট্যাটোপজের ঊর্ধ্বে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮০ কিমি পর্যন্ত উচ্চতাযুক্ত স্থান পর্যন্ত যে অংশের উদ্বৃতা কমতে থাকে, তাকে মেসোস্ফিয়ার বলে। 

প্রশ্ন | ১১ | অরোরা বোরিওলিস ও অরোরা অস্ট্রালিস কী ?*

 উত্তর:- আয়নোস্ফিয়ারে রঞ্জনরশ্মি ও অতিবেগুনি রশ্মির সংঘাতে আয়ন বা তড়িদাহত অণুর সৃষ্টি হয় যা উত্তর মেরুতে মেরুজ্যোতি বা আলোকপ্রভা সৃষ্টি করে একে অরোরা বোরিওলিস বলে। আয়নোস্ফিয়ারে তড়িদাহত অণুর চৌম্বক বিক্ষেপের ফলে পৃথিবীর দক্ষিণ মেরুতে মেরুপ্রভার সৃষ্টি হয় তাকে বলে অরোরা অস্ট্রালিস। 

প্রশ্ন ১২ আয়নোস্ফিয়ারের গুরুত্ব কী? 

উত্তর :-আয়নোস্ফিয়ারের গুরুত্ব হল – (i) উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে উদ্ভূতা দ্রুতহারে বাড়ে এবং থার্মোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে উচ্চতা হয় ১২০০ সে.-এর বেশি। (ii) বায়ুর ঘনত্ব খুবই কম। (iii) অতিবেগুনি ও রঞ্জন রশ্মি এই স্তরে শোষিত হয়। (iv) বস্তুকণা আয়নিত আছে বলেই বেতার তরঙ্গ এই স্তর থেকে প্রতিফলিত হয়। (v) অরোরা বা মেরুপ্রভা এই স্তরে সৃষ্টি হয়। জেনে রাখো • মৌক্তিক মেঘ কী? শীতকালে অ্যান্টার্কটিকা ঊর্ধ্বাংশে জলীয় বাষ্প প্রবেশ করে বর্ণময় মেঘের সঞ্চার ঘটায়। একেই বলে মৌক্তিক মেঘ ('nacreous cloud' or 'mother of pearl)। • নৈশদ্যুতি মেঘ (Noctilucent cloud) কী ? মেসোস্ফিয়ারে সৃষ্ট হালকা মেঘকে নৈশদ্যুতি মেঘ বলে।

 প্রশ্ন | ১৩ | বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তর কোনগুলি?

 উত্তর :-বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরগুলি স্ট্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ার। হল–ট্রপোস্ফিয়ার,

 প্রশ্ন ১৪ ওজোন (Ozone) কী ? *

 উত্তর :-ওজোন (গ্রিক শব্দ 'Ozo' থেকে 'Ozone' শব্দেরউৎপত্তি, যার অর্থ ‘Smell' বা গন্ধ) হল হালকা নীলাভ আঁশটে গন্ধযুক্ত একটি গ্যাস, যার রাসায়নিক সংকেত Oz |

 প্রশ্ন ১৫ ভ্যান অ্যালেন বিকিরণ বলয় কী ?

 উত্তর:- নিরক্ষীয় অঞ্চলের দুটি ম্যাগনেটোপজ বলয়কে ভ্যান অ্যালেন বিকিরণ বলয় বলে।

 প্রশ্ন ১৬ ওজোনস্তর কাকে বলে? 

উত্তর:- স্ট্যাটোস্ফিয়ারের নিম্নাংশে (১৫-৩০ কিমি উচ্চতায়) ওজোন গ্যাসের ঘনত্ব সর্বাধিক। বায়ুমণ্ডলের এই অংশটি হল ওজোনস্তর। 

প্রশ্ন ১৭ ওজোনস্তরের অবস্থান লেখো। 

উত্তর :-স্ট্যাটোস্ফিয়ারের নিম্নাংশে প্রায় ১৫-৩০ কিমি উচ্চতার মধ্যবর্তী স্থানে ওজোনস্তরের অবস্থান লক্ষ করা যায়। বিশেষ কথা: ওজোন গ্যাসের অস্তিত্বের কথা প্রথম | বলেন জার্মান রসায়নবিদ সি. এফ. স্কোনবি এবং O3 সংকেতের আবিষ্কারক জে. এল. সোরেত। ওজোন ঘনত্ব মাপার একক ডবসন, স্ট্যাটোস্ফিয়ারে ওজোনের ঘনত্ব <২০০ ডবসন হলে সেখানে ওজোন হোল সৃষ্টি হয়েছে বলে ধরা হয়। 

প্রশ্ন ১৮। ওজোন ধ্বংসকারী গ্যাসগুলির নাম লেখো।

 উত্তর :-ওজোন ধ্বংসকারী গ্যাসগুলি হল ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC), হ্যালন, মিথেন এবং নাইট্রাস অক্সাইড।

 প্রশ্ন ১৯ | ওজোন গহ্বর (Ozone Hole) কী ? *

 উত্তর:- যেখানে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওজোনের ঘনত্ব ২০০ ডবসন ইউনিট-এর কম এবং সেখান দিয়ে অতিবেগুনি রশ্মি প্রবেশ করে তা হল ওজোন হোল বা ওজোন গহ্বর। অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলে ওজোন গহ্বর তৈরি হয়েছে। 

প্রশ্ন ২০ সমতাপ অঞ্চল (Isotherm Zone) কাকে বলে? 

উত্তর :-ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে প্রায় ৩ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত অংশে উয়তার হ্রাস বা বৃদ্ধি ঘটে না। উচ্চতা বৃদ্ধি পেলেও উয়তা অপরিবর্তিত থাকে বলেই একে সমতাপ অঞ্চল বলে। 

A. সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো:

 প্রশ্ন ১ ট্রপোস্ফিয়ারকে কেন ক্ষুব্ধমণ্ডল বলা হয়? ★★

 উত্তর:-  আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদানগুলি অর্থাৎ ধূলিকণা, জলীয় বাষ্প, মেঘ প্রভৃতি ট্রপোস্ফিয়ারেই অবস্থান করে। এগুলির প্রভাবে ট্রপোস্ফিয়ারে ঝড়-ঝঞ্ঝা, কুয়াশা, বৃষ্টি, তুষারপাত প্রভৃতি ঘটে অর্থাৎ ঘনীভবনের প্রক্রিয়া ট্রপোস্ফিয়ারেই কার্যকর। আবহাওয়া ও জলবায়ুর উপাদানগুলির প্রভাবে ট্রপোস্ফিয়ার সর্বদাই অশান্ত থাকে বলেই ট্রপোস্ফিয়ারকে ‘ক্ষুব্ধমণ্ডল’ বলে।

প্রশ্ন ২ ট্রপোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী? 

উত্তর :-ট্রপোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি হল— 

(i) এই স্তরের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রতি কিমি উচ্চতায় ৬.৪ সে. হারে উষ্ণতা হ্রাস পায়—একেই নর্মাল ল্যাপরেট বা স্বাভাবিক উন্নতা হ্রাসের বিধি বলে। তবে মেরু অঞ্চলে মেরু অঞ্চল সারাবছর বরফে ঢাকা থাকে বলে কিছুটা উয়তার বৈপরীত্য ঘটে। 

(ii) নিরক্ষীয় অঞ্চলে ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বাংশের উয়তা থাকে -৮০° সে. এবং মধ্য অক্ষাংশে –৫৮° সে.।

(iii) মোট গ্যাসীয় স্তরের ৭০ শতাংশ রয়েছে এই করে। কেবলমাত্র ট্রপোস্ফিয়ারে জলীয়বাষ্প, ধূলিকণা ও দেখ রয়েছে বলেই আবহাওয়া ও জলবায়ুর যাবতীয় ঘটনা এই স্তরেই ঘটে। তাই একে 'পুশমণ্ডল' বলে। 

(iv) বায়ুদূষণকারী প্রায় সমস্ত পদার্থই এই স্তরে অবস্থান করে। 

(v) ট্রপোস্ফিয়ারে ২ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত ভূপ্রকৃতি বায়ুকে বাধা দেয় বলে বায়ুর গতিবেগ কম হয়, কিন্তু তারপর গতিবেগ ক্রমশ বাড়তে থাকে। 

প্রশ্ন ৩ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারকে কেন শান্তমণ্ডল বলা হয়। অথবা, স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে জেট প্লেন যাতায়াত করো কেন?★

 উত্তর:-  স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে আবহাওয়া ও জলবায়ুর বিভিন্ন উপাদান, যেমন- বায়ুপ্রবাহ, আর্দ্রতা, মেঘ, ধূলিকণা, কুয়াশা প্রভৃতি থাকে না। ঘনীভবন প্রক্রিয়া কার্যকর নয় বলে আবহাওয়া ও জলবায়ুর বিভিন্ন ঘটনাও এখানে ঘটে না। তাই এই অংশে সর্বদাই শান্তভাব বিরাজ করে। সর্বদা শান্তভাব বিরাজ করে বলেই অতি দ্রুতগামী জেট প্লেন কোনোরূপ বাধার সম্মুখীন হয় না, তাই জেট প্লেনগুলি এই স্তরে যাতায়াত করে।

 প্রশ্ন ৪ স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। 

 উত্তর :- স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরের বৈশিষ্ট্যগুলি হল- 

(i) এই স্তরের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উচ্চতা বৃদ্ধি। টুপোপজে যেখানে উয়তা থাকে ৮০° সে., সেখান থেকে স্ট্যাটোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে উন্নতা বেড়ে হয় প্রায় সে.। 

