দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ| সংক্ষিপ্ত ও ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্ন উত্তর| class 10 geography 1st chapter questions answers|WB board| - SM Textbook

Fresh Topics

Wednesday, September 13, 2023

দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ| সংক্ষিপ্ত ও ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্ন উত্তর| class 10 geography 1st chapter questions answers|WB board|

 দশম শ্রেণীর ভূগোল প্রথম অধ্যায় বহির্জাত প্রক্রিয়া ও তাদের দ্বারা সৃষ্ট ভূমিরূপ| সংক্ষিপ্ত ও ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্ন উত্তর| class 10 geography 1st chapter questions answers|WB board|




নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর সংক্ষেপে লেখো।

প্রশ্নের মান-২


 ১) ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া বলতে কী বোঝ?

উত্তর :- যেসকল ভৌত ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভূত্বকের উপরিভাগে নানা ভূমিরূপের সৃষ্টি, বিনাশ, পরিবর্তন ও বিবর্তন হয়ে চলেছে, তাদের একত্রে ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া (Geomorphic Process) বলে।


 ২)  কোন্ দুটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া কার্যকর হয়?

 উত্তর:- অন্তর্জাত প্রক্রিয়া (Endogenetic Process) এবং বহির্জাত প্রক্রিয়া (Exogenetic Process )-এর মাধ্যমে ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া কার্যকর হয়।


৩) অন্তর্জাত প্রক্রিয়া (Endogenetic Process ) কাকে বলে ?

উত্তর :- ভূঅভ্যন্তরে উদ্ভূত বলের প্রভাবে স্থানীয় বা আঞ্চলিক ভাবে কঠিন ভূত্বকের যে-ধীর ও আকস্মিক পরিবর্তন ঘটে, তাকে অন্তর্জাত প্রক্রিয়া বলা হয়।


৪) বহির্জাত ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া (Exogenetic Process) বলতে কি বোঝ?


উত্তর:-  ভূবহিস্থ বা পৃথিবীপৃষ্ঠের বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির মাধ্যমে যান্ত্রিক ও রাসায়নিক পদ্ধতিতে ভূপৃষ্ঠের বিবর্তন ও পরিবর্তনকেই বহির্জাত ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়া বলে।


৫)  বহির্জাত ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়ার শক্তিগুলি কী কী ?

 উত্তর:-  বহির্জাত ভূমিরূপ গঠনকারী প্রক্রিয়ার শক্তিগুলি হল নদী বা জলধারা, হিমবাহ, বায়ু, সমুদ্রতরঙ্গ, ভৌমজল ইত্যাদি।


৬)পর্যায়ন বা পর্যায়ন প্রক্রিয়া (Gradation) কাকে বলে?

উত্তর:- ক্ষয়সীমার সাপেক্ষে অসমতল ও বন্ধুর ভূমির সমতলে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে পর্যায়ন বলা হয়। Chamberlin এবং Salisbury নামক দুই ভূবিজ্ঞানী প্রথম ‘পর্যায়ন' বা 'Gradation' শব্দটি ব্যবহার করেন।


৭) কোন্ দুটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পর্যায়ন প্রক্রিয়া কার্যকর

 উত্তর:- অবরোহণ এবং আরোহণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পর্যায়ন প্রক্রিয়া কার্যকর হয়।

 

৮)  অবরোহণ প্রক্রিয়া (Degradation) কাকে বলে? 

 উত্তর:-  যে-প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন বহির্জাত শক্তিসমূহ ভূপৃষ্ঠের কোনো উঁচু জায়গাকে ক্রমাগত ক্ষয়ের ফলে সমতলভূমিতে পরিণত করে, তাকে বলে অবরোহণ প্রক্রিয়া।



৯)আরোহণ প্রক্রিয়া (Aggradation) কাকে বলে ?

উত্তর:-  বিভিন্ন ধরনের বহির্জাত প্রাকৃতিক শক্তিসমূহের মাধ্যমে সঞ্জয়কার্যের ফলে স্থলভূমির নীচু অংশ বা নিম্নভূমি ভরাট হয়ে উঁচু হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে আরোহণ প্রক্রিয়া বলা হয়। 


 ১০)  অবরোহণ ও আরোহণের মূল পার্থক্য কী ?

উত্তর:-  অবরোহণ ও আরোহণ প্রক্রিয়ার মূল পার্থক্য হল – অবরোহণ প্রক্রিয়ায় ক্ষয়ের মাধ্যমে উঁচু ভূমির উচ্চতা হ্রাস পায় এবং আরোহণ প্রক্রিয়ায় সঞ্জয়কার্যের মাধ্যমে নীচু ভূমি ভরাট হয়ে ভূমির উচ্চতা বৃদ্ধি করে।


 ১১)  পর্যায়িত ভূমি (Graded Landform) কাকে বলে?


