ঠাণ্ডা লড়াইয়ের যুগ (সপ্তম অধ্যায়) – দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন 2023 || HS Class 12 History || - SM Textbook

Fresh Topics

Tuesday, July 25, 2023

ঠাণ্ডা লড়াইয়ের যুগ (সপ্তম অধ্যায়) – দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন 2023 || HS Class 12 History ||

  

ঠাণ্ডা লড়াইয়ের যুগ (সপ্তম অধ্যায়) – দ্বাদশ শ্রেণীর ইতিহাস সাজেশন 2023 || HS Class 12 History ||





১. কেন্নানের বেষ্টনী নীতি বলতে কী বোঝো ?

উত্তরঃ আমেরিকার রাষ্ট্রদূত জর্জ এফ . কেন্নান এক প্রবন্ধে রুশ আগ্রাসন প্রতিরোধ এবং রাশিয়াকে সীমাবদ্ধ করে রাখার জন্য যে নীতি পেশ করেন সেটাই কেন্নানের বেষ্টনী নীতি । 

২. লেভারে প্ল্যান বলতে কী বোঝো ? 

উত্তরঃ ভিয়েতনামের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালীন ভিয়েতমিনদের সমূলে ধ্বংস করার লক্ষ্যে ফরাসি সেনাপতি যে নতুন পরিকল্পনা নেন সেটাকেই বলা হয় নেভারে প্ল্যান । 

৩. কারা চিনে কমিউনিস্ট পার্টি গড়ে তোলেন ? 

উত্তরঃ চৌ – এন – লাই , চু – তে , মাও – সে – তুং , লিও – কাও – চি প্রমুখের উদ্যোগে চিনে কমিউনিস্ট পার্টির জন্ম হয় । 

৪. ইয়াল্টা সম্মেলন কেন ডাকা হয় ? 

উত্তরঃ এই সম্মেলনের উদ্দেশ্যগুলি ছিল– ( ক ) যুদ্ধ – পরবর্তী সময়ে জার্মানির ভবিষ্যৎ নির্ণয় করা ( খ ) পোল্যান্ডকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত সমস্যা মীমাংসা করা ( গ ) বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান গঠন । 

৫. ব্যালফুর ঘোষণাপত্র কী ? 

উত্তরঃ ইংরেজ বিদেশ সচিব আর্থার ব্যালফু প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় একটি ঘোষণাপত্র জারি করেন । এতে বলা হয় , প্যালেস্টাইনে ইহুদিদের জন্য জাতীয় বাসভূমি গড়ে তোলায় সচেষ্ট হবে ব্রিটিশ সরকার । 

৬. কমিকন কীভাবে গড়ে ওঠে ?

উত্তরঃ মার্শাল পরিকল্পনার পাল্টা হিসেবে ১৯৪৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন কমিকন ( Council for Mutual Economic Assistance বা COMECON ) নামে একটি আর্থিক সহায়তা পরিষদ গড়ে তোলে । 

৭. জোটনিরপেক্ষ নীতি বলতে কী বোঝো ? 

উত্তরঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন সাম্যবাদী জোট এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবাধীন জোট এর বাইরে থেকে নিরপেক্ষ অবস্থানের নীতিকেই বলা হয় জোটনিরপেক্ষ নীতি । 

৮. বার্লিন অবরোধ বলতে কী বোঝো ? 

উত্তরঃ বার্লিনে রুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাশিয়া ১৯৪৮ – এর ২৪ জুলাই বার্লিনে প্রবেশের সড়কপথগুলিতে অবরোধ শুরু করে । এটাই বার্লিন অবরোধ নামে বিখ্যাত । 

৯. ভিয়েতনামের যুদ্ধ বলতে কী বোঝো ? 

উত্তরঃ ইন্দোচিনে হো – চি – মিনের নেতৃত্বে ভিয়েতনামবাসীর দীর্ঘ লড়াই ভিয়েতনামের যুদ্ধ বলে পরিচিত । ১৯৪৫–৭৫ খ্রিঃ পর্যন্ত চলেছিল এই যুদ্ধ । 

১০. পঞ্চশীল নীতি কাকে বলে ? 

উত্তরঃ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নীতির ভিত্তিতে চিনের প্রধানমন্ত্রী চৌ – এন – লাই ১৯৫৪ সালে দ্বিতীয়বার ভারতে এসে দ্বিপাক্ষিক পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে ৫ টি নীতি স্থির করেন । এটাকেই বলা হয় পঞ্চশীল নীতি 

১১. লং মার্চ বলতে কী বোঝো ? 