(ii) স্ট্যাটোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বাংশে ওজোন (O) গ্যাসের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি বলে এই স্তরকে ওজোনস্তর (২০-৫০ কিমি) বলে। ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি এই স্তরে শোষিত হয় বলেই এই অংশে উষ্ণতা বাড়ে। 

ii) এই স্তরে বায়ুপ্রবাহ, জলীয়বাষ্প, মেঘ প্রতি থাকে না। বলে একে 'শাস্ত্রমণ্ডল' বলে। তগামী জেট প্লেনগুলি এই স্তরেই যাতায়াত করে। তবে অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলে শীতকালে মাঝে মাঝে। সামান্য মেঘের সম্ভার ঘটে। একে মৌক্তিক মেঘ বলে। 

৫.মেসোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো ।

উত্তর:- মেসোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি হল_ 

(i) এই স্তরের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে উচ্চতা কমতে থাকে। 

(ii) এখানে বায়ুর চাপ খুব কম থাকে। 

(iii) মহাজাগতিক জ্বলন্ত উচ্চা এই স্তরে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। 

(iv) এটি বায়ুস্তরের সর্বশেষ শীতল স্তর। এরপরে উয়তা আর কমে না, বাড়তে থাকে। ৬. আনোয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

 উত্তর:-  আয়নোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি হল : (i) এই স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে উন্নতা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ে। নীচের দিকে ৮৫-৫০০ কিমি পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে বাড়ে। ৫০০ কিমি উচ্চতায় উত হয় ১২০০° সেন্টিগ্রেড, একে বলে থার্মোস্ফিয়ার ००- १० কিমি উচ্চতায় উন্নতা একইরকম বাড়ে না একে বলে সমতাপ অঞ্চল।

(ii) প্রখর সূর্যকিরণের জন্য বায়ু গঠিত এই স্তরের বায়ুমণ্ডলের মোট ভরের মাত্র ০.৫ শতাংশ আছে। 

প্রশ্ন ৭ .ম্যাগনেটোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্য লেখো।

 উত্তর ম্যাগনেটোস্ফিয়ারের বৈশিষ্ট্যগুলি হল-

 (i) সূর্য থেকে আগত সৌরবায়ু এই স্তরে আবদ্ধ হয়।

 (ii) এই স্তরের যে অংশে পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্র থেমে যায়, তাকে ম্যাগনেটোপজ (magnetopause) বলে।

 (iii) নিরক্ষীয় জলের দুটি ম্যাগনেটোপজ বলয়কে ভ্যান অ্যালেন বিকিরণ বলয় বলা হয়।

 (iv) এই বায়ুমণ্ডলকে বেষ্টন করে একটি প্রোটন ও ইলেকট্রনের চৌম্বকক্ষেত্র আছে।

 (v) মুক্ত আয়নের মিশ্রিত স্তর এটি।

 (vi) এই বায়ুক্তর গোলীয় আকৃতির হয়।

 প্রশ্ন ৮ ওজোনস্তরের গুরুত্ব কী? অথবা, ওজোনস্তর কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?

 উত্তর  :- বায়ুমণ্ডলের ২০-৩৫ কিমির মধ্যে ওজোনস্তরের অবস্থানের কারণেই সূর্য থেকে আগত ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি শোষিত হচ্ছে। ফলে ভূপৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তর অধিক তাপমাত্রার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে। তাই বিজ্ঞানীদের মতে, Without O, layer bilogical furnace will turn into blast furnace." বর্তমানে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC) হ্যালোন, নাইট্রাস অক্সাইড প্রভৃতি গ্যাসের প্রভাবে ওজোনস্তর ধীরে ধীরে ধ্বংস হচ্ছে। অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের ঠিক ওপরে বায়ুমণ্ডলে ওজোন গহ্বর (Ozone hole) সৃষ্টি হয়েছে। ওজোনস্তর ধ্বংসের প্রভাবে পৃথিবীর তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ছে, মানুষের শরীরে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব হচ্ছে ও বাস্তুতন্ত্রের পরিবর্তন ঘটছে। জেনে রাখো • ওজোন গ্যাসের অস্তিত্বের কথা প্রথম বলেন জার্মান রসায়নবিদ জে. এল. জোনৰি এবং সংকেতটি (O) উদ্ভাবন করেন জে. এল. সোরেট। ওজোনস্তর সম্পর্কে প্রথম বিস্তৃত ব্যাখ্যা দেন ব্রিটিশ পদার্থ ও আবহবিদ জি. বি. এম. ডবসন। তার নামানুসারে ওজোন ঘনত্ব মাপার একক তুল ডবসন একক। 

প্রশ্ন ৯.ওজোনস্তর বিনাশের কারণ কী? ★★ 

উত্তর :-  বায়ুমণ্ডলে ওজোন (O) গঠন (O + 0=0) বিনাশ (O3 O2 + O) এক প্রাকৃতিক নিয়ম। পূর্বে দুটি প্রক্রিয়াই সমানহারে কার্যকর হওয়ায় তেমন সমস্যার সৃষ্টি হয়নি। কিন্তু বর্তমানে গঠনের থেকে ধ্বংসের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। ওজোনস্তর ধ্বংসের কারণগুলি হল-

 (i) ক্লোরোফ্লুরোকার্বন ও হ্যান্সন রেফ্রিজারেটর, শীততাপ যন্ত্র প্রভৃতি এবং ফোম ও প্লাস্টিক উৎপাদনের সময় নির্গত CFCS ওজোন গ্যাসকে ধ্বংস করে।

(ii) সালফেট কণা : কারখানার চিমনি ও আগ্নেয়গিরি দিয়ে নির্গত সালফেট কণা ওজোনস্তরকে ধ্বংস করছে।

 (iii) নাইট্রোজেন অক্সাইড : ঊর্ধ্বাকাশে অতিদ্রুতগামী জেট বিমান থেকে নির্গত নাইট্রোজেন অক্সাইডের মাধ্যমে ওজোনস্তর ধ্বংস হচ্ছে। 

প্রশ্ন ১০ ওজোনস্তর ধ্বংসের ফলাফল লেখো।

 উত্তর :- (i) জলবায়ুগত পরিবর্তন : বায়ুমণ্ডলে Oz ক্ষয় হলে UV Ray শোষণ কমে যাবে সরাসরি ভূপৃষ্ঠে ও পতিত হবে ফলে পৃথিবী পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়বে। যার অনিবার্য ফলস্বরূপ ঘটবে বিশ্ব উয়ায়ন বা Global Warming যার ফলে যুগান্তসঞিত বরফ গলবে, সমুদ্র জলতলে উত্থান ঘটবে। 

(ii) বাস্তুতান্ত্রিক প্রভাব : UV Ray-র সঙ্গে তড়িৎ চুম্বকীয় রশ্মির মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠে যে শক্তি এসে পৌঁছোবে তাতে আবহাওয়ার উয়তা বৃদ্ধি পাবে। জীবজন্তুর জৈবিক আচরণে পরিবর্তন ঘটবে। শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যে তারতম্য ঘটবে। বহু প্রাণী জীবের ধ্বংস হবে। বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে, বাষ্পীভবন বাড়বে। ফলে বাস্তুতান্ত্রিক চক্রগুলি বিঘ্নিত হবে। 

iii) মানবশরীরে পরিবর্তন : UV Ray সরাসরি ভূপৃষ্ঠে পৌঁছোলে মানবশরীরে নানা রোগের প্রবণতা বাড়বে। ত্বকে ক্যানসার, চোখের ছানি, অন্ধত্ব বাড়বে। জীবের বংশগতির ধারায় পরিবর্তন ঘটবে। বন্ধ্যাত্বের প্রবণতা বাড়বে।

রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর:

প্রশ্ন ১ | বায়ুমণ্ডলের স্তরগুলির সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দাও।   অথবা, বায়ুমণ্ডলের স্তরগুলির নাম লিখে দুটি স্তরের ব্যাখ্যা দাও। অথবা, বায়ুমণ্ডলের ট্রপোস্ফিয়ার ও স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তর সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো। [ পর্ষদ নমুনা

উত্তর:-  উয়তার তারতম্যের ওপর ভিত্তি করে বায়ুমণ্ডলকে প্রধানত ৭ ভাগে ভাগ করা যায়, যথা : (১) ট্রপোস্ফিয়ার (Troposphere) • ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ঊর্ধ্বের বায়ুস্তরকে ঘনমণ্ডল বা ট্রপোস্ফিয়ার বলে। মেরু অঞ্চলে এর উচ্চতা প্রায় ৮ কিমি। বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে আমরা বাস করি। ও এই স্তরের বায়ুতে ধূলিকণা, জলীয় বাষ্প, কুয়াশা, মেঘ প্রভৃতি থাকে। এই জন্য এই স্তরে ঝড়, বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত প্রভৃতি ঘটনাগুলি ঘটতে দেখা যায়। বায়ুমণ্ডলের মোট গ্যাসীয় ভরের প্রায় ৭৫% গ্যাসীয় পদার্থ এই স্তরে থাকায় এখানে বায়ুর ঘনত্ব ও বায়ুচাপ সবচেয়ে বেশি। ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে ৩ কিমি পর্যন্ত আশে উন্নতার হ্রাসবৃদ্ধি কিছুই হয় না বলে একে লোপ বলে | পজ (Paris)-এর অর্থ থামা। পোপজের অর্থ হল 'ভুল যে স্তর'। ট্রপোপাকে ট্রপোস্ফিয়ার ও স্ট্যাটোস্ফিয়ারের সীমারেখাও বলা হয়। 

