ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক নবম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায় | - SM Textbook

Fresh Topics

Thursday, July 27, 2023

ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক নবম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায় |

 ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক নবম শ্রেণীর ইতিহাস প্রথম অধ্যায় |




অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:


প্রশ্নের মান- ০১

১. ফরাসি বিপ্লব কবে সংঘটিত হয়েছিল?

Ans. ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ জুলাই।


২. ফ্রান্সকে "ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুকর" কে বলেছেন?

Ans. অ্যাডাম স্মিথ। 


৩. কার আমলে ফরাসি বিপ্লব হয়েছিল?

Ans. ষোড়শ লুইয়ের আমলে।


৪. "আমিই রাষ্ট্র" - কথাটি কে বলেছিল?

Ans. চতুর্দশ লুই।


৫. ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রবক্তা কে ছিলেন?

Ans. মন্তেস্কু।


৬. ফরাসি বিপ্লবের তিনটি নীতি কী ছিল?

Ans. সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা।


৭. টেনিস কোর্টের শপথ কবে অনুষ্ঠিত হয়?

Ans. ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুন।


৮. "স্পিরিট অফ দি লজ" গ্রন্থের লেখক কে?

Ans. মন্তেস্কু।

৯. "আমি যা ইচ্ছা করি তা-ই আইন"- কথাটি কে বলেছিল?

Ans. পঞ্চদশ লুই।


১০. করভি কী?

Ans. করভি ছিল ফ্রান্সে প্রচলিত বাধ্যতামূলক শ্রমদানের মাধ্যমে আদায়কৃত কর।


১১. টাইথ কী?

Ans. প্রাক-বিপ্লব ফ্রান্সে টাইথ ছিল ধর্মকর।


১২. বাস্তিল দুর্গের পতন কবে হয়?

Ans. ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ জুলাই।



সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর:


প্রশ্নের মান- ০২


১. মন্তেস্কুর লেখা দুটি গ্রন্থের নাম লেখো।

Ans. "স্পিরিট অফ দি লজ" এবং "দ্য পার্সিয়ান লেটার্স"।


২. "লেতর দ্য ক্যাশে" কী? 

Ans. বিপ্লব পূর্ববর্তী ফ্রান্সে প্রচলিত লেতর দ্য ক্যাশে ছিল একধরনের গ্রেফতারি পরোয়ানা। এর মাধ্যমে কোনো ব্যাক্তিকে বন্দি করে দীর্ঘদিন বিনা বিচারে জেলে আটকা রাখা যেত।


৩. প্যারি কমিউন কী?

Ans. ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ জুলাই বাস্তিল দুর্গের পতনের পর বিপ্লবী জনতা প্যারিস শহরের প্রশাসন পরিচালনার উদ্দেশ্যে একটি কমিটি গঠন করেছিল। এটি প্যারি কমিউন নামে পরিচিত।

৪. ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকার ঘোষণায় কী বলা হয়েছিল?

Ans. ব্যক্তি ও নাগরিকের অধিকার ঘোষণায় বলা হয়-

a. স্বাধীনতা হলো মানুষের জন্মগত অধিকার।

b. আইনের চোখে সকলে সমান।

c. জনগণই হল সার্বভৌম ক্ষমতার উৎস।

d. বাক্‌স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্পত্তি বিভাগ ও দখল প্রভৃতি মানুষের সার্বজনীন অধিকার।


৫. অ্যাসাইনেট কী?

Ans. অ্যাসাইনেট ফরাসি সংবিধান সভা কর্তৃক প্রবর্তিত এক ধরনের কাগজের নোট। ফ্রান্সের প্রবল অর্থ সংকট দেখা দিলে সংবিধানসভা গির্জার বাজেয়াপ্তকরা ভুল সম্পত্তি আমানত রেখে তার ভিত্তিতে এই নোট চালু করে। 


৬. ডাইরেক্টরি শাসন কী?

Ans. ১৭৯৫ খ্রিস্টাব্দের সংবিধান অনুসারে ফ্রান্সের শাসনভার পাঁচজন ডাইরেক্টর বা ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই শাসন ব্যবস্থার "ডাইরেক্টরি শাসন" নামে পরিচিত। এই শাসনব্যবস্থা ছিল অত্যন্ত অদক্ষ ও দুর্নীতিগ্রস্ত।


৭. গিলোটিন কী?

Ans. ফ্রান্সের সন্ত্রাসের রাজত্বের সময় বিপ্লব বিরোধী ব্যক্তিদের যে যন্ত্র দ্বারা শিরচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হয়েছিল তা, গিলোটিন নামে পরিচিত।  


৮. জ্যাকোবিন কাদের বলা হত?

Ans. স্টেটস জেনারেল এর অধিবেশনকালে জ্যাকোবিন ক্লাবকে কেন্দ্র করে যে উগ্র বামপন্থী দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল এবং ফ্রান্সের সংকটকালে দেশে সন্ত্রাস শাসন যারা চালু করেছিল তারা, জ্যাকোবিন নামে পরিচিত।

৯. সেপ্টেম্বর হত্যাকান্ড কী?

Ans. ১৭৯২ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি রাজার ষড়যন্ত্রে বৈদেশিক আক্রমণের আশঙ্কায় ফ্রান্সের নিরাপত্তা বিপন্ন হয়। এই অবস্থায় প্যারিসের জনতা রাজার প্রতি সহানুভূতি সম্পন্ন বিপ্লবের শত্রুদের নির্বিচারে হত্যা করে (২-৬ সেপ্টেম্বর)। এই ঘটনা "সেপ্টেম্বর হত্যাকান্ড" নামে পরিচিত।


১০. থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া কী?

Ans. রোবসপিয়ার সন্ত্রাসের শাসনের দ্বারা ফ্রান্সের ব্যাপক হত্যাকাণ্ড চালান। এতে আতঙ্কিত হয়ে জ্যাকোবিন দল ১৭৯৪ সালের ২৭ এপ্রিল রোবসপিয়ার ও তাঁর অনুগামীদের বন্দি করে গিলোটিনে হত্যা করে। এই ঘটনা থার্মিডোরীয় প্রতিক্রিয়া নামে পরিচিত।


১১. অঁসিয়া রেজিম কী?

