বায়ুমণ্ডল দশম শ্রেণীর ভূগোল তৃতিয় অধ্যায় বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | class 10 geography brought question answer WB board geography suggetion 2024||
দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় পড়তে click korun
দশম শ্রেণীর ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় পড়তে click korun
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর:
প্রশ্ন দাও। ১। বায়ুমণ্ডল হওয়ার পদ্ধতিগুলির ব্যাখ্যা উত্তপ্ত
উত্তর : বায়ুমণ্ডল বিভিন্নভাবে উত্তপ্ত হয়-
(ক) প্রধান পদ্ধতি
(i) বিকিরণ (Radiation) কোনো মাধ্যম ছাড়াই যখন তাপ এক বস্তু থেকে অন্য বস্তুতে সঞ্চালিত (transmission) হয়, তখন তাকে বিকিরণ পদ্ধতি বলে। সূর্যরশ্মি ক্ষুদ্র তড়িৎ চুম্বক তরঙ্গরূপে বায়ুস্তর ভেদ করে পৃথিবীতে এসে পৌঁছোয় এবং পৃথিবীপৃষ্ঠ তাপ শোষণ করে উত্তপ্ত হয়। উত্তপ্ত ভূপৃষ্ঠ বৃহৎ তরঙ্গরূপে তাপ বিকিরণ করে বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে।
(ii) পরিবহণ (Conduction) : পাশাপাশি অণুর সংস্পর্শের মাধ্যমে উচ্চতার অপসারণ প্রক্রিয়াকে পরিবহণ বলে। এই পদ্ধতিতে বায়বীয় কণার মাধ্যমে বেশি উত্তপ্ত পদার্থ থেকে কম উত্তপ্ত পদার্থের দিকে তাপের স্যালন ঘটে।
(iii) পরিচলন (Convection): উয়তার প্রভাবে ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুর অনুগুলি উত্তপ্ত হয়ে প্রসারিত ও হালকা হয়। ফলে তা ক্রমশ উর্ধ্বমুখী হতে থাকে এবং ঊর্ধ্বাংশের অপেক্ষাকৃত শীতল ও ভারী বায়ু নীচের দিকে নামতে থাকে। পরবর্তীকালে সেগুলিও উত্তপ্ত হয়ে উপরে উঠতে থাকে। ফলে বায়ুতে উল্লম্ব সঞ্চালন ও তার প্রভাবে বায়ুমণ্ডল উত্তপ্ত হওয়ার প্রক্রিয়াকে পরিচলন পদ্ধতি বলে।
(iv) অ্যাডাভেকশন (Advection) : ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে অনুভূমিকভাবে বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে তাপের সঞ্চালন ঘটলে তাকে অ্যাডডেকশন বলে। এই পদ্ধতির মাধ্যমেই নিম্ন অক্ষাংশের উষ্ণতা উচ্চ অক্ষাংশের দিকে সঞ্চালিত হয়। ভারতের উত্তর-পশ্চিমে প্রবাহিত 'লু' অ্যাডভেকশন পদ্ধতির প্রকৃষ্ট উদাহরণ।
(খ) অপ্রধান পদ্ধতি
(v) বায়ুমণ্ডলে ধূলিকণা, জলীয় বাষ্প, কার্বন ডাইঅক্সাইড প্রভৃতি সূর্য থেকে আগত শক্তিকে সরাসরি শোষণ করে বায়ুমণ্ডলকে উত্তপ্ত করে।
(vi) বায়ুরাশি যত উপরে ওঠে ততই প্রসারিত হয় বলে উয়তা কমে এবং বায়ু যখন উপর থেকে নীচে নামে তখন সংকুচিত হয় বলে উন্নতা বাড়ে।
(vii) ভূ-অভ্যন্তরের বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় পদার্থের (ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম, রেডিয়াম প্রভৃতি) তেজস্ক্রিয়তায় উচ্চতা বৃদ্ধি পায়।
(viii) আগ্নেয়গিরি, প্রপ্রবণ প্রভৃতির মাধ্যমে নির্গত ভূ-অভ্যন্তরীণ তাপের প্রভাবে। এবং
(ix) কিছু কিছু শিলার (CaCO3) রাসায়নিক আবহবিকারে সৃষ্ট তাপের মাধ্যমে বায়ুমণ্ডল সামান্য হারে উত্তপ্ত হয়।
२ বায়ুমণ্ডলে উষ্মতার তারতম্যের কারণগুলি ক অথবা, বায়ুমণ্ডলের উন্নতা তারতম্যের প্রধান তিনটি কারণ ব্যাখ্যা |
উত্তর (মাপ: ১৭) বায়ুমণ্ডলের তাপের তারতম্যের কারণসমূহ (Causes of variation of atmospheric temperature) বায়ুমণ্ডলের এই তাপের তারতম্যের কারণগুলি হল--
(১) অক্ষাংশ (Latitude) : সৌরশক্তি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উন্নতার প্রধান উৎস হলেও, অক্ষাংশ অনুসারে সূর্যকিরণ ভূপৃষ্ঠের কোথাও লম্বভাবে এবং কোথাও তির্যকভাবে পড়ে। লম্বভাবে পতিত রশ্মির তুলনায় তির্যকভাবে পতিত রশ্মিতে উত্তাপের পরিমাণ কম হয়। নিরক্ষরেখার ওপর প্রায় সারাবছর ধরে সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে। নিরক্ষরেখা থেকে যতই উত্তর বা দক্ষিণ মেরুর দিকে যাওয়া যায় ততই সূর্যরশ্মি পৃথিবীপৃষ্ঠে তির্যকভাবে পড়তে থাকে যার ফলে নিরক্ষীয় অঞ্চল থেকে উভয় মেরুর দিকে উত্তাপ ক্রমশ কমতে থাকে। সাধারণত, নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর বা দক্ষিণে প্রতি ১° অক্ষাংশের পার্থক্যে ০.২৮° সেলসিয়াস হারে উদ্ভূতা কমে যায়।
(২) উচ্চতা (Altitude) সূর্য থেকে বিকিরণ পদ্ধতিতে আগত তাপশক্তি বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে এলেও বায়ুমণ্ডলকে সরাসরিভাবে উত্তপ্ত না-করে প্রথমে কঠিন ভূপৃষ্ঠকে উত্তপ্ত করে। পরে ওই উত্তপ্ত বায়ু ভূপৃষ্ঠের সংস্পর্শে আসলে ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুস্তর উত্তপ্ত হয় এবং esoc St SEAT OF ২০০০ নি উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রার হ্রাসবৃদ্ধি এই তাপ ধীরে ধীরে ওপরের বায়ুস্তরে সঞ্চারিত হয়। তাই নীচের বায়ুস্তরের উচ্চতা বেশি হয় এবং যত উপরে ওঠা যায় বায়ুর উষ্ণতা ততই কমতে থাকে। সাধারণত প্রতি ১ কিলোমিটার উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য ৬.৪° সেলসিয়াস হারে বায়ুমণ্ডলের উয়তা কমতে থাকে, একে "উচ্চতা হ্রাসের গড় বা Lapse rate of temperature' বলে। এই কারণেই একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও উচ্চস্থান অপেক্ষাকৃত শীতল হয়। উদাহরণ - জম্মু অপেক্ষা উঁচুতে অবস্থিত। শ্রীনগর শীতলতর।
(৩) স্থলভাগ ও জলভাগের বণ্টন (Distribution of Land & Water Bodies) : (i) পৃথিবীর কোনো স্থান সমুদ্র থেকে যত দূরে অবস্থিত হয়, সেখানে উচ্চতার ততই চরমভাব দেখা যায়, কারণ : গ্রীষ্মকালে একই অক্ষাংশে অবস্থিত মহাদেশগুলির | স্থলভাগের উপরিভাগ সমুদ্রের জলের চেয়ে অনেক বেশি উত্তপ্ত হয়। এইজন্য সমুদ্রের নিকটবর্তী অঞ্চলে আবহাওয়া কখনোই চরমভাবাপন্ন হয় না।
উদাহরণ : উত্তর গোলার্ধের ৩৫° থেকে ৬০° উত্তর অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত জার্মানি, পোল্যান্ড এবং আত্মস পর্বতের পাদদেশীয় দেশসমূহে এক বিশেষ ধরনের সামুদ্রিক জলবায়ুপরিলক্ষিত হয় একে পশ্চিম উপকূলীয় সামুদ্রিক জলবায়ু বলে শীত ও গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রার স্বল্প ব্যবধান, বেশিরভাগ সময়ে মেঘাচ্ছন্ন আকাশ এবং বাতাসে অতিরিক্ত আর্দ্রতা হল সামুদ্রিক জলবায়ুর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। অন্যদিকে, (ii) সমুদ্র থেকে পুরে অবস্থিত মহাদেশের ভিতরের দিকে সমুদ্রের প্রভাব ততটা পড়ে না বলে চরমভাবাপন্ন জলবায়ু দেখা যায়, অর্থাৎ এখানে ঠান্ডা ও গরম খুব বেশি হয়। এই ধরনের জলবায়ুকে মহাদেশীয় জলবায়ু বলে। শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রার বিরাট ব্যবধান হল মহাদেশীয় জলবায়ু অঞ্চলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। উপর মধ্য এশিয়া, কানাডা, রাশিয়া, ব্রিটিশ দ্বীপপুে পূর্বাঞ্চল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও পশ্চিম ভাগে মহাদেশীয় জলবায়ু দেখা যায়।
(৪) বায়ুপ্রবাহ (Movernment of winds) : বায়ুপ্রবাহ হল জলবায়ুর তারতম্যের অপর একটি কারণ। ক্রান্তীয়মণ্ডলে অপেক্ষাকৃত শীতল সমুদ্র বায়ুর প্রভাবে স্থলভাগের উদ্ভুতা কিছুটা হ্রাস পায়, অন্যদিকে উত্তর সমুদ্র থেকে আগত পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে নাতিশীতোয় মণ্ডলের উপকূলবর্তী স্থলভাগের উয়তা কিছুটা বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়াও বিভিন্ন দিক থেকে প্রবাহিত উরু কিংবা শীতল স্থানীয় বায়ুপ্রবাহগুলিও (চিনুক, ফন, সিরোকো, মিস্ট্রাল, খামসিন প্রভৃতি) স্থানীয়ভাবে উচ্চতার তারতম্য ঘটাতে সাহায্য করে। আর্দ্রবায়ুর প্রভাবে কোথাও বৃষ্টি হয়। আবার শুভবায়ুর প্রভাবে কোনো কোনো স্থানে আবহাওয়া শুষ্ক হয়। নিম্নচাপ বায়ু শীতল ও উচ্চচাপযুক্ত অঞ্চল থেকে ঊর্ধ্ব ও নিম্নচাপযুক্ত অঞ্চলে প্রবাহিত হয় ।
(৫) সমুদ্রস্রোত (Ocean currents) বায়ুপ্রবাহের মতো বিভিন্ন সমুদ্রস্রোতের মধ্যেও তাপমাত্রার পার্থক্য দেখা যায় যার প্রধান কারণ হল সমুদ্রস্রোতগুলির উৎস অঞ্চলের তাপমাত্রার পার্থক্য। সাধারণত কোনো অঞ্চলের কাছ দিয়ে উষুস্রোত প্রবাহিত হলে তার প্রভাবে অঞ্চলটির তাপমাত্রা বাড়ে, পক্ষান্তরে কোনো অঞ্চলের কাছ দিয়ে শীতল সমুদ্রস্রোত প্রবাহিত হলে সেই স্থানটির তাপমাত্রা কমে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ ও ল্যাব্রাডর উপকূ ল একই অক্ষাংশে অবস্থিত হলেও উর্দু উপসাগরীয় স্রোতের প্রভাবে ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের বায়ুমণ্ডল উয় হওয়ায় নিকটস্থ সমুদ্রে বরফ জমে না, কিন্তু শীতল ল্যাব্রাডর স্রোতের প্রভাবে ল্যাব্রাডর উপকূলে বরফ জমে।