(২) স্ট্যাটোস্পিনার (Stratophere) পোস্ফিয়ার-এর ওপরে ১৮-৫০ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুস্তরকে স্ট্যাটোস্ফিয়ার বা শাস্ত্রমণ্ডল বলে। স্ট্যাটোস্ফিয়ার স্তরে ধূলিকণা, মেঘ প্রকৃতি না-থাকায় এখানে ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটে না। ও স্ট্যাটোস্ফিয়ার স্তরে বায়ুপ্রবাহ, মেঘ, ঝড়বৃষ্টি ও বজ্রপাত দেখা যায় না বলে দ্রুতগতিসম্পন্ন জেট বিমানগুলি ঝড়বৃষ্টি এড়িয়ে চলার জন্য স্ট্যাটোস্ফিয়ারের মধ্য দিয়ে চলাচল করে। জেট বিমানগুলি সাধারণত এই বায়ুস্তরের মধ্য দিয়ে চলার সময় আকাশে সাদা নাম রেখে যায়। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫০-৫৫ কিমি ঊর্ধ্বে স্ট্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ারের সীমারেখা স্ট্যাটোপড নামে পরিচিত। করিম উপগ্রহ 44) থেকে ৫০ -৩৫ কিমি থাকে না। সে ঝড়বৃষ্টি চল করে। কর নয়। 10°C 

(৩) মেসোস্ফিয়ার (Mesosphere) স্ট্যাটোপজের ওপর (১৮-৫০ কিমি) উপোস্ফিয়ার (৩-১৮ কিমি) -- বায়ুমণ্ডলের উপাদানগুি সরাসরি বাড়বে। প্রশেগতির প্রায় অবস্থান কমতে থাকে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৮০ কিমি উচ্চতাযুক্ত স্থান পর্যন্ত যে অংশের উয়তা কমতে থাকে, তাকে মেসোস্ফিয়ার বলে। এই স্তরে B বায়ুর তাপমাত্রা সবচেয়ে কম থাকে (কমবেশি ৯৩° সেলসিয়াস)। © মহাকাশ থেকে যেসব উচ্চা পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে সেগুলো এই স্তরের মধ্যে এসে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। 0 স্ট্যাটোস্ফিয়ারের শেষপ্রান্তে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ারের সীমারেখা মেসোপজ নামে পরিচিত। থেকে ১৮ লীয় বাষ্প 

(৪) আয়োনোস্ফিয়ার Homosphere) মেসোপজের পর প্রায় শিলাবৃষ্টি, ৫০০ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত এই স্তরের বায়ু আয়নিত অবস্থায় পর মোট রয়েছে। তড়িৎযুক্ত কণা বা আয়নের উপস্থিতির জন্য এই স্তরকে বলা হয়। মেরুজ্যোতি বা মেরুপ্রভা এই স্তরেই দেখা যায়। এই স্তরের উপাদানগুলি আয়নিত অবস্থায় থাকে বলে ভূপৃষ্ঠে সৃষ্ট বেতার তরঙ্গাগুলি এই আয়োনোস্ফিয়ারে প্রতিহত হয়ে, আবার পৃথিবীতে ফিরে আসে, ফলে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে বেতার সংযোগ রক্ষা করা যায়।

 (৫) এক্সোস্ফিয়ার (Exosphere) 0 আয়নমণ্ডলের ওপরের দিকে ৬০০–১,৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হালকা বায়ুস্তরকে বহিঃমণ্ডল বা এক্সোস্ফিয়ার বলে। এই স্তরে হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম গ্যাসের প্রাধান্য দেখা যায়। এখানে বায়ুর সব উপাদানই আয়নিত অবস্থায় থাকে। এক্সোস্ফিয়ার স্তরটি ধীরে ধীরে মহাশূন্যে মিশে গিয়েছে।

 (৬) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার (Magnetosphere): বহিঃমণ্ডলের ওপরে ১,৫০০-১০,০০০ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় বায়ুশূন্য অঞ্চলটিকে চৌম্বকমণ্ডল বা ম্যাগনেটোস্ফিয়ার বলে। এই স্তরে বায়ুমণ্ডলকে বেষ্টন করে একটি প্রোটন ও ইলেকট্রনের চৌম্বকক্ষেত্র আছে। 

প্রশ্ন ২। বায়ুমণ্ডলের নিম্নস্তরগুলির ব্যাখ্যা দাও।

 উত্তর:-  (১) উপোস্ফিয়ার (Tropusphere) : ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিলোমিটার পর্যন্ত ঊর্ধ্বের বায়ুস্তরকে ঘনমণ্ডল বা ট্রপোস্ফিয়ার। বলে। মেরু অঞ্চলে এর উচ্চতা প্রায় ৮ কিমি। বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে আমরা বাস করি। 6 এই স্তরের বায়ুতে ধূলিকণা, জলীয় বাষ্প, কুয়াশা, মেঘ প্রভৃতি থাকে। এই জন্য এই স্তরে ঝড়, বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত প্রভৃতি ঘটনাগুলি ঘটতে দেখা যায়। বায়ুমণ্ডলের মোট গ্যাসীয় ভরের প্রায় ৭৫% গ্যাসীয় পদার্থ এই স্তরে থাকায় এখানে বায়ুর ঘনত্ব ও বায়ুচাপ সবচেয়ে বেশি। ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বে ৩ কিমি পর্যন্ত অংশে উতার হ্রাসবৃদ্ধি কিছুই হয় না বলে একে উপোপজ বলে | পজ (Pause)-এর অর্থ থামা। টুপোপজের অর্থ হল 'স্তব্ধ যে স্তর'। ট্রপোপজকে ট্রপোস্ফিয়ার ও স্ট্যাটোস্ফিয়ারের সীমারেখাও বলা হয়।

 (২) স্ট্যাটোস্ফিয়ার (Stratosphere‌) 1.ট্রপোস্ফিয়ার-এর ওপরের ১৮-৫০ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুস্তরকে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শাস্ত্রমণ্ডল বলে।

  2. স্ট্যাটোস্ফিয়ার স্তরে ধূলিকণা, মেঘ প্রভৃতি না-থাকায় এখানে ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটে। না। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে বায়ুপ্রবাহ, মেঘ, ঝড়বৃষ্টি ও বজ্রপাত দেখা যায় না বলে দ্রুতগতিসম্পন্ন জেট বিমানগুলি ঝড়বৃষ্টি এড়িয়ে চলার জন্য স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের মধ্য দিয়ে চলাচল করে। জেট বিমানগুলি সাধারণত এই বায়ুস্তরের মধ্য দিয়ে চলার সময় আকাশে সাদা দাগ রেখে যায়। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫০-৫৫ কিমি ঊর্ধ্বে স্ট্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ারের সীমারেখা স্ট্যাটোপজ নামে পরিচিত।

 (৩) মেসোস্ফিয়ার (Mesosphere) • স্ট্যাটোপজের ওপর ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৮০ কিমি উচ্চতাযুক্ত স্থান পর্যন্ত যে অংশের উচ্চতা কমতে থাকে, তাকে মেসোস্ফিয়ার বলে। এই স্তরে বায়ুর তাপমাত্রা সবচেয়ে কম থাকে (কমবেশি ৯৩° সেলসিয়াস)। ও মহাকাশ থেকে যেসব উচ্চা পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে সেগুলো এই স্তরের মধ্যে এসে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। স্ট্যাটোস্ফিয়ারের শেষপ্রান্তে স্ট্যাটোস্ফিয়ার ও মেসোস্ফিয়ারের সীমারেখা মেসোপ নামে পরিচিত।

প্রশ্ন ৩ | বায়ুমণ্ডলে ওজোনস্তরের গুরুত্ব, ধ্বংসের কারণ ও ফলাফল লেখো। **

 উত্তর :-  ওজোনস্তরের গুরুত্ব । এই স্তরে ওজোন গ্যাসের (O3) একটি স্তর বা পর্দা আছে, যা ভেদ করে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি (Ultra Violet Ray) ও রঞ্জন রশ্মি (X-ray) ভূপৃষ্ঠে আসতে পারে না। বায়ুমণ্ডলের ওজোন গ্যাসের স্তর সূর্যের তাপ এবং অতিবেগুনি ও রঞ্জন রশ্মি শোষণ করে নেয় বলে এই স্তরের তাপমাত্রা খুব বেশি হয়। ওজোনোস্ফিয়ার স্তর সূর্য থেকে আসা অত্যন্ত ক্ষতিকারক রশ্মি শোষণ করে নিয়ে পৃথিবীর জীবজগৎকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে। অতি বেগুনি রশ্মি ওজোন স্তরের গুরুত্ব ওজোন স্তরের অবক্ষয় ও বিনাশ •

 ওজোনস্তরের বিনাশের কারণ : ওজোনস্তর বিনাশে প্রকৃতি ও মানুষ উভয়ই দায়ী হলেও মানুষই প্রধান দোষী। বিগত কয়েক দশক ধরে মানুষের অবিবেচনা-প্রসূত কাজের কারণে বাতাসে ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (প্রধান ওজোন ধ্বংসকারী গ্যাস), নাইট্রাস অক্সাইড, হ্যালন, মিথেন, মিথাইল ব্রোমাইড প্রভৃতি গ্যাসের মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণেই ওজোনস্তরের বিনাশ ঘটছে। •

 ওজোনস্তর ধ্বংসের ফলাফল : জলবায়ুগত পরিবর্তন : বায়ুমণ্ডলে Oz ক্ষয় হলে UV Ray শোষণ কমে যাবে সরাসরি ভূপৃষ্ঠে ও পতিত হবে ফলে পৃথিবীপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়বে। যার অনিবার্য ফলস্বরূপ ঘটবে বিশ্ব উন্নায়ন বা Global Warming যার ফলে যুগান্তসজ্জিত বরফ গলবে, সমুদ্র জলতলে উত্থান ঘটবে। ওজোন বিন্যাসে অ্যাসিড বৃষ্টির মাত্রা বাড়বে সাথে ধোঁয়াশার প্রবণতা বাড়বে বলে আশঙ্কা।