Ans. ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লবের পূর্ববর্তী সময়ে ফ্রান্সে যে স্বৈরাচারী রাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং বৈষম্যমূলক সামাজিক অবস্থা, বাধ্যতামূলক বেগার প্রথা, ভ্রান্ত কর ব্যবস্থা ও দুর্নীতিপূর্ণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বিরাজ করেছিল তাকে অঁসিয়া রেজিম বলে।

1. ফরাসি বিপ্লবের কারণগুলি কী ছিল ?

উঃ ফরাসি বিপ্লবের প্রধান কারণগুলি ছিল — [1] প্রবল স্বৈরাচারী ফরাসি রাজতন্ত্র জনগণের সমস্তরকম অধিকার হরণ করে ফ্রান্সকে 'রাজনৈতিক কারাগার'-এ পরিণত করে। [2] 'ভুল অর্থনীতির জাদুঘর' ফ্রান্সের তীব্র আর্থিক সংকট দেশবাসীকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়। [3] ফ্রান্সের তীব্র বৈষম্যমূলক সমাজ-কাঠামোয় মানুষ বিরক্ত হয়ে ওঠে। দার্শনিকরাও সমাজ ও রাষ্ট্রের ত্রুটিগুলি নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তোলেন।


2. ফরাসি বিপ্লবের প্রত্যক্ষ কারণ কী ?

উঃ ফরাসি রাজা চতুর্দশ লুই ও অভিজাত -প্রধান পার্লামেন্টের মধ্যে বিরোধ বাধলে রাজা পার্লামেন্ট মুলতুবি করেন। ফলে অভিজাতরা বিদ্রোহ করে রাজাকে নতিস্বীকারে বাধ্য করে। অভিজাতদের বিদ্রোহের বিরুদ্ধেই ফরাসি জনগণ বিদ্রোহ শুরু করে।


3. 'এস্টেট' বলতে কী বোঝায় ?

উঃ বিপ্লবের আগে ফরাসি সমাজব্যবস্থায় তিনটি পৃথক সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব ছিল। এক-একটি সম্প্রদায়কে 'এস্টেট' বলা হত।


4.  ফরাসি বিপ্লবের প্রাক্কালে ফ্রান্সে প্রচলিত প্রধান কয়েকটি করের নাম লেখো।

উঃ ফরাসি বিপ্লবের প্রাক্কালে ফ্রান্সে প্রচলিত প্রধান কয়েকটি কর ছিল—

[1] টাইলে বা ভূমিকর, [2] ক্যাপিটেশন বা উৎপাদন কর [3] ভিটিংয়েমে বা আয়কর, [4] গ্যাবেলা বা লবণ কর, [5] টাইদ বা ধর্মকর, [6] করভি বা শ্রমকর (প্রভুর কাজে বাধ্যতামূলক বেগার শ্রমদান) প্রভৃতি।


5. টাইদ' ও 'করভি’ কোন্ ধরনের কর ?

উঃ ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে টাইদ' ছিল গির্জা কর্তৃক আদায়িকৃত ধর্মকর এবং ‘করভি’ ছিল কৃষকের কাছ থেকে প্রভু কর্তৃক আদায়িকৃত বেগার শ্রম।


6. বিপ্লবের আগে ফ্রান্সে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কয়েকটি কারণ উল্লেখ করো। 

উঃ বিপ্লবের আগে ফ্রান্সে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের কয়েকটি উদাহরণ হল— [1] জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে অর্থনীতির ওপর চাপ, [2] ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি, [3] খাদ্যশস্যের মূল্য অন্তত ৬০-৬৫ শতাংশ বৃদ্ধি, [4] শস্যহানির ফলে খাদ্যাভাব প্রভৃতি।


7. ষোড়শ লুই তুর্গোকে কেন অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেছিলেন?

উঃ রাজা ষোড়শ লুইয়ের আমলে ফ্রান্সের যুদ্ধে অংশগ্রহণ, জাতীয় ঋণ ও তার সুদ পরিশোধ, রাজ পরিবারের বিলাসিতা, ভ্রান্ত করনীতি প্রভৃতি কারণে রাজকোশ প্রায় শূন্য হয়ে যায়। এই আর্থিক সংকট থেকে রেহাই পেতে ষোড়শ লুই তুর্গোকে অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করেন।


8. ষোড়শ লুইয়ের চারজন অর্থমন্ত্রীর নাম করো।

উঃ  ষোড়শ লুইয়ের চারজন অর্থমন্ত্রী হলেন তুর্গো, নেকার, ক্যালোন এবং ব্রিয়া।


9.‘লেতর দ্য ক্যাশে' কী ?

উঃ 'লেতর দ্য ক্যাশে হল বিপ্লবের আগে ফ্রান্সে প্রচলিত একধরনের রাজকীয় গ্রেফতারি পরোয়ানা। এই পরোয়ানার মাধ্যমে যে-কোনো ব্যক্তিকে বন্দি করে বিনা বিচারে দীর্ঘদিন জেলে আটকে রাখা যেত।


10.  প্রাক-বিপ্লব পর্বে ফ্রান্সের দুটি রাজকীয় পরোয়ানার উল্লেখ করো।

উঃ প্রাক-বিপ্লব পর্বে ফ্রান্সের দুটি রাজকীয় পরোয়ানা ছিল—

[1] লেতর দ্য ক্যাশে : এই পরোয়ানার দ্বারা যে-কোনো সাধারণ ফরাসি নাগরিককে বিনা বিচারে কারাগারে বন্দি করা যেত। [2] লেতর দ্য গ্রেস : এই পরোয়ানার দ্বারা অর্থের বিনিময়ে যে-কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শাস্তিপ্রদান থেকে রেহাই দেওয়া হত।


11. 'ইনটেনডেন্ট' কাদের বলা হয়? এরা অর্থলোলুপ নেকড়ে' নামে উপাধি পায় কেন? 

উঃ  [1] ফরাসি বিপ্লবের প্রাক্কালে প্রদেশের প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক কাজকর্মে দায়িত্ব পালনকারী অত্যন্ত দুর্নীতিগ্রস্ত একশ্রেণির কর্মচারী ছিল। তাদের ইনটেনডেন্ট বলা হত। [2] বিপ্লব-পূর্ব ফ্রান্সে ইনটেনডেন্টরা জনগণের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায় করত বলে এরা ‘অর্থলোলুপ নেকড়ে’ নামে উপাধি পায়।


12. ফ্রান্সকে 'রাজনৈতিক কারাগার' বলা হয় কেন ?