(৬) ভূমির ঢাল (Inclination of the Land): ভূমির ঢালের তারতম্যের জন্য কোনো স্থানের উত্তাপের তারতম্য ঘটতে দেখা যায়, যেমন : (i) উত্তর গোলার্ধে কোনো স্থানের ভূমির ঢাল দক্ষিণমুখী অর্থাৎ নিরক্ষরেখার দিকে হলে সেখানে সূর্যকিরণ লম্বভাবে পড়ে, ফলে সেখানকার বায়ুমণ্ডল বেশি। | আবার (ii) উত্তর গোলার্ধের কোনো স্থানের ভূমির ঢাল (সাইবেরি অঞ্চল) নিরক্ষরেখার বিপরীত দিকে হলে সেখানে সূর্য তির্যকভাবে পড়ে এবং স্থানটির উচ্চতা তুলনামূলকভাবে কম হয়। | (in) দক্ষিণ গোলার্ধে কোনো স্থানের ভূমির ঢাল উত্ত - অর্থাৎ নিরক্ষরেখার দিকে হলে সেখানে বারণ লম্ব পড়ে, কারণ দক্ষিণ গোলার্ধের উত্তরমুখী কিরণ দেয়।
(৭) তে Chaal cover & propitio | মেঘ সৌরকিরণকে বহুলাংশে প্রতিফলিত করে, যার ফলে | সৌরতাপের অনেকাংশেই ভূপৃষ্ঠে এসে পৌঁছতে পারে না। এ বৃষ্টিপাতের ফলেও তাপমাত্রা কমে। বৃষ্টির জলকণা বেশ কিছুট | শোষণ করে নেয়। আমাদের দেশে গ্রীষ্মকালের তুলনায় বর্ষাকালে | সৌর-বিকিরণ কিছুই কমে না, তবুও বর্ষাকালে গ্রীষ্মকালের তুলনা তাপমাত্রা কম হওয়ার কারণ হল অধঃক্ষেপণ তথা বৃষ্টিপাত।
(৮) মানিক উদ্ভিদ (Namunal vegetation) বনভূমি দৃষ্টি কার অভ্যন্তরে জলীয় বাষ্প ধরে রাখে ফলে মাটি আর্দ্র থাকে। ভূপৃষ্ঠে বনভূমির আচ্ছাদন থাকলে বায়ুমণ্ডল দিনের বেলা সহজে গরম হতে পারে না এবং রাত্রিতে খুব তাড়াতাড়ি তাপ হারিয়ে ঠাণ্ডা হয়ে যায় না। নিরক্ষীয় অঞ্চলের গ্রহন বনভূমি সূর্যের তাপীয় ফল অনেকাংশে হ্রাস করে এবং এখানকার বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা একই অক্ষাংশে অবস্থিত বনভূমিহীন অঞ্চল থেকে অনেকাংশে কম হয়। তা ছাড়া বনভূমির বৃক্ষসমূহ প্রস্বেদন প্রক্রিয়ায় বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প সংযোজন করে বৃষ্টিপাত ঘটায় ফলে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পেলে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা স্বাভাবিক ভাবে কমে আসে।
(৯) মৃত্তিকা (Soil) : পাললিক মৃত্তিকায় কাদার ভাগ বেশি থাকায় পার্বত্য মৃত্তিকা থেকে এর জলধারণের ক্ষমতা বেশি। ফলে এই মৃত্তিকা সহজে গরম বা ঠান্ডা হয় না। পার্বত্য মৃত্তিকায় জলধারণ ক্ষমতা কম তাই এই মাটি দ্রুত উত্তপ্ত হয় এবং দ্রুত শীতলও হয়ে যায়। এইজন্য পাললিক মৃত্তিকায় গড়া সমতল ভূভাগের তুলনায় পার্বত্য অঞ্চলে দৈনিক উতার প্রসরও (Diumal range of temperature) বেশি হয়। আবার মরুভূমির দৈনিক উতার প্রসব এই একই কারণে বেশি হয়। কালো রঙের মাটি বেশি পরিমাণে সূর্যতাপ গ্রহণে সক্ষম বলে, হালকা রঙের মৃত্তিকা অঞ্চল থেকে এখানকার বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বেশি হয়।
(১০) নগরায়ণ ও শিল্পায়ন (Urbanisation & Industrialisation) শহরাঞ্চলের বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা গ্রামাঞ্চল থেকে বেশি হয়। শহরের বাড়িগুলি সাধারণত ইট, লোহা, সিমেন্ট, বালি প্রভৃতি মালমশলা দিয়ে তৈরি হয়। যাদের আপেক্ষিক তাপ কম। ফলে, দিনের বেলা শহর যতটা উত্তপ্ত হয়, গ্রাম ততটা হয় না। শহরাঞ্চলের | বায়ুমণ্ডলের উত্তাপ বৃদ্ধির আরও একটি কারণ হল কলকারখানার চিমনি থেকে নির্গত ধোঁয়া, ধূলিকণা প্রকৃতি যারা শুধুমাত্র ভালো উৎসই নয়, তারা ভূপৃষ্ঠের তাপ বিকিরণকেও প্রতিহত করে।
প্রশ্ন ৩ অক্ষাংশ ও উচ্চতা বায়ুমণ্ডলের উন্নতা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর:- অক্ষাংশ ও উচ্চতার ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের উন্নতার পরিবর্তনের কারণসমূহ -
(i) অক্ষাংশের ভিত্তিতে অবস্থান ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন বায়ুমণ্ডলের উচ্চতা নির্ভর করে কোনো স্থানে আগত সূর্যরশ্মির পরিমাণের উপর এবং আগত সূর্যরশ্মির পরিমাণের ওপর এবং আগত সূর্যরশ্মির পরিমাণ নির্ভর করে সেই স্থানের অক্ষাংশের ওপর। অক্ষাংশের পরিবর্তনের সাথে সাথে সূর্যরশ্মির পতনকোণের যেমন তারতম্য হয়, তেমনি দিনরাত্রির দৈর্ঘ্যেরও হ্রাসবৃদ্ধি ঘটে। নিরক্ষীয় অঞ্চল বরাবর সারাবছর গড় সূর্যরশ্মি লম্বভাবে, মধ্য অক্ষাংশে তির্যকভাবে ও উচ্চ অক্ষাংশে অতি তির্যকভাবে পতিত রশ্মি অপেক্ষা কম বায়ুস্তর ভেদ করে আসে এবং কম অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তাই উচ্চতা বেশি হয়। এই কারণে নিরক্ষরেখা থেকে উত্তরে ও দক্ষিণে উয়তা ক্রমশ কমতে থাকে। অতি তির্যক রশ্মি গ (*) বিভিন্ন অক্ষাংশে সূর্যরশ্মির পতনকোণ
(ii) উচ্চতার প্রভাব উদ্ধৃতার নিয়ন্ত্রণে উচ্চতাও গুরুত্বপূর্ণ। ভূমিকা পালন করে। ট্রপোস্ফিয়ারে উচ্চতাবৃদ্ধির সঙ্গে উন্নতা ৬.৪° সে./কিমি হারে হ্রাস পায়—একে 'ল্যাপস্ রেট' বলে। সাধারণভাবে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিকিরণের প্রভাব কমে, ধূলিকণার পরিমাণ কমতে থাকে এবং বায়ুর চাপও কম হয়। তাই উচ্চতা বৃদ্ধিতে উন্নতা হ্রাস পায়। এই কারণেই অধিক উচ্চ অঞ্চলের উন্নতা কম হয়। অধিক উচ্চতার কারণেই প্রায় নিরক্ষরেখা বরাবর অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও কিনিয়ার মাউন্ট কিলিমাঞ্জুারো পর্বতের ওপর সারাবছর বরফ জমে থাকে। এই কারণেই শিলিগুড়ি অপেক্ষা দার্জিলিং এবং দিল্লি অপেক্ষা সিমলার উদ্ভুতা সারাবছর কম।
প্রশ্ন। ৪। চিত্রসহ বিভিন্ন তাপমণ্ডলের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দাও। উত্তর : অক্ষরেখার নিরিখে যেসকল অঞ্চলে উয়তা মোটামুটি সমান সেগুলিকেই বলে তাপমণ্ডল। তাপমণ্ডল তিনটি—
(i) : অবস্থান নিরক্ষরেখাকে মাঝখানে রেখে উত্তরে কটক্রান্তি এবং দক্ষিণে মকরক্রান্তির মধ্যবর্তী অঞ্চল। বৈশিষ্ট্য :
(1) গড় উচ্চতা বেশি, গড়ে ২৭° সে.
(ii) এখানে শীত ঋতু অতটা পরিলক্ষিত হয় না। হলেও খুব শীতল নয়।
(ii) বাৎসরিক উন্নতার প্রসার কম। উৎপত্তির কারণ : (i) গড় সূর্যরশ্মির পতনকোণ সারাবছর বেশি (১০০-এর কাছাকাছি)। (ii) সারাবছর দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য প্রায় সমান।
(ii) নাতিশীতোয় মণ্ডল
অবস্থান:উ. গোলার্ধে কর্কটক্রান্তি রেখা থেকে সুমেরুবৃত্ত এবং ২. গোলার্ধে মকরক্রান্তি থেকে কুমেরুবৃত্ত পর্যন্ত অঞ্চল।
বৈশিষ্ট্য : (i) গড় উষ্ণতা ০°২৭° সে. (ii) নিম্ন অক্ষাংশ থেকে উচ্চ অক্ষাংশের দিকে তাপমাত্রা দ্রুতহারে কমে। (iii) বার্ষিক উচ্চতার প্রসর বেশি। (iv) ক্রান্তিরেখায় অঞ্চল হল গ্রীষ্মপ্রধান নাতিশীতোয় মণ্ডল এবং মেরুবৃত্ত রেখাবয় অঞ্চল হল শীতপ্রধান নাতিশীতোষু মণ্ডল। তাপমণ্ডল
উৎপত্তির কারণ : (i) গড় সূর্যরশ্মির পতনকোণ মধ্যম প্রকৃতির। গ্রীষ্মকালে পতনকোণ বাড়ে এবং শীতকালে কমে। (ii) দিন ও রাতের গড় দৈর্ঘ্য সারাবছর মাঝামাঝি।
(iii) হিমমণ্ডল অবস্থান: উ. গোলার্ধে সুমেরুবৃত্ত থেকে সুমেরুবিন্দু এবং গোলার্ধে কুমেরুবৃত্ত থেকে কুমেরুবিন্দু হল হিমমণ্ডল। বৈশিষ্ট্য (i) গড় উষুতা সারাবছরই 0° সে.-এর কম। (ii) দু-একটি স্থানে কদাচিৎ উচ্চতা হিমাঙ্কের উপরে ওঠে। (iii) বাৎসরিক উষ্ণতার প্রসর খুব বেশি। (iv) অঞ্চলটি বরফে ঢাকা। (v) মাঝে মাঝে অরোরা দেখা যায়।
উৎপত্তির কারণ : (1) দিন ও রাতের দৈর্ঘ্যের তারতম্য খুব বেশি। (ii) কোনো কোনো স্থানে একটানা ৬ মাস দিন ও ৬ মাস রাত বিরাজ করে। (iii) দিনের সময়কালে সূর্যরশ্মির পতনকোণ অতি তির্যক।
প্রশ্ন ৫। পৃথিবীব্যাপী বিশ্বউয়ায়নের প্রভাব ব্যাখ্যা করো। [31.99 59]
উত্তর : বিশ্ব উদ্ভাসনের প্রভাব (Effects of global warming) ক্রমবর্ধমান হারে গ্রিনহাউস গ্যাসগুলি বায়ুতে নির্গত হওয়ার ফলে বিশ্বব্যাপী উন্নতা ক্রমশ বাড়ছে। যেমন- ১৮৫০-১৯৯০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে বায়ুমণ্ডলের উচ্চতা ১০ সেন্টিগ্রেড বেড়েছে। বিজ্ঞানীদের অনুমান ২০৩০ খ্রিস্টাব্দে উচ্চতা বাড়ার হার হবে ২° সেন্টিগ্রেড। গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর সম্ভাব্য প্রভাবগুলি নীচে আলোচনা করা হল-
(১) মেরু অঞ্চলের বরফের গলন ও পার্বত্য হিমবাহের গলন Melting of polar ice caps and mountain glacier) বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে কুমের মহাদেশের গভীর পুরু বরফের স্তর এবং অন্যান্য মহাদেশীয় ও পার্বত্য হিমবাহ খুব দ্রুত গলতে থাকবে এবং বরফগলা জল সমুদ্রে যুক্ত হয়ে সমুদ্রের জলের পরিমাণকে আরও বাড়িয়ে দেবে এবং সমুদ্রজলের উচ্চতা ও লবণতার হেরফের ঘটবে, যার পরোক্ষ ফলস্বরূপ সমুদ্রস্রোতের পরিবর্তন ও অন্যান্য সামুদ্রিক পরিবেশের পরিবর্তন ঘটবে। এরফলাফল স্বরূপ— (i) স্বাভাবিক ক্ষয়চক্র ব্যাহত হবে, (ii) ভূমিরূপের পরিবর্তন ঘটবে, (iii) উপকূলবর্তী এলাকার নীচু অংশ জলমগ্ন হবে, (iv) সমুদ্রের লবণাক্ত জলের প্রভাবে মাটি অনুর্বর হয়ে পড়বে।