 বাস্তুতান্ত্রিক প্রভাব : UV Ray-র সঙ্গে তড়িৎ চুম্বকীয় রশ্মির মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠে যে শক্তি এসে পৌঁছোবে তাতে আবহাওয়ার উষ্ণতা বৃদ্ধি পাবে। জীবজন্তুর জৈবিক আচরণে পরিবর্তন ঘটবে। শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যে তারতম্য ঘটবে। বহু প্রাণী জীবের ধ্বংস হবে। বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে, বাষ্পীভবন বাড়বে। ফলে বাস্তুতান্ত্রিক চক্রগুলি বিঘ্নিত হবে। জলচক্রে পরিবর্তন ঘটবে। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওজোনস্তর হ্রাস পেলে উদ্ভিদের বৃদ্ধি ও ঘনত্ব বাড়বে। 

 মানবশরীরে পরিবর্তন : UV Ray সরাসরি ভূপৃষ্ঠে পৌঁছোলে মানবশরীরে নানা রোগের প্রবণতা বাড়বে। ত্বকে ক্যানসার, চোখের ছানি, অন্ধত্ব বাড়বে। জীবের বংশগতির ধারায় পরিবর্তন ঘটবে। বন্ধ্যাত্বের প্রবণতা বাড়বে। ধোঁয়াশার প্রবণতা বাড়লে মানুষের শ্বাসকষ্ট, ব্রংকাইটিসের প্রবণতা বাড়বে।

 • প্রাণীদের উপর প্রভাব : ওজোনস্তর ধ্বংসে অতিবেগুনি রশ্মির আগমনে প্ল্যাংকটনের মৃত্যুহার বাড়বে, যার প্রভাব পড়বে সামুদ্রিক মাছের উপর, প্রচুর সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম জীবাণু ধ্বংস হবে। প্রাণীজগতের প্রজনন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমবে। প্রাণীজগতের ভারসাম্য বিনষ্ট হবে।

 • উদ্ভিদের উপর প্রভাব : সালোকসংশ্লেষের হার বেড়ে যাওয়ায় উদ্ভিদজগতের ভারসা্য বিনষ্ট হবে, গাছের পাতা, ফুল, ফল বিনষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে, মৃত্তিকার আর্দ্রতা কমে উদ্ভিদ ধ্বংস হবে।

দু-এক কথায় উত্তর দাও 

১. কোনো নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট সময়ে বায়ুমণ্ডলের অবস্থাকে কী বলে? 

উত্তর:-  আবহাওয়া।

২. কোনো অঞ্চলের ৩০–৩৫ বছরের আবহাওয়ার গড়কে কী বলে? 

উত্তর:- জলবায়ু। 

৩. দিনের কোন্ সময়ে তাপমাত্রা সবথেকে বেশি হয়?

 উত্তর :- দুপুর ২টোর সময়।

  ৪. ফারেনহাইট স্কেলের স্ফুটনাঙ্ক কত?

 উত্তর :-২১২° F।

৫. কোন্ থার্মোমিটারের সাহায্যে দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উয়তা পরিমাপ করা হয়?

 উত্তর:- সিক্সের গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ থার্মোমিটার।

৬. মাসিক গড় উয়তা নির্ণয়ের সূত্রটি লেখো।

উত্তর :-  প্রথম দিনের + দ্বিতীয় দিনের + মাসের শেষ দিনের গড় উষ্ণতা + উত্তর মাসের মোট দিনের সংখ্যা 

৭.কোন্ তাপমণ্ডলে শীতঋতু বেশি পরিলক্ষিত হয় না?

 উত্তর:- উমণ্ডলে।

৮ কোন্ তাপমণ্ডলে উয়তা সারাবছরই 0°C-এর কম থাকে? 

উত্তর :- হিমমণ্ডলের। 

৯.গ্রিনহাউস গ্যাসের বৃদ্ধির কারণে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়াকে কী বলে?

 উত্তর : বিশ্ব উন্নায়ন ও গ্লোবাল ওয়ার্মিং।

১০ যে-কোনো দুটি গ্রিনহাউস গ্যাসের নাম লেখো। 

উত্তর :- কার্বন ডাইঅক্সাইড ও ক্লোরোফ্লুরোকার্বন। 

১১. কোন তাপমণ্ডলে সারাবছর দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য প্রায় সমান?

উত্তর: উমণ্ডল। 

১২ বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হওয়ার প্রধান পদ্ধতিগুলি কী কী?

 উত্তর:- বিকিরণ, পরিচালন এবং পরিবহণ পদ্ধতি।

 ১৩/ কোনো স্থানের দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উচ্চতার পার্থকারে কী বলে? 

উত্তর :- দৈনিক উচ্চতার প্রসর। 

১৪ মহাদেশীয় জলবায়ু অঞ্চলের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য কী? 

উত্তর:-  শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রার বিরাট ব্যবধান। 

১৫ নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর বা দক্ষিণে প্রতি ১° অক্ষাংশের তফাতে উত্তাপ কত ডিগ্রি হারে কমতে থাকে? 

উত্তর:-  ০.২৮°CT 

১৬ সূর্যরশ্মির পতনকোণের পার্থক্যে তাপের কী তফাৎ ঘটে। 

উত্তর:-  লম্বভাবে পতিত সূর্যরশ্মি তির্যকভাবে পতিত সূর্যরশ্মির চেয়ে বেশি উয় হয়। 

১৭. এল নিনো শব্দের অর্থ কী? 

উত্তর:- স্প্যানিশ শব্দ এল নিনোর অর্থ Christ Child বা বাংলায় শিশু খ্রিস্ট। 

১৮. সর্বাধিক এল নিনো প্রভাবিত অঞ্চল কোনটি ? 

উত্তর:-  কান্তীয়মণ্ডলে প্রশান্ত মহাসাগরের উভয় নিক।

 ১৯. অধঃক্ষেপণের সাথে বায়ুর উয়তার সম্পর্ক নির্ণয় করো। 

উত্তর :- অধঃক্ষেপণ বেশি হলে উয়তা কমে এবং অধঃক্ষেপণ কমলে উন্নতা বাড়ে। 

২০. সমুদ্র থেকে দূরবর্তী স্থানের জলবায়ু কী প্রকৃতির হয়? 

উত্তর:-  চরমভাবাপন্ন। 

২১. পার্থিব বিকিরণের পরিমাণ কত?

 উত্তর:-  ৪৮%। 

২২। সিঙ্গের গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ থার্মোমিটারের উদ্ভাবন কে করেন? 

উত্তর:- James Six. ২৩ পৃথিবীর অক্ষ মেরুরেখার সঙ্গে কত ডিগ্রি কোণে হেলে আছে? 

উত্তর ২৩%, । 

২৪. চিরবসন্তের শহর কাকে বলা হয়? 

উত্তর :- ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটো। 

২৫| মানচিত্রে কোন রেখার সাহায্যে উচ্চতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া 

উত্তর:-  সমোষনরেখা।

সংক্ষিপ্ত উত্তরভিত্তিক প্রশ্নোত্তর 

প্রশ্ন ১ ইনস্টলেশন (Insolation) কাকে বলে ?

উত্তর : সৌরশক্তির প্রায় ২০০ কোটি ভাগের মাত্র এক ভাগ ক্ষুদ্র তরঙ্গ হিসেবে প্রতি সেকেন্ডে ২,৯৭,০০০ কিমি বেগে পৃথিবীতে আসে, একে ইনসোলেশন বা সূর্যরশ্মির তাপীয় ফল বলে। 

প্রশ্ন । ২ | নিট বিকিরণ কাকে বলে?

 উত্তর : সূর্য থেকে আগত সকল তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বিকিরণ এবং পৃথিবী ও বায়ুমণ্ডল থেকে বহির্গামী সকল তরঙ্গের বিকিরণের যে পার্থক্য তা হল নিট বিকিরণ। দিনের বেলা নিট বিকিরণ উত্ত বলে গরম বেশি এবং রাত্রে নিট বিকিরণে ঘাটতি দেখা যায় বলে তাপ কম।

 প্রশ্ন। ৩ পার্থিব বিকিরণ (Terrestrial Radiation) কাকে বলে?

 উত্তর : পুনঃবিকিরিত শক্তি যা দীর্ঘতর তরঙ্গরূপে ভূপৃষ্ঠ থেকে রাত্রে ফিরে যায় (৪৮%) তাকে পার্থিব বিকিরণ বলে। পার্থিব বিকিরণের (৪৮%) মধ্যে ৬% যায় সরাসরি মহাশূন্যে এবং বাকি ৪২% যায় বায়ুমণ্ডলে। 

প্রশ্ন ৪ অ্যালবেডো (Albedo) কী ?* [11.9. '58] 

উত্তর : আগত সৌররশ্মির প্রায় ৩৪% মেঘপুঞ্জ, ধূলিকণা, দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে মহাশূন্যে ফিরে যায়। এই রশ্মি পৃথিবী ও বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে না, একে অ্যালবেডো বলে।

 প্রশ্ন ৫ কার্যকারী সৌর বিকিরণ (Effective Solar Radiation) কী? 

উত্তর : পৃথিবীতে আগত সৌররশ্মির যে অংশ ভূমিপৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে, তাকে বলে কার্যকারী সৌর বিকিরণ। এর শতকরা পরিমাণ ৬৬%। 

প্রশ্ন ৬ | বিকিরণ (Radiation) কাকে বলে?