উত্তরঃ ১৯৩৬ – এর ১৬ অক্টোবর মাও – সে – তুং এবং চু – তের উদ্যোগে কমিউনিস্টদের ঐক্য বৃদ্ধির জন্য কিয়াংসি প্রদেশ থেকে শেনসি পর্যন্ত ৬০০০ মাইল পথ অতিক্রম করার ঘটনা লং মার্চ নামে বিখ্যাত । 

১২. কেন মার্শাল পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছিল ? 

উত্তরঃ এর উদ্দেশ্য ছিল– ( ক ) রাশিয়ার আগ্রাসন প্রতিরোধ করা । ( খ ) ইউরোপের আর্থিক সংকট কাটিয়ে ওঠা ( গ ) মার্কিন বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং ( ঘ ) কমিউনিস্টদের অগ্রগতি প্রতিহত করা । 

১৩. বুলগানিন কেন বিখ্যাত ? 

উত্তরঃ সোভিয়েত রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ছিলেন বুলগানিন । 

১৪. সুয়েজ সংকট কেন দেখা যায় ? 

উত্তরঃ মিশরের রাষ্ট্রপতি গামাল আবদেল নাসেরের ১৯৫৬ সালে সুয়েজ খাল জাতীয়করণের কথা ঘোষণা করাকে কেন্দ্র করেই সুয়েজ সংকট দেখা দেয় । 

১৫. ভিয়েত কং বলতে কী বোঝো ? 

উত্তরঃ ১৯৬০ খ্রিঃ উভয় ভিয়েতনামে কমিউনিস্টদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী সামরিক বাহিনীকে বলা হতো ভিয়েত কং । 

১৬. LAFP এর সম্পূর্ণ নাম 

উত্তরঃ Liberation Armed Force ( PLAF ) I The People’s — 

১৭. ট্রুম্যান নীতি গৃহীত হয় কেন ? 

উত্তরঃ রাশিয়ার নেতৃত্বে সাম্যবাদী আদর্শের প্রসার রোধে যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রুম্যান ১৯৪৭ সালে ট্রুম্যান নীতি ঘোষণা করেন ।

১. ‘ মাই লাই ’ ঘটনাটি ঘটে – (ক) ইন্দোনেশিয়ায় (খ) জাপানে (গ) ভিয়েতনামে (ঘ) কিউবাতে ।

উত্তরঃ (গ) ভিয়েতনামে

২. ফিদেল কাস্ত্রো ছিলেন – (ক) মার্কসবাদী (খ) সমাজবাদী কিউবার রাষ্ট্রপতি (গ) সাম্যবাদী (ঘ) পুঁজিবাদী ।

উত্তরঃ (খ) সমাজবাদী কিউবার রাষ্ট্রপতি

৩. ‘ দিয়েন – বিয়েন – ফু’র ঘটনা ঘটেছিল— (ক) কোরিয়ায় (খ) ভিয়েতনামে (গ) মিশরে (ঘ) আলজেরিয়ায় ।

উত্তরঃ (খ) ভিয়েতনামে

৪. আধুনিক মিশরের জনক – (ক) নাসের (খ) কাস্ত্রো (গ) মাও সে – তুং  (ঘ) ভুট্টো । 

উত্তরঃ (ক) নাসের

৫. সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ প্রতিষ্ঠিত হয় – (ক) ১৯৪৩ খ্রি : (খ) ১৯৪৪ (গ) ১৯৪৫ (ঘ) ১৯৪৬ 

উত্তরঃ (গ) ১৯৪৫ 

৬. ইয়মকিপুর যুদ্ধ ( ১৯৭৩ খ্রি . ) কাদের মধ্যে সংঘটিত হয় ? (ক) সিরিয়া – মিশর (খ) আরব – ইজরায়েল (গ) আরব – সিরিয়া (ঘ) আরব – আমেরিকা 

উত্তরঃ (খ) আরব – ইজরায়েল 

৭. হ্যারি ট্রুম্যান ছিলেন মার্কিন – (ক) পররাষ্ট্র সচিব (খ) বিদেশমন্ত্রী (গ) অর্থমন্ত্রী (ঘ) রাষ্ট্রপতি ।

উত্তরঃ (ঘ) রাষ্ট্রপতি ।

(ঘ) ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে । 

৮. মার্শাল পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল— (ক) রাশিয়া (খ) আমেরিকা (গ) ব্রিটেন (ঘ) ইতালি ।

উত্তরঃ (খ) আমেরিকা

৯. কবে সুয়েজ খাল জাতীয়করণ – এর কথা ঘোষিত হয় ? (ক) ১৯৫৬ (খ) ১৯৫৮ (গ) ১৯৬০ (ঘ) ১৯৫৯ । 

