Geography Chapter -10 Part-3 Questions And Answers Class 7th || সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল দশম অধ্যায় "আফ্রিকা মহাদেশে জলবায়ু" প্রশ্ন উত্তর || ক্লাস 7th ভূগোল সহায়িকা || - SM Textbook

Fresh Topics

Wednesday, July 26, 2023

Geography Chapter -10 Part-3 Questions And Answers Class 7th || সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল দশম অধ্যায় "আফ্রিকা মহাদেশে জলবায়ু" প্রশ্ন উত্তর || ক্লাস 7th ভূগোল সহায়িকা ||

   Geography Chapter -10 Part-3 Questions And Answers Class 7th || সপ্তম শ্রেণীর ভূগোল দশম অধ্যায় "আফ্রিকা মহাদেশে জলবায়ু" প্রশ্ন উত্তর || ক্লাস 7th ভূগোল সহায়িকা ||





সাহারা মরুভূমি সম্পর্কীয় তথ্য বা প্রশ্ন উত্তর: 


⬛ অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর:প্রতিটা প্রশ্নের মান -1

1. সাহারা মরুভূমির পূর্বদিকে কী আছে? 

উঃ। সাহারা মরুভূমির পূর্বদিকে আছে লোহিত সাগর।


2. সাহারা মরুভূমির উচ্চতম স্থান কী? 

উঃ। সাহারা মরুভূমির উচ্চতম স্থান আহার ও টিবেস্টি মালভূমি।


3. আর্গ কী? 

উঃ। সাহারা মরুভূমি অঞ্চলে বালির স্তূপ জমা হয়ে ছোটো পাহাড়ের মতো তৈরি করে একে আর্গ বলে।


4. হামাদা কী? 

উঃ। সাহারার যেসব অঞ্চলে শক্ত পাথরে ভরা, বালির অস্তিত্ব চোখেই পড়ে না এমন ভূমিকে হামাদা বলে।


5. খামসিন কী?

উঃ। গরমকালে সাহারা মরুভূমি থেকে একপ্রকার গরম ও শুকনো বাতাস বয়ে যায়। একে স্থানীয় ভাষায় খামসিন বলে। 


6. হারমাটান কী? 

উঃ। গিনি উপকূল অঞ্চলে শুকনো বাতাস খামসিনকে হারমাটান বলা হয়। 


7. রেগ কী? 

উঃ। সাহারায় যেসব অঞ্চলে বালির সাথে পাথরের টুকরো একত্রে মিশে থাকে তাকে রেগ বলে।


৪. ক্যারাভ্যান কী?

উঃ। উট সাহারার অধিবাসীদের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম। মরুভূমিতে দল বেঁধে যখন উট চলে তখন সেই উটের দলকে ক্যারাভ্যান বলে।


9. তুয়ারেগ কাদের বলা হয় ?

উঃ। সাহারার একশ্রেণির অধিবাসীদের তুয়ারেগ বলে। এই তুয়ারেগ জাতির মানুষেরা বর্তমানে বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ নির্দেশক হিসেবে কাজ করে। 


10. সাহারায় কয়েকটি মরূদ্যানের নাম লেখো।

উঃ। সাহারা মরুভূমিতে অবস্থিত কয়েকটি মরূদ্যান হল কুফরা, সিউয়া, টিমিমন, খারজাইয়া, বাহারিয়া।


11. সাহারা মরু অঞ্চলে কোথায় সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা দেখা যায় ?

উঃ। ত্রিপোলির দক্ষিণে লিবিয়ার আল আজিজিয়ায় সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা দেখা যায়।


12. সাইমুম কাকে বলে ?

উঃ। সাহারা মরুভূমিতে গরমকালে দিনের বেলায় কখনো কখনো প্রবল বালির ঝড় হতে দেখা যায়। একে স্থানীয় ভাষায় সাইমুম বলা হয়।


 সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :তিটা প্রশ্নের মান -2/3

1. সাহারা মরুভূমির অবস্থান, সীমা ও আয়তন বলো।

উঃ। সাহারা মরুভূমি 10° উত্তর থেকে 35° উত্তর অক্ষরেখা এবং 25° পূর্ব থেকে 37° পূর্ব দ্রাঘিমা রেখায় অবস্থিত। সাহারা মরুভূমি আফ্রিকা মহাদেশের উত্তর ভাগে অবস্থিত এবং পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর, পূর্বে লোহিত সাগর, উত্তরে আটলাস পর্বত ও ভূমধ্যসাগর এবং দক্ষিণে নাইজার উপত্যকা অবস্থিত। সাহারা মরুভূমি আয়তনে প্রায় 63 লক্ষ বর্গকিলোমিটার, পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় 5000 কিলোমিটার এবং উত্তর-দক্ষিণে প্রায় 2000 কিলোমিটার। সংযুক্ত আরব সাধারণতন্ত্র, লিবিয়া, চাদ, সুদান, নাইজার, আলজিরিয়া, মালি, মাউরিটানিয়া, মরক্কো প্রভৃতি রাষ্ট্রের অধিকাংশ স্থান জুড়ে মরু অঞ্চল অবস্থিত।


2. সাহারা অঞ্চলের জলবায়ুর বিবরণ দাও।

উঃ। দিনেরবেলা সাহারা মরুভূমি অঞ্চল ভীষণ গরম। বাতাসে জলীয় বাষ্প থাকে না। তাপমাত্রা মাঝে মাঝে 58° সে. পর্যন্ত হয়ে যায়। গরমকালে এখানে একরকম গরম ও শুকনো বাতাস বয়ে যায় একে খামসিন বলা হয়। গরমকালে দিনের বেলায় কখনো কখনো প্রবল বালির ঝড় হতেও দেখা যায়। স্থানীয় ভাষায় একে সাইমুম বলা হয়। এখানে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য অত্যন্ত বেশি। রাতে এখানে বেশ ঠান্ডা, তাপমাত্রা তখন 4° সে. নেমে যায়।


উঃ। মরু অঞ্চলে বায়ুর অপসারণের প্রক্রিয়ায় বালুকারাশি অপসৃত হয়ে যখন ভৌমজলের স্তরকে উন্মোচিত করে দেয় তখন ওই স্থানে জলাশয়, গাছপালা, হ্রদের সৃষ্টি হয়ে যে অঞ্চলের সৃষ্টি হয়, তাকে মরূদ্যান বলে। মরুভূমি অঞ্চলে মাঝে মাঝে থাকা মরূদ্যানের গুরুত্ব অপরিসীম। সাহারা মরুভূমির উল্লেখযোগ্য মরূদ্যানগুলি হল কুফরা, সিউয়া, টিমিমন, ঘারজাইয়া ও বাহারিয়া।


4. ওয়াদি কাকে বলে ?

উঃ। সাহারা মরুভূমি অঞ্চলের অধিকাংশ নদী আটলাস পর্বত ও মধ্যভাগের উঁচু ভূমি থেকে উৎপত্তি হয়েছে। জলের অভাবে নদীগুলি অত্যন্ত সরু আকারের এবং বৃষ্টির অভাবে অধিকাংশ নদী শুকিয়ে গেছে। ওয়াদ্রা এই অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য নদী। স্থানীয় ভাষায় এখানকার নদীখাতগুলিকে ওয়াদি বলে।


5. সাহারা মরুভূমির স্বাভাবিক উদ্ভিদ ও কৃষি সম্বন্ধে আলোচনা করো। 

উঃ। উদ্ভিদ : সাহারা মরুভূমিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম ও জমি বালুকাময় হওয়ায় এখানে স্বাভাবিক উদ্ভিদ বিশেষ জন্মায় না। ছোটো ছোটো কাঁটাগাছ, ক্যাকটাস, বাবলা প্রভৃতি গাছ বিক্ষিপ্তভাবে মরুভূমিতে দেখা যায়। মরূদ্যানের আশেপাশে ঘাস, খেজুর প্রভৃতি জন্মাতে দেখা যায়। এখানে গাছগুলির শিকড় জলের সন্ধানে মাটির গভীর অংশ পর্যন্ত প্রবেশ করে।

কৃষি : জলের অভাবে ও অনুর্বর মাটির জন্য সাহারা অঞ্চলে কৃষিকার্য প্রায় অসম্ভব। মরুদ্যানে সামান্য জলের জোগানে ভুট্টা, জোয়ার, বাজরা, তরমুজ, আখ প্রভৃতি চাষ হয়। এছাড়া এখানে প্রচুর খেজুর চাষ হয়।