 উত্তর : সূর্য থেকে আগত শক্তি পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে এবং উত্তপ্ত পৃথিবী থেকে তাপ বৃহৎ তরঙ্গরূপে বেরিয়ে যায়। এই বৃহৎ তরঙ্গের তাপ বায়ুমণ্ডলের ধূলিকণা শোষণ করে পৃথিবীকে উত্তপ্ত করে। এই পদ্ধতি হল বিকিরণ।

 প্রশ্ন ৭ পরিচলন পদ্ধতি (Convection) কাকে বলে? 

উত্তর : উন্নতার প্রভাবে ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ু উত্তপ্ত হয়ে প্রসারিত ও হালকা হয়ে উপরে উঠে যায় এবং অপেক্ষাকৃত শীতল ও ভারী বায়ু নীচের দিকে নামতে থাকে। পরবর্তীকালে সেগুলিও উত্তপ্ত হয়ে উপরে উঠতে থাকে। এইভাবে বায়ুর উল্লম্ব সঞ্চালন এবং তার প্রভাবে বায়ুর উত্তপ্ত হওয়ার পদ্ধতি হল পরিচলন।

প্রশ্ন ৮ পরিবহণ পদ্ধতি (Conduction) কাকে বলে?

 উত্তর : যে পদ্ধতিতে দুটি বস্তু পরস্পর সংলগ্ন অবস্থায় থাকলে উয় বস্তু থেকে শীতল বস্তুতে তাপ সঞ্চালিত হয়, তাকে পরিবহণ পদ্ধতি বলে।

প্রশ্ন : ৯. ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য উন্নতা (Sensible temperature) কাকে বলে ? 

উত্তর : যে উন্নতা ও শীতলতা মানবশরীরের ত্বক অনুভব করতে পারে তাকে বলে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য উন্নতা। 

প্রশ্ন ১০ | সিক্সের গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ঠ থার্মোমিটার কোন্ কাজে ব্যবহৃত হয়? 

উত্তর : সিক্সের গরিষ্ঠ ও লঘিষ্ট থার্মোমিটার-এর সাহায্যে দিনের (২৪ ঘণ্টা) সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উয়তা নথিভুক্ত করা হয়। James Six, 1782 খ্রিস্টাব্দে এই যন্ত্রটির উদ্ভাবন ঘটান। 

প্রশ্ন ১১ বায়ুর উন্নতা কোন্ কোন্ এককে মাপা হয়?

 উত্তর : বায়ুর উন্নতা (i) সেলসিয়াস স্কেল (°C), (ii) ফারেনহাইট স্কেল (°F) ও (iii) রোপার স্কেল (R)-এ পরিমাপ করা হয়। 

প্রশ্ন ১২| বার্ষিক গড় উন্নতা (Annual Mean Temperature) কাকে বলে?

 উত্তর : কোনো নির্দিষ্ট স্থানের প্রতি মাসের গড় উন্নতা যোগ করে ১২ দিয়ে ভাগ করলে পাওয়া যায় বার্ষিক গড় উন 

১৩| লীনতাপ (Latent Heat) কী? উত্তর : কোনো বস্তু বা পদার্থের অবস্থার পরিবর্তনের সময় ওই বস্তু বা পদার্থ যে তাপ গ্রহণ বা বর্জন করে তাকে বলে লীনতাপ (Latent Heat)! 

প্রশ্ন ১৪| বৈপরীত্য উদ্ভুতা (Inversion of temperature) বলতে কী বোঝ? ★ [ পর্ষদ নমুনা [১৭] উত্তর : সাধারণ নিয়ম অনুসারে ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর উয়তা ৬.৪° সে. হারে হ্রাস পায়। কিন্তু কখনো-কখনো উচ্চতার বৃদ্ধি সঙ্গে সঙ্গে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা হ্রাস না পেয়ে বরং বেড়ে যায়। একেই বায়ুমণ্ডলের বৈপরীত্য উত্তাপ বলে।

 প্রশ্ন ১৫ : উচ্চতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার কাকে বলে?

 উত্তর : সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে ৬.৪° সে. হারে উষ্ণতা কমে, একে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার বলে।

 প্রশ্ন ১৬ | সমুদ্র অপেক্ষা স্থলভাগে উন্নতার তারতম্য বেশি কেন?

 উত্তর : প্রাকৃতিক নিয়মে স্থলভাগ (মহাদেশ) জলভাগ (সমুদ্র) অপেক্ষা দ্রুতহারে উয় হয় এবং দ্রুতহারে শীতল হয়। আবার, স্থলভাগ গঠনকারী উপাদানের বৈষম্য খুব বেশি থাকায় উয় ও শীতল হওয়ার হারে খুব বেশি পার্থক্য লক্ষ করা যায়। কিন্তু | জলভাগ বা সমুদ্র তরল পদার্থ (জল) দিয়ে গঠিত হওয়ায় এই পার্থক্য লক্ষণীয় নয়।

 প্রশ্ন ১৭ | পৃথিবীর তিনটি তাপমণ্ডলের নাম লেখো। 

উত্তর : পৃথিবীর তিনটি তাপমণ্ডলের নাম হল- (i) উয়ুমণ্ডল, (ii) নাতিশীতোয়মণ্ডল ও (iii) হিমমণ্ডল।

প্রশ্ন । ১৮ | সমোয় রেখা (Isotherm) কী ? 

[ মাপ, ১৬/ উত্তর : ভূপৃষ্ঠের সম উষ্ণতা বিশিষ্ট বিভিন্ন স্থানগুলিকে মানচিত্রে যে রেখা দিয়ে যুক্ত করা হয়, তাকে সমোয় রেখা বলা হয়। 

প্রশ্ন ১৯ | সমোয় রেখার গুরুত্ব কী? 

উত্তর : সমোয় রেখার মানচিত্রের সাহায্যে (i) ভূপৃষ্ঠের কোনো স্থানের উয়তার বণ্টন সম্বন্ধে ধারণা করা যায়। (ii) উয়তা কোন্‌দিকে বাড়ছে বা কমছে এবং তার পরিবর্তনের হার সম্পর্কে জানা যায়। 

প্রশ্ন | ২০ | তাপবিষুব রেখা কী? 

উত্তর : কোনো নির্দিষ্ট দিনে প্রতিটি দ্রাঘিমার সর্বোচ্চ উয়তাকে রেখা দিয়ে যোগ করে প্রাপ্ত রেখা হল তাপবিষুব রেখা। এই রেখা নিরক্ষরেখার নিকটে অবস্থান করলেও সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সাথে সাথে স্থান পরিবর্তন করে। 

প্রশ্ন ২১ | গ্রিনহাউস প্রভাব (Green house effect) কী ? 

উত্তর : যে পদ্ধতিতে ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সূর্যালোক পৃথিবীপৃষ্ঠে প্রতিফলিত হওয়ার ফলে সৃষ্ট দীর্ঘ তরঙ্গ রশ্মি বায়ুমণ্ডলের কিছু গ্যাস দ্বারা শোষিত হয় এবং পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি করে তা হল গ্রিনহাউস প্রভাব।

 প্রশ্ন ২২ | প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাসগুলির নাম লেখো।

 উত্তর : প্রধান প্রধান গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি হল- (i) কার্বন ডাইঅক্সাইড (CO2), (ii) মিথেন (CH4), (iii) ক্লোরোফ্লুরোকার্বন (CFC), (iv) নাইট্রাস অক্সাইড (N2O) এবং (v) জলীয় বাষ্প।

 প্রশ্ন | ২৩ | বিশ্ব উয়ায়ন (Global warming) কাকে বলে? 

উত্তর : গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবে পৃথিবীর উয়তা ক্রমবর্ধমান হারে বেড়েই চলেছে। ফলে জলবায়ুরও পরিবর্তন হচ্ছে। এই বিশেষ উয়করণের প্রক্রিয়াকে বলে বিশ্ব উন্নায়ন। 

প্রশ্ন | ২৪ | উদাহরণ দিয়ে বোঝাও সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কাকে বলে?

 উত্তর : কোনো স্থানে ২৪ ঘণ্টায় (১ দিন) সবচেয়ে বেশি ও সবচেয় কম উয়তাকে যথাক্রমে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলা হয়। উদাহরণ—ধরা যাক কোনো একদিনের মধ্যে তাপমাত্রা সবচেয়ে বেশি হল ৩৫° সেন্টিগ্রেড। তখন তাকে বলে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ও কোনো সময় তাপমাত্রা সবথেকে কম হল ২৭° সেন্টিগ্রেড, তখন তাকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে।

 প্রশ্ন ২৫ | বৈপরীত্য উত্তাপ কোথায় কোথায় দেখা যায়? 

উত্তর : বৈপরীত্য উত্তাপ দেখা যায় পার্বত্য উপত্যকায়, বরফাবৃত মেরু ভূপৃষ্ঠে, দীর্ঘ শীতকালীন রাতে, শান্ত ও শুষ্ক বায়ুস্তরে এবং মেঘমুক্ত আকাশে। 

প্রশ্ন ২৬ | পৃথিবীর সর্বনিম্ন ও সর্বাধিক উয়তাবিশিষ্ট স্থান দুটির নাম লেখো। 

উত্তর : পৃথিবীর উয়তম স্থান হল লিবিয়ার আল আজিজিয়া (৫৮° সে.) এবং শীতলতম স্থান হল অ্যান্টার্কটিকার ভস্টর (-৮৮° সে.)। 

প্রশ্ন ২৭ | উত্তর গোলার্ধে শীতকালে স্থলভাগে সমোয় রেখাগুলি দক্ষিণে বেঁকে যায় কেন? 

উত্তর : শীতকালে উত্তর গোলার্ধে সমুদ্র অপেক্ষা স্থলভাগ অধিক শীতল থাকে বলে সমোয় রেখাগুলি শীতকালে সমুদ্র অপেক্ষা মহাদেশে কিছুটা দক্ষিণে বেঁকে অবস্থান করে।

 প্রশ্ন ২৮ | উয়তার প্রসর কাকে বলে?