 উত্তর :- ক্ষয় ও সঞ্চয়ের মাধ্যমে কোনো ভূমিরূপের মধ্যে যখন সাম্য অবস্থা বিরাজ করে, তখন সেই ভূমিরূপকে পর্যায়িত ভূমি বলা হয়। 


 ১২) আবহবিকার (Weathering) কাকে বলে?

উত্তর:-  আবহাওয়ার বিভিন্ন উপাদান, যেমন—উয়তা, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ইত্যাদির দ্বারা ভূপৃষ্ঠের শিলাসমূহের যান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিচূর্ণন ও রাসায়নিক পদ্ধতিতে বিয়োজন হওয়াকে আবহবিকার বলে। 

আবহবিকার যান্ত্রিক, রাসায়নিক ও জৈবিক পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়।


 ১৩) ক্ষয়ীভবন  (Erosion) কী?

উত্তর :- ভূপৃষ্ঠের বিভিন্ন ক্ষয়কারী শক্তির দ্বারা পদার্থের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অপসারিত হওয়ার প্রক্রিয়াকে ক্ষয়ীভবন বলা হয়। এটি একটি গতিশীল প্রক্রিয়া।


 ১৪) পুঞ্জিত ক্ষয় (Mass wasting) কাকে বলে?

 উত্তর :- উচ্চভূমির ঢালের মৃত্তিকা ও শিলাস্তর অভিকর্ষের টানে ঢাল বেয়ে নীচে নেমে আসার ঘটনাকে পুঞ্জিত ক্ষয় বলে।


 ১৫ ) নগ্নীভবন (Denudation) কাকে বলে?

উত্তর :- আবহবিকার, পুঞ্জিত ক্ষয় এবং ক্ষয়ীভবন—এই তিনটি পদ্ধতির যৌথ ক্রিয়াশীলতায় ভূপৃষ্ঠের উপরিভাগের শিলাস্তর ক্ষয়ীভূত হয়ে অপসারিত হয়। এর ফলে নীচের শিলাস্তর উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। এই প্রক্রিয়াকেই নগ্নীভবন বলে।


 ১৬ ) নগ্নীভবনের সূত্রটি কী?

উত্তর:-  নগ্নীভবনের সূত্রটি হল-

নগ্নীভবন = আবহবিকার + পুঞ্জিত ক্ষয় + ক্ষয়ীভবন


 ১৭ ) ক্ষয়সীমা কাকে বলে?

উত্তর:-  ক্ষয়কারী শক্তিগুলি ভূপৃষ্ঠের নীচে যতটা পর্যন্ত ক্ষয় করতে পারে, তা হল ক্ষয়সীমা। সমুদ্রতল হল শেষ ক্ষয়সীমা। J W Powell হলেন ক্ষয়সীমা ধারণার প্রবর্তক।


  ১৮)  ক্ষয়ীভবন ও পুঞ্জিত ক্ষয়ের মূল পার্থক্য কী?

উত্তর:-  ভূপৃষ্ঠস্থ বিভিন্ন শক্তির মাধ্যমে পদার্থের অপসারণ হল ক্ষয়ীভবন। অপরদিকে অভিকর্ষজ বলের প্রভাবে ভূমির ঢাল বরাবর পদার্থ নেমে আসা হল পুঞ্জিত ক্ষয়।


সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো

প্রশ্নের মান -৩


 ১) 'অন্তর্জাত প্রক্রিয়ার কাজ গঠনমূলক এবং বহির্জাত প্রক্রিয়ার কাজ বিনাশমূলক - কারণ ব্যাখ্যা করো।

উত্তর :- ভূঅভ্যন্তরীণ শক্তি ভূপৃষ্ঠে প্রাথমিক ভূমিরূপ গঠনের জন্য যে-পদ্ধতিতে কাজ করে, তাকে অন্তর্জাত প্রক্রিয়া বলা হয়। মহিভাবক ও গিরিজনি আলোড়ন, ভূমিকম্প, অগ্ন্যুৎপাত ইত্যাদি নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভূত্বকের আপেক্ষিক স্থানান্তর ঘটে এবং ফলস্বরূপ প্রধান ভূপ্রকৃতিরূপে মহাদেশ ও মহাসাগর কিংবা পর্বত, মালভূমি ও সমভূমি গঠিত হয়। অপরদিকে ভূপৃষ্ঠে বা উপপৃষ্ঠীয় অংশে বাইরের শক্তিসমূহ যে-পদ্ধতিতে নগ্নীভবন ঘটায়, তাকে বহির্জাত প্রক্রিয়া বলা হয়। আবহবিকার, পুঞ্জিত ক্ষয়, ক্ষয়ীভবন (নদীপ্রবাহ, বায়ু, সমুদ্রতরঙ্গ, হিমবাহ ইত্যাদি) ইত্যাদি প্রক্রিয়া ভূপৃষ্ঠের ক্ষয় ও সঞ্চয়ের মাধ্যমে অণু ভূমিরূপ গঠনে সাহায্য করে। তাই উভয় প্রক্রিয়ার কাজের বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে এটি বলাই যায় যে, ‘অন্তর্জাত প্রক্রিয়ার কাজ গঠনমূলক এবং বহির্জাত প্রক্রিয়ার কাজ বিনাশমূলক।