6. যাযাবরদের সম্বন্ধে যা জানো লেখো।

উঃ। মরুভূমিতে বিশেষ এক ধরনের জাতি দেখা যায়, যারা উট নিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় জল ও খাবারের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায় এদের যাযাবর বলে। এরা সাধারণত উটের দল, ঘোড়া, ছাগল নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। পশুর দুধ ও মাংস এদের প্রধান খাদ্য। এরা মরূদ্যানের ধারে চাষবাসও করে। বর্তমানে এরা বিভিন্ন শহরে স্থায়ীভাবে বসবাসও করছে। কেউ কেউ এখন খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন কেন্দ্রগুলিতে কাজও করছে।


7. উটকে মরুভূমির জাহাজ বলে কেন?

উঃ। মরুভূমিতে পরিবহণের অন্যতম মাধ্যম হল উট। উট অনেকদিন খাদ্য ও জল ছাড়াই বাঁচতে পারে। আবার মরু ঝড়ের পূর্বাভাসও দিতে পারে। তপ্ত বালির ঝড় সহ্য করতে পারে। তাই উটকে মরুভূমির জাহাজ বলে।


৪. সাহারা মরুভূমি সৃষ্টির কারণ কী?

উঃ। সাহারা উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ুর অন্তর্গত। ভারত মহাসাগর থেকে আসা উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু পূর্ব উপকূলের পর্বতমালায় বাধাপ্রাপ্ত হয় ফলে সাহারায় প্রবেশ করতে পারে না। এই কারণে সাহারায় বৃষ্টি হয় না। আবার পশ্চিমা বায়ু আটলাসে বাধাপ্রাপ্ত হয় ফলে বৃষ্টি হয় না। এসব কারণে এখানে মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে।


⬛ রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর:তিটা প্রশ্নের মান -5/7

1. সাহারা মরুভূমির ভূমিরূপের বর্ণনা দাও।

উঃ। সাহারা মরু অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতি বৈচিত্র্যময়। ভূপ্রকৃতির দিক থেকে এটি একটি মালভূমি। সাহারায় বেশ কয়েকটি উচ্চভূমি দেখা যায়। তাদের মধ্যে প্রাচীন শিলা দ্বারা গঠিত ও বহুদিন ধরে ক্ষয় পাওয়া আহামার ও টিবেস্টি মালভূমি প্রধান। কান্ডারা, সিওয়া এই অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য নীচু স্থান। এই অঞ্চলে অর্ধচন্দ্রাকৃতি এবং তির্যক বালিয়াড়ি দেখা যায়। এখানে বালির স্তূপ জড়ো হয়ে যে ছোটো পাহাড়ের মতো তৈরি করে তাকে আর্গ বলে। প্রস্তরময় মরু অঞ্চলকে হামাদা বলে। পাথর নুড়ি বালিপূর্ণ ভূমিকে বলে রেগ। সাহারার বেশির ভাগ নদীগুলিই শুকনো। এই শুকনো নদীর খাতগুলিকে বলা হয় ওয়াদি। এই অঞ্চলে মাঝে মাঝে জলের হ্রদ ও মরুদ্যান দেখা যায়।


. সাহারা অঞ্চলের খনিজ সম্পদের বিবরণ দাও।

উঃ। সাহারা অঞ্চলে খনিজ সম্পদের পরিমাণ কম। তাদের মধ্যে খনিজ তেল প্রধান। আলজিরিয়া এবং লিবিয়ায় প্রচুর খনিজ তেল পাওয়া যায়। এ ছাড়া প্রাকৃতিক গ্যাস, লবণ, আকরিক লোহা, ম্যাঙ্গানিজ, তামা, কয়লা প্রভৃতি সাহারার বিভিন্ন স্থানে পাওয়া যায়। প্রতিকূল পরিবেশ, অত্যধিক গরম, পরিবহণ ব্যবস্থার অভাব, খনিজ সম্পদ উত্তোলনের প্রধান বাধা। বিভিন্ন পশুপালক যাযাবরেরা এখন খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন কেন্দ্রগুলিতে কাজ করে। খনি অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য বিমানবন্দরও তৈরি করা হয়েছে।


