দশম শ্রেণীর ভূগোল ভারত : অবস্থান, প্রসাশনিক বিভাগ পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর | class 10 5th chapter questions answers 2024 geography suggetion geography subject | - SM Textbook

Fresh Topics

Friday, October 6, 2023

দশম শ্রেণীর ভূগোল ভারত : অবস্থান, প্রসাশনিক বিভাগ পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর | class 10 5th chapter questions answers 2024 geography suggetion geography subject |

  দশম শ্রেণীর ভূগোল ভারত : অবস্থান, প্রসাশনিক বিভাগ পঞ্চম অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর | class 10 5th chapter questions answers 2024 geography suggetion geography subject |



দশম শ্রেণীর ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায় পড়তে click korun 


A. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর সংক্ষেপে লেখো 

প্রশ্ন ১। ভারতের অক্ষাংশগত অবস্থান লেখো। 

উত্তর : ভারত দক্ষিণে ৮°৪´ উত্তর অক্ষাংশ (কন্যাকুমারিকা অন্তরীপ) থেকে উত্তরে ৩৭°৬′ উত্তর অক্ষাংশ (কাশ্মীরের ইন্দিরা কল) পর্যন্ত বিস্তৃত। অক্ষাংশগত ভাবে ভারত উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত।

প্রশ্ন ২| ভারতের দ্রাঘিমাংশগত অবস্থান লেখো। 

উত্তর : ভারত পশ্চিমে ৬৮°৭′ পূর্ব দ্রাঘিমা (গুজরাটের পশ্চিম সীমা) থেকে ৯৭°২৫′ পূর্ব দ্রাঘিমা (অরুণাচল প্রদেশের পূর্ব সীমা) পর্যন্ত বিস্তৃত। দ্রাঘিমাগত দিক থেকে ভারত পূর্ব গোলার্ধে অবস্থিত ৷ 

প্রশ্ন ৩। ভারতের প্রমাণ দ্রাঘিমারেখা কোন্ কোন্ শহরের ওপর দিয়ে প্রসারিত হয়েছে? 

উত্তর : ভারতের প্রমাণ দ্রাঘিমারেখা (৮২°৩০′ পূ.) এলাহাবাদ, সোনহাট এবং কোকনদের মধ্যে দিয়ে প্রসারিত হয়েছে। 

প্রশ্ন ৪ | কোন্ দুটি রেখা ভারতকে পূর্ব-পশ্চিমে এবং উত্তর-দক্ষিণে ভাগ করেছে? 

উত্তর : কর্কটক্রান্তি রেখা (২৩১/২° উত্তর) ভারতকে উত্তর-দক্ষিণে এবং ৮০° পূর্ব দ্রাঘিমারেখা ভারতকে পূর্ব-পশ্চিমে ভাগ করেছে। 

প্রশ্ন। ৫ | ভারতের মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণতম বিন্দু এবং ভারতের দক্ষিণতম স্থলবিন্দু কোনটি ? 

উত্তর : ভারতের মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণতম বিন্দু হল কন্যাকুমারিকা অন্তরীপ এবং ভারতের দক্ষিণতম স্থলবিন্দু হল আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণে অবস্থিত ইন্দিরা পয়েন্ট।

প্রশ্ন ৬। ভারতের স্থলসীমা ও উপকূলের দৈর্ঘ্য কত?

 উত্তর : ভারতের স্থলসীমার দৈর্ঘ্য হল প্রায় ১৫,২০০ কিমি। ভারতের উপকূলের (মূলভূখণ্ড, লাক্ষাদ্বীপ এবং দ্বীপপুঞ্জের উপকূল নিয়ে) মোট দৈর্ঘ্য হল প্রায় ৭৫১৭ কিমি। 

প্রশ্ন ৭। ভারতের সীমানা বর্ণনা করো। 

উত্তর : ভারতের উত্তরে হিমালয় পর্বত এবং চিন, নেপাল, ভুটান অবস্থিত। ভারতের পশ্চিমে পাকিস্তান ও আরব সাগর, পূর্বে মায়ানমার ও বাংলাদেশ, বঙ্গোপসাগর এবং দক্ষিণে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। ও ভারতমহাসাগর। 

প্রশ্ন | ৮ | উপদ্বীপ (Peninsula) কাকে বলে? 