উঃ  ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে বিপ্লব-পূর্ব ফ্রান্সে ‘লেতর দ্য ক্যাশে' নামক এক ধরনের রাজকীয় গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রচলিত ছিল। এর মাধ্যমে যে- কোনো ব্যক্তিকে বন্দি করে বিনা বিচারে দীর্ঘদিন কারাগারে অথবা বাস্তিল দুর্গে আটকে রাখা যেত। এই কারণেই দার্শনিক ভলতেয়ার ফ্রান্সকে ‘রাজনৈতিক কারাগার’ বলে অভিহিত করেছিলেন। তাঁকেও বন্দিরূপে | বাস্তিল দুর্গে আটকে রাখা হয়েছিল।


13. ফরাসি রাজতন্ত্রের চরিত্র কেমন ছিল?

উঃ ফরাসি রাজতন্ত্র ছিল স্বৈরাচারী ও ঐশ্বরিক ক্ষমতায় বিশ্বাসী। এই রাজতান্ত্রিক শাসনে রাজাই ছিলেন দেশের সর্বময় কর্তা। এতে জনগণের কোনো ভূমিকা ছিল না ।


14. স্টেটস জেনারেল কী?

উঃ ‘স্টেটস জেনারেল' হল ফ্রান্সের জাতীয় প্রতিনিধি সভা। এই প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সাধারণ ফরাসিবাসীর সুবিধা-অসুবিধার কথা রাজার কাছে পৌঁছোেত। বাস্তবে ফ্রান্সের এই ‘স্টেটস জেনারেল’ ১৬১৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের বিপ্লবের আগে পর্যন্ত টানা ১৭৫ বছর বন্ধ ছিল।


15. কারা ‘প্যাট্রিয়টিক পার্টি' গঠন করেন?

উঃ মিরাবো, লাফায়েৎ, আবে সিয়েস প্রমুখ উদারপন্থী অভিজাতরা তৃতীয় সম্প্রদায়ে যোগ দিয়ে ‘প্যাট্রিয়টিক পার্টি’ গঠন করেন ।


1.ফ্রান্সকে ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুঘর বলা হয় কেন ?*

 (Museum of Economic Errors) 

উত্তর ফ্রান্সের আর্থিক অবস্থা ফরাসি বিপ্লবের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল। ফ্রান্সের রাজস্বব্যবস্থা ছিল ত্রুটিপূর্ণ। তা ছাড়া সরকার অমিতব্যয়িতা, বিলাসিতা, ব্যয়সংকোচে অনিচ্ছা, জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি।

ফ্রান্সের পরিস্থিতিকে ভয়ংকর করে তুলেছিল। এইসব কারণে বিশ্ব অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ (Adam Smith) তৎকালীন ফ্রান্সকে ভ্রান্ত। অর্থনীতির জাদুঘর’ (Museum of Economic Errors) বলেছেন। ত্রুটিপূর্ণ করব্যবস্থা : i.ফ্রান্সে কর আদায়ের ক্ষেত্রে কোনাে ন্যায়সংগত নীতি ছিল না। অভিজাত ও যাজকরা ছিলেন ফ্রান্সের বেশিরভাগ জমির মালিক। অথচ তারা কর দিতেন সরকারের আয়ের মাত্র ৪%। আর মােট রাজস্বের ৯৬% দিতে হত দরিদ্র কৃষকদের।

ii.সরকারের বাইসাৰি অন্যাফ্রান্সের রাজাদের বেহিসাবি অর্থব্যয়ের ফলে ফ্রান্সের অবথা শােচনীয় হয়ে পড়েছিল।

iii.যুণনীতির অযৌক্তিকতা। চতুর্দশ লুই ও পদশ লুইয়ের 'আমল বিভিন্ন যুদ্ধে যােগদানের ফলে ফ্রান্সের প্রচুর অর্থব্যয় হয়েছিল, যা ফরাসি অর্থনীতিকে দুর্বল করে দেয়। বাজকোশে সংকট । উপরােক্ত কারণে বিপ্লব-পূর্ব ফ্রান্সের রাজকোশে সংকট দেখা যায়। ষােড়শ লুইয়ের সময়ে তুর্গো, নেকার প্রমুখ অর্থমন্ত্রী অভিজাতদের বিরােধিতায় আর্থিক সমস্যা সমাধানের কাজটি সঠিকভাবে করতে না পারায় রাজকোশ প্রায় শূন্য হয়ে পড়ে।

iv। অর্থনৈতিক সংকট ; জনসংখ্যা বৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি ইত্যাদির ফলে।

প্রাক্-বিপ্লব পর্বে ফ্রান্সের অর্থনৈতিক সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে শস্যহানি ঘটলে এই সংকট আরও প্রবল হয় ফ্রান্সের এই অর্থনৈতিক বিপর্যয় কালক্রমে ফরাসি বিপ্লব সংগঠনে ইন্ধন জুগিয়েছিল।

.ফ্রান্সের করব্যবস্থা বৈষম্যমূলক ছিল কেন? 

উত্তর 

বৈষম্যমূলক করব্যবস্থা : ফ্রান্সের করব্যবস্থা বৈষম্যমূলক ছিল কারণ— ফরাসি রাজাদের সুনির্দিষ্ট কোনাে রাজস্বনীতি ছিল না। বাজেটও তৈরি হত না। তাই রাষ্ট্রীয় ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছিল। ফ্রান্সে প্রত্যক্ষ করের বােঝা দরিদ্র মানুষকেই বহন করতে হত। যাজক ও অভিজাতরা কোনাে প্রকার কর দিতেন না। ফলত করভার সকলের উপর বা সব অঞ্চলের উপর সমান ছিল না। কর আদায়ের ব্যবস্থাও ছিল ত্রুটিপূর্ণ। 

 কর প্রদানকারী : ফ্রান্সে আদায় করা মােট করের ৯৬% কর দিতে হত তৃতীয় সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষকে। অপরদিকে মাত্র ৪%কর দিত প্রথম ও দ্বিতীয় সম্প্রদায়।

কর আদায় ব্যবস্থা : ফ্রান্সে কর আদায়ের ব্যবস্থাও ছিল ত্রুটিপূর্ণ। সরকার এককালীন কর আদায়ের জন্য কিছু রাজকর্মচারী (ফারমিয়ের nজেনারেল) ও অভিজাতদের কর আদায়ের দায়িত্ব দিত। এই কর

আদায়কারীরা প্রজাদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট করের অতিরিক্ত কর আদায় করে নিত। বাড়তি কর আদায়ের জন্য তারা প্রজাদের উপর অকথ্য অত্যাচারও করত।