(২) সমুদ্রতলের উচ্চতা বৃদ্ধি (Rise of sea level) : বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে মেরু ও উঁচু পার্বত্য অঞ্চলের বরফ বেশি পরিমাণে গলবে এবং সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে। বিগত শতাব্দীতে ১.৫°C তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে সমুদ্র জলতলের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১০–১২ সেমি। বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এই হারে বিশ্ব উয়ায়ন চলতে থাকলে এই শতাব্দীর শেষে সমুদ্র জলতলের উচ্চতা ৩০–৯০ সেমি বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে সমুদ্র উপকূল অঞ্চল প্লাবিত হবে, জলাভূমি ও নীচুভূমি বিনষ্ট হবে, উপকূল অঞ্চলে ক্ষয়ের পরিমাণ বাড়বে, ম্যানগ্রোভ বনভূমি ও বন্যপ্রাণীর বিনাশ ঘটবে এবং নদীর জলের লবণতার পরিমাণ বাড়বে। এর ফলে আগামী কয়েক দশকে সিসিলি, মালদ্বীপ ও মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, বাংলাদেশের উপকূলের এক বিরাট অংশ, মিশর, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা, লুইসিয়ানা ও ক্যারোলিনা এবং ভারতের উপকূল অঞ্চল সমুদ্রে তলিয়ে যাবে।
(৩) অধঃক্ষেপণের প্রকৃতি পরিবর্তন (Change in nature of precipitation) : বায়ুমণ্ডলীয় উয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জলবায়ুগত পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী। বৃষ্টিপাতের বণ্টনে সামগ্রিক পরিবর্তন ঘটবে। উত্তর গোলার্ধের উত্তরদিকের দেশগুলিতে অতিবৃষ্টি এবং দক্ষিণদিকের দেশগুলিতে খরার প্রকোপ বাড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে।
(৪) শস্য উৎপাদনের হ্রাসবৃদ্ধি (Over and under production of crops) : তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে ঋতুগুলির সময়সীমা বৃদ্ধি পাবে, ফলে কৃষিপণ্যের উৎপাদন হ্রাস পাবে। এ ছাড়া তাপমাত্রা বাড়লে উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেসের হার বাড়ে। এই কারণে ভুট্টা, আম, জোয়ার, বাজরা প্রভৃতি ফসলের উৎপাদন বাড়লেও ধান, গম, শুট, বার্লি, সয়াবিন, তামাক, তুলো, পাট প্রভৃতি ফসলের উৎপাদন কমে যাবে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, প্রধান খাদ্যফসলগুলির বিশ্বব্যাপী উৎপাদনের হার ১০%-৭০% পর্যন্ত কমবে।
(৫) কৃষিপদ্ধতির পরিবর্তন (Change in agricultural methods) : বিশ্ব উয়ায়নের প্রভাবে জলবায়ুর পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কৃষিক্ষেত্রের স্থান পরিবর্তন ঘটবে এবং কৃষিজমির পরিমাণ ১০%-৫০% কমে যাবে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যেসব অঞ্চলে গমচাষ হত, উয়তা বৃদ্ধির ফলে সেসব অঞ্চলে গমের পরিবর্তে অন্য শস্যের চাষ হচ্ছে। তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনের ফলে প্রধান কৃষিকাজের এলাকা আরও উচ্চ অক্ষাংশের দিকে বিস্তৃত হবে। ভুট্টা, আখ, জোয়ার, বাজরার উৎপাদন বাড়লেও ধান, গম, বার্লি, ওট, সয়াবিন, তুলো, তামাকের উৎপাদন কমে যাবে।
(৬) এল নিনো ও পৃথিবীব্যাপী তার প্রভাব (EI-Nino and its | global effects) : বিশ্ব উন্নায়নের ফলে সমুদ্রের জল উর্দু হয়ে উঠলে যে নিম্নচাপ তৈরি হয় তা আয়ন বায়ুপ্রবাহকে দুর্বল করে এবং দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম উপকূলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। অন্যদিকে, পশ্চিম | প্রশান্ত মহাসাগরে স্বাভাবিকের থেকে বেশি শীতল আবহাওয়া সৃষ্টি হয়। একে এল নিনো ঘটনা বলে। এল নিনো বলতে দক্ষিণমুখী বিশেষ একটি অস্থির ও উয় সমুদ্রস্রোতকে বোঝায়, যা দক্ষিণ-পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে ১০°-৩৫° দ. অক্ষাংশ ও ৯০°- ১২০° দ্রাঘিমায় লক্ষ করা যায়। এই স্রোত প্রতি বছর ক্রিসমাসের কাছাকাছি সময় পেরু ও ইকুয়েডরের পশ্চিম উপকূল দিয়ে প্রবাহিত হয়।
D. দু-এক কথায় উত্তর দাও :
১. কোন্ যন্ত্রের সাহায্যে বায়ুচাপের পরিবর্তন মাপা যায়?
উত্তর ব্যারোগ্রাম।
২ দীর্ঘকায় উচ্চচাপ অঞ্চলকে কী বলে?
উত্তর Trough.
৩.কোন্ বায়ুকে ‘সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ুর বৃহৎ সংস্করণ' বলা হয়?
উত্তর মৌসুমি বায়ু।
৪ কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় থেকে মেরুবৃত্তপ্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে যে নিয়ত বায়ু প্রবাহিত হয় তাকে কী বলে?
উত্তর পশ্চিমা বায়ু।
৫ দিনের কোন সময়ে সমুদ্রবায়ু সর্বাধিক বেগে প্রবাহিত হয়?
উত্তর দুপুরবেলায়।
৬.উত্তর আমেরিকায় প্রবাহিত একটি উয় ও শুষ্ক স্থানীয় বায়ুর নাম লেখো।
উত্তর চিনুক।
৭. কোন্ মাসে ভারতে লু প্রবাহিত হয়?
উত্তর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ (মে-জুন)।
৮.জাপান ও চিনসাগরে সৃষ্ট বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়-এর নাম লেখো।
উত্তর টাইফুন।
৯.কোন্ স্থানীয় বায়ুকে ‘স্নো-ইটার' বা ‘তুষার ভক্ষক বলে?
উত্তর চিনুক।
১০.' ঘুর্নিবাতের চক্ষু ' কোন ধরনের ঘুর্নবাত সৃষ্টি হয় ?
উত্তর কান্তীয় ঘূর্ণিধা
১১/ কোন্ দুই মাসে বায়ুচাপের সর্বাধিক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
উত্তর জানুয়ারি ও জুলাই মাসে।
১২. ক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয়ের অবস্থান উল্লেখ করো।
উত্তর উভয় গোলার্ধে ২৫-৩৫° অক্ষাংশের মধ্যে।
১৩/ পৃথিবীর আবর্তনের প্রভাবে প্রবাহিত বায়ুর ওপর যে শক্তি কাজ করে তাকে কী বলে?
উত্তর কোরিওলিস বল ।
১৪ কার নামানুসারে ফেরেলের সূত্রের নামকরণ করা হয়?
উত্তর বিজ্ঞানী উইলিয়াম ফেরেল।
১৫ সমুদ্রপৃষ্ঠে গড় বায়ুচাপ কত?
উত্তরা ১০১৩.২৫ মিলিবার।
১৬ দুটি ক্রান্তীয় মরুভূমির নাম লেখো।
উত্তর আফ্রিকার সাহারা ও উত্তর আমেরিকার সোনেরান।
১৭ দুটি ক্যাটাবেটিক বায়ুর উদাহরণ দাও।
উত্তর বোরা ও মিস্টাল।
১৮ সিরোকো বায়ু কোথায় প্রবাহিত হয়?
উত্তর] সাহারা মরুভূমিতে।
১৯ সিরোক্কো মিশরে কী নামে পরিচিত?
উত্তর! খামসিন।
২০ উত্তর-পূর্ব ভারতে উঘ্ন গরম বাতাস কী নামে পরিচিত?
উত্তর লু
২১ পম্পাস তৃণভূমির উপর দিয়ে বাহিত শীতল বাতাসটির নাম কী? উত্তর পম্পেরো।
২২। বায়ুর দিক নির্ণয় কোন যন্ত্রে নির্ধারণ করা হয়?
উত্তর বাতপতাকা।
২৩. বায়ুচাপ কোন্ এককে মাপা হয়?
উত্তরা মিলিবার।
২৪. কোন বায়ুর কারণে সুইটজারল্যান্ডকে জলবায়ুগত মরুদ্যান বলা হয়?
উত্তর ফন।
২৫ ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় ক্যারিবিয়ান সাগরে কী নামে পরিচিত?
উত্তর হ্যারিকেন।
২৬ টুইস্টার কোন্ বায়ুর অপর নাম।
উত্তর টর্নেডো।
২৭. কোন প্রকার ঘূর্ণবাতে চক্ষু সৃষ্টি হয়?
উত্তর, ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত।
২৮ গ্রীষ্মকাল থর মরুভূমির উপর দিয়ে বাহিত গরম হাওয়ার নাম কী?
উত্তর লু।
A. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর সংক্ষেপে লেখো
প্রশ্ন ১ বায়ুচাপ (Wind pressure) কী ?
উত্তর : পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণে বায়ুমণ্ডলের গ্যাসীয় অণুগুলির অবিরাম সংঘর্ষে সমুদ্রপৃষ্ঠে প্রতি একক স্থানের ওপর যে বল প্রয়োগ করে তা হল বায়ুচাপ।
প্রশ্ন ২ মিলিবার কী ?
উত্তর : মিলিবার হল বায়ুচাপ মাপার একক। এক মিলিবার এমন একটি শক্তি, যা প্রতি বর্গসেমিতে ১০০০ ডাইন চাপ দেয়। সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় বায়ুচাপ হল ১০১৩.২৫ মিলিবার।
প্রশ্ন ৩ বায়ুচাপের ঢাল কাকে বলে?
উত্তর : সমচাপ রেখার সাথে সমকোণে উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে নির্দিষ্ট দূরত্বে বায়ুচাপের যে পার্থক্য ঘটে, তাকেই বায়ুচাপের ঢাল বলা হয়। এর অপর নাম হল বায়ুচাপের অনুভূমিক অবক্রম হার (Horizontal Pressure Gradient )। এটি মিলিবার/কিমি হারে প্রকাশ করা হয়।
প্রশ্ন ৪ সমচাপ (Isobar) রেখা কী?
উত্তর : কোনো নির্দিষ্ট সময়ে ভূপৃষ্ঠের সমচাপ যুক্ত স্থানগুলিকে মানচিত্রে যে রেখা দ্বারা যোগ করা হয়, তা হল সমচাপ রেখা।
প্রশ্ন ৫ নিরক্ষীয় শাস্তবলয় বা ডোলড্রামস্ কী? [মা.প. '১৭]
উত্তর : নিরক্ষীয় অঞ্চলের উয়-আর্দ্র বায়ু হালকা বলে সর্বদা ঊর্ধ্বগামী (বায়ুস্রোত)। ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে এখানে কোনো বায়ুপ্রবাহ ঘটে না বলে শান্ত থাকে, যা জাহাজ চলাচলের অসুবিধা ঘটাত। তাই নাবিকগণ এর নাম দেন 'ডোলড্রামস’। এটিকে 'নিরক্ষীয় অক্ষ'ও (Equatorial trough) বলা হয়।
প্রশ্ন স্থলভাগ স্থলভাগ
৬ বায়ুচাপ কক্ষ কাকে বলে ? ★ [মা.প. [১৬]
উত্তর : সমুদ্রের ওপর বায়ুচাপ বলয়গুলি যতটা স্পষ্ট মহাদেশের ওপর ততটা নয়। মহাদেশের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য বেশি বলে বলয়গুলি ভেঙে ছোটো ছোটো কোশ আকারে অবস্থান করে। এগুলিকেই বায়ুচাপ কক্ষ বলা হয়। স্থলভাগের বিস্তার যেখানে বেশি কক্ষের সংখ্যাও সেখানে বেশি।
৭ বায়ুপ্রবাহ (Winds) কাকে বলে?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে সমান্তরালভাবে উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে বায়ু চলাচলকে বায়ুপ্রবাহ বলে। ট্রেওয়ার্থার মতে, 'বায়ু হল প্রাকৃতিক শক্তি যা ভূপৃষ্ঠের বায়ুচাপের সমতা রক্ষা করছেন।
প্রশ্ন ৮| বায়ুপ্রবাহ ও বায়ুস্রোতের মধ্যে তফাৎ কী?