3. সময়ের সাথে সাথে সাহারা মরুভূমি অঞ্চলে কী কী পরিবর্তন এসেছে তা আলোচনা করো। 

উঃ। পৃথিবীর বৃহত্তম উয় মরুভূমি হল আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি। পাথুরে পাহাড়, ধূ-ধূ বালির প্রান্তর, মরুদ্যান, মাঝে মাঝে কাঁটাগাছ আর উটের পাল নিয়ে হেঁটে চলা যাযাবরের দল। এই হল সাহারা মরুভূমির জীবনকথা। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সাহারা পাল্টাচ্ছে। জায়গায় জায়গায় ঘাস লাগানো হয়েছে। বর্তমানে পাকা রাস্তা তৈরি হয়েছে। পুরনো উট চলা রাস্তার উপর দিয়ে চলে গেছে চওড়া পাকা রাস্তা, তৈরি হয়েছে উঁচু বাড়ি, মসজিদ উটের বদলে ট্রাকের দ্বারা ব্যবসা-বাণিজ্য হচ্ছে। খনি অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য তৈরি হয়েছে বিমানবন্দর। সাহারার তুয়ারেগ জাতিরা এখন বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ নির্দেশক হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন পশুপালক যাযাবরেরা এখন স্থায়ীভাবে শহরে বাস করে। কেউ কেউ খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন কেন্দ্রগুলিতে কাজ করে। একসময় জলবায়ুগত পরিবর্তনের ফলে সাহারা শুষ্ক, বৃষ্টিহীন অঞ্চলে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু এখন আবার সাহারায় বৃষ্টি বাড়ছে, সবুজও বাড়ছে। কৃষিজমি দেখা যাচ্ছে। জলবায়ুর এই পরিবর্তন হয়তো ভবিষ্যতে সাহারাকে আবার শস্যশ্যামল করে তুলবে।


. সাহারা মরুভূমি অঞ্চলের জলবায়ুর বিবরণ দাও ।

উঃ। সাহারা মরুভূমি অঞ্চলের জলবায়ু শুষ্ক এবং চরম প্রকৃতির। এখানে উয়তা মাঝে মাঝে এত বেশি হয় যে বৃষ্টি মাটিতে পড়ার আগেই বাষ্পীভূত হয়ে যায়। দিনে যেমন গরম রাতে তেমনি ঠান্ডা। গ্রীষ্মে যেমন গরম পড়ে শীতে তেমনি ঠান্ডা। সুতরাং শীত-গ্রীষ্মের তারতম্য দেখা যায়। গ্রীষ্মকালে কোনো কোনো স্থানের উন্নতা 58° সে. হয়ে যায়। আবার শীতকালে 79–8° সে. নেমে যায়। এখানে গ্রীষ্মকালে একপ্রকার উয় বায়ুপ্রবাহ হয়, স্থানীয় ভাষায় একে খামসিন বলে। আবার দিনের বেলায় একরকম প্রবল বালির ঝড় বয় একে সাইমুম বলে। বৃষ্টিপাত এখানে হয় না বললেই চলে। বার্ষিক বৃষ্টিপাতের গড় 20° 30° সেন্টিমিটার। সাহারা মরুভূমির কিছু কিছু জায়গায় 4-5 বছর বৃষ্টি একদম হয় না। সাহারা উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ুর অন্তর্গত। ভারত মহাসাগর থেকে আসা উত্তর-পূর্ব আয়ন বায়ু পূর্ব উপকূলের পর্বতমালায় বাধাপ্রাপ্ত হয় ফলে সাহারায় প্রবেশ করতে পারে না। এই কারণে সাহারায় বৃষ্টি হয় না। আবার পশ্চিমা বায়ু আটলাস পর্বতে বাধাপ্রাপ্ত হয় ফলে বৃষ্টি হয় না। এইসব কারণে এখানে মরুভূমির সৃষ্টি হয়েছে। 


5.সাহারা মরুভূমির ভূ-প্রকৃতি আলোচনা করো।

উঃ। সাহারা মরুভূমি এক বালুকারাশিপূর্ণ, শিলাময় বিশাল নিম্ন মালভূমি অঞ্চল। এখানে স্থানে স্থানে উচ্চ পর্বতভূমি যেমন দেখা যায়, তেমনি নিম্নভূমিও আছে। ভূপ্রকৃতির গঠন অনুযায়ী সাহারা মরুভূমিকে চার ভাগে ভাগ করা হয়; যথা— (i) বালি ও শিলাযুক্ত মরু অঞ্চল, (ii) মধ্যের উচ্চভূমি অঞ্চল, (iii) নিম্নভূমি অঞ্চল, (iv) নীলনদ অববাহিকা।