বাণিজ্যশুল্ক আদায়কারী শুল্কবিভাগের কর্মচারীরা নানাভাবে সরকারের পাওনা আত্মসাৎ করত এবং বণিকদের উপর অত্যাচার চালাত।এইসব কারণে বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ তৎকালীন ফ্রান্সকে ভ্রান্ত অর্থনীতির জাদুঘর’(Museum of Economic Errors) বলেও অভিহিত করেছিলেন

3.| টীকা লেখাে বুর্জোয়া। (liotir Jaalala)

বুর্জোয়া বা বুর্জোয়াসি (Bourgao|s|8) কথার অর্থ হল মধ্যবিত্ত শ্রেণি। অষ্টাদশ শতকের শেষদিকে মেগা বুর্জোয়াদের উদ্ভব সম্পর্কে বলেন যে, গ্রামের উদ্যমী ভাগ্যবান কৃষককুল শহরে গিয়ে

শ্রমিক, কারিগর ও শিল্পদ্রব্য নির্মাতা হিসেবে বিত্তশালী হয়ে বুর্জোয় নামে পরিচিত হয়।

শ্রেণিবিভাগ : বুর্জোয়া শ্রেণি তিন ভাগে বিভক্ত— ) উচ্চ বুর্জোয়া, (2) মধ্য বুর্জোয়া ও ) নিল বুর্জোয়।

1. উচ্চ বুর্জোয়া ; ধনবান এই শ্রেণির মধ্যে ছিল পুঁজিপতি, ব্যাংকার, ঠিকাদার, পরোক্ষ কর আদায়কারী, বড়ো ব্যবসায়ী প্রমুখ।

2। মধ্য বুর্জোয়া : বুর্জোয়া শ্রেণির দ্বিতীয় স্তরে ছিল মধ্য বুর্জোয়া বা পেটি বুর্জোয়া। এদের মধ্যে ছিল মূলত বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী। মানুষ। যেমন--- শিক্ষক, অধ্যাপক, ডাক্তার, লেখক, সাংবাদিক, দার্শনিক, আইনজীবী, শিল্পী প্রমুখ।

3। নিম্ন বুর্জোয়া : বুর্জোয়া শ্রেণির তৃতীয় স্তরে ছিল নিম্ন বুর্জোয়। এদের মধ্যে ছিল দোকানদার, কারিগর, শ্রমিক, ছােটো ব্যাবসাদার। বুর্জোয়া শ্রেণি বিদ্যা, বুদ্ধি ও ধনবলে অভিজাতদের চেয়ে বলীয়ান

ছিল, কিন্তু বংশকৌলীন্যের অভাবে সমাজে তাদের মর্যাদা ছিল কম। এই বুর্জোয়া শ্রেণি ফরাসি বিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।


4. সাঁকুলাে (Sans-culottes) বলতে কী বােঝায়?

সাঁকুলােৎ (Sans-culottes) বলতে বােঝায় শহরের নীচুতলার দরিদ্র মানুষদের। এর আভিধানিক অর্থ হল যারা অন্তর্বাস পরে না অর্থাৎ ব্রিচেস বা কুলােৎ ছাড়া ট্রাউজার পরে যারা। এদের অধিকাংশই ছিল নিরক্ষর ও খেটে খাওয়া মানুষ। এই সম্প্রদায়ের মধ্যে ছিল কারখানার শ্রমিক, মজুর, কারিগর, মুটে, মালি, চাকর, রাজমিস্ত্রি, কাঠুরে, জেলে, জলবাহক প্রমুখ।

সাকুলােৎদের জনসংখ্যা : ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে প্যারিস শহরের অধিকাংশ মানুষ ছিল সাঁকুলােৎ সম্প্রদায়ভুক্ত।

সাঁকুলাে শ্রেণির বৈশিষ্ট্য :

i.এরা শহরের নােংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করত।

ii. এরা গা-গতরে কাজ করে পেট চালাত এবং কাজ না থাকলে ভিক্ষাও করত।

iii. এদের মধ্যে অনেকে অসামাজিক কাজেও যুক্ত থাকত ও নানাভাবে গণ্ডগােল করত।

iv.শহরের ধনী মানুষরা এদের ঘৃণা করত।

v.স্বার্থান্বেষী রাজনীতির লােকেরা এদের নানাভাবে ব্যবহার করত। সাকুলােৎ তবে বলা যায়, সাঁকুলােত্রই ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ জুলাই বাস্তিল দুর্গের পতন থেকে শুরু করে নানাভাবে ফরাসি বিপ্লবকে এগিয়ে

নিয়ে গিয়েছিল।


4.টীকা লেখাে : অভিজাত বিদ্রোহ।

অথবা, অভিজাতরা কেন বিদ্রোহ করেছিল?

উত্তর ষােড়শ লুই ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে রাজা হওয়ার পর লক্ষ করেন যে, ফ্রান্সের রাজকোশ একেবারে শূন্য হয়ে পড়েছে। তিনি তুর্গো, নেকার, ক্যালােন, ব্রিয়া প্রমুখ অর্থমন্ত্রী নিয়ােগ করে এই আর্থিক সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করলে অভিজাতরা রাজার বিরােধিতা করেন।


প্রেক্ষাপট : অভিজাতদের বিরােধিতার ফলে রাজা বাধ্য হয়ে তাদের হাত থেকে আইন এবং কর সংক্রান্ত অধিকার কেড়ে নেন। এর ফলে ফ্রান্সের নানা স্থানে বিদ্রোহ দেখা দেয়।

i.অভিজাতরা অর্থমন্ত্রী ব্রিয়ার কর আদায় সংক্রান্ত কয়েকটি প্রস্তাব মেনে নিলেও স্ট্যাম্পকর ও ভূমিকরের প্রস্তাব বাতিল করে দেন। তারা দাবি করেন যে, একমাত্র স্টেট জেনারেলের কর আরােপের অধিকার আছে।

ii.ষােড়শ লুই পার্লামেন্টের কয়েকজন সদস্যের আচরণে উত্যক্ত হয়ে নিজের ভাই ডিউক অফ অর্লিয়েন্স-সহ তিনজন সদস্যকে নির্বাসিত করেন। এতে পার্লামেন্ট ক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে এবং অভিজাতরা রাজার বিরুদ্ধে কয়েকটি আইন পাস করে ইচ্ছামতাে নাগরিকদের গ্রেফতার, বিচারকদের অপসারণ প্রভৃতি বিষয়ে রাজার ক্ষমতা কেড়ে নেয়।

iii.পার্লামেন্টের আইনে ক্ষু বন্ধ হয়ে রাজা সমস্ত প্রদেশের পার্লামেন্টগুলি মুলতুবি করেন এবং ৫৭টি নতুন বিচারালয় স্থাপন করে নিজের প্রস্তাবিত সংস্কারগুলিকে আইনে পরিণত করেন।