উত্তর : তিনদিক জলভাগ দ্বারা বেষ্টিত স্থলভাগকে উপদ্বীপ বলে। যেমন—ভারত হল একটি উপদ্বীপ, কারণ ভারতের তিনদিকে রয়েছে ৩টি সাগর (পূর্বে বঙ্গোপসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর এবং দক্ষিণে ভারতমহাসাগর)। ভারত পৃথিবীর বৃহত্তম উপদ্বীপ। 

 প্রশ্ন ৯। উপসাগর (Bay) কাকে বলে?

 উত্তর : তিনদিক স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত সমুদ্রভাগকে উপসাগর বলে। যেমন—খাম্বাত উপসাগর, কচ্ছ উপসাগর ইত্যাদি। 

প্রশ্ন | ১০ | ভারতের বৃহত্তম ও ক্ষুদ্রতম রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নাম লেখো। 

উত্তর  :  ভারতের বৃহত্তম রাজ্য-রাজস্থান। বৃহত্তম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল—আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপ। • ক্ষুদ্রতম রাজ্য—গোয়া।  ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল-লাক্ষাদ্বীপ।  

প্রশ্ন ১১ | ভারতের পশ্চিমে এবং দক্ষিণে অবস্থিত উপসাগর গুলির নাম লেখো। 

উত্তর : পশ্চিম ভারতের উপসাগর হল – কচ্ছ উপসাগর ও খাম্বাত উপসাগর। দক্ষিণ ভারতের উপসাগর হল-মান্নার উপসাগর। 

প্রশ্ন | ১২ | ভারতের কোন্ রাজ্যের জেলার সংখ্যা সর্বাধিক এবং কোন্ রাজ্যের জেলার সংখ্যা সর্বনিম্ন ? 

উত্তর :  ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের জেলার সংখ্যা সর্বাধিক— ৭২টি এবং ত্রিপুরা ও সিকিম জেলার সংখ্যা সর্বনিম্ন –(৪টি করে)। 

প্রশ্ন | ১৩ | সর্বাধিক রাজ্য দ্বারা সীমানা স্পর্শ করেছে এমন ২টি রাজ্যের নাম লেখো। 

উত্তর : সর্বাধিক রাজ্য দ্বারা সীমানা স্পর্শকারী রাজ্য হল- (১) উত্তরপ্রদেশ— ৮টি (উত্তরাখণ্ড, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, হিমাচলপ্রদেশ, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান (২) অসম - ৭টি (পশ্চিমবঙ্গ, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশ)।

 ১৪ | ভারতের রাজ্যসমূহের পুনর্গঠনের প্রধান ভিত্তি কি ছিল?

উত্তর : ভারতের রাজ্যসমূহের পুনর্গঠনের প্রধান ভিি হল- (1) ভাষা (11) সংস্কৃতি, (iii) প্রশাসনিক দক্ষতাবৃদ্ধি, | (iv) অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং (v) প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক সাদৃশ্য।  

প্রশ্ন । ১৫ | ভারতের দাক্ষিণাত্যকে উপদ্বীপ বলা হয় কেন ? 

উত্তর : তিনদিক জলভাগ দ্বারা বেষ্টিত কোনো স্থলভাগকে উপদ্বীপ বলে। ভারতের দক্ষিণ ভাগ অর্থাৎ দাক্ষিণাত্যকে উপদ্বীপ বলা হয় কারণ এর পূর্বে বঙ্গোপসার, পশ্চিমে আরব সাগর ও দক্ষিণে ভারতমহাসাগর অর্থাৎ তিনদিকে জলভাগ অবস্থান করছে। 

প্রশ্ন ১৬ | ভারতবর্ষ পৃথিবীর ঠিক কোথায় অবস্থিত ? 

উত্তর : ভারতবর্ষ পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত, আবার পূর্ব-পশ্চিমের হিসাবে পূর্ব গোলার্ধের ঠিক মাঝখানে অবস্থিত। এ ছাড়া বলা যায়, ভারত এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে অবস্থিত। INTERESTING FACTS ভারতের প্রगान Greenwich Mean Time এর থেকে ৫ ঘণ্টা ৩০ মিনিট এগিয়ে,  Australian Eastern Standard Time এর তুলনায় ৪ ঘণ্টা পিছিয়ে এবং American Eastern Standard Time এর থেকে ১০.৫ ঘণ্টা এগিয়ে থাকে। 

প্রশ্ন । ১৭ | পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া আর কোন্ কোন্ রাজ্যের সীমানা বাংলাদেশকে স্পর্শ করে আছে? 