উত্তরঃ (ক) ১৯৫৬

১০. ভিয়েতনামের গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন- (ক) সুকর্ণ (খ) নগুয়েন গিয়াপ (গ) বাও দাই (ঘ) হো – চি – মিন – 

উত্তরঃ (ঘ) হো – চি – মিন । 

১১. বার্লিন অবরোধ হয়েছিল – (ক) ১৯৪৪ (খ) ১৯৪৬ (গ) ১৯৪৫ (ঘ) ১৯৪৮ খ্রিঃ । 

উত্তরঃ (গ) ১৯৪৫

১২. দিয়েন – বিয়েন – ফু’র যুদ্ধে জয়ী হয়েছিল— (ক) ভিয়েতনাম (খ) ফ্রান্স (গ) ইন্দোনেশিয়া (ঘ) রাশিয়া । 

উত্তরঃ (ক) ভিয়েতনাম

১৩. বান্দুং সম্মেলনে চিনের প্রতিনিধিত্ব করেন— (ক) মাও – সে – তুঙ (খ) চৌ – এন – লাই (গ) সান ইয়াৎ – সেন (ঘ) চেন – তু – শিউ ৷ 

উত্তরঃ (খ) চৌ – এন – লাই

১৪. প্রতিষ্ঠার সময়ে ন্যাটোর সদস্যসংখ্যা ছিল— (ক) ৯ (খ) ১১ (গ) ১২ (ঘ) ২৪ টি দেশ । 

উত্তরঃ (গ) ১২

১৫. পঞ্চশীল নীতি ঘোষণা করেন— (ক) মাও জেদং (খ) জওহরলাল নেহরু (গ) জিমি কার্টার (ঘ) মার্শাল টিটো । 

উত্তরঃ (খ) জওহরলাল নেহরু

১৬. মার্শাল পরিকল্পনা গ্রহণকারী দেশের সংখ্যা ছিল— (ক) ১৬ (খ) ২০ (গ) ২২ (ঘ) ২৫ । 

উত্তরঃ (ক) ১৬

১৭. ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে সোভিয়েত বিরোধী যে সামরিক চুক্তি হয়েছিল তা হলো— (ক) ন্যাটো (খ) ব্রাসেলস (গ) সিমেটো (ঘ) ওয়ারশ । 

উত্তরঃ (ক) ন্যাটো

১৮. কিউবায় ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি নির্মাণ করেছিল— (ক) আমেরিকা (খ) ব্রিটেন (গ) ফ্রান্স (ঘ) রাশিয়া । 

উত্তরঃ (ঘ) রাশিয়া ।

১৯. ২৭ দফা দাবি পেশ করা হয়েছিল কোন সম্মেলনে ? (ক) বান্দুং (খ) বেলগ্রেড (গ) তেহরান (ঘ) নতুন দিল্লি। 

উত্তরঃ (খ) বেলগ্রেড

২০. গণপ্রজাতন্ত্রী চিন প্রতিষ্ঠিত হয় – (ক) ১৯৪৫ (খ) ১৯৪৭ (গ) ১৯৪৮ (ঘ) ১৯৪৯ খ্রিঃ ।

উত্তরঃ (ঘ) ১৯৪৯ খ্রিঃ ।

২১. সিয়াং ফু ঘটনাটি ঘটে – (ক) ১৯৩৬ খ্রিঃ (খ) ১৯৪০ : (গ) ১৯৪২ : (ঘ) ১৯৪৫ খ্রিঃ ।

উত্তরঃ (ক) ১৯৩৬ খ্রিঃ

১. সুয়েজ সংকট কেন দেখা দিয়েছিল ? অথবা , সুয়েজ সংকটের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো । এই সংকটে ভারতের কী ভূমিকা ছিল ? 

উত্তরঃ মিশরের উত্তর – পূর্বে ইংরেজ ও ফরাসিদের তত্ত্বাবধানে সুয়েজ খাল খনন করা হয় ১৮৫৯ সালে । ১৮৬৯ সালে এটা দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে জাহাজ চলতে শুরু করে । ইউনিভার্সাল সুয়েজ ক্যানাল কোম্পানি নামে এক সংস্থাকে ৯৯ বছরের দীর্ঘমেয়াদি লিজে খালের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয় । তবে মেয়াদ পূরণের আগে মিশরের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি গামাল আবদেল নাসের সুয়েজ খাল এবং নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাটির জাতীয়করণ করেন । ফলে সুয়েজ খালকে ঘিরে তৈরি হয় সমস্যা । এটাই ‘ সুয়েজ সংকট ‘ । 