 উত্তর : কোনো নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট সময়ে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উষ্মতার পার্থক্যকে উয়তার প্রসর বলে।

 প্রশ্ন| ২৯| কোনো স্থানে সর্বাধিক সূর্যালোক দুপুর ১২টায় পেলেও বায়ুমণ্ডল দুপুর ২টোয় সর্বাধিক উত্তপ্ত হয় কেন? 

উত্তর : যেসকল পদ্ধতির মাধ্যমে বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়, তার মধ্যে বিকিরণ হল সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। কোনো স্থানে আগত | সূর্যরশ্মি দুপুর ১২টায় সর্বাধিক হারে পতিত হলেও বিকিরণের হার সর্বাধিক হয় দুপুর ২টোয়। তাই বায়ুমণ্ডলও সর্বাধিক উত্তপ্ত হয় দুপুর ২টোয়।

সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্নোত্তর:

প্রশ্ন ১ তাপ বাজেট (Heat Budget) কাকে বলে ? ★ উত্তর : যে পরিমাণ আগত সৌরবিকিরণ ক্ষুদ্রতরঙ্গ রূপে পৃথিবী পৃষ্ঠ ও বায়ুমণ্ডলে পৌঁছায়, তা দীর্ঘতরঙ্গ রূপে পুনঃবিকিরিত হয়ে আবার মহাশূন্যে (space) ফিরে যায়। এর ফলে পৃথিবীতে উয়তার ভারসাম্য দেখা যায়। একেই পৃথিবীর উষ্ণতার সমতা ব তাপ বাজেট বলে। সূর্য থেকে আগত মোট শক্তিকে (২০০ কোটি ভাগের ১ ভাগ যদি আমরা ১০০% ধরি তাহলে দেখা যায় ৬৬% (১৫% বায়ুমণ্ডল ৩% মেঘ এবং ৪৮% ভূপৃষ্ঠ দ্বারা শোষিত হয়) বিভিন্ন পদ্ধতিতে বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে। এটি হল কার্যকর সৌরবিকিরণ। এর দ্বারা পৃথিবী ও বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়।আগত ১০০% সৌরশক্তির বাকি ৩৪ বিভিন্ন মাধ্যম দ্বারা (মেঘ ২৫. মহাকাশে বিচ্ছুরিত হয়ে ৬%, ভূপৃষ্ঠ প্রতি হয়ে ৩৯), প্রতিফলিত ও বিচ্ছুরিত হয়ে পুনরায় মহাশূন্যে ফিরে যায়। ইহা বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করতে পারে না বলে, এটি হল নিষ্ক্রিয় সৌরতাপ। একে বলে পৃথিবীর অ্যালবেডো (Albedo)। এইভাবেই তাপ বাজেটের হিসাবনিকাশ করা হয়ে থাকে। 

প্রশ্ন ২ | কার্যকর সৌর বিকিরণ ও অ্যালবেডো বলতে কী বোঝ? ★

 উত্তর : কার্যকর সৌর বিকিরণ সূর্য থেকে আগত মোট শক্তিকে (২০০ কোটি ভাগের ১ ভাগ) যদি আমরা ১০০ শতাংশ ধরি তবে দেখা যাবে এর ৬৬ শতাংশ [১৫% বায়ুমণ্ডল, ৩% মেঘ, ৪৮% ভূপৃষ্ঠের দ্বারা শোভিত হয়। বিভিন্ন পদ্ধতিতে বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে। একেই কার্যকর সৌর বিকিরণ বলে। 

• অ্যালবেডো আগত সৌরশক্তির বাকি ৩৪ ভাগ বিভিন্ন মাধ্যম যারা (মেঘের দ্বারা ২৫%, মহাকাশে বিচ্ছুরিত হয়ে ৬%, ভূপৃষ্ঠ দ্বারা প্রতিফলিত হয়ে ৩%) প্রতিফলিত ও বিচ্ছুরিত হয়ে পুনরায় মহাশূন্যে ফিরে যায়। ইহা বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করতে পারে না। একেই পৃথিবীর অ্যালবেডো (Albedo) বলে। কার্যকর সৌরবিকিরণ ও অ্যালবেডো 

প্রশ্ন।৩  অক্ষাংশ অনুসারে বায়ুমণ্ডলের উয়তার কী ধরনের পরিবর্তন ঘটে? 

উত্তর : পৃথিবীর আকৃতি অভিগত গোলকের মতো; ফলে সূর্যরশ্মি পৃথিবীর মাঝবরাবর (নিরক্ষীয় অঞ্চলে) লম্বভাবে পতিত হয়। অক্ষাংশ যত বাড়ে সূর্যরশ্মির পতনকোণের তির্যকতা বাড়ে। লম্বভাবে পতিত রশ্মির সূর্যতাপের পরিমাণ বেশি, তার বায়ুমণ্ডলে উন্নতার পরিমাণ বাড়ে। অপরপক্ষে ক্রান্তীয় অঞ্চলে বছরে দু-দিন সূর্যরশ্মি পুরোপুরি লম্বভাবে পড়ে ফলে উন্নতা তুলনামূলক কম হয়। ক্রান্তীয় অঞ্চল সূর্যের লম্বরশ্মি পতনের শেষ সীমা; এরপর কোথাও লম্বভাবে পড়ে না তির্যকভাবে পতিত হয় সুতরাং গরমের পরিমাণ কমতে থাকে।

 প্রশ্ন ৪ | দৈনিক উয়তার প্রসর (Duninal Range of Temperature) কাকে বলে?

 উত্তর : কোনো স্থানের দিনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন উয়তা পার্থক্য হল – দৈনিক উতার প্রসর। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, জুন মাসের কোনো ১ দিনে তাপমাত্রা ধরা হল, সর্বোচ্চ ৩৭° সে. এবং সর্বনিম্ন হল ২৯সে.। এইক্ষেত্রে, তাপমাত্রার দৈনিক প্রসর হল ৩ মে - ২৯° সে. = ৮ সে.।

প্রশ্ন ৫. উচ্চস্থান শীতল হয় কেন? অথবা, উচ্চতা বাড়লে উন্নতা কমে যায় কেন? অথবা, ট্রপোস্ফিয়ারে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে (মাপ '১৮) উষ্ণতা হ্রাস পায় কেন ? 

উত্তর : উচ্চস্থান শীতল হয় কারণ - (i) উচ্চতা যত বাড়ে, বিকিরণ পদ্ধতির প্রভাব তত কমে। (ii) উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধূলিকণার জলীয় বাষ্প ও অন্যান্য উপাদান কমতে থাকে বলে তাপশোষণ ও সংরক্ষণ কম। (iii) ঊর্ধ্বাকাশে বায়ুর চাপ কম বলে বায়ু হালকা ও পাতলা হয়, যা দ্রুত তাপ বিকিরণ করে শীতল হয়। 6000 4000 -2000 F 25 a 

প্রশ্ন ৬ | কী কী কারণে বায়ুমণ্ডলে উষ্ণতার বৈপরীত্য ঘটে? 

উত্তর : বায়ুমণ্ডলে উন্নতার বৈপরীত্যর কারণ হল- (i) নাতিশীতোষ্ব অঞ্চলের পার্বত্য উপত্যকায় উচ্চ অংশের শীতল ও ভারী বায়ু ঢাল বেয়ে নেমে আসে (ক্যাটাবেটিক বায়ু) এবং উপত্যকার নিম্নাংশের অপেক্ষাকৃত উঁচু বায়ু উপরে ওঠে। এই অবস্থায় উপত্যকার নিম্নাংশে উয়তা কমে যায় এবং উপরের দিকে উয়তা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। (ii) অধিক উচ্চতায় ঘন ও শুষ্ক বায়ুর অবনমন ঘটলে উচ্চতা বেড়ে গিয়ে উচ্চতার বৈপরীত্য শান্ত বায়ু 3° .. -1° ঘটায়। (iii) শীতকালে মহাদেশের কোনো কোনো স্থান অতিদ্রুত । হারে তাপ বিকিরণে শীতল হয়। ফলে ওই অঞ্চলের ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন 1 অঞ্চলও শীতল হয়। কিন্তু উপরের বায়ু অত দ্রুত শীতল হয় না। বলে উপরে উদ্ভূতা কিছুটা বেশি থাকে। এই প্রক্রিয়া রাতের বেলা হয় কিন্তু সাময়িক। (iv) পরস্পর বিপরীত দিক থেকে আগত উষু ও শীতল বায়ুর সম্মিলনে শীতল বায়ুর ঢাল বরাবর উষুবায়ু উঠে পড়লে সীমান্ত বরাবর বৈপরীত্য উদ্ভূতা ঘটে।

 প্রশ্ন। ৭ বৈপরীত্য উয়তার প্রভাবে কী কী বায়ুমণ্ডলীয় আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে? উত্তর : বৈপরীত্য উন্নতার প্রভাবে সাধারণত - (1) পার্বত্য উপত্যকায় শান্ত আবহাওয়া দেখতে পাওয়া যায়, 

(ii) ভোরবেলায় বৈপরীতা উত্তাপের জন্য উপতাকাগুলি মেঘে ঢেকে যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর উন্নতা বাড়লে উপত্যকা গুলি মেঘমুক্ত হয়।

 (iii) শীতল বায়ুর উপর উয় বায়ু উঠলে কুয়াশা সৃষ্টি হয় এবং সীমান্ত অঞ্চলে ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়। এর ফলে মধ্য অক্ষাংশে তুহিন। সৃষ্টি হয়।

 (iv) নাতিশীতোর অঞ্চলে উপত্যকার মধ্যভাগে চাষবাস হয়, জনবসতি গড়ে ওঠে। 

প্রশ্ন ৮। শিলিগুড়ি অপেক্ষা দার্জিলিং বা নিমি অপেক্ষা সিমলা শীতল হয় কেন? *

 উত্তর:-  আমরা জানি উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে উন্নতা ৬.৪ সে./কিমি হারে হ্রাস পায়। শিলিগুড়ি প্রায় সমুদ্রপৃষ্ঠে অবস্থিত হলেও দার্জিলিং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুতে অবস্থিত। আবার দিল্লি সমুদ্রপৃষ্ঠের নিকটে অবস্থিত হলেও সিমলা অনেক উঁচুতে অবস্থিত। অধিক উচ্চতায় অবস্থানের কারণে শিলিগুড়ি অপেক্ষা দার্জিলিং এবং দিল্লি অপেক্ষা সিমলায় সারাবছর উষ্মতা কম থাকে। 

প্রশ্ন। ৯ পুরী বা মুম্বাই অপেক্ষা দিল্লির জলবায়ু চরম হয়। কেন? 