(i) মরু অঞ্চল ঃ সমগ্র অঞ্চলটি বিচ্ছিন্নভাবে বালিয়াড়ি ও পাথরে পরিপূর্ণ। বালুকাপূর্ণ মরুভূমিকে আর্গ বলে। আবার পাথুরে মরুভূমিকে হামাদা বলে।

(ii) মধ্যের উচ্চভূমি অঞ্চল : সমগ্র মরুভূমির মধ্যভাগ উঁচু। এখানে বেশ কয়েকটি উঁচু পর্বত ও মালভূমি দেখা যায়। টিবেস্টি, আহামার, তাসিনি উচ্চভূমি প্রভৃতি। টিবেস্টির মাউন্ট টুসুদ্দি সাহারার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।

(iv) নিম্নভূমি অঞ্চল : সাহারার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল নিম্নভূমি, এখানকার মরিটানিয়া অঞ্চল সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে নীচু, এখানে চলমান বালিয়াড়ি ও লবণাক্ত হ্রদ দেখা যায়।

(v) নীলনদ অববাহিকা : সাহারা মরুভূমির পূর্বদিকে অবস্থিত নীলনদ অববাহিকা। এই অববাহিকার জায়গায় জায়গায় নিম্নভূমি দেখা যায়।


থ্য বা প্রশ্ন উত্তর 


⬛ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :তিটা প্রশ্নের মান -2/3

1. নীলনদের গতিপথের বিবরণ দাও।

উঃ। নীলনদ আফ্রিকার দীর্ঘতম নদী। এর দৈর্ঘ্য 6,650 কিমি। আফ্রিকার মোট জলপ্রবাহের প্রায় 10 ভাগ জলই নীলনদ দিয়ে বয়ে যায়। আফ্রিকার বিখ্যাত বুরুন্ডি মালভূমি থেকে সৃষ্ট হোয়াইট নীল এবং ইথিওপিয়ার উচ্চভূমি থেকে সৃষ্ট ব্লু নীল, এই দুই নদীর জলধারা থেকে নীলনদ তৈরি হয়েছে। উত্তর সুদানের রাজধানী খার্তুম শহর এই দুই ধারার মিলনস্থল। নীলনদ উত্তর দিকে প্রবাহিত হয়ে সাহারা মরুভূমির পূর্বপ্রান্তকে সবুজ করে তুলেছে। নীলনদ ভূমধ্যসাগরের মোহনার কাছে বিশাল ব-দ্বীপ তৈরি করেছে। মিশরের অধিকাংশ মানুষই নীলনদের তীরে কৃষিকাজ, পশুপালন ও বসবাস করে। নীলনদের তীরে গড়ে ওঠা বিখ্যাত শহরগুলি হল খার্তুম, আসোয়ান, লাস্কার ও কায়রো।


2. আফ্রিকার নদীগুলি প্রচুর জল বহন করে কেন ?

উঃ। নিরক্ষীয় অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশি। এই বৃষ্টিপাতের ফলে উপনদীগুলি প্রচুর জল প্রধান নদীতে সরবরাহ করে। ফলে প্রধান প্রধান নদীতে সারাবছর জল থাকে। উপকূলভূমি বন্ধুর থাকলে নদীর মোহানা খুব প্রশস্ত ও খরস্রোতা হয়। নীলনদ আফ্রিকার মধ্যভাগের হ্রদ অঞ্চল থেকে বিপুল জলরাশি বয়ে নিয়ে আসে। আফ্রিকার সবচেয়ে বৃষ্টিবহুল এলাকা থেকে কঙ্গো নদীর সৃষ্টি হয়েছে। বয়ে যাওয়ার পথে বহু স্থানে এই নদী গভীর উপত্যকা তৈরি করেছে। প্রায় ওই একই জায়গা থেকে পূর্বদিকে সৃষ্টি হয়েছে জাম্বোসি নদী। এই নদীর গতিপথে তৈরি হয়েছে ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত ।