বিদ্রোহের সূচনা : রাজা পার্লামেন্ট মুলতুবি করলে তার বিরুদ্ধে অভিজাতরা বিদ্রোহ শুরু করে দেন। রাজার বিরুদ্ধে অভিজাতদের বিদ্রোহে শীঘ্রই যাজক ও বুর্জোয়ারাও শামিল হন। ফলে অভিজাত বিদ্রোহ গণবিদ্রোহের আকার ধারণ করে। পার্লামেন্ট ও প্রাদেশিক সভা এই বিদ্রোহকে সমর্থন জানায়। এই অভিজাত বিদ্রোহ থেকেই ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ফরাসি বিপ্লবের সূচনা হয়।


গরত্ব : বুরবোঁ রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে অভিজাতদের বিদ্রোহ ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি ঘটনা। রাজা শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহীদের কাছে

i.এই অভ্যুত্থানে সুবিধাভােগী শ্রেণি রাজার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়। বুর্জোয়াদের সমর্থনে অভিজাত বিদ্রোহ রাজতন্ত্রবিরােধী আন্দোলনে পরিণত হয়।

ii.অভিজাত বিদ্রোহের চাপে রাজা স্টেটস জেনারেলের অধিবেশন ডাকতে বাধ্য হন। ফলে রাজার স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের মর্যাদায় আঘাত লাগে।

iii.রাজার ঐশ্বরিক ক্ষমতা ও স্বৈরতন্ত্রের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। ঐতিহাসিক লেফেভর (Lefebvre) অভিজাত বিদ্রোহকে অভিজাত বিপ্লব’ বলেছেন। এ কথা সত্য যে, বিদ্রোহের প্রথম পর্যায়ে অভিজাতরা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের হাত থেকে বিদ্রোহের নেতৃত্ব প্রথমে বুর্জোয়াদের হাতে এবং পরে সাকুলােৎ ও কৃষক শ্রেণির হাতে চলে যায়।


5.টীকা লেখাে : টেনিস কোর্টের শপথ (Tennis court Oath)। অথবা, টেনিস কোর্ট শপথ’বলতে কী বােঝাে?

উত্তর ফরাসি বিপ্লবের সূচনাপর্বের অন্যতম প্রধান ঘটনা ছিল টেনিস কোর্টের শপথ। ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ২০ জুন ফ্রান্সের জাতীয় সভার (স্টেট জেনারেল) প্রতিনিধিরা টেনিস কোর্টের মাঠে সমবেত হয়ে যে শপথগ্রহণ করেছিলেন, তা টেনিস কোর্টের শপথ’ নামে পরিচিত।

পটভূমি : ফরাসি সম্রাট ষােড়শ লুই ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় কুয়েসনে (Quesnay) ছিলেন ফরাসি সম্রাট পঞ্চদশ লুই (Louis XV)-এর চিকিৎসক। তিনি ১৭৫৮ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত ট্যাবলাে ইকনমিক' (Tableau économique) গ্রন্থে তার অর্থনৈতিক চিন্তাধারা প্রকাশ করেন।

রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণমূক্ত অবাধ বাণিজ্য নীতির অপর নাম লেসে ফেয়ার (Laissez- Faire)। এই কথাটি জনপ্রিয় করে তােলেন গুর্নে (Gournay)। সভার অধিবেশন আহ্বান করেন। এই অধিবেশনে তৃতীয় শ্রেণির প্রতিনিধিরা শ্রেণিভিত্তিক ভােটদানের পরিবর্তে মাথাপিছু ভােটদানেরঅধিকার দাবি করেন। সম্রাট ষােড়শ   তৃতীয় শ্রেণির দাবি নাকচ করে দেন। তখন তৃতীয় শ্রেণির প্রতিনিধিরা মিরাব্যুৎ, লাফায়েৎ ও আবে সিয়েসের নেতৃত্বে পাশের টেনিস কোর্টের মাঠে সমবেত হয়ে শপথগ্রহণ করেন


শপথ : তৃতীয় শ্রেণির প্রতিনিধিরা টেনিস কোর্টের মাঠে শপথ নিয়েছিলেন যে- ফ্রান্সের জন্য একটি নতুন সংবিধান রচনা করা পর্যন্ত তারা এই স্থান ত্যাগ করবে না। তাদের দাবি ছিল—

তৃতীয় শ্রেণির সদস্যদের মাথাপিছু ভােটের দাবি মেনে নিতে হবে তাদের একটি নতুন সংবিধান রচনার অধিকার দিতে হবে।


টেনিস কোর্টের শপথ

ফলাফল : টেনিস কোর্টের শপথের ফলে প্রথম দুই এস্টেট গুরুত্বহীন হয়ে পড়ে এবং ফরাসি জাতির নেতৃত্ব গ্রহণ করে তৃতীয় এস্টেটের প্রতিনিধিরা। তৃতীয় শ্রেণির সদস্যদের মাথাপিছু ভােট ও নতুন সংবিধান রচনার দাবি সম্রাট ষােড়শ লুই শেষ পর্যন্ত মেনে নিতে বাধ্য হন এবং ২৭ জুন পুনরায় জাতীয় সভার অধিবেশন আহ্বান করেন। ফলে ফরাসি বিপ্লবের পথ সুগম হয়। অনেক ঐতিহাসিক টেনিস কোর্টের শপথকে ফরাসি বিপ্লবের সূচনাপর্ব বলে অভিহিত করেছেন।


5.ফরাসি জনতা কেন বাস্তিল দুর্গ আক্রমণ করে? অথবা, টিকা লেখো : বাস্তিল দুর্গের পতন (Fall of Bastille)

উত্তর বাস্তিল দুর্গ ছিল ফরাসি রাজতন্ত্রের অত্যাচারের অন্যতম কেন্দ্র এই দুর্গে রাজতন্ত্রের বিরােধী ব্যক্তিদের বন্দি করে রাখা হত ও অত্যাচার করা হত। তাই জনগণের কাছে বাস্তিল দুর্গ ছিল ফরাসি রাজতন্ত্রের অত্যাচারের প্রতীক। ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সের বিদ্রোহী জনগণ বাস্তিল দুর্গ আক্রমণ করে ধ্বংস করেছিল।