উত্তর : ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে সমান্তরালে বায়ুচলাচলকে বায়ুপ্রবাহ বলে। বায়ু উল্লম্বভাবে অর্থাৎ উপর থেকে নীচে বা নীচ থেকে উপরে চলাচল করলে তাকে বলা হয় বায়ুস্রোত।
প্রশ্ন ৯ ফেরেল সূত্র কী? ★★
উত্তর : পৃথিবীর আবর্তনের ফলে সৃষ্ট কোরিওলিস বলের প্রভাবে বায়ু উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে প্রবাহিত হওয়ার সময় উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে প্রবাহিত হয়। বিজ্ঞানী ফেরেল-এর নামানুসারে ইহা ফেরেলসূত্র নামে পরিচিত।
প্রশ্ন ১০ | বাইস ব্যালট সূত্র কাকে বলে? *
উত্তর : ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে ডাচ্ আবহবিদ বাইস ব্যালট, বায়ুচাপের তারতম্য ও বায়ুপ্রবাহের মধ্যে একটি সম্পর্ক নির্ধারণ করেন। তাঁর মতে উত্তর গোলার্ধে বায়ুপ্রবাহের দিকে পিছন করে দাঁড়ালে ডানদিকে উচ্চচাপ এবং বামদিকে নিম্নচাপ থাকে। দক্ষিণ গোলার্ধে-এর ঠিক বিপরীত অবস্থা হয়। একেই বলে বাইস ব্যালট সুত্র।
প্রশ্ন ১১ | নিয়ত বায়ু (Planetary wind) কাকে বলে?
উত্তর : স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়গুলির ওপর ভিত্তি করে যে বায়ুপ্রবাহসমূহ সারাবছর ধরে নিয়মিতভাবে নির্দিষ্ট পথে, নির্দিষ্ট গতিতে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে প্রবাহিত হয়, তাদেরকেই নিয়ত বায়ুপ্রবাহ বলে।
প্রশ্ন ১২। নিয়ত বায়ু ক-প্রকার ও কী কী?
উত্তর : নিয়ত বায়ু হল তিন প্রকারের। যথা- (i) আয়ন বায়ু, (ii) পশ্চিমা বায়ু এবং (iii) মেরু বায়ু।
প্রশ্ন | ১৩ | আয়ন বায়ুর অপর নাম বাণিজ্য বায়ু কেন?
উত্তর : আয়ন বায়ু একটি নির্দিষ্ট পথ বরাবর প্রবাহিত হয়। পালতোলা জাহাজের যুগে এই বায়ুর পথ ধরে বাণিজ্য হত বলে এর অপর নাম 'বাণিজ্য বায়ু।
প্রশ্ন ১৪ | ITCZ কী? **
উত্তর : ইনটার ট্রপিক্যাল কনভার্জেন্স জোন (Inter tropical convergence zone) নিরক্ষীয় অঞ্চলে উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব
প্রশ্ন ১৫ নিরক্ষীয় শান্তবলয় বা ডোলড্রামস কাকে বলে ?
উত্তর : নিরক্ষীয় অঞ্চলে সূর্যের লম্ব কিরণে বাতাস হালকা ও উয় হয়ে সারাবছর উপরের বায়ুস্তরে ঊর্ধ্বাগমন করে। এই বায়ুর কোনো পার্শ্বপ্রবাহ থাকে না তাই, ৫° –১০° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষরেখার অঞ্চল শাস্ত থাকে। একে বলে নিরক্ষীয় শাস্তবলয় বা ডোলড্রামস্।
প্রশ্ন ১৬ | গর্জনশীল চল্লিশা (Roaring Forties) বলতে কী বোঝ?
উত্তর : দক্ষিণ গোলার্ধে স্থলভাগ অপেক্ষা সমুদ্রের বিস্তার বেশি হওয়ায় পশ্চিমা বায়ু বাধাহীনভাবে প্রবলবেগে গর্জন করে প্রবাহিত হয়। প্রবল বায়ুপ্রবাহের কারণেই ৪০° দক্ষিণ অক্ষরেখা ‘গর্জনশীল চল্লিশা' নামে পরিচিত।
প্রশ্ন ১৭ | পশ্চিমা বায়ু ও প্রত্যয়ন বায়ুর মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে উভয় গোলার্ধে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে যে নিয়ত বায়ু প্রবাহিত হয় তাকে পশ্চিমা বায়ু বলে। অপরপক্ষে, নিরক্ষীয় অঞ্চলের ঊর্ধ্বমুখী বায়ু পৃথিবীর আবর্তনজনিত কারণে বিক্ষিপ্ত হয়ে কর্কটক্রান্তি ও মকরক্রান্তি উচ্চচাপ বলয় বরাবর নেমে আসে। একেই প্রত্যয়ন বায়ু বলে।
প্রশ্ন ১৮ | সাময়িক বায়ুর শ্রেণিগুলির নাম লেখো।
উত্তর : সাময়িক বায়ু হল তিন প্রকার। যথা— (i) সমুদ্র বায়ু ও স্থলবায়ু, (ii) মৌসুমি বায়ু এবং (iii) পার্বত্য ও উপত্যকা বায়ু।
প্রশ্ন ১৯ | স্থলবায়ুর থেকে সমুদ্র বায়ুর বেগ বেশি কেন?
উত্তর : সমুদ্র বায়ু দিনের বেলা প্রবাহিত হয়। সূর্যের তাপে দিনের বেলা স্থলভাগের উষ্ণতা বাড়ে। ফলে সমুদ্র ও স্থলভাগের মধ্যে বায়ুচাপের ঢাল বেশি হয়। তাই সমুদ্র বায়ুর গতিবেগও বাড়ে। রাত্রে স্থলভাগ ধীরে ধীরে শীতল হয় বলে সমুদ্র ও স্থলভাগের মধ্যে বায়ুচাপের ঢাল কম হয়। ফলে স্থল বায়ু ধীরে ধীরে প্রবাহিত হয়।
প্রশ্ন ২০ | পার্বত্য বায়ু ও ক্যাটাবেটিক বায়ুর মূল পার্থক্য কী?
উত্তর : পার্বত্য বায়ু পর্বতের উপরি অংশ থেকে দ্রুত তাপ বিকিরণে শীতল ও ভারী হয়ে পর্বতের ঢাল বরাবর নীচে নেমে আসে ও উপত্যকায় অবস্থান করে। অপর দিকে, ক্যাটাবেটিক বায়ু বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রবাহিত হয়।
প্রশ্ন ২১ | দুটি বিখ্যাত ক্যাটাবেটিক বায়ুর নাম লেখো।
উত্তর : দুটি বিখ্যাত ক্যাটাবেটিক বায়ু হল বোরা ও মিস্টাল।
প্রশ্ন ২২ | স্থানীয় বায়ুর (Local wind) সংজ্ঞা দাও। **
উত্তর : স্থানীয়ভাবে বায়ুচাপের তারতম্য ঘটলে যে বায়ুপ্রবাহ ঘটে তাকে স্থানীয় বায়ু বলে। এর প্রবাহ স্থানীয়ভাবেই হয়। যেমন—লু, বোৱা, মিস্টাল ইত্যাদি।
প্রশ্ন ২৫ বায়ুগত মরুদ্যান (Climatic Oasis) কাকে বলে?
উত্তর : ইউরোপের আপ্পস পর্বতের উত্তর চালে প্রবাহিত যন বায়ুপ্রবাহের ফলে সুইটজারল্যান্ডে শীতকালের আবহাওয়া মনোরম থাকে বলে, সুইটজারল্যান্ডকে জলবায়ুগত মরূদ্যান বলে।
প্রশ্ন ২৪ | চিনুক ক**
উত্তর : রকি পার্বত্য অঞ্চলের পূর্বঢালে প্রেইরি অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবাহিত উর স্থানীয় বায়ু হল চিনুক। এর অপর নাম 'তুষারভক্ষক'।
প্রশ্ন ২৫ চিনুক বায়ু কেন 'তুষার ভক্ষক' নামে পরিচিত?
উত্তর : শীতের শেষে প্রেইরি অঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবাহিত স্থানীয় উর বায়ু হল চিনুক। এই উয়বায়ুর প্রভাবে প্রেইরি অঞ্চলের বরফ গলে বলেই চিনুক বায়ুর অপর নাম 'তুষার তক্ষক'।
প্রশ্ন ২৬ | ঘূর্ণবাত (Cyclone) কাকে বলে? *
উত্তর : স্বল্প পরিসর স্থানে হঠাৎ বায়ুচাপ কমে গেলে সেই অঞ্চলের বায়ু ঊর্ধ্বমুখী হয় এবং চাপের সমতা রক্ষার জন্য পার্শ্ববর্তী উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে বায়ু চক্রাকারে নিম্নচাপ কেন্দ্রে পর্যায়ক্রমে প্রবেশ করে উষু ও হালকা হয়ে কুণ্ডলী পাকিয়ে উপরে ওঠে। এরূপ নিম্নচাপ বিশিষ্ট কেন্দ্রমুখী প্রবল বায়ুপ্রবাহ হল ঘূর্ণবাত।
প্রশ্ন ২৭ | ঘূর্ণবাতের চক্ষু কাকে বলে?
উত্তর : ক্রান্তীয় অঞ্চলে অতি বিধ্বংসী ঝড়ের (যেমন- হ্যারিকেন, টাইফুন) কেন্দ্রে উয়তা বেশি হয়, মেঘ প্রায় থাকে না বললেই চলে এবং বায়ুর গতিবেগও খুব কম। ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের এই কেন্দ্রকে ঘূর্ণবাতের চক্ষু বলে। ঘূর্ণবাতের চক্ষুর পরিধি সর্বাধিক ৮০ কিমি পর্যন্ত হতে পারে।
প্রশ্ন ২৮ কান্তীয় ডিপ্রেসন কী?
উত্তর : ক্রান্তীয়মণ্ডলে কম শক্তিশালী ও দুর্বল ঘূর্ণবাত হল ক্রান্তীয় ডিপ্রেসন। এর প্রভাবে প্রবল বৃষ্টি হয়, কিন্তু ঝড় হয় না।
প্রশ্ন ২৯| টর্নেডো (Tornado) ? **
উত্তর : টর্নেডো হল পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা দ্রুতগামী অতি বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়। ইহা স্থলভাগের ঘূর্ণিঝড়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি টুইস্টার (Twister) নামে পরিচিত।
প্রশ্ন ৩০ | ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত কি?
উত্তর : কান্তীয়মণ্ডলে অধিক উন্নতায় বায়ু ঊর্ধ্বমুখী হলে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়, ফলে চারদিকের বায়ু চক্রাকারে প্রবলবেগে ওই নিম্নচাপে প্রবেশ করে ঊর্ধ্বমুখী হয়, একে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত বলে।
E |৩ ১ | নাতিশীতোর ঘূর্ণবাত কী?
উত্তর : নাতিশীতোয় মণ্ডলে বিপরীত ধর্মী উয় ও শীতল বায়ুপুরের মিলনে সৃষ্ট ঘূর্ণবাত হল নাতিশীতোর ঘূর্ণবাত।
প্রশ্ন ৩২| প্রতীপ ঘূর্ণবাত কী?
উত্তর: হিমমণ্ডল এবং নাতিশীতোর মণ্ডলের অন্তর্গত কোনো স্বল্প পরিসর স্থানের বায়ু শীতল হয়ে উচ্চচাপ কেন্দ্র গঠিত হলে, সেখান থেকে বায়ু নিম্নগামী ও বর্ধিমুখী হয়ে ঘুরতে ঘুরতে চারপাশে বেরিয়ে যায়, একে প্রতীপ ঘূর্ণবাত করা।
প্রশ্ন ৩৩ | জেট বায়ু কী?
উত্তর : দ্রুত তাপ ও চাপ পরিবর্তনের ফলে ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্বসীমানায় ভূপৃষ্ঠ থেকে ৭.৫ থেকে ১৪ কিমি উচ্চতায় দ্রুতগামী ও প্রধানত পশ্চিম থেকে পূর্বমুখী যে বায়ু সংকীর্ণ আঁকাবাঁকা বলয়ের মতো প্রবাহিত হয়, তাকে বলে জেট বায়ু।
প্রশ্ন । ৩৪ | গ্রীষ্ম মৌসুমি বলতে কী বোঝ?
উত্তর : গ্রীষ্মকালে প্রবল উয়তায় স্থলভাগে যে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় তার প্রভাবে সংলগ্ন সমুদ্র অঞ্চল থেকে জলীয় বাষ্প নিয়ে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করে। একেই বলে ‘মৌসুমি বায়ুর আগমন' বা গ্রীষ্ম মৌসুমি। এই বায়ুতে বৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন ৩৫ | শীত মৌসুমি বলতে কী বোঝ? [মা.প. [39]
উত্তর : শীতকালে স্থলভাগ দ্রুত তাপ বিকিরণে শীতল হয় এবং সমুদ্র তুলনামূলক উষ্ণ থাকে। ফলে সমুদ্রে সৃষ্টি হয় নিম্নচাপ এবং স্থলভাগে উচ্চচাপ। এই অবস্থায় মৌসুমি বায়ু স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়। এটি হল ‘মৌসুমি বায়ুর প্রত্যাগমন’ বা ‘শীত মৌসুমি'। এটি শুষ্ক বায়ু।
প্রশ্ন । ৩৬ | টুইস্টার কী ?