উত্তর : পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম রাজ্য বাংলাদেশের সীমানা স্পর্শ করে আছে। 

প্রশ্ন । ১৮ | পাকিস্তানের সাথে ভারতের কোন্ কোন্ রাজ্যের সীমানা স্পর্শ করে আছে? 

উত্তর : ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব, রাজস্থান ও গুজরাট রাজ্যের সীমানা পাকিস্তানের সীমানা স্পর্শ করে আছে।

 ব্যাখ্যামূলক উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর:

প্রশ্ন ১। ভারতকে বৈচিত্র্যময় দেশ' বলা হয় কেন?

  উত্তর : ভারতে প্রাকৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক দিক থেকে বহু বৈচিত্র্য পরিলক্ষিত হয়। ভারতের অবস্থান ও আয়তনগত বিশালতার জন্য সারা দেশজুড়ে মানুষের ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি, জীবনধারণের ধরন, পোশাক-পরিচ্ছদ, খাদ্যাভ্যাস সবই ভিন্ন। এমনকি প্রাকৃতিক দিক দিয়েও ভারতের কোথাও সুউচ্চ পার্বত্য অঞ্চল, পাহাড়ি অঞ্চল, কোথাও বন্ধুর মালভূমি কোথাও-বা নদী অধ্যুষিত সমভূমি অবস্থান করছে। ভারতের এই সর্বাঙ্গীন বৈচিত্র্যময়তার জন্য ভারতকে 'বৈচিত্র্যময় দেশ' বলা হয়। বৈচিত্র্যতার কারণেই ভারতকে 'পৃথিবীর ক্ষুদ্র সংস্করণ' (Epitome of the World) বলা হয়।

প্রশ্ন। ২ । ভারতবর্ষকে উপমহাদেশ বলার কারণ কী? মহাদেশের সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত ভারত এবং (চিন ও আফগানিস্তান বাদে) ভারতের অন্যান্য প্রতিবেশী দেশগুলি যেমন : পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কার মধ্যে প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ এত নিবিড় যে, এই ছ-টি দেশকে একসঙ্গে ভারতীয় উপমহাদেশ বলা হয়। ভারতের মতো এইসব দেশগুলিও এককালে কেন্দ্রীভূত ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অঙ্গ হিসেবে বহুদিনই একসঙ্গে অবস্থান করেছে, আবার ভারতের কিছু আগে পরে স্বাধীনতাও লাভ করেছে। এইসব দেশের মূল আইন এবং বৈদেশিকনীতিও অনেকটা একই রকমের। বিশেষ ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য ভারত এইসব দেশের মধ্যমণি হিসেবে অবস্থান করছে বলে মনে করা হয়। তাই এইসব দেশকে একসঙ্গে ভারতীয় উপমহাদেশ বলা হয়। 

প্রশ্ন। ৩। ভারতের কোন্ কোন্ রাজ্য ভেঙে নতুন রাজ্য গঠন করা হয়েছে লেখো।

 উত্তর : ভারতের বিহার রাজ্য ভেঙে হয় ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ রাজ্য ভেঙে হয় ছত্তিশগড়, উত্তরপ্রদেশ রাজ্য ভেঙে হয় উত্তরাখণ্ড এবং অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য ভেঙে গঠিত হয় তেলেঙ্গনা রাজ্য। 

প্রশ্ন ৪। ভারতের রাজ্য পুনর্গঠনে ভাষার ভূমিকা লেখো। 

উত্তর :  ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে রাজ্য পুনর্গঠনের জন্য ভাষার ভূমিকা ছিল সবচেয়ে বেশি। ভারতের কোনো বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ যে যে ভাষায় কথা বলেন, সেই সেই অঞ্চলগুলিকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়। যেমন—ওড়িয়া ভাষা প্রধান অঞ্চলকে ওড়িশা, বাংলা ভাষা প্রধান অঞ্চলকে পশ্চিমবঙ্গ বা অসমীয়া ভাষা প্রধান অঞ্চলকে অসম রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এই হিসেবেই তেলুগু, পাঞ্জাবি, তামিল, কাশ্মীরি ভাষা প্রধান অঞ্চলগুলি হল যথাক্রমে অন্ধ্রপ্রদেশ, পাঞ্জাব, তামিলনাডু, জম্মু ও কাশ্মীর প্রভৃতি।