বাস্তিল দুর্গের পতনের কারণ : খাদ্যদ্রব্যের মূল্য হ্রাস ও মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে সােচ্চার হয়ে ওঠা জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য প্যারিস নগর কর্তৃপক্ষ তাদের উপর আক্রমণ চালায়। সেইসঙ্গে সম্রাট যােড় লুই-এ -এর জনপ্রিয় অর্থমন্ত্রী নেকার (Necker)-কে পদচ্যুত করার সংবাদে। জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ফলে শহরের বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে জনতার সংঘর্ষ বাধে। উন্মত্ত জনতা অধিক আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহের জন্য স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের প্রতীক' বাস্তিল দুর্গ আক্রমণ করে।


বাস্তিল দুর্গ আক্রমণ ও ধবংস : প্যারিস শহরের উত্তেজিত জনতা ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ জুলাই কুখ্যাত বাস্তিল দুর্গ দখল করে ধ্বংস করে দেয়। সমস্ত বন্দিরাও মুক্তি পায়।


ফলাফল : বাস্তিল দুর্গের পতনের ফলে রাজা যােড়শ লুই-এর স্বৈরশাসনের অবসান হয়।

2। রাজা জাতীয় পরিষদকে স্বীকৃতি দেন এবং এই সময় থেকে রাষ্ট্রের প্রকৃত ক্ষমতা আইনসভার হাতে চলে যায়।

[3] ফ্রান্সের প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের সূচনা হয় এবং অভিজাততন্ত্রের পতন আসন্ন হয়ে ওঠে। প্রায় ২০ হাজার অভিজাত দেশত্যাগী হয়।

[4] বাস্তিলের পতন কৃষক বিদ্রোহে ইন্ধন জোগায়, সামন্ততন্ত্রের পতনের পথ প্রস্তুত এবং পৌরবিপ্লবেরও সূচনা করে। ঐতিহাসিক গুডউইন (Goodwin) বলেন- “বাস্তিলের পতনের মতাে বিপ্লবের আর কোনাে ঘটনার এত বহুমুখী ও সুদূরপ্রসারী ফলাফল ছিল না।


6.ফিজিওক্র্যাট (Physiocrats) মতবাদের প্রবক্তা কারা ?এই মতবাদের মূল কথা কী

উওর অষ্টাদশ শতকে ফ্রান্সে ফিজিওক্র্যাট (Physiocrate) নামে। এক শ্রেণির অর্থনীতিবিদদের আবির্ভাব হয়। ফিজিওক্র্যাট কথাটির উদ্ভাবক ছিলেন নেমুর।

* বক্তা : ফিজিওক্র্যাট মতবাদের প্রবক্তা বা উদগাতা হলেন ফাঁসােয়া কুয়েসনে (Quesnay, ১৬৯৪-১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দ)। ইংল্যান্ডে এই মতবাদের প্রবক্তা ছিলেন অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ (Adam Smith, ১৭২৩-১৭৯০ খ্রিস্টাব্দ)। তিনি তার দ্য ওয়েলথ অফ নেশনস (The Wealth of Nations) গ্রন্থে অবাধ বাণিজ্য নীতির ধারণা ব্যক্ত করেন। ফরাসি অর্থনীতিবিদরা ছিলেন তার ভাবশিষ্য।

* ফিজিওক্র্যাট মতবাদের মূল কথা :

ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবােধ : এই মতবাদে বলা হয় মানুষ নিজেই তার স্বার্থরক্ষার সবচেয়ে বড়াে বিচারক। মানুষের অর্থনৈতিক কাজে সরকারের নিয়ন্ত্রণ অন্যায়।

অবাধ বাণিজ্য : এই মতবাদের মূল কথা অবাধ বাণিজ্য। এজন্য অভ্যন্তরীণ শুদ্ধনীতির বিরােধিতা এবং খােলাবাজার নীতিকে সমর্থন করা হয়।

ভূমিকর প্রদান : এই মতবাদে বলা হয়, জমি হল সমস্ত সম্পদের উৎস। তাই প্রত্যেক জমির মালিকের ভূমিকর দেওয়া উচিত। ফ্রান্সের যাজক, অভিজাত, বুর্জোয়া সকলকেই ভূমিকর দিতে হবে |


প্রথম অধ্যায়  ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক বড় প্রশ্ন উত্তর,

নবম শ্রেণির ইতিহাস প্রথম অধ্যায়ের ৮ নং প্রশ্ন উত্তর,ফরাসি বিপ্লবের কয়েকটি দিক ৮ নং প্রশ্ন উত্তর,


(1)ফরাসি বিপ্লবের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কারণ আলােচনা করাে।

উত্তর ভূমিকা : ফ্রান্সের অধিবাসী ফরাসিরা ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে যে বিপ্লব ঘটিয়েছিল, তা ইতিহাসে ফরাসি বিপ্লব (French Revolution) নামে খ্যাত। এই বিপ্লবের মাধ্যমে ফরাসি জনগণের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল। ঐতিহাসিকগণ বলেন যে, ফরাসিদের ওসামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বৈষম্য ও ক্ষোভের কারণেই ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের বিপ্লব ঘটেছিল।


ফরাসি বিপ্লবের কারণ :

সামাজিক কারণ : ফরাসি বিপ্লবের অন্যতম প্রধান কারণ ছিল ফরাসি সমাজে বৈষম্য ও শােষণ। শ্রেণিবিভক্ত ফরাসি সমাজব্যবস্থা মধ্যযুগীয় সামন্ততন্ত্রের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল। ফরাসি সমাজে এই সময় প্রধান তিনটি শ্রেণি (এস্টেট) বর্তমান ছিল; যথা— প্রথম শ্রেণি (যাজকগণ), দ্বিতীয় শ্রেণি (অভিজাতবর্গ) এবং তৃতীয় শ্রেণি (ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, কৃষক, শ্রমিক প্রভৃতি)। এই তিন শ্রেণির মধ্যে যাজক ও অভিজাত সম্প্রদায় ছিল বিশেষ অধিকারপ্রাপ্ত শ্রেণি’ ও তৃতীয় সম্প্রদায় ছিল অধিকারহীন শ্রেণি।