উত্তর : স্থলভাগে সৃষ্ট অতি বিধ্বংসী টর্নেডো ঘূর্ণিঝড়কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে টুইস্টার বলা হয়।
সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো :
প্রশ্ন ১ বায়ুচাপের বৈশিষ্ট্য লেখো। অর্থনা, বায়ুচাপের গুরুত্ব লেখো।
উত্তর : বায়ুচাপের বৈশিষ্ট্যগুলি হল : (i) বায়ুচাপের তারতম্যের কারণেই বায়ুপ্রবাহ হয়। (ii) বায়ুচাপের পরিবর্তনে আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটে। (iii) গভীর নিম্নচাপ ও উচ্চচাপ দুর্যোগপুর্ণ আবহাওয়ার সৃষ্টি করে-ঝড়, বৃষ্টি, তুষারঝড় হয়। (iv) আবহাওয়া মানচিত্রে বায়ুচাপের বণ্টন ও প্রকৃতি দেখে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হয়।
প্রশ্ন । ২ । উয়তার সাথে বায়ুচাপের সম্পর্ক কী? অথবা, 'উয়তা বাড়লে বায়ুচাপ কমে এবং উন্নতা কমলে বায়ুচাপ বাড়ে —উদাহরণসহ ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : বায়ুর উয়তার সঙ্গে বায়ুচাপের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর কিন্তু বিপরীতমুখী অর্থাৎ উয়তা বাড়লে বায়ুর চাপ কমে ও উন্নতা কমলে বায়ুর চাপ বাড়ে। কোনো স্থানে উন্নতা বাড়লে বায়ু হালকা হয়ে উপরে উঠে যায়, বায়ুর ঘনত্ব কমে, ফলে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। সারাবছর ধরে অধিক উয়তার জন্যই নিরক্ষীয় অঞ্চল বরাবর নিম্নচাপ বলয়ের সৃষ্টি হয়েছে। অধিক উয়তার কারণেই গ্রীষ্মকালে ভারতের উত্তর পশ্চিমে নিম্নচাপ কেন্দ্রের সৃষ্টি হয়। আবার কোনো স্থানে উন্নতা কমলে বায়ুর ঘনত্ব বাড়ে, বায়ু শীতল ও ভারী হয় এবং প্রাকৃতিক কারণেই শীতল ও ভারী বায়ু উচ্চচাপ যুক্ত হয়। সারাবছর উন্নতা অত্যন্ত কম থাকে বলেই কোরিওলিস বল সর্বাধিক হওয়া সত্ত্বেও দুই মেরু অঞ্চলে উচ্চচাপ বলয়ের সৃষ্টি হয়েছে। উয়তা কম থাকে বলেই শীতকালে আমাদের এখানে বায়ুরচাপ বেশি হয়।
প্রশ্ন।৩ সমচাপ রেখার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো। * | উত্তর * সমচাপ রেখার বৈশিষ্ট্যগুলি হল – (i) পৃথিবীপৃষ্ঠের বিভিন্ন স্থানে বায়ুচাপের বিভিন্নতার জন্য আলাদা আলাদা সমচাপ রেখা আঁকা হয়ে থাকে। (ii) সমচাপ রেখাগুলি সাধারণত বিভিন্ন অক্ষরেখার সঙ্গে সমান্তরালভাবে পূর্ব-পশ্চিমে অবস্থান করে।।
(iii) সমচাপ রেখাগুলি নিজেদের থেকে দূরে দূরে অবস্থান করলে আবহাওয়া শান্ত থাকে এবং কাছাকাছি অবস্থান করলে বায়ুপ্রবাহের H ১০১৮ সমচাপ রেখা গতি প্রবল হয়। (iv) সমচাপ রেখাগুলি নিজেদের কাছাকাছি চক্রাকারে অবস্থান করলে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। (v) সমচাপ রেখা চক্রাকার হলে তাকে কোশ (Air pressure cell) বলে। (vi) নিম্নচাপযুক্ত অঞ্চলকে বলে Trough এবং উচ্চচাপযুক্ত অঞ্চলকে বলে Ridge।
প্রশ্ন ৪ বায়ুর চাপের ঢাল (Pressure gradient) বলতে কী বোঝ?
উত্তর : সমচাপ রেখার সাথে সমকোণে উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে প্রতি একক দূরত্বে বায়ুচাপের যে পার্থক্য হয় তা হল বায়ুচাপের ঢাল বা চাপ ঢাল। খাড়া চাপ ঢাল খাড়া চাপ ঢাল। বায়ুচাপের ঢাল নির্ভর করে দুটি স্থানের দূরত্ব এবং ওই দুটি স্থানের বায়ুচাপের পার্থক্যের ওপর। বায়ুচাপের ঢাল বেশি হলে বায়ুর গতিবেগ বাড়ে এবং কম হলে বায়ুর গতিবেগ কমে।
৫ প্রশ্ন। | পৃথিবীর প্রধান প্রধান বায়ুচাপ বলয় ক-টি ও কী কী?
উত্তর : উন্নতা, বায়ুতে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ, পৃথিবীর আবর্তন প্রভৃতির তারতম্যজনিত কারণে সাতটি (৭টি) স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়ের উৎপত্তি ঘটেছে। এগুলি হল- (i) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়, (ii) কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয়, (iii) মকরীয় উচ্চচাপ বলয়, (iv) সুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়, (v) কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়, (vi) সুমেরু উচ্চচাপ বলয়, (vii) কুমেরু উচ্চচাপ বলয়।
৬ ।নিরক্ষীয় অঞ্চলে নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টির কারণগুলি কি কি ?
উত্তর : নিরক্ষীয় অঞ্চলে নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টির কারণগুলি হল- (i) সারাবছর লম্ব সূর্যরশ্মির কারণে গড় উয়তা সর্বদা বেশি। (ii) স্থলভাগ অপেক্ষা জলভাগের বিস্তার বেশি এবং উচ্চতা বেশি বলে আর্দ্রতাও সারাবছর খুব বেশি। (iii) পৃথিবীর আবর্তন বেগ বেশি বলে ঊর্ধ্বগামী উষু-আর্দ্র হালকা বায়ু বিক্ষিপ্ত হয়।
প্রশ্ন ৭] সুমেরুবৃত্ত ও কুমেরুবৃত্ত প্রদেশে নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে কেন? উত্তর : সুমেরুবৃত্ত ও কুমেরুবৃত্ত প্রদেশে নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টি হওয়ার কারণগুলি হল- (i) ক্রান্তীয় অঞ্চল অপেক্ষা এখানে কোরিওলিস বল বেশি বলে বায়ুর গতিবিক্ষেপ ঘটে। (ii) মেরু অঞ্চল থেকে আগত শীতল বায়ুর সঙ্গে ক্রান্তীয় অঞ্চল থেকে আগত উর্দু-আর্দ্র বায়ুর সংঘর্ষে বায়ু ঊর্ধ্বগামী হয়। (iii) উরু সমুদ্রস্রোত এই অঞ্চলে প্রচুর তাপ বয়ে নিয়ে আসে, যা এই অঞ্চলের উয়তা বাড়ায়।
প্রশ্ন ৮ কর্কটীয় ও মকরীয় অঞ্চল বরাবর উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টির কারণগুলি লেখো।
উত্তর : কর্কটীয় ও মকরীয় অঞ্চল বরাবর উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টির কারণগুলি হল- (i) নিরক্ষীয় অঞ্চলের উর্ধ্বমুখী বায়ু পৃথিবীর আবর্তনের প্রভাবে উভয় গোলার্ধ বিক্ষিপ্ত হয়ে কর্কটীয় ও মকরীয় অঞ্চল বরাবর বায়ু স্রোতরূপে নেমে আসে। পলে বায়ুর পরিমাণ এখানে বাড়ে। (ii) মেরুবৃত্ত প্রদেশের বায়ু কোরিওলিস বলের প্রভাবে বিক্ষিপ্ত হয়ে এখানে এসে পৌঁছোয়। উল্লিখিত দুটি কারণে কর্কটীয় ও মকরীয় অঞ্চল বরাবর বায়ুর পরিমাণ বাড়ে বলেই এখানে উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে।
প্রশ্ন। ৯ । দুই মেরুতে কোরিওলিস বল বেশি অথচ উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে।' –কারণ ব্যাখ্যা করো।
[উত্তর : দুই মেরুতে কোরিওলিস বল সর্বাধিক। তাই এখানকার বায়ু বিক্ষিপ্ত হওয়ারই কথা। কিন্তু দুই মেরুতে উন্নতা সারাবছর খুবই | কম হওয়ায় এখানকার বায়ু শীতল, ফলে কোরিওলিস বল দুই মেরু অঞ্চলের বায়ুকে পারে না। অত্যধিক শীতল অবস্থা এখানে উচ্চচাপ সৃষ্টির | কারণ। তাই দুই মেরুতে কোরিওলিস বল অধিক হলেও উচ্চ বলয়ের সৃষ্টি হয়েছে। বিক্ষিপ্ত করতে
প্রশ্ন ১০ কর্কটীয় উচ্চচাপ বলয়কে অশ্ব অক্ষাংশ বলার কারণ। কী? বা, অ অক্ষাংশ কাকে বলে? ★★ | মাপ ১০/
উত্তর : উত্তর গোলার্ধে কর্কটক্রান্তি রেখার নিকটবর্তী ২৫- | উত্তর অক্ষাংশের মধ্যবর্তী টায় উচ্চচাপ বলয়ের বায়ু হওয়ায় এর কোনো পার্শ্বপ্রবাহ থাকে না। এই জন্য এই অ্যা ককটীয় শাস্তবলয় বলে। প্রাচীন কালে পালতোলা জাহাজি | কর্কটীয় শান্তবলয়ে এলে গতিহীন হয়ে পড়ত। শোনা যায়, মধ্য ও ইউরোপ থেকে উত্তর আমেরিকা ও পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুে ঘোড়াভর্তি জাহাজগুলি যাওয়ার সময় করটায় শান্ত বলয় অতিক্র করতে দীর্ঘ সময় লেগে যেত। তাই পানীয় জলের ব্যয়সংকোচের কারণে ঘোড়াগুলিকে সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হত। এই ঘটনা থেকে কর্কটীয় শাস্ত্রবলয়কে অশ্ব অক্ষাংশ আখ্যা দেওয়া হয়।
প্রশ্ন | ১১ | বায়ুচাপ বলয়গুলি সীমানা পরিবর্তন করে কেন?
উত্তর : পৃথিবীর বায়ুচাপের তারতম্যের ক্ষেত্রে উন্নতার প্রভাব সর্বাধিক। পৃথিবীর উষ্মতার প্রধান উৎস হল সূর্য। সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন অক্ষাংশে সূর্যরশ্মির পতনকোণের তারতম্য হয় বলে উন্নতার তারতম্য ঘটে। তাই চাপবলয়গুি সূর্যের উত্তরায়ণ ও দক্ষিণায়নের সঙ্গে সঙ্গে সরতে থাকে।
প্রশ্ন। ১২ | বায়ুচাপ বলয়গুলির সীমানা পরিবর্তন জলবায়ুর ওপর কীরূপ প্রভাব ফেলে?