 প্রশ্ন ৫। ভারতের উপদ্বীপীয় অবস্থানের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো। 

উত্তর : ভারতের দক্ষিণাংশ উপদ্বীপীয় ভারত নামে পরিচিত। এই অংশকে দাক্ষিণাত্য বলে। এরূপ উপদ্বীপীয় অবস্থানের সুবিধাগুলি হল—(১) জলবায়ু : সমুদ্র কাছাকাছি অবস্থান করায় এই অংশের জলবায়ু সমভাবাপন্ন। (২) আত্মরক্ষা : সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ায় সমুদ্রপথে বহিঃশত্রুরা সহজে আক্রমন করতে পারে না। (৩) ব্যাবসাবাণিজ্য : জলপথে অন্যান্য দেশের সাথে ব্যাবসা- বাণিজ্যের সুবিধা হয়। (৪) মৎস্যশিকার : পার্শ্ববর্তী সমুদ্র থেকে ভারত প্রচুর মৎস্যশিকার করে। এ ছাড়া মণিমুক্তা ও খনিজসম্পদও পাওয়া যায়। (৫) নৌবিদ্যা : ভারত নৌবিদ্যায়ও যথেষ্ট পারদর্শী । 

প্রশ্ন ৬। ভারতের স্থলসীমানা বর্ণনা করো। 

উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিম প্রান্তেস্থলভাগের সীমানা দেখতে পাওয়া যায়। এর দৈর্ঘ্য ১৫,২০০ কিমি। উত্তরের সুবিশাল হিমালয় পর্বত ভারত = চিনের প্রাকৃতিক সীমানা হিসেবে অবস্থান করছে। ভুটানে পূর্বাংশ থেকে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত ভারত ও চিনের সীমান ম্যাকমোহন লাইন নামে পরিচিত। ভারতের উত্তর-পশ্চিমে ভারা ও পাকিস্তানের সীমারেখা হল র‍্যাডক্লিফ লাইন। উত্তর-পূর্বে ভারত-মায়ানমার ও ভারত-বাংলাদেশ সীমারেখাও বর্তমান। 

প্রশ্ন ৭। ভারতের জলভাগের সীমানা। 

উত্তর : ভারতের দক্ষিণে প্রায় ৬১০০ কিমি অংশজুড়ে অবস্থান করছে ভারতের জলভাগের সীমানা। ভারতের জলভাগের সীমানা নানান সাগর, উপসাগর ও মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত। যেমন—ভারতের সর্বদক্ষিণে রয়েছে ভারতমহাসাগর এবং ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে রয়েছে মান্নার উপসাগর, পক্ উপসাগর ও পপ্রণালী। ভারতের পূর্বে রয়েছে বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিমে রয়েছে আরব সাগর এবং গুজরাটের কচ্ছ ও কাথিয়াবাড়ের মধ্যে রয়েছে কচ্ছ উপসাগর ও কাথিয়াবাড়ের দক্ষিণ পূর্বে রয়েছে কাম্বে বা খাম্বাত উপসাগর। 

রচনাধর্মী প্রশ্ন :

প্রশ্ন ১। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতের রাজ্য পুনর্গঠনের ইতিহাস সম্পর্কে লেখো।

 উত্তর : ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্টের পর দেশীয় রাজ্যের বর্ণনা : স্বাধীনতা লাভের পর ভারতের রাজ্যসংখ্যা ছিল : ৯টি রাজ্যপাল শাসিত প্রদেশ, ৫টি চিফ কমিশনার শাসিত প্রদেশ, এবং ৫৫০ -এর বেশি দেশীয় রাজ্য। এই দেশীয় রাজ্যগুলি আবার ৩ ধরনের—(১) বৃহৎ দেশীয় রাজ্য (১০০-র কিছু বেশি), (২) ক্ষুদ্র দেশীয় রাজ্য (প্রায় ১০০টি), (৩) অতিক্ষুদ্র দেশীয় রাজ্য (প্রায় ৩৫০টি)। •

 ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের আগের অবস্থা : ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারির আগে ভারতে মোট ২৮টি অঙ্গরাজ্য ও একটি টেরিটরি ছিল। এখানকার ভাগগুলি হল— 'ক' শ্রেণির | রাজ্য (রাজ্যপাল) শাসিত) | 'খ' শ্রেণির রাজ্য (রাজ্য সম্মেলন) 'গ' শ্রেণির রাজ্য (চিফ কমিশনার শাসিত) (১) অসম, (২) বিহার, (৩) পশ্চিমবঙ্গ, (৪) ওড়িশা, (৫) মধ্যপ্রদেশ, (৬) পাঞ্জাব, (৭) যুক্তপ্রদেশ, (৮) বোম্বাই (৯) মাদ্রাজ। (১) হায়দরাবাদ, (২) জম্মু ও কাশ্মীর, (৩) মহীশূর, (৪) রাজস্থান, (৫) মধ্য ভারত | ইউনিয়ন, (৬) পাতিয়ালা ও পূর্ব পাঞ্জাব রাজ্য ইউনিয়ন,(৭)সৌরাষ্ট্র ইউনিয়ন,(৮)ত্রিবাঙ্কুর কোচিন ইউনিয়ন, (৯) বিন্ধ্য প্রদেশ। (১) আজমীর, (২) ভূপাল, (৩) বিলাসপুর, (৪) কোচবিহার, (৫) কুর্গ, (৬) দিল্লি, (৭) হিমাচল প্রদেশ, (৮) কচ্ছ, (৯) মণিপুর, (১০) ত্রিপুরা। 'ঘ' শ্রেণির রাজ্য (১) আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ। 

১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের রাজ্য পুনর্গঠন : প্রধানত ভাষাকে ভিত্তি করে ১৯৫৬ খ্রি. ১ নভেম্বর রাজ্য পুনর্গঠন করা হয়। ভারতের রাজ্যগুলির পুনর্গঠনকালে প্রধানত : (১) ভাষা, (২) সংস্কৃতি, (৩) প্রশাসনিক দক্ষতাবৃদ্ধি, (৪) অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং (৫) প্রাকৃতিক ভৌগোলিক সাদৃশ্য—এই ৫টি বিষয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। (ক) অঙ্গরাজ্য | (১৪টি) (রাজ্যপাল | শাসিত) (১) আসাম, (২) ওড়িশা, (৩) উত্তর প্রদেশ (৪) জম্মু ও কাশ্মীর, (৫) বিহার, (৬) অন্ধ্রপ্রদেশ, (৭) বোম্বাই, (৮) কেরালা, (৯)মধ্যপ্রদেশ, (১০) মহীশূর, (১১) মাদ্রাজ, (12) পাঞ্জাব, (১৩) রাজস্থান (১৪) পশ্চিমবঙ্গ। (খ) কেন্দ্রশাসিত | অঞ্চল (৬টি) (১) দিল্লি, (২) হিমাচল প্রদেশ, (৩) মণিপুর, (৪) ত্রিপুরা, (৫) আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, (৬) লাক্ষাদ্বীপ, মিনিকয় ও আমিনদিভি দ্বীপপুঞ্জ।


প্রশ্ন ২ । ভারতে রাজ্য পুনর্গঠনের মূল ভিত্তি কী ছিল ? 

উত্তর : ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১ নভেম্বর রাজ্য পুনর্গঠন করা হয় প্রধানত (১) ভাষা, (২) সংস্কৃতি, (৩) প্রশাসনিক দক্ষতাবৃদ্ধি (৪) অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও (৫) প্রাকৃতিক ও ভৌগোলিক সাদৃশ্য-এর ওপর ভিত্তি করে। 

(১) ভাষা : বহু ভাষাভাষী মানুষের দেশ ভারতবর্ষের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বসবাসকারী বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের স্বার্থ রক্ষার কথা ভেবে, ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে মূলত ভাষার ভিত্তিতে ভারতের রাজ্যগুলোর পুনর্গঠন করা হয়। ভারতের কোনো বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ যে যে ভাষায় কথা বলেন, সেই সেই অঞ্চলগুলিকে রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়। যেমন—ওড়িয়া ভাষাপ্রধান অঞ্চলকে ওড়িশা, বাংলা ভাষাপ্রধান অঞ্চলকে পশ্চিমবঙ্গ কিংবা অসমীয়া ভাষাপ্রধান অঞ্চলকে অসম রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়। এই হিসেবে তেলুগু, পাঞ্জাবি, তামিল, কাশ্মীরি ভাষাপ্রধান অঞ্চলগুলি হল যথাক্রমে অন্ধ্রপ্রদেশ, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, জম্মু-কাশ্মীর প্রভৃতি। 