1 প্রথম শ্রেণি (First Estate) :ফরাসি সমাজব্যবস্থায় যাজকরা ছিল প্রথম শ্রেণিভুক্ত। বিপ্লবের পূর্বে এরা ছিলেন সুবিধাভােগী এবং ফ্রান্সের মােট জনসংখ্যার ১%-এরও কম। এদের মােট সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ২০ হাজার। অথচ এদের দখলে ছিল ফ্রান্সের মােট জমির ১০%। এই জমির জন্য এরা রাজাকে কোনাে প্রকার করও দিতেন না। যাজকরা ভূমিকর, ধর্মকর, মৃত্যুকর ইত্যাদি আদায় করলেও সরকারকে স্বেচ্ছাকর

ছাড়া অন্য কোনাে কর দিতে রাজি ছিলেন না। অথচ রাষ্ট্রের সবরকম সুযােগসুবিধা এরা ভােগ করতেন এবং বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন।

[2] দ্বিতীয় শ্রেণি (Second Estate) : ফরাসি সমাজে অভিজাতরা ছিলেন দ্বিতীয় শ্রেণিভুক্ত। এরা ছিলেন ফ্রান্সের মােট জনসংখ্যার প্রায় ১.৫% অর্থাৎ প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার। অথচ ফ্রান্সের মােট জমি,২০% ছিল এদের দখলে | এরা জমির জন্য সরকারকে কোন পত্যখ্ কর দিতেন না। আবার সরকারের সামরিক ও অসামরিক বিভাগের উচ্চপদগুলিতে এদের একচেটিয়া অধিকার ছিল।

[3] তৃতীয় শ্রেণি (Third Estate) : ফরাসি সমাজের ব্যবসায়ী, কৃষক, শ্রমিক, বুদ্ধিজীবী, সর্বহারা সকলেই ছিলেন তৃতীয় শ্রেণিভুক্ত। এদের মােট জনসংখ্যা ছিল ফ্রান্সের মােট জনসংখ্যার ৯৭৩%-এর বেশি। সমাজে এদের বংশকৌলীন্য ছিল না। ফ্রান্সের। করের বােঝার বেশির ভাগটাই এদের বহন করতে হত। ফ্রান্সে সবক্ষেত্রে এরা ছিলেন অসাম্যের শিকার। তাই তৃতীয় শ্রেণিভুক্ত মানুষেরা তাদের প্রতি সমাজের উচ্চশ্রেণির মানুষের শােষণ,

(4], নিপীড়নের প্রতিবাদে বিপ্লবের পথ বেছে নিয়েছিলেন।


অর্থনৈতিক কারণ : অর্থনৈতিক দুরবস্থাও ফরাসি বিপ্লবের পথকে প্রশস্ত করেছিল।  


2.ফ্রান্সের করব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও। এই করব্যবস্থা ফরাসি সমাজের তৃতীয় সম্প্রদায়কে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল ? 5+3

উত্তর ভূমিকা : বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্সে বুরবো (Bourbon) রাজবংশের রাজারা রাজত্ব করতেন। রাজাদের আয়ের প্রধান উৎস ছিল প্রজাদের কাছ থেকে আদায় করা বিভিন্ন ধরনের কর।

$ ফ্রান্সের করব্যবস্থা :১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দের বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্সে প্রচলিত করগুলিকে দুটি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যায় প্রত্যক্ষ কর এবং পরােক্ষ কর।

 প্রত্যক্ষ কর ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্সে তিন ধরনের প্রত্যক্ষ কর প্রচলিত ছিল। যেমন- 0 ‘টেইলি’ (Taile) বা সম্পত্তিকর

ক্যাপিটেশন’ (Capitation) বা উৎপাদনকর এবং @ ‘ভিংটিয়েমে’ (Vingtieme) বা আয়কর। যাজক ও অভিজাতরা যথাক্রমে ফ্রান্সের ১ঠ অংশ এবং অংশ ভূসম্পত্তির মালিক হয়েও তারা রাষ্ট্রকে টেইলি দিতেন না। যাজকেরা রাষ্ট্রকে একপ্রকার স্বেচ্ছাকর প্রদান করতেন। যাজক এবং অভিজাত সম্প্রদায় রাষ্ট্রকে কোনাে প্রকার উৎপাদনকর এবং আয়কর প্রদান করতেন না রাষ্ট্রের তিনটি প্রত্যক্ষ করই তৃতীয়

সম্প্রদায় বহন করত। কর আদায়ের জন্য ইনটেনডেন্ট’ (Intendent) নামক কর্মচারীরা সাধারণ মানুষের উপর অকথ্য অত্যাচার চালাত।

পরােক্ষ কর : প্রত্যক্ষ করের পাশাপাশি ফ্রান্সে বহু পরােক্ষ করও প্রচলিত ছিল। এগুলির মধ্যে উল্লেখযােগ্য হল- ‘টাইথ’ (Tithe) বা ধর্মকর, @ ‘গ্যাবেলা’ (Gabelle) বা লবণ কর, @ ‘এই’ (Aides) বা ভােগ্যপণ্যের উপর কর, ‘তেরাজ’ বা পথকর, ® করভি’ (Corvée) বা মকর, ® ব্যানালাইট’ (Banalités) বা শস্যদানা ভানার কর প্রভৃতি। পরােক্ষ করগুলিও সরকার, গির্জা ও সামন্তপ্রভুকে তৃতীয় সম্প্রদায়ের মানুষেরা দিতে বাধ্য থাকত। যাজক ও অভিজাতরা রাষ্ট্রকে কোনাে প্রকার পরােক্ষ কর দিতেন না।

করব্যবস্থা ও তৃতীয় সম্প্রদায় : ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে ফ্রান্সে বিভিন্ন প্রকার প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষ কর প্রচলিত ছিল। তবে এই সকল কর ফরাসি সমাজের সকল সম্প্রদায় বহন করত না। ফরাসি সমাজব্যবস্থা তিনটি সম্প্রদায়ে বিভক্ত ছিল। প্রথম সম্প্রদায়ভুক্ত যাজক এবং দ্বিতীয় সম্প্রদায়ের অভিজাতরা সকল প্রকার কর প্রদানের দায়িত্ব থেকে মুক্ত ছিলেন। এই দুই শ্রেণি ব্যতীত অবশিষ্ট যারা ছিলেন তারা তৃতীয় সম্প্রদায়ভুক্ত। দেশের মােট জনসংখ্যার প্রায় ৯৮% মানুষ ছিলেন তৃতীয় সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষ। এরা রাষ্ট্রের বিভিন্ন সুযােগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হলেও রাষ্ট্রপ্রদত্ত সমস্ত প্রকার কর প্রদান করতে বাধ্য হতেন। প্রত্যক্ষ ও পরােক্ষ করের বােঝা বহন করে জীবনধারণ করা কষ্টকর হয়ে উঠলে তারা বিপ্লবমুখী হয়ে ওঠেন।