উত্তর বায়ুচাপ বলয়গুলির সীমানা পরিবর্তনের ফরে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত ও জলবায়ুর পরিবর্তন ঘটে। আবহবিদদের মতে গ্রীষ্মকালে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলা স্থান পরিবর্তন করে ভারতের মাঝবরাবর মৌসুমি অক্ষরূপে (Monsoon Trough) অবস্থান করে বলেই মৌসুমি বায়ু ভারতে প্রবেশ করে। কর্কটীয় ও মকরীয় চাপবলয়ের সীমানা পরিবর্তনে জন্য ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে শীতকালে পশ্চিমাবায়ু প্রবেশ করে বৃষ্টিপাত ঘটায়। তাই এখানে গ্রীষ্মকাল শুষ্ক ও শীতকাল আর্দ্র হয়।
প্রশ্ন ১৩ দক্ষিণের তুলনায় উত্তর গোলার্ধে বায়ুচাপ কক্ষো সংখ্যা বেশি হয় কেন? উত্তর : : বায়ুর চাপ কক্ষের অবস্থান ও সংখ্যা নির্ভর করে মহাদেশ ও মহাসাগরের অবস্থান ওর ওপর। গোলার্ধে মহাদেশ অপেক্ষা মহাসমুদ্রের বিস্তার বেশি হওয়ায় বায়ুচা বলয়গুলির বিস্তৃতি বেশি। কিন্তু উত্তর গোলার্ধে সমুদ্র অপেক্ষ মহাদেশের বিস্তার বেশি হওয়ায় চাপবলয়গুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রে কক্ষের আকারে অবস্থান করে। তাই দক্ষিণ গোলার্ধের তুলন উত্তর গোলার্ধে বায়ুচাপ কক্ষের সংখ্যা বেশি।
প্রশ্ন | ১৪ | কোরিওলিস বল বলতে কী বোঝ ? **
উত্তর : পৃথিবীর আবর্তনের প্রভাবে প্রবাহিত বায়ুর ওপর যে শক্তি কাজ করে তা হল কোরিওলিস বল। ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিজ্ঞানী G. De. Coriolis প্রথম এই শক্তির কথা উল্লেখ করেন। কোনো স্থানে কোরিওলিস বল নির্ভর করে- (i) সেই স্থানের অক্ষাংশের মান, (ii) বায়ুর গতিবেগ এবং (iii) পৃথিবীর কৌণিক গতিবেগ (১৫% ঘণ্টা)-এর ওপর। কোরিওলিস বলের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল – (i) এটি বায়ুপ্রবাহের (ক) নিয়ত বায়ুপ্রবাহকে আবার ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- আয়ন বায়ু পশ্চিমা উত্তর গোলার্ধ উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু দক্ষিণ গোলার্ধ দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু উত্তর গোলার্ধ উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু (খ) সাময়িক বায়ুপ্রবাহকে প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা হয়। যথা—(i) স্থল বায়ু, (ii) সমুদ্র বায়ু, (iii) মৌসুমি বায়ু এবং (iv) পার্বত্য ও উপত্যকা বায়ু। (গ) স্থানীয় বায়ুকে প্রধানত ২ ভাগে ভাগ করা হয়। যথা— (i) উয় স্থানীয় বায়ু (উদাহরণ—ফন, চিনুক, সিরোক্কো, লু), (ii) শীতল স্থানীয় বায়ু (উদাহরণ—মিস্ট্রাল, বোরা ইত্যাদি)। (ঘ) আকস্মিক বায়ুকে প্রধানত ২ ভাগে ভাগ করা হয়। যথা— (i) ঘূর্ণবাত ও (ii) প্রতীপ ঘূর্ণবাত।
প্রশ্ন | ১৫ | উদাহরণসহ বায়ুপ্রবাহের শ্রেণিবিভাগ করো।
উত্তর : বায়ুপ্রবাহকে প্রধানত চারভাগে ভাগ করা যায়। যথা- (ক) নিয়ত বায়ুপ্রবাহ, (খ) সাময়িক বায়ুপ্রবাহ, (গ) স্থানীয় বায়ুপ্রবাহ এবং (ঘ) আকস্মিক বায়ুপ্রবাহ। বায়ু মেরু বায়ু
প্রশ্ন ১৬ | ক্রান্তীয় অঞ্চলে মহাদেশের পশ্চিমে মরুভূমি সৃষ্টির কারণ কী? * উত্তর : উভয় গোলার্ধের ক্রান্তীয়মণ্ডলে (i) মহাদেশের পশ্চিম দিক থেকে আয়ন বায়ু সমুদ্রের দিকে বয়ে যায়, ফলে বায়ুতে জলীয় বাষ্প থাকে না। (ii) এই বায়ু যতই নিরক্ষীয় অঞ্চলের দিকে বয়ে যায় উয়তা বাড়তে থাকে বলে জলীয় বাষ্প ধারণ ক্ষমতা বাড়তে থাকে। (iii) ক্রান্তীয় মণ্ডলের মরুভূমি অঞ্চলের ওপর উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয় অবস্থানের কারণে শুষ্ক বায়ুস্রোত উপর থেকে নীচে নেমে আসে। উল্লিখিত কারণগুলির প্রভাবে ক্রান্তীয়মণ্ডলে মহাদেশের পশ্চিমে দীর্ঘকাল বৃষ্টি না-হওয়ার কারণেই অঞ্চলগুলি মরুভূমিতে (সাহারা, কালাহারি, সোনেরান, আটাকামা, অস্ট্রেলিয়া) পরিণত হয়েছে। প্রশ্ন ১৭ | উত্তরের থেকে দক্ষিণ গোলার্ধে আয়ন বায়ু ও পশ্চিমা বায়ুর বেগ বেশি হয় কেন? উত্তর : উত্তর গোলার্ধে সমুদ্র অপেক্ষা স্থলভাগের বিস্তার বেশি হওয়ায় উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু ঘর্ষণজনিত বাধার কারণে কিছুটা ধীরে (১৬ কিমি/ঘণ্টা) প্রবাহিত হয়। কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধে স্থলভাগের থেকে জলভাগের বিস্তার বেশি বলে দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু কিছুটা অধিক বেগে (২২ কিমি/ঘণ্টা) প্রবাহিত হয়।
প্রশ্ন ১৭ | উত্তরের থেকে দক্ষিণ গোলার্ধে আয়ন বায়ু ও পশ্চিমা বায়ুর বেগ বেশি হয় কেন?
উত্তর : উত্তর গোলার্ধে সমুদ্র অপেক্ষা স্থলভাগের বিস্তার বেশি হওয়ায় উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু ঘর্ষণজনিত বাধার কারণে কিছুটা ধীরে (১৬ কিমি/ঘণ্টা) প্রবাহিত হয়। কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধে স্থলভাগের থেকে জলভাগের বিস্তার বেশি বলে দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু কিছুটা অধিক বেগে (২২ কিমি/ঘণ্টা) প্রবাহিত হয়।
প্রশ্ন ১৮। সাহসিক পশ্চিমা বায়ু বলতে কী বোঝ?
উত্তর : উত্তর গোলার্ধে দক্ষিণপশ্চিম পচিমা বায়ু প্রবাহিত অঞ্চলে মহাসাগরের তুলনায় মহাদেশের বিস্তার খুব বেশি হওয়ায় বায়ুর বেগ খুব কম। কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধে উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু প্রবাহিত অঞ্চলে মহাদেশের তুলনায় মহাসাগরের বিস্তার খুব বেশি হওয়ায় পশ্চিমা বায়ু অতি প্রবল বেগে গর্জন করে প্রবাহিত হয়। তাই দক্ষিণ গোলার্ধে পশ্চিমা বায়ুকে সাহসিক পশ্চিমা বায়ু বলা হয়।
প্রশ্ন ১৯ | সমুদ্র বায়ু (Sea breeze) বলতে কী বোঝ?
উত্তর : উপকূল অঞ্চলে দিনের বেলা সমুদ্র থেকে স্থলভাগের যে মৃদুমন্দ বাতাস বয় তা হল সমুদ্র বায়ু। শীতল সমুদ্র থেকে শীতল বায়ু উত্তপ্ত ভূমির দিকে যাচ্ছে ঊষুবায়ু শীতল সমুদ্র উষ্মভূমি সমুদ্র বায়ু
• উৎপত্তি : দিনের বেলা সূর্যের উত্তাপে প্রকৃতির নিয়মে সমুদ্র অপেক্ষা স্থলভাগ বেশি উত্তপ্ত হয়। ফলে স্থলভাগে সৃষ্ট হয় নিম্নচাপ এবং সমুদ্রে উচ্চচাপ। এইরূপ অবস্থায় চাপের সমতা রক্ষার জন্য বায়ু সমুদ্র থেকে স্থলভাগের দিকে বয়ে যায়।
• বৈশিষ্ট্য : (১) মোটামুটি সকাল ১০টার পর থেকে বিকাল পর্যন্ত এই বায়ু বয়। (২) দুপুরে বায়ুচাপের ঢাল সর্বাধিক হয় বলে সমুদ্র বায়ুর বেগ দুপুরে সবচেয়ে বেশি।
প্রশ্ন ২০ | স্থলবায়ু (Land Breeze) বলতে কী বোঝ?
উত্তর : উপকূল অঞ্চলে রাতের বেলা স্থলভাগ থেকে সমুদ্রের দিকে যে মৃদুমন্দ বাতাস বয় তা হল স্থলবায়ু। উন্নত বায়ু A A শীতল ভূমির থেকে শীতল বায়ু উত্তপ্ত সমুদ্র দিকে যাচ্ছে উষ্ণ সমুদ্র শীতল ভূমি স্থলবায়ু
• উৎপত্তি : সূর্যাস্তের পর পৃথিবীপৃষ্ঠ তাপ বিকিরণ করে শীতল হয়। প্রকৃতির নিয়মে সমুদ্র অপেক্ষা স্থলভাগ দ্রুত তাপ বিকিরণ করে। ফলে সন্ধ্যার পর এমন এক সময় আসে যখন স্থলভাগ অপেক্ষা সমুদ্র অধিক উয় হয়। এরূপ অবস্থায় স্থলভাগে বিরাজ করে উচ্চচাপ এবং সমুদ্রে নিম্নচাপ, ফলে স্থলভাগ থেকে বায়ু সমুদ্রের দিকে বয়ে যায়।
• বৈশিষ্ট্য : (১) সন্ধ্যার কিছু পর থেকে পরদিন সূর্যোদয়ের আগে পর্যন্ত রাত্রে এই বায়ু প্রবাহিত হয়। (২) ভোরবেলা সমুদ্র ও স্থলভাগের মধ্যে বায়ুচাপ ঢালের পার্থক্য সর্বাধিক বলে স্থলবায়ুর বেগ ভোরবেলা সবচেয়ে বেশি। (৩) স্থলভাগ থেকে প্রবাহিত এই মৃদু বাতাস শুষ্ক প্রকৃতির।
প্রশ্ন ২১ | মৌসুমি বায়ু হল সমুদ্র বায়ু ও স্থলবায়ুর সংস্করণ - কারণ ব্যাখ্যা করো। ★★
উত্তর : মৌসুমি বায়ুর উৎপত্তি, গতিপ্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য ম বায়ু ও স্থলবায়ুর মতোই। কিন্তু ইহার ব্যাপ্তি ও প্রবাহকাল ও সমুদ্র বায়ু অপেক্ষা অধিক। গ্রীষ্মকালে প্রবল উয়তায় স্থলভাগে যে গভীর নিম্নচাপে সৃষ্টি হয়, তার প্রভাবেই উচ্চচাপযুক্ত সমুদ্র থেকে জলীয় বাষ্প বায়ু স্থলভাগে প্রবেশ করে। একেই মৌসুমি বায়ুর আগমন গ্রীষ্ম মৌসুমি বলে। আবার শীতকালে সূর্যের আপাত গতির কার সমুদ্রে উয়তা বেশি এবং স্থলভাগে উয়তা কম হওয়ায় সময় নিম্নচাপ ও স্থলভাগে উচ্চচাপ বিরাজ করে। এই সময় স্থলন থেকে বায়ু সমুদ্রের দিকে বয়ে যায়। একেই মৌসুমি বায়ুর প্রত্যাগম বা শীত মৌসুমি বলে। মৌসুমী বায়ু মধ্যাহ্ন গ্রীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু শীতকালীন মৌসুমি বায়ু যেহেতু মৌসুমি বায়ুর উৎপত্তি ও গতিপ্রকৃতি সমুদ্র বায়ু । স্থল বায়ুর মতোই তাই ট্রেওয়ার্থা, ফন্ প্রভৃতি আবহবিদগণে মতে ‘মৌসুমি বায়ু হল স্থল বায়ু ও সমুদ্র বায়ুর বৃহৎ সংস্করণ
প্রশ্ন ২২ | ক্যাটাবেটিক ও অ্যানাবেটিক বায়ু কাকে বলে? *
* উত্তর : রাত্রিবেলা পর্বতের উপরি অংশের বায়ু দ্রুত তাপ বিকিরণে শীতল ও ভারী হয়ে পড়ে বলে পর্বতের ঢাল বরাবর ভারী বায়ু নীচে নেমে উপত্যকায় অবস্থান করে। এটি হল পার্বত্য বায়ু। পার্বত্য বায়ু বিস্তৃর্ণ অঞ্চল ও দীর্ঘ সময় ধরে প্রবাহিত হলে তখন তা ক্যাটাৰেটিক বায়ু। বোৱা, মিস্ট্রাল প্রভৃতি হল ক্যাটাবেটিক বায়ুর উদাহরণ। দিনের বেলা সূর্যতাপে উপত্যকার নিম্নাংশ অপেক্ষা চালু অংশ (mountain slope) বেশি গরম হয়। ফলে উপত্যকায় নিম্নাংশের বায়ু পর্বতের ঢাল বরাবর উপরের দিকে ওঠে। এটি হল উপত্যকা বায়ু। একে অ্যানাৰেটিক বায়ুও বলা হয়। এই দুই বায়ু প্রবাহের কারণেই পার্বত্য অংশে উচ্চতার বৈপরীত্য দেখা যায়। পার্বত্য (ক্যাটাবোটিক) ও উপত্যকা (অ্যানাবেটিক) বায়ু
প্রশ্ন ২৩ | ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি কেন ঘটে? ★
| উত্তর : কোনো অল্পপরিসর স্থান যদি হঠাৎ বেশিমাত্রায় উত্তপ্ত হয় তবে সেই স্থান তখন নিম্নচাপের সৃষ্টি হওয়ার ফলে চারিদিকের অপেক্ষাকৃত শীতল ও উচ্চচাপের স্থানগুলো থেকে বায়ু প্রচণ্ড বেগে ওই নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসে এবং ঘুরতে ঘুরতে ওই নিম্নচাপের কেন্দ্রে প্রবেশ করে। এইভাবে ঘূর্ণবাতের সৃষ্টি হয়। উত্তর গোলার্ধের ঘূর্ণবাত সাধারণ বায়ু aamb দক্ষিণ গোলার্ধের ঘূর্ণবাত সাধারণ বায়ু amb 2002 mb বায়ুপ্রবাহ বামদিকে বেঁকে যায়। বায়ুপ্রবাহ ডানদিকে বেঁকে যায় ঘূর্ণবাত
প্রশ্ন ২৪ | ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।
উত্তর : ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্যগুলি হল : (i) এই বায়ুপ্রবাহ উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে অর্থাৎ বামাবর্ত এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে অর্থাৎ দক্ষিণাবর্তে ঘুরে ঘুরে কেন্দ্রের দিকে অগ্রসর হয়। (ii) ঘূর্ণবাত স্বল্পস্থায়ী কিছু প্রবল গতিবেগ সম্পন্ন। (ii) ঘূর্ণবাতের সঙ্গে ঝড়, বৃষ্টি এবং বজ্রপাত হয়। (iv) ঘূর্ণবাত দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে। (v) ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতের ধ্বংস ক্ষমতা অতি ভয়ংকর। (vi) সরল ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতে 'চক্ষু' সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন ২০ | নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর : নাতিশীতোয় ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্যগুলি হল- (i) এই ঘূর্ণবাতের কেন্দ্রে থাকে নিম্নচাপ এবং বাইরে উচ্চচাপ। (ii) এর কেন্দ্র ও বাইরে চাপের পার্থক্য থাকে ১০-২০ মিলিবার।
(iii) এর আকৃতি ও বিস্তৃতি খুব বেশি হয়। (iv) এই ঘূর্ণবাতের স্থায়িত্বকাল দীর্ঘ ও গতিবেগ কম হয়। (v) এর প্রভাবে একটানা বেশ কয়েকদিন ঝিরঝিরে বৃষ্টি ও তুষারপাত হয়। (vi) শীতকালে এই ঘূর্ণবাত বেশি দেখা যায়।
প্রশ্ন ২৬ | ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত (Tropical Cyclone) বলতে কী বোঝ?