(২) সংস্কৃতি : এক-একটি বিশাল অঞ্চলের অধিবাসীদের ভাষা এক হলেও তাদের সামাজিক রীতিনীতি ও আচার অনুষ্ঠান, চিন্তাভাবনা, অনুশাসন, সংস্কার এবং আঞ্চলিক সংস্কৃতির পার্থক্য থাকায় প্রশাসনিক সুবিধার জন্য কোনো কোনো সময় বড়ো রাজ্য ভেঙে ছোটো রাজ্য করার প্রয়োজন অনুভূত হয়। ভাষা এক (হিন্দি) হলেও যেমন- (

ক) ঝাড়খণ্ড অঞ্চলের অধিবাসীদের সঙ্গে উত্তর বিহারের অধিবাসীদের চিন্তাভাবনা এক না-হওয়ায় বিহার রাজ্যকে ভেঙে ২টি পৃথক রাজ্যে (যেমন–বিহার ও ঝাড়খণ্ড) পরিণত করা হয়েছে।

 (খ) উত্তরপ্রদেশের পাহাড়ি অঞ্চল উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে এই রাজ্যে সমভূমিতে বসবাসকারী বাসিন্দাদের চিন্তাভাবনা, সংস্কার ও অনুশাসনের পার্থক্য থাকায় বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যকে ভেঙে উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাঞ্চল, এই দুটি পৃথক রাজ্যে পরিণত করা হয়েছে।

(৩) প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি : ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে মূলত ভাষার ভিত্তিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যগুলোর পুনর্গঠন করা হলেও পরবর্তীকালে সবসময় এই নীতি অনুসরণ করা যায়নি যেমন—

 (ক) প্রধান ভাষা হিন্দি হলেও উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়কে পাঁচটি পৃথক রাজ্যে পরিণত করা হয়েছে, কারণ— একটি রাজ্যের মর্যাদা পেলে হিন্দিভাষী ওই বিশাল রাজ্যের শাসনকার্য পরিচালনা করতে বিভিন্ন ব্যাপারেই অনেক প্রশাসনিক অসুবিধা এবং জটিলতার সৃষ্টি হত। এই জন্যই ওই হিন্দিভাষী বিশাল অঞ্চলকে পাঁচটি পৃথক রাজ্যে পরিণত করা হয়।

 (খ) পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা রাজ্যে অধিবাসীদের প্রধান ভাষা বাংলা এবং এদের মিলিত আয়তন ভারতের অনেক একক রাজ্যেরতুলনায় কম হলেও পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা রাজ্যের অবস্থান সম্পূর্ণ আলাদা ভৌগোলিক অঞ্চলে এবং এদের মাঝে রয়েছে অন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশ। কাজেই ভাষা এক হলেও প্রধানত ভৌগোলিক বাধার জন্য একটি রাজ্য হিসেবে প্রশাসনিক কাজকর্ম চালানো অসম্ভব হত, তাই পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরা দুটি পৃথক রাজ্যের মর্যাদা পেয়েছে।  

(৪) অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা : ভারতের বিভিন্ন অংশে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সমানভাবে ঘটাতে এবং উন্নয়নের পরিকল্পনা যথাযথ ভাবে গ্রহণ করতে রাজ্যগুলিকে পুনরায় ভাগ করা হয়েছে। এই কারণে উত্তরপ্রদেশ রাজ্য ভেঙে উত্তরাখণ্ড রাজ্যের সৃষ্টি হয়েছে

 (৫) প্রাকৃতিক ভৌগোলিক সাদৃশ্য : কোনো অঞ্চলের প্রাকৃতিক ভৌগোলিক সাদৃশ্যের বিভিন্নতা থাকলে অনেক ক্ষেত্রে তা আঞ্চলিব সংস্কৃতির পার্থক্যের ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করে এবং প্রশাসনিক জটিলতার সৃষ্টি হয়। এই জন্য ভারতের রাজ্য পুনর্গঠনের সময় প্রাকৃতিক ভৌগোলিক সাদৃশ্যের ওপরও লক্ষ রাখা হয়েছে।

প্রশ্ন ৩। ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে বর্তমান সময়কাল পর্যন্ত ভারতের অঙ্গরাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের পুনর্বিন্যাসের বর্ণনা দাও।

 উত্তর : : ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২০১৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ভারতের রাজ্যের পুনর্গঠনের ইতিহাস নীচে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল- ১৯৫৬ | দিল্লি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। 