উত্তর : মুম্বাই, পুরী প্রভৃতি স্থান সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত। উপকূল বরাবর ২৪ ঘণ্টায় বায়ুপ্রবাহের কারণে (দিনের বেলায় সমুদ্র থেকে স্থলবাগের দিকে সমুদ্রবায়ু এবং রাতের বেলায় স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে স্থলবায়ু) উচ্চতা সারাবছর সমভাবাপন্ন থাকে, অর্থাৎ বার্ষিক উয়তার প্রসার খুব বেশি হয় না। পক্ষান্তরে দিল্লি সমুদ্র থেকে দূরবর্তী স্থানে অবস্থানের কারণে সমুদ্রবায়ুর প্রভাব এখানে থাকে না বললেই চলে। তাই উয়তায় এখানে চরমভাব লক্ষ করা যায়। অর্থাৎ উদ্বৃতার প্রসার এখানে খুব বেশি হয়। তাই পুরী ও মুম্বাই অপেক্ষা দিল্লির জলবায়ু চরম প্রকৃতির।

 প্রশ্ন ১০ উচ্চতা বাড়লে বায়ুর উন্নতা হ্রাস পায়। -কেন ব্যাখ্যা করো ? 

উত্তর : বায়ুমণ্ডলীয় নিম্নস্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে উদ্ভুতা ক্রমবর্ধমান হারে কমতে থাকে; হিসাব অনুসারে প্রতি ১০০০ মিটারে ৬.৪° সেলসিয়াস হারে কমে। কারণ- (ক) সূর্যরশ্মি প্রথমে ভূপৃষ্ঠে এসে পৌঁছোয়, ভূপৃষ্ঠ উত্তপ্ত করে, ভূপৃষ্ঠ থেকে তাপগ্রহণ করে বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হয়। (খ) ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুস্তর ঘন, যত ওপরে যাওয়া যায় বায়ুস্তর হালকা হয় মন বায়ুর উত্তাপ শোষণ ক্ষমতা বেশি। (গ) ভূপৃষ্ঠের নিকটবর্তী স্থানের বায়ুর চাপ বেশি; ওপরের পাতলা হালকা বায়ুস্তর তাপের বিকিরণ করে শীতল হয়। (খ) উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে গ্যাসীয় উপাদান, ধূলিকণা, জলকণার পরিমাণ কমতে থাকে, ফলে ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপ এবং সূর্য থেকে আসা তাপ শোষণ কম হয়। 

প্রশ্ন ১১ | মহাদেশের অভ্যন্তরে জলবায়ু চরম কেন?

 উত্তর : সমুদ্র থেকে দূরে অবস্থিত মহাদেশের ভিতরে সমুদ্র বায়ু ও স্থল বায়ুর প্রভাব ততটা পড়ে না বলে চরমভাবাপন্ন . বায়ু দেখা যায়, অর্থাৎ এখানে ঠাণ্ডা ও গরম উভয়ই খুব বেশি হয়। এই ধরনের জলবায়ুকে মহাদেশীয় জলবায়ু বলে। শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রার বিরাট ব্যবধান হল মহাদেশীয় জলবায়ুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। •

 উদাহরণ : মধ্য এশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যভাগ মহাদেশীয় জলবায়ুর অন্তর্গত। 

প্রশ্ন ১২। শীতকালে মেঘাচ্ছন্ন অপেক্ষা মেঘমুক্ত রাত্রি অধিক শীতল হয় কেন।

 উত্তর : মেঘের আবরণ দিনের বেলা সূর্যরশ্মিকে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছোতে বাধা দেয় এবং রাত্রিবেলা ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকিরিত তাপকে পৃথিবীর আবহমণ্ডলের বাইরে পৌঁছোতে দেয় না। এজন্য মেঘাচ্ছন্ন রাত্রিতে ভূপৃষ্ঠ যে তাপ বিকিরণ করে তা মেঘের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং খুব বেশি উপরে না উঠতে পেরে গ্রিনহাউস এফেক্ট প্রক্রিয়ায় তা বায়ুমণ্ডলের নীচের স্তরকে উত্তপ্ত করে। এর ফলে মেঘাচ্ছন্ন রাত্রি উয় হয়। অন্যদিকে, মেঘমুক্ত রাত্রিতে ভূপৃষ্ঠ থেকে বিকীর্ণ তাপ পৃথিবীর আবহমণ্ডলের বাইরে চলে যেতে পারে, তাই মেঘমুক্ত রাত্রি মেঘাচ্ছন্ন রাতের তুলনায় শীতল হয়।

 প্রশ্ন । ১৩ | শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং-এর তাপমাত্রা কম কেন? 

 উত্তর : স্বাভাবিক অবস্থায় উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা হ্রাস পায়। বায়ুমণ্ডলের উয়তা হ্রাসের হার হল প্রতি ১ কিলোমিটারে ৬.৪° সেলসিয়াস। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিঙের দূরত্ব বেশি নয়, কিন্তু যেহেতু দার্জিলিং-এর উচ্চতা শিলিগুড়ির তুলনায় অনেক বেশি সেই হেতু দার্জিলিং-এর তাপমাত্রা সবসময়েই শিলিগুড়ির তাপমাত্রার তুলনায় 1 অনেক কম হয়। । 

প্রশ্ন | ১৪ | লম্বভাবে পতিত সূর্যরশ্মির তুলনায় তির্যকভাবে পতিত সূর্যরশ্মিতে উত্তাপের পরিমাণ কম হয় কেন ? 

উত্তর : (ক) তির্যকভাবে পতিত সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পতিত সূর্যরশ্মির তুলনায় অনেক বেশি পথ অতিক্রম করে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছোয় ০ এবং বেশি স্থানজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে তির্যকভাবে পতিত সূর্যরশ্মিতে উত্তাপের পরিমাণ কম হয়।কিন্তু (খ) লম্বভাবে পতিত রশ্মি অক্ষোকৃত কম পথ অতি করে ভূতরে পৌঁছোয় এবং অপেক্ষাকৃত কম পড়ে। ফলে লম্বভাবে পতিত সূর্যরশ্মিতে উত্তাপের পরিমাণ বেশি ।

প্রশ্ন | ১৫ | দিনের বিভিন্ন সময়ে ভুপৃষ্ঠে তাপের তারতম্য হয়। কেন?

 উত্তর : সকালে এবং বিকালে কোনো স্থান থেকে সূর্য অনেক দূরে থাকে বলে- (১) সূর্যরশ্মি সকাল ও বিকালবেলা ভূপৃষ্ঠের সেই স্থানে তুলনামূলকভাবে বেশি তির্যকভাবে পড়ে। (২) সূর্যরশ্মি বেশি বায়ুস্তর ভেদ করে আসে এবং (৩) বেশি স্থানজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে এজন্য সকাল এবং বিকালে আমরা সূর্য থেকে কম তাপ পাই। অন্যদিকে, (১) দুপুরে সূর্যরশ্মি পৃথিবীপৃষ্ঠের কোনো স্থানে লম্বভাবে পড়ে, (২) অল্প বায়ুস্তর ভেদ করে আসে এবং (৩) অল্প স্থানজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বলে দুপুরবেলা আমরা তুলনামূলকভাবে বেশি উত্তাপ পাই। দুপুরে তুলনামূলকভাবে বেশি তাপ পাওয়ার আরও একটি প্রধান কারণ হল যে, বেলা ২টো পর্যন্ত ভূপৃষ্ঠের তাপ ক্রমশ বাড়তে থাকে, কিন্তু এই সময়ের পর থেকে ভূপৃষ্ঠ যে পরিমাণ তাপ গ্রহণ করে সেই পরিমাণ তাপই বিকিরণ করে বলে সম্ভিত তাপ তখন আর বাড়ে না। এজন্য কোনো স্থানে বেলা ২টোয় দিনের মধ্যে সর্বাধিক তাপ অনুভূত হয়। 

প্রশ্ন ১৬ দিনের বেলায় সমুদ্র থেকে স্থলভাগের দিকে বাতাস বয়।'- কেন ? 