3. ফরাসি বিপ্লবে দার্শনিকদের (Philosophers) ভূমিকা আলােচনা করাে।

অথবা, ফরাসি বিপ্লবে দার্শনিকনের প্রভাব আলােচনা করো।

ভূমি : ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লবের ক্ষেত্রে বুদ্ধিজীবী বা দার্শনিকদের ভূমি ছিল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। অষ্টাদশ শতাব্দীর ফ্রান্স ছিল নদীপ্তির যুগ। অষ্টাদশ শতিেদ্বতীয়ার্ধে ফ্রান্সে বুরবে রাজাদের স্বৈরাচারী শাসনের ফলে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যে অসন্তোষ তৈরি হয় তাকে কাজে লাগিয়ে ফরাসি দার্শনিরা জনসাধারণের মনােজগতে পরিবর্তন বা বিপ্লব ঘটাতে সক্ষম হয়েছিনে। ভলতেয়ার, মন্তে রুশাে, দিনেরাে প্রমুখ দার্শনিরা তাদের রচনার দ্বারা রাসি জনসাধারণকে নিয়ে অধিকার সম্বন্ধে সচেতন করে তােলেন। এর ফলে যে বৈপ্লবিক ভাবতরণের সুষ্টি হয়, তা ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি বিপ্লবকে সম্ভব করে তুলেছিল।


 দার্শনিকদের ভূমিকা ;

 মস্তে (44ontesquieu). অষ্টাদশ শতাব্দীতে ফরাসি দার্শনিকদের মত্বেকং ই বিখত্র এখন

মধ্যে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করেন মন্তে। পেশায় আইনজীবী মতে ছিলেন নিয়মতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের সমর্থক এবং ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ  নীতির প্রবক্তা। তিনি তার বিখ্যাত গ্রন্থ 'দ্য স্পিরিট অফ লজ' (The Spint of Laws)-এ রাজার দৈবস্বত্ব নীতির সমালােচনা করে ব্যক্তি স্বাধীনতা রক্ষার জন্য আইন, শাসন ও বিচারবিভাগের পৃথকীকরণের কথা বলেন। মন্তেঙ্কুর আর-একটি বিখ্যাত গ্রন্থ হল 'দ্য পার্সিয়ান লেটারস' (Tho Persian Letters)। এই গ্রন্থে তিনি বিপ্লব-পূর্ব ফরাসি সমাজব্যবস্থার তীব্র সমালােচনা করেন।

ভলতেয়ার (Voltaire) অষ্টাদশ শতাব্দীতে ফ্রান্স তথা ইউরােগের প্রখ্যাত দার্শনিক ভলতেয়ার একাধারে ছিলেন যুক্তিবাদী, কবি ও নাট্যকার। তার আক্রমণের অন্যতম লক্ষ্য ছিল চার্চ ও রাষ্ট্র। তিনি চার্চের দুর্নীতি ও ভ্রষ্টাচার সম্পর্কে উল্লেখ করে ফরাসি স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের তীব্র সমালােচনা করেন। তিনি ক্যাথলিক

গির্জাকে বিশেষ অধিকার প্রাপ্ত উৎপাত' বলে অভিহিত করেন। 'ভলতেয়ারের দুটি বিখ্যাত গ্রন্থ হল- কাদিদ' (Candide) ও লেতর ফিলজফিক' (Leties Philosophiquos)। এই প্রস্থ দুটিতে তিনি ধর্মীয়

রীতিনীতি ও কুসংস্কারের বিরুষ্পে প্রতিবাদ করেছিলেন। বুশাে (Rousseau) অষ্টাদশ শতাব্দীর দার্শনিকদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বৈপ্লবিক ছিলেন রুশাে। তাকে ফরাসি বিপ্লবের জনক' বলা

হয়। রুশাে ছিলেন নতুন সমাজ গঠনের পথপ্রদর্শক। তার রচিত বিখ্যাত গ্রন্থ হল— সামাজিক চুক্তি' (Social Contract) এবং ‘অসাম্যের সূত্রপাত (Origin of Inequality)। সামাজিক চুক্তি গ্রন্থে বুশাে বলেন যে, মানুষের মুক্তি ও নিরাপত্তার জন্য সামাজিক চুক্তির মাধ্যমে জনগণ রাষ্ট্র ও সমাজ গঠন করবে। তার মতে, জনগণই হল রাষ্ট্রীয় শক্তির উৎস এবং তারাই সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী চুক্তির মাধ্যমে রাজা শাসনক্ষমতা লাভ করেন।


অসাম্যের সূত্রপাত' গ্রন্যে তিনি বলেন, মানুষ স্বাধীন হয়ে এবং সমান অধিকার নিয়ে জন্মায়। কিন্তু বৈষম্যমূলক সমাজব্যবস্থা তাকে দরিদ্র ও পরাধীন করে। এককথায় স্বৈরাচারী রাজতন্ত্রের

বিরােধিতা করে বুশাে সকল জনগণের সাম্য ও স্বাধীনতার কথা বলেছেন। বুকে এবং এর কার

দিদেবাে ও এলেমবার্ট (Diderot & Alember) ফরাসি দার্শনিক দেনিস দিদেৱাে (Donis Didorot) ও দ্য এলেমৰার্ট (D' Aleiben) ৩৫ খণ্ডের একটি বিশ্বকোশ সংকলন করেন (১৭৫১-১৭৮০ খ্রি)।

দর্শন, সমাজবিজ্ঞান, সাহিত্য প্রভৃতিতে সমৃদ্ধ এই বিশ্বকোশ পাঠ করে ফরাসিদের চিন্তাধারায় ব্যাপক আলােড়নের সৃষ্টি হয়। সিদের বলেছেন, মানুষ তার চারপাশের অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিবর্তন করতে

পারে বলেই সে জীবজগতে শ্রেষ্ঠ। তার কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ফরাসি জাতি নিজ ভাগ্যকে নিয়ন্ত্রণ গ্রতে তৎপর হয়ে ওঠে।















No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();