১৯৫৭ আসাম রাজ্যের উত্তর-পূর্ব অংশ নিয়ে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত অঞ্চল (NEFA) এবং দক্ষিণ-মধ্য অংশ নিয়ে নাগাল্যান্ড কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হয় ৷ রাজস্থান রাজ্যের কিছু অংশ মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত হয়। মাদ্রাজ ও অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের 

১৯৫৯ | | বোম্বাই রাজ্য ভেঙে মহারাষ্ট্র ও গুজরাট নামে সীমানা পরিবর্তন হয়।

 8. ১৯৬০ | দুটি রাজ্য গঠন করা হয়। পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তির ফলে প্রাপ্ত অসম, পাঞ্জাব ও পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী কিছু অংশ সংশ্লিষ্ট দুটি রাজ্যের সঙ্গে যুক্ত করা হয়।

১৯৬২ | গোয়া, দমন, দিউ, দাদরা ও নগর হাভেলী। | পণ্ডিচেরী প্রভৃতি পোর্তুগিজ শাসিত অঞ্চলরে | কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

 ১৯৬৩ নাগাল্যান্ড পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের স্বীকৃতি পায়। পাঞ্জাব রাজ্য দু-ভাগে বিভক্ত হয়ে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের সৃষ্টি হয়। 9.

 ১৯৬৬ চণ্ডীগড় নামে আলাদা একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হয়। A 

১৯৬৯ ১৯৬৮ মাদ্রাজ রাজ্যের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয়। তামিলনাডু। মেঘালয় নামে আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সৃষ্টি করে।

 ১০. ১৯৭০ পাঞ্জাবের কুলু, ক্যাংড়া, লাহুল-স্পিতি, হামিরপুর প্রভৃতি অংশ হিমাচল প্রদেশের সঙ্গে যোগ করে হিমাচল প্রদেশকে পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়।

 ১১. ১৯৭১ মণিপুর, ত্রিপুরা, হিমাচল প্রদেশ ও মেঘালয়কে পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়। 

১৯৭২ উত্তর-পূর্ব ভারতের তিনটি রাজ্য যথা—মণিপুর মেঘালয় ও ত্রিপুরা আত্মপ্রকাশ করে। 

১৩. ১৯৭৩ মহীশূরের নাম পরিবর্তন করে কর্ণাটক রাখা হয়। লাক্ষাদ্বীপ, মিনিকয় ও আমিনদিভি দ্বীপপুে নাম লক্ষদ্বীপ বা লাক্ষাদ্বীপ রাখা হয়।

১ ৪. ১৯৭৫ | সিকিমকে অঙ্গরাজ্যরূপে ভারতের সঙ্গে করা হয়।সিকিমকে অঙ্গরাজ্যরূপে ভারতের সে ১৪. করা হয়। 

১৫. ১৯৮৬ পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা ভেঙে উত্তর পরগনা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা গঠন করা হয়। মিজোরাম অঙ্গরাজের মর্যাদা লাভ করে। 

১৯৮৭ অরুণাচল প্রদেশ ও গোয়া পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা পায়। দমন ও দিউ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চ হিসাবে মর্যাদা লাভ করে। 9. 

৮. ১৯৮৮ পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার দার্জিলি কার্শিয়াং, কালিম্পং মহকুমা ও শিলিগুড়ি কিছু অংশ নিয়ে দার্জিলিং গোরখা পার্বত্য পরিষ নামে একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তৈরি করা হয়।

 ১৯৯২ বোম্বাই শহরের নাম পাল্টে হয় ‘মুম্বাই’ও ‘মাদ্রাজ শহরের নাম পরিবর্তন করে ‘চেন্নাই’ করা হয়। মধ্যপ্রদেশ রাজ্য ভেঙে ছত্তিশগড় রাজ্য গঠি হয় (রাজধানী রায়পুর)। | উত্তরপ্রদেশ রাজ্য ভেঙে উত্তরাখন্ড রাজ্য হয় (রাজধানী দেরাদুন) | বিহার রাজ্য ভেঙে ঝাড়খণ্ড রাজ্য গঠিত হ (রাজধানী রাঁচি)।

 ২০০২ পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলা ভেঙে পূর্ব মেদিনীপুর ও পশ্চিম মেদিনীপুর নামে দুটি | জেলা গঠিত হয়। 

 ২০১৪ অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য ভেঙে ২৯তম তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠন করা হয়। 

No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();