3. কঙ্গো নদীর গতিপথের বর্ণনা দাও।

উঃ। এটি আফ্রিকার দ্বিতীয় দীর্ঘতম নদী। এর দৈর্ঘ্য 4,700 কি.মি.। কঙ্গো নদীটি পশ্চিমদিকে প্রবাহিত হয়েছে। দৈর্ঘ্যে নীলনদের থেকে কম হলেও এর জলপ্রবাহ যথেষ্ট বেশি। আফ্রিকার সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিবহুল এলাকা থেকে কঙ্গো নদীর সৃষ্টি। জাম্বিয়ার উত্তর প্রাপ্ত হল এই নদীর উৎসস্থল। বয়ে যাওয়ার পথে এই নদী বহু জায়গায় গভীর উপত্যকা তৈরি করেছে। কঙ্গোর তীরে গড়ে ওঠা বড়ো শহরগুলি হল কিসাঙ্গানি, বানডাকা, কিনশাসা ও ব্রাজাভিল।


4. নীলনদ ও কঙ্গো ছাড়া আফ্রিকার অন্য প্রধান তিনটি নদী কী কী? এদের গতিপথের বর্ণনা দাও। 

উঃ। নীলনদ ও কঙ্গো ছাড়া আফ্রিকার অন্যান্য নদনদীগুলি হল নাইজার, জাম্বেসি ও অরেঞ্জ।

নাইজার : পশ্চিম আফ্রিকার প্রধান নদী নাইজার-এর দৈর্ঘ্য 4180 কিমি.। আটলান্টিক মহাসাগর থেকে 200 কিমি দূরে গিনি উচ্চভূমি হল এর উৎসস্থল। এই নদীটি আটলান্টিকের উল্টোদিকে সাহারা মরুভূমির দিকে প্রবাহিত হয়েছে। নাইজার নদী উত্তর দিকে টিমবাকটু শহর পর্যন্ত প্রবাহিত হওয়ার পর আবার দক্ষিণদিকে এসে নাইজেরিয়ায় প্রবেশ করেছে। এই নদীটি আটলান্টিক মহাসাগরে পতিত হয়েছে। মোহানার কাছে এই নদীর সৃষ্টি করা ব-দ্বীপ বেশ জনবহুল। এখানকার মানুষের জীবিকা চাষ-আবাদ ও পশুপালন।

জাম্বেজি : আফ্রিকার চতুর্থ দীর্ঘতম নদী জাম্বেজি, এর দৈর্ঘ্য 3540 কিমি। জাম্বিয়া, অ্যাঙ্গোলা ও কঙ্গো—এই তিনটি দেশ যেখানে মিলিত হয়েছে সেখানে এই নদীর উৎপত্তি। জাম্বোজি নদীটি পড়েছে ভারত মহাসাগরে। এই নদীপথে সৃষ্টি হয়েছে পৃথিবী বিখ্যাত ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত। এই নদীপথে দুটি বড়ো জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রও তৈরি হয়েছে।

অরেঞ্জ : আফ্রিকার পঞ্চম দীর্ঘতম নদী অরেঞ্জ পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়েছে। এর দৈর্ঘ্য 2200 কিমি। ড্রান্সেবার্গ পর্বত থেকে উৎপন্ন এই নদী আটলান্টিক মহাসাগরে পড়েছে। জলসেচের উদ্দেশ্যে এই নদীতে প্রায় 29টি জলাধার তৈরি করা হয়েছে।



 সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর :তিটা প্রশ্নের মান -2/3

1. আফ্রিকা মহাদেশের জলবায়ু সম্পর্কে যা জানো লেখো।

উঃ। আফ্রিকার জলবায়ুর ওপর বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের প্রভাব আছে। আফ্রিকার মধ্য দিয়ে নিরক্ষরেখায় উত্তর দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা এবং দক্ষিণ দিক দিয়ে মকরক্রান্তি রেখা চলে গেছে। তাই এই মহাদেশটির বেশিরভাগ অঞ্চল উন্নমণ্ডলের অন্তর্গত। কিন্তু পার্বত্য অঞ্চল ও মালভূমিগুলি সমভূমির থেকে শীতল স্থানে অবস্থান করছে। নিরক্ষরেখার উভয় প্রান্তের জলবায়ুর মধ্যে যথেষ্ট বৈসাদৃশ্য দেখা যায়। আফ্রিকার বুকে যে বৃষ্টিপাত হয় তাতেও তফাৎ চোখে পড়ে। আবার এই বৃষ্টিপাতের সঙ্গে জলবায়ু ও স্বাভাবিক উদ্ভিদের নিবিড় সম্পর্ক আছে।