  ২)  বহির্জাত প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যগুলি লেখো।

উত্তর :-বহির্জাত প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যগুলি হল-

(i) এই প্রক্রিয়া অত্যন্ত ধীরে ধীরে কাজ করে। (ii) ভূপৃষ্ঠে ও তার উপপৃষ্ঠীয় অংশে বহির্জাত প্রক্রিয়ার প্রভাব লক্ষ করা যায়।

(iii) এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নগ্নীভবন ক্রিয়ায় (অবরোহণ) উঁচুস্থান নীচু হয়ে যায় এবং সঞ্জয়কার্যের (আরোহণ) দ্বারা নীচু স্থান ভরাট হয়ে উঁচু হয়।

(iv) এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী শক্তিগুলি হল—নদী,আবহবিকার, হিমবাহ, বায়ুপ্রবাহ, সমুদ্রতরঙ্গ, ভৌমজল ইত্যাদি।

(v) এই অংশগ্রহণকারী শক্তিগুলি কোথাও এককভাবে ও কোথাও সম্মিলিতভাবে কাজ করে।

(vi) ভূমিরূপ পরিবর্তনকারী শক্তিগুলির মূল উৎস হল সৌর শক্তি।


 ৩) অবরোহণ প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী?

উত্তর:-  অবরোহণ প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যগুলি হল—

(i) এই প্রক্রিয়ায় ভূমির উচ্চতা হ্রাস পায়।

(ii) বিভিন্ন ক্ষয়জাত অণু ভূমিরূপ সৃষ্টি হয়।

(iii) ভূত্বকের উঁচু অংশেই মূলত অবরোহণ প্রক্রিয়া কাজ করে।

(iv) আবহবিকার, পুঞ্জিত ক্ষয় ও ক্ষয়ীভবন—এই তিনটি প্রক্রিয়ার দ্বারা অবরোহণ সংগঠিত হয়। (v) অবরোহণের শেষ সীমা বা ক্ষয়ের শেষ সীমা হল নিকটতম সমুদ্রপৃষ্ঠ।

(vi) এটি একটি ধীর প্রক্রিয়া।


৪) আরোহণ প্রক্রিয়ার বৈশিষ্ট্যগুলি হল—


উত্তর:- (i) এই প্রক্রিয়ায় ভূমির উচ্চতা বৃদ্ধি পায়। (ii) বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক শক্তির দ্বারা সঞ্চয়ের ফলে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

(iii) ভূপৃষ্ঠে বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়জাত অণু ভূমিরূপ গঠিত হয়।

 (iv) ভূমির ঢাল, পলি ও বালির পর্যাপ্ত ও নিয়মিত জোগান হল আরোহণের নিয়ন্ত্রক।

(v) এটি একটি ধীর প্রক্রিয়া।


  ৫.  বহির্জাত প্রক্রিয়ার শক্তিগুলি কীভাবে কার্যকর হয়?

উত্তর:-  ভূমির উচ্চতা পার্থক্য বা ঢালের পার্থক্যের কারণে অভিকর্ষজ বল-এর সৃষ্টি হয়। এই অভিকর্ষজ বলের প্রভাবে ভূপৃষ্ঠ ক্ষয়কারী শক্তিগুলি গতিপ্রাপ্ত হয়, যা গতিশক্তি বা Kinetic energy নামে পরিচিত। এই গতিশক্তির প্রভাবেই নদী, হিমবাহ প্রভৃতি শক্তি ক্ষয়, বহন ও সঞ্চয়ের মাধ্যমে ভূমির পরিবর্তন ঘটায়। 


 ৬) অবরোহণ, আরোহণ ও পর্যায়নের আন্তঃসম্পর্ক বিশ্লেষণ করো।

 উত্তর:-  অবরোহণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠের কোনো উঁচু স্থান ক্রমাগত ক্ষয়ের ফলে নীচু হয় এবং আরোহণ প্রক্রিয়ায় ক্ষয়জাত পদার্থ ভূপৃষ্ঠের নীচু অংশে সঞ্চিত হয়। এই দুই প্রক্রিয়ার সম্মিলিত রূপ হল পর্যায়ন। এই পর্যায়নের মাধ্যমে ক্ষয়, বহন ও সঞ্চয়কাজে ভারসাম্য আসে।



No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();