সুয়েজ সংকটের গুরুত্ব / তাৎপর্য : 

  • 1. সুদৃঢ় আরব ঐক্য : সুয়েজ সংকটকে ঘিরে পশ্চিম – বিরোধী মনোভাব আরব দেশগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করে । মিশর ও সিরিয়া ঐক্যবদ্ধ হয়ে গঠিত হয় ‘ সংযুক্ত আরব প্রজাতন্ত্র ‘ । নাসের হন তার প্রথম রাষ্ট্রপতি । 
  • 2. নাসেরের মর্যাদা বৃদ্ধি : আরব জাতীয়তাবাদ জয়যুক্ত হলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নাসেরের মর্যাদা বেড়ে যায় । তিনি আধুনিক সালাদিন ‘ অভিধা পান । মিশর ও সিরিয়া ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে গড়ে তোলে সংযুক্ত আরব প্রজাতন্ত্র ( UAR । প্রথম রাষ্ট্রপতি হন নাসের । 
  • 3. ব্রিটেন – ফ্রান্সের কর্তৃত্ব হ্রাস : সুয়েজ সংকটকে কেন্দ্র করে যে দ্বিতীয় আরব – ইজরায়েল যুদ্ধ হয় তার জেরে ব্রিটেন ও ফ্রান্সের কর্তৃত্বের অবসান হয় । পদত্যাগ করেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি ইডেন । অন্যদিকে , আলজেরিয়াও ফ্রান্সের অধীনতা থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা ফিরে পায় । 
  • 4. শত্রুতা বৃদ্ধি  ঃ সুয়েজ সংকটের জেরে মিশর – ইজরায়েলের শত্রুতা বৃদ্ধি পায় । ইজরায়েলকে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক জটিলতা বাড়ে । 
  • 5. সুয়েজে মিশরের কর্তৃত্ব  ঃ সুয়েজ খালকে জাতীয়করণ করার পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক দুনিয়া স্বীকৃতি দেয় । ফলে সুয়েজ খালের উপর মিশরের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় । 

সুয়েজ সংকট সমাধানে ভারতের ভূমিকা : ভারত সুয়েজ খাল ব্যবহার করত । সেজন্য এই সমস্যা সমাধানে ভারতের স্বার্থ জড়িত ছিল । 

  • 1. প্রাথমিক প্রচেষ্টা : ভারত মনে করত , সুয়েজ খাল মিশরের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ । তবে এও জানিয়ে দিয়েছিল , খাল যারা ব্যবহার করে তাদের পরামর্শও মিশরের মেনে চলা উচিত । 
  • 2. বিদেশমন্ত্রীর মাধ্যমে : ১৯৫৬ সালে লন্ডন সম্মেলনে মিশরের কোনো প্রতিনিধি যোগ দেননি।ভারতের প্রতিনিধিবিদেশমন্ত্রীকৃয়মেননদু’পক্ষের মধ্যে যোগসূত্রের ভূমিকা পালন করেন । কৃণ্ণ মেনন পাঁচ দফা পরিকল্পনা পেশ করেন । তিনি সুয়েজ খাল ব্যবহারকারীদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের পাশাপাশি মিশরের উপর খাল রক্ষার পরামর্শ দেন । 
  • 3. প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে : ব্রিটেন ও ফ্রান্সের উসকানিতে মিশরের উপর ইজরায়েলের আক্রমণের নিন্দা করে ভারত । প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু এটিকে ‘ নগ্ন আক্ৰমণ ‘ বলে সমালোচনা করেন । 
  • 4. জাতিপুঞ্জের হস্তক্ষেপ : জাতিপুঞ্জের সদস্য হিসেবে মিশরে সেনা পাঠায় ভারত । যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে এবং বিদেশি সৈন্য অপসারণের বিষয়ে জাতিপুঞ্জে আলোচনা চলাকালে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

২. বিংশ শতকের দ্বিতীয় ভাগের আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিতে গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের ভূমিকা বিশ্লেষণ করো । 

 অথবা , ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের উত্থানের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আলোচনা করো । 

উত্তরঃ সূচনা : সুদীর্ঘ ৩০ বছর ধরে চিনের কমিউনিস্ট আন্দোলনের ফলশ্রুতি ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব , যা চিনের একটি গণপ্রজাতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করে । গণপ্রজাতন্ত্রী চিনে ৪ মে ( ১৯৪৯ ) আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে যে নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটেছিল তার ফলেই ১৯৪৯ – এ গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে । | 