উত্তর : ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত : কর্কটক্রান্তি ও মকরকান্তি রেখার মধ্যবর্তী অঞ্চল বরাবর সৃষ্ট ঘূর্ণবাতকে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত বা উয়ুমণ্ডলীয় ঘূর্ণবাত বলে। বিশেষত ৬° উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২০° দক্ষিণ অক্ষাংশে এই ধরনের ঘূর্ণবাত দেখা যায়। সাধারণত অতিরিক্ত উচ্চতার জন্য সমুদ্রের উপরের বায়ু শুষ্ক, আর্দ্র ও ঊর্ধ্বমুখী হয়, ফলে সেখানে নিম্নচাপের সৃষ্টি হয় এবং চারদিক থেকে প্রবল বেগে বায়ু ঘুরতে ঘুরতে নিম্নচাপের কেন্দ্রের দিকে ছুটে আসে। এই প্রবল গতিবেগসম্পন্ন কেন্দ্রমুখী ঘূর্ণায়মান ঊর্ধ্বমুখী বায়ুপ্রবাহকে ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত বলে। • বৈশিষ্ট্য : (i) এই ঘূর্ণবাতে সমচাপরেখার আকৃতি গোলীয় প্রকৃতির। (ii) ঘূর্ণবাত সবল ও দুর্বল উভয় প্রকৃতির হয়। (iii) সবল ঘূর্ণবাতে প্রবল ঝড়বৃষ্টি এবং দুর্বল ঘূর্ণবাতে প্রবল বৃষ্টি হয়। (iv) সবল ঘূর্ণবাতে 'ঘূর্ণবাতের চক্ষু' সৃষ্টি হয়। (v) স্থলভাগ ও সমুদ্র উভয় অংশে এই ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি ঘটলেও সমুদ্রের সংখ্যা অধিক। (vi) গ্রীষ্মের শেষে শরৎকালে এই প্রকার ঘূর্ণবাত বেশি সংখ্যায় সৃষ্টি হয়। জেনে রাখো • কয়েকটি ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাত : টাইফুন : এটি জাপান-চিন সাগরে সৃষ্ট এক ধরনের প্রবল বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়। ও হ্যারিকেন। এটি হল পশ্চিম ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জের নিকটবর্তী। ক্যারিবিয়ান সাগরে উদ্ভূত বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ও টর্নেডো ক্রান্তীয় মণ্ডলে ভূপৃষ্ঠের স্বল্প পরিসর স্থান থেকে ঊর্ধ্বাকাশে প্রসারিত কৃষ্ণকায় ফানেল আকৃতিবিশিষ্ট মেঘ যে সর্বাপেক্ষা বিধ্বংসী ঘূর্ণবাতের জন্ম দেয়, তাই হল টর্নেডো। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ অংশে বেশি সংখ্যায় দেখা যায়। পূর্ব ভারতে মাঝে মাঝেই টর্নেডোর আবির্ভাব ঘটে। সাইক্লোন: ভারত মহাসাগর, আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ক্রান্তীয় ঘূর্ণবাতকে সাইক্লোন বলে।
প্রশ্ন ২৭ | প্রতীপ ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্য কী কী? *
উত্তর: প্রতীপ ঘূর্ণবাতের বৈশিষ্ট্যগুলি হল— (i) প্রতীপ ঘূর্ণবাতের কেন্দ্র ও বাইরে চাপের তারতম্য হয় ১০-২০ মিলিবার। (ii) এই ঘূর্ণবাতের কেন্দ্র থেকে মৃদুমন্দ বাতাস চক্রাকারে উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে বেরিয়ে যায়। (iii) এই ঘূর্ণবাত দীর্ঘস্থায়ী কিন্তু ধীর গতিযুক্ত। (iv) প্রতীপ ঘূর্ণবাতের প্রভাবে ঝড়বৃষ্টি হয় না। আকাশ পরিষ্কার থাকে ও শাস্ত আবহাওয়া বিরাজ করে।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তর প্রশ্ন
১ | বায়ুচাপের তারতম্যের কারণগুলি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন অংশে বায়ুর চাপ বিভিন্ন রকম হয়। বায়ুচাপের তারতম্যের এই কারণগুলি হল— (i) উয়তা : বায়ুচাপের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক হল উম্বুতা। বায়ুর উম্বুতার সাথে বায়ুচাপের সম্পর্ক বিপরীতমুখী। উয়তা বাড়লে বায়ুর ঘনত্ব কমে, প্রসারিত হয় এবং হালকা হয়ে উপরে ওঠে ফলে বায়ুচাপ কমে। আবার উয়তা কমলে বায়ুর ঘনত্ব বাড়ে, সংকুচিত হয় এবং ভারী হয়ে নীচে অবস্থান করে বলে চাপ বাড়ে।
(ii) উচ্চতা : উচ্চতা বৃদ্ধিতে বায়ুর ওজন ও ঘনত্ব কমতে থাে বলে বায়ুর চাপও কমে। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির কারণে বায়ুকণাগুলি অধিকাংশ ভূপৃষ্ঠসংলগ্ন অঞ্চলে অবস্থান করে বলে বায়ুর ঘনত বেশি এবং ওই বায়ু চাপ বেশি দেয়। ভূপৃষ্ঠে গড় ১০০০ মিটার উচ্চতা বৃদ্ধিতে ১২.৬ মিলিবার বায়ুচাপ কমে। তাই পর্বতের উপরে বায়ুচাপ কম, সমভূমিতে বেশি।
৩ )জলীয় বাষ্প : জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু সাধারণ বায়ুর থেকে হালকা এবং ঘনত্ব কম বলে প্রসারিত হয়ে ঊর্ধ্বমুখী হয়। ফলে বায়ুর চাপ কমে। তাই যে বায়ুতে জলীয় বাষ্প যত বেশি, সেই বায়ুর চা চাপও তত কম। শুষ্ক বায়ুর চাপ বেশি। বায়ুমণ্ডল মাউন্ট এভারেস্ট বা জলীয় বাষ্প ও বায়ুচাপের সম্পর্ক
(iv) পৃথিবীর আবর্তন : পৃথিবীর আবর্তনের প্রভাবে যে কেন্দ্রবিমুখ শক্তির (Centrifugal force) সৃষ্টি হয় তার ফলে বায়ু বিক্ষিপ্ত হয়। বায়ু বিক্ষিপ্ত হলে বায়ুর ঘনত্ব কমে এবং সেই বায়ু চাপ কম দেয়।
(v) স্থলভাগ ও জলভাগের বণ্টন : প্রকৃতির নিয়মে জলভাগ ি অপেক্ষা স্থলভাগ যেমন তাড়াতাড়ি উত্তপ্ত হয় তেমনি তাড়াতাড়ি ঠান্ডাও হয়। উপকূল অঞ্চলে তাই দিনের বেলা স্থলভাগে বায়ুরচাপ কম এবং জলভাগে বায়ুচাপ বেশি হয়। রাত্রে ঠিক বিপরীত অবস্থা দেখা দেয়।
প্রশ্ন ২। পৃথিবীর প্রধান বায়ুচাপ বলয়গুলির অবস্থান ও উৎপত্তির কারণ লেখো ?
উত্তর : পৃথিবীতে মোট ৭টি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে, এর মধ্যে ৩টি নিম্নচাপ বলয় ও ৪টি উচ্চচাপ বলয়। (i) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় নিরক্ষরেখার উভয় পাশে গড়ে ৫° উত্তর ৫° দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে অবস্থিত নিম্নচাপ বলয়টি নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় নামে পরিচিত। এটি নিরক্ষীয় শাস্তবলয় বা ডোলড্রামস নামে পরিচিত। সুমের উচ্চচাপ সুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ .09 30: নিরক্ষীয় নিম্নচাপ 10 মকরীয় উচ্চচাপ কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ কুমেরু উচ্চচাপ 30d Rd দঃ মেরু বায়ুচাপ বলয় কারণ : (i) এখানে সারাবছর লম্ব সূর্যরশ্মির কারণে উয়তা খুব বেশি, (ii) বায়ুতে আর্দ্রতা সারাবছরে খুব বেশি এবং (iii) আবর্তনবেগ বেশি বলে উয় আর্দ্র ঊর্ধ্বগামী বায়ু বিক্ষিপ্ত হয়। এই তিনটি কারণে এখানে নিম্নচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে।
(ii) কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয় বা উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ কলায় উভয় গোলার্ধে গড়ে ২৫-৩৫° অক্ষরেখার মধ্যে যে-দুটি চাপবলয় রয়েছে, তা হল উপক্রান্তীয় উচ্চচাপ বলয়। এটি অশ্ব অক্ষাংশ নামে পরিচিত। কারণ : (i) নিরক্ষীয় অঞ্চলের ঊর্ধ্বগামী। বায়ু আবর্তনের প্রভাবে শীতল ও ভারী হয়ে এখানে নেমে আসে। (ii) মেরুবৃত্ত প্রদেশের শীতল ও ভারী বায়ু কোরিওলিস বলের প্রভাবে এখানে পৌঁছোয়। এই দুটি কারণে এখানে উচ্চচাপ বলয় সৃষ্টি হয়েছে।
(৩)সুমের বৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় - উত্তর গোলার্ধের ৬০০ অক্ষরেখার মধ্যে এই দুটি নিম্নচাপ বলয় অবস্থিত। কারণ :
(i) মেরু অঞ্চল থেকে আগত শীতল বায়ুর সঙ্গে ক্রান্তীয় মণ্ডল থেকে আগত উয় বায়ুর সংঘর্ষে বায়ু ঊর্ধ্বগামী হয়। কারণ : (
(ii) অধিক কোরিওলিস বলের প্রভাবে বায়ুর গতিবিক্ষেপ ঘটে এবং কারণ :
(iii) ঊন্ন সমুদ্রস্রোত এই অঞ্চলের উন্নতা বাড়ায়—এই তিনটি কারণে এখানে নিম্নচাপ বলয়-এর সৃষ্টি হয়েছে।
(iv) মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয় উভয় গোলার্ধে ৮০° মেরু পর্যন্ত চাপ বলয় দুটি অবস্থিত। কারণ : (1) প্রায় সারাবছর উন্নতা হিমাঙ্কের নীচে থাকে বলে বায়ু সর্বদা অতি ঘনত্বযুক্ত শীতল ও ভারী। (ii) কোরিওলিস বল বেশি হলেও বায়ু খুবই শীতল বলে বিক্ষিপ্ত হতে পারে না।
প্রশ্ন। ৩ | পৃথিবীর প্রধান বায়ুচাপ বলয়গুলির নাম লিখে প্রধান একপ্রকার বায়ুচাপ বলয়ের অবস্থান, উৎপত্তির কারণ ও বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর: পৃথিবীতে সৃষ্টি হয়েছে মোট ৭টি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়, যার মধ্যে ৩টি নিম্নচাপ বলয় ৪টি উচ্চচাপ বলয়।
(i) নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয় ও ও কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়। ৪ ও ৫ সুমেরুবৃত্ত ও কুমেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয় এবং ৬ ও ৭ সুমেরু ও কুমেরু উচ্চচাপ বলয়। অবস্থান : নিরক্ষরেখার উভয় পাশে গড়ে ৫° উত্তর ৫০ দক্ষিণ অক্ষরেখার মধ্যে এই চাপ বলয়টি অবস্থিত।
উৎপত্তির কারণ : (i) প্রায় সারাবছর লম্ব সূর্যরশ্মির কারণে এখানে সারাবছর উন্নতা খুব বেশি। (ii) এই অঞ্চলে স্থলভাগের তুলনায় সমুদ্রের বিস্তার বেশি এবং উয়তা অধিক বলে বাতাসে আর্দ্রতাও খুব বেশি। (iii) পৃথিবীর আবর্তন বেগ এখানে খুব বেশি বলে হালকা উয়-আর্দ্র ঊর্ধ্বগামী বায়ু বিক্ষিপ্ত হয়। এই তিনটি কারণেই নিরক্ষীয় অঞ্চলে নিম্নচাপ বলয়ের উৎপত্তি ঘটেছে।
জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্য : (i) এই অঞ্চলে বায়ু সর্বদা ঊর্ধ্বগামী (বায়ুস্রোত)। ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে বায়ুপ্রবাহ হয় না বলেই এই অঞ্চল সারাবছর শান্ত থাকে। তাই অঞ্চলটি নিরক্ষীয় শাস্তবলয় বা ডোলড্রাম নামে পরিচিত। (ii) এই অঞ্চলটি উভয় গোলার্ধ থেকে আয়ন বায়ুদ্বয়কে পৃথক করে। তাই এই অঞ্চলটি ITCZ (Inter Tropical Convergence Zone) নামে পরিচিত।
প্রশ্ন ৪. বায়ুপ্রবাহের কারণগুলি কি কি ?