2. আফ্রিকা মহাদেশের জলবায়ুর বৈচিত্র্যের বিবরণ দাও।

উঃ। আফ্রিকা মহাদেশের জলবায়ু সব জায়গায় সমান নয়। আফ্রিকার প্রায় মাঝখান দিয়ে নিরক্ষরেখা গেছে ফলে এখানে উন্নতা বেশি। সমুদ্র উপকূল থেকে দূরে অবস্থানের কারণে এই মহাদেশে ঠান্ডা ও গরমের পার্থক্য বাড়ে। আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দিক দিয়ে উন্ন বা শীতল সমুদ্রস্রোত প্রবাহিত হয়, ফলে উন্ন স্রোত সংলগ্ন অঞ্চলের উষ্ণতা বাড়ে এবং শীতল স্রোত সংলগ্ন ভূখণ্ডকে শীতল করে। আফ্রিকার পার্বত্য অঞ্চলে প্রায় 1 কিমি উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে বাতাসের উন্নতা গড়ে 6.4° হারে কমে। আফ্রিকা মহাদেশ একই সঙ্গে দুটি আলাদা গোলার্ধে অবস্থিত হওয়ায় এখানে বিভিন্ন রকম জলবায়ু দেখা যায়।


3. ভেল্ড তৃণভূমি অঞ্চলের বর্ণনা দাও।

উঃ। আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণ দিকে কালাহারি মরুভূমি ও ভারত মহাসাগরের ধারে উপকূল অঞ্চলে শীতকালে প্রবল ঠান্ডা ও গরমকালে মোটামুটি গরম। শীত ও গ্রীষ্মের মধ্যে তাপমাত্রার পার্থক্য খুবই বেশি। মরু অঞ্চলের থেকে বৃষ্টিপাত এখানে একটু বেশি। এখানে উঁচু পাহাড়ের ঢালে পপলার, উইলো প্রভৃতি গাছ এবং মরুভূমি এলাকায় ছোটো, খসখসে সবুজ ঘাস দেখা যায়। এই তৃণভূমিকে ভেল্ড বলে।



⬛ রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর:তিটা প্রশ্নের মান -5/7

1. আফ্রিকা মহাদেশের জলবায়ুর ওপর নির্ভর করে কোন্ ধরনের স্বাভাবিক উদ্ভিদের সৃষ্টি হয়েছে? 

উঃ। আফ্রিকা মহাদেশের জলবায়ু সব জায়গায় সমান নয়। বিশেষ করে তাপমাত্রা আর বৃষ্টিপাতের ওপর গাছপালা জন্মানো ও বেড়ে ওঠা নির্ভর করে। তাপমাত্রা ও বৃষ্টির পরিমাণ বদলালে গাছপালার ধরন বদলে যায়। এই বৈচিত্র্যময় জলবায়ুর ওপর ভিত্তি করে এখানে যে স্বাভাবিক উদ্ভিদ গড়ে উঠেছে তাকে সাতটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এগুলি হল : (i) নিরক্ষীয় চিরসবুজ গাছের অরণ্য, (ii) সাভানা তৃণভূমি, (iii) ভূমধ্যসাগরীয় উদ্ভিদ, (iv) উষ্ণ মরু উদ্ভিদ, (v) নাতিশীতোয় তৃণভূমি বা ভেল্ড, (vi) মৌসুমি পর্ণমোচী গাছের অরণ্য, (vii) পূর্ব উপকূলীয় উন্ন নাতিশীতোয় বা চিনদেশীয় উদ্ভিদ।