চিনা কমিউনিস্ট দলের উদ্দেশ্য : চিনা কমিউনিস্ট দলের উদ্দেশ্য ছিল— 

  • 1. চিনে বিদেশি সাম্রাজ্যবাদের অবসান ।
  • 2. চিনের রাষ্ট্রীয় সংহতি রক্ষা করা এবং 
  • 3. চিনা সমরনায়কদের ( war lords ) বিলোপ সাধন । 

কমিউনিস্ট ও কুয়োমিনটাং প্রতিদ্বন্দ্বিতা : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের আত্মসমর্পণের পর চিনে কমিউনিস্ট ও কুয়োমিনটাং দলের মধ্যেকার যুদ্ধকালীন সমঝোতা নষ্ট হয় । কুয়োমিনটাং দল ও চিনা কমিউনিস্ট বাহিনীর মধ্যে জাপান অধিকৃত চিনের ভূখণ্ড দখল করা ও ফেলে যাওয়া বিপুল সমরাস্ত্র লাভের প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয় । উত্তর , দক্ষিণ ও মধ্যচিনের ১৮ টি যুক্তাঞ্চলের ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকায় কমিউনিস্টরাই এই দ্বন্দ্বে এগিয়ে যায় । 

লং মার্চ : মাঙ – জে – দঙের নেতৃত্বে চিনা কমিউনিস্টরা দক্ষিণ – পূর্ব চিনের ‘ কিয়াং – শি ’ প্রদেশ থেকে উত্তরে ‘ শেন – সি ‘ পর্যন্ত দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে পাড়ি দেয় । এই পদযাত্রা ইতিহাসে লং মার্চ নামে পরিচিত।

পদযাত্রার বর্ণনা : ৩৭০ দিন ধরে ( ১৯৩৪ খ্রি : ১৬ অক্টোবর ১৯৩৫ খ্রি : ২০ অক্টোবর ) পায়ে হেঁটে সুদীর্ঘ ২৫০০ কিমি পথ অতিক্রম করে পদযাত্রীরা ‘ শেন – সি ’ প্রদেশে পৌঁছায় । সরকারি সৈন্যবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করতে করতে তারা পায়ে হেঁটে অগ্রসর হয় । তবে এক লক্ষ মানুষের মধ্যে মাত্র ৮ হাজার জন শেষ পর্যন্ত জীবিত ছিল । 

লংমার্চের গুরুত্ব : লং মার্চ নানা কারণে চিনের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ । যেমন— 1. এই দীর্ঘ পদযাত্রা চলাকালীন কমিউনিস্ট নেতারা চিনের বিভিন্ন প্রদেশের মানুষ ও জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন । 2. কষ্টকর দীর্ঘ পদযাত্রার মধ্য দিয়ে চিনা কমিউনিস্টরা কষ্ট সহিয়ুতার শিক্ষা পেয়েছিল । 3. এই দীর্ঘ পদযাত্রার মধ্যে দিয়ে চিনের মাটিতে লালফৌজের অপ্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রকাশিত হয়েছিল । 

চিনা প্রজাতন্ত্র গঠন : চিনের মূল ভূখণ্ড থেকে উচ্ছেদ হয়ে চিয়াং কাইশেক ফরমোজা দ্বীপে আশ্রয় নেন । আর চিনের মূল ভূখণ্ডে মাও জে দ – এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় গণপ্রজাতন্ত্রী চিন । প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি হন মাও জে দঙ্ এবং প্রধানমন্ত্রী হন চৌ – এন – লাই । 

কমিউনিস্টদের সাফল্যের কারণ : মাও – জে – দহ্ – এর সাফল্যের কারণ হলো 1. কুয়োমিং তাং সরকারের দুর্নীতি ও অযোগ্যতা । 2. চিয়াং – কই – শেক শিল্পের বিশেষ উন্নতি ঘটাতে পারেননি এবং বস্ত্রশিল্পে শিশুশ্রমিক বন্ধের ব্যবস্থা নেননি । 3.  কৃষকদের দারিদ্র্য দূরীকরণে কুয়োমিং তাং সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি । এছাড়া কমিউনিস্ট সেনাপ্রধান লিন বিয়াও , চৌ তেই ( Chu Teh ) চি – এন – এই ( ch – en – yi ) প্রমুখ কুয়োমিং তাদের চেয়ে অনেক দক্ষ ও দূরদর্শী ছিলেন । 

উপসংহার : ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে মাও জে দ – এর নেতৃত্বে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয়শক্তি হিসেবে নয়া চিনের অভ্যুদয় আধুনিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা । 




No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();