উত্তর : বায়ুপ্রবাহের কারণগুলি হল: (1) বায়ুচাপের তারতম্য বা বায়ুচাপের ঢালের শক্তি বায়ুচাপের তারতম্যই বায়ুপ্রবাহের মূল কারণ। বায়ু সর্বদা উচ্চচাপ থেকে নিম্নচাপের দিকে বয়ে যায়। বায়ুর গতিবেগ নির্ধারিত হয় বায়ুচাপের তালের শক্তির ওপর। বায়ুচাপের ঢাল যত বাড়ে বায়ুর গতিবেগ তত বাড়ে। (ii) পৃথিবীর আবর্তন ও কোরিওলিস বল পৃথিবীর আবর্তনে সৃষ্ট বল হল কোরিওলিস বল। এই বলের প্রভাব নিরক্ষরেখায় শূন্য এবং মেরুতে সর্বাধিক। এই বলের প্রভাবে বায়ু উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে প্রবাহিত হয়, যা ফেরেলের সূত্র (বিজ্ঞানী উইলিয়াম ফেরেল-এর নামানুসারে ১৮৫৫) নামে পরিচিত। (iii) বাইস ব্যালট সূত্র : ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ডাচ আবহবিদ বাইস ব্যালট বায়ুচাপের তারতম্য ও বায়ুপ্রবাহের মধ্যে একটি সম্পর্ক নির্ধারণ করেন। তাঁর মতে উত্তর গোলার্ধে বায়ুপ্রবাহের দিকে পিছন করে দাঁড়ালে ডানদিকে উচ্চচাপ এবং বামদিকে নিম্নচাপ থাকে। দক্ষিণ গোলার্ধে-এর ঠিক বিপরীত অবস্থা হয়। এটি হল বাইস ব্যালট সূত্র। (iv) ঘর্ষণের প্রভাব ভূপৃষ্ঠের সাথে বায়ুর সংঘর্ষে বায়ু ধীর গতিসম্পন্ন হয়। উচ্চতা যত বাড়ে বাধা তত কমে বলে বায়ুর বেগ বাড়ে। সংঘর্ষঞ্জনিত কারণেই স্থলভাগ অপেক্ষা সমুদ্রে বায়ুর বেগ বেশি।
প্রশ্ন ৫ বিভিন্ন প্রকার নিয়ত বায়ুর গতিপ্রকৃতির ব্যাখ্যা দাও। [মা.প. [১৮]
উত্তর : পৃথিবীতে ৭টি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়ের ওপর ভিত্তি করে তিনপ্রকার নিয়ত বায়ু প্রবাহিত হয়- (ক) আয়ন বায়ু, (খ) পশ্চিমা বায়ু, (গ) মেরু বায়ু। (ক) আয়ন বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে উভয় গোলার্ধে যে বায়ু প্রবাহিত হয় তা হল আয়ন বায়ু। ফেরেল-এর সূত্রানুসারে উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে যথাক্রমে উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু ও দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু রূপে বয়ে যায়।
গতিবেগ : উত্তর গোলার্ধে এই বায়ুর বেগ ১৬ কিমি/ঘণ্টা এবং দক্ষিণ গোলার্ধে ২২ কিমি/ঘণ্টা। জলবায়ুর ওপর প্রভাব (i) এই বায়ুর প্রভাবে ক্রান্তীয় মণ্ডলে মহাদেশের পূর্বে প্রবল বৃষ্টি হয় এবং পশ্চিম অংশ বৃষ্টিহীন থাকে বলে মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে। (ii) নিরক্ষীয় অন্যলে এই বায়ু মিলিত ও ঊর্ধ্বমুখী হয়ে প্রবল বৃষ্টি ঘটায়। - মেৰু বায়ু নিম্নচাপ পশ্চিমা বা নিম্নচাপ- নিয়ত বায়ুপ্রবাহ (খ) পশ্চিমা বায়ু কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয়ের দিকে উভয় গোলার্ধে যে বায়ু বয়ে যায় তা হল পশ্চিমা বায়ু। ফেরেল-এর সূত্রানুসারে এই বায়ু বেঁকে উত্তর গোলার্ধে দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু এবং দক্ষিণ গোলার্ধে উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু রূপে। প্রবাহিত হয়। গতিকো : উত্তর গোলার্ধে এই বায়ু ধীরে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে প্রবল বেগে বয়। তাই দক্ষিণ গোলার্ধে এই বায়ুকে সাহসী পশ্চিমা বায়ু বলা হয়।
জলবায়ুর ওপর প্রভাব: (i) এই বায়ুপ্রবাহে উপক্রান্তীয় মণ্ডলে মহাদেশের পশ্চিমে বৃষ্টি ও তুষারপাত ঘটে। (ii) ভূমধ্যসাগরীয় •
জলবায়ু অঞ্চলে শীতকালে এই বায়ু প্রবেশ করে বৃষ্টিপাত ঘটায়।।
(গ) মেরু বায়ু : দুই মেরুদেশীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে - মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়দ্বয়ের দিকে প্রবাহিত বায়ু হল মেরু । বায়ু। এই বায়ু ফেরেল-এর সূত্রানুসারে উত্তর গোলার্ধে উত্তর স পূর্ব এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ-পূর্ব মেরু বায়ুরূপে প্রবাহিত হয়।
গতিবেগ : উত্তর গোলার্ধের তুলনায় দক্ষিণ গোলার্ধে এই ন বায়ুর বেগ বেশি। জলবায়ুর ওপর প্রভাব : (i) মেরু থেকে আগত অত্যন্ত শীতল ■। এই বায়ুর প্রভাবে শীতকালে কানাডা, সাইবেরিয়ায় শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়ে। (ii) দক্ষিণ গোলার্ধে এই বায়ুর সাথে উয়-আর্দ্র সমুদ্র । বায়ুর সংঘর্ষে ঘূর্ণবাতের উৎপত্তি ঘটে।
প্রশ্ন ৬) নিয়ত বায়ুর শ্রেণিবিভাগ করে প্রধান একপ্রকার নিয়ত বায়ুপ্রবাহের গতিবেগ ও জলবায়ুর ওপর এর প্রভাব ব্যাখ্যা করো।
উত্তর : স্থায়ী ৭টি বায়ুচাপ-এর ওপর ভিত্তি করে ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে নিয়মিতভাবে সারাবছরে প্রবাহিত বায়ু হল নিয়ত বায়ু। এটি তিনপ্রকার (1) আमন বায়ু (ii) পশ্চিমা ব নিম্নে আয়ন বায়ু সম্পর্কে (iii) মেরু বায়ু। আলোচনা করা হল। (i) আয়ন বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে আয়ন বায়ুর প্রভাব নির্দিষ্ট পথে (আয়ন শব্দের অর্থ 'পথ') প্রবাহিত বায়ু হল আফ বায়ু। পালতোলা জাহাজের যুগে এই বায়ুর পথ ধরে বাণিজ্য হ বলে এর অপর নাম “বাণিজ্য বায়ু'। উভয় গোলার্ধে এই বা ৫°৩৫" অক্ষরেখার মধ্যে বাহিত হয়।
• প্রবাহের দিক : ফেরেল-এর সূত্রানুসারে এই বায়ু উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বামদিকে বেঁকে যথাক্রমে উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু ও দক্ষিণ-পূর্ব আয়ন বায়ু রূপে প্রবাহিত হয়। * গতিবেগ : উত্তর গোলার্ধে এই বায়ুর গড় বেগ ১৬ কিমি/ঘণ্টা কিন্তু দক্ষিণ গোলার্ধে ২২ কিমি/ঘণ্টা।
• জলবায়ুর ওপর প্রভাব : (i) এই বায়ুপ্রবাহের কারণেই ক্রান্তীয় মণ্ডলে মহাদেশের পূর্বদিকে প্রবল বৃষ্টি হয়। (ii) পশ্চিম অংশে অনাবৃষ্টি থাকে বলে ৫টি বড়ো বড়ো মরুভূমি (সাহারা, কালাহারি, সোনেরান, আটাকামা, অস্ট্রেলিয়া) সৃষ্টি হয়েছে। (iii) নিরক্ষীয় অঞ্চল হল ITCZ |
প্রশ্ন | ৭ | বায়ুচাপ বলয়ের সঙ্গে নিয়ত বায়ুর সম্পর্ক ব্যাখ্যা করো। ★★
উত্তর : ভূপৃষ্ঠে স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়গুলির ওপর নির্ভর করে সারাবছর ধরে যে বায়ু ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে প্রবাহিত হয়, তাকেই নিয়ত বায়ু বলে। সাতটি স্থায়ী বায়ুচাপ বলয়ের ওপর ভিত্তি করে উভয় গোলার্ধে তিনপ্রকার নিয়ত বায়ু প্রবাহিত হয়—(i) আয়ন বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে নিরক্ষীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে যে দুটি বায়ু সারাবছর ভূপৃষ্ঠের সমান্তরালে প্রবাহিত হয়, তাকে আয়ন বায়ু বলে। এই বায়ু 'বাণিজ্য বায়ু' নামেও পরিচিত। ফেরেল-এর সূত্রানুসারে এই বায়ু উত্তর গোলার্ধে ডান দিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে গিয়ে যথাক্রমে উত্তর পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব আয়ন বায়ু নামে প্রবাহিত হয়।
(ii) পশ্চিমা বায়ু : কর্কটীয় ও মকরীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে দুই মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়ের দিকে যে বায়ু সারাবছর প্রবাহিত হয়, তাকেই পশ্চিমা বায়ু বলে। ফেরেল সূত্রানুসারে এই বায়ুদ্বয় উত্তর গোলার্ধে ডানদিকে ও দক্ষিণ গোলার্ধে বাম দিকে বেঁকে গিয়ে যথাক্রমে দক্ষিণ-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু এবং উত্তর-পশ্চিম পশ্চিমা বায়ু রূপে প্রবাহিত হয়।
(iii) মেরু বায়ু : সুমেরু ও কুমেরু দেশীয় উচ্চচাপ বলয়দ্বয় থেকে দুই মেরুবৃত্ত প্রদেশীয় নিম্নচাপ বলয়দ্বয়ের দিকে যে দুটি বায়ু সারাবছর প্রবাহিত হয় তাকেই মেরু বায়ু বলে। ফেরেল-এর সূত্রানুসারে এই বায়ুদ্বয় বেঁকে গিয়ে উত্তর গোলার্ধে উত্তর-পূর্ব মেরু বায়ু এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দক্ষিণ-পূর্ব মেরু বায়ু নামে প্রবাহিত হয়।
পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা বোর্ড (WBBSE)-এর সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে এখানে যান 👉 গ্যাসীয় পদার্থ
ReplyDelete