2. নিরক্ষীয় চিরসবুজ অরণ্য ও সাভানা তৃণভূমির বিবরণ দাও।

উঃ। নিরক্ষরেখার কাছাকাছি অঞ্চলে 27° উন্নতা ও 200 – 250 সেমি বৃষ্টিপাত দেখা যায়। সরাসরি সূর্যকিরণ ও বৃষ্টির ফলে এখানে শক্ত কাঠের ঘন জঙ্গল সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘন জঙ্গলের প্রধান গাছগুলি হল মেহগনি, রোজউড, এবনি। পাতা ঝরানোর নির্দিষ্ট ঋতু না থাকায় গাছগুলি। সারাবছর সবুজ দেখায় বলে একে চিরসবুজ গাছের অরণ্য বলা হয়। নিরক্ষীয় অঞ্চলের উত্তর ও দক্ষিণে বৃষ্টি কমতে থাকে। এখানে দীর্ঘ গরমকালেও বছরে 150 সেমি বৃষ্টি হয়। মোটামুটি গরম ও কম বৃষ্টিপাতের জন্য বড়ো গাছের সংখ্যা কম ও লম্বা ঘাসের প্রান্তর দেখা যায়। এটি সাভানা তৃণভূমি নামে পরিচিত বিস্তৃত ঘাসজমির মধ্যে অ্যাকাসিয়া ও বাওবাব জাতীয় গাছ দেখা যায়। 



3. ভূমধ্যসাগরীয় উদ্ভিদ ও উঘ্ন-মরু অঞ্চলের উদ্ভিদের বর্ণনা দাও।

উঃ। আফ্রিকার একেবারে উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণপশ্চিম অংশে ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু দেখা যায়। এই অঞ্চলে গ্রীষ্মকাল বৃষ্টিহীন ও শীতকালে বৃষ্টিপাত হয়। সারা বছরে 50-100 সেমি বৃষ্টিপাত হয়। এখানে জলপাই, ওক, আখরোট, ডুমুর, কর্ক প্রভৃতি গাছ ও কমলালেবু, আঙুর প্রভৃতি ফলের বাগান দেখা যায়। এই অঞ্চলের গাছগুলির পাতায় নরম মোমের আস্তরণ দেখা যায়। গরমকালে জলের সন্ধানে গাছের মূলগুলি মাটির অনেক গভীরে চলে যায়।সাহারা, কালাহারি, নামিব প্রভৃতি মরুভূমিগুলিতে বৃষ্টি প্রায় হয় না বললেই চলে। দিনের তাপমাত্রা প্রবল তুলনায় রাতের তাপমাত্রা অনেক কম। এই অঞ্চলে সাধারণত কাঁটা গাছ, ঘাস ও ঝোপ-ঝাড় দেখা যায়। এই গাছগুলি নিজের শরীরে নানাভাবে জল ধরে রাখার ফলে অতি গরমেও এরা বেঁচে থাকে। মরুভূমির মধ্যে মরুদ্যানগুলির ধারে ক্যাকটাস, ফণীমনসা, বাবলা, খেজুর ও তাল জাতীয় গাছের সারি দেখা যায়।


4. মৌসুমি পর্ণমোচী অরণ্য ও চিনদেশীয় জলবায়ু অঞ্চলের বর্ণনা দাও। 

উঃ। (i) আফ্রিকার পূর্বে মোজাম্বিক, তানজানিয়া, কেনিয়া, সোমালিয়া প্রভৃতি দেশের পূর্ব উপকূলে ও মাদাগাস্কার দ্বীপে গরমে বৃষ্টি হয় ও শীতকালে আবহাওয়া শুষ্ক থাকে। কোনো ঋতুতেই তাপমাত্রা বেশি হয় না। এই অঞ্চলে মৌসুমি পর্ণমোচী অরণ্যের সৃষ্টি হয়েছে। এখানে শাল ও বাঁশ গাছের বনজঙ্গল দেখা যায়। এই অঞ্চলে জলের অভাবে শীতকালে গাছের পাতা ঝরে যায়। এছাড়াও এখানে সেগুন, গামার, চন্দন ও বেশি বৃষ্টিপাতযুক্ত অঞ্চলে মেহগনি, আয়রন উড়, রোজ উড প্রভৃতি বৃক্ষ দেখা যায়। (ii) আফ্রিকার দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল অঞ্চলে গরমকালে বেশ গরম ও বৃষ্টি হয়। চিনদেশের পূর্বাংশে এইরকম জলবায়ু দেখা যায় বলে এর নাম চিনদেশীয় জলবায়ু। এখানে পাতাঝরা গাছ দেখা যায়। ওক গাছও বেশি চোখে পড়ে।





















No comments:

Post a Comment

'; (function() { var dsq = document.createElement('script'); dsq.type = 'text/javascript'; dsq.async = true; dsq.src = '//' + disqus_shortname + '.disqus.com/embed.js'; (document.getElementsByTagName('head')[0] || document.getElementsByTagName('body')[0]).appendChild(dsq); })();