 উত্তর : সাধারণত দিনের বেলায় সমুদ্র থেকে স্থলভাগের দিবে প্রবাহিত বায়ুকে সমুদ্রবায়ু বলে। শীতল সমুদ্র থেকে শীতল বায়ু উত্তপ্ত ভূমির দিকে যাচ্ছে নীল সমুদ্র সমুদ্র বায়ু সমুদ্রবায়ুর প্রবাহের কারণ : (১) সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলে দিনের বেলায় স্থলভাগ জলভাগের তুলনায় বেশি গরম হয়ে পড়ে। গরম স্থলভাগের সংস্পর্শে এসে স্থলভাগসংলগ্ন বায়ু ও গরম এবং হালকা হয়ে উপরে উঠে যেতে থাকে, ফলে সেখানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। স্থলভাগের তুলনায় সমুদ্রের জলভাগ অপেক্ষাকৃত কম উত্তপ্ত হওয়ায় সেখানে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয়। স্থলভাগ ও জলভাগের চাপের বায়ুচাপের তারতম্যের ফলে সমুদ্রসংলোগ্ন ঠান্ডা ও উচ্চচাপের বায়ু তখন উপকূলের উত্তপ্ত স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়ে আসতে থাকে। সমুদ্র থেকে প্রবাহিত হওয়ায় এই বায়ুকে সমুদ্রবায়ু বলে। (২) সমুদ্রবায়ু সাধারণত দিনের বেলায় প্রবাহিত হলেও দুপুরবেলায় সর্বাধিক বেগে প্রবাহিত হয়।

 প্রশ্ন ১ ৭| সমোরেখাগুলি সমুদ্রে পরস্পর সমান্তরাল কিন্তু মহাদেশে এঁকেবেঁকে অবস্থান করে কারণ ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর : সমূদ্রভাগ সমाকৃতি (Homogeneous) অঞ্চল হওয়ায় উন্নতার বণ্টনে তেমন বৈচিত্র্য ঘটে না। সাধারণ নিয়মে অক্ষাংশ পরিবর্তনে উচ্চতার পরিবর্তন ঘটে। কিন্তু স্থলভাগে উচ্চতা, ভূমির ঢাল, বায়ুপ্রবাহ মৃত্তিকার পার্থক্য, বনভূমির বণ্টন প্রকৃতির তারতম্যজনিত কারণে উচ্চতার আঞ্চলিক বৈষম্য অত্যন্ত প্রকট। তাই সমুদ্রে সমোয় রেখাগুলি একে অপরের সমান্তরালে বা অক্ষরেখার সমান্তরালে অবস্থান করলেও স্থলভাগে বা মহাদেশে সমোয় রেখাগুলি একে অপরের সমান্তরালে অবস্থান করে না। 

প্রশ্ন ১৮ 'পার্বত্য অঞ্চলে অধিবাসীরা উপত্যকা ছেড়ে পাহাড়ের ঢালে বসবাস করে। -কেন ? 

উত্তর : উয়তার স্বাভাবিক হ্রাস হার অনুসারে প্রতি ১০০০ | মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে ১° সেলসিয়াস হারে উয়তা কমে। পার্বত্য অঞ্চলে মাঝে মাঝে এর উচ্চতা ব্যতিক্রমও ঘটে অর্থাৎ উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে উন্নতা বেড়ে যায়। একে বলে বৈপরীত্য উত্তাপ। 3,00 শীতল বা ০° সে. রাতের বেলায় ১° সে. উ বা ২° সে. শাস্ত বায়ু শীতল বায়ুতে পূর্ণ বৈপরীত্য উত্তপ তাপ বিকিরণ করে উঁচু পর্বতের ঢাল খুব ঠান্ডা হয়ে পড়ে; বাতাস শীতল ও ভারী হয়। মাধ্যাকর্ষণের প্রভাবে তা উচ্চ পর্বতগাত্রের ঢাল বেয়ে নেমে আসে। উপত্যকার নীচের অংশের উয়তা কমিয়ে দেয়। পর্বতগাত্র কিন্তু তখনও উষ্ম থাকে। 

প্রশ্ন ১৯/ এল নিনো ও লা নিনা বলতে কী বোঝ ?* 802 

উত্তর : সাধারণ অবস্থায় প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বে পেরু, ইকুয়েডর উপকূল বরাবর হামবোল্ড স্রোত আসে। কোনো কোনো ডারউইন নিরক্ষরেখা এল নিনো তাহিতি বছর এই অঞ্চলে উত্তর দিক থেকে গরমজলের স্রোত (এল নিনো স্রোত) এসে অঞ্চলটিকে ঢেকে ফেলে উচ্চতা বাড়িয়ে দেয়। ফলেপ্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বে হয় নিম্নচাপ এবং পশ্চিমে উচ্চচাপ। এই অবস্থায় পেরু, ইকুয়েডরে প্রবল বৃষ্টি ও বন্যা দেখা দেয় এবং পশ্চিমে অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় হয় খরা। এই অবস্থা হল। এল নিনো (অর্থ "শিশু খ্রিস্ট')। কোনো কোনো বছর পেরু, ইকুয়েডর উপকূলের উয়তা সাধারণ অবস্থার থেকে অনেকটা কমে যায়। এই সময়ে নিরক্ষরেখা বরাবর প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বে হয় উচ্চচাপ এবং পশ্চিমে নিম্নচাপ। এই অবস্থায় পেরু, ইকুয়েডর অঞ্চলে হয় খরা এবং পশ্চিমে অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় হয় বন্যা। এই অবস্থা হল লা নিনা (অর্থ 'ছোট বালিকা)। যে বছর সাধারণ অবস্থা বিরাজ করে তা হল লা (অর্থ 'কিছুই নয়”)। এল নিনো বছরে আমাদের দেশে খরা এবং লা নিনা বছরে বন্যা দেখা দেয়। ওয়াকার চ নিরক্ষরেখা ডারউইন উন্নতর সমুদ্র শীতল স 

প্রশ্ন ২০. এল নিনো ও লা নিনার প্রভাব ব্যাখ্যা করো।

 উত্তর : এল নিনো ও লা নিনার প্রভাব : এলনিনোর প্রভাবে (১) দক্ষিণ পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পেরু, চিনি ও ইকুয়েডর-এ বজ্রপাতসহ ঝড়বৃষ্টি ও বন্যা হয়। (২) উত্তর আমেরিকার উত্তর-পশ্চিম অংশ ও কানাডায় শীতের প্রকোপ কমে। (৩) দক্ষিণ-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয় যার প্রভাবে পূর্ব অস্ট্রেলিয়া, নিউগিনি, ফিলিপাইনস, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ ও ভারতে গ্রীষ্মকালে প্রবল তাপপ্রবাহ, অনাবৃষ্টি, খরা ইত্যাদির প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। (৪) যে বছর এল নিনো প্রবাহিত হয় সেই বছর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ুর (দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু) স্বাভাবিক প্রবাহ উচ্চ স্তরের বায়ুপ্রবাহ বায়ুপ্রবাহ বায়ুপ্রবাহ। ইপৃষ্ঠা বায়ুপ্রবাহ অস্ট্রেলিয়া দঃ আমেরিকা কান্তি রেখা, এল নিনো ) উপ্রোত এল নিনো পর্যায়ে বায়ুর সঞ্চালন ব্যাহত হয় এবং কম বৃষ্টিপাতের ফলে খরা পরিস্থিতির সৃষ্টি। হয়। অন্যদিকে লা নিনা অবস্থায় জেট প্রবাহ শক্তিশালী হয়ে, এই অঞ্চলে (দক্ষিণ এশিয়া) অত্যধিক মৌসুমি বৃষ্টিপাত ও অন্যার সৃষ্টি করে। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে যে প্রশান্ত মহাসাগরে তৈরি হওয়া এল নিনো (সমুদ্রের উপরিতলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির অবস্থা) এবং লা নিনা (সমুদ্রের উপরিতলের তাপমাত্রা হ্রাসের অবস্থা)-ই এখন বিশ্বের আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করছে, তাই আবহাওয়ার স্থিতাবস্থা নেই।

 প্রশ্ন | ২১| উয়তার তারতম্যে বায়ুচাপের তারতম্য ঘটে কেন: 

উত্তর : উষ্ণতার বৃদ্ধিতে বায়ু প্রসারিত হয় এবং আয়তনে বেড়ে যায়। আয়তনে বেড়ে গেলে বায়ুর চাপ কমে যায়—অর্থাৎ বায়ু উন্ন হলে বায়ুর চাপ কমে। নিরক্ষীয় অঞ্চলের বায়ু উয় হওয়ায় এই অঞ্চলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। একইভাবে বায়ুর উয়তা কমে গেলে বায়ু সংকুচিত হয় এবং বায়ুচাপ বেড়ে যায়। এইজন্য প্রচণ্ড ঠান্ডার জন্য দুই মেরু অঞ্চলে বায়ুচাপও বেশি হয়। সুতরাং বায়ুর উয়তার সঙ্গে বায়ুচাপের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। বায়ুর উয়তার সঙ্গে বায়ুর চাপ ‘ব্যস্তানুপাতে পরিবর্তিত হয়—অর্থাৎ উদ্বৃতা কমলে বায়ুচাপ | বাড়ে এবং উয়তা বাড়লে বায়ুচাপ কমে। অর্থাৎ অন্যান্য অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে উয়তা বায়ুচাপ 

প্রশ্ন । ২২ | সমোয় রেখার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। *

 উত্তর : ভূপৃষ্ঠের যেসব স্থানে বার্ষিক উন্নতা একইরকম থাকে, সেইসব স্থানকে কাল্পনিক রেখার সাহায্যে যুক্ত করে মানচিত্রে দেখানো। হয়। একে বলে সমোয় রেখা বা Isotherm : ISO = same, thermos = Temperature; সমোয় রেখার বিশেষ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। যেমন—(ক) সমোয় রেখাগুলি মূলত পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত থাকে ও অক্ষরেখা বরাবর পরস্পর সমান্তরালভাবে অবস্থান করে। (খ) স্থলভাগ ও জলভাগের পাশাপাশি অবস্থান থাকলে সমোয় রেখাগুলি বাঁক নেয়। (গ) গ্রীষ্মকালে রেখাগুলি স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে নিরক্ষরেখার দিকে বাঁক নেয়। (ঘ) শীতকালে এর বিপরীত পরিস্থিতি দেখা যায